সীমাহীন ভালোবাসার নীড় পর্ব -১২

#সীমাহীন_ভালোবাসার_নীড় ২
#লেখিকাঃনওশিন_আদ্রিতা
#পার্টঃ১২
,
,
,
,
হঠাৎ পার্টি সম্পূর্ণ লাইট ওফ হয়ে গেলো।ব্যাকগ্রাউন্ডে মিউজিক বাজতে স্টার্ট করলো নির আর নাহিদ নিজের আলোচনা থামিয়ে দিলো সামনে তাকাতেই দেখলো মাইক হাতে সবার মাঝখানে দাঁড়িয়ে রয়েছে আদ্রি ঠোঁটে তার হাসি কিন্তু হাসিটা নির এর কাছে অদ্ভুদ ঠেকলো কেমন রহস্যময়। এর আগে আদ্রির এই হাসিটা সে দেখেনি।

—লেডিস এন্ড জেন্টেল ম্যান সবাই জানেন নির চৌধুরী দা গ্রেট বিজনেস ম্যান সাফ্যলোর চূড়াই রয়েছেন যিনি।আজকে তার সাফল্যার তালিকায় যোগ হলো আরও একটি বিজয় প্লিজ গিভ এ হিউজ রাউন্ড ওপ এল্পোচ ফোর হার ভিক্টোরি।

সাথে সাথে কোরতালির রোল পড়লো অনুষ্টানে। নির শুধু অবাক চাহনীতে দেখে যাচ্ছে।চিনা তাকে বড্ড অচেনা লাগছে আজকে। চেনা এই রমনীকে আজকে গোলকধাঁধার ন্যায় মনে হচ্ছে তার

—সাম লাইন আই প্রিপেইড ফোর ইউ মিস্টার চৌধুরী আই হোপ ইউ লাইক ইট

তুমি চলে যাও সাফল্যর সে শেষ চূড়াই
তোমার জীবনের সাফল্যেতা ছুয়ে দিক সে চাদকে
যে চাঁদ সূর্যের অধিনে আলোকিত করে এই পৃথিবীকে।
তোমার করা সকল অভিনয় হোক সবচেয়ে ভিন্ন
তোমার গল্পে তুমি সেরা হও আর আমি হই
সে গল্পের সৃষ্টিকর্তা।।

তোমার বিজয়ে তোমাকে জানাই হাজারো শুভকামনা
আর নিজের হারের জন্য জানায় হাজারো ধিক্কার পূর্ন্য
নতুন শুরুর অভিনন্দন।।।

আদ্রির স্পিচ শেষ হতেই সবাই একই সাথে কড়তালি দিতে শুরু করে।আদ্রি মুচকি হেসে মাইক রেখে যেতে নিলেই একজন এসে তার হাত ধরে টান দিয়ে ঘুরিয়ে নেয় আদ্রির হাত থেকে মাইক ছিনিয়ে নিয়ে অগন্তুক বলে উঠে

—দিস ইজ টাইম টু ডান্স প্লে।মিউজিক হোয়াট সে গাইজ

সাথে সাথে সকলে হৈ-হুল্লোড় করে উঠলো সাথে সাথে গান বেজে উঠলো
Chura Liya Hai Tumne Jo Dil Ko
Nazar Nahin Churaana Sanam
Badalke Meri Tum Zindagaani
Kahin Badal Na Jaana Sanam
Oh, Le Liya Dil, Oh Haai Mera Dil
Haai Dil Lekar Mujhko Na Behlaana

গানের তালে তালে আদ্রিকে নিয়ে ডান্স করছে সে আগন্তুক

—আপনার চোখে নেশা রয়েছে ম্যডাম।সে নেশাতে আমি খুন হয়েছি

আগুন্তক এর কথায় ধ্যান নাই আদ্রি তার চোখ জোড়া নির এর রক্তিম চোখে নিবদ্ধ।সে এই ভাবে ডান্স করছে নির এর এই অগ্নিরুপ দেখেই। সে জানতে চায় নির ঠিক আর কতোটা নিখুত অভিনয় করতে পারে।

