হয়ত পর্ব ৪+৫

#হয়ত
পর্ব:- ৪ ও ৫
.
-‘ বাহ! তুমি তো দারুণ গাও।’
-‘ তাইনা বড় ভাইয়া? ও কিন্তু অথৈকেও হার মানিয়ে দিয়েছে। বলো তাইনা?’
-‘ একদম। এই পিচ্চিটা তনিমা খালামনির মেয়ে?’
-‘ হ্যাঁ। ‘
-‘ বেশ গাও তুমি। তা পিচ্চি কোন ক্লাসে পড়?’
তাপৌষিকে কিছু বলতেই হচ্ছে না। ওর হয়ে ঘরে উপস্থিত বাকী সকলেই উত্তর দিয়ে দিচ্ছে। এবার উত্তর দিলো রৌদ।
-‘ ভাইয়া ও ভর্তি পরীক্ষার পার্ট চুকিয়ে এসেছে। রাজশাহী বিশ্ববিদালয়ে হয়ে গেছে। ঢাবিতে ওয়েটিং এ আছে। এখন অবসর। তাই ঘুরতে এসেছে এখানে। ঠিক বলেছি ছোট আপু?’
-‘ জি ভাইয়া।’
-‘ আবার জি! এই মেয়ে তো জি এর কারখানা খুলে বসেছে।’
তাপৌষি ভীষণ লজ্জা পাচ্ছে। এরা ওকে বারবার লজ্জায় ফেলছে। সামনে বসা সেই মানুষটাও অদ্ভুত চোখে তাকিয়ে আছে তার দিকে। তনয়া বেগম মনে হয় তাপৌষির মনের অবস্থা বুঝতে পারলেন।
-‘মেয়েটাকে একটু বিশ্রাম করতে দে তোরা। কীসব শুরু করলি। আর বর্ষণ যা ঘরে যা। ঢাকা থেকে ফিরেছিস সেই কখন আর এখনো ময়লা জামা কাপড় নিয়ে বসে আছিস। আর তোরাও উঠ।’
লোকটার নাম বর্ষণ। তবে তাপৌষি আবার কনফিউশনে পড়ল ইনাকে লোক বলবে নাকি ছেলে বলবে। তবে এটা ভালোই বুঝতে পারছে দিশা আপু আর রৌদ ভাইয়াদের বড় ভাই সে।
লম্বায় সত্যি ছয় ফুটের বেশি হবে। গায়ের রঙ সম্ভবত ফর্সা ই। একেবারে বেশি ফর্সা না। ছেলে হিসেবে ঠিকঠাক। গালে চাপ দাড়ি। সেটাও স্টাইল করে ছাট দেওয়া। মাথা ভরতি চুল। হয়তো বাইরে যাওয়ার সময় চুল পরিপাটি করেই আচড়িয়ে গিয়েছিল। এখন সাজ পোশাক পরিপাটি আছে তা বলা যাবেনা। সিল্কি ছোট ছোট কিছু চুল কপালে এসে পড়েছে। হালকা ঘিয়া রঙের শার্ট পরিধানে। শার্টের হাতাগুলো কনুই অবধি মুড়িয়ে রাখা। তবে সবচেয়ে আকর্ষনীয় লোকটার চোখ। তাপৌষি কোথায় যেন পড়েছিল পৃথিবীতে সবচেয়ে সুন্দর চোখ নিয়ে জন্ম নিয়েছিল মিশরের রাণী ক্লিওপেট্রা, ট্রয় নগরীর হেলেন, সম্রাট অশোক পুত্র কুনাল এবং ইংরেজ কবি শেলি। আজকে তাপৌষি সেই লিস্টে আরও একজন কে যোগ করলো। হালকা বাদামী রঙের চোখের মণি। চোখের দিকে তাকালে নিজ মুখের প্রতিবিম্ব দেখতে পাওয়া যায়।
চুল গুলো বেশি বড় না। তবে কিছু চুল কপালে এসে পড়েছে।
কিছু কিছু মানুষ কথা না বললেও বোঝা যায় তারা কতটা ব্যক্তিত্ব সম্পন্ন মানুষ। এরা যেখানে থাকে সেখানের প্রতিটি মানুষের মাঝে নিজ উপস্থিতির ছাপ ফেলে যায়।
-‘ এই অথৈ চল। আর তাপৌষি দুপুরে খাওয়ার পর আমার ঘরে এসো তো।’
তাপৌষির ধ্যান ভাঙে দিশার ডাকে। লোকটার দিকে এতক্ষণ ও তাকিয়ে ছিল? না জানি কী ভাবছে ওরা!
