সাইকো লাভার পর্বঃ৫

সাইকো লাভার পর্বঃ৫
#সাদিয়া সিদ্দিক মিম(লেখিকা)

দিয়া সায়ানের কথার কোন উওর না দিয়ে সায়ানকে ক্রস করে দৌড়ে অর রুমে চলে এল,রুমে এসে দরজা বন্ধ করে ওয়াশরুমে গিয়ে শাওয়ার ছেড়ে ভিজতে লাগল আর চিৎকার করে কাঁদতে লাগল।

দিয়াঃ হে খোদা,তুমি আমাকে কোন জন্মের শাস্তি দিচ্ছো,আমি পারব না এই লোকটাকে বিয়ে করতে।এই লোকটার জন্য আজ আমার চাচ্চুর জীবন নরকে পরিনত হয়েছে।আমি কীভাবে এই লোকটাকে বিয়ে করে আমার সারাজীবন কাটাব।(কাঁদতে কাঁদতে)

এভাবে অনেকক্ষন থাকার পর নিজেকে ঠিক করে জামা চেন্জ করে ওয়াশরুম থেকে বের হয়।একটু পরেই দিয়ার মা দিয়াকে ডাকতে আসে দিয়া দরজা খুলে দেয় দিয়ার মা ভিতরে এসে দিয়াকে বলে,,,।

দিয়ার মাঃ যা এগুলো পড়ে আয়।আদির বাবা,মা আর মিনহা(আদির ছোট বোন) এসে গেছে।অরাই পাঠাল এটা তকে পড়াতে।তাড়াতাড়ি গিয়ে পড়ে আয়।

দিয়ার হাতে নেভি ব্লু কালারের একটা লেহেঙ্গা দিয়ে বলল,দিয়াও চুপচাপ কোন কথা না বলে ওয়াশরুমে চলে যায় চেন্জ করতে।

🍁অন্যদিকে🍁

আদি মনে মনেঃ আজ তোমাকে নিজের করে পাব সারাজীবনের জন্য,তোমার প্রতি সমস্ত রকমের অধিকারের সার্টিফিকেট আজ পাব আমি।আমার থেকে আর দূরে যেতে দিব না তোমাকে,আমার প্রতি যত অভিমান,অভিযোগ আছে তোমার সব দূর করে আপন করে নিব।আর কয়টা দিন অপেক্ষা করো জান তারপর তোমার সব ভুল ধারনাও দূর করে দিব।তখন তুমিও আমাকে আমার মত ভালবাসবে।

সায়ানঃ আদি তোমার হল,কাজি সাহেব এসে পড়েছে(দরজায় কড়া নেড়ে)
আদিঃ হে ভাইয়া আমি রেডি(দরজা খুলে বের হয়ে হাসি মুখে বলল)
সায়ান ত আদির দিকে ড্যাবড্যাব করে তাকিয়ে আছে।অসম্ভব সুন্দর লাগছে আদিকে।ফর্সা গায়ে খয়েরী কালারের শেরওয়ানি,পাজামা,চুল গুলো কপালে এসে পড়ছে,হাতে ব্যান্ডেড ঘড়ি।কোন রাজকুমার থেকে কম লাগছে না আদিকে।

(আমার আদির দিকে কেউ আবার নজর দিও না 🤭)

সায়ানঃ আরে ভাই,কী লাগছে তোমাকে,পুরাই হিরো।(কোমড়ে হাত রেখে বলল)
আদিঃ থ্যাংকু ভাইয়া।(মাথা চুলকে কিছুটা লজ্জা পেয়ে)
সায়ানঃ আরে আরে আদি দেখি আমার বোনের মত কথা বলছে,,,,,আর লজ্জাও পাচ্ছে দেখি,,,,,হয়েছে হয়েছে আর লজ্জা পেতে হবে না চলো,বোন হয়ত রেডি হয়ে গেছে চলো চলো।
আদিঃ হে ভাইয়া চলুন।
আদি আর সায়ান ড্রয়িং রুমের দিকে হাঁটা ধরল।

আদি আর দিয়ার বিয়েটা পারিবারিক ভাবেই হচ্ছে এখন তাই বাইরের কেউ নেই,দিয়ার পরীক্ষার পর বড় করে অনুষ্ঠান করে তুলে নেয়া হবে।

