হয়তো তোরই জন্য পর্ব ১৭

#হয়তো_তোরই_জন্য
#পার্ট_১৭
#নিশাত_জাহান_নিশি

—-“হুম। আমার ভীষণ ভয় লাগছে। তোমাকে এই বাড়িতে দেখে যদি তাহাফ ভাইয়া আরো ভাইলেন্ট হয়ে যায় তখন?”

—-“ভাইলেন্ট হলেই তো ভালো। নিশ্চয়ই আবার কোনো ক্রাইম করতে চাইবে। আর তখনই আমরা তাহাফকে হাতে নাতে ধরব। পরিবারের সবার সামনে তাহাফের নোংরা মুখোশটা টেনে খুলব। এক ঢিলে দুই পাখি শিকার হবে!”

—-“আমরা যদি আগে থেকে উনার ফন্দি ধরতে না পারি তখন?”

—-“তাহাফকে সর্বক্ষন চোখে চোখে রাখতে হবে। আমার মাথায় এক্টা আইডিয়া ঘুড়ছে।”

তমা অধিক আগ্রহ নিয়ে জায়ানের দিকে তাকিয়ে বলল,,,,,,,

—-“কি আইডিয়া?”

—-“সিসি ক্যামেরা!”

—-“মানে?”

—-“সিম্পল। তোদের পুরো বাড়িতে সিসি ক্যামেরা লাগাতে হবে। এতে করে আমরা তাহাফের প্রতিটা মুভমেন্ট সম্পর্কে জানতে পারব। তাহাফ কোনো ক্রাইম করার আগেই আমাদের চোখে ধরা পড়ে যাবে। আর স্বাক্ষীস্বরূপ রয়ে যাবে সিসি ক্যামেরা ফুটেজ।”

তমা অবিশ্বাস্য দৃষ্টিতে জায়ানের দিকে তাকিয়ে বলল,,,,,,,,

—-“তোমার মাথায় এতো আইডিয়া কীভাবে আসে? আমি রীতিমত অবাক হয়ে যাচ্ছি।”

জায়ান বাঁকা হাসি দিয়ে বলল,,,,,

—-“তোর জামাই বলে কথা আইডিয়া তো থাকবেই!”

—-“ধ্যাত, আমি তো আস্ত এক্টা উল্লুক। তোমার অতো জিনিয়াস না।”

—-“আমি জিনিয়াস হলে আমার বউ ও জিনিয়াস। কিভাবে জানিস?”

—“কিভাবে?”

—“লোক যদি আমাকে জিনিয়াস বলে তাহলে তুই কি হবি?”

—-“জিনিয়াসের বউ!”

—-“তো কথাটা কি দাঁড়ালো?”

—-“আমি ও জিনিয়াস?”

—-“অভেয়েসলি। আমি জিনিয়াস হলে আমার বউ ও জিনিয়াস। কজ, আমার বউ আমার অর্ধাঙ্গিনী।”

তমা মুচকি হেসে জায়ানের দিকে তাকালো। জায়ান তমার কপালে চুমো খেয়ে সোজা বিছানা ছেড়ে উঠে ওয়াশরুমে চলে গেলো। তমা বিছানা থেকে ছেড়ে উঠে কম্বলটা ভাঁজ করে বিছানা গুছাতে ব্যস্ত হয়ে পড়ল। এর মাঝেই তমার ফোন বেজে উঠল। তমা ফোনটা ডেস্কের উপর থেকে তুলে চোখের সামনে ধরতেই ফোনের স্ক্রীনে লিমা নামটা জ্বলজ্বল করে উঠল। তমা এক গাল হেসে কলটা রিসিভ করে এক নিশ্বাসে বলে উঠল,,,,,,,,,

—-“হায় লিমা। কেমন আছিস?”

লিমা কিছুটা রেগে বলল,,,,,,,

—-“ওহ্ আচ্ছা এখন আমি ফোন দেওয়াতে হায় লিমা, কেমন আছিস, কি করছিস এসব বলতে মন চাইছে? কই এর আগে তো নিজের থেকে আমাকে ফোন দিলি না!”

—-“আর বলিস না বাড়িতে আসার পর থেকেই একের পর এক লেগে আছে। এক্টু যে শান্তিতে বসে তোর সাথে কথা বলব ঐ সময়টা ও পাচ্ছি না!”

—-“কি এমন লেগে আছে যার জন্য তুই এতো ব্যস্ত?”