-‘ জি হ্যাঁ আপু। ‘
ঘর থেকে একে একে যখন সবাই বের হচ্ছিল, তাপৌষি তখনও চেয়েছিল বর্ষণের দিকে।
.
দুপুর একটা। এ বাড়িতে দুইটার সময় সকলকে খাবার টেবিলে উপস্থিত থাকতে হয়। তাপৌষি আবার ঘরের সাথে লাগোয়া বারান্দায় যেয়ে দাঁড়ালো।
খোলা বারান্দা। মাথার উপর ছাদ হয়ে আছে নীলাকাশ। শীতকাল হওয়ায় সূর্য হালকা হলুদ আভা ছড়াচ্ছে চারপাশে।
ঘর থেকে ফোনের রিংটোন শুনতে পাওয়া যাচ্ছে। তাপৌষি ফোনটা হাতে নিয়ে দেখল তার বাবা ফোন দিয়েছে।
-‘ আসসালামু আলাইকুম বাবা।’
-‘ ওয়ালাইকুম আসসালাম। শুনো আমার হাতে এখন বেশি সময় নেই। যেহেতু তুমি আমার মেয়ে তোমাকে জানানো দরকার। আমি আর শুভ্রা আগামী শনিবার বিয়ে করছি। তুমি কী বিয়েতে থাকতে চাও?’
দুই মাস…শুধু দুই মাস হয়েছে মা মারা যাওয়ার। তাপৌষির খুব করে বলতে ইচ্ছে করছে, “তোমার মতো লোক আমি জীবনেও দেখিনি। বাবা তুমি অমানুষ। ঘৃণা করি তোমাকে। ভীষণ ঘৃণা করি।”
তবে তাপৌষি কখনোই এসব বলবে না। মা কখনো এই শিক্ষা দেয়নি ওকে।
-‘ না বাবা।’
-‘ আমিও এটাই ভেবেছিলাম তুমি আসবে না। তবে শুভ্রা তোমাকে আসতে বলেছিল। আচ্ছা আমি ওকে বুঝিয়ে বলবো। শুনো আমি ফ্লাট কিনেছিলাম না? ওখানে উঠবো। ফ্লাটে তো জিনিসপত্র কিনতে হবে। শুভ্রা নিজের মতো করে ফ্লাট সাজাতে চাচ্ছে। তবে ও তোমার রুম কীভাবে সাজাবে এ নিয়ে ভীষণ কনফিউজড। তুমি আমাকে বলো তুমি তোমার রুমে কী কী আসবাবপত্র রাখবে? আমি রেখে দিব। নাকি ওখান থেকে আসার পর নিজে হাতে রুম সাজাতে চাচ্ছো?’
তাপৌষি বলতে ইচ্ছে করছে বাবা আমাদের সেই দুই রুমের বাসাটাও খুব সুন্দর ছিল। আমার মা ছিল সেখানে। মায়ের গন্ধ মিশে আছে প্রতিটি দেয়াল আর আসবাবপত্রে। তোমার ফ্লাট আমার কাছে কখনোই ঘর হবে না। ঘর তো হয় প্রতিটি মানুষের ভালোবাসায়। আমি উঠবো না তোমার ফ্লাটে। তবে তাপৌষি এসবের কিছুই বললো না।
-‘ বাবা তোমার আর আন্টির যা পছন্দ হয় কিনে নিও।’
-‘ আচ্ছা। আমি আর শুভ্রা যেয়ে তোমাকে নিয়ে আসবো। নতুন গাড়ি কিনেছি বুঝলা। লং ড্রাইভে যাবো ফুল ফ্যামিলি।’
শেষ মুহূর্তে তাপৌষি এক ভয়ানক কথা বলে ফেললো,
-‘ শুভ্রা আন্টি আমার ফ্যামিলি নয় বাবা। উনি শুধু তোমার ফ্যামিলি। আমার ফ্যামিলি আমার মা। যদিওবা মা নেই। তবে আজীবন আমার ফ্যামিলি বলতে আমার মা’ই থাকবে।’
কথাগুলো টানা বলে ফোনটা কেটে দিলো তাপৌষি। অনেক কিছু বলে ফেলেছে সে। বাবা নিশ্চয় ওর উপর খুব রাগ করেছে।
তবে কথাগুলো বলতে পেরে তাপৌষির মন তৃপ্তি পাচ্ছে। কিছু কথা মনের মধ্যে যত চেপে রাখা হয়, হৃদপিন্ড ততো ভারী হয়ে উঠে। একসময় হৃদপিন্ডও সেই কথাগুলো জমিয়ে রাখার ভার বহন করতে চায় না। তখন মানুষের দম বন্ধ হয়ে আসে।
চোখ বন্ধ করে প্রাণ ভরে শ্বাস নিলো তাপৌষি।
.
