Game 2 পর্ব -১৬+১৭+১৮

#Game_2
#মিমি_মুসকান ( লেখনিতে )
#পর্ব_16+17+18

মেহেরিন বেলকনি থেকে দৌড়ে বসার ঘরে এসে সবার সাথে বসে পড়ল। এদিকে নির্ঝর নিরুপায় হয়ে আবারও খান বাড়িতেই ঢুকল। নির্ঝরের এই হাল থেকে সবাই অবাক। কারো বুঝতে বাকি নেই এই কাজ টা কে করেছে। নির্ঝরের এমন হাল দেখে মেহেরিন কিছুতেই হাসি থামিয়ে রাখতে পারল না। ফিক করে হেসে দিলো সে। নিহা তার দিকে তাকাতেই মেহেরিন হাসি থামিয়ে বলে উঠে..

– আপনাকে এখন দেখতে পুরো মাটির মানুষ মাটির মানুষ লাগছে!

মেহেরিন’র কথা শুনে রোদ্দুর,ইহান আর কাব্য হেসে দিলো। অভ্র দা সবাই কে চুপ করানোর জন্য বলে উঠে..
– নির্ঝর রুমে যাও, শাওয়ার নিয়ে আসো।

– জ্বি দা!

অতঃপর নির্ঝর রুমে চলে গেল।‌ এদিক মেহেরিন’র শখ এখনো মিটে নি। তাই সে আবারো নির্ঝর কে জব্দ করতে তার পিছু পিছু রুমে গেল। নির্ঝর রুমে এসে সোজা বাথরুমে ঢুকে গেল শাওয়ার নিতে। মেহেরিন এসে দেখে নির্ঝর অলরেডি শাওয়ার নিতে চলে গেছে। মেহেরিন দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে ভাবছে এখন কি করবে তার সাথে।

মেহেরিন আশপাশ তাকিয়ে খুঁজতে লাগল। অবশেষে তার চোখ পড়ল ডেসিন টেবিলে থাকা কিছু ক্রীমের উপর। নির্ঝর এসে নির্ঘাত এসব দেবে। তাই সে তাড়াতাড়ি করে ক্রীমের মধ্যে কলমের কালি ঢুকিয়ে দিল। অতঃপর তাড়াতাড়ি করে এসব ডেসিন টেবিলে রেখে শয়তানি হাসি দিল। হঠাৎ তার পায়ে কিছুর ছোয়া পেয়ে মেহেরিন লাফিয়ে উঠলো। তাকিয়ে দেখে তার বিড়াল বাচ্চা। মেহেরিন বিড়ার বাচ্চা টাকে নিতে যাবে এর আগেই সে খাটের নিচে চলে গেল। মেহেরিন খাটের নিচে উঁকি দিয়ে বিড়াল বাচ্চা কে ডাকতে লাগলো..

– বিড়াল বাচ্চা বাইরে চলে এসো। উনার ঘরে কি করছো তুমি!

বিড়াল এরপরও বাচ্চা মেহেরিন’র দিকে তাকিয়ে রইল। মেহেরিন আবারো বলে উঠে..
– তাড়াতাড়ি বাইরে চলে এসো। এটা ওই রাক্ষস এর ঘর। তোমায় দেখলে খেয়ে তাড়াতাড়ি বাইরে আসো।

বিড়াল বাচ্চা তবুও তাকিয়ে থাকে মেহেরিন’র দিকে। মেহেরিন এবার তার পকেট থেকে চকলেট বের করে বিড়াল বাচ্চা’র দিকে ইশারা করে বলে..

– তোমাকে চকলেট খেতে দেবো এবার আসো।

অতঃপর বিড়াল বাচ্চা তার কাছে চলে এলো। মেহেরিন তাকে কোলে নিয়ে বলতে লাগল..
– তুমি জানো এই ঘরে ভয়ানক রাক্ষস থাকে উনি তোমাকে দেখলেই খেয়ে ফেলবে বুঝলে। তাই উনার ঘরে তুমি আর কখনো আসবে না বুঝলে!

পেছন থেকে নির্ঝর বলে উঠে..
– ও তো আসবে না বুঝলাম কিন্তু তুমি আমার ঘরে কি করছো মেহু পাখি!

নির্ঝরের কথা শুনে মেহেরিন চমকে উঠে। অতঃপর আস্তে করে উঠে দাঁড়িয়ে নির্ঝরের দিকে তাকায়। একটা কোয়াটার প্যান্ট আর বক্সার গেঞ্জি পরা নির্ঝর। মাথার চুল গুলো এখনো ভেজা। টপ টপ থেকে পানি পড়ছে চুল থেকে। নির্ঝর এক পা এগিয়ে মেহেরিন’র মুখোমুখি দাঁড়িয়ে ভ্রু নাচিয়ে বলে..

– আমার ঘরে কি করছো তুমি!

– আমি! আমি ওয়েট এটা আপনার ঘর হতে পারে তবে পুরো বাড়িটাই আমার বুঝলেন। যেখানে মন চায় সেখানে যাবো ‌

– ওহ আচ্ছা!
বলেই নির্ঝর আরেকটু আগায়। এদিকে বিড়াল বাচ্চা মেহেরিন’র কোল থেকে নেমে পালিয়ে যায়। নির্ঝর আগাতে থাকে আর মেহেরিন পিছুতে। হুট করেই খাটের সাথে ধাক্কা লেগে মেহেরিন পড়ে যেতে নিলে নির্ঝর ওর হাত ধরে ফেলে। অতঃপর তার টেনে নিজের কাছে আনে। মেহেরিন’র চুল গুলো তার মুখে এসে পড়ে। নির্ঝর তার মুখে ফুঁ দিয়ে চুল গুলো সরিয়ে দেয়। মেহেরিন এতোক্ষণ ভ্রু কুঁচকে এসব দেখে হুট করে নির্ঝর’র মুখে ফুঁ দেয়। অতঃপর বলে..

– আপনার চুল ভিজে আছে আমাকে‌ ফুঁ না দিয়ে সেখানে ফুঁ দিন কাজে লাগবে।

বলেই মেহেরিন চলে যায়। নির্ঝর মেহেরিন’র কথা মনে করে হেসে দেয়। অতঃপর তার মনে পড়ে মেহেরিন কেন এ ঘরে এসেছে। নিশ্চিত কিছু করেছে নাহলে এভাবে এভাবে সে আসবে না। কিন্তু নির্ঝর পুরো ঘর খুঁজে কিছু পায় না। অতঃপর তোয়ালে দিয়ে আয়ানার সামনে দাঁড়িয়ে চুল মুছতে থাকে। তারপর ক্রীম নিয়ে তার কেমন সন্দেহ হয়। মেহেরিন এটার সাথে কোনো খুঁটিনাটি করে নি তো। নির্ঝর আর না ভেবে দ্রুত ক্রীম এর নিপ খুলে দেখে ক্রীমের রঙ কালো হয়ে গেছে। মেহেরিন এমন বাচ্চামি দেখে নির্ঝরের ঠোঁটের কোনে হাসি ফুটে।
.
মেহেরিন রাত্রি বেলা ছাদে এসে দেখে কাব্য একা বসে গিটার বাজাচ্ছে। মেহেরিন জানে কাব্য’র মন খারাপ হলেই সে একা একা গিটার বাজায়। মেহেরিন এসে কাব্য’র পাশে বসে পড়ে। কারো উপস্থিত টের পেয়ে কাব্য গিটার বাজানো থামিয়ে তাকিয়ে দেখে মেহেরিন তার দিকে তাকিয়ে আছে। কাব্য হেসে বলে..

