The_Terrible_Lover part 24

#The_Terrible_Lover
#অদ্রিতা_জান্নাত
#পর্ব__২৪

দেখতে দেখতে আরো ২ দিন চলে গেলো ৷ এই কয়েকদিনে আম্মু আব্বুর সাথে আরিহান অনেকটাই ফ্রি হয়ে গিয়েছে ৷ রোজ রোজ গল্প, খুনশুটি, ঝগড়া তো লেগেই আছে ৷ ঝগড়া বলতে ভালোবাসার ঝগড়া ৷ আম্মু আব্বুও বিনা দ্বিধায় আরিহানকে মেনে নিয়েছে ৷ আজ ওই বাড়িতে মানে আরিহান বা আমার শ্বশুড় বাড়িতে যেতে হবে ৷ আরো পরে যাওয়ার কথা ছিল কিন্তু বাড়িতে নাকি কি বিষয় নিয়ে কথা আছে তাই আজই যেতে হবে ৷

রেডি হয়ে আম্মু আব্বুকে বিদায় দিয়ে আরিহানের সাথে গাড়িতে উঠে বসলাম ৷ মনটা খারাপ হয়ে গেলো ৷ আরিহান বলেছেন আবার নিয়ে আসবেন তবুও কিছু ভালো লাগছে না ৷ গাড়ি এসে একটা দোকানের সামনে থামলো ৷ সেটা দেখে আমি বললাম,,,,

কাশফিয়া : থামালেন কেন?

আরিহান : আখি বলেছিল ওর জন্য চকলেট নিয়ে যেতে ৷

কাশফিয়া : কি? এতো বড় মেয়ে আবার চকলেট নিতে বলে?

আরিহান : এমন ভাবে বলছো যেন তুমি কখনোই খাও না ৷

কাশফিয়া : না সেটা না ৷

আরিহান : তাহলে? আমার বোন বলেছে চকলেট নিতে আমি নিলে সমস্যা?

কাশফিয়া : আরে নাহ ৷

আরিহান : হুম তুমি বসো আমি নিয়ে আসছি ৷

কাশফিয়া : নাহ আমিও যাবো ৷

আরিহান : এখান থেকে এখানে তোমার যাওয়ার দরকার কি?

কাশফিয়া : হুম অনেক দরকার ৷

বলেই গাড়ি থেকে নেমে ভিতরে গেলাম সাথে আরিহানও ৷ আরিহান চকলেট নিচ্ছেন তখনি পিছন থেকে একটা চেনা কন্ঠ ভেসে এলো ৷ পেছনে তাকিয়ে দেখি সায়ান হাসিমুখে দাঁড়িয়ে আছে ৷ ওকে দেখে আরিহানের হাত খামচে ধরলাম ৷ আরিহান আমার দিকে তাকিয়ে আমার সামনের দিকে তাকালো ৷ আমি যেখানেই যাই এই সায়ান কেন বারবার চলে আসে? এতে পুরোনো স্মৃতিগুলো ভুলতে গিয়েও বারবার চোখের সামনে ভেসে ওঠে ৷

আরিহান আমার হাত ছাড়িয়ে একহাতে জড়িয়ে ধরে বললেন,,,,,,

আরিহান : সায়ান তুই? কি চাই তোর?

সায়ান : আমার কাশফির সাথে কথা আছে ৷

আরিহান : কাশফিয়াকে তোর সাথে আমি একা যেতে দিতে পারবে না ৷ তাই যা বলার এখানেই বল ৷

সায়ান : কাশফি তোর সাথে কথা আছে ৷ আমার সাথে একটু….

কাশফিয়া : তুমি এখানেই বলো ৷

আরিহানকে সড়িয়ে দিয়ে সায়ানের দিকে তাকালাম ৷ ও অসহায় দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে আমার দিকে ৷

সায়ান : তুই ভালো আছিস তো আরিহানের সাথে?

কাশফিয়া : কোনো সন্দেহ?

