#অবাদ্ধ_যন্ত্রণা
#তুই_আমার_প্রতিশোধের_মোহর
#Megh_La
part:02
দিনটা কেটে গেল এভাবে।  আমি শুধু কেঁদেছি। আজ যে বড়ো অসহায়।  আমি যে খাবারও খাই নি।  প্রচুর খুদা লাগছে আমার। অন্ধকারে মাত্র আরো বেড়ে গেছে তাই বুঝতে পারছি হয়তো রাত হয়ে গেছে।  হাত পা এতোটা টাইট করে বেধেছে রক্ত চলাচল ক্রমাগত কমে যাচ্ছে।  অবশ হয়ে আসছে আমার হাত পা।  নড়তে পারছি না।
এরি মধ্যে হটাৎ দরজা খোলার শব্দ কানে এলো।  পেছনে ফিরতে পারছি না যেমন ছিলাম তেমনি পরে আছি।
–কি রে এভাবে পরে আছিস কেন মনে হচ্ছে মারা যাবি। আরে এক দিন না খেলে মরবি না। (আমান)
–…….(নিশ্চুপ)
–কি হলো কিছু বল।  (আমান)
–বলছি… হাত পা অবশ হয়ে আসছে একটু ডিল করে… দিবেন (দম নিয়ে থেমে থেমে)
আমার কথায় উনি কিছু একটা ভাবলেন তার পর আমার কাছে এসে হাতের বাঁধন টা একটু আলগা করে দিলেন৷  এতেই যেন আমি শান্তি পেলাম।  রক্ত আবার আগের গতিতে চলতে শুরু করলো৷
তার পর উনি পায়ের বাঁধন টাও আলগা করে দিলেন।
আমি আর কিছু বলি নাই।  এই টুকু শান্তি তে ঘুম চলে এলো।  পরম শান্তি তে চোখ বুজে নিলাম।  ঘুমের দেশে চলে গেলাম।
–কি ব্যাপার এই টুকুতে ঘুমিয়ে গেল।
–কি আমান বিশ্বাস হচ্ছে না মেয়েটা এই টুকু শান্তি তে ঘুমিয়ে গেল।
–কে তুমি৷
–আমি তোর বিবেক রে তোর বিবেক।
কি করে পারছিস এই টুকু মেয়েকে বাবা হারা করে এতো শাস্তি দিতে।
–ও আমাকে ৫ বছর শাস্তি দিছে বিনা দোষে।
–হতে তো পারে ওতে মেঘের কোন দোষ ছিলো না।
–আমান খানের চোখ কখনো ভুল দেখে না৷
–হায় রে আমান তুই নিজেকে দেখ এতো কঠিন তুই ছিলি না আজ তুই পশুতে পরিনত হইছিস।  নিজের ভালোবাসাকে আজ তুই ছি লজ্জা হওয়া উচিৎ।
— না না না ভালোবাসতাম এখন বাসি না।  ও দোষি শাস্তি ওকে পেতে হবে।
–হুম মেয়েটা জীবন দিয়ে তোকে বুঝিয়ে দিবে তুই ভুল।
এই টুকু বলতেই আমান একটা কাঁচের ফুলদানি দিয়ে আয়নায় আঘাত করে।  আয়না টুকরো টুকরো হয়ে যায়।
এতো তিব্র শব্দেও মেঘের কোন হেল দুল নাই আগের মতোই ঘুমিয়ে আছে।
ঘুমন্ত মেঘ দেখতে অনেক সুন্দর এক দম বাচ্চাদের মতো৷
আমানের মায়া হচ্ছে কিন্তু এটা খনেকের মায়া কিছু সময় পর সবটা মনে পরতে আমান বলে উঠে,
–তুই দোষি শাস্তি  তোকে পেতে হবে কালকের জন্য অপেক্ষা কর বড়ো ধামাকা আছে।
এগুলা বলে আমান রুম ত্যাগ করে৷  
রাত ২ টা,
এতো রাত হলো তবে আমানের ঘুম আসছে না।  বার বার মেঘের কাছে যেতে মন চাইছে।  কিন্তু এটা তো অন্যায়৷
–ধুর কি আর এতো বড়ো অন্যায় একটু বুকে নিয়ে তো ঘুমবো আর কল তো এমনি সব বৈধ হয়ে যাবে।  আর ওরা যা অন্যায় করেছে তার কাছে এটা কিছুই না।
বলেই আমান মেঘের কাছে ওর কেবিনে চলে এলো।
এসে দেখে এখনো আগের মতোই ঘুমিয়ে আছে।
আমান গিয়ে ওকে তুলে নিজের বুকে নিয়ে ঘুমিয়ে যায়।
আজ অন্য সময়ের তুলনায় কেমন অনেক বেশি শান্তি পাচ্ছে আমান৷  এতোটা শান্তি সে আগে পায় নি। আজ প্রথম ভালোবাসার মানুষ টাকে এতো কাছে পেয়েছে।  কিন্তু নিজের শত্রু হিসাবে।  ভাগ্য বড়ো অজব না।  যা চায় হয়তো তা পাওয়া যায়৷  কিন্তু এমন ভাবে যেন চাওয়ার প্রতি কোন ইচ্ছে থাকে না।
.
