হৃদয়ের অনুভূতি পর্ব -০২

#হৃদয়ের_অনুভূতি
#পর্বঃ০২
#লেখকঃআয়ান_আহম্মেদ_শুভ

* যাই হোক নেহা নিজের রুমে বসে‌ কাঁন্না করছে এমন সময় তার রুমে চলে আসে তার বাবা, মা। নেহাকে কাঁদতে দেখে তার মা প্রশ্ন করলো……..

— কি হয়েছে মা? তুই এমন করে কাঁদছিস কেনো?….

— মা গো……

নেহা তার কষ্টের কথা তার মা-বাবাকে বলতে পারছে না। কি করে বলবে সে?… আজ তার কষ্টের কথা একমাত্র বিধাতা জানে। নেহা না তার কষ্টের কথা তার মা-বাবার সাথে শেয়ার করতে পারছে, আর না তার কষ্টের কথা এই সমাজের কাছে প্রকাশ করতে পারছে। নেহা নিজেকে সামলে নিয়ে তার মা-বাবার উদ্দেশ্য বললো…….

— কোথায় ছিলে তোমরা?….

— কোথায় ছিলাম মানে?…. তোর দাদা হসপিটালে ভর্তি আর আমরা তার সাথে দেখা করতে গিয়েছি……

— ওহহহহ হ্যাঁ, মা ভূলে গেছি….

— তুই ও না এখনো সেই বাচ্চাই আছিস। আমাদের সাথে তো গেলি না। অথচ আসতে লেট করে ফেলাতে একদম কাঁন্না করে শেষ। পাগলি একটা। আচ্ছা শোন মা আয়ান আসার কথা ছিলো ও কি এসেছিলো?…

— হুম, এসেছিলো…..

— ওর কাছে গেটের চাবি ছিলো। আর ওর বাবা কিছু জরুরী কাগজ পত্র পাঠিয়েছে। ঐ গুলো কি রেখেছিস তুই?….

— হুম….

— আচ্ছা আমরা তা হলে এখন‌ আসি। ফ্রেশ হতে হবে তো এখন….

— ঠিক আছে যাও…..

✒️ নেহার মা-বাবা চলে গেলো। নেহা নিজের রুমের দরজা বন্ধ করে ভাবছে কি করবে সে এখন? এটাতো নিচু কেনো মনে হচ্ছে নিজেকে? যেখানে আমার কোনো অপরাধ ছিলো না। সেখানে আমি কেনো নিজেকে নিচু ভাবছি?… যে অপরাধ করেছে কষ্ট তার পাওয়া উচিৎ। হ্যাঁ, যে আমার জীবনটাকে এলোমেলো করে দিয়েছে। তার‌ জীবনটাকে ও এলোমেলো করে দিতে হবে। আয়ান চৌধুরী যতটা সম্ভব উপভোগ করে নে। আমি এই সব কিছুর হিসেব নিবো। আমাকে যতটা আঘাত তুই করেছিস, তার থেকেও বেশি আঘাত আমি তোকে করবো। মনে রাখিস তুই…….

আনমনে কথা গুলো বললো নেহা। কষ্ট হলেও নিজেকে সামলে নিতে হবে তাকে। যেমনটা নেহা নিজেকে এর আগেও সামলেছে। নেহা বিছানায় বসে পাড়ি দিলো তার অতিতের সাগরে। আয়ানের প্রতি তীব্র আকর্ষণ যখন তার ছিলো