সায়ান : না তোর মুখের হাসিই তার প্রমাণ ৷ আমার একটা ভুলের কারণে তুই আজ আমার থেকে দূরে ৷ কিন্তু এতে আমার কোনো আফসোস নেই ৷ কারণ আজ তুই সুখী ৷ আমার সবকিছু তোর কাছে ভুল, অন্যায়, মিথ্যা হতে পারে ৷ কিন্তু আমার ভালোবাসা না ৷ সত্যি তোকে খুব ভালোবাসতাম ৷ ইভেন এখনো ভালোবাসি ৷ বাট আজ তুই অন্য কারো ৷ তোর সংসার নিজের স্বার্থে ভাঙ্গবো না আমি ৷ শুধু চাইবো যেখানে থাক ভালো থাকিস ৷ আমি দেশের বাহিরে চলে যাব কাল ৷ মামা মামির কাছে গিয়েছিলাম দেখা করতে ৷ তাদের থেকেই জানতে পারি তুই ওই বাড়িতে যাচ্ছিস ৷ ওখানেই যেতাম কিন্তু রাস্তায় আরিহানের গাড়ি দেখে ছুটে চলে এলাম তোর কাছে ৷ হয়তো এটাই আমাদের শেষ দেখা ৷

আমার কথাগুলো গলায় দলা পেকে যাচ্ছে ৷ মুখ দিয়ে কোনো শব্দও বের হচ্ছে না ৷ তাই চুপচাপ দাঁড়িয়ে আছি ৷ সায়ান আবার বললো,,,,,

সায়ান : পারলে মাফ করে দিস ৷ আর তুই বলেছিলি না আমি কেন এরকম কাজের সাথে নিজেকে জড়ালাম?

কাশফিয়া : হুম ৷

সায়ান : ৬ বছর আগে আব্বুর কিডনিতে প্রবলেম হয়েছিল জানিস তো ৷ কিডনি ডোনেট করতে কেউ চাইছিল না টাকা ছাড়া ৷ আর আমাদের ব্যবসার অবস্থা তো তখন ভালো ছিল না ততো ৷ তাই না চাইতেও ড্রাগসের সাথে জড়িয়ে যাই আমি ৷ জানিসি তো এসবে প্রচুর টাকা পাওয়া যায় ৷

কাশফিয়া : আব্বু তো চেয়েছিলো তোমাকে হেল্প করতে৷

সায়ান : নেই নি ৷ নিজের বাবার চিকিৎসা নিজে করবো বলে ৷ তাই এই পথে পা বাড়িয়েছিলাম ৷ কিন্তু ২ বছর হয়ে গিয়েছে এসব কাজ ছেড়ে দিয়েছি আমি ৷ তোর আর আরিহানের যখন বিয়ে হয় তখন আমি মালেয়েশিয়াতে ছিলাম ৷ অফিসের প্রজেক্টের জন্য ৷ মাঝখানে আমার ব্যাগ চুড়ি হয়ে গিয়েছিল ৷ যেখানে আমার মোবাইল আর ল্যাপটপ ছিল ৷ তাই কারো সাথেই যোগাযোগ করতে পারতাম না আমি ৷ তবুও দূর থেকে তোর পিছনে লোক লাগিয়ে তোর খেয়াল রাখতাম ৷ ভেবেছিলাম আরিহানকে তুই মেনে নিবি না ৷ কিন্তু হলো উল্টাটা ৷ তাতে আমার কোনো আক্ষেপও নেই ৷ তুই ভালো থাক সেটাই আমি চাই ৷ চলে যাচ্ছি আমি ৷

কাশফিয়া : সসায়ান…?

সায়ান : আরিহান আমাকে ভুল বুঝিস না আর ৷ ওর খেয়াল রাখিস আসছি ৷

বলেই সায়ান ঘুরে চলে যেতে লাগলো ৷ আমি ছলছল দৃষ্টিতে ওর দিকে তাকিয়ে আছি ৷ আরিহান আমার কাঁধে হাত রেখে বললো,,,,,

আরিহান : চলো ৷

কাশফিয়া : হহুম ৷

দোকান থেকে বেরিয়ে এসে দেখি সায়ান দাঁড়িয়ে আছে আমার দিকে তাকিয়ে ৷ আমি মুচকি হেসে সায়ানকে বললাম,,,,,

কাশফিয়া : জীবনে যা চাইব সব পাবো সেরকম কোনো কথা নেই ৷ কিছু কিছু চাওয়া অপূর্ণ থাকা ভালো ৷ তোমার আর আমার ভালোবাসাটা নাহয় অপূর্ণই থাক ৷ জীবন তো আর কারো জন্য থেমে থাকেনা ৷ তুমিও বিয়ে করে জীবনটাকে গুছিয়ে নাও ৷ সামনের দিকে এগিয়ে যাও ৷ কেমন!!