হঠাৎ কোমড়ে স্পর্শ পেতেই আদ্রি রেগে যুবকটির দিকে তাকাতেই যুবক হাত সরায় নেয়।কিন্তু ছেলেটার হাত এর দিকে এক ধ্যান এ তাকায় থাকে নির

—ইউ ডোন্ট নো হু আই এম।সো স্টে এও ফর্ম মি

আদ্রি কথা বলে যুবোককে ধাক্কা দিয়ে সেখান থেকে চলে যায়। যুবোক সেই দিকে তাকায় থেকে বুকে হাত দেয় বুকের বাম পাশে

—তোমার এই অগ্নিরুপ এই যুবকের ঠিক কোন জায়গায় আঘাত করেছে তুমি নিজেও জানো না রাগের রানী রাগেস্বরী। এই রাগের আগুনে পুরতে এই আয়াজ প্রস্তুত। খুব শীগ্রই তোমাকে আমার করে নিবো রাগেস্বরী আমার একান্তই আমার।

কথা গুলো আপন মনেই বিরবির করতে করতে ফোন কানে তুলে সেখান থেকে চলে গেলো। আদ্রি ড্রিংক্স বারে বসে ছিলো হঠাৎ নির কথা থেকে এসে আদ্রির হাত ধরে টানতে টানতে ডান্স ফ্লোরে নিয়ে গেলো।

—আমার হাত ছাড়ুন

—চুপ একদম চুপ আর একটা শব্দ ওই মুখ থেকে বের হলে সিলাই করে দিবো এন্ড আই মিন ইট।

—আর আপনার মনে হয় আমি আপনার কথায় ভয় পাবো।।আমার হাত ছাড়ুন

—আমার ছোয়াই সমস্যা আর আয়াজ যখন ধরেছিলো তখন তো খুব তার সাথে ডান্স করছিলি তোর শরীরে ওর ছোয়া খুব ভালো লাগছিলো তাই না তোর আজকে জন্মের নাচ নাচাবো তোরে। তোর এই রাগী চোখ এর হাসি কেন দেখবে অন্য কেউ।

মাঝখানে নিয়ে এসে দাড় করায় নির এর হাতের ইশারায় গান শুরু হয়
Sholon si sholon si
tere ankhon ki yeh roshni
kiske liye hai kiske liye hai
chandni chandni,
tere chehre ki yeh chandni
kiske liye hai kiske liye hai
tera muskurana nazar yun jhukana
tera muskurana nazar yun jhukana
mere liye hai bas mere liye hai

sholon si sholon si
(গানের তালে তালে হিংস্র ভাবে আদ্রিকে স্পর্শ করতে শুরু করলো নিরকে। শক্ত হাতে পেটে আঙ্গুল দিয়ে চাপ দিতেই আদ্রি ব্যাথায় নির এর ঘাড় খামচে ধরলো। নির নিজের আর আদ্রির দূরত্ব ঘুচাতে আরেকটু কাছে টেনে নিয়ে আদ্রির ঘাড়ে ঠোঁট স্পর্শ করতেই আদ্রি চোখ বন্ধ করে নেয় সাথে সাথে কানে ভেসে উঠে নির এর বলা “entertainment” শব্দটা)

আদ্রি নির কে ধাক্কা দিয়ে সেখান থেকে চলে যায়। নির আদ্রির মাঝে এতোটাই ডুবে গেছিলো যার কারণে তার হাত আলগা হয়ে এসেছিলো। আর সেজন্যই আদ্রির ধাক্কাই নির আদ্রির থেকে সড়ে যায়।নির মাথার চুল টেনে ড্রিংক্স বারে চলে যায়।

