সাহেব বিবি গোলাম পর্ব ৮+৯

#সাহেব_বিবি_গোলাম
#নুশরাত_জেরিন
#পর্ব:৮
,
,

গাড়িতে উঠে চুপচাপ বসে রইলাম আমি।মাথাটা বারবার চক্কর দিচ্ছে। চোখ ঝাপসা হচ্ছে বারবার।আমার ভাবতেও কষ্ট হচ্ছে যাকে আমি একদিনের পরিচয়ে এতোটা বিশ্বাস করলাম সে আমার সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করলো?এতোটা জঘন্যভাবে?আমাকে বাড়িতে নিয়ে এসে মামার হাতে তুলে দিলো?দিলো তো দিলো নিজে আবার বিয়েও করে নিলো?তারমানে শুভর সাথেই বিয়ে ঠিক করেছিলো মামা?শুভই সেই বড়লোক লোকটা?যে কিনা টাকা দিয়ে প্রায় কিনে নিচ্ছে আমায়?কিন্তু সে হঠাৎ বাসে কোথায় যাচ্ছিলো?এই যে এত্তো বড় গাড়ি আছে তার,তাহলে গাড়ি রেখে বাসে কেনো যাচ্ছিলো?আমায় ধরতে?আমায় ফিরিয়ে আনতে?প্রথম থেকেই এটা শুভর প্লান ছিলো?আর আমি কিনা বুঝতেও পারলাম না উল্টো তার উপর বিশ্বাস করলাম।
ঘর থেকে বেরিয়ে যখন প্রথম শুভকে দেখেছিলাম তখন আমার শরীর ঘেমে হাত পা কেঁপে উঠেছিলো।বিশ্বাস ভাঙার শব্দে কান ঝালাপালা হয়েছিলো আমার।
মাথা ঘুরে পরে যেতে গেলেই শুভ হুট করে এগিয়ে এসে আমায় পাঁজাকোলে তুলে নিয়েছিলো।
আর কোনদিকে না তাকিয়ে মামির হাতে একটা চেক গুজে আমাকে নিয়ে হনহন করে বাইরে বেরিয়ে গাড়িতে বসিয়ে দিয়েছিলো।
এখন পর্যন্ত আমার সাথে সে একটাও কথা বলেনি।হয়তো বলার মুখ নেই।
কিন্তু আমার কথাটা সে কেনো ভাবলো না?মানুষ চিনতে আমি এতোটা ভুল করলাম?নিজের উপরই ঘৃনা হচ্ছিল আমার।
হঠাৎ প্রিতমের কথা মনে পরলো।
তাকে ছাড়া অন্যকাউকে কিভাবে স্বামী হিসেবে মেনে নেবো আমি?কিভাবে সহ্য করবো?তাও আবার একটা বিশ্বাসঘাতককে?
এতোক্ষণের আটকে রাখা কান্না হুড়মুড় করে বাইরে বেরিয়ে এলো।ডুকরে কেঁদে উঠলাম আমি।
শুভ ড্রাইভিং সিটে বসে ড্রাইভ করার মাঝেমাঝে আঁড়চোখে আমার দিকে তাকাচ্ছিলো।হঠাৎ আমাকে কাঁদতে দেখে সে গাড়ি থামিয়ে ফেললো।চোখ কুঁচকে তাকালো সে।
নিজের দু আঙুল দিয়ে কপাল ম্যাসাজ করলো।
চোখ বন্ধ করে জোরে জোরে শ্বাস নিয়ে বললো,

—হোয়াট হ্যাপেন্ড?কাঁদছো কেনো?

আমি কাঁদতে কাঁদতে তারদিকে তাকালাম।আবার জানালা দিয়ে বাইরে মুখ ফেরালাম।লোকটার সাথে আমার কথা বলতে ইচ্ছে করছেনা।কথার বদলে কান্নার বেগ আরও বাড়লো আমার।

শুভ একটু চুপ থেকে আমার কোন উত্তর না পেয়ে ধমকে উঠলো।বললো,

—কান্না থামাও!থামাও বলছি!

ধমক শুনেও কোনপ্রকার ভয় ছুতে পারলোনা আমায়।তারদিকে চোখ রেখে কাঁদতে কাঁদতেই বললাম,

—কেনো করলেন এমনটা?কেনো করলেন?