আমার কথা শুনে ও নিজের চোখটা মুছে পিছনে ঘুরলো ৷ ঠিক তখনি একটা ট্রাক এসে ওকে ধাক্কা মেরে দিয়ে চলে গেলো ৷ ও ছিটকে রাস্তায় পরে গেলো ৷ আরিহান দৌঁড়ে গেলো সায়ানের কাছে ৷ ও রাস্তার ততোটাও মাঝে ছিলো না আবার সাইডেও ছিল না ৷ পুরো রাস্তা রক্তে ভেসে যাচ্ছে ৷

এভাবে রক্তাত্ত অবস্থায় কাউকেই আমি সহ্য করতে পারি না সেখানে সায়ানকে দেখার শক্তিও নেই আমার মধ্যে ৷ চুপচাপ দাঁড়িয়ে তাকিয়ে আছি সায়ানের রক্তাত্ত দেহের দিকে ৷ শরীর অবশ হয়ে আসতে চাইছে ৷ মাথাটা ঘুরছে ৷ দাঁড়িয়ে থাকার কোনো শক্তিও নেই আমার মধ্যে ৷ ধীরে কাঁপা কাঁপা পায়ে ওর দিকে এগিয়ে গেলাম ৷ ধপ করে রাস্তায় বসে পরলাম ৷ চোখের কার্নিশ বেয়ে পানি ঝড়ছে ৷ কিন্তু মুখ দিয়ে টু শব্দটিও বের হচ্ছে না ৷ কাঁপাকাঁপা হাতে সায়ানের হাত ধরলাম ৷ পুরো হাত রক্তে লাল হয়ে গিয়েছে ৷ সায়ানের সেন্স এখনো আছে একটু একটু ৷ সেটা দেখে আরিহানকে বললাম,,,,,,

কাশফিয়া : এ…এম্বু…লেন্স…স ৷ আআরিহান ৷ ওও..কে.. হা..সপাতালে নি…য়ে যেতে হ…হবে ৷

সায়ান ওর রক্তাত্ত হাত আমার গালে রেখে বললো,,,,,

সায়ান : ককাদিস না প্লিজ ৷ আমি তোকে ছাড়া এমনিতেও বেঁচে থথাকতে পারতাম না ৷ আল্লাহ এতো কষ্টের আগেই আমায় নিয়ে যাচ্ছে এএটাই অনেক ৷ তোর মুখে হাসি দেখতে চাই আমি ৷ ককাশফি কাদিস না ৷ একটু হাস না ৷

কাশফিয়া : সসায়ান তোমার কিচ্ছু হবে না ৷ আমাকে ছেড়ে যেতে পারো না প্লিজ ৷ আআরিহান ওওকে হাসপাতালে নিয়ে চলুন প্লিজ ৷

আরিহান উঠতে গেলেই সায়ান ওর হাত চেপে ধরে বললো,,,,,,

সায়ান : না আরিহান যাস না প্লিজ ৷ বন্ধু ভেবে শেষ কথাটা অন্তত রাখ ৷ কাশফিয়াকে নিজের কাছে স্বযত্নে রেখে দিস প্লিজ ৷ ওওকে কষ্ট দিস না কখনো ৷ ওকে দেখে রাখিস ৷ আগলে রাখিস ৷

আরিহান : সায়ান এসব কথা পরে হবে আগে তোকে হসপিটালে নিয়ে যাই ৷

সায়ান : আমি বাঁচতে চাই না আরিহান ৷ আত্মহত্যা করা মহাপাপ তার থেকে ভালোই হলো অ্যাকসিডেন্টে মরে যাবো আমি ৷ তুই শুধু আমাকে মাফ করে দিস ৷

কাশফিয়া : সায়ান তোমার কিচ্ছু হবে না ৷ হতে পারে না ৷ সায়ান!! (কাঁদতে কাঁদতে)

পুরো রাস্তা রক্তে মাখামাখি ৷ আরিহান, কাশফিয়া আর সায়ানও রক্তে ভিজে গেছে ৷ কাশফিয়া হাউমাউ করে কাদছে ওর প্রথম ভালোবাসে চলে যাওয়ার কষ্টে ৷ আর আরিহান কাঁদছে ওর ভালোবাসা আর বন্ধুর কষ্ট দেখে ৷ নিজেকেই নিজে দোষী ভাবছে ৷ কেন ওদের এত সুন্দর ভালোবাসার মাঝে আরিহান চলে এলো ৷ আরিহানের একহাতে সায়ানের মৃত রক্তে ভেজা দেহ ৷ আরেক হাতে কাশফিয়ার কান্নায় ভেজা দেহ ৷ দুজনকে বুকে নিয়ে মাঝ রাস্তায় বসে আছে আরিহান আর চোখের পানি ফেলছে ৷ কাশফিয়া সায়ানের হাত ধরে আরিহানের বুকে মাথা রেখে ফুপিয়ে ফুপিয়ে কাঁদছে ৷ আর ওদেরকে ঘিরে দাঁড়িয়ে রয়েছে রাস্তার বেশ কয়েকজন মানুষ ৷

