শ্রাবণ_দিনের_বৃষ্টিতে পর্ব ৩

#শ্রাবণ_দিনের_বৃষ্টিতে 🖤
#পার্ট_৩
#Writer_Liza_moni

আয়রা চলে গেলে প্রান্ত রুমের দরজার ঠেলে দিয়ে রুমটা দেখতে লাগলো। রুমে অনেক সুন্দর করে ওয়াল পেন্টিং করা।আর্ট গুলো দেখলে যে কারো চোখ জুড়িয়ে যাবে।প্রান্ত অবাক হয়ে দেখছে।

বাহ্ এত সুন্দর করে কেউ আকঁতে পারে। হঠাৎ প্রান্তর চোখ গেলো ড্রইং করা একটা দৃশ্যের নিচের দিকে। সেখানে স্পষ্ট করে লিখা আছে,,
Art by Arfi Ayra…..

মেয়েটা অনেক সুন্দর ড্রইং করতে পারে। প্রশংসা পাওয়ার যোগ্য। আঁকার হাত ভালো।

প্রান্ত এখন ফ্রেশ হবে তাই ব্যাগ থেকে তার টাওয়াল নিয়ে ওয়াস রুমে চলে গেল।
.
.
আয়রা হিতৈষীর বিছানায় বসে পা দুটোকে ফ্লোরের উপর রেখে নাড়ছে। তার সামনেই হিতৈষী কিছু একটা খুঁজছে।

জানিস আজকে কী হইছে হিতৈষী আপু?

হিতৈষী আয়রার দিকে তাকিয়ে বললো না, জানি না। তুই বলার পর জানবো।

আয়রা বসা থেকে উঠে দাঁড়ালো। হিতৈষীর দিকে এগিয়ে গেল।তার পর বললো আমার ব্যাগে ছাতা রাখছিল কে? আমাকে না জানিয়ে?

আমি তো রাখলাম। বৃষ্টির দিনে তুই ছাতা নিতে ভুলে যেতে পারিস ভুলে আরেকটা ছাতা তোর ব্যাগে রেখে দিয়েছিলাম।

আর এই ছাতার জন্যই আমি আজ পাবলিক প্লেসে থাপ্পড় খাইছি।

মানে?কী বলিস তুই এই সব?

আয়রা হিতৈষীকে পাবলিক প্লেসে ঘটে যাওয়া সম্পুর্ন ঘটনা বললে হিতৈষী হাসতে হাসতে বিছানায় গড়াগড়ি খাচ্ছে। আয়রা রেগে হিতৈষীর পিঠে এক কিল বসিয়ে দিল।

তুই আসলেই একটা পেত্নী।

প্রান্ত ছেলেটার কলিজা বড়। আমার এই ঝাল মরিচ কে চড় মেরেছে?ওরে তো নোবেল দেওয়া দরকার।

চুপ উগান্ডার বউ। তোরে আমি উগান্ডার প্রেসিডেন্টের ছেলের সাথে বিয়ে দিমু। নোবেল দেওয়া দরকার? নোবেল ম্যান রে আইনা হাতে তুলে দে।যেনো সারা জীবন ঐডার সাথে সংসার করে খায়।

আয়রার কথায় হিতৈষী বললো,,
প্রেসিডেন্ট এর ছেলে বাহ্ আমি রাজি। তুই নিয়ে আয় যা।

আয়রা বিছানায় বসে হিতৈষীর চুল টেনে ধরে বললো ওই পোলার তো খবর আছে সাথে তোর ও।২মাস থাকুক আর ২ দিনই থাকুক এর জীবন আমি তেজপাতা করে দিবো।

হিতৈষী মাথায় হাত দিয়ে বললো,,প্রান্ত ভাই আপনি গেছেন।টা টা,,
.
.
আয়রু,হিতু খাবার খেতে আয়। খিচুড়ি রান্না করছি গরম গরম।আয়,,,,

হিতৈষী আর আয়রা ডাইনিং টেবিলে বসলো।

আয়রা প্রান্ত কে একটু ডেকে আনতো। ছেলেটা সেই দুপুরে আসছে। এখন ও কিছু খায় নি।যা ডেকে নিয়ে আয়।

আয়রা বসা থেকে উঠে প্রান্তর রুমে চলে গেল। হিতৈষী আয়রার হাব ভাব দেখে হাসতে হাসতে শেষ। আয়রার হাব ভাব টা ঠিক এমন,,,প্রান্ত কে নোংরা কাঁদায় চুবাতে পারলে তার শান্তি লাগতো।

আয়রা দরজা ঠেলে রুমে ঢুকতেই প্রান্ত কে টাওয়াল পরা দেখে চোখ বন্ধ করে এক চিৎকার দিলো।প্রান্ত আয়রার হাত ধরে টান মেরে নিজের কাছে এনে হাত দিয়ে আয়রার মুখ চেপে ধরলো।

আয়রা চোখ বন্ধ অবস্থায় নিজেকে ছাড়িয়ে নেওয়ার জন্য ছটপট করছে।

প্রান্ত আয়রাকে এক ধমক দিয়ে বললো,,,
এই মেয়ে এইইইই,,,,
তোমার কী কমন সেন্স নেই এই ভাবে হুট করে কেউ কারো রুমে ঢুকে?আর এত জোরে চিৎকার করছো কেন?ভূত আমি নাকি ছেলেদের কে খালি গায়ে কোনো দিন দেখো নি?

