সীমাহীন ভালোবাসার নীড় পর্ব -০৯+১০

#সীমাহীন_ভালোবাসার_নীড়
#লেখিকাঃনওশিন আদ্রিতা
#পার্টঃ৯
,
,
,
,
,
চেয়ারে বসে পানি পান করছে আদ্রি গলা ব্যাথা করচ্ছে মারাত্মক ভাবে। ৫ আঙ্গুলের ছাপ বসে আছে। মিনেট ২ এক পর পর ই খুক খুক করে কেশে উঠছে আদ্রি।আদ্রির সামনেই মাথা নিচু করে দাঁড়ায় আছে নির অপারাধীর মতো করে।

কিছুক্ষন আগের কথা,,
নির আদ্রিতার চোখে পানি দেখে তাকে ছেড়ে দিয়ে জোরে জোরে কয়টা নিশ্বাস নেয়
আদ্রিঃস্যার কি হয়েছে এরকুম করছেন কেনো(গলায় হাত দিয়ে)
নিরঃজানিনা আমি কেনো এমন করছি বুঝতে পারছিনা কিছু নিজেকে পাগল পাগল লাগছে দম বন্ধ হয়ে আসছে। পারছিনা নিজেকে সামলাতে। মনে হচ্ছে সব কিছু শেষ করে দেয়
( টি-টেবিলের উপর লাথি দেয়। কাচের হওয়ায় মহূর্তে তছনছ হয়ে যায় বিকোট আওয়াজ করে।)

আদ্রি ঘাবড়ে যায় বুঝে উঠতে পারেনা মহূর্তে মধ্যে কি হয়ে গেলো মানুষ টার কিছুক্ষন আগেই তো ভালো ছিলো
হঠাৎ করে আদ্রির মাথায় আসলো হয়তো তার ভাইয়া এসেছিলো অফিসে আর এই সব ঝামেলা বাধালো তাই হয়তো নির রাগ করেছে।

গলায় প্রচন্ড ব্যাথা হচ্ছে কোন আওয়াজ বের করতে গেলেও জান বের হয়ে যাচ্ছে। তাও অনেক কষ্টে আদ্রি বলে উঠলো

আদ্রিঃআপনি কি আমার ভাইয়ার জন্য রেগে আছেন(আস্তে আস্তে করে)

ভাইয়া শব্দটা কানে যেতেই বুকের উপরে ভার টা যেনো কমে গেলো হঠাৎ করেই সব রাগ হাওয়ার মতো উড়ে গেলো।কিন্তু সাথে সাথে বেপারটা মাথায় আসতে নিজেকেই থাপড়াতে ইচ্ছা করলো।

নিরঃনানী সব সময় বলে রাগ কমা আগে কি হয়েছে ব্যাপারটা সেটা বুঝ কিন্তু না তা বুঝার সময় কি আপনার আছে কিন্তু আমিও কি করতাম না চায়তেও রাগ উঠে গেলো কি করে সহ্য করতাম আমি ওকে অন্যকারো বুকে। আমাকে স্বপ্নে আসে কেউ বলে গেছিলো ওই ছেলেটা আমার ফিউচার শালা ধুর ভালো লাগেনা। আমার আগেই উচিৎ ছিলো এর ব্যাপারে সব খোজ নেওয়ার কিন্তু তোর তো জেদ ছিলো আদ্রির প্রতি উইক হবিনা এবার ঠ্যালা বুঝেন (মনে মনে নিজেকে গালি দিয়ে ডাক্তার কে ফোন দিলো)

ডাক্তার আসে চেক আপ করে কিছু ঔষধ এর নাম লিখে দিলো নির ডাক্তার কে সি ওফ করে এসে একটা স্টাফ কে দিয়ে আদ্রির ঔষধ আনায় নিলো

নিরঃব্যাথা হালকা কমেছে(হোট ওয়াটার ব্যাগ দিয়ে সেক করতে করতে অপরাধী সুরে বললো)

আদ্রি নির এর দিকে তাকায়ে দেখে নির বাচ্চাদের মতো মুখটা করে রেখেছে বড্ড মায়া হলো তাইতো মুখ ফটে উচ্চারণ করতে পারলোনা যে ব্যাথা কমেনি।আদ্রি উপর নিচ মাথা নাড়ালো।