বান্ধবীর বিয়েতে গিয়েছিলাম সে দিন। ফটো শুটের সময় এক অপরিচিত ছেলের পাশে দাঁড়িয়ে ছবি তুললাম। ততখন পর্যন্ত আমি আয়ানকে চিনতাম না। ফটো শুটের পর আমি বান্ধবীদের সাথে গল্প করছি। হঠাৎ করে একটা ছেলে মুখে রং মেখে আমার সামনে‌ এসে দাঁড়ায়। আমি কিছু বুঝে উঠার আগেই ছেলেটা বেশখানিকটা রং আমার মুখে লাগিয়ে দিয়ে বলে। “এই ভালোবাসার রং তোমার মনকে রাঙিয়ে দিক”… বোকার মতো তাকিয়ে ছিলাম আমি তার দিকে। সত্যিই অদ্ভুত একটা মানুষ। রাগের মাথায় অনেক কথা শুনিয়েছি তাকে। তবে সে একদম হেসে উড়িয়ে দিলো সবটা। নিজের অজান্তেই সেই দিন এই আমি তার কথাতে হেঁসে ফেলি। তারপর কথা বলা। সে আমাকে ভালোবাসতো কি না জানি না। তবে আমি ভিশন ভালোবাসতাম তাকে। একটা সাধারন ছেলেকে অসাধারণ ভাবে ভালোবাসতে চেয়েছি সব সময়। আয়ান তেমনি একজন ছিলো। কিন্তু আমার ভালোবাসার কথা কখনও তাকে প্রকাশ করিনি। একদিন জানতে পারি আয়ানের অনেক মেয়ের সাথে অবৈধ সম্পর্ক আছে। একটা আপু আমাকে বলেছে তার সাথে আয়ানের সম্পর্ক আছে এবং সে আয়ানের সন্তানের মা হতে চলেছেন। আয়ান আমার জন্য নাকি তাকে প্রত্যাখ্যান করেছে। ভাবলাম একটা মেয়ে কি করে নিজেকে নিয়ে এতো বড় মিথ্যা কথা বলবে? আয়ান দেখতে সুন্দর। ধনী ঘরের ছেলে। ওর এরকম বখাটে হওয়া অসম্ভব না। সেইদিন নিজের সব স্বপ্নকে ভেঙ্গে দেই আমি। আয়ানকে নিয়ে মনের মধ্যে জন্ম নেয়া সব ইচ্ছে, ভালোবাসা মনের মধ্যেই কবর দিয়ে দেই। আয়ান আমাকে সরাসরি বলেছে সে আমাকে ভালোবাসে কিন্তু আমি তা বিশ্বাস করিনি। ওকে অবহেলা করেছি খুব। নিজের কষ্ট হলেও চেয়েছি ঐ আপুর সুখটা। ঐ আপুর পেটের সন্তানের সুখের থেকে দামী ছিলো না আমার ভালোবাসা। আয়ান আজ সেই শাস্তিটা আমায় দিলো। জোর করে আমার থেকে সব চেয়ে দামী সম্পদটা ছিনিয়ে নিয়ে গেলো। আমি কখনও কল্পনা করি নাই আয়ান আমার সাথে এমন কিছু করবে। তবে আমার বোঝা উচিৎ ছিলো। যে ছেলে অনেক মেয়ের সাথে অবৈধ সম্পর্ক রাখতে পারে। সে আমায় এমনিতেই ছেড়ে দিবে?… কখনও না।

✒️ আয়ান নেহার বাড়ি থেকে সোজা নিজের বাসায় চলে আসে। আয়ানের মনের মধ্যে খুশির জোয়ার। কেনো খুশি?সেটা ভাবছেন… আয়ান তার ভালোবাসার মানুষকে ধর্ষন করেছে বলে খুশি না। এমনকি নেহার সব কিছু কেড়ে নিয়েছে বলেও খুশি না। আয়ান খুশি এই ভেবে যে নেহাকে রিহানের থেকে দূরে সরিয়ে দিয়েছে। আয়ান খুশি এই জন্য যে নেহার কাছে এখন আর কোনো রাস্তা নেই তাকে প্রত্যাখ্যান করার। নেহা হয়েছে হয়তো ধর্ষণ তবে ধর্ষকের স্টাম্পটা কিন্তু এখন আয়ানের উপর। যাই হোক আয়ান বাসায় এসে নিজের রুমে চলে যায়। রুমে এসে আয়ান ভাবতে থাকে…… এতো খারাপ একটা কাজ আমি করলাম। সত্যিই খুব অস্বস্তি লাগছে নিজের কাছে। নেহা আমার জন্য কষ্ট পেলো। কিন্তু কি করতাম আমি? ওকে তুলে নিয়ে বিয়ে করতাম?… নেহা কখনও রাজি হতো বিয়ের জন্য?… ও মুখে যতই বলুক না না কিন্তু ওর মনের কথা আমি জানি। হ্যাঁ, অবশ্যই নেহা আমায় ভালোবাসে কিন্তু এইটা জানি না কেনো আমাকে এতো অবহেলা করে? আচ্ছা ওকি এইটা বোঝে না অন্য কারো পাশে ওকে আমি সহ্য করতে পারি না। ও কেনো রিহানের হবে? আমি বেঁচে থাকতে ওকে রিহানের হতে দিবো না। আর আজ যা করলাম তারপর তো রিহান ওকে কখনও মেনে নিবে না। যাক এতো খারাপ এর ভিতর একটা ভালো কথা আছে। এই বার মিসেস নেহা চৌধুরী আমাকে ছাড়া অন্য করোর হতে পারবে না। কিন্তু ওকে দিয়ে বিশ্বাস নেই। যদি বিয়ে করার চিন্তা বাদ দিয়ে ফেলে তখন কি হবে? না, না কিছু একটা করতে হবে। আমি জোর করে ওর ভালোবাসা আদায় করবো। কিন্তু এখন ওকে কল করে কনফার্ম হয়ে হবে যে ওর মনের কি অবস্থা এখন। জানি আজকের পর আমার জন্য ওর ঘৃণাটাই থাকবে কিন্তু যাই থাক একটা সময় এই ঘৃণা আর থাকবে না।