শুভ না বোঝার মতো করে বললো,

—কি করেছি?

—আপনি জানেননা?

—নাতো।

আমি তীক্ষ্ণ চোখে তাকালাম।বললাম,

—ফাইজলামি করেন আমার সাথে?

—আরে ফাইজলামি কেনো করবো?তুমি আমার দশটা না পাঁচটা না একটা মাত্র বউ।তোমার সাথে ফাইজলামি করতে পারি?

আমি কপাল কুঁচকে তাকালাম।লোকটাকে এই মুহুর্তে আমার খুন করতে ইচ্ছে করছে।নয়তো কিছু দিয়ে বাড়ি মেরে মাথা ফাটাতে ইচ্ছে করছে।ততক্ষণে শুভ আবার গাড়ি স্টার্ট দিয়ে ফেলেছে।
দাঁতে দাঁত চেপে বললাম,

—খবরদার আমাকে বউ বলবেন না।

—কেনো কেনো?

—কারন আমি আপনার বউ না।

—হুহ বললেই হলো?তিন কবুল বলা বিয়ে করা বউ আমার!

আমি রাগে কিড়মিড় করতে থাকলাম।কান্না থেমে গেছে আমার আরও আগে।এখন সারা শরীর জ্বলছে রাগে।বললাম,

—আপনি না বাসে বসে বলেছিলেন,আপনার টেস্ট ওতো খারাপ না?তাহলে কেনো করলেন আমায় বিয়ে?

শুভ নির্বিকার ভঙ্গিতে জবাব দিলো,

—ঝগড়া করতে।

—মানে?

—ভাবলাম তোমার মতো মেয়ে তো আর কখনো পাবোনা,তোমার মতো মানে,এতো ঝগরুটে মেয়ে।
তুমি দুনিয়ায় এক পিস ই আছো।তাই ভাবলাম সেই এক পিস নাহয় আমিই রেখে দেই।নিজের করে।বলা তো যায়না কখন জাদুঘরের লোকেরা তোমায় নিতে চলে আসে।

আমার পক্ষে আর সহ্য করা সম্ভব হলোনা।একপ্রকার ঝাপিয়ে পরলাম তার উপর।বুকের ওপর এলোপাতাড়ি কিল ঘুসি শুরু করে দিলাম।এতো পরিমান বদ লোককে মেরে ফেলাই উচিৎ।
চিৎকার করে বললাম,

—আমি ঝগরুটে? আমি?আমাকে জাদুঘরে নিয়ে যাওয়া হবে?আমাকে?

আমার হামলায় শুভ গাড়ি থামালো।দুহাত দিয়ে জাপটে ধরলো বুকের উপর।
আমি ছুটতে চাইলেও পারলাম না।মোচড়ামুচড়ি করলাম খুব।
শুভর বুকের উপর আমার মাথা থাকায় তার শরীর থেকে একটা মিষ্টি ঘ্রান ভেসে এলো।অদ্ভুত অনুভূতি হলো শরীর জুরে।
শুভ আরও ঘনিষ্ঠভাবে আকড়ে ধরলো।
আমার পিঠে নাক ঘষতে লাগলো।
ফিসফিস করে বললো,

—আমার মারকুটে বউ।
,
#সাহেব_বিবি_গোলাম
#নুশরাত_জেরিন
#পর্ব:৯

,
,
এক বিশাল বড় বাড়ির দরজার সামনে দাড়িয়ে আছি।ঘন্টাখানেক তো হবেই এখানে হাবার মতো দাড়িয়ে দাড়িয়ে চারপাশটা দেখছি।এখন সময়টা রাত দশটা বা,এগারোটা বাজবে হয়তো।আমার কাছে ঘড়ি বা ফোন না থাকায় এক্সাক্ট সময়টা বুঝতে পারছিনা।তবু আন্দাজ করার চেষ্টা করছি।
চারপাশটা অন্ধকার খুব,একেবারে ঘুটঘুটে অন্ধকার। তারপরেও আশেপাশে দেখার ইচ্ছেটা আমার মনে প্রবল হচ্ছে। কেননা আমার সামনে ইয়া বড় রাজপ্রাসাদের মতো একটা বাড়ি।তার চারপাশটাও নিশ্চয়ই রাজকীয়ই হবে।
তবে বাড়িতে না ঢুকে দরজার সামনে এতক্ষণ যাবত কেনো দাড়িয়ে আছি সেই ব্যাপারটাই এখন আমার মাথায় আসছে না।
দাড়িয়ে থাকতে থাকতে অলরেডি আমার পা ব্যাথা করতে শুরু করেছে।কোথাও বসার জন্য মনটা ছটফট করছে।
আশেপাশে হাতরে আমি বসার মতো জায়গা খোজা শুরু করে দিলাম।
শুভ আমাকে দেখে ভ্রু কুঁচকে জিজ্ঞেস করলো,

