১৬ বছর বয়স পর্ব ৮

গল্পর নাম : #১৬_বছর_বয়স
#পর্ব_ ৮ : #লাভ_বাইট!
লেখিকা : #Lucky

শাওন নিজের রুম থেকে কারো সাথে ফোনে কথা বলতে বলতে বেরিয়ে এলো। আজ সে সাদা শার্ট আর কালো প্যান্ট এর সাথে কালো টাই আর কালো জুতা পরেছে। সাথে হাতে নেভি ব্লু কোট টা ভাজ করে রাখা। আমি ব্যান্ডেজ করা হাতটা নিজের মুখের সামনে ধরে ছিলাম। শাওনকে দেখে ওর দিকে ওই অবস্থাতেই তাকালাম। উনি ফোনে কথা বলতে বলতে আমার দিকে স্বাভাবিকভাবেই এক পলক তাকিয়ে না থেমেই চলে গেল যেন উনি কিছুই জানেনা। আমি ধীরে ধীরে দুইবার পলক ফেললাম আর ওনার যাওয়া লক্ষ্য করলাম। উনি আমাকে পাত্তা না দিয়েই বেরিয়ে গেলেন।
আমি হুট করে নিজের হাত নামিয়ে নিজেকে কঠোর ভাবে বললাম, মিলা এটাকে আর কিছুনা জুতো মেরে গরু দান বলে। গরু দান। বুঝলি?তাই এত অবাক হবার কিছুই নেই। হুহ।

আবার ভ্রুকুচকে হাত টার দিকে তাকালাম আর মনে মনে বললাম, কিন্তু উনি এটা কখন করলেন? আর আমি টেরও পেলাম না!
একটা নিঃশ্বাস ফেলে ঘড়ির দিকে তাকালাম। আজ এত সকাল সকালই উনি অফিসে গেলেন?
আমি সোফা থেকে নেমে দৌড়ে গোসল সেরে নিতে গেলাম। আজকের গোসল টা কাকতাড়ুয়ার মত দিচ্ছি। তবে পার্থক্য একটাই কাকতাড়ুয়া দুইটা হাত মেলে থাকে কিন্তু আমি শুধু ডান হাত মেলে আছি। রিক্স নেওয়া যাবে না। কাটা জায়গায় বেশি নাকি পানি লাগাতে নেই। ওনার জন্য এখন ঘুমের সাথে সাথে শান্তির গোসলও শেষ। আরো কি কি শেষ হবে কে জানে!
মাথা মুছতে মুছতে বেরিয়ে এলাম। বা হাত দিয়ে মাথা মুছে শান্তি নাই।
বিছানায় বসলাম। তোয়ালে রেখে চট করে পাখি দুইটা বের করলাম। কেন জানিনা কিন্তু এই দুইটা সত্যি অনেক ভালো লাগে।

আজ আবার সন্ধ্যায় সময় ছাদে গেলাম। ফুরফুরে বাতাসে অনেক ভালো লাগছে। আজ অনেক বাতাস। হয়ত রাতে বৃষ্টি হবে। ইস যদি ভিজতে পারতাম। গ্রামে কত ভিজেছি। গ্রামে কাটানো সব গুলো মূহুর্ত চোখে ভেসে উঠল। বিশেষ করে কমলা-হলুদ রঙ এর কৃষ্ণচূড়া ফুল গাছটার নিচে শুয়ে থাকা। আর ফুলগুলো হালকা বাতাসে এসে আমার মুখে পরা।
আজ যদি বাবা মা বেচে থাকত তাহলে কি আমার জীবন টা অন্য রকম হত?! নিজেকেই নিজে প্রশ্ন করলাম।
হয়ত হত। হয়ত হত না। কিন্তু এই গরিলাটাকে তাহলে জীবনেও বিয়ে করতাম না।। সাথে সাথে শাওনের গাড়ি গেট দিয়ে ঢুকল। সাথে সাথে নিচে ছুট লাগালাম কারন আমি দরজা খুলে এসেছি।
বাসায় ঢুকে সোফাতে বসে আছি। দুই পা নাড়ছি। না জানি আজ আবার কি করে উনি আমার সাথে!
শাওন দরজা খুলে ঢুকতেই আমি নড়েচড়ে বসলাম আর পা নাড়ানো বন্ধ করলাম। শাওন নিজের রুমের দিকে চলে গেল। আমি আড় চোখে তাকিয়ে দেখলাম যে ওনার হাতে একটা বড় বক্স আর সেটাতে কাগজে ভরা।
এগুলা দিয়ে কি করবে?
শাওন গোসলে চলে গেছে আন্দাজ করে আমি খেতে বসে পড়লাম। আমি ওনার মুখোমুখি হতেই চাই না। ডান হাতের কারনে চামচ দিয়ে খেতে হচ্ছে। যেহুতু তরকারি আছে মাছ, ডাল আর সবজি
তাই ডান হাত অকেজো হবার কারনে শুধু ডাল আর সবজি খাচ্ছি।
অনেক সময় লেগে যাচ্ছে খেতে। শাওন গোসল সেরে একটা ছাই রঙ এর ফুল হাতা টি-শার্ট এর সাথে কালো ট্রাউজার পরে ওই কাগজ গুলো নিয়ে এসে সোফার সামনের টি-টেবিলে রাখলো। তারপর ওই টি-টেবিলটা ঠেলে একটু সামনে নিয়ে গেল। উনি মেঝেতে বসে কাগজ গুলো বের করতে লাগলেন। শুধু কাগজ না সাথে কলম, পেনসিল, রাবার, কেচি স্কেল, আঠা সহ আরো কি কি যেন। তারপর শক্ত কার্ড বোর্ড এর উপর কাজ করতে লাগলেন। আমি খাওয়া বাদ দিয়ে এখন ওদিকেই তাকিয়ে আছি। উনি খুব সিরিয়াস হয়ে কাজ করছেন।
সত্যিই একটা ছেলে যখন সিরিয়াস হয়ে কাজ করে তাকে অনেক সুন্দর লাগে।

