সাইকো লাভার পর্বঃ৩

সাইকো লাভার পর্বঃ৩
#সাদিয়া সিদ্দিক মিম(লেখিকা)

(আহাদ আদনান শরীফ পরিবর্তন করে আদিল আদনান শরীফ রাখা হল)

আদিকে রেগে গাড়ি থেকে বের হতে দেখে দিয়াও গাড়ি থেকে নেমে এল।আদি যেদিকে গেলো দিয়াও সেদিকে যাচ্ছে,ভীড় ঠেলে ভিতরে যাওয়ার পর দিয়ার চোখ চড়কগাছ,,,,,দিয়া কথা বলার ভাষা হারিয়ে ফেলেছে,,,দিয়া দেখল কতগুলো হিজড়েকে আদি মারছে,,,,

দিয়াঃহে আল্লা এই পোলায় হিজড়েদের মারছে কেন,,,এতটুকু বড় হয়ে ত কখনও দেখি নাই হিজড়েদের মারতে(মনে মনে)

দিয়া দৌড়ে আদির কাছে যায় আটকাতে,,,কিন্তু আদি কিছুতেই থামছে না,,,দিয়া তার সব শক্তি দিয়ে চেষ্টা করছে আদি কে আটকানোর কিন্তু আদি থামছে না,,,,একসময় আদি দিয়াকে ঝারি মারে আর দিয়া পড়ে যেতে নেয় তখন দিয়াকে কেউ ধরে ফেলে,,,কে ধরেছে সেটা দেখার জন্য দিয়া তাকিয়ে দেখে সায়ান ধরেছে,,,,,দিয়ার যে হাত সায়ান ধরেছে সেটা ভিজা ভিজা লাগছিল তখন দিয়া অর হাতের দিকে তাকিয়ে দেখে সায়ানের হাত থেকে রক্ত ঝড়ছে আরেকটা হাত সায়ানের কোমড়ে ধরে কাঁপা কাঁপা পায়ে দাড়িয়ে আছে,,,,,দিয়ার চোখ দিয়ে আপনা আপনি পানি পড়ছে।

দিয়াঃ ভাভাভা,,,,ভাইয়া তোত,,তোমামার কী হয়েছে,,, এএএত ররক্ত কেন,,,,তুতুমি ঠিক আছো ত(কাঁদতে কাঁদতে)
সায়ানঃ বোন তুই কাঁদিস না আমি ঠিক আছি।(দিয়ার গালে হাত রেখে)
দিয়াঃ ররক,,রক্ত পড়ছে হাত থেকে আর ততুমি বলছো ঠিক আছো,,,হসপিটালে যেতে হবে,,,,ভাইয়া চলো হসপিটালে,,,(কাঁদতে কাঁদতে সায়ানের হাত ধরে টেনে)
সায়ানঃ বোন তুই শান্ত হ,,,আমি ঠিক আছি,,,,শুধু কোমড়ে আর হাতে একটু লেগেছে,,,,কিন্তু আদি ঠিক সময়ে না আসলে যে কী হ,,,,,
দিয়াঃ মানে,,,,আদি না আসলে কী হত,,,,,আর তোমার এরকম অবস্থা হল কীভাবে?(সায়ানকে থামিয়ে এক নাগাড়ে এক দমে প্রশ্ন করে)
সায়ানঃ আরে আদিকে খোঁজার জন্য আমি আর সাফয়ান পুলিশ স্টেশনে গেছিলাম,সেখান থেকে আসার সময় সাফয়ানের একটা গুরুত্বপূর্ণ কল আসে তার জন্য অয় গাড়ি নিয়ে চলে যায়,আমি রিকশার জন্য দাঁড়িয়ে ছিলাম কিন্তু কোন রিকশাই পাচ্ছিলাম না তাই হেঁটে আসছিলাম তখন একটা মোড়ে এই হিজড়েগুলো হঠাৎ করে কোথা থেকে এসে মারা শুরু করে আমাকে,অরা অনেকে ছিল তার জন্য ওদের সাথে পেরে উঠব না তাই ওদের থেকে বাঁচার জন্য দৌড়াতে থাকি,তারপর অরা এখানে এসে আমাকে ধরে ফেলে আর মারতে থাকে তখনই আদি এসে আমাকে বাঁচায়।

সব শুনে দিয়ার প্রচুর রাগ হয় তাই দিয়াও রাস্তার পাশ থেকে একটা লাঠি নিয়ে আদির সাথে যোগ দেয় হিজড়েগুলোকে মারতে।আদি মারা থামিয়ে দিয়াকে দেখছে দিয়া হাতে একটা লাঠি নিয়ে হিজড়েগুলোকে মারছে।আদি অবাক চোখে দিয়াকে দেখছে।

