#অশ্রুসিক্ত_নয়নে_তুমিই_আছো
#সুবহী_ইসলাম_প্রভা
#পর্ব – ০৬
“আমার টাই টা বেঁধে দেও”
ইসরা অবাক হয়ে বলে,,,,,,, “কিইইই”
“কি না পড়িয়ে দেও।”
ইসরা মনে মনে ভাবছে “কি হলো ব্যাপারটা?আমাকে কিছু বলেছে না তার উপর আরো ভালো ভালো কথা নিশ্চয়ই ডাল মে কুচ কালা হে”
“এতো না ভেবে টাই টা লাগাও।”
“হুম”
এই বলে ইসরা টাই টা ধরলেই হাত কেটে যায়।
“আহহহ,,,,কি এটা?”
“তুই ভাবলি কি করে আমাকে টার্চ করার অনুমতি তাও তোকে দিবো।এটা তো জাস্ট ট্রেইলার ছিলো আমাকে সকালে জোকার বানানোর মুভি তো আভি বাকি হে।”
এদিকে ইসরা শুধু কথা গুলো হজম করল। কাচেঁ তার হাত কেটে গেছে আসলে সায়েদ টাই এর নিচে এক টুকরো কাচঁ রেখে দিয়েছিল যার ফলে ইসরা এতো না দেখে ধরায় হাতটা কেটে যায়।সায়েদ টাই টা ফেলে নিচে চলে যায়।
ইসরা মনে মনে সায়েদকে ইচ্ছা মতো বকে কোনমতে হাতটা ব্যান্ডেজ করে নেও।তারপর নিচে গিয়ে দেখে সায়েদ খাচ্ছে। মিসেস পারভীন ইসরার হাতে ব্যান্ডেজ দেখে এগিয়ে এসে বলে,,,,,,
“ইসরা হাত কাটলো কিভাবে?”
সায়েদ এতোক্ষন দেখেই নি যে ইসরা এসেছে। ইসরাকে দেখে এখন একটু ভয় হলো যে ইসরা আবার মমকে বলে দিবে না তো।
“না, মা আসলে ঘরের অনেক জায়গায় কাচঁ পড়ে ছিল তো সেটা তুলতে গিয়ে হাতে একটু লেগে গেছে।”
“একটু কই এ তো দেখছি ভালোই লেগেছে।”
“না, মা এতে সমস্যা নেই।”
মিসেস পারভীনের এমন দরদ সায়েদ সহ্য করতে না পেরে উচ্চস্বরেই বলে,,,, “মম ও তো বলছে ওর সমস্যা নেই তুমি কেন ওকে জোর করছো।”
“হে রে সায়েদ, তুমিও তো ঘরে ছিলে তো তুমি দেখো নি ইসরার হাত কেটে গেছে।”
“মম,আমি এতো বিষয় নজর দেই না। তোমাদের দিতে হলে তোমরা দেও।”
“মা,ছাড়ুন। উনি অফিসে যাচ্ছে এখন কোন ঝামেলা করবেন না।”
এবার সায়েদ রেগে টেবিল থেকে উঠে ইসরার সামনে এসে বলে,,,,,
“হেই ইউ সি ইজ মাই মম।সে আমাকে যা খুশি তা বলতে পারে ঝামেলা করতে পারে তুমি আটকানোর কে?”
“না,মানে আমি তো আপনার ভালোর জন্যই বলেছি।”
“আমার ভালো তোমাকে বুঝতে হবে না।”
এবার মিসেস পারভীন ধমক দিয়ে বলে,,,, “সায়েদ,এটা কি ধরনের ব্যবহার করছো তুমি ইসরার সাথে?”