– তুই!

– হুম কেন সমস্যা!

– আমার সমস্যার সমাধান তুই বুঝলি।

– হাম হাম তা এতো রাতে এখানে কি করছিস?

– তুই কি করতে এলি।

– আমি তো তোকে খুঁজতে এলাম। কিন্তু তুই কেন এলি! কাকে খুঁজতে!

কাব্য একটা তাচ্ছিল্যের হাসি দিয়ে আকাশের দিকে তাকিয়ে থাকে। মেহেরিন বলে উঠে..
– তাকে এখনো মনে পড়ে তোর।

– তোকে মিথ্যে বলতে পারি না এটা একটা বড় সমস্যা!

– তো কি সুযোগ দিবি।

– না রে এটা হয় না। ও তোকে মারার চেষ্টা করেছে। আমি কখনো ওকে মেনে নিতে পারবো না। হুম এটা সত্যি আমি ওকে ভালবাসি তবে ( মেহেরিন কে জরিয়ে ধরে ) তার চেয়েও বেশি আমি আমার জান কে ভালবাসি! ওকে ছাড়া থাকতে পারবো তবে তোকে ছাড়া না বুঝলি।

– জানি জানি! আচ্ছা কাব্য ভালোবাসা কি?

– এই যে তোকে আমি ভালোবাসি এটাই!

– তুই আমার সব আবদার পূরণ করিস, তারপর আমার সব ভালো কাজে যোগ দিস…

হঠাৎ কাব্য বলে উঠে..
– ওটা খারাপ কাজ হবে!

মেহেরিন ভ্রু কুঁচকে তাকিয়ে বলে..
– চুপ থাক বলতে দে!

– হুম বল বল!

– হ্যাঁ কি বলছিলাম তো, যোগ দিস এর পর সবসময় আমার সার্পোট করিস। আমায় এত্তো গুলো চকলেট খেতে দিস এগুলো!

– হুম আমার জান এগুলো!

– তাহলে এগুলো তুই ক্যাট’র জন্য’ও করতি!

জবাবে কাব্য একটা হাসি দিল কোনো কথা বললো না।‌অতীত নিয়ে কথা বলতে চায় না সে। মেহেরিন বিষয়টা বুঝতে পেরে কাব্য’র হাত ধরে বলে..

– চল চল আমার সাথে চল! নিচে সবাই অপেক্ষা করছে!

– হুম চল!

অতঃপর মেহেরিন কাব্য কে নিয়ে চলে যায়।
.
কয়েকদিন পর…

মেহেরিন, রোদ্দুর, ইহান, কাব্য আর নিশি এই পাঁচ জন মিলে একসাথে lagdi lahore di aa গানে নাচল। অভ্র, আনহা,‌আহিয়ান, নিহা , নীল আর নীলাশা তাদের ডান্স দেখতে লাগল। খুব সুন্দর করে তারা ৫ জন নাচল। সবার পরনে কালো হুডি আর কালো জিন্স! মাথায় কালো রঙের একটা টুপি। তাদের নাচ শেষে সবাই হাত তালি দিল। মেহেরিন হয়রান হয়ে ধপাস করে নিচে বসে পড়ল। কাব্য তাকে উঠিয়ে বসার ঘরে এনে সোফায় বসিয়ে দিলো। আহিয়ান বলে উঠে..

– তা সব দিক দিয়ে তো ভালোই দেখছি পড়াশোনার খবর কি আপনার!

মেহেরিন খানিকটা থমতম খেয়ে আহিয়ান’র দিকে তাকায়। হঠাৎ করে পড়াশোনার খবর। মেহেরিন বলে উঠে..
– ভালোই চলছে!

– তা এরপরে কি করবে বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছো!

– কি করবো মানে!

– মানে তোমার এক বোন লয়ার, আরেক বোন ডাক্তারি নিয়ে পড়ছে অবশ্য তবে মনে হয় কয়েকদিন পর’ই পরিক্ষা। তার মানে ডাক্তার। নীল তোমাদের অফিস সামলাচ্ছে আর দা তো শুরু থেকেই তা এবার তুমি!

– আমি কিছুই করবো না।

নিহা বলে উঠে..
– এক্সপেক্টেশন এটাই ছিল।

রোদ্দুর বলে উঠে..
– এর থেকে আর বেশি কিছু আশা করো না।

কাব্য বলে উঠে..
– আরে বাদ দাও, মেহেরিন কে একটা বিয়ে দিয়ে দেবো। স্বামী সংসার নিয়ে সুখে থাকবে।

মেহেরিন বলে উঠে..
– আর বাচ্চা গুলো তুই পালবি ওকে!

সবাই হেসে উঠে। ইহান বলে উঠে..
– যেমন বললি তেমন’ই শুনলি।

– আজব গাইস খারাপ কি বললাম!

হঠাৎ অভ্র’র ফোনে কল এলো। সে কথা বলতে বলতে বাইরে চলে গেল।

আহিয়ান বলে উঠে..
– তাহলে এতো পড়ালেখা করার পর কিছু করবে না।

মেহেরিন পানির বোতল নিয়ে সোফার উপর বসে খেতে খেতে বলে…
– কি করমু!

অভ্র এসে বলে..
– কিছু না বিয়ে দিয়ে দেবো মাত্র তোর সমন্ধ এসেছে।

মেহেরিন এই কথা শুনে ধপাস করে নিচে পড়ে গেল। রোদ্দুর এসে তাকে উঠাল। এরকম কথা অভ্র’র মুখে আগে কখনো শুনিনি সে। সবাই অবাক! নিহা বলে উঠে..
– মানে!

অভ্র বলে উঠে..
– মানে আর কি নিরব হাসান আবার সুইসাইড করেছে?

– এটা আর নতুন কি?

মেহেরিন বলে উঠে..
– এবার কি করেছে?

– পানিতে ঝাঁপ দিয়েছে! এভাবেই সাঁতার পারে না তার ওপর পানিতে ঝাঁপ তাই এখন হসপিটালে ভর্তি!

মেহেরিন প্রথমে এতো ভাবল না কিন্তু যখন শুনল পানিতে ঝাঁপ দিয়েছে মেহেরিন সাথে সাথে উঠে দাঁড়াল। সে জলদি করে দা কে বলল গাড়ি নিয়ে বের হতে হসপিটালে যাবে!