নিরঃআই এম সরি আমার উচিৎ হয়নি এইভাবে রিয়েক্ট করার এই যে কান ধরচ্ছি আর হবেনা (এক হাত দিয়ে কান ধরে ঘাড় টা হালকা বেকা করে)

আদ্রি নির এর রিয়েকশান দেখে খিলখিল করে হেসে উঠলো নির ও মুগ্ধ নয়নে তাকায় থাকলো মুক্তর ন্যায় স্বচ্ছ হাসি মুখের দিকে।

নিরঃআই এম সরি আদর পাখি আমি আমার করা প্রমিজ টা রাখতে পারলাম না এই জীবন টা যদি ২ দিন এর ও হয় তবুও তোমাকে আমার চাই ভীষণ করে চাই যে কোন মূল্যে তে চাই পারবোনা তোমাকে অন্যকারো সাথে দেখতে যদি বলো আমি স্বার্থপর তাহলে হবো স্বার্থপর। বাট আই নিড ইউ আই ওয়ান্ট ইউ। তুমি আমার এমন নেশা হয়ে গেছো যে নেশা ছাড়া আমার বাচা অসম্ভব। #সীমাহীন ভালোবাসার নীড়ে তোমার স্বাগতম আদর পাখি।
তোমাকে পাওয়ার জন্য যতো পাগলামী করার করতে রাজী আমি কিন্তু তোমাকে হারাতে আর রাজী নয় দরকার পরলে সারাজীবন আমার কাছে বন্ধী করে রাখবো তবুও আর হারাতে দিবো না (মনে মনে কথা গুলো বলে মুচকি হাসি দিলো)

নির এর মন জুরে ছুয়ে গেলো আলাদা এক প্রশান্তি এতো দিনে নিজের মনের সাথেই যুদ্ধ করেছে আদ্রি কে নিজের থেকে দূরে রাখার জন্য কিন্তু এখন সে যুদ্ধের সমাপ্তি। এখান থেকেই কি শুরু হবে নির আদ্রির নতুন পথ চলা নাকি কোন ঝড় আসবে এদের আলাদা করতে।

——–

আদ্রিয়ানঃমেডিসিন নেও নি কেনো কি সমস্যা
(ভ্রু কুচকে ঔষধের পাতা চেক করে)
নওমিঃবলবোনা আমি তোমার সাথে কথা আর খাবোও না ঔষধ
আদ্রিয়ানঃকেনো
(অবাক হয়ে)
নওমিঃকয়টা বাজে হ্যা কয়টা বাজে পুরো ১২ টা বাজে (ঘড়ির দিকে আঙুল করে)
আদ্রিয়ানঃহুম ঘড়ি দেখতে জানি আমি (সোজা সাপ্টা উত্তর)
নওমিঃজানো মানে কি হ্যা যদি জানো তাহলে এতো দেরি করে আসলে কেনো জানো মিনি তোমাকে কতো মিস করচ্ছিলো(বিলায়ের গলা জরায় ধরে)
আদ্রিয়ানঃআচ্ছা শুধু মিনি মিস করছিলো বুঝি মিনির আম্মু মিস করেনি
(নওমির পাশে বসে)
নওমিঃকরেছে তো এই এইটুকু
(আঙুল দিয়ে এক চিমটি দেখায়ে)
আদ্রিয়ানঃওহ তাহলে আমাকে যখন কেউ মিস ই করে নি তাহলে আমি আর আসবো না কালকে থেকে ওকে তোমার ঔষধ তোমার নানিকে বুঝায় দেবোনি কেমন(উঠতে উঠতে)
নওমিঃএই না না প্লিজ যেও না আমিও তো মিস করেছি এতো এতো এতো গুলা মিস করেছি সত্যি অনেক গুলো মিস করেছি(দুই হাত দুই দিকে ছড়ায়ে)
আদ্রিয়ানঃআচ্ছা তাই বুঝি নওমি ম্যডাম আমাকে এতো মিস করেছে আচ্ছা তাহলে তো কালকে থেকে সময় মতো আসতে হবে।

