জেদ পর্ব -১৩

#জেদ(A Conditional LoveStory)
#পার্ট১৩
#আফরিন_ইনায়াত_কায়া
.
.
১০ মিনিট পর আরদ্ধ এসে পৌছাল।তার পেছনে দুজন গার্ড।আরদ্ধ ঢুকেই আমাকে দেখতে পেয়ে এগিয়ে এল আমার দিকে।আরদ্ধকে আসতে দেখে আরাজ উঠে দাঁড়াল।আরদ্ধ এসে আরাজের সামনে দাড়াল।আরাজ আর আরদ্ধ দুইজন মুখোমুখি হয়ে দাড়িয়ে ।হঠাত করেই আমার মনের মধ্যে অজানা একটা ভয় মাথা চাড়া দিয়ে উঠল।আরাজ শীতল দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে আরদ্ধের দিকে। আরদ্ধের চোখে মুখে বিরাজ করছে নিদারুন যান্ত্রিকতা।
দুজনের মধ্যে হীম শীতুল নিরবতা বিরাজ করছে।আমি পেছন থেকে বলে উঠলাম
-আরদ্ধ ও আরাজ।বাবার বন্ধুর ছেলে।আর আমার ফ্রেন্ড ।
আমার কথায় আরাজ হেসে হাত বাড়াল ।
-Hey Man. It’s Araz Imtiaz. Nice to meet you.
আরদ্ধ ভ্রূ উচিয়ে আরাজের দিকে তাকিয়ে হ্যান্ডশেক করল।
-Aroddho.Aroddho Reowat .Pleasure to meet you.
আমি এগিয়ে গিয়ে আরদ্ধের বাহু চেপে ধরলাম।
আরাজ আমাদের দিকে তাকিয়ে হেসে বলল
-বসা যাক ?
-Yes Please.
আরদ্ধ আমার দিকে তাকাল।ওর চোখে অনেক প্রশ্ন ভীড় করছে।আমি হালকা হেসে ওর জবাব দিলাম।
আরদ্ধ টেবিলের দিকে আগাল।আমি পৌছানোর আগেই সে চেয়ার টেনে আমাকে বসাল।তারপর নিজের বসল।আরাজ ঠোটে একটা হাসি ঝুলিয়ে রেখে আমাদের দিকে তাকিয়ে আছে।আরদ্ধ বসতে না বসতেই আরাজ বলে উঠল
-If you guyz don’t mind can we order food?Am hungry actually.
-Yeah Sure.
আরদ্ধ হেসে জবাব দিল।একজন ওয়েটার এসে আমাদেরকে মেনু বুক দিলেন।আরাজ প্রথম দিনের মত পুডিং,লাইট ডেজার্ট আর হট কফি অর্ডার করল।আরদ্ধ অর্ডার দিল চিকেন উইং,রেগুলার পাস্তা আর চকলেট কোল্ড কফি।আরাজ আমার দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করল
-ইনা তুমি কি খাবে?
আমি কিছু বলার আগেই আরদ্ধ জবাব দিল
-ইনার খাবারই অর্ডার দিয়েছি।
আরাজ ভ্রু কুচকে বলল
-That’s not fair bro.You can not control her food cuisine.
আরাজের কথার জবাবে আমি হেসে বললাম
-আরাজ আরদ্ধ যা অর্ডার করেছে সব আমার পছন্দের ।He never control over my choices.
আমার কথা শুনে আরাজ বেশ কিছুটা অবাক হল।কিন্তু পরক্ষনেই নিজেকে সামলে হাসিমুখে বলল
-ওকে সরি।My apologies.
আরদ্ধ এতক্ষন ফোনে ব্যস্ত ছিল।মাথা তুলে বলল
-তো মি.আরাজ ইনা বলল আপনি নাকি আমার সাথে দেখা করতে চান ।হঠাত জরুরি তলব!কোন স্পেশাল রিজন?
-Hey Man Please No need to say “আপনি”।এন্ড তেমন কিছু না ।ইনার মুখ থেকে তোমার কথা অনেক শুনেছি ।So it was a great desire meeting with you.
আরাজ যথেষ্ট আগ্রহ সহকারে আরদ্ধের সাথে ভাব জমানোর চেস্টা করল।কিন্তু আরদ্ধ আরাজের প্রতিটা কথার খুব সংক্ষিপ্ত আর লিমিটড জবাব দিল।খাওয়া দাওয়ার পাট চুকিয়ে আরদ্ধ বলে উঠল
-It was a great please merting you man.But guess I should take your leave now.ইনা তুমি ফ্রি আছ?আমার কালকের প্রেজেন্টেশনে তোমার কিছু হেল্প লাগবে।Araj if you allow us….!
আরদ্ধ কথা শেষ করে আরাজের দিকে তাকাল। আরাজ এখনও ফু দিয়ে হট কফি ঠান্ডা করতে ব্যস্ত।
-Yeah sure.Alll yours.Nice to meet you anyway.
.
.
আরাজের কাছ থেকে বিদায় নিয়ে চলে আসলাম আমরা।গাড়ী বসতেই আরদ্ধ আমাকে জিজ্ঞেস করে উঠল
-কোথায় পেয়েছ এই নমুনাটাকে?
