সাইকো লাভার পর্বঃ২

সাইকো লাভার পর্বঃ২
#সাদিয়া সিদ্দিক মিম (লেখিকা)

দিয়ার যখন জ্ঞান ফেরে তখন নিজেকে খোলা আকাশের নিচে একটা বিছানার মত জায়গায় আবিষ্কার করে।দিয়াকে চোখ খুলতে দেখে অর চাচ্চু আশরাফ চৌধুরী দৌড়ে দিয়ার কাছে এসে হাঁটু গেড়ে দিয়ার সামনে বসে দিয়ার গালে হাত রেখে বলে।

চাচ্চুঃ দিয়া মামনি তুমি ঠিক আছো ত(উত্তেজিত হয়ে)
দিয়াঃ হে চাচ্চু আমি ঠিক আছি কিন্তু আমি এখানে কীভাবে এলাম,আর তুমিই বা এখানে কীভাবে এলে।তুমি ত ফ্যাক্টরিতে থাকবে বলে ছিলে।(উঠে বসতে বসতে)
চাচ্চুঃ আমাকে আর রায়হানকে কিডন্যাপ করা হয়েছে (গাল ফুলিয়ে বলল)
দিয়াঃ মানে কী চাচ্চু,তোমরা ত ঐ হাদাটাকে(আহাদ)কিডন্যাপ করতে গেছিলে উল্টো তোমরা কেমতে কী?(কনফিউজড হয়ে)
চাচ্চুঃ আমি আর রায়হান আহাদের বাড়ির সামনের রাস্তার মোড়ে ছদ্মবেশে দাড়িয়ে ছিলাম আহাদের গাড়ি আসার অপেক্ষায়।অনেকক্ষণ দাড়িয়ে থাকার পর একটা গাড়ি আসে যেটা আহাদের,রায়হান অসুস্থ এমন একটা অভিনয় করে আর আমি লিফটের জন্য আহাদের গাড়িটা থামাই।আহাদ আমাদের লিফটও দেয় তারপর সুযোগ বুঝে রায়হান আহাদকে অজ্ঞান করার জন্য স্প্রে বের করে কিন্তু এই রায়হানের বাচ্চা কীভাবে স্প্রে করছে খোদায়ই জানে(রায়হানের মাথায় গাট্টা মেরে)তাতে আহাদের বদলে আমরাই জ্ঞান হারাই তারপর জ্ঞান ফেরার পর দেখি আমি আর রায়হান এই ছাঁদে। আর তুই এখানে অজ্ঞান অবস্থায় পড়ে আছিস।(মাথা নিচু করে)
দিয়া ত সব শুনে বোকার মত ফেলফেলিয়ে অর চাচ্চুর দিকে তাকিয়ে আছে।মানে কী এসবের,একজনকে অজ্ঞান করতে গিয়ে অরাই অজ্ঞান হয়ে গেলো।

দিয়াঃ চাচ্চু🔊🔊🔊🔊,,,,,,,,ইচ্ছে ত করছে তোমাদের এই ছাদ থেকে ফেলে দিতে।তোমরা জ্ঞান হারালে কেমনে,তোমরা সেফটির জন্য মাক্স পড়তে পারলা না।(রেগে বোম হয়ে)
রায়হানঃঐ মোড়ে ত লোক ছিল না তখন,আর আমার, আশরাফ কিংবা আহাদেরও ত করোনা হয় নি,ত মাক্স কেন পড়ব?
দিয়াঃ বিটকেল মামু🔊🔊🔊🔊🔊🔊🔊🔊🔊
(আসলে রায়হান একটু বোকা টাইপের ত তাই😁,বেচারা বুঝতে পারে নি)
দিয়ার চাচ্চু আর রায়হান কানে হাত দিয়ে দাড়িয়ে আছে।
দিয়াঃ এক মিনিট এক মিনিট তোমাদের তবে এখানে কে আনল আর আমাকেই বা এখানে কে আনল।

আহাদঃ আমি এনেছি তোমাদের।

কারো গলার আওয়াজ পেয়ে পিছনে ফিরে দেখি আহাদ।আমি ত অবাক,এতটাই অবাক হয়েছি যে আহাদের দিকে ড্যাবড্যাব করে তাকিয়ে আছি।