সবাই ছুটে হসপিটালে আসে। মেহেরিন দেখে এমদাদ হোসেন নিরবের বাবা দাঁড়িয়ে আছে। মেহেরিন কে দেখে তার দিকে তিনি করুন চোখে তাকায়। মেহেরিন তার কাছে যেতেই জানতে পারে নিরব এখন ঠিক আছে। তবে বেশ দুর্বল! মেহেরিন কথাটা শুনে খানিকটা ভ্রু কুচকালো! অতঃপর ভেতরে গিয়ে দেখল নিরব শুয়ে আছে। নিরব মেহেরিন কে দেখতে পেয়ে তাকে অনেক ইমোশনাল কথা বলতে লাগল। অভ্র আর আহিয়ান এসেছিল মেহেরিন’র সাথে। তারা নিরবের এসব কাহিনী দেখতে লাগল তবে নিরব অসুস্থ বলে কেউ কিছু বললো না। অনেক কথা বলার পর হঠাৎ নিরব মেহেরিন কে বলে উঠে..

– বিয়ে করবি আমাকে মেহেরিন!

মেহেরিন খানিকটা অবাক হয়।‌ অতঃপর বলে উঠে..
– আগে তুই সুস্থ হ তারপর দেখছি এসব।

– আমি একদম সুস্থ তুই শুধু একবার বল বিয়ে করবি আমায়। প্লিজ মেহেরিন সত্যি খুব ভালোবাসি তোকে। অনেক সুখে রাখবো তোকে প্লিজ!

মেহেরিন কিছুক্ষণ নিরবের চোখের দিকে তাকিয়ে থাকে। অতঃপর বলে..

– হুম করবো!

– সত্যি মেহেরিন তুই বিয়ে করবি আমায়!

– হাম করবো! পরশু বাসায় আসিস এটা নিয়ে তখন বিস্তারিত কথা বলবো। নিজের যত্ন নিস কেমন!

বলেই মেহেরিন উঠে যেতে নিল। নিরব তার হাতে আলতো করে চুমু খেল। অভ্র’র এসব দেখে রাগে গজ গজ করতে লাগলো।

বাইরে আসার পর’ই মেহেরিন দা কে বলল..
– তুমি গাড়িতে গিয়ে বসো আমি আসছি!

– কিন্তু তোর সাথে আমার কথা আছে।

– জানি আমি! তুমি যাও আমি আসছি!
অতঃপর অভ্র গিয়ে গাড়িতে বসে!
.
২ দিন পর…
নির্ঝর আজ মেহেরিন’র সাথে দেখা করতে পারে না। কোম্পানি’র একটা কাজ নিয়ে অনেক ব্যস্ত ছিল সে। খুব রাত করেই হোটেলে ফিরল সে। হোটেলে এসে রুমে ঢুকে ফ্রেশ হয়ে সবে মাত্র টিভিটা অন করে ল্যাপটব ধরল এর মধ্যেই একটা কথা তার কানে গেল। কথাটা শোনা মাত্র নির্ঝরের হাত থেকে ধপাস করে ল্যাপটব পড়ে গেল। সে অবাক চোখে টিভির দিকে তাকিয়ে রইল। নিউজে’র হেডলাইনে লেখা –

“অবশেষে বিয়ে করতে চলেছে খান বাড়ির ছোট মেয়ে আর খান কোম্পানির ওনার মেহেরিন বর্ষা খান! বিশিষ্ট শিল্পপতি এমদাদ হোসেন এর ছেলে নিরব হাসানের সাথে মেহেরিন’র বর্ষা খান এর বিয়ে”!

নির্ঝর ধপাস করে বিছানায় বসে পড়ল। তার উপরে আকাশ ভেঙে পরল। শেষে কি না নিরব!

#চলবে….

#Game_2
#মিমি_মুসকান ( লেখনিতে )
#পর্ব_১৭

নির্ঝর চুপচাপ বসে আছে বিছানায়। তার মাথায় উস্কো খুস্কো চুল মুখটাও মলিন। তার চারপাশে ইহান, কাব্য, রোদ্দুর আর নিশি এই চারজন মিলে হাত দিয়ে তাকে বাতাস করছে। নির্ঝর ওদের কাহিনী দেখে অনেকটা বিরক্ত হচ্ছে। সবাই মজা নিচ্ছে ওর সাথে। নির্ঝর রেগে বলে…

– গাইস তোরা থামবি আমি ড্রিপরেশন’এ আছি।

নিশি বলে..
– ওহ হ্যাঁ তাই তো! আমাদের দেবদাস তার পারুল কে পাবে না এই তোরা এখন অফ যা।

নির্ঝর রেখে নিশি”র দিকে তাকায়। এদিকে কাব্য বলে উঠে..
– থাক ভাই আর দুঃখ পাস না! দেখিস মেহেরিন তার বিয়ের দিন তোদের নাচিয়ে ছাড়বে!

নির্ঝর বিরক্ত মাখা মুখে কাব্য’র দিকে তাকায়। রোদ্দুর বলে..
– আচ্ছা নির্ঝর তুই সবার কথা বাদ দে। আমি সিরিয়াস আমার কথা শোন। সবার কপালে সব কিছু থাকে না এখন মেহেরিন নিজে যখন চাইছে নিরব কে বিয়ে করতে এখানে আমরা কি করতে পারি।

নির্ঝর চুপ হয়ে যায়। তার সময় যেন সেখানে থমকে যায়। চোখ দুটি স্থীর হয়ে আছে। মনটা হঠাৎ করেই খারাপ হয়ে যায়। কিছু যেন তার থেকে হারিয়ে যাচ্ছে। নির্ঝর এর মনটা খারাপ বুঝতে পেরে রোদ্দুর বলে উঠে..

– এই তোরা চুপ যা আমার ভাইটা সত্যি ড্রিপরেশনে চলে গেছে। মেহেরিন’র বিয়ের শোকে সে না এবার মরেই যাই!

বলেই ফিক করে হেসে দেয়। নির্ঝর বিরক্ত হয়ে বালিশে‌ মুখ গুজে। সবাই এবার জোরে হেসে উঠে। হঠাৎ নিহা এসে সবার হাসার শব্দ শুনে বলে…

– এতো হাসাহাসি কিসের?

নিহা’র কথা শুনে সবাই চুপ হয়ে যায়। নির্ঝর অসহায় মুখ করে বলে..
– তুমি আমার সাথে বেইমানি করেছো কথা নেই তোমার সাথে!

– তোর আবার কি হলো?

– তুমি এটা কিভাবে করলে দি!

– কি করলাম!

– আমার মেহু পাখি কে আমার থেকে কেড়ে নিয়ে আবার জিজ্ঞেস করছো!

নিহা ঘুরে ওই চার বিচ্ছুর দিকে তাকায়। চারজন’ই দাঁত বের করে হাসে। নিহা নির্ঝরের পাশে বসে বলে..
– তাহলে তুই ও ভেবে নিলি আদুরীর বিয়ে হচ্ছে!

– সন্দেহ আছে কোন! পুরো দেশের মানুষ জানে বিয়ে হচ্ছে যে!

রোদ্দুর বলে উঠে..
– হ্যাঁ দি তাই তো! আমরাও বলছিলাম..

নিহা বলে উঠে..
– তোরা এরা এসে ওকে বোকা বানিয়ে যাচ্ছিস এই তো!