—কি করছো তুমি?

—দেখতে পাচ্ছেন না?

—দেখবো কিভাবে?চারিদিকে অন্ধকার তো,শুধু বুঝছি তুমি কিছু করছো।কিন্তু করছোটা কি?

আমি উত্তর দিলাম না।বেটা বিরাট জালায়ছে আমায়।এমনকি টাকা দিয়ে কিনে পর্যন্ত এনেছে।একে কোন প্রশ্নের উত্তর দেবোনা আমি।মনের ভেতর প্রশ্নের পাহাড় জমে ছটফট করতে করতে গোল্লায় যাক সে।
আমার কথার উত্তর না পেয়ে শুভ আমার হাত টেনে ধরলো।
বললো,

—উত্তর দিচ্ছো না কেনো?

আমি হাত ঝাকি দিয়ে ছুটালাম।বললাম,

—খবরদার আমার গায়ে হাত দিবেন না কখনো।তখন একবার গাড়িতে এমন করেছিলেন।আমার একদম পছন্দ না এইসব।

—সিরিয়াসলি পিহু?

একটু আহাজারি করে বললো,

—ইশ,এই ছিলো আমার কপালে?এই নিরামিষ মেয়েকে কিনা শেষে মনে ধরলো আমার?একে নিয়ে জিবন কাটাতে হবে?কিভাবে কাটাবো আমি?
উফফ, তারচেয়ে আজিবন বিয়ে না করে থাকতাম।

—তো, না করতেন বিয়ে।

একটু থেমে ফট করে আমার মাথায় একটা কথা বাড়ি খেলো।শুভ কি বললো?শেষে কিনা আমাকে তার মনে ধরলো?
আমি অবাক হয়ে বললাম,

—আমাকে আপনার মনে ধরেছে মানে?

শুভ আচমকা এমন কিছু বলায়,থতমত খেলো।আমতাআমতা করে বললো,

—এমন কিছু বলেছি নাকি?

—আলবাত বলেছেন,এইতো কেবলমাত্র বললেন।

শুভ কিছুক্ষণ মাথা নিচু করে চুপ থাকলো।পরক্ষনেই মুখে হাসি ফুটলো তার।এ হাসি দেখলেই আমার গা জ্বলে ওঠে।যদিও তার হাসি সুন্দর। তবুও আমার সহ্য হয়না।বিয়ে করার পর তো একেবারেই না।মনে হয় ইট দিয়ে বাড়ি মেরে মুখ ফাটিয়ে ফেলি।দাত সবগুলো ঝরঝর করে পরে যাবে।তখন তাকে ফোকলা গালে কেমন লাগবে দেখতে?
আমার আজগুবি ভাবনার মাঝেই শুভ বলে উঠলো,

—তুমি এতো মিথ্যা বলো পিহু?ছি ছি ছি!
আমার মতো সত্যবাদি, সভ্য ছেলের বউ কিনা এমন হলো?

আমি চোখ তীক্ষ্ণ করে তার দিকে তাকালাম।বললাম,

—মিথ্যা বলি মানে?আর আপনি সত্যবাদি?আপনি?

বলেই হেসে ফেললাম।হাসি আটকে রাখতে পারছিলাম না কেন জানি।

শুভ বললো,

—এইতো একটু আগেই মিথ্যা বললে,আমার মতো সভ্য ছেলের নামে কি সাংঘাতিক অপবাদ দিলে?

এবার আমার মুখের হাসি মিলিয়ে গেলো।বললাম,

—খবরদার আজেবাজে কথা বলবেননা।আমি কখনোই মিথ্যা বলিনা।

—বলো।

—না।

—বলো বলো!