দিয়াঃ তদের সাহস ত কম না আমার ভাইয়াকে মারিস তরা,আজ তদের একদিন আর আমার যতদিন লাগে।(মারতে মারতে)
এটা বলে দিয়া একটা হিজড়েকে রাস্তা থেকে টেনে তুলে চুলের মুঠি ধরে একটা থাপ্পড় দেয় তখন ঐ হিজড়েটার চুল দিয়ার হাতে চলে আসে,,,,দিয়া ত চোখ বড় বড় করে একবার চুলগুলো দেখছে আরেকবার হিজড়েটার দিকে তাকাচ্ছে,,,,,,,চারদিক নিস্তব্ধতা বিরাজ করছে।কেউই বুঝতে পারছে না এখানে ঠিক কী হয়েছে। এই সুযোগে হিজড়ে গুলো সেখান থেকে পালিয়ে যায়।দিয়া তাদের পিছু নিতে গেলে দিয়ার হাতে টান লাগে,দিয়া ফিরে দেখে আদি।
আদিঃ আরে কই যাচ্ছো,অরা পালিয়ে বেশি দূরে যেতে পারবে না।আমার লোকেরা অদের ধরে ফেলবে,এখন চলো বাড়িতে যেতে হবে।
দিয়াঃ আপনি ছাড়ুন আমাকে,এদের আমি মেরেই ফেলব,আমার ভাইয়াকে মারা এদের বুঝিয়ে দিব কার গায়ে হাত তুলেছে অরা,আর অরা কেনই বা ভাইয়াকে মারতে এসেছে সেটাও জানতে হবে।
সায়ানঃ বোন অরা পালিয়ে গেছে এখন বাড়িতে চল।আর একটাও কথা না বাড়িতে চল।
আদিঃ হে ভাইয়া চলুন,আপনি গাড়িতে গিয়ে বসুন আমি দিয়াকে নিয়ে আসছি।
সায়ান চলে যায়,,,,,আদি দিয়াকে টানতে টানতে গাড়িতে বসিয়ে দেয়,,,,,দিয়াকে গাড়িতে বসিয়ে আদিও ড্রাইভিং সিটে বসে গাড়ি স্টার্ট দেয়,,,,আর দিয়া রাগে ফুঁসছে।
সায়ানঃ আদি তুমি এখানে কীভাবে তোমাকে না কারা কিডন্যাপ করেছে,আর বোন তুইই বা আদির সাথে কীভাবে?
(দিয়া মনে মনেঃভাইয়াকে এখন কী বলব,ভাইয়া যদি জানে যে এই বজ্জাতটাকে আমি কিডন্যাপ করাতে চেয়েছি তবে ত পাপাকে বলে দিবে আর পাপা ত আমাকে মেরেই ফেলবে,,,,,দিয়া এমন হাজারও ভাবনয় মগ্ন,,,দিয়ার ভাবনার ছেদ ঘটে আদির কথায়)

আদিঃ ভাইয়া আমাকে যারা কিডন্যাপ করে তাদের থেকে দিয়া আমাকে বাঁচিয়েছে। (দিয়ার দিকে তাকিয়ে বাঁকা হেসে)।
আদির কথা শুনে দিয়ার মুখ অটোমেটিক হা হয়ে যায়।আর আদি মুখ টিপে হাসছে।
সায়ানঃ দিয়া বাঁচিয়েছে মানে?(অবাক হয়ে)
দিয়াঃ আহ্ ভাইয়া তুমি এবার থামো ত,কখন থেকে গোয়েন্দা গিরি করেই যাচ্ছ,আর এমন ভাবে বলছো যেন আমি কাউকে বাঁচাতে পারি না,একটু আগে ত নিজেই দেখলে যে কীভাবে ঐ হিজড়ে গুলোকে ডিসুম ডিসুম করে মারলাম।(কথা কাটানোর জন্য একটু ভাব নিয়ে বলল)।
সায়ানঃ হ বইন দেখলাম ত মারতে গিয়ে বেচারার চুল টেনে হাতে নিয়ে এসে পড়ছত।(কথাটা বলে আদি আর সায়ান দুজনেই হেঁসে ফেলে)
আদিঃ ভাইয়া মেয়েরা আর কিছু না পারুক চুলোচুলিটা ভালোই পারে(ড্রাইভ করতে করতে দিয়ার দিকে আড়চোখে তাকিয়ে)
দিয়া ত রাগে বোম হয়ে আছে,যেকোন সময় ব্লাস্ট হতে পারে।

গাড়ি থামে দিয়াদের বাড়ির সামনে।সায়ান গাড়ি থেকে নেমেই বাড়ির ভিতরে চলে যায়।আদি দিয়াকে বলছে গাড়ি থেকে নামতে কিন্তু নামছে না তাই দিয়াকে কোলে তুলে নেয়।