আয়ান পকেট থেকে ফোনটা বের করে‌ নেহার নাম্বারে ডায়েল করলো। কিন্তু আফসোস ওর নাম্বারটা বন্ধ। কি আর করার? আয়ান হতাশ‌ হয়ে ফোনটা রেখে অপেক্ষা করতে থাকলো সকাল হওয়ার……

* ভোরের আলো ফোটার আগেই আয়ানের ঘুম ভেঙ্গে যায়। চোখ কচলাতে কচলাতে দেয়াল ঘড়ির দিকে তাকিয়ে সে দেখে সবে মাত্র ৪টা বাজে। মাথাটা নিচু করে একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে বিড়বিড় করে বলে আয়ান…..

— ওহহহহ গড, কখন সকাল হবে?…..

✒️ গতকালের ঘটনার পর আয়ানের চোখে মোটামুটি ঘুম নেই বললেই চলে। নিজের ভিতর অপরাধ বোধ কাজ করছে তার। যাই হোক আয়ান সকালে বিছানা থেকে উঠে দ্রুত ফ্রেশ হয়ে নেয়। ফ্রেশ হয়ে নাস্তা শেষ করে নিজের বাইক নিয়ে বেরিয়ে যায় বাড়ি থেকে। গন্তব্য ভার্সিটি। মিনিট বিশ এক পর ভার্সিটিতে চলে আসে আয়ান। বাইকটা পার্ক করতেই আয়ান দেখতে পেলো রিহান ও রিহানের সব বন্ধু এক সাথে বসে কোনো এক বিষয় নিয়ে হাসি ঠাট্টা করছে। বলে রাখা ভালো যে নেহা আর রিহান একই ডিপার্টমেন্ট ও সেম ইয়ারে পড়ে। কিন্তু আয়ান নেহার দুই ইয়ার সিনিয়র এবং আয়ানের ডিপার্টমেন্ট ও ভিন্ন। যাই হোক আয়ান বাইকটা পার্ক করে চলে যায় ক্যাম্পাসের ভিতর। আয়ান তার কয়েকজন বন্ধুর সাথে পুকুর পাড়ে বসে আড্ডা দিচ্ছে। কিন্তু আয়ানের মন সেই আড্ডাতে নেই। আয়ান অপেক্ষা করছে নেহার। কখন সে আসবে? কিছু সময় আড্ডা দেয়ার পর আয়ান তার বন্ধু রাজকে উদ্দেশ্য করে বলে…….

— আচ্ছা রাজ তোরা আড্ডাদে আমি একটু আসছি।

— কেনো‌ মামা ক ই যাবি এখন?….

— আরে কোথায় যাচ্ছি না আমি। যাস্ট নেহার ডিপার্টমেন্ট থেকে একটু ঘুরে আসি।

— আয়ান না তুই একা যাবি না। আমরাও তোর সাথে যাবো….

— আরে চিন্তা করছিস কেনো? আমি কোনো ঝামেলা করবো না প্রমিজ। শুধু যাবো আর নেহাকে দেখে চলে আসবো শেষ।

— আচ্ছা যা তা হলে……

* বন্ধু গুলা খুব ভালোবাসে আমাকে। আর এই বন্ধু গুলাই বিপদে সবার আগে ছুটে আসে। সত্যিই ওদের মতো বন্ধু লাইফে পাওয়া ভাগ্যের ব্যাপার। যাই হোক আমি পুকুর পাড় থেকে উঠে নেহার ডিপার্টমেন্টের দিকে হাঁটা ধরলাম। নেহার ডিপার্টমেন্টে যাওয়ার সময় রিহানকে দেখলাম আমার দিকে তাকিয়ে আছে। কিছু বললাম না আমি। হঠাৎ করে রিহান আমাকে শুনিয়ে শুনিয়ে বলতে লাগলো……

— ঐ দেখ প্লে বয় আসছে আমাদের ডিপার্টমেন্টে। কাল রাতে মনে হয় হয় নাই। আজ আসছে অন্য কোনো প্লে গার্লের খোঁজে….