১মিনিট! কি লাগে? সুন্দর! মিলা তোর মাথা ঠিক আছে? উনি সুন্দর? হুহ। গরিলা গরিলাই থাকবে। বলেই নিজেকে বা হাত দিয়ে বাতাস করতে লাগলাম। তারপর আবার আড় চোখে তাকালাম।
উনি ঘর বানাচ্ছে! এইটুকু সময়ে এতটা কাজ করে ফেলেছেন!
তারপর মনে মনে বললাম, উনি অল্প সময়ে করেছে নাকি আমিই গাধার মত অনেকক্ষন ধরে তাকিয়ে আছি!? তাড়াতাড়ি ভাত মুখে দিতেই দেখলাম ভাত অনেক ঠান্ডা হয়ে গেছে। হবার ই কথা এসি অন আছে যে। আমি উঠে কিচেনে গিয়ে বাম হাত দিয়েই প্লেট ধুয়ে রাখলাম। এখন কিচেনে দাঁড়িয়েই চিন্তা করতে লাগলাম যে আজ কই যাব আমি! ওনার রুমে থেকে বের করে দিল এখানে। কিন্তু এখন নিজেই উড়ে এসে জুড়ে বসেছে। যদিও উনি সোফাতে বসেন নি। যে সোফাতে আমি ঘুমাই তার একটু সামনেই। আরকি সোফার দিকে ওনার পিঠ ফেরানো আছে। আমি গুটিগুটি পায়ে গিয়ে সোফাটার পিছনে দাড়ালাম।
শাওন কাজের দিকেই মনোযোগ রেখে বলল, গেট আউট।
আমি হা হয়ে গেলাম। ওর কি পিছনেও চোখ আছে নাকি! জলদিই হা বন্ধ করে বললাম, আপনি আমার জায়গায় কেন এসেছেন!
শাওন আমার দিকে না ঘুড়েই বলল, এই বাসা আমার। সো এখানে তোমার বলে কোনো কিছুই নেই।
অপমান করল আমাকে এইমাত্র উনি? আমি রাগে গজ গজ করতে লাগলাম আর বললাম, তাহলে কোথায় যাব আমি?
– That’s none of my business. Just stay away from me.

হুহ আমার বয়েই গেছে যে আপনার কাছে থাকব।
ওনার বেডরুমে ত যাবই না। কারন গেলেই কিনা আমাকে মাঝরাতে ঘুম থেকে তুলে বাহিরে বের করে দিয়ে বলে “এটা আমার বেডরুম, গেট আউট!”