খাবার টেবিলে সবাই এসে বসেছে। দিশাদের চাচার বাড়ির সকলেও দাওয়াত পেয়েছে। ছয় জনের টেবিলে মোট আটটা চেয়ার পাতা হয়েছে। দিশা, বর্ষণ, রৌদ, অথৈ, সকালে ডাকতে আসা মেয়েটা সহ আরও নতুন তিনটে মুখের দেখা পেলো তাপৌষি। এদের মধ্যে একজন বৃদ্ধা রয়েছেন। একসময় হয়তো সুন্দরী ছিলেন ভদ্রমহিলা। চেহারায় ভাজ পরলেও লাবণ্যতা এখনো ফিকে হয়নি। তাপৌষিকে দেখে চোখমুখ কুচকে ফেললেন তিনি। একবার তাকিয়ে চোখ সরিয়ে ফেললেন।
-‘আরে তাপৌষি একটু দাঁড়াও। আরেকটা চেয়ার এনে দিচ্ছি। ‘
-‘ না আপু লাগবে না। আমি খালামনির সাথেই খেয়ে নিবো।’
এবার বৃদ্ধা মুখ খুললেন।
-‘ দিশা ও যদি খেতে না চায় তাহলে জোড় করছিস কেন? নিজে খেয়ে নে।’
টেবিলে অনেক মজার মজার রান্না করা খাবার দেখতে পাওয়া যাচ্ছে। তাপৌষি জানে, ও এসেছে দেখে এতো আয়োজন। হয়তো টেবিলে বসা মানুষ গুলোকে দাওয়াত করা হয়েছে দুপুরে খেতে। পাশে মাটির চৌচালা বাড়িতে এদের সকলকে দেখেছে তাপৌষি। চারপাশে ঘর মাঝখানে উঠান। আচ্ছা এটা তো অনেক বড় বাড়ি। রুমগুলো ফাঁকাই পড়ে থাকে। তাহলে ওরা এখানে কেন থাকে না?
.
রান্নাঘরে তনয়া বেগম হাড়ি আর কড়াই থেকে খাবার বাড়ছেন। তাপৌষি কিছুক্ষণ দেখে নিয়ে বললো,
-‘ খালামনি আমি সাহায্য করি?’
-‘ তুমি এখানে কেন? যাও খেতে বসো। দেখেছো ছেলেমেয়ে গুলোর কাণ্ড। তোমাকে না দিয়ে নিজেরা খেতে বসে গেছে। চলো চলো। ব্যবস্থা করছি এদের।’
-‘ খালামনি আমি তোমার সাথে খাবো।’
-‘ তাইলে কিছুক্ষণ অপেক্ষা করতে হবে তাপৌষি বুড়ি। আমার হাতে এখন অনেক কাজ।’
-‘ আচ্ছা আমি অপেক্ষা করছি।’
.
-‘ একি তাপৌষি, এখনো তোমার খাওয়া শেষ হয়নি?’
-‘ দিশা আপু হয়ে গেছে। একটু দাঁড়াও, আমি হাত ধুয়ে আসছি।’
তনয়া বেগম চোখ গরম করে দিশার দিকে তাকালেন। মেয়েটার কাণ্ডজ্ঞান নেই। তাপৌষিকে জোড় করে খাবার প্লেটে তুলে দিতে যাচ্ছিলেন তিনি। তাপৌষি ভয়ে তনয়া বেগমকে প্লেট তুলে দিয়েছিল ভাত বেড়ে দেওয়ার জন্য। তবে দিশা এসে গণ্ডগোল করে দিল। ঠাঁটিয়ে দুটো চড় মারতে ইচ্ছে করছে মেয়েকে।
মায়ের লাল চোখ দেখে দিশা বুঝে গেছে মা ক্ষেপেছে। আর এই ক্ষ্যাপার কারন টা দিশা নিজেই।
-‘ চলো আপু।’
-‘ হুম চলো।’
.