দিয়াঃ আরে কী করছেন আপনি,কথায় কথায় এত গায়ে হাত দেন কেন,নামান আমাকে,নয়ত খারাপ হয়ে যাবে।
আদিঃ কী করবে জা,,,,,ন(দিয়ার দিকে ঝুঁকে)
দিয়াঃ দেখবেন কী করি,,,,এটা বলেই দিয়া আদির কানে একটা কামড় বসিয়ে দেয়,,,,,আর আদি এমন কিছু আশা করে নি,আর কামড়টা একটু জোড়েই দেয় দিয়া, হঠাৎ করে এমন হওয়াতে আদি ব্যাথায় কানে হাত দেয় আর দিয়া নিচে পড়ে যায়।
দিয়াঃ আল্লাগো,,,,,মেরে ফেল্লো গো,,,আমার হবু পোলাপান গুলো এতিম হইয়া গেলো গো,,,,,, আপনি আমাকে ফেলে দিলেন কেন?আমি আপনার নামে কেস করমু,,,বোকার মত দাড়িয়ে না থেকে তুলুন আমাকে।
আদিঃ সরি জান,আমি বুঝতে পারি নি।দেখি কোথায় লেগেছে।
(দিয়াকে উঠিয়ে উত্তেজিত হয়ে দিয়ার কাঁধে হাত রেখে জিজ্ঞেস করল)
দিয়াঃ ছাড়ুন আমাকে,ব্যাথা দিয়ে এখন ন্যেকামো হচ্ছে।

Writer:Sadiya Siddiq Mim

আদিঃ প্লিজ জান এমন করো না,বলো আমাকে কোথায় লেগেছে।আমি সরি বলছি ত বলো কোথায় লেগেছে।(করুন স্বরে)
দিয়াঃ আমাকে ফেলা দেয়া না এবার বুঝো বাছাধন। আমি ত ব্যাথাই পাই নি,,হি হি হি,,,, একটু শিক্ষা দিলাম,,(মনে মনে)
দিয়াঃ সরেন ত আমি ভিতরে যাব।
ঝাড়া দিয়ে আদির হাত কাঁধ থেকে সরিয়ে ভিতরের দিকে হাটা দেই তখনি হাতে টান পড়ে আমি পিছনে ফিরে দেখি আদি রক্তচক্ষু নিক্ষেপ করে আছে আমার দিকে।আমি কিছুটা ভয় পেয়ে যাই।
আদিঃ বলো কোথায় ব্যাথা পেয়েছো(চিৎকার করে বলল)
দিয়া মনে মনেঃ আদি যা রেগে আছে এখন যদি বলি ব্যাথা পাই নি তবে কী যেন হয় তার থেকে মিথ্যাই বলে দেই।
দিয়াঃ এএএখানে ব্যাথা পপপেয়েছি(হাতের কনুই দেখিয়ে)
আদি সেই হাতটা নিয়ে হাত ডলছে আর চোখের পানি ফেলছে।দিয়া শুধু দেখছে ছেলেটা এমন কেন,এতটুকুর জন্য কাঁদছে।
আদিঃ চলো ভিতরে গিয়ে ঔষধ লাগিয়ে দিব।
বলেই টানতে লাগল আমাকে আবার হঠাৎ করেই থেমে আমার সামনে দাড়িয়ে আমার গালে হাত রেখে বলল।
আদিঃ আজ আমাদের কাবিন মনে আছে ত তোমার,ভিতরে গিয়ে কোন ঝামেলা করবে না,চুপচাপ সব মেনে নিবে,তোমার চাচ্চু কিন্তু এখনও আমার কাছে বন্ধি,তুমি যদি উল্টো পাল্টা কিছু করতে যাও তবে তোমার চাচ্চুর দেখা আর পাবে না
দিয়াঃ আপপপনি কককী আআআমাকে থ্রেট কককররছেন।(ভয় পেয়ে)
আদিঃ হ্যা থ্রেট করছি,,,,তোমার জন্য আমি সব করতে পারি,,,,,তোমাকে ত আমার হতেই হবে,,,সেটাতে তোমার মত থাকুক বা না থাকুক।
কথাটা বলেই দিয়াকে নিয়ে ভিতরে চলে গেলো আদি।

#চলবে

(গতকাল এক আপু কমেন্ট করে বলেছেন আহাদ নামটা রাখা নিষেধ তার জন্য আহাদ নামটা পরিবর্তন করেছি,ঐ আপুকে অসংখ্য ধন্যবাদ আমাকে কথাটা জানানোর জন্য)

(বিদ্রঃগল্পে কিছু রহস্য রয়েছে,আপনারা ধৈর্য নিয়ে পড়ুন তবেই সবটা ক্লিয়ারলি বুঝতে পারবেন।জানি না কেমন লেখলাম,নতুন লিখছি তাই হয়ত গুছিয়ে সবটা লিখতে পারছি না।ভুল ত্রুটি ক্ষমা করবেন,আর কেমন হয়েছে জানাবেন)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here