—-“সে অনেক কথা। ফোনে এতো কিছু বলা যাবে না। দেখা হলে সামনাসামনি বলব।”

—-“ধ্যাত কবে না কবে দেখা হয়।”

—-“হ্যাঁ রে। আমার তো মনে হচ্ছে আর কোনোদিন দেখা ই হবে না!”

—-“মানে কি? বাড়ি থেকে বিয়ে টিয়ে দেখছে নাকি?”

তমা মুখটা ভাঁড় করে বলল,,,,,,

—-“আর দেখা। বিয়ে তো সেই সাত বছর আগেই হয়ে গেছে।”

লিমা চরম আশ্চর্যিত হয়ে বলল,,,,,,

—-“হোয়াট?”

—-“হ্যাঁ রে সত্যি বলছি। আমি ও এতো বছর আমারে বিয়ের সম্পর্কে কিছু জানতাম না। কাল জানতে পারলাম!”

—-“উফফফ আমার মাথা ঘুড়ছে। তোর কথার মাথা মন্ডু কিছুই বুঝছি না!”

—“সেজন্যই তো বললাম দেখা হলে সব বলব। ফোনে বললে কিছু বুঝবি না।”

—-“এই চল না চল একদিন দেখা করি। আমার আর তর সইছে না।”

—-“দোস্ত এখন না। কয়েকদিন পর। এখানে কিছু কাজ আছে। কাজ গুলো সেরে একদিন জায়ান ভাইয়াকে নিয়ে তোর সাথে দেখা করতে যাবো!”

—-“জায়ান মানে তোর হাজবেন্ড?”

—-“হুম।”

—-“নামটা খুব চেনা চেনা লাগছে। কোথায় শুনেছি বল তো?”

—-“আমার মুখ থেকেই শুনেছিস। জায়ান ভাইয়া আমার ফুফাতো ভাই!”

—-“ওহ্ আচ্ছা…….. মানলাম আপাতত জিজুর সাথে দেখা করাবি না অন্তত এক্টা ছবি তো দিবি? দেখে এক্টু প্রাণটা জুড়াই।”

—-“দাঁড়া হোয়াটস অ্যাপে সেন্ড করছি।”

—-“কাপল পিক ওকে?”

—-“এই না না। উনার সিংগেল পিক দিচ্ছি।”

—-“না বনু হবে না। কাপল পিক সেন্ড করবি। তাও আবার পাঁচ মিনিটের মধ্যে। না হয় তোর খবর আছে।”

কথাগুলো বলেই লিমা কলটা কেটে দিলো। তমা ফোনটা কান থেকে সরিয়ে কপাল চাপড়াচ্ছে আর বিড়বিড় করে বলছে,,,,,,,

—-“হায় কপাল। এখন কিনা ঐ জায়ানের সাথে কাপল পিক তুলে বেস্টুকে সেন্ড করতে হবে। আমি সিউর পাঁজি জায়ান এখন দারুন ভাব নিবে। বলা যায় না….. হয়তো হরেক রকম কনডিশন ও ছুড়ে দিতে পারে।”

তমার বিড়বিড়ানির মাঝেই জায়ান ওয়াশরুম থেকে বের হয়ে গেলো। টাওয়াল দিয়ে মুখ মুছতে মুছতে জায়ান আয়নার সামনে দাঁড়ালো। জায়ান এখনো উন্মুক্ত শরীরেই আছে। আয়নার দিকে ভালো করে তাকাতেই জায়ানের চোখ গেলো ঠোঁটের কাছে তমার দেওয়া বাইটার কাছে। জায়ান চোখ দুটো বড় বড় করে পিছু ঘুরে তমার দিকে তাকালো। তমা ফোনে কিছু এক্টা করছে। হয়তো ছবি তোলার ফন্দি খুঁজছে। জায়ান বাঁকা হেসে তমাকে উদ্দেশ্য করে বলল,,,,,,,,

—-“প্রকাশ্যেই তো রোমান্স করতে পারিস, কি দরকার লুকিয়ে লুকিয়ে ওসব করার? জামাই তো তোর ই। যখন মন চায় তখন আদর করবি। আমি অবশ্য রাগ করব না। উল্টো এন্জয় করব।”

তমা ফোন থেকে চোখ তুলে জায়ানের দিকে তাকালো। জায়ান হাত দিয়ে কামড়ের দাগটা তমাকে দেখালো। সাথে সাথেই তমা জিভ কেটে অন্য পাশে ফিরে গেলো। জায়ান বাঁকা হেসে দ্রুত পায়ে এগিয়ে এসে তমাকে পিছন থেকে জড়িয়ে ধরে তমার ঘাঁড়ে মুখ ডুবিয়ে ঘোর লাগা কন্ঠে বলল,,,,,,,