সকালে,
মিস্টি মিস্টি একটা ঘ্রান আসছে নাকে।  চোখ বুজে তাকে উপভোগ করছি।  কিন্তু এমন সময় মনে হলো কেউ আমাকে নিচে নামিয়ে দিচ্ছে।
চোখ খুলে ফেলি।
দেখি আমান আমার এক দম কাছে।
আমি চোখ বড়ো বড়ো করে ফেলি।
আমাকে রেখে উনি আমার বাঁধন খুলে দেয়৷
–কিছু সময় পর কয়জন মেয়ে তোমাকে সাজাতে আসবে কোন প্রশ্ন ছাড়া সেজে নিবা।  কোন কথা বলবা না।  জাস্ট কোন কথা না।
আমি চুপচাপ শুনছি কথা।  কি হচ্ছে এগুলা কিন্তু কোন প্রশ্ন করার সাহস করি নাই।
আমান চলে যায়।
কিছু সময় পর দুটো মেয়ে আসে হাতে ভারি লেহেঙ্গা গয়না নিয়ে।
ওরা আমাকে কিছু না বলেই সাজাতে থাকে।  সাজানো শেষ হলে আমি নিজেকে আয়নাতে দেখি৷  ঠিক তেমন করে সাজিয়েছে যেমন করে করে আমাদের বংশে কোন রাজকুমারীকে বিয়েতে সাজায়।  আমি নিজেকে দেখে অবাক।
তবে কি আজ।
কি হচ্ছে এগুলা আমার সাথে।  পেটের মধ্যে ছুঁচো ডল মারে খুদাতে আর কিছু ভালো লাগছে না।  মেয়ে দুটো চলে যায়।  আমি বসে পরি।
চোখ বুজে আসছে।  এভাবে না খেয়ে আর পারছি না।
কিছু সময় পর মনে হচ্ছে আমি হাওয়া তে ভাসছি।  কিন্তু আমার যে চোখ খুলার মতো শক্তি নাই৷  আমি তো অচল।  চোখ বুজেই সবটা ফিল করছি।
কিছু সময় পর আমাকে কোথাও একটা বসানো হলো৷
পাশে থাকা মানুষটার কাঁধে মাথা দিয়ে আছি।
কিছু ভালো লাগছে না আমার৷
বুঝতে পারাছি আমার বিয়ে পড়ানো হচ্ছে।  কিন্তু কিছু বলার মতো অবস্থায় আমি নাই৷  চুপচাপ সহ্য করছি।
এই বিয়েটা হয়েই গেল।  আমি তো বাধা দেবার মতো অবস্থায় নাই।  আমার শুধু অনুভব করা ছাড়া উপায় নাই।
বেশ কিছু সময় পর আমান আমাকে আবার কোলে তুলে নিলো ।  সেই মিস্টি ঘ্রানটা জানান দিচ্ছে সে কে।
আমান আমাকে কোথাও একটা নিয়ে এসে খাটে বসিয়ে দিলো।
আমি বসা থেকে ঠাস করে শুয়ে পড়লাম৷
কিছু সময় পর,
চলবে,
 
             
		