নির্ঝর ভ্রু কুঁচকে ওদের সবার দিকে তাকায়। সবাই হেসে উঠে! নির্ঝর ভাবছিল ওরা ওকে জ্বালাচ্ছিল তবে ওরা যে ওর সাথে মজা করছিলো এখন সেটা বুঝতে পেরেছে। নির্ঝর এবার নিহা’র দিকে তাকাতেই নিহা হেসে বলে..

– তুই ওদের কথা বিশ্বাস করে নিলি!

– তার মানে!

– বিয়ে হচ্ছে না পাগল!

– তাহলে ওরা যে বললো!

নিহা ওদের দিকে তাকাতেই ইহান বলে উঠে..
– আমাদের কোনো দোষ নেই আদুরী বলেছে যেন নির্ঝর সত্যি টা না জানে তাই!

নির্ঝর বলে উঠে..
– কোন সত্যি দি!

নিহা বলে উঠে..
– সত্যি টা হলো এটাই যে মেহেরিন বর্ষা খান নিরবকে বিয়ে করছে না।

– কিন্তু এই বিয়ের অ্যানাউসমেন্ট!

– হায়রে গাধা শোন..

অতঃপর #ফ্ল্যাশব্যাক..
মেহেরিন গাড়িতে এসে বসার পর’ই অভ্র আর আহিয়ান তাকে বিয়ের কথা জিজ্ঞেস করতেই মেহেরিন হেসে বলে..

– পরশু দিনের জন্য অপেক্ষা করো সব জানতে পারবে।

অভ্র তখন বুঝতে পারে মেহেরিন’র মাথায় কিছু একটা ঘুরছে! তাই সে আর কিছু জিজ্ঞেস করে না।

অতঃপর সেদিন নিরব আর তার বাবা এমদাদ হোসেন খান বাড়িতে আসে। তারা এসেছে শুনে মেহেরিন আসে। নিরব একটু দূরেই দাঁড়িয়ে ছিল। নিরব মেহেরিন’র দিকে আসছিল। নিরব তাকে দেখে হেসে দিলো। মেহেরিন আসার সময় হুট করেই ফলের ঝুড়ি থেকে একটা ছুরি আর কাব্য একটা ছুরি দিয়ে আপেল কেঁটে খাচ্ছিল সেই ছুরি আর আপেল নিয়ে হঠাৎ করেই নিরবের কাছে এসে তার হাত ধরে ছুরি নিয়ে দেওয়ালের সাথে আটকে দিল। হঠাৎ করে এসব হওয়ায় নিরব আর তার বাবাসহ সবাই চমকে উঠে। কেউই কিছু বুঝতে পারে না। নিরবের হাত থেকে রক্ত পরতে থাকে। সে ব্যাথায় কুঁকড়ে উঠছে। এমদাদ হোক আর তার গার্ড নিরবের কাছে আসতে নিলে ডেভিল আর লোক এসে এমদাদ হোসেন আর তার গার্ড দের আটকে দেয়।

এদিকে মেহেরিন হাতে থাকা ছুরি দিয়ে আপেল কেটে তা খাচ্ছে আর নিরব কে দেখছে। নিরব কে ব্যাথায় কুঁকড়াতে দেখে সে হেসে দেয়। নিরবের চোখ লাল হয়ে গেছে। মেহেরিন হেসে বলে উঠে..
– কেমন লাগছে?

নিরব অবাক হয়ে তার দিকে তাকায়। এমদাদ হোসেন রেগে বলে উঠেন..

– এসব কি করছো মেহেরিন! এভাবে তুমি আমার সামনে আমার ছেলেকে মারতে পারো না। তুমি বলেছো বলেই আমরা এখানে এসেছি আর তুমি এভাবে আমাদের ধোঁকা দিচ্ছো। আমি তোমাকে ছাড়বো না!

মেহেরিন একবার এমদাদ হোসেন এর দিকে তাকায়। অতঃপর আবার নিরবের দিকে তাকিয়ে বলে..

– কে তুমি!

নিরব থমতম খেয়ে তাকিয়ে থাকে মেহেরিন’র দিকে। এমদাদ হোসেন রেগে বললেন…

– কি বলতে চাও তুমি মেহেরিন!

মেহেরিন আপেল মুখে দিয়ে নিরবের দিকে তাকিয়ে বলে..
– তুমি এমদাদ হোসেন কে বোকা বানাতে পারো তবে মেহেরিন বর্ষা খান কে না। তুমি যে নিরব না সেটা আমি জেনে গেছি, এখন বলো তুমি কে?

নিরব চমকে উঠে। এমদাদ হোসেন বলে..
– কি বললে তুমি ও নিরব নয় মানে!

মেহেরিন ইশারা দিলে ডেভিল ওরা তাকে ছেড়ে দেয়। নিরব বলে উঠে..

– এসব কি বলছো তুমি মেহেরিন আমি সত্যি’ই নিরব!

– তাই বুঝি!
বলেই নিরবের গলা বরাবর ছুড়ি ধরে। নিরব অনেকটা ভয় পেয়ে যায়। মেহেরিন হেসে বলে…

– এটা আমার বাড়ি, এখানে তোমাকে মেরে ফেললেও কেউ আসবেনা তোমাকে বাঁচাতে! গট ইট!

মেহেরিন’র এসব কথা বার্তা শুনে অভ্র আর আহিয়ান কিছুটা হলেও আন্দাজ করতে পেরেছে। নিহা, রোদ্দুর , ইহান , কাব্য আর নিশি দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখছে। হুট করেই মেহেরিন নিরবের হাত থেকে ছুরি টা বের করে নেয়। নিরব ব্যাথায় নিচে লুটিয়ে পড়ে। এমদাদ হোসেন এসব দেখে অনেক ঘাড়বে যান। মেহেরিন নিরবের চারদিকে ঘুরছে আর আপেল খেতে খেতে বলছে..

– নিরবের মতো চেহারা হলেই নিরব হওয়া যায় না। তুমি নিরব সাজার জন্য নিজের চেহারায় প্লাস্টিক সার্জারি করালে, আমাকে বিয়ে করতে চাইলে অতঃপর কি আমাকে মেরে ফেলবে! প্ল্যান এটা ছিল!