“যে যেই ব্যবহারের যোগ্য তার সাথে তেমনি ব্যবহার করছি।”
বলেই সায়েদ এক মুহুর্ত না দাঁড়িয়ে বাড়ি ছেড়ে চলে যায়। মিসেস পারভীন পিছন থেকে ডাকলেও শুনে না। ইসরার সায়েদের পথের দিকে তাকিয়ে আছে। মিসেস পারভীন পাশে দাঁড়িয়ে বলে,,,,,,
“ছেলেটা আজকাল বড্ড বেশি নাছোড়বান্দা হয়ে গেছে।কার সাথে কেমন ব্যবহার করতে হয় তা ভুলে গেছে। ইসরা তুমি কিছু মনে করো না।”
ইসরা চোখে পানি রেখেই বলে,,, “না, মা। আমি কিছু মনে করি নি।”
এই বলেই কিচেনে কাজ করতে চলে যায়।
~~~~~~~~~~~~~~
আজ একসপ্তাহের পরে কলেজে যাচ্ছে নিথু। এই কয়দিনে ইসরার বিয়ের জন্য কলেজে যায় নি। একেই বেস্ট ফ্রেন্ড তার উপর প্রতিবেশী মেয়ের বিয়ে তাই কিছুদিন বন্ধ নিয়ে খুব মজা করেছে। রাস্তা দিয়ে হাটছে কোন রিকশা পাওয়া যাচ্ছে না। নিথু রিকশা খুজঁছে আজ রিকশা না পেলে তার পায়ের অবস্থা নাজেহাল হবে যে তা নিশ্চিত।
“এই যে,ম্যাডাম। একা একা বুঝি ভ্রমণ করা হচ্ছে।”
হটাৎ করেই পিছনে কারো আওয়াজ পেয়ে নিথু পিছনে তাকায়,একি আবির এখানে।নিথু ভাবনায় এতো বিভোর ছিলো যে,আবির কখন বাইক নিয়ে তার পাশে এসে দাঁড়িয়ে তা টেরই পায় নি।
আবিরকে দেখে নিথুর কাল রাতের কথা মনে পড়ে গেল।কাল রাতে আবির একা একা বক বক করে নিথুর মাথা খারাপ করে দিয়েছে। নিথু ভেবে কনফিউসড একটা ছেলে কি করে এতো কথা বলতে পারে। পরে নিথু গাড়ি থেকে নেমে দৌড় মারে এই ছেলের থেকে বাচঁতে হলে পালাতে হবে।
নিথুর ভাবনার মাঝেই আবির তুড়ি বাজিয়ে নিথুকে ভাবনা থেকে বের করে।
“কি হলো মিস. কার ভাবনায় এতো বিভোর থাকেন।”
“আজ্ঞে আপনার ভাবির দুলাভাইয়ের।”
“ওহহ,,,,,এ্যাাাা”
“এ্যাাাা না হে, তা আপনি এখানে?”
“আমার ভাবির ভাবি রাস্তা দিয়ে এতো কষ্ট করে যাচ্ছে তাই তাকে দেখে দাড়ালাম”
“কিইই?কে ভাবির ভাবি?”
“সে যাকে বলেছি সে বুঝলেই হবে তোমাকে এতো বুঝতে হবে না।বাইকে উঠো।”
“কেন?”
“তোমাকে নিয়ে লং ড্রাইভে যাবো তো তাই।”
“কেন কেন?”
“আরে আজব লং ড্রাইভে যাবো এটা তো কথার কথা বলেছি।তুমি যেখানে যাবে সেখানে নিয়ে যাবো।আর এই রাস্তায় কোন রিকশা পাবে না তাই তোমাকে ছেড়ে দেই চলো।”
“না থাক,আমি একাই যেতে পারব।”
“হে তা তো দেখতেই পারছি।রিকশা পাচ্ছো না দেখে রিকশাওয়ালার চোদ্দগুষ্টি উদ্ধার করছো।”
“মোটেও না।”
“মোটেও হে।এখন কথা না বাড়িয়ে বাইকে উঠো।”
নিথু আর না যাওয়ার জন্য বেশি জেদ ধরলো। এমনিও অনেকক্ষন ধরে হেটে পা ব্যাথা হয়ে গেছে।নিথু চুপ করে বাইকে উঠে বসল।আবির একবার গ্লাসে নিথুকে দেখে মুচকি হেসে বাইক চালানো শুরু করল।
গন্তব্যস্থলে পৌঁছাতে অনেক দেরি হয়ে যায়।নিথু বাইক থেকে নেমেই কিছুটা দৌড়ে যায় তারপর আবার ফিরে এসে হাঁপাতে হাপাঁতে বলে,,,,
“ধইনা পাতা।”
এই বলে আবার দৌড়ে সোজা ক্লাস রুমে চলে যায়। এদিকে আবির ভাবতে লাগল হটাৎ ধইনা পাতা কেন বললো যখন বুঝলো তখন নিজেই বোকা বনে চলে গেল।
~~~~~~~~~~~~~~
আজ সায়েদ সন্ধ্যেই অফিস থেকে এসে পড়েছে। সায়েদকে আগে আসতে দেখে ইসরা অবাক হয়।সায়েদ এসেই ইসরাকে ঘরে ডাকে তাতে তো ইসরা চরম সীমায় অবাক।ইসরাও বাধ্য মেয়ের মতো রুমে যায়। রুমে গেলেই সায়েদ ইসরার দিকে একটা ফাইল এগিয়ে দেয়।
“এটা ডিভোর্স পেপার,সাইন করে দেও।”
কথাটা শুনেই ইসরার মাথায় বাজ ভেঙ্গে পড়ল।বিয়ের এক সপ্তাহও হয় নি এখনি ডিভোর্স। ইসরা খুব কষ্ট পেলে সায়েদের এমন ডিসিশনে সে ভাবছে এখনি সায়েদ বলবে এগুলো মিথ্যা কিন্তু না সায়েদ এমন কিছুই বলছে না।
“কি হলো কথা বলছো না কেন?এই ডিভোর্স পেপারে সাইন করে দেও আর হে ক্ষতিপূরণ হিসেবে যে টাকা আসবে তার চেয়ে আমি তোমায় বেশিই দিবো যাতে তোমাকে তোমার লাইফ নয়ে টেনসন করতে না হয়।”
ইসরা তাচ্ছিল্য হেসে বলে,,,,,, “আমাকে ডিভোর্সও দিবেন আবার আমার লাইফ নিয়েও ভাববেন।আমাকে ছেড়ে দিয়েও আমার জন্য চিন্তা মিস্টার সায়েদ আরফান কাজটা বেশি বাড়াবাড়ি হয়ে গেল না। ”
সায়েদ অবাক হয়ে বলে,,, “কোন কাজ?”