(আহাদে আর দিয়া একে অপরকে আগে থেকেই চিনে যার জন্য দিয়ার আহাদকে চিনতে অসুবিধা হয় নি)

আহাদ আমার সামনে এসে আমার মুখে ফু দিয়ে সামনের চুলগুলো সরিয়ে দেয়।তাতে আমি কিছুটা কেঁপে উঠি।
আহাদঃ আমি এনেছি তোমাকে আর চাচা শ্বশুর মিয়াকে।
আমি ত আমিই,এখনও অবাক হওয়া শহরেই ঘুরতাছি।
হঠাৎ কেউ আমার সামনে হাত দিয়ে তুরি বাজায় তাতে আমি বাস্তবে ফিরে আসি।

দিয়াঃ আআআপনি এখানে এনেছেন মানে।
আহাদঃ হুম আমিই এনেছি,তোমার চাচ্চু যখন আমার গাড়িতে লিফট চেয়েছিল তখনই আমার উনাকে সন্দেহ হয়েছিল,চিনা চিনা লাগছিল আর রায়হান মামুর পকেটে আমি স্প্রে করার বোতলটা দেখেছি তখনই আমি শিয়োর হয়ে যাই যে কোন গন্ডগোল আছে।তাই উনারা গাড়িতে উঠার পর থেকে আমি লুকিং গ্লাস দিয়ে ওদের দিকে খেয়াল রাখছিলাম যখন উনারা স্প্রে করে আমি আমার শ্বাস আটকে নেই তাই আমি জ্ঞান হারাই নি কিন্তু উনারা স্প্রে করে তখন উনারাই জ্ঞান হারায়(হাসতে হাসতে বলল)।তারপর আমি গাড়ি থামিয়ে আপনাদের(দিয়ার চাচ্চু আর রায়হানকে ইশারা করে) চেক করি কোন ক্লু পাওয়ার জন্য তারপর চাচা শ্বশুর মিয়ার ফোনটা হাতে আসে তখন উনার ফোনটা চেক করে একটা এসএমএস পাই যেটা আমার জানপাখিকে করা,সেখানে লেখা ছিল আমাকে কিডন্যাপ করে তোমাদের বন্ধ ফ্যাক্টরিতে নিয়ে যাবে আর সেখানে যাতে তুমি (দিয়া) উপস্থিত থাকো। তাই আমি চাচা শ্বশুর মিয়া আর রায়হান মামুকে আমার এই বাড়িতে রেখে ফ্যাক্টরিতে গিয়ে তোমাকে কিডন্যাপ করে নিয়ে আসি।(ঠোঁটে বাকা হাসি)

আমি ত অবাকের উপরে অবাক হচ্ছি,যাকে কিডন্যাপ করতে এত প্ল্যান আর সেই কীনা আমাদের এভাবে কিডন্যাপ করল।
আহাদঃ ইয়েস ডিয়ার আমিই তোমাদের কিডন্যাপ করেছি।কিন্তু যাই বলো তোমার কিন্তু সাহস আছে,সাহস না থাকলে কী কেউ আহাদ আদনান শরীফকে কিডন্যাপ করার প্ল্যান করে।অবশ্য আমার বউয়ের এতটুকু সাহস না থাকলেই নয়।(ঠোটে বাঁকা হাসি)
দিয়ার চাচ্চুঃ এই কী বউ বউ করছো হে,অর এখনও বিয়ে হয় নি,আর অর বিয়ে আমি কিছুতেই তোমার সাথে হতে দিব না।
আহাদঃ আহ্ চাচা শ্বশুর মিয়া,আপনার ভাতিজী ত আমার বউই হবে।
দিয়াঃ আমি আপনাকে কখনও বিয়ে করব না,মরে গে,,,,,ঠাসসস
দিয়া আর কিছু বলার আগেই আহাদ দিয়ার গালে একটা চর বসিয়ে দেয়,,,আর দিয়া টাল সামলাতে না পেরে ফ্লোরে গিয়ে পড়ে,,,,আর দিয়া ভ্যা ভ্যা করে কেঁদে দেয়,,,,,
আহাদ দিয়ার কাছে গিয়ে দিয়াকে জড়িয়ে ধরে চোখের পানি মুছে দিতে দিতে বলে,,,,একদম মরার কথা বলবা না,মরার কথা যতবার বলবা ততবার গালে এরকম মিষ্টি পড়বে।আর কান্না না থামালে এখনই গালে কুটুস করে একটা চুমু দিয়ে দিব ত কান্না থামাও।এ কথা শুনে দিয়া কান্না থামিয়ে দেয়।