নওমিঃহুম। আচ্ছা আদি তুমি একেবারে থেকে যাও না এখানে তোমাকে ছাড়া ভালো লাগে না তুমি থাকলে আমি গল্প করতে পারি খেলতে পারি মজা করতে পারি কেউ বকা দেয় না। কিন্তু তুমি চলে গেলে একা একা খেলতে হয় নানু তো সারাদিন রুমের ভিতরে থাকে নানা ভাই ও অফিসে যায় আর ভাইয়াকে তো খুজেই পাওয়া যায় আমি উঠার আগে চলে যায় আমি ঘুমানোর পরে আসে(মন খারাপ করে)

আদ্রিয়ানঃকি করে বুঝায় রে পাগলী আমিও যে তোকে ছাড়া থাকতে পারছিনা অজানা এক শূন্যতাই ঘিরে ধরে তাই তো এতো সময় তোর কাছে কাটায় যেখানে এর আগে এই রকম পেশেন্ট আমি দেখতাম ই না যারা চেম্বারে আসতো শুধু তাদের ই দেখতাম আমি তো ভেবেছিলাম প্রথম দিন এসেই আর আসবোনা তোকে নিয়ে যেতে বলবো কিন্তু দেখনা কোন মায়ায় ফেলে দিলি সব কাজ ছেড়ে ছুড়ে সারাদিন তোর সাথে কাটায়।কিন্তু এটা যে ঠিক হচ্ছেনা একবার যদি তুই ঠিক হয়ে যাস তখক হয়তো তোর মনেও থাকবেনা আদ্রিয়ান নামের কেউ তোর লাইফে এসেছিলো(মনে মনে কথা গুলো বলে নিজেই অবাক হয়ে যাচ্ছে)

এগুলো কি ভাবচ্ছে ওই নওমি ওর পেশেন্ট আর কিছুই না কথা গুলো মস্তিষ্ক কে বুঝানোর চেষ্টা করলেও মন তো জেদ্দি সে তো চলে নিজের ইচ্ছায় নিজের মর্জিতে কারো জোর খাটেনা তার উপর।

——

নির আদ্রিকে ছুটি দিয়েছে দেখে মেহের আজকে একাই চলে গেছে অফিসে। নির আজকে অনেক আগেই চলে এসেছে অফিসে সবাই অবাক হয়ে দেখছে নির এর কর্মকান্ড যে ছেলে অফিস টাইম শুরু হওয়ার সাথে সাথে অফিসে পা রাখতো সে এখন সময় এর আগে চলে এসেছে। আর শুধু তাই না যে ছেলে কোন কারন ছাড়া রুম থেকে বের হতোনা সে ছেলে আজকে হাজার বার রুমের বাহিরে রাউন্ড মেরে গেছে। ওর মাথা থেকেই বের হয়ে গেছে যে আজকে সে আদ্রিকে আসতে মানা করেছে মেহের কে আসতে দেখেই পিয়ন কে দিয়ে খবর পাঠায় মেহের কে রুমে আসার জন্য।

মেহেরঃআসবো ভাইয়া
নিরঃহুম আয় তোকে যে প্রডাক্ট ডিজাইন দিয়েছিলাম সেটা করেছিস
মেহেরঃআমি তো সেটা কালকেই জমা দিলাম ভুলে গেছো
নিরঃনা মানে আসলে ওহ মনে পরেছে। তুই একা এসেছিস যে মিস আদর আসেনি
(আমতা আমতা করে)
মেহেরঃতুমি না কালকে ওকে ছুটি দিলা ওর গলা ব্যথার জন্য
(অবাক হয়ে)

নিরঃওহ আসলে ভুলে গেছিলাম তুই যা
মেহেরঃহুম আচ্ছা
ভাইয়া(পুনরায় ঘুড়ে এসে),
নিরঃহ্যা
মেহেরঃকাজের পেশার টা একটু কমাও যে লেভেলের ভুলাকার হচ্ছো কবে বলে নাম ভুলে যাবা নিজের(হেসে দিয়ে)
নিরঃ(রাগী লুক দিলো)
মেহের দে দৌড়

———
নির কিছুতেই শান্তি পাচ্ছেনা কেমন জানি হাস্ফাস করচ্ছে কিছুতেই কাজে মন বসাতে পারছেনা দোম আটকে আসছে সারা রুম ময় পায়চারী করে বেরাচ্ছে তবুও যেনো শান্তি নাই

টাই এর নাট টা লুজ করে চেয়ারের উপরে রাখা ব্লেজার টা হাতে নিয়ে কেবিন থেকে বের হয়ে গেলো