ড্রয়িং রুমে সবাই বসে আছে আদি আর সায়ান এসেও বসে,আদির পাশে আদির বোন মিনহা এসে বসল।আদি মিনহাকে বলল।
আদিঃ ঐ তুই এখানে বসে আছত কেন?দিয়ার কাছে যা গিয়ে দেখ দিয়া রেডি হয়েছে কী না।(কানে ফিসফিসিয়ে ধমকের স্বরে বলল)
মিনহাঃ আরে ভাইয়া তুমি কী ভয় পাচ্ছো নাকি হুম,ভাবি কী পালিয়ে যাচ্ছে নাকি,একটু ত সবুর করো সবুরের ফল মিষ্টি হয় জানো না।(মজা করে)
আদিঃ বেশি পেকেছিস গাট্টা না দিতে সর এখান থেকে।(ধমকে বলল)।
আদি মনে মনেঃ তুই ত ঠিকই ধরছত রে বইন, কেমনে তরে বুঝাই যেই মাইয়া বাপরে,পালিয়েও যেতে পারে।(চিন্তিত হয়ে)
মিনহাঃ ভাইয়া তুমি সব সময় আমার সাথে এমন করো,দেখো এর শোধ আমি ভাবিকে দিয়ে তুলব।আজ তোমার বিয়ের পর ভাবিকে আমাদের বাড়িতে নিয়ে যাব তারপর ভাবিকে আম,,,,,
আদিঃ তুই যদি তোর ভাবিকে আজ বাড়িতে নিয়ে যেতে পারিস তবে বইনা তর একদিনের শপিং খরচ আমি দিব।যত খুশি শপিং করিস।(খুশিতে গদগদ হয়ে মিনহাকে থামিয়ে)।
মিনহাঃ কথা দিচ্ছো ত(হাত এগিয়ে দিয়ে)
আদিঃ হ বইন কথা দিলাম(মিনহার হাতে হাত রেখে)
মিনহাঃ যাক ভালোই হল,,,,,আর ভাইয়া তুমি যে এত বোকা আগে জানতাম না,,,(হাসতে হাসতে)।
আদিঃ মানে(চোখ রাঙিয়ে)
মিনহাঃ তুমি ত পুরা কথা না শুনেই কথা দিয়া দিলা,,,,আব আগে আগে দেখো হোতা হে কেয়া(ভাব নিয়ে)
আদিঃ বাড়িতে গিয়ে তরে দেখত,,,,,,,,আর বলতে পারল না আদি,,,,তার আগেই তার চোখ আঁটকে যায় দিয়ার মাঝে।দিয়া এগিয়ে আসছে আদির দিকে ফর্সা গায়ে নেভি ব্লু কালারের লেহেঙ্গা,মুখে কোন মেকাপ নেই,ঠোঁটে হালকা লিপস্টিক,চোখে কাজল আর গা ভর্তি গহনা।খুব সুন্দর লাগছে দিয়াকে।

আদি দিয়ার দিকে তাকিয়েই আছে কিন্তু দিয়া চোখ তুলেও দেখছে না।দিয়াকে আদির পাশে বসানো হয়।কাজি সাহেব তার কাজ শুরু করে।আদি এখনও দিয়ার দিকেই তাকিয়ে আছে,আর দিয়া নিচের দিকে।
আদির মা দিয়ার কাছে এসে দিয়াকে বলল,,,,,

আদির মাঃ বাহ, আমার মেয়েকে ত খুব সুন্দর লাগছে।দেখছেন আপনারা ওদের দুজনকে একসাথে কত সুন্দর মানিয়েছে।
আদির বাবাঃ হে রোকসানা খুব সুন্দর মানিয়েছে, আমাদের আদির পছন্দ আছে।
কাজি সাহেবঃ আপনারা অনুমতি দিলে বিয়ে পড়ানো শুরু করি।
দিয়ার বাবাঃ এক মিনিট কাজি সাহেব,সায়ান,,,,সাফয়ান কোথায় তোমার বড় মামুকে আনতে গিয়েছিল এখনও আসল না কেন?
সায়ানঃ পাপা বড় মামু একটু অসুস্থ হয়ে গেছে হঠাৎ করে তাই ভাই আসতে পারছে না,আমাকে ফোন করে বলেছে।
দিয়ার বাবাঃ আচ্ছা কাজি সাহেব বিয়ে পড়ানো শুরু করুন।