সব কিছুই নাহিদ খান লক্ষ করে তার ঠোঁটে ফুটে উঠে বাকা হাসি
—যে হিংস্র বাঘিনীকে তুমি ক্ষেপিয়েছো না নির আমার প্রতি সে হিংস্রতা এখন তোমাকেই সহ্য করতে হবে। ওর তুফানে খুব জলদি ডুবতে চলেছো
রেডি ফোর ইউর ডিস্ট্রোয় চেম্প

কথাটা৷ বলেই সেখান থেকে চলে গেলো নাহিদ খান।

—হ্যালো ড্যানি

—ইয়েস ম্যাম

—আই ওয়ান্ট টু গো

—বাট ম্যাম নিহাল চৌধুরী

—আই সেইড আই ওয়ান্ট টু গো রাইট নাও কান্ট ইউ হেয়ার মি জাস্ট ওলনি ফিফটি মিনিট ইউ হেভ

কথাটা বলেই ফোন রেখে দিলো আদ্রি।

————
ছাদের এক কোণায় দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে আসে পাশের সব কিছু দেখছিলো মেহের হাতে ওয়াইন এর গ্লাস

হঠাৎ একটা হাত এসে ওয়াইন এর গ্লাস কেড়ে নিতেই সামনে রিয়াজ কে দেখে মুখ ঘুড়িয়ে নিলো

—আদ্রিতা দেখলে কি হবে ভেবেছিস

—আর কইদিন এই নাটক করতে হবে

—যতোদিন না সব শত্রুদের বিশ্বাস হচ্ছে

মেহের কিছু না বলে পিছনে ঘুরে গেলো।রিয়াজ মেহের ঠোঁট লাগানো ওয়াইন নিজেই খেয়ে নিলো। মেহের এর খোলা চুলে মুখ ডুবিয়ে দিতেই মেহের নড়ে উঠলো। রেলিং দুই হাত দিয়ে খামচে ধরে।

—রিয়াজ কি করছো লিভ মি

—উফ মেহু হাজার বার বলেছি ডোন্ট ডিস্টার্ব ইন মাই রোমান্স টাইম

রিয়াজ এর নেশাক্ত কন্ঠ শুনে চুপ হয়ে যায় মেহের

—এই ভাবে আর কইদিন নিজের রক্ষিতা করে রাখবা আমাকে।

মেহের এর গম্ভির গলায় উচ্চারিত বাক্যেটি রিয়াজ এর কানে যেতেই মেহের কে ছেড়ে সেখান থেকে চলে যায়। রিয়াজ এর প্রস্থানের কয়েক মহূর্ত পড়েই মেহের এর হাতে তরল পদার্থ এসে পড়ে।অতি যত্নে নিজের চোখ থেকে বেয়ে পড়া তরল পদার্থ নামক অশ্রু মুছে ফেলে মেহের।

,
,
,
আদ্রিয়ান পেশেন্ট দেখছিলো তার কেবিনে বসে থেকে হঠাৎ স্কার্ফ দ্বারা নিজের মুখ ঢেকে বিনা অনুমতিতে রুমে প্রবেশ করে এক রমনী।হালকা ব্রাউনী চুলের অধিকারী রমনীকে দেখে ভ্রু কুচকে তাকায় আদ্রিয়ান। কিছু বুঝএ উঠার আগেই আদ্রিয়ান এর গলায় চাকু তাক করে রমনীটি।আদ্রিয়ান চেয়ারে হেলান দিয়ে বসে পড়ে। গলা থেকে তার ফিনকি দিয়ে রক্ত বের হচ্ছে।কিন্তু সেদিকে আদ্রিয়ান এর খেয়াল নেই আর না আছে চিন্তা। সে স্বাভাবিক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে তার দিকে ঝুকে থাকা রমনীর দিকে।আদ্রিয়ান স্পষ্ট টের পাচ্ছে রমনীর শরীরের কাপুনি তার চোখে স্পষ্ট লক্ষ করছে রমনীর চোখের অশ্রুর ভীর যেগুলো গাল বেয়ে পড়ার জন্য উদ্ধিগ্ন হয়ে আছে,,

চলবে!

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here