দিয়ার চাচ্চুঃ তোমার সাহস ত কম না তুমি দিয়ার গায়ে হাত তুলেছো,এ কথা বলেই দিয়ার চাচ্চু তেড়ে আসে আহাদের দিকে।আহাদের লোকেরা দিয়ার চাচ্চুকে আটকে নেয় আর বন্ধুক ধরে দিয়ার চাচ্চুর মাথায়।
(আহাদ দেশের টপ বিজনেস ম্যান যার জন্য আহাদের সাথে সবসময় বডিগার্ড থাকে আর তাদের সাথে বন্দুক থাকে)
এটা দেখে রায়হান দরজার আড়ালে লুকিয়ে পড়ে।
আহাদঃ আহ্ চাচা শ্বশুর মিয়া টেনশন নিয়েন না আমি আপনার ভাতিজীকে মারব আবার আমিই আদর করব,তাই না জান।

কথাটা বলেই দিয়ার যে গালে থাপ্পড় মেরেছে সেখানে একটা চুমু দিয়ে দেয়।দিয়া গালে হাত দিয়ে আহাদের দিকে তাকিয়ে আছে সেটা দেখে আহাদ চোখে টিপ দেয়। দিয়া চোখ গরম করে আহাদের দিকে তাকায়।আহাদ সেটা উপেক্ষা করে দিয়াকে কোলে উঠিয়ে নিয়ে সামনের দিকে হাঁটা দেয়।
দিয়াঃ কী করছেন ছাড়ুন আমাকে,নামান বলছি(নামার জন্য ছটফট করতে করতে)
দিয়ার চাচ্চুঃ এই তুমি দিয়া মামনিকে নিয়ে কোথায় যাচ্ছো।
আহাদঃ হানিমুন করতে যাচ্ছি।কথাটা বলেই আহাদ নিচে নেমে আসে।
দিয়া নামার জন্য ছটফট করছে কিন্তু আহাদ ছাড়ছে না।
দিয়াঃ ছাড়ুন আমাকে,আমি যাব না আপনার সাথে।
আহাদ কিছু না বলে দিয়াকে গাড়িতে উঠিয়ে নিজেও গাড়িতে উঠে ড্রাইভ করতে থাকে।দিয়ার কোন কথাই আহাদ উওর দিচ্ছে না তাই দিয়াও হাল ছেড়ে চুপ করে গাল ফুলিয়ে বসে আছে।

অনেকক্ষণ ড্রাইভ করার পর অরা জ্যামে আটকে যায়।আহাদ দিয়ার দিকে তাকিয়ে দেখে দিয়া গাল ফুলিয়ে বাইরে তাকিয়ে আছে।এটা দেখে আহাদ মুচকি হেসে অন্য দিকে তাকায় সেখানে আহাদের চোখ আটকে যায়,যেটা দেখে আহাদের চোখ লাল হয়ে যায় রাগে।আহাদ রেগে গাড়ি দরজা খুলে জোড়ে দরজাটা লাগিয়ে দেয়।তখন দিয়া পাশে তাকিয়ে দেখে আহাদ রেগে শার্টের হাতা ঘুটাতে ঘুটাতে সামনে কতগুলো হিজড়ের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।

#চলবে

(প্রথম পার্টে যে এত রেসপন্স পাবো আমি ভাবি নি,আপনাদের অসংখ্য ধন্যবাদ আমাকে এভাবে সাপোর্ট করার জন্য।এভাবেই আমার পাশে থাকবেন।ভুল ত্রুটি ক্ষমা করবেন,আর কেমন হয়েছে জানাবেন)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here