আয়রার খুব কাছে প্রান্ত। আয়রা চোখ পিটপিট করে মেলে তাকালো।প্রান্তর চোখের দিকে তাকাতেই আয়রার বুকের মাঝে ধক করে উঠলো। চোখগুলো যেন স্নিগ্ধ হয়ে আছে। চোখের উপরে চড়িয়ে পড়া চুল থেকে টপটপ করে পানি পড়ছে। আয়রা একটা ঢোক গিলে প্রান্তর থেকে অনেক টা দূরে সরে গেল।প্রান্ত ভ্রু কুঁচকে আয়রার দিকে তাকিয়ে আছে।

আয়রা রুম থেকে বের হওয়ার সময় পেছনে ফিরে বললো,,মা খেতে ডাকছে।

আয়রা আর দাঁড়ালো না।
রুম থেকে বের হয়ে চলে গেলো।

ডাইনিং এ এসে চেয়ারে বসে আয়রা বড় করে একটা নিঃশ্বাস ছাড়লো। রান্না ঘরে থাকায় আয়রার চিৎকার তার মা শুনতে না পারলে ও ডাইনিং এ বসে থাকা হিতৈষীর কান এড়িয়ে যায়নি।

হিতৈষী আয়রার দিকে ভ্রু কুঁচকে মুখটাকে সিরিয়াস করে বললো,,
কি হয়েছে আয়রু,,? চিৎকার দিয়ে ছিলি কেন?

আয়রা কিছু বলতে যাবে তার আগেই ওর মা আচার নিয়ে আসতে আসতে বললো,, আয়রা যদি চিৎকার দেয় তাহলে এর একটাই কারণ তেলাপোকা।

ইসসস,,, খচ্চর 🤧
আমি তেলাপোকা দেখে চিৎকার করি না। তেলাপোকা কে ভয় দেখানোর জন্য চিল্লাই।

প্রান্ত কে আসতে দেখে আয়রার মা মুচকি হেসে বললো,,
আসো বাবা বসো। এখন অবধি কিছুই পেটে গেলো না তোমার।

প্রান্ত চেয়ার টেনে বসে বললো,, সমস্যা নাই আন্টি।

আয়রা প্রান্তর দিকে এক নজর তাকালো।তার পর খাওয়ায় মনোযোগ দিলো।

হিতৈষী আয়রার পায়ে খোঁচা মারলে আয়রা বিরক্ত হয়ে হিতৈষীর দিকে তাকালো। হিতৈষী আয়রার দিকে তাকিয়ে ফিসফিস করে বললো,, তেলাপোকা টা কিন্তু অনেক বড়।এত বড় তেলাপোকা দেখে সবাই ভয় পাবে।
.
.
১টার লাঞ্চ ৩টা বাজে করছি। ভাগ্য ভালো এটা অন্যের বাড়ি।প্রান্ত বিছানায় শুয়ে শুয়ে ফেসবুক স্ক্রল করছে। হঠাৎ করে তার চোখ পড়লো একটা আইডির দিকে।ডেভিল আয়রা।

প্রান্ত আইডির নাম দেখে হাসলো। ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট পাঠিয়ে দিলো সেখানে।
.
.
তখন এমন চিল্লাইছিলি কেন?

তেলাপোকা দেখে।
.
.
মাগরিবের আজান দিচ্ছে চার দিকে। সন্ধ্যা হয়ে গেছে বলে কেউ বলবে না। পাহাড়ি এলাকা তার উপর ঝুম বৃষ্টি পড়ছে বাইরে তাকালেই কেমন গভীর রাত মনে হচ্ছে।

আয়রার আব্বু এখনো ফেরেনি। ফিরবেন ও না আজ। মিটিং এর জন্য চিটাগাং চলে গেছে তিনি।

আয়রার মা আর আয়রা কে দেখলো প্রান্ত নামাজ পড়তে। কিন্তু হিতৈষী কে দেখলো না কোথাও।
মাথা ঘামানো না সে। রুমে এসে বসলো।ব্যাগ থেকে লেপটব বের করে কাজে মন দিলো।

চলবে,,, 🍁

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here