-আরদ্ধ আসলে তোমাকে কিছু বলার ছিল।
-He likes you.যে কোন মুহুর্তে তোমার প্রেমেও পরতে পারে।You told him about me.But he thought he’s kinda better than me.That’s why he insisted আমার সাথে দেখা করার জন্যে ।যাতে তোমাকে ফিল করাতে পারে thathe is better than me.
এর বাইরে কিছু থাকলে সেটা বল।
আরদ্ধর কথা শুনে আমি চুপ হয়ে গেলাম।আমি আরদ্ধর কাছ থেকে কখনও কথা লুকোই না ।আরদ্ধ জানে আজ না হোক কাল আমি ঠিকই তাকে সব কথা বলে দেব।তাই সে কখনো কোন কিছুর জন্যে আমাকে প্রশ্নবিদ্ধ করে না।আরাজ আর আমার বিয়ের ব্যাপারটা আরদ্ধকে না জানানো ওর বিশ্বাসের অপমান হবে ।কিন্তু আমি জানি না আরদ্ধ এই কথা শুনার পর কীভাবে রিএক্ট করবে!
বাকি সব চিন্তা মাথা থেকে ঝেরে ফেলে একটা দম নিলাম।কোন রকমে সাহস জুগিয়ে বললাম
-আরাজের সাথে বাবা আমার বিয়ে ঠিক করেছিল।
আমার কথা শুনে আরদ্ধ একটা হার্ড ব্রেক কষল।আমি আরদ্ধর দিকে তাকিয়ে দেখি রাগে ফুসছে ও।স্টেয়ারিং টা শক্ত করে ধরে নিজের রাগ কন্ট্রোল করার চেস্টা করছে সে।
-কবেকার ঘটনা এটা?
-যেদিন অফিস শেষে তোমার সাথে পার্কে দেখা করতে গিয়েছিলাম।
-তুমি সেটা আমাকে আজ বলছ?
-আমি নিজেই জানতাম না এত কিছু হয়ে যাবে।বাসায় কেউ আমাকে এই ব্যাপারে কিছু জানায় নি।হঠাত করে আমাকে বলল আরাজ কয়েকদিনের জন্যে আমেরিকা থেকে এসেছে।বিয়ে করেই আবার চলে যাবে।ওর ছুটি খুব অল্প টাইমে।আর এই অল্প সময়ে যে কাউকে তো আর ছেলের বউ করা যায় না।তাই……
-তারা তোমাকে ছেলের বউ করতে চায়।কারন আরাজের বাবা তোমার বাবার ফ্রেন্ড আর তোমাকে তারা ছোট থেকে দেখে আসছে।
-আরদ্ধ প্যারেন্টসদের কে বোঝানো ব্যাপারটা খুব টাফ ।স্পেশালি যখন মেয়েরা নিষেধ করে।So I decided..
-যে তুমি আরাজের সাথে কথা বলে তাকে কনভিন্স করবা যাতে সেও এই বিয়েতে অমত করে।তাই তুমি তার সাথে রেস্টুরেন্টে দেখা করতে গিয়েছিলে যাতে তুমি তাকে বিয়ের জন্যে না করতে পার।But guess what হলো উল্টাটা।তোমাকে প্রথম দেখেই আরাজ তোমাকে পছন্দ করে বসে।
-That’s not right.আরাজ আমাকে বলেছে যে ও প্যারেন্টসদের সাথে কথা বলবে।
-আর তুমি তাকে বিলিভ করলে?কথা বলেছে সে?আর যদি সে কথা বলেই থাকে তাহলে সে এখনো তোমার পিছনে সময় নষ্ট করছে কেন?
আরদ্ধর প্রশ্ন শুনে দমে গেলাম আমি।ছোট্ট একটা দম ফেলে আরদ্ধের দিকে ফিরে বললাম
-আরদ্ধ আমি আরাজকে বিলিভ করি না ।বাট তোমাকে করি।আরাজ যদি বাবার সাথে কথা নাও বলা বা গার্জিয়ানদের কনভিন্স নাও করাতে পারে আমি বাবাকে তোমার কথা জানিয়ে দেব ।আর আমার বিশ্বাস বাবা তোমাকে না করবে না।কিন্তু তুমি কীভাবে জানলে যে আমি আরাজের সাথে দেখা করতে গিয়েছিলাম?
আরদ্ধ তার সিটবেল্টটা খুলে আমার দিকে ফিরে তাকাল।
-তোমার প্রতিটা নিশ্বাসের খবর আমার কাছে থাকে ইনা।তোমার খুশি আর সেফটি আমার লাইফে সব কিছুর উপরে।
আর আমার মনে হয় না যে তোমার সো কলড ফ্রেন্ড তোমার বাবাকে কনভিন্স করতে পারবে।আমার তো মনে হয়…
আরদ্ধ আর কিছু বলার আগেই আমি ওর ঠোট দুটো দখল করে নিলাম।ছেলেটা বড্ড বেশি ভালোবাসে আমাকে।মাঝেমধ্যে ভয় হয় এতো বেশি ভালোবাসা কি সইবে আমার কপালে!?…….
চলবে

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here