—-“ভালো লাগছে খুব। জানিস আমার বিশ্বাস ই হচ্ছে না, তুই আমাকে আদর করে বাইট দিয়েছিস।”

তমা মাথাটা নিচু করে লজ্জামাখা কন্ঠে বলল,,,,,,

—-“আমি কি ইচ্ছে করে দিয়েছি নাকি। হয়তো ঘুমের মধ্যে ওসব উল্টো পাল্টা করে ফেলছি।”

—-“ভুল করেই হোক বা ভালোবেসে বাইট তো দিয়েছিস। এতেই আমি সন্তুষ্ট।”

তমা অনেকক জোরাজুরি করে জায়ানের থেকে নিজেকে ছাড়িয়ে কিছুটা দূরে দাঁড়িয়ে জায়ানকে উদ্দেশ্য করে বলল,,,,,,,

—-“আমার বেস্টু তোমাকে দেখতে চায়। তাই বলেছে এক্টা কাপল পিকচার সেন্ড করতে। তুমি কি রাজী?”

—-“রাজী তবে এক্টা শর্তে!”

তমা দাঁত কিড়মিড় করছে আর বিড়বিড় করে বলছে,,,,,,

—-“জানতাম এই শয়তানটা নিশ্চয়ই কোনো না কোনো শর্ত রাখবে। যা পাঁজি এই ছেলে। আল্লাহ্ ই জানে এখন কি শর্ত দিয়ে বসে!”

তমা গলাটা ঝাঁকিয়ে মলিন হেসে বলল,,,,,

—-“কি শর্ত জায়ান ভাইয়া?”

জায়ান তমার দিকে এগিয়ে গিয়ে তমার কাঁধে দুহাত ঝুলিয়ে বলল,,,,,,

—-“আমাকে অনলি জায়ান বলতে হবে। ভাইয়া ওয়ার্ডটা কেটে দিতে হবে।”

তমা মুখটা কাচু মাচু করে বলল,,,,,,

—-“এতোদিনের অভ্যেস। পারব না আমি।”

—-“পারতে হবে তমু। বর কে ভাইয়া ডাকা যায় না।”

তমা মুখ ফুলিয়ে বলল,,,,,,

—-“আচ্ছা চেষ্টা করব।”

জায়ান মুচকি হেসে তমার হাত থেকে ফোনটা কেড়ে নিয়ে ক্যামেরা অপশনে গিয়ে তমাকে টাইট করে জড়িয়ে ধরে পর পর দুটো ছবি তুলে ফোনটা তমার হাতে ধরিয়ে দিলো। এরপর জায়ান ওর ফোনটা পকেট থেকে বের করে সোজা বারান্দায় চলে গেলো। তমা হি হি করে হেসে লিমার হোয়াটস অ্যাপে দুটো ছবিই সেন্ড করে দিলো। ফোনটা বিছানার উপর রেখে তমা সোজা ওয়াশরুমে ঢুকে গেলো।

জায়ান বারান্দার গ্রীলে হাত রেখে খুব মনযোগ দিয়ে কারো নাম্বারে কল করছে। প্রথম কল করার সাথে সাথেই ঐ পাশ থেকে পুরুষালি কন্ঠে কেউ বলে উঠল,,,,,

—-“আসসালামু আলাইকুম ভাই। কেমন আছেন?”

—-“ওয়ালাইকুম আসসালাম। আলহামদুলিল্লাহ্ ভালো আছি। তুমি কেমন আছো?”

—-“আলহামদুলিল্লাহ্। তো ভাই কি মনে করে ফোন দিলেন?”

—-“খুব ইর্মাজেন্সি এক্টা দরকারে তোমাকে কল করেছি। আই হোপ তুমি আমার হেল্প করবে!”

—-“অবশ্যই ভাইয়া। শুধু দরকার টা বলুন। দেখুন আমি কি করি!”

—-“বেশি কিছু করতে হবে না। তোমার শো রুম থেকে দশটা সিসি ক্যামেরা আমার শ্বশুড় বাড়িতে সেট করে দিতে হবে। হাতে বেশি সময় নেই। ধরো ঘন্টা খানিক!”

—-“চিন্তা করবেন না ভাই। ঘন্টা খানিকের আগেই আপনার কাজ হয়ে যাবে। আমি এক্ষনি শো রুম থেকে বের হচ্ছি। শুধু আপনি এড্রেসটা সেন্ড করেন!’