নিরব হা হয়ে তাকিয়ে আছে মেহেরিন’র দিকে। সবাই চুপ হয়ে শুধু শুনে যাচ্ছে। মেহেরিন নিরবের দিকে তাকিয়ে বলে উঠে..
– কি অবাক হলে এসব আমি জানলাম কি করে! শোন তুমি নিরবের চেহারা নিয়েছো বটে কিন্তু ওর স্বভাব টা নিতে পারো নি।

মেহেরিন নিরবের সামনে বসে তার দিকে তাকিয়ে বলে…
– নিরব আমার জন্য অনেকবার সুইসাইড করেছে তবে কখনো পানিতে নেমে মরতে যায় নি। কারন পানি নিজেই ওর মৃত্যু! ফোবিয়া আছে ওর পানিতে! তাই যখন আমি শুনলাম ওর পানিতে সুইসাইড করার চেষ্টা করেছে তখন আমি ছুটে যাই কারন বিষয়টা সত্যি মারাত্মক ছিল তবে.. তবে তোমাকে দেখার পর’ই আমার ঘটকা লাগলো কারন তুমি বেশ স্বাভাবিক ছিলে কোনো ভয় ছিল না তোমার মুখে! প্রথম সন্দেহ টা আমার এখানেই হয়। এরপর আমাকে বিয়ে করতে চাওয়া আমাকে ভাবায়। তোমাকে আমি হ্যাঁ বলি এই কারনে যাতে তুমি ঠিক বুঝতে না পারো আমি কি ভাবছি। তোমার প্ল্যান অনুযায়ী আমি হ্যাঁ বলতাম তাই বলেও দিলাম। অতঃপর আর কি বেশিক্ষণ লাগলো না জানতে কারন তুমি হসপিটালে ছিলে। আমার লোক ডাক্তার কে দেখিয়ে সিউর হয়ে নিল যে তোমার মুখ প্লাস্টিক সার্জারি করা!

নিরব মুখ থেকে কথা বন্ধ হয়ে গেল। সে হা হয়ে গেল মেহেরিন’র কথা শুনে। মেহেরিন এতো কিছু করে ফেললো এসব তোমার ধারনার বাইরে।এমদাদ হোসেন যেন তার মুখের ভাষা হারিয়ে ফেলল। মেহেরিন হাতের থেকে ছুরি টা নিয়া নিরবের গলায় ঠেকাল। নিরব এক হাত দিয়ে তার অন্য হাত ধরে রেখেছে। রক্ত এখনো পড়ছে। নিরব কাঁপা কাঁপা গলায় বলল..

– আমি সব বলছি!

মেহেরিন হেসে বলল..
– এই তো গুড বয়! এখন শুরু করো…

বলেই মেহেরিন উঠে গেল। একটা সার্ভেন্ট এসে নিরবের হাত ব্যান্ডেজ করতে লাগলো। নিরব বলতে শুরু করল..
– আমার নাম সাজিদ! ছোট খাটো গুন্ডামি করতাম। সবসময় চাইতাম বড় কিছু করতে যাতে সবাই আমাকে চিনতে পারে। অবশেষে এরকম কিছুই হলো। আমাকে বলা হলো নতুন চেহারা দেয়া হবে। এর চেহারার মাধ্যমে যে করে হোক মেহেরিন বর্ষা খান কে বিয়ে করতে হবে। অতঃপর তাকে বিয়ে করে প্যারিসে নিয়ে যেতে হবে। সেখানে তাকে মেরে ফেলতে হবে।

নিহা রেগে উঠে নিরবের কপাল বরাবর গান ঠেকিয়ে বলল..
– কার এতো সাহস! কে করতে বলেছে তোকে এরকম করতে বল!

নিরব ভয়ে একটা শুনলো ঢোক গিলল। অতঃপর কাঁপা কাঁপা গলায় বলল..

– মি.. মিঃ রায় আর তার ছেলে অংকন রায়!

নিহা গান টা সরিয়ে নিয়ে বলল..
– রায়! এটা ওদের প্ল্যান!

– হ্যাঁ রায়ের ছেলেকে আপনারা মেরে ফেলেছেন আর তার ছেলের ব্যবসা সব শেষ করে দিয়েছেন এর প্রতিশোধে তারা মেহেরিন কে মারতে চাইছে!

এসব শুনে সবাই অবাক। এদিকে মেহেরিন তার কথা শুনে হেসে দিলো। বলে উঠে..
– কি দারুন প্ল্যান বাহ বাহ! কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হলো না। সব আমি ধরে ফেললাম!

এদিকে এমদাদ হোসেন এসে নকল নিরবের গলা ধরে বলল..
– আমার নিরব কোথায় বল! আমার নিরব কোথায়?

নকল নিরব বলে উঠে..
– তারা উনাদের কাছে, এর বেশি আমি আর কিছু জানি না!

এমদাদ হোসেন এসব শুনে অনেকটা ভেঙ্গে পরেন। ডেভিল এসে তাকে ধরে বসান। হঠাৎ এমদাদ হোসেন রেগে নকল নিরবের দিকে গুলি করেন। মেহেরিন তৎক্ষণাৎ তাকে সরিয়ে ফেলে। এমদাদ হোসেন বলেন..
– এ কি করলে তুমি মেহেরিন! ওকে বাঁচালে কেন?

– কারন ও বেঁচে না থাকলে আমার ছেলেও বেঁচে থাকবে না ভুলে গেছেন।

– তোমার কি মনে হয় ওরা এখনো ওকে বাঁচিয়ে রেখেছে।

– অবশ্যই! কারন আমাকে মারার পর তারা সব দোষ নিরবের’র ঘাড়েই ফেলবে। আর আমার মনে হচ্ছে নিরব বেঁচে গেছে।

– মেহেরিন!

মেহেরিন নকল নিরবের কলার ধরে বলে..
– রায় আর তার সন্তান রা কোথায় আছে এটা বলবি!

নিরব ঢোক গিলে বলল..
– তারা প্যারিসেই আছে, তারা সবাই আর নিরবও মনে হয়!

মেহেরিন নকল নিরব’র তাকিয়ে হেসে দিয়ে অভ্র কে বললো..
– দা বিয়ের তোড়জোড় শুরু করো আর অ্যানাউসমেন্ট করো মেহেরিন বর্ষা খান নিরব হাসান কে বিয়ে করতে যাচ্ছে আর বিয়েটা প্যারিসে হবে!

আহিয়ান বলে উঠে..
– মেহেরিন এসব কি বলছো!

– হুম জিজু! ওরা একটা প্ল্যান করেছে আর আমি এই প্ল্যান দিয়েই ওদের হারাবো। জানো এই কাজটা করতে আমার বেশ ভালো লাগে!
বলেই রোদ্দুর,ইহান, কাব্য আর নিশি’র দিকে তাকায়। সবাই বাঁকা হাসি দেয়। আহিয়ান বুঝতে পারে কোন একটা প্ল্যান আছে! এমদাদ হোসেন বলে উঠে.

– মেহেরিন, আমার নিরব!

– চিন্তা করবেন না আংকেল ও ফিরে আসবে ততোদিন এই টাকে নিয়ে থাকুন। তবে হ্যাঁ ওর যেন কোন কমতি না হয় বেশ ভালো করেই যত্ন করবেন! ঠিক আছে!
( নিরব কে উদ্দেশ্য করে বলে ) আমার সাথে থাকলে বেঁচে থাকবে আর যদি তারা কিছু জানতে পারে তাহলে তোমাকে বিদায় নিতে হবে বুঝতে পেরেছো!

নকল নিরব মাথা নাড়ায়। মেহেরিন এবার একটা বাঁকা হাসি দিয়ে চলে যায়!
..

#বর্তমানে…
নির্ঝর এসব শুনে নিহাই’র দিকে হা হয়ে তাকিয়ে আছে। নিহা ভ্রু নাচিয়ে বলে..

– কি হয়েছে!