নিরঃআমি আসছি আদর পাখি তোমাকে না দেখে আমি থাকতে পারবোনা পাগল হয়ে যাবো এর চেয়ে ভালো তোমাকে দেখে আসা
আই এম কামিং আদর পাখি(গাড়ি চালাতে চালাতে)

——
নির আদ্রির ফ্লাটের কলিং বেল প্রেস করে কিন্তু ওই সাইড থেকে কোন সারা শব্দ পাইনা৷অনেকক্ষন যাবত যখন কেউ আসেনা তখন নির এর চিন্তা হয় কোন রকম সোসাইটির সেক্রেটারি কে ডেকে রুমের ডুবলিকেট চাবি আনিয়ে দরজা ওপেন করায়। কিন্তু ভিতরে যেতেই অবাক হয়ে যায়। পা দুইটা যেনো আসাড় হয়ে যায় ওর পা জেনো তার এগুচ্ছেনা কারন সামনে,,,,,
সীমাহীন_ভালোবাসার_নীড়
#লেখিকাঃনওশিন আদ্রিতা
#পার্টঃ১০
,
,
,
,
আদ্রির সকাল থেকেই ধুম জ্বর। জ্বর নিয়েই ঘাপটি মেরে শুয়ে ছিলো। আদ্রির ছোট বেলা থেকেই অভ্যাস জ্বর বা অন্য কোন সমস্যা হলে ঘাপটি মেরে থাকা। যতক্ষন কেউ নিজ থেকে না দেখতো ততক্ষন কেউ বুঝতে পারতোনা আদ্রির অবস্থা আজকেও ব্যতিক্রম কিছু হয়নি।

আদ্রির ঘুম ভাঙে ১১ টার দিকে জ্বর তখন ও তার মতোই ছিলো। মাথা ব্যাথায় ফেটে যাচ্ছে তার চোখ টাও কেমন জ্বালা করছে তার আর সাথে গলা ব্যাথা তো আছে। গলায় নিল দাগ বসে গেছে আর জায়গা টা ফুলে গেছে।

প্রচুর পানির তেষ্টা পাওয়াই আদ্রি টেবিলের দিকে হাত বারায় কিন্তু জগে এক ফোটা পানিও পাই না।অনেক কষ্টে বিছানা থেকে নেমে পানি নেওয়ার জন্য কিচেনের দিকে এগিয়ে যায় কিন্তু মাঝ পথেই মাথা ঘুরে উঠে আর মেঝেতেই অজ্ঞান হয়ে পরে যায়।

নির আদ্রির বাসায় এসে দেখে আদ্রি মেঝেতে পরে আছে অজ্ঞান অবস্থায়। নির দৌড়ে আদ্রির কাছে যেয়ে আদ্রির মাথা নিজের কোলে নেয়। এক রাতেই চোখের নিচের কালো দাগ বসে গেছে ফর্সা কপাল ফেটে রক্ত বের হচ্ছে।

নিরঃআদর এই আদর পাখি চোখ বন্ধ করে আছো
কেন দেখো আমার কিন্তু এমন মজা মোটেও পছন্দ না তোমাকে আমার রাগী সাইড দেখাই নি তার মানে এটা না যে আমার রাগ নাই । এই উঠোনা গো প্লিজ(কেঁদে দিবে এমন অবস্থা)

এতো ডাকার পরেও যখন আদ্রি চোখ খুললোনা তখন নির এর পাগল প্রায় অবস্থা। নির তাড়াতাড়ি আদ্রিকে কোলে তুলে নেয় আর দ্রুত ওকে নিয়ে রুমে চলে যায়।

নিরঃহ্যালো ডক্টর তাড়াতাড়ি এখনি রয়েল কিংডম সোসাইটিতে চলে আসুন ফার্স্ট উইথ ইউর টিম রাইট নাও আপনার কাছে অনলি ১০ মিনিট আছে।

ঃ———

নিরঃআই ডোন্ট ওয়ান্ট টু হেয়ার এনি থিংক ইফ ইউ ডোন্ট ফলো মাই অর্ডার দেন আই উইল ডিসট্রোয় ইউ এন্ড ইউর হস্পিটাল জাস্ট কিপ ইট ওন ইউর মাইন্ড ইউ ব্লাডি
(রাগে চিৎকার করে).