ভালোবাসার এই কষ্টের বন্ধনে সায়ান কাশফিয়ার থেকে চিরতরে হারিয়ে গেল আর দিয়ে গেল আরিহানকে কাশফিয়ার দায়িত্ব♥♥

⭐দুই মাস পর⭐

আজ আহমেদ ভিলা খুব সুন্দর করে সাজানো হয়েছে ৷ রাস্তা থেকে শুরু করে বাড়ির আশেপাশের সব জায়গা আর পুরো বাড়ি বাহিরেরটাও ৷ তবে বাহিরেরটা থেকে ভেতরটা আরো আকর্ষনীয় ভাবে সাজানো হয়েছে ৷ দেখেই মনে হচ্ছে বিয়ে বাড়ি ৷ লোকজনের অভাব নেই আবার গানও বাজছে বেশ জোরে ৷ চারপাশের মানুষ কাজের চাপে এদিক থেকে ওদিক ছোটাছুটি করছে ৷

বেশ সুন্দর করে সবাই সেজেছে ৷ একটা রুমে কনে সাজে বসে আছে আখি ৷ আজ আখির বিয়ে ৷ ওর পচ্ছন্দের মানুষের সাথে ৷ ছেলেটার নাম আবির ৷ ওই দিন আখি ওর কথা বলতেই ওর ভাইয়াকে ডেকেছিল ৷ ওর যেটাতে খুশি ও সেটাই করবে তাই ওর পচ্ছন্দের ওপর আরিহান কোনো কথা বলে নি ৷ বরং রাজি হয়েছে ৷ আর খুব বড় করেই আয়োজন করা হয়েছে ৷

সায়ানের মৃত্যুর দুইমাস পর বিয়ের ডেট ফাইনাল করা হয় ৷ কারণ কাশফিয়ার একটু সময় লেগেছিল সেই পরিস্থিতিটা সামলাতে ৷ ভুল করুক, অন্যায় করুক ভালোবেসে ছিল ও সায়ানকে ৷ নিজেকে সামলে নিতে তো একটু সময় লাগবেই ৷ আর যেই ট্রাকটা সায়ানকে ধাক্কা মেরেছিল সেই ট্রাকের ড্রাইভার মাতাল অবস্থায় গাড়ি চালাচ্ছিল ৷ তাই সে তার সেন্সে ছিল না ৷ আরিহান সেই ড্রাইভারকে ধরে পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছে ৷

আখির পাশে বসে বিভিন্ন মেয়েরা বিভিন্ন গল্প জুড়ে দিয়েছে ৷ আর আখি সেগুলো শুনছে আর মাঝে মাঝে লজ্জায় মাথা নুইয়ে ফেলছে ৷ হঠাৎ আরিহান আখির কাছে এসে বললো,,,,,,

আরিহান : কাশফিয়া কোথায় রে? আশেপাশে দেখছি নাহ ৷

আখি : রেডি হতে গেলো তো গিয়ে দেখ ৷

আরিহান : আচ্ছা ৷

বলেই আরিহান রুম থেকে বেরিয়ে গেলো ৷

_______________________

নিজের রুমে আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে আছি আমি ৷ চুলে খোপা করে খোপায় ফুল লাগাতেই পারছি না ৷ বারবার চেষ্টা করেও হাপিয়ে উঠেছি ৷ পেছনের চেয়ারে ধপ করে বসে পরলাম ৷ পেছন থেকে চুলে টান পরতেই পেছনে তাকালাম ৷ আরিহান খোপা করে ফুলগুলো পেচিয়ে লাগিয়ে দিলেন ৷ অথচ আমি এতক্ষন কষ্ট করেও লাগাতে পারি নি ৷ আরিহান তার দুই হাত আমার কাঁধে রেখে আয়নার দিকে তাকিয়ে বললেন,,,,,

আরিহান : হলো তোমার? এতো টাইম লাগে? এখনি বরযাত্রী চলে আসবে ৷

কাশফিয়া : আমার একটু বেশিই টাইম লাগে বুঝেছেন? আসলে আসুক তো?

আরিহান : তো মানে নিচে চলো?

কাশফিয়া : এতো ভিড়ের মধ্যে যাবো? আপনারা রাস্তার সব মানুষকে ধরে এনে ছেড়ে দিয়েছেন নাকি?

আরিহান : জ্বি না ৷ সবাই ফ্যামেলী নিয়ে এসেছে ৷ মানুষ তো হবেই ৷ তোমার আবার কি সমস্যা?