নির্ঝর বলে উঠে..
– তোমার সাথে পরে কথা বলছি! ( নিশি, ইহান, কাব্য আর রোদ্দুর ওদের দিকে তাকিয়ে ) আগে ওদের দেখছি!

নির্ঝর তেড়ে ওদের কাছে যাবার আগেই সবাই দৌড়। নির্ঝর ওদের নিয়ে পুলো ঘর দৌড়াল। বলতে লাগল..
– বিচ্ছুর দল, সবকটা ইচ্ছে করে আমার সাথে মজা করল। সব জানত ওরা, আমাকে জ্বালানো না এক একটা পেলে না..

ওদের আর পায় না। সব কটা দৌড়াতে দৌড়াতে বাইরে বের হয়ে চলে গেল।‌ নির্ঝর আর ওদের ধরতে পারলো না। সে হাঁপাতে লাগলো। নিহা বলে উঠে..

– ধাম এবার!

– দি তুমি জানো ওরা কিভাবে আমার সাথে মজা করল।

– ওদের কাজ’ই এটা!

নির্ঝর এসে নিহা’র পাশে বসল। অতঃপর বলে উঠে..
– তোমার বোন এত বুদ্ধি রাখে কোথায় বলো তো!

– ও মেহেরিন বর্ষা খান অধরা খানের মেয়ে বুঝলি তো!

– জানি তো! আচ্ছা তো অধরা খান কি এই মেহু পাখি’র মতোই ছিল। মানে তার ও এমন স্মার্টনেস, এই এটিটিউড এসব!

– স্যাম টু স্যাম ছিল। আমার বোন হলো আমার মা’র কপি বুঝলি!

– দি একটা কথা জিজ্ঞেস করি!

– বল!

– আমি এটা শুনেছি যে অধরা খানের মৃত্যুর পর সবাই মেহেরিন বর্ষা খান কে জানে! এর আগে নাকি কেউ তার সম্পর্কে জানত না এটা সত্য!

নিহা মুচকি হেসে বলল..
– হুম!

– তার মানে মেহু পাখিকে লুকিয়ে রাখা হয়েছিল। কিন্তু কেন?

নিহা হেসে নির্ঝরের ঘাড়ে হাত রেখে বলে..
– অতীত নিয়ে ঘাঁটতে চাই না। বর্তমান নিয়ে ভাব!

– বুঝতে পারছি তুমি বলতে চাও না। সরি রাগ করো না।

– ঠিক আছে তবে এরপর আর কখনো এইসব নিয়ে কথা বলিস না ওকে!
বলেই নিহা উঠে চলে যায়। নির্ঝর খানিকক্ষণ বসে থেকে উঠে পরে। সে খান বাড়িতে এসেছিল মেহেরিন’র সাথে দেখা করতে তবে মেহেরিন বাসায় ছিল না। নির্ঝর নিচে নেমে দেখে মেহেরিন এসেছে।‌ মেহেরিন নির্ঝর কে দেখতেই বাঁকা হাসি হেসে ওর সামনে দাঁড়ায়। অতঃপর মিষ্টি নিয়ে নির্ঝর সামনে গিয়ে বলে..
– আমার যে বিয়ে এটা তো শুনেছেন! নিন এবার মিষ্টি মুখ করুন এই খুশিতে!

নির্ঝর মৃদু হেসে বলে..
– তোমার হাতে মিষ্টি তো কি মেহু পাখি বিষ খেতেও আমি রাজি আছি!

– আপাতত মিষ্টি টাই খান। বিষের দরকার পরলে দিয়ে দেবো!
বলেই মেহেরিন নির্ঝরের মুখে মিষ্টি ঢুকিয়ে দিয়ে চলে এলো।
.
কেটে গেলো কয়েকদিন, এর মাঝেই মেহেরিন আর নকল নিরবের এনগেজমেন্ট হলো। এটা মেহেরিন’র ইচ্ছে ছিল যাতে তার শত্রুরা কিছু বুঝতে না পারে। এদিকে নির্ঝর কে দেখিয়ে দেখিয়ে মেহেরিন খুব সুন্দর করেই নিরবের সাথে নাচল। নিরবের হাত রেখে রিং ও পরল। নির্ঝর জানে এসব তাকে দেখাতে করছে তবুও রাগ যেন তার কমছে না। কেউ একজন মেহেরিন’র এতো কাছে তার সহ্য হচ্ছে না। আর মেহেরিন ও যেন উঠে পরে লেগেছে। কিছুই সহ্য হচ্ছে না তার। সব কিছু জানা সত্ত্বেও কিছু বলতে পারছে না। ইচ্ছে তো করছে ওর নকল বাজ টাকে গিয়ে এখন’ই মেরে দিই।

আগামীকাল সবাই প্যারিস যাওয়ার জন্য রওনা দিবে। বিয়েটা ওখানেই হবে। আজ থেকে ঠিক ১০ দিন পর। এসব কথা এনগেজমেন্ট এ অ্যানাউসমেন্ট করা হয়েছে। নির্ঝর রেগে অনুষ্ঠান ছেড়ে চলে এলো। তাকে রেগে বেরুতে দেখে আহিয়ান আর নীল আসল তার পিছু পিছু।
নির্ঝর রেগে বাইরে এসেই খুব জোরে গাড়িতে লাথি মারল। আহিয়ান বলে উঠে..

– এতো রেগে আছো যে!

– জিজু তুমিও!

নীল বলে উঠে..
– জানিস তো সব কিছু মেহেরিন ইচ্ছে করেই করছে!

– কিন্তু বেশি করছে। কি দরকার ছিল এই এনগেজমেন্ট’র। দেখছো না আমাকে জ্বালাতে কি কি করছে!

– তাহলে তুই ও কর!
নির্ঝর, আহিয়ান আর নীল সবাই অবাক হয়ে পিছনে তাকাল। দেখল নিহা দাঁড়িয়ে। নির্ঝর বলে উঠে..
– আমি কি করবো!

নিহা বলে উঠে..
– ঠিক এটাই যা মেহেরিন তোর সাথে করছে। দেখ ভালোবাসলে jealousy ফিল করবে এটা সত্য। তুই যেহেতু আদুরী কে ভালোবাসিস তাই তুইও এটা ফিল করছিস। জানিস ভালোবাসা ফিল করার এটা একটা খুব ভালো উপায়।

নীল বলে উঠে..
– হ্যাঁ নির্ঝর সবাই এই কাজটাই করে!

– তাহলে তোমরা বলছো আমিও!

আহিয়ান বলে উঠে..
– কেন নয়!

নিহা বলে উঠে..
– তবে একটা কথা শুধু মেহেরিন যা করছে তাই এর বেশি না। মানেটা বুঝতে পেরেছিস।

– আবার জিগায়!
বলেই নির্ঝর বাঁকা হাসি দেয়! আর মনে মনে বলে..
– এবার দেখো তুমি মেহু পাখি, তোমার এই মিঃ লেজ কাটা ব্যাঙ তোমার জন্য কি করে!
.
পরদিন আরিশা’সহ সবাই এয়ারপোর্ট এ প্রায় অনেকক্ষণ ধরেই দাঁড়িয়ে আছে। মেহেরিন বলে উঠে…

– দি কার জন্য ওয়েট করছি আমরা। ফ্লাইটে লেট হচ্ছে তো।

কাব্য বলে উঠে..
– মেহেরিন’র দেখি বিয়ের জন্য খুব তাড়া!