দিশার রুমটা তাপৌষির খুব ভালো লেগেছে। মা যদি থাকত তাহলে তাপৌষিও বায়না করতো এমন একটা রুম করে দেওয়ার জন্য।
দিশার রুমে যখন তারা প্রবেশ করলো, আরো ৫-৬ টা মেয়েকে দেখতে পেলো। অথৈ তাপৌষিকে বেতের মোড়া আগিয়ে দিলো।
-‘ তাপৌষি আমাদের রিমি আপার বিদায় তো কালই। মেজো চাচা বিয়ে দিয়ে ভাগিয়ে দিচ্ছে জলদি। ছেলে বুঝছো আমেরিকার ইঞ্জিনিয়ার। তো সে নাকি লম্বা ছুটি পেয়েছে। তাই বউ নিয়েই ফিরবে। হালকা পাতলা অনুষ্ঠান করে বিয়ে সম্পন্ন হবে।’
তাপৌষি মিষ্টি করে হাসলো। আত্মীয়স্বজনের বিয়েতে এই প্রথমবারের মতো সে অংশ নিবে। হালকা পাতলা হলেও তার অনেক আনন্দ হচ্ছে। দিশা বলেই চলেছে।
-‘ দেখো তো এই ব্লাউজ তোমার হয় নাকি। এই যে সাদা ব্লাউজ। তুমি একবার ট্রাই করে আসো।’
দিশা এবার তাকে ঠিক মাপের ব্লাউজ দিয়েছে। সকালে তাপৌষি সাদা জমিনের সোনালি পাড়ের শাড়ি পছন্দ করেছিল। শাড়িটার সাথে ব্লাউজ একেবারে ম্যাচিং। ফিটিং ও ঠিক আছে।
-‘ আপু ব্লাউজ ঠিক আছে।’
-‘ তাইলে তো হয়েই গেলো। আসো বসো। সবার সাথে পরিচয় করিয়ে দেই। যেই মেয়েটার ব্লাউজ তোমার ফিটিং হলো সে হলো প্রাপ্তি। তোমার একবছরের ছোট। ইনি আমাদের পাড়ার বিউটি কুইন। বুঝছো?’
প্রাপ্তি মেয়েটা লজ্জা পেলো। হয়তো এই মেয়েটাও তাপৌষির মতো নিজের প্রশংসা নিতে পারে না।
মেয়েটিকে ভালো করে লক্ষ্য করলো তাপৌষি। তামাটে গায়ের রঙ। মুখের মাঝে মাঝে রোদে পোড়া দাগ। মেয়েটা হয়তো ছোটকালে ফর্সা ছিলো। মাঠে রোদে হেঁটে নিজের চেহারার প্রতি উদাসীনতা দেখিয়েছে।
প্রাপ্তি মেয়েটা শুধু হাই বললো।
দিশা একে একে সকলের সাথে পরিচিত করে দিতে লাগলো।
-‘ আমার পাশে যে বসে আছে, এ হলো অথৈ। একে তো আগেই দেখেছো। রিমি আপুর মামাতো বোন। এখানে থাকে না। পিউর ঢাকাইয়া মাইয়া। তবে কথাবার্তায় তা বুঝতে পারবে না। আর এই নীল রঙের জামা পড়া মেয়েটা দেখছো, ইনি হলেন বিয়ের কনে। চেহারা দেখলেই যে কেউ বলে দিবে এর বিয়ে। দেখছো কী গ্লো করছে?’
তাপৌষি দুজন কেই দেখলো। এরা সবাই খুব সুন্দর। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে শুধু ফর্সাকেই সুন্দর ধরা হয়। তবে তাপৌষি জানে সুন্দরতা কী। মা একদিন বলেছিল,
” তাপৌষি আমরা ফর্সা, কালো, শ্যামলা নই। সবার আগে আমরা মানুষ। প্রতিটি মানুষের আলাদা সৌন্দর্য আছে। যার সাথে যে সৌন্দর্য খাপ খাবে তাকে সেভাবেই তৈরি করেছেন সৃষ্টিকর্তা। আমি তুমি তাদের কখনোই হেয় করতে পারি না।”
তাপৌষি দিশার কাছেই জানতে পারলো বাকী তিনজন ইরা, নিপা, নেহা।
নিপা আর নেহা দুই বোন। দিশাদের প্রতিবেশী। আর ইরা হলো রিমির বান্ধবী।
.