দিয়া মনে মনেঃ আর কী কোন পথ নেই খোদা,আমার কী এই লোকটার সাথে বিয়ে হয়েই যাবে।কোন মিরাকেল কী হতে পারে না।কোন ভাবে কী এই বিয়েটা আটকানো যায় না।

দিয়া এসব ভাবতে ভাবতে কাজি সাহেব দিয়াকে কবুল বলতে বলল,,,,দিয়া চুপ করে মাথা নিচু করে চোখের পানি ফেলছে,,,,দিয়া কিছু বলছে না তাই আদি দিয়ার কানে ফিসফিসিয়ে বলল,,,,
আদিঃ জান চুপ করে না থেকে কবুলটা বলে ফেলো,,, শুধু শুধু দেরি করছো তুমি।তোমার চাচ্চু আমার কাছে আছে ভুলে যেও না।

কথাটা শুনে দিয়া চোখে পানি নিয়ে আদির দিকে তাকায়।আদির বুকের ভিতরটা মোচড় দিয়ে উঠে।কিন্তু আদিরও ত কিছু করার নেই।আদি ত কোন ভাবেই দিয়াকে হারাতে পারবে না।তাই আদিকে কঠোর হতে হবে।

আদিঃ দিয়া কবুল বলো,,,,,আমাকে রাগিও না এখন,,,,,কবুল বলো(ধমক দিয়ে)
দিয়া কিছুটা কেঁপে উঠে,তবুও দিয়া নিজেকে সামলে চোখ বন্ধ করে কবুল বলে দেয়।আদি বাঁকা হেসে আদিও কবুল বলে দেয়।তারপর রেজিস্ট্রি পেপারেও সাইন করে দেয় দুজন।আজ থেকে আদি আর দিয়া স্বামী-স্ত্রী।সবাই মিষ্টি মুখ করে খুশিতে।

মিনহাঃ পাপা আজ ভাবিকে আমি আমার সাথে নিয়ে যাব আমাদের বাড়িতে।
জোনায়েদ খানঃ বিয়াই সাহেব আমিও চাইছি আজ দিয়া মাকে আমাদের সাথে নিয়ে যেতে।
দিয়ার বাবাঃ হে হে নিয়ে যান,,,,কালকে গিয়ে নিয়ে আসব আমরা।

আদি খুব খুশি হয় দিয়া ওদের সাথে যাবে বলে।আর দিয়া চোখের পানি ফেলছে এছাড়া যে অর এই মুহূর্তে কিছু করার নেই।
দিয়াকে আদিদের বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হবে।দিয়া খুব কান্নাকাটি করছে গাড়িতে বসে।আদি দিয়ার কোমড়ে হাত দিয়ে নিজের কাছে এনে জড়িয়ে ধরে দিয়ার চোখের পানি মুছিয়ে দিতে দিতে বলল।

আদিঃ জান এভাবে কেঁদো না ত,আমার যে এখানটায় খুব লাগে(বুকের বাম পাশে হাত দিয়ে)
দিয়াঃ ছছছাড়ুন আআআমাকে,,,,ছুবেন না আমাকে,,,,আপনি ববববলেছিলেন চাচ্চু আর ছোট মামুকে ছেড়ে দিবেন বিয়ের পপপপরে, এখন ত বববিয়েটা হয়ে গেছে ওদের এখন মুক্তি দিন।(কেদে আদির থেকে ছাড়াতে ছাড়াতে)।
আদিঃ আমি কথা দিয়ে কথা রাখি মিসেস আদিল আদনান শরীফ,,,,তো নো টেনশন অরা ঠিক সময়ে বাড়ি পৌঁছে যাবে।এখন কান্না থামাও নয়ত চুমু দিয়ে দিব(দিয়াকে আরো শক্ত করে জড়িয়ে ধরে)।

দিয়া কান্না থামানোর চেষ্টা করছে কিন্তু তবুও থামছে না,,,অনেকক্ষণ কান্না করার ফলে হিচকি উঠে গেছে।এভাবে কতক্ষণ পরে আদিদের বাড়ির সামনে এসে গাড়ি থামে।সবরকম নিয়ম পালন করে দিয়াকে বাড়িতে প্রবেশ করানো হয়।

#চলবে

(জানি না ঠিক করে সবটা গুছিয়ে লিখতে পেরেছি কী না,,,,,,,ভালো না লাগলে কেউ বকা দিয়ো না প্লিজ🤗)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here