– বিয়ে তো আমার না। আর যেই কাপলের বিয়ে হবে তার তাড়া ও থাকবে!

রোদ্দুর বলে উঠে..
– যেমন বললি তেমন শুনলি!

নিহা বলে উঠে..
– ঠিক বলেছো যেই কাপলের বিয়ে সেই কাপলের তাড়া তো থাকবেই তবে আদুরী আরেক কাপল ও আসছে।

– আরেক কাপল মানে!

নিহা কিছু বলতে যাবে তখন সামনে তাকিয়ে দেখে তারা আসছে। নিহা মেহেরিন কে সামনে তাকাতে ইশারা করল।‌ সবাই তাকাল সামনে। সবাই তাদের দেখে অনেকটা অবাক। নিশি বলে উঠল…

– কথা!

#চলবে….

[ ৯ টা বাজে আরেকটা পর্ব দেবো। ধন্যবাদ সবাইকে! ]#Game_2
#মিমি_মুসকান ( লেখনিতে )
#পর্ব_১৮

নিশি বলে উঠে..
– কথা!

সবাই তাকিয়ে দেখে হ্যাঁ এটা কথা’ই! নির্ঝর আর কথা একসাথে আসছে। কথা কে চিনতে কারোই কষ্ট হয় না কারন ও একজন নামকরা অভিনেত্রী! তবে ও নির্ঝরের সাথে এটা সবাইকে খুব ভাবাচ্ছে!
এখানে মেহেরিনও খানিকটা অবাক তবে সেটা প্রকাশ করছে না। নির্ঝর কথার হাত ধরে সবার সামনে এসে দাঁড়াল। নির্ঝর সবাই উদ্দেশ্য করে বলল..

– হেই গাইস! মিট কথা মাই ফিয়ান্সে!

সবাই অবাক শুধু নিহা বাদে কারন এটা সে জানত। হঠাৎ মেহেরিন খুশিতে হাত তালি দিয়ে বলে..
– কি! আপনার ফিয়ান্সে! মানে আপনি কথা কে বিয়ে করছেন। হেই কনগ্রেচুলেশন!

বলেই মেহেরিন গিয়ে কথা কে জরিয়ে ধরল। আর নির্ঝরের সাথে হ্যান্ডশেক করল। নির্ঝর অনেকটা অবাক হলো তার বিয়ের কথা শুনে মেহেরিন এতোটা হ্যাপি হয় কি করে! নির্ঝর ফিসফিসিয়ে নিহা কে জিজ্ঞেস করতেই নিহা বলল..

– কারন ওর ঘাড় থেকে তুই নামছিস ও খুশি হবে না তো কি হবে। বাই দ্যা ওয়ে কথা কিন্তু খুব সুন্দরী!

– তবে আমার মেহু পাখি থেকে না হুহ!

এদিকে মেহেরিন কথা কে বলে..
– তুমি জানো তুমি দেখতে খুব সুইট আর সুন্দর!

কথা হেসে বলে..
– আর তুমি দেখতে খুব কিউট!

মেহেরিন হেসে বলে..
– থ্যাংকু থ্যাংকু! তবে তোমার সাথে এই লেজ কাটা ব্যাঙ’কে খুব মানাবে ট্রাস্ট মি!

নিশি বিড় বিড় করে ইহান কে বলে..
– দেখলি তো, নির্ঝর ফাঁসাতে গিয়ে নিজেই ফেসে গেল। শেষমেষ কি না কথা!

– দেখবি আদুরী ওদের বিয়ে দিয়েই ছাড়বে!

– তাহলেই হয়েছে!
অতঃপর দুজনেই মুখ টিপে হাসতে লাগলো!

এদিকে কথা বলে উঠে..
– লেজ কাটা ব্যাঙ মানে!

নির্ঝর বলে উঠে..
– আমার নিকেনেম এটা!

– ওহ বেশ ভালো দিয়েছ কিন্তু!

– আই নো! আচ্ছা চলো লেট হচ্ছে।

– হুম চলো!

মেহেরিন যেতে নিবে তখন নির্ঝর কে বলে..
– আপনার ফিয়ান্সে কিন্তু খুব সুন্দরী! বেস্ট অফ লাক!

বলেই মেহেরিন চলে গেল। কথা নির্ঝর এর ঘাড়ে হাত রেখে বলে..
– তোর মেহু পাখি মনে হচ্ছে আমার আর তোর বিয়ে দিয়েই ছাড়বে।

– দোস্ত দেখ তুই আর এমন করিস না আমি এমনেতেই ভয় পেয়ে আছি।

কথা হেসে বলে..
– যাই বলিস তোর পছন্দ কিন্তু হেব্বি। মেহেরিন বর্ষা খান মানে বুঝিস।

– হ্যাঁ বুঝি বুঝি তেজপাতা করে দিচ্ছে আমার জীবন টা। এখন শুধু কাজটা হোক তাহলেই হবে ‌

– হুম এজন্য’ই তো আমি এসেছি তোকে আর মেহেরিন কে এক করতে।

– তা তো করতেই হবে খুব ভালোবাসি আমি ওকে!

কথা নির্ঝর’র কথা শুনে ওর দিকে তাকিয়ে মনে মনে বলতে থাকে..
– আমিও তো তোকে অনেক ভালবাসি তবে তুই যদি আমার ভালোবাসাটা বুঝতি!

– কিরে কি ভাবছিস।

– কিছু না চল!

– হুম!

অতঃপর সবাই ফ্লাইটে উঠে। মেহেরিন আর নিরবের সিট একসাথে থাকার কথা ছিল কিন্তু নির্ঝর আর নীল প্ল্যান করে টিকেট চেঞ্জ করে দেয় যার কারনে মেহেরিন আর নির্ঝরের সিট একসাথে হয়। অতঃপর নিরব কাব্য’র সাথে বসে। নির্ঝর মেহেরিন’র পাশে বসার পর মেহেরিন’র সাথে একটা কথাও বলে নি। এতে মেহেরিন’র কেমন একটা লাগলো কারন সে সবসময় বক বক করতে থাকে মেহেরিন’র সাথে। এবার বলেনি শুধু ম্যাগাজিন’এ মুখ গুঁজে আছে। কিন্তু এতে তার কি কি? আরো ভালোই হয়েছে সে পুরোটা জার্নি ঘুমিয়ে কাটাল। এদিকে নির্ঝর বসে শুধু এই ঘুমন্ত মেহেরিন কে দেখতে দেখতে কাটিয়ে দিল। সে মেহেরিন কে জেলাসি ফিল করাতে চায় তাই ওর সাথে একটা কথাও বলেনি।
.
প্যারিসে পৌছানোর সবাই একটা হোটেলে গিয়ে উঠল। রুমে আগে থেকেই বুক করা ছিল। বিয়েটা এই হোটেলে হবে তাই ম্যানেজার এসে দুই কাপল কে অভিনন্দন জানালো। অতঃপর যে যার মতো রুমে চলে গেল। রুমে যাবার পর’ই মেহেরিন ড্যাভিল কে কল করল আর বলল নকল নিরবের উপর নজর রাখতে।