অনেকক্ষণ আগেই রুমে এসেছে বর্ষণ। হাতে মোবাইল নিয়ে ফেসবুকে নিউজফিড স্ক্রল করে চলেছে সে। হঠাৎ একটা পোষ্টে চোখ আটকে গেলো। নাড়িশ্যায় পদ্মার পাড়ে ভাঙন শুরু হয়েছে। হাজার হাজার মানুষের বাড়িঘর আজ নদী গর্ভে। পোষ্টের ছবিগুলোতে দেখা যাচ্ছে এলাকার একজন সচেতন নাগরিক বাস্তুহারা মানুষদের খাবার আর শীতের কম্বল দিচ্ছে।
এই লোকটার পরিবার কেমন তা এলাকার সবাই জানে। গাজীপুরে ইনার একটা পোশাক কারখানা রয়েছে। আগে একজন মন্ত্রীর পি.এ ছিলো। অথচ রাতারাতি বড়লোক। এলাকায় ছিনতাই, ডাকাতি, রাহাজানির সাথে এই লোকের পরিবার জড়িত। লোকটার বড় ছেলে খুনের অভিযোগ মাথায় নিয়েও আরামসে ঘুরে বেড়াচ্ছে। লোকটার নামেও খুন, নারী পাচার সহ আরও কিছু মামলা আছে। ছোট ছেলেটা মদ, গাঁজা, ইয়াবা খেয়ে খেয়ে পুরাই বখে গেছে। এলাকার চেয়ারম্যান পদের প্রার্থী হওয়ায় এই লোক দেখানো কাজ করছে। অথচ সব জেনেও সাধারণ মানুষ একে হুজুর হুজুর করছে।
ছবিগুলোর লাইক আর কমেন্ট দেখে বর্ষণের মনে পড়ে গেলো মেক্সিকোর মাদক সম্রাট হোয়াকিন গুজম্যান ওরফে এল চাপো’র কথা। লোকটা কুখ্যাত ছিল সারা বিশ্বের কাছে। কোকেন পাচার থেকে শুরু করে মানব হত্যা, এমন কোন কাজ নেই যা তিনি করেননি। অথচ নিজ এলাকায় তিনি মহান হতে চেয়েছেন। এলাকার মানুষ তাকে মানব-দরদী হিসেবে জানতো। তবে আশ্চর্য হলেও সত্য লোকটি নিজের ছেলেকে নিয়ে ডুবেছে। ছেলে অভিদিও গুজম্যান লোপেজও তার মতো কুখ্যাত মাদক ব্যবসায়ী হয়েছিল পরবর্তীতে। তবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে এও গ্রেপ্তার হয়। ক্ষমতার লোভ ধ্বংস বয়ে আনে এই ঘটনাই তার প্রমাণ।
.
গল্পের আসর বসেছে দিশার রুমে। কথায় আছে,” মেয়েরা যে জায়গায় একত্রিত হবে গল্প সেখানে চলতেই থাকবে।”
দিশাদের গল্পের আসরে আজ স্বল্পভাষী তাপৌষিও মন খুলে কথা বলছে। হঠাৎ তাপৌষি চিল্লিয়ে উঠলো,
-‘ কী বলো রিমি আপু? সত্যি আগে হবু বরকে দেখো নি? একেবারে বিয়ের দিনই প্রথম দেখবা? এ কেমন কথা? তুমি কী প্রেমও করো নি?’
-‘ না পিচ্চি। বাবা-মা এই প্রেম ভালোবাসা পছন্দ করে না। ছোটবেলা থেকেই ছেলেদের সাথে কথা বলার উপর নিষেধাজ্ঞা ছিল।’
-‘ দিশা আপু তোমার ক্ষেত্রেও এমন নিয়ম?’
-‘ আরে না। আমার মা অনেক হেল্পফুল। প্রেমট্রেম নিয়ে সমস্যা নাই।’
তাপৌষির এবার মন খারাপ হয়ে গেলো। কেন এমন হয়?
-‘ এটা কেমন কথা আপু? তোমার সাথে যার বিয়ে তাকে কী তোমরা আগে থেকে চিনো? ফ্যামিলি রিলেটিভ? ‘
-‘ না তো। কেন কি হয়েছে?’
-‘ তার সাথে আলাদা ভাবে কথা হয়েছে? ‘
-‘ না। আচ্ছা কী হয়েছে সেটা তো বলবে!’
.
.
চলব…..

1 COMMENT

  1. ন্যাড়িশা!! এটা কোথায়?? ঢাকা দোহারে না কি 🤔 যাই হোক আমার বাসা ঢাকা দোহারে জয়পাড়ায়,, গল্পটা খুব সুন্দর হয়েছে কিন্তু লেখকের নাম নেই কেনো ??

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here