* ওদের উল্টা পাল্টা কথার জবাব আমার কাছে থাকলেও আমি নিরব। চাইনা কোনো ঝামেলা হোক। আমি পিছন ফিরে ওদের দিকে তাকাতেই দেখতে পেলাম নেহা গেট দিয়ে ভার্সিটিতে প্রবেশ করছে….

✒️ আজ ভার্সিটিতে আসার কোনো ইচ্ছে আমার ছিলো না। শরীরে প্রচন্ড ব্যঁথা অনুভব করছি। কিন্তু কি করবো? রিহানের সাথে কথা বলা বড্ড বেশি জরুরি। আজ রিহান আমাকে যত খুশি অপমান করুক আমি তারপরও ওর কাছে ভালোবাসা চাইবো। যে করেই হোক আমি রিহানের মনে আবার জায়গা তৈরি করবো। কিন্তু কিছুতেই আমি আয়ানকে আমার জীবনের আসার কোনো সুযোগ দিবো না। একজন রেপিস্টকে ২য় বার বিশ্বাস আমি করবো না। আয়ান রিহানের সাথে আমার দূরত্ব তৈরি করতে চেয়েছে। আমাকে নিজের করে নিতে চেয়েছে। হাহাহাহা, আমি প্রমাণ করে দিবো ওর ইচ্ছে কখনও পূরণ হবে না। আমি দেখিয়ে দিবো যে অন্য কারোর সাথেও আমি ভালো থাকতে পারি।

* ভার্সিটিতে ঢুকতেই চোখে পরলো রিহান ওর বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিচ্ছে। কিছুটা দূরে দাঁড়িয়ে আছে আয়ান। আয়ানের দিকে চোখ যেতেই আমি চোখ নামিয়ে নিলাম। ঘৃণা হচ্ছে খুব। ওর ঐ ঘৃণ্য চেহারাটা সহ্য করতে পারছি না আমি। ওর দিকে তাকাতেই কাল রাতের অত্যাচারে কথা মনে পরে গেলো আমার। অজানা ভয়ে আতকে উঠলো আমার মন। নিজেকে শান্ত করে আমি এগিয়ে যাই রিহানের দিকে। রিহান আমাকে উদ্দেশ্য করে বলতে লাগলো……

— যা একজনে শান্তি নেই আরও একজন হাজির….

সবাই হাসি ঠাট্টা করতে লাগলো। কখনও কল্পনাও করিনি। আমি!.. এই নেহা সবার হাসি ঠাট্টার কারন হবো। আয়ানের প্রতি আরো ঘৃণা করতে লাগলো আমার। যাই হোক আমি রিহানের কথা পাত্তা না দিয়ে নির্লজ্জের মতো রিহানাকে বললাম……

— রিহান তোমার সাথে আমার কিছু কথা আছে। একটা সাইডে আসবে?….

— তোমার মতো নির্লজ্জ মেয়ে আমি আমার লাইফে আর দুটো দেখিনি। এতো কিছু হয়ে যাওয়ার পরেও একান্তে কথা বলতে চাও!…

— রিহান তুমি প্লিজ আমার কথাটা তো একটু শুনবে…..

— যাস্ট শাট আপ, আমি তোমার মতো একটা চরিত্রহীন মেয়ের মুখে আমার নামটা শুনতে চাই না। একটা বাজারের…..

রিহানের কথা শেষ করার আগেই আয়ান রিহানের শার্টের কলার চেপে ধরলো। আমি অবাক হয়ে যাই আয়ানের আচরণ দেখে। কেনো আয়ান রিহানকে আটকাচ্ছে?… ওর জন্যই তো আজ আমার চরিত্রের দিকে মানুষ আঙ্গুল তুলছে। ওর জন্যই তো আমি চরিত্রহীন, নষ্টা মেয়ের উপাধি পেয়েছি। আর আয়ান তো এটাই চেয়েছে। তবে কেনো রিহানকে বাঁধা দিচ্ছে সে?… আমি আয়ানের দিকে ঘৃণা ভরা মন আর অগ্নি দৃষ্টিতে তাকিয়ে বললাম…..