—-“থ্যাংকস ফারাবী। মেনি মেনি থ্যাংকস। আমি এক্ষনি এড্রেসটা ম্যাসেজ করে দিচ্ছি।”

—“ওকে ভাই। আল্লাহ্ হাফেজ!”

জায়ান কলটা কেটেই তমাদের বাড়ির এড্রেসটা ফারাবীর নাম্বারে সেন্ড করে দিলো। জায়ান ঠোঁট কাঁমড়ে বারান্দার গ্রীলে দাঁড়িয়ে আছে আর বিড়বিড় করে বলছে,,,,,,,

—-“আশা করছি দশটা সিসি ক্যামেরা ফুটেজে পুরো বাড়িটা আমার চোখে চোখে থাকবে। দশটার বাইরে যদি আরো লাগে তাহলে না হয় ফারাবীকে ফোন করে কিছু এক্টা ব্যবস্থা করা যাবে। সবার আগে তাহাফদের ফ্ল্যাটে সিসি ক্যামেরা গুলো ফিট করে দিতে হবে। কজ তাহাফরা যে কোনো সময় চলে আসতে পারে। তাই যা করার তাড়াতাড়ি করতে হবে।”

এসব চিন্তা ভাবনার মাঝেই তমা ওয়াশরুমের দরজা খুলে রুমে ঢুকল। তমা তোয়ালে দিয়ে মুখ মুছতে মুছতে জায়ানের মুখোমুখি দাঁড়িয়ে বলল,,,,,,,

—“চলো নিচে যাই। ব্রেকফাস্ট করতে হবে।”

জায়ান কিছুটা ভাবুক হয়ে বলল,,,,,

—-“তুই যা। আমি আসছি।”

তমা কোমড়ে হাত দিয়ে নাক, মুখ কুঁচকে বলল,,,,,

—-“তোমাকে ছাড়া নিচে গেলে আম্মু আমার বারোটা বাজবে। কপালে আর ব্রেকফাস্ট জুটবে না।

জায়ান হু হা করে হেসে তমার কাঁধে হাত রেখে বলল,,,,,,

—-“চল। খেয়ে আসি। ক্ষিদে পেলে তুই আবার ভয়ংকরী হয়ে যাস। বলা যায় না হয়তো কাল রাতের মতো আমাকে কামড়ে কুমড়ে খেয়ে নিবি।”

তমা চোখ লাল করে জায়ানের মুখ চেঁপে ধরে বলল,,,,,,,

—-“চুপ করো। অসভ্য ছেলে। জাস্ট ডিসকাস্টিং লাগে। সবসময় শুধু উল্টো পাল্টা কথা মুখে লেগেই থাকবে।”

জায়ান ওর মুখ থেকে তমার হাতটা সরিয়ে বলল,,,,,

—“এতো রাগ হওয়ার কি আছে? ভুল তো কিছু বলি নি? কাল রাতে তো তুই আমাকে সত্যি সত্যিই কামড় দিয়েছিলি। অস্বীকার করতে পারবি?”

—“ধ্যাত।”

কথাটা বলেই তমা রাগ দেখিয়ে জায়ানের থেকে নিজেকে ছাড়িয়ে শো শো বেগে রুম থেকে বের হয়ে সোজা নিচে চলে গেলো। জায়ান দাঁত বের করে হাসতে হাসতে তমার পিছু পিছু নিচে চলে গেলো। তমা আর জায়ানকে দেখা মাএই মিসেস আন্জ্ঞুমান টেবিলে ব্রেকফাস্ট সাজিয়ে দিলো। আজ ব্রেকফাস্টের আইটেম হলো মাটন বিরিয়ানী। বিরিয়ানী জায়ানের খুব পছন্দ। তাই মিসেস আন্জ্ঞুমান খুব ভালো করে স্পেশাল ভাবে বিরিয়ানীটা বানিয়েছে। বিরিয়ানী দেখা মাএই জায়ান হামলে পড়ল বিরিয়ানীর উপর। চেয়ার টেনে বসে জায়ান প্লেইটে বিরিয়ানী বাড়ছে আর লোভে জিভ চাঁটছে। তমা জায়ানকে এই রূপে দেখে নাক, মুখ কুঁচকে রেখেছে। জায়ান তমার দিকে একবার তাকিয়ে এক চামিচ বিরিয়ানী মুখে পুড়ে চোখ দুটো বন্ধ করে বলল,,,,,,,