“এই যে আমাকে ছেড়ে দিয়ে ভাবনা হয় ছেড়ে দিন নাহলে আপন করুন।”
এবার সায়েদ নিজের এটিটিউড নিয়ে বলে,,,, “এই সায়েদ আরফান তোর মতো থার্ড ক্লাস মেয়েকে কখনই আপন করে নিবে না।তাই পেপারটায় সাইন করে দে।”
কথাটা শুনে ইসরা কষ্ট পায়। কিন্তু কষ্টকে প্রাধান্য না দিয়ে নিজের জেদ ধরে বলে,,,,,
“আমি সাইন করবো না।”
ইসরার এমন কথায় সায়েদ অবাক হয়। সে ভেবেছিলো ইসরাকে অপমান করলে ইসরা তাকে ছেড়ে দিবে কিন্তু সে তো আরো জেদ ধরছে।
“কি?তুমি সাইন করবে না?”
“না, আমি সাইন করবো না। মিস্টার সায়েদ আরফান আপনি কি আইন জানেন না?বিয়ের ছয় মাস আগে কোন ডিভোর্স হয় না সেটা কি আপনি জানেন না।”
সত্যি এই কথা সায়েদের মাথায় ছিলো না।
“আমি ম্যানেজ করে নিবো তুমি শুধু সাইন করো, আমি তো সাইন করেই দিয়েছি।”
সায়েদের সাইন করার কথা শুনে ইসরা যেন আরো ভেঙ্গে পড়ল।তবুও নিজেকে শক্ত রেখে বলল,,,,,#অশ্রুসিক্ত_নয়নে_তুমিই_আছো
#সুবহী_ইসলাম_প্রভা
#পর্ব – ০৭
সায়েদের সাইন করার কথা শুনে ইসরা যেন আরো ভেঙ্গে পড়ল।তবুও নিজেকে শক্ত রেখে বলল,,,,,
“আমি তাও সাইন করবো না। হয়তো আপনি টাকার জোরে ডিভোর্স এখনই করিয়ে নিতে পারেন কিন্তু আমি সঠিক আইনই মানবো।”
সায়েদ রাগে ইসরার দুই বাহু চেঁপে ধরে বলে ,,,,
“কি তুই আমাকে আইন শিখাচ্ছিস ঠিক আছে তোকে ছয় মাস পরেই আমি ডিভোর্স দিবো।আর এই কয় মাস কয় দিন তুই হাড়ে হাড়ে টের পাবি এই সায়েদ আরফানের ওয়াইফ হওয়াই তোর মস্ত বড় ভুল।”
বলেই সায়েদ ইসরাকে ছেড়ে রুম ত্যাগ করে। সায়েদ চলে যাওয়া মাত্রই ইসরা আরো ভেঙ্গে পড়ে এবার আর নিজের ভিতরের কান্না চেঁপে রাখতে পারে না। খাটের এক কোনায় বসে কেঁদে দেয়। মুখ চেপে কাঁদছে তার কান্নাট শব্দ শুনলে তো আবার সবাই ছুটে আসবে। ইসরা কাদঁছে আর বলছে,,,,,
“আমাকেই কেন সবসময় কষ্ট পেতে হয়।ছোটবেলায় মা-বাবাকে হারিয়েছি।বিয়ে করে শশুর বাড়ি এসে নতুন মা-বাবা পেলাম আর সায়েদ আপনি এখন তাদেরও কেড়ে নিতে চাচ্ছেন আমার থেকে।আমার কি দোষ শুধুমাত্র একগাঁদা লোকের সামনে আপনাকে অপমান করেছিলাম সেটা কই আপনি যে এই কয়দিনে আমাকে কতবার অপমান করেছেন তাতেও কি আপনার মন ভরে নি।”
হটাৎ ইসরা কান্না বন্ধ করে বলে,,,, “বেশ মিস্টার সায়েদ আরফান, আমিও দেখবো আপনি আমাকে কতোটা অপমান করে শান্ত হন।”