বেস আর কি লাগে ডক্টর এর ভয়ে হাত পা কাপাকাপি শুরু যতো তাড়াতাড়ি সম্ভব নিজের মেডিকেল টিম নিয়ে হাজির হয়ে যায় নির এর দেওয়া ঠিকানাই শুধু তারা না আরও একটা মেডিকেল টিম এসে হাজির হয় সেখানে।

ওয়ার্ড বয় রা রুমের ভিতরে সব রকমের প্রয়োজনীয় জিনিস সেট করে দেয় দেন বড় বড় ডাক্টার চেক আপ করতে শুরু করে। তারা ধরেই নেয় যে মেয়েটা নির এর স্পেশাল কেউ হবে নাহলে নির কারো জন্য এতোটা কন্সার্ন না তার বোনের কেয়ার পর্যন্ত তার নানা নানি করে।

সবাই চেকআপ করে বাহিরে এসে দেখে নির এদিক থেকে ওদিক পায়চারি করছে চিন্তাই। ওর মুখ দেখেই মনে হচ্ছে যেকোন মূহুর্তে কেঁদে দিবে।

ডাক্তারঃমিস্টার চৌধুরী
নিরঃইয়েস ইয়েস সে কেমন আছে ঠিক আছে তো কিছু হয়নি তো।ওর যদি কিছু হয় আমি আপনাদের মধ্যে কাউকে ছাড়বোনা। আই উইল কিল ইউ অল
(রাগে ডাক্তার এর কলার ধরে)
ডাক্তারঃমিস্টার নির আপনার ওয়াইফ এখন ঠিক আছে।তার জ্বর এর জন্য এতোকিছু। আর উনার একটু স্পেশাল কেয়ার নিবেন একদম খাওয়া দাওয়া করেনা বিপি একদম লো আর বড় কথা উনার গলায় অনেক বেশি চাপ লেগেছে ২ দিন ঠিক মতো কথা বলতে পারবেনা। চেষ্টা করবেন যেনো ২ দিন কোন রকমের কথা না বলে কারন আরেকটু চাপ উনার জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। এমন ও হতে পারে সে আর কোন দিন ও কথা বলতে পারবেনা সো টেক কেয়ার।

ডাক্তার রা সবাই চলে গেলো। নির হাটু গেরে ফ্লোরে বসে পড়লো। দুই হাত দুই দিকে ছড়ায়ে চিৎকার করে উঠলো।
ঃআই এম সরি আদর পাখি আমার জন্য তোমার এই অবস্থা আমি তোমার লাইফে আসতে না আসতেই তোমার এই অবস্থা হয়ে গেলো। না জানি ভবিষ্যতে কি হয়।কিন্তু চিন্তা করোনা আমি তোমাকে সুস্থ করে তুলবো যে ভাবে হোক (চোখের পানি মুছে)

নির রুমে যেয়ে দেখে স্যালাইন চলছে। নির ধীরে ধীরে আদ্রির কাছে যেয়ে যে হাতে স্যালাইন লাগানো সে হাত ধরে আলতো করে নিজের ঠোঁট ছোয়ালো। কাটা জায়গা যেখানে ব্যান্ডেজ করা সে জায়গাতেও নিজের ঠোঁট ছোয়ালো।

ঘুমন্ত অবস্থাতেই কেপে উঠলো আদ্রি নির এর এমন ছোঁয়ায়।

—–

সূর্যের আলো চোখে পড়তেই ঘুম ভেঙে গেলো আদ্রির। চোখ দুইটা কচলে আসেপাশে তাকিয়ে বুঝার চেষ্টা করলো কোথায় সে।ধীরে ধীরে সব কিছু মনে পরে গেলো তার।শুয়া থেকে উঠে বসার চেষ্টা করতেই শরীরে ভারী কিছু অনুভব করলো। ভ্রু কুচকে নিজের দিকে তাকিয়ে অবাক হলো। ইয়া বড় বড় দুইটা লেপ তার শরীরের উপর। জ্বর ছূটে যাওয়াই ঘামে অবস্থা খারাপ।

কোন রকম উঠে বসে শাওয়ার নিতে চলে গেলো আদ্রির।সে মনে করলো মেহের হয়তো এগুলা করেছে। কিন্তু সারারাত যে নির ওর সেবা করেছে সেটা সে ঘুনক্ষরেও টের পেলোনা রাতের মধ্যেই নির সব কিছু পরিষ্কার করে ফেলেছে।