বিয়ের এই ১০ দিন ধরে চলবে অনুষ্ঠান! আর এখানে নকল নিরবের প্রত্যেকটা পদক্ষেপ সম্পর্কে তাদের জানতে হবে। হঠাৎ করেই কেউ নক করল। মেহেরিন দরজা খুলে দেখল এমদাদ হোসেন। তিনি নানা ভাবে মেহেরিন কে অনুরোধ করল যাতে তার ছেলকে ওদের থেকে ফিরিয়ে আনতে পারে। মেহেরিন ও তাকে প্রমিস করল নিরব কে ফিরিয়ে দেবে।

এদিকে নিশি’র মন খারাপ। ১০ দিন ধরে দেখতে পারবে না নিশান কে। সে মন খারাপ করেই রুমে ঢুকল। বিছানায় ব্যাগ টা রেখে সোজা চলে গেল ওয়াসরুম এ। ফ্রেশ হয়ে আয়ানার সামনে এসে দাড়িয়ে মুখ মুছতে লাগল। আয়নায় তাকাতেই কেউ তার নজরে পরল। নিশি নিশান কে দেখেছে। নিশান তার বিছানায় আধশোয়া অবস্থায় তাকে দেখছে। নিশি তাড়াতাড়ি করে পিছনে ঘুরল কিন্তু কাউকে দেখতে পেলো না। সে ভাবল তার মনের ভুল। নিশি আবারো মন খারাপ করে আয়নায় তাকিয়ে নিজের মুখ মুছে সামনে ঘুরতেই নিশান কে দেখল। সে আবারও ভাবল এটা তার কল্পনা। তাই সে তার দিকেই তাকিয়ে বলল..

– যদি তুমি কল্পনা না হয়ে আমার বাস্তব হতে!

বলেই নিশি পাশ কাটিয়ে আসতেই নিশান তার হাত ধরে তার দিকে ঘুরাল। অতঃপর তার গালে হাত রেখে বলল..
– আমি তোমার কল্পনা নই জান পাখি!

নিশি চমকে উঠলো। সে নিশানের গালে হাত রাখতেই বুঝল এটা আসলেই নিশান। সে খুশি হয়ে হেসে তাকে জড়িয়ে ধরল। বলতে লাগল..
– তুমি এখানে!

– আমার জান পাখি যেখানে আমিও সেখানে! ভাবলে কি করে তোমাকে ছাড়া ১০ দিন থাকবো! হুহ একদিন তো দূরে থাক এট মূহুর্ত তোমাকে ছাড়া থাকতে পারি না আর তুমি ১০ দিনের কথা বলো!

– আই লাভ ইউ নিশান। আমি বিশ্বাসই করতে পারছি না তুমি এখানে! খুব মিস করছিলাম তোমায়!

– কচু করছিলে? একটা বার কল দিয়েছিলে!

– ব্যস্ত ছিলাম জানো’ই তো আদুরীর বিয়ে!

– হ্যাঁ তা জানি তবে ব্যাপারটা কেমন খাপছাড়া না। তুমি তো বড়! তোমার আর আমার বিয়েটা আগে হলেই ভালো হতো!

– শুরু হয়ে গেলে তুমি!

– বিয়ের কথাই তো বললাম, এতে রাগ করছো কেন?
বলেই নিশি কে নিজের সাথে মিশিয়ে নিল।

নিশি বুঝতে পারল নিশান কিছু একটা করবে এখন। সে বলে ওঠে..
– দেখো কিছু করার কথা ভাববে না এখন। খুব খারাপ হবে।

– বাগে পেয়েছি তোমাকে ছাড়ছি না।

– নিশান না..

– আজ ছাড়ছি না জান পাখি!
বলেই নিশি’র দিকে আগাতে থাকে। নিশি খানিকক্ষণ লাফালাফি করে এখন চোখ বন্ধ করে নিয়েছে।‌ নিশান আজ তাকে ছাড়বে না সে বুঝেছি। নিশান এক হাত দিয়ে নিশি’র চুল গুলো পিছনে সরিয়ে দিয়ে ঘাড়ে আলতে করে চুমু গেল। নিশি নিশানের শার্ট আঁকড়ে ধরে। নিশান নিশি’র ঠোঁটের দিকে আগাতেই হুট করেই কেউ রুম নক করল। নিশান বিরক্ত হয়ে ঠোঁটে কামড় দিয়ে নিশি কে ছেড়ে দিলো। নিশি নিশানের মুখ দেখে ফিক করে হেসে দিলো। নিশান বিরক্ত হয়ে বলল..

– হাসছো তুমি!

– তোমার মুখটা ( বলেই হেসে দিয়ে নিশানের বুকে ঢলে পরল। )

নিশান এক হাত দিয়ে নিশি কে ধরে বলল..
– এতো ব্যাড টাইমিং কার হতে পারে!

– আমার বোন ছাড়া নেই না!
বলতে বলতে আবার নক করলো। নিশান বললো..
– যাও দরজা খুলো আমার শালিকা বলে কথা!

নিশি হাসতে হাসতে দরজা খুলল। নিশান দরজার ওপাশে দাঁড়িয়ে রইল। নিশি দরজা খুলে দেখে নির্ঝর! নিশি বলে উঠে..
– তুই!

– কেন? অন্য কেউ আসবে নাকি!

– না আমি ভেবেছি আদুরী! তা কি বলবি বল!

– ভিতরে আসতে দিবি না নাকি!

– না মানে..

– সর সামনে থেকে তোর বোন কি করেছে শোন!
বলেই নির্ঝর ঘরে ঢুকে গেল। নিশি কিছুটা কাচুমাচু হয়ে আছে যদি নিশান কে দেখে ফেলে তখন। বলতে বলতে নির্ঝর নিশান কে দেখে ফেলল। নিশান চোখ বন্ধ করে দাঁড়িয়ে আছে। নির্ঝর নিশি’র ঘাড়ে হাত রেখে ইশারা করে বলল..

– কে?

– নিশান!

– ওহ্ আচ্ছা এই কাহিনী দাঁড়া এখন’ই জানাচ্ছি সবাইকে!

– কি বলছিস! অফ যা না ভাই!

– মনে আছে সেদিন কিভাবে মজা নিয়েছিল।

– 😒

– সর এখান থেকে! হেই ব্রো!

– হেই!

– মি নির্ঝর!

– নিশান!

– দেখা হয়ে ভালো লাগল তবে বলতে হবে কি প্রেম এখান অবদি চলে এলে!

– ভালোবাসায় প্যারা তো ছেলেদের’ই থাকবে ভাই!

– তা আর বলতে তুমি বাংলাদেশে থেকে এখানে এসেছো আর আমি ভালোবাসার জন্য বিয়ে করতে যাচ্ছি। আর এই মেয়েরা কিছুই বুঝতে পারে না।

নিশি কোমরে হাত দিয়ে দুজনকে দেখছে