তাই দাতে দাত চিপে জলদি জলদি এসে ওনার পিছনে সোফায় বসলাম। মানে যেটা আপাতত আমার বিছানা।
বসেই অন্য দিকে তাকিয়ে রইলাম। উনি হালকা ঘাড় ঘুরিয়ে তাকিয়েই আবার কাজে মনোযোগ দিলেন। কিছুই বললেন না।
যাক চুপ আছে এটাই ভাল। আমি আড়চোখে আবার ওনার কাজের দিকে তাকালাম। সত্যিই কাগজ দিয়েও এত ভাল কিছু করা যায়?
সময় গড়িয়ে ১০ টা তারপর ১১ টা। শাওনের সিরিয়াস ভাবে কাজ চলছেই। আমিও খুব সিরিয়াস ভাবেই দেখছি। এটাই তাহলে আর্কিটেক্ট দের কাজ। শাওন তাহলে একজন আর্কিটেক্ট? চোখ বড়সড় করে তাকালাম।

ঘুম ঘুম ভাব আসছে। তাই ছোট বালিশের মত জিনিসটা মাথার নিচে দিয়ে ওনার কাজ দেখতে লাগলাম। আর উনি কোনো ক্লান্তি ছাড়াই কাজ করে যাচ্ছেন বলে অবাক হলাম।

কখন ঘুমিয়ে গেছিলাম টের ও পেলাম না। সকালে চোখ খুললাম। উপরের দিকের হালকা সবুজ ছাদ চোখে পরল। ঘাড় ঘুরিয়ে টি-টেবিলে চোখ রাখতেই খেয়াল করলাম শাওনের তৈরি করা মোটা কাগজের বিল্ডিংটা। পুরো কমপ্লিট। ডিজাইনও অনেক সুন্দর। ৭ তালা বিল্ডিং। বিল্ডিং টার গা দিয়ে সিড়িটা যেন লতাপাতার মত পেচিয়ে উঠছে। হোয়াইট আর অফ-হোয়াইট কাগজ মিলে তৈরি বিল্ডিং। সত্যিই সুন্দর।

১মিনিট, আমার পায়ের কাছে ভারি ভারি লাগছে কেন? চোখ নামিয়ে তাকাতেই অবাক হলাম। শাওন ঘুমিয়ে আছে! তাও আবার আমার পায়ের উপর। আর কোনো জায়গা পান নি? সোফা ছোট বলে পা টানটান করে রাখা যায় ই না তাই ডান কাত হয়ে শুয়েই এদিক ওদিক ঘুরি। এমনিই শান্তি নেই তার উপর আবার এই নবান শুয়ে আছেন। পা ঝি ঝি করছে।
কি করব! ডাকলে কি আবার রেগে যাবে! উঠে বসতেও পারছি না। কি করব বুঝতেও পারছি না। তাই শুয়েই রইলাম।
পা হালকা নাড়াচাড়া করার চেষ্টা করতেই শাওন ঘুমের ঘোড়েই পা টা আলত করে টেনে নিল। আমি এই কান্ড দেখে অবাক হয়ে হা করে মুখ থেকে একটা হাফ ছাড়লাম।
তিরিশ মিনিট হলো মহারাজ এখনো ঘুমাচ্ছে আমার পায়ের উপর। আমি ওর মুখের দিকেই তাকিয়ে আছি। যদি একটু উঠত! কিন্তু উঠার নাম নেই। ঘুমিয়ে থাকা অবস্থায় দেখে মনে হয় কতই না নিষ্পাপ সে। হুহ।
সাড়ে সাত বাজে। কত রাত অব্দি কাজ করেছেন তাহলে যে এখনো ঘুমাচ্ছেন!
কিছুক্ষণ পরেই উনি মাথা নাড়িয়ে চোখ খুললেন। আমি উনার দিকেই তাকিয়ে ছিলাম তাই চোখে চোখ পড়ল। আমি সাথে সাথে চোখ ঘুরিয়ে অন্য দিকে তাকালাম।
উনি ৫ সেকেন্ড মত ওভাবেই শুয়ে থেকে বিষয়টা বুঝার চেষ্টা করলেন যে উনি কোথায় শুয়ে আছেন। বুঝতে পেরে ফট করে মাথা তুলে উঠে বসলেন। কোনো রিএকশন নেই যেন কিছুই জানেন না। তারপর হাত দিয়ে টি-টেবিলে রাখা ফোন টা নিয়ে সময় দেখলেন। বুঝলেন যে অনেক দেরি হয়েছে আজ।
“shit” বলে উঠে নিজের রুমে চলে গেলেন।

আমি হাফ ছেড়ে উঠে বসে দুই হাত দিয়ে নিজের পা দুটো ধরলাম। অবশ হয়ে আছে। আমি শাওনের রুমের দরজার দিকে নাক মুখ কুচকে তাকালাম।
“গরিলা একটা” বলে উঠলাম।।