—না না!

দুজনার কথা কাটাকাটির মাঝেই হুট করে দরজা খুলে গেলো।তবে সেদিকে আমাদের কোন হুশ নেই।আমরা নিজেদের নিয়ে ব্যাস্ত।
হঠাৎ একটা মেয়েলি কন্ঠ কানে ভেসে এলো।সে বিস্ময়মাখা গলায় বললো,

—তোরা কি ঝগড়া করছিস?

কথাটা শুনেই আমি সোজা হয়ে দাড়ালাম।যতো যাই হোক,মানি আর না মানি,আমি তো নতুন বউ নাকি?এভাবে ঝগড়া করা আমায় একেবারেই মানায় না।তারউপর শশুড়বাড়ি প্রথমদিন এসেই।
যদিও সবটা শুভ নামক বদ লোকটার দোষ।কেনো বারবার আমায় রাগায় সে?

সামনে দাড়ানো মহিলাটির দিকে এবার ভালোমতো তাকালাম।বয়স যদিও খুব বেশি না তবে সাজপোশাকটা কেমন বয়স্ক বয়স্ক।
মুখ উজ্জ্বল খুব।লাবন্যময় চেহারা।অতি অযত্নে অবহেলায় কিছুটা মলিন হয়ে আছে শুধু।
সুতি সাধারণ এক শাড়ি পরিহিতা এমন একজনকে দেখবো এখানে সেটা আমি ভাবিনি।
এমন বড় রাজপ্রাসাদের মতো বাড়িতে যারা থাকবে,ভেবেছিলাম তাদের সাজপোশাক হয়তো হবে রাজকীয়। রাজা বাদশাদের মতো না হলেও একটু আভিজাত্যপূর্ন।
তবে তেমনটা না হওয়ায় আমি একটু আশাহত হলাম।
মহিলাটি আমার দিকে একবার সরু চোখে তাকিয়ে শুভর দিকে তাকালো।
বললো,

—উত্তর দিচ্ছিস না যে?

শুভ একহাত মাথায় নিয়ে চুল এলোমেলো করলো।
উত্তর দেওয়ার আগেই মহিলাটি আবার বললো,

—দুদিন ধরে তুই বিয়ে করলি?বিয়ে করতে কারো দুদিন লাগে?

শুভ এবার হেসে ফেললো।বললো,

—কারো না লাগলেও আমার লাগে আপা।
এই যে এমন একটা বউ পেতে গেলে তো লাগেই।

আমি চোখ কুঁচকে তাকালাম।এমন বউ বলতে কি বোঝাতে চাইছে সে?সে কি আমায়,অপমান করছে?
তবে শুভর কথার মানে না বুঝলেও এটা বুঝলাম যে সামনে দাড়ানো মহিলাটি শুভর বোন। হয়তো বড় বোন।দেখতেও তো বড় ই হবে মনে হচ্ছে।

শুভর কথায় সে বললো,

—মানে?

—মানে বউ তো আমায় রেখে পালিয়েছিলো রে আপা।আমি কতো কষ্ট করে ধরে বেধে নিয়ে এলাম।তাইতো ফিরে আসতে দেরি হলো।

আমি চোখ গরম করে শুভর দিকে তাকালাম।কেমন বদ ছেলেরে বাবা!আমাকে এভাবে অপদস্ত করছে?পালিয়ে গিয়েছিলাম তো তোকে বিয়ে করবোনা বলে।তাও তো সেই আমাকেই বিয়ে করতে হলো!কেনো রে?আর কোন মেয়ে ছিলোনা দুনিয়ায়?মনের কথা আমার মনেই রইলো।তবে গলা শুকিয়ে এলো সামনে তাকিয়ে।
মহিলাটি আমার দিকে অগ্নিদৃষ্টি ফেলে তাকিয়ে আছেন যেনো এক্ষুনি তিনি আমার গর্দান নেবেন।
আমি পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার জন্য হাসার চেষ্টা করলাম।
তবে খুব একটা সুবিধা করতে পারলামনা।
তিনি রাগে গজগজ করতে করতে বললেন,

—কেনো?তোকে রেখে পালিয়েছিলো কেনো?তুই কি দেখতে খারাপ?টাকা পয়সা কম আছে?
তুই যখন হাসিস তখন কি তোর গালে টোল পরেনা?সাদা শার্টটা গায়ে পরলে তোকে কি সিনেমার হিরোদের মতো দেখতে লাগেনা?
তোর আশেপাশে কি হাজারটা মেয়ে লাইন দিয়ে ঘোরেনা?
তাহলে কেনো পালিয়েছিলো?
নাহয় তুই একটু ইনজেকশনেই ভয় পাস আর ঘুমের ঘোরে হাত পা ছুড়াছুড়ি করিস।তাছাড়া আর কি দোষ আছে তোর?