— তুই ওর কলার ধরেছিস কেনো?… রিহানতো একদম ঠিক কথা বলেছে। আমি চরিত্রহীন মেয়ে…. আর তুই তো এটাই চেয়েছিস….

— চুপ, একদম চুপ। আমি কি চেয়েছি আর কি চাইনি তা পরে বলছি। কিন্তু তার আগে এই রিহানের ব্যবস্থা করতে হবে। ওকে বলতে হবে কে ওরে তোমাকে নিয়ে বাজে কথা বলার অধিকার দিয়েছে?…..

আয়ান রিহানের গায়ে হাত তুলতে শুরু করে। আমি সত্যিই এমন ঝামেলা কখনও চাইনি। আমি আয়ানের হাত ধরে রিহানকে কোনো মতে ছাড়িয়ে নিয়ে আয়ানকে…….

— ঠাসসসসস, ঠাসসসসস….। তোর এতো বড় সাহস কি করে হয়? রিহান আমার ভালোবাসা। আমাকে যেকোনো কথা বলার অধিকার ওর আছে। আমি দিয়েছি সেই অধিকার। আর রিহান আমাকে বাজে কথা তোর জন্য বলেছে। তুই এই সবের জন্য দায়ী।

আয়ান আমার কথা গুলো শুনে পাথরের মতো দাঁড়িয়ে আছে। কোনো প্রতিক্রিয়া নেই। রিহান আয়ানকে উদ্দেশ্য করে বলল….

— আয়ান তোর এতো সাহস আমাকে আঘাত করিস তুই। আজ তোকে এর উচিৎ জবাব দিতে হবে।

রিহান ও তার সব বন্ধু মিলে আয়ানকে ঘিরে ফেলে। আয়ান মাথা নিচু করে আছে। রিহান আয়ানের শার্টের কলার ধরে মারতে শুরু করলো। আয়ানের এমন অবস্থা দেখে রাজ ভাইয়া, আরো কয়েকজন বন্ধু মিলে দৌড়ে গিয়ে আসতেই আয়ান চিৎকার করে বললো…..

— স্টপ!… ওখানেই দাঁড়া কেউ এগিয়ে আসবি না। রিহান ভয় পাসনা। কামঅন হিট মি…

আয়ানের চোখ গুলো ভিশন লাল হয়ে গেছে। আমি জানিনা আয়ানকে দেখে আমার কেনো কষ্ট হচ্ছে? আমি তো ওকে ঘৃণা করি। তা হলে কেনো ওর আঘাত আমার সহ্য হচ্ছে না? আরও কিছুক্ষণ আয়ান মার খেলো। অতঃপর রিহান চলে যায়। আয়ানের ঠোঁট কেটে গেছে। রক্ত বের হচ্ছে খুব। আমি তবুও দাঁড়িয়ে আছি পাথরের মতো। আয়ান আমার দিকে তাকিয়ে মুচকি হেসে বললো……

— দাঁড়িয়ে আছো কেনো? আজ আর ক্লাস করতে হবে না তোমায়। বাসায় যাও। রেস্ট করো। এখানে দাঁড়িয়ে থাকার কোনো মানে নেই…..

আয়ানকে ওর বন্ধুরা ধরে নিয়ে গেলো। আমি কি করবো? কিচ্ছু করার নাই আমার……

— আয়ান তুই কেনো আমাদের আটকেছিস? তুই কেনো ও রিহানকে ছেড়ে দিলি?

— যাস্ট স্টপ ইট। কি করতাম? রিহানকে আঘাত করতাম!.. কি লাভ হতো? নেহা কষ্ট পেতো। দেখলি না তোরা আমি যখন মার খাচ্ছিলাম নেহা দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখছিলো। পাগলিটা সত্যিই আমায় ভালোবাসে।

— হ্যাঁ, কতটা ভালোবাসে তা বোঝা হয়ে গেছে।

— ভূল বুঝেছিস। আমি যা করেছি তারপর ওর এমন ব্যবহার অস্বাভাবিক নয়।

✒️ ভার্সিটি থেকে বাসায় চলে আসি। হাতে আর মুখে ব্যান্ডেজ বাঁধা। আমাকে এমনভাবে দেখে মা বিচলিত হয়ে পরলো। আমি মাকে এড়িয়ে রুমে চলে আসি। কারন তার ছেলে যা করেছে তার শাস্তি এর থেকেও ভয়ানক ছিলো। এই সামান্য আঘাত তার কাছে কিছুই না। রাতের দিকে হঠাৎ করেই………………..

#চলবে……………….

( “

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here