আমি শাওনের রুমে ঢুকলাম। উনি গোসল করছে এখনো। মনে করেছিলাম গোসল শেষ। যাক কি আর করার। ফিরে আসতে যাব এমন সময় শাওনের ফোন বেজে উঠল। আমি ফিরে তাকালাম। ফোন টা বিছনার উপরে রাখা। আমি পিশামনির ফোন হতে পারে মনে করে এগিয়ে গেলাম। কাছে গিয়ে দেখলাম আমার ধারনা ভুল। সুইটি নামের কেউ ফোন করছে।
দেখতে দেখতে ফোন টা বাজা বন্ধ হল। আমি বের হবার জন্য ঘুড়লাম সাথে সাথে রিং বেজে উঠল। তবে এটা মেসেজের রিংটোন। ঘুরে তাকালাম। দেখলাম ওই মেয়েই দিয়েছে। শুধু এইটুকুই লেখা দেখলাম “ফোন কেন ধরনা? প্লিজ দয়া করে আজ রাতে দেখা করো আমি….”
এর পরেও হয়ত কিছু ছিল কিন্তু পুরোটা ফোনের ডিসপ্লেতে এলো না। ফোনও ত লক করা নাহলে বাকি অংশও পড়ে নিতাম। কে এই মেয়ে? রাতে কিসের জন্য দেখা করতে চাচ্ছে!
সাথে সাথে আর একটা মেসেজ আসল। এবার লেখা, “I really love you. Will you please let me explain.”