~~~~~~~~~~
সায়েদ রুম থেকে বেরিয়ে সোজা গার্ডেনে চলে যায়। রাগে ফুসতে ফুসতে বলে,,,,,
“এতো বড় সাহস ওই মেয়েটার ঠিক আছে এই সায়েদ আরফানের বউ হওয়ার শখ আমি ঘুঁচাচ্ছি তোকে।”
এই বলেই সামনের একটা ফুলের টপকে লাথি মেরে ভেঙে ফেলে দেয়। তারপর গাড়ি নিয়ে বেরিয়ে পড়ে ফার্ম হাউজের দিকে।
সকালে,,,,,
ইসরা সারারাত কাঁদতে কাঁদতে কখন যে ঘুমিয়ে পড়েছে তা সে নিজেও জানে না। ভোরের রোদ জানলা ভেদ করে ইসরার মলিন মুখে পড়ে। রোদের আলোয় ইসরার চোখ আপনা আপনি কুচকে যায়। তারপর আস্তে আস্তে চোখ খুলে দেখে সকাল হয়ে গেছে।
তারপর সারা ঘরে চোখ বুলিয়ে দেখে সায়েদ রুমে নেই, সঙ্গে সঙ্গেই কাল রাতের কথা গুলো মনে পড়ে গেল।ইসরা সারারাত নিচেই ঘুমিয়েছে। ইসরা উঠে সাওয়ার নিয়ে নিচে নামলো।
নিচে গিয়ে দেখে সায়েদ বাসায় নেই।
“কি হয়েছে ইসরা? এদিক ওদিক কি খুজঁছো?”
“না, আম্মু। উনি কি বাড়িতে নেই।”
“না কালকে তোমার সাথে কথা বলেই তো ফার্ম হাউজ গেলো তারপর তো আর রাতে বাসায় ফিরে নি।”
ইসরা ছোট করে উত্তর দিল,,,”ওহ”
তারপর কিচেনে গিয়ে ব্রেকফাস্ট বানাতে গেল। মিস্টার সাফোয়াত আরফান খেয়ে বাড়ি থেকে বের হবেন। ইসরা মিস্টার সাফোয়াত আরফানকে খাবার দিলে তিনি বলেন,,,,,
“ইসরা তুমিও বসো।”
“না, আব্বু আপনি খান।”
মিস্টার সাফোয়াত আরফান খেতে খেতে প্রশ্ন করল,,,,”সায়েদ কোথায়?”
“আব্বু উনি তো ফার্ম হাউজ গিয়েছে। ”
“হটাৎ ফার্ম হাউজ? কেন গিয়েছে?”
“হয়তো কোন কাজে?”
মিস্টার সাফোয়াত আরফান জেনো ইসরার এমন ইতস্তত কথা আর সায়েদের বাড়িতে না থাকার কারণ কিছুটা বুঝতে পেরেছেন। তিনি শান্ত গলায় ইসরা বলে,,,,,
“মা,ইসরা। তোমাকে আমি নিজে পছন্দ করে নিয়ে এসেছি,অবশ্য এতে সায়েদ নাকোচ ছিলো কিন্তু পরে সে এই বিয়ে মেনে নিয়েছে। সায়েদের সাথে কোন কিছু হলে আমাকে বলতে কিন্তু দ্বিধাবোধ করো না।”
ইসরা মনে মনে তাচ্ছিল্য হেসে বলে,,,,,,, “হয়তো মেনে নিয়েছিলো বলেই বিয়ের এক সপ্তাহ যেতে না যেতেই ডিভোর্স পেপার হাতে ধরিয়ে দিয়েছেন।”
“তা,ইসরা একটা কাজ করো সায়েদ যদি তোমার উপর রেগে থাকে তাহলে আজকের লাঞ্চটা তুমি বরং অফিসে নিয়ে যাও।”
ইসরা অবাক হয়ে বলে,,,, “জ্বি বাবা, আমি?”