কাশফিয়া : এতো মানুষ জনের মাঝে অস্বস্তি ফিল হচ্ছে আমার ৷ আর…এই আপনি কোনো মেয়ের কাছে ধারেও যাবেন না একদম ৷

আরিহান : আচ্ছা আমি নাহয় যাবোনা ৷ ওরা আসলে কি করবো?

কাশফিয়া : কেন আসবে হ্যাঁ? আপনি গিয়ে ড্রেস চেন্জ্ঞ করে আসুন ৷ ছেলে মানুষ এতো সাজার কি হলো?

আরিহান : কি শুরু করলে বলে তো? চলো আমি কারো কাছেই যাবো না ৷ তুমিও না ওকে?

কাশফিয়া : জানি জানি ৷

বলেই আরিহানকে নিয়ে নিচে চলে এলাম ৷ এই দুইমাস আরিহানের যত্ন, পাগলামি, ভালোবাসায় আমি সায়ানকে ভুলেই গেছি ৷ তবে মাঝে মাঝে মনে পরে যায় ৷ সায়ানের খবর শুনে ফুপ্পিরাও ভেঙ্গে পরেছিল ৷ কিন্তু ওই যে জীবন কারো জন্য থেমে থাকে না ৷ তাই শত কষ্ট শর্তেও এগিয়ে যেতে হয় আমাদের ৷ এই দুই মাসে আরিহান আমাকে তার ভালোবাসা দিয়ে আগলে রেখেছেন ৷ হয়তো সারাজীবনই রাখবেন এভাবে ৷ আমাদের মধ্যে সম্পর্কটা আরো গাঢ় হয়ে গিয়েছে আস্তে আস্তে ৷

নিচে গিয়ে দেখি বরযাত্রীরা চলে এসেছে ৷ ওদেরকে স্টেজে নিয়ে বসিয়ে দিলো ৷ আমার পরিবারের সবাই কাল এসেছে এ বাড়িতে ৷ একদিন আগেই আসতে বলেছি আমরা ৷ নিধির বাবার বাড়ি, শ্বশুড় বাড়ি সবাই এসেছে ৷ আখিকেও নিচে নিয়ে এসে আবিরের পাশে বসানো হলো ৷ কাজি বিয়ে পরানো শুরু করলেন ৷ আমার ওই দিনের কথা মনে পরে গেলো যেই দিন আরিহান জোড় করে বিয়ে করেছিলেন আমায় ৷ কি সমস্যা হতো যদি এভাবে জাকজমক ভাবে আয়োজন করা হতো? পাশে থেকে আরিহান কাঁধে হাত হাত দিয়ে বললেন,,,,

আরিহান : কি ভাবছো?

কাশফিয়া : কিছু না ৷

আরিহান : তুমি আমাদের বিয়ের কথা ভাবছো তাইনা?

চুপ করে রইলাম আমি ৷

আরিহান : তুমি চাইলে তোমাকে আবার বিয়ে করতে পারি আমি ৷ ঠিক এভাবেই আয়োজন করা হবে ৷

কাশফিয়া : আমি বলেছি? দরকার নেই এসবের ৷

আরিহান : কেন দরকার নেই? সব মেয়েদের এরকম ইচ্ছা তো থাকে নাকি?

কাশফিয়া : আমার ছিল কিন্তু এখন নেই ৷

আরিহান : কেন?

কাশফিয়া : কয়বার বিয়ে করবো শুনি? যেমন আছি তেমনই ভালো ৷

আরিহান : আমার ইচ্ছা করছে প্লিজ বউ ৷

কাশফিয়া : উফ তো যান অন্য একটা মেয়েকে গিয়ে বিয়ে করে নিয়ে আসুন ৷

আরিহান : সত্যি যাবো?

আমি ওনার দিকে চোখ রাঙিয়ে তাকালাম উনি চুপ হয়ে গেলেন ৷ আগে আমি ভয় পেতাম আরিহানকে আর এখন একটু রাগি ভাবেই তাকালেই উনি চুপ হয়ে যান ৷ কিসের জন্য আমি জানিনা ৷ আরিহান এক হাত দিয়ে আমাকে জড়িয়ে ধরে বললেন,,,,,

আরিহান : বললে না?

কাশফিয়া : এই আপনি আর জ্বালায়েন না তো আমাকে ৷ যান দূরে যান ৷

আরিহান : একেবারেই চলে যাবো?

আমি আরিহানের পেটে একটা গুতা মেরে বললাম,,,,

কাশফিয়া : একদম না ৷

চলবে,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here