আদ্রি শাওয়ার নিয়ে বের হয়ে দেখে নির খাবারের প্লেট নিয়ে বসে আছে বিছানায়।

আদ্রি সেটা দেখে কিছু বলার জন্য মুখ খুলতেই নির বলে উঠলো
ঃখবরদার মুখ থেকে যেনো একটা আওয়াজ ও বের না হয় কালকের আগে কথা বললে তোমার গলার সমস্যা হতে পারে। সো কিপ ইউর মাউথ সাট এর এখানে এসে বসো।

আদ্রি হাত দিয়ে ইশারা করলো কেনো
নিরঃকারন আপনি একটা বাচ্চা যে কি না নিজের খেয়াল পর্যন্ত রাখতে পারেনা এই টুকু বয়সে বিপি লো সুগার হাই। খাওয়া দাওয়ার টাইম নাই।
(রাগী স্বরে)

আদ্রি মাথা নিচু করে নিলো আসলেই তো সে সময় মতো কবে খেয়েছে তার তেমন মনে নেয় আদ্রিয়ান যেদিন জোর করে খাওয়াতো সেদিন হয়তো টাইম মতো খাওয়া হতো নাহলে বাহির থেকে কিছু কিনে খেতো নাহলে পানি খেয়ে ঘুমায় পড়তো।

নিরঃকি বললাম কথা কানে যায় না এখানে এসে বসো
হঠাৎ নির এর চিৎকারে ভয় পেয়ে গেলো আদ্রি আর দৌড়ে নির এর সামনে বসে পড়লো। নির ধীরে ধীরে পুরো সুপ টা খেয়ে নিলো।ডাক্তার এর কাছ থেকে সব জেনে নিয়েছে কি করতে হবে না করতে হবে।

খাওয়া হয়ে গেলে নিজ হাতে আদ্রিকে পানি পান করায়ে মুখে মুছিয়ে দেয়। আদ্রি শুধু দেখে যাচ্ছে।

আদ্রি আয়নার সামনে দাঁড়ায়ে চুল মুছার জন্য হাত উঠাতেই ব্যাথায় আহ করে উঠলো। নির সুপ এর বাটি টা রেখে রুমে আসতেই আদ্রির চিৎকার শুনে বিচলিত হয়ে গেলো দৌড়ে এগিয়ে গেলো তার কাছে।

নিরঃকি হয়েছে লেগেছে কথাও গলায় ব্যাথা করছে।

আদ্রি করুন চোখে নিজের হাতের দিকে ইশারা করে আর ডান হাত দিয়ে চুল দেখায়।

নিরঃহাত ব্যাথার জন্য চুল মুছতে পারছনা(ভ্রু নাচিয়ে)
আদ্রি উপর নিচ মাথা নামায়।

নিরঃআমাকে বললেই তো হতো।
আদ্রি দুই সাইডে মাথা নাড়িয়ে বাহিরের দিকে ইশারা করে।
নিরঃকিহ মেহের কে ডাকতে বলচ্ছো
আদ্রিঃ( পুনরায় হ্যা তে মাথা নাড়ায়)
নিরঃমেহের গেছে প্রডাক্ট এর কিছু কাজে সিলেটে। আজকে ভোরের দিকেই রওনা দিলো।
(আদ্রির চুল মুছতে মুছতে)

আদ্রির কথা শুনে চোখ বড় বড় হয়ে যায় তারমানে এই ফ্লাটে শুধু নির আর ওই ভয়ে ওর হাত পা কাপাকাপি শুরু হয়ে যায় এই জন্য না যে নির এর সাথে বরং এই জন্য যে একটা ছেলের সাথে সে জানে নির কেমন আর সে কেমন নির মানবতার খাতিরে তার সাথে আছে কিন্তু এই সমাজ তো আর সেটা বুঝবেনা তারা তিল কে তাল করার আগে দুই বার ও ভাববেনা।

আদ্রি নিজের ভাবনায় বিভোর ছিলো তার ধ্যান ভাঙে পিচ্চি কোন মধুর আওয়াজে।

চলবে!!!!!
চলবে!!!!!!

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here