“হে তুমি।এমনিও সায়েদ খুব কাজ পাগল। কাজ করতে করতে খাওয়া-দাওয়ার কথা ভুলেই যায়।তাই তুমি বরং আজকের লাঞ্চটা নিয়ে গিয়ে ওকে বরং সারপ্রাইজ দেও।”
ইসরা ভাবলো বুদ্ধিটা খারাপ না তাই ও সম্মতি জানালো।মিস্টার সাফোয়াত আরফান খেয়ে অফিসে দিকের রওনা হলো। অফিসের কোন প্রজেক্টের জন্য আজকে তাকে শহরের বাহিরে যেতে হবে তাই আগে আগেই বেরিয়ে গেল।
দুপুরের লাঞ্চ রেডি করে মিসেস পারভীন ওকে নিজের রুমে পাঠিয়ে দিল ওকে রেডি হওয়ার জন্য। ইসরাই সব করেছে কিন্তু সব কাজেই মিসেস পারভীন ওকে হেল্প করেছে। ইসরা রেডি হচ্ছে আর ভাবছে,,,,কতো ভাগ্য করেই না এমন শশুর-শাশুড়ি পেয়েছে। বরের রাগ ভাঙানোর জন্য শশুর মশাই বুদ্ধি দিচ্ছে আর শাশুড়ী সেই বুদ্ধিতে সহযোগিতা করছে।
মিসেস পারভীনের ডাকে ইসরার ভাবনা থেকে বের হয়ে নিচে নামে। ইসরা আজকে সবুজ রঙের একটা জামদানী শাড়ি পড়েছে,চুলগুলো খোপা করা, হাতে কিছু কাঁচের চুড়ি।
ইসরা সিড়ি দিয়ে নিচে নামছে। মিসেস পারভীন তো ইসরাকে দেখে থ হয়ে গেছে, চোখের পলকই ফেলছে না।
“মাশাল্লাহ,কারোর নজর না লেগে যায় আমার ইসরার মা।”
কথাটা শুনে ইসরা লাজুক হাসি দেয়।
“আর এখন হাসতে হবে না। জলদি অফিসে যা নইলে গিয়ে দেখবি সায়েদের হয়তো খাওয়াই শেষ হয়ে গেছে।”
“জ্বি আম্মু, আমি এখুনি যাচ্ছি।”
ইসরা মিসেস পারভীনের থেকে বিদায় নিয়ে বাড়ির গাড়িতে সায়েদের অফিসের দিকে রওনা হয়। ইসরা মনে মনে ভাবছে,,,,,,
“কাল রাতে যা হলো তারপরও কি উনি এই খাবার মুখে তুলবেন।”
ইতিমধ্যে অফিসে ইসরা পৌছে গিয়েছে। গাড়ি থেকে বের হয়ে অফিসে ঢুকতেই যাবে তখনি একজন সিকিউরিটি গার্ড এসে ইসরা বাধা দেয়।
“কাকে চাই?এভাবে হুটহাট তো অফিসে ঢোকার নিয়ম নাই।”
“আমি মিসেস.সায়েদ আরফান। আমাকে ভিতরে ঢুকতে দিন।”
“কি?আপনি মিসেস.সায়েদ আরফান মানে আমাগো স্যারের বউ”
“জ্বি”
“ঠিক আছে আপনি ভিতরে যান।”
ইসরা অফিসের ভিতরে ঢুকে।অফিসের কেউ ইসরা ঠিকভাবে চিনে না। ইসরা রিসিপশনের মেয়ের কাছে জিজ্ঞেস করে,,,,
“ইয়েস,হাও কেন আই হেল্প ইউ?”
“মিস্টার. সায়েদ আরফানের কেবিন কোনটা?
“আপনি কে হন স্যারের?”
“আমি আপনাদের স্যারের স্ত্রী।”
“ওহ, ফোর্থ ফ্লোরে স্ট্রেট স্যারের কেবিন।”
“ওকে, থ্যাংকস।”
ইসরা সোজা ফোর্থ ফ্লোরে চলে যায়। ইসরা কেবিনে ঢোকার আগে ভাবে নক করে ঢুকবে কি না?পরে ভাবলো নিজের স্বামীর কেবিনে আবার ঢোকার জন্য পারমিশন লাগে নাকি।তাই ইসরা গিয়ে সোজা দরজা খুলে। দরজা খুলে ইসরা এমন কিছু দেখে যা ইসরার চোখকে বিশ্বাস করতে পারছে না। অনেক কষ্ট হচ্ছে এসব দেখতে,শুনতে।