—-“আঃহ্ গ্রেট। এওো টেস্টি বিরিয়ানী আমি বাপের জন্মে খাই নি। সাসু মা….আপনার হাতের জয় হোক। সেই লেবেলের টেস্ট হয়েছে বিরিয়ানীটা। পারলে আপনার হাত থেকে এক্টু জাদু আপনার মেয়ের হাতে ধার দিবেন। তাহলে রোজ এমন ইয়াম্মী বিরিয়ানী খেতে পারব।”

তমা মুখটা বাঁকা করে জায়ানের দিকে তাকিয়ে বলল,,,,,,,

—-“উহহহ। বয়ে গেছে আমার রোজ উনাকে বিরিয়ানী রেঁধে খাওয়াতে।”

মিসেস আন্জ্ঞুমান এক গাল হেসে তমার মাথায় গাড্ডা মেরে বলল,,,,,,

—-“জামাই তো ঠিকই বলেছে। রোজ ই তো খাওয়াবি। আমার জামাইয়ের যখন মন চাইবে তখনই রেঁধে খাওয়াবী। এখন আর কথা না বাড়িয়ে তাড়াতাড়ি খেয়ে নে। তাহাফ রা এক্টু পরেই চলে আসবে। রান্না বসাতে হবে। তুই হাতে হাতে এক্টু কাজ করে দিস। আমি একা একা সামলাতে পারব না।”

তমা মুখে বিরিয়ানী পুড়ে চোখ দুটো বড় বড় করে জায়ানের দিকে তাকালো। জায়ান চোখ মেরে তমাকে ইশারা করে বুঝালো টেনশান না করতে। জায়ান সব ব্যবস্থা করে রেখেছে।

প্রায় পনেরো মিনিট পর,,,,,,

জায়ান দ্রুত খেয়ে দেয়ে সিঁড়ি বেয়ে সোজা রুমে ঢুকে গেলো। পকেট থেকে ফোনটা হাতে নেওয়ার সাথে সাথেই ফারাবীর কল এলো। জায়ান চট জলদি কলটা রিসিভ করার সাথে সাথেই ঐ পাশ থেকে ফারাবী বলে উঠল,,,,,,,,

—-“ভাই আমি তো গেইটের সামনে। গেইটের ভিতর কি ঢুকব?”

—-“ওয়েট, ওয়েট আমি আসছি। তুমি গেইটের বাইরেই থাকো।”

কথাগুলো বলেই জায়ান ফোনটা হাতে নিয়ে দৌঁড়ে বাড়ি থেকে বের হয়ে সোজা গেইটের বাইরে চলে গেলো। ফারাবীর হাত থেকে সিসি ক্যামেরা গুলো নিয়ে জায়ান ওয়ালেট থেকে টাকা বের করে ফারাবীর হাতে ধরিয়ে দিয়ে সোজা বাড়ির ভিতর ঢুকে গেলো। জায়ান খুব সর্তকতার সাথে ড্রইং রুম ক্রস করে তিনতলায় উঠে গেলো। তাহাফদের ফ্ল্যাটের সব গুলো চাবি নিয়ে তমা জায়ানের পিছু পিছু তিন তলায় উঠে গেলো।

তমা ফ্ল্যাটের দরজা গুলো খুলে দিচ্ছে আর জায়ান রুমে ঢুকে ঢুকে খুব সর্তকতার সাথে সিসি ক্যামেরা গুলো ফিট করে দিচ্ছে। পর পর পাঁচটা সিসি ক্যামেরা তাহাফদের পুরো ফ্ল্যাটে ফিট করে দেওয়া হলো। এরপর জায়ান আস্তে করে তাহাফদের ফ্ল্যাট থেকে বের হয়ে তমার হাত ধরে দ্রুত পায়ে নিজেদের ফ্ল্যাটে চলে গেলো। জায়ান এবার তমার রুম থেকে শুরু করে তমাদের পুরো ফ্ল্যাটে আরো পাঁচটা সিসি ক্যামেরা লাগিয়ে দিলো। জায়ান আর তমা খুব সাবধানে ওদের কাজ করে যাচ্ছে। বাড়ির কাউকে কিছু বুঝতে দিচ্ছে না। কেউ কিছু বুঝতে পারলেই ক্যাচাল হয়ে যাবে। কারণ, দেয়ালের ও কান আছে।

তমা আর জায়ান যেই না ওদের কাজ শেষ করে ড্রইং রুমে সোফায় ধপ করে বসল অমনি তাহাফের পরিবার এসে ড্রইং রুমে হাজির হয়ে গেলো।

#চলবে…….

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here