আমি মুখ হা হয়ে গেল মেসেজটা দেখে। মুখের উপর বা হাত রেখে বাথরুমের দিকে তাকালাম। আর বুঝতে বাকি রইল না। এই মেয়েই সেই মেয়ে সুইটি। বাহ ভাজাভাজা জীবনের সাথে সুইটি নামক সতিন ফ্রি। এখন প্রশ্ন হচ্ছে এইযে এফেয়ার চলছে সেটা কি আমি আমার গুনধর শাশুড়ীকে জানাব না? ওনার ত জানা দরকার তাইনা যে কেমন ছেলে ওনার!
কিন্তু তার ফোন নাম্বার কই পাব? ফোনে ত পাসওয়ার্ড দেওয়া!
কোমড়ে বা হাত রেখে এদিক ওদিক তাকিয়ে একটা মুচকি হাসি দিয়ে মনে মনে বললাম, উনি আমাকে এত রাগ দেখান অত্যাচার করেন। এখন আমার এর প্রতিশোধ নেবার পালা। হেহ হেহ হে!
শাওন বাথরুমের দরজা খুলে বের হতেই আমি মুখের হাসি সরিয়ে কোমড় থেকে হাত নামালাম। উনি বের হয়ে আমাকে দেখেও না দেখার ভান করে কাবাডের থেকে শার্ট বের করতে ব্যস্ত হয়ে গেলেন।
আমি গিয়ে আমার ল্যাগেজ খুললাম। শাওন কালো শার্ট পরে ড্রেসিং টেবিলের কাছে গিয়ে ঘড়ি পরতে লাগল। আমি আপন মনে শাড়ি খুজছিলাম আজ কোনটা পড়া যায়। শাওন ঘড়ি পরতে পরতে আমার ল্যাগেজের দিকে তাকালো। তারপর আমার বাম পাশে এসে দাড়ালো। আমি ওনার কালো জুতার দিকে তাকিয়ে আস্তে আস্তে ওনার মুখের দিকে তাকালাম। উনি আমার ল্যাগেজে কি দেখছেন! উনি নিচু হয়ে আমার ল্যাগেজের দিকে হাত বাড়াতেই আমার পাখি দুইটার কথা মাথায় এলো৷ আমি সাথে সাথে বা হাত দিয়ে পাখি দুইটা ল্যাগেজের সাথে চেপে ধরলাম। উনি নিচু হয়েই আমার দিকে তাকিয়ে গম্ভীর গলায় বললেন, হাত সরাও।
আমিও ভ্রুকুচকে ওনার দিকে তাকিয়ে বললাম, আমার ল্যাগেজ, আপনি হাত সরান।
উনি যে রেগে যাচ্ছেন বুঝতে পারছি। ধুর ওনার সামনেই কেন এই দুইটাকে আসতে হয়। উনি ওনার ডান হাত দিয়ে এক টানে আমার বা হাত সরিয়ে দিয়ে পাখি দুইটা নেওয়ার জন্য অন্য হাত বাড়াতেই আমি আমার ডান হাত দিয়ে পাখি দুইটা নিয়ে নিলাম আর ওনার হাতে ভুল করে উঠে আসলো একটা ব্রা। উনি আর কি ওই পুতুল পাখি দুইটাই তুলতে যাচ্ছিলেন। উনি নিজেও চমকে গেলেন আর আমার দিকে তাকালেন। কিন্তু আমি ওনার হাতের দিকে তাকিয়ে হা করে রইলাম।
ওনার উপর অসহ্যকর রাগ লাগছে। আমি কটমট চোখে তাকালাম ওনার দিকে।
উনি হাত থেকে ব্রা টা ল্যাগেজে ফেলে উঠি দাঁড়িয়ে দুই হাত ঝারতে ঝারতে ড্রেসিং দিকে যেতে লাগলেন।
আমি আরো ১ গুন বেশি ক্ষেপে বললাম, আপনার কি লজ্জা শরম কিছুই নাই মেয়েদের ব্যাগে হাত দেন?!
“হোয়াট?” ভ্রুকুচকে আমার দিকে ফিরে শাওন বলল।
“সত্যিই বেশরম”, আস্তে করে বলে উঠলাম কিন্তু উনি শুনে নিলেন। তাই প্রচন্ড রেগে আমার বাম হাত ধরে টেনে আমাকে দাড় করলেন উনি।
– আহ কি করছেন আপনি লাগছে আমার।
আমি হাতের কবজি ছাড়াতে চেষ্টা করে বললাম।
তোমার এত লজ্জা ত আমার জিনিস নেও কেনো? রেগে বলে উঠল শাওন।
“আপনি আমাকে নির্লজ্জ বললেন?” আমি ক্ষেপে গেলাম। আরো বললাম, নির্লজ্জ ত তারাই যারা এফেয়ার করে বেড়ায় হুহ। বলেই মুখ ভেংচি দিলাম।
শাওন রেগে হাত টা আরো চেপে ধরে বলল, “what?”
– আহ, লাগছে আমার ছাড়ুন।
মনে মনে বললাম, এক হাতের ত বারো বাজিয়ে দিয়েছে এখন এই হাতের কবজিটা যদি যায় আমার খাওয়াও বন্ধ হয়ে যাবে!
উনি কঠর চোখে তাকিয়ে আছেন আমার দিকে। তাই আমি রেগে বলে উঠলাম, ভালয় ভালয় হাত ছাড়ুন নাহলে কিন্তু….
“নাইলে কিন্তু কি!” রাগী চোখে তাকিয়ে শাওন জিজ্ঞেস করল।
আমি আবার হাত টেনে ছাড়াতে গেলাম উনি আরো শক্ত করে ধরলেন। তাই আমি ক্ষেপে ওনার হাতে জোড়ে এক কামড় বসিয়ে দিলাম।
উনি কোনো শব্দই করলেন না। ওনার কি ব্যথা বলে নেই কিছুই? অবাক হয়ে তাকালাম আমি। এখনো আমার হাত ধরেই আছেন উনি। মনে মনে বললাম, এ ত দেখছি গরিলা না গন্ডার। আস্ত গন্ডার। এখন!

ওনার চোখে স্পষ্ট রাগ উঠছে। আমি ভয়ে একটা ঢোক গিলে সাহসী ভাব নিলাম। হাত ব্যথা হয়ে গেছে আমার। উনি আমার হাত হঠাৎ ই ছেড়ে দিলেন। হাত ছাড়া পেয়ে যেন সস্তি পেলাম। হাত টা ঝারতে ঝারতে মুখ ঘুরিয়ে চলে যাবার মুহুর্তে উনি আবার আমার বাম হাত ধরে টেনে আমাকে বাথরুমের পাশের দেয়ালের দিকে ঠেলা দিলেন। কিছু না বুঝে অবাক চোখে তাকালাম শাওনের দিকে।
কিছু বুঝে ওঠার আগেই উনি আমার কাছে এসে ওনার বাম হাত দিয়ে আমার চুল গুলো ঘাড় থেকে সরিয়ে দিলেন।
আমি চমকে উঠে বললাম, “কি…কি করছেন আপনি?”
শাওন রাগমিশ্রিত চোখ তাকিয়ে বলল, “এবার আমার পালা।”

(চলবে…)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here