শুভ হাবলার মতো খানিকক্ষণ হাসলো।এগিয়ে গিয়ে বোনকে জড়িয়ে ধরলো।
বললো,

—থাম আপা,থাম!
আমার ঠিকুজিকোষ্ঠী সব আজই এখানেই বলে দিবি নাকি?

একটু মুখ ফুলিয়ে বললো,

—তাছাড়া আমরা এখানে কতক্ষণ দাঁড়িয়ে আছি জানিস?পা ব্যথায় টনটন করছে তো।

মহিলাটি আমার দিকে আরও একবার অগ্নিদৃষ্টি ফেললেন।
শুভকে উদ্দেশ্য করে বললেন,

—ঠিক আছে।ঘরে আয়।

বলেই তিনি গটগট পায়ে ভেতরে চলে গেলেন।শুভ ও পিছু নিলো।
তবে আমি একচুল ও নড়লাম না।মহিলাকে দেখে আমার কেমন ভয় ভয় লাগছে।আমার দিকে কেমন কেমন করে তাকাচ্ছিলেন তখন।কেমন চোখ গরম করলেন!
আমাকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে শুভ আবার ফিরে এলো।
কানের কাছে মুখ নিয়ে জোরে বললো,

—ভাউ!

আমি লাফিয়ে উঠলাম।চোখ গরম করে তাকালাম।তবে তাতে শুভর কোন ভাবান্তর হলো বলে মনে হলোনা।
সে বললো,

—তুমি আসছো না কেনো বলোতো?
বরন করতে হবে নাকি?

আমি দাত কিড়মিড় করলাম।মুখ অন্যদিকে ফিরিয়ে কাঠ হয়ে দাড়ালাম।
মুলত বাড়িতে ঢুকতে আমার ভয় হচ্ছে।

শুভ দাঁত কেলিয়ে হাসলো।বললো,

—ওওও,বুঝতে পেরেছি তুমি কেনো ঘরে ঢুকছো না?

—-কেনো?

শুভ হুট করে আমায় কোলে তুলে নিলো।বললো,

—এইজন্য!

আমি হাত পা ছোড়াছুড়ি করলাম খুব।কিল ঘুসিও মারলাম কয়েকটা।অবশেষে হাল ছেড়ে চুপটি করে রইলাম।রাগে আমার মাথা ফেটে যাচ্ছে।
বললাম,

—কচু বুঝেছেন আপনি!

শুভ আবারও হাসলো।বললো,

—বুঝেছিই তো,অনেক মেয়েরই তো ইচ্ছে থাকে,শশুড়বাড়িতে স্বামীর কোলে চড়ে ঘরে ঢুবে।
তোমার যে সে ইচ্ছে ছিলো আগে বললেই পারতে?আমি কি ওমন স্বামী নাকি যে বউয়ের ইচ্ছে পূরন করবোনা?
যদিও আপার সামনে এভাবে যেতে আমার কিছুটা লজ্জা করবে।আসলে আমি খুব লাজুক তো!

আমি চোখমুখ কুঁচকে বিরবির করলাম,

—ওরে আমার লাজুক স্বামী রে!
,

,

চলবে…..
,

,

চলবে……

(আমি হচ্ছি ঝামেলা মানবী।কিছুদিন পর পরই আমার পেছনে ঝামেলা ধাওয়া করে।ঝামেলা বিহীন থাকাই হয়না আমার।
কাল থেকে প্রচন্ড ঠান্ডা জ্বরে ভুগছি। ফোনের দিকে তাকাতেই পারছিনা।তারপরেও ছোট্ট করে একটা পার্ট লিখেছি।ছোট পর্ব বলে কেউ রাগ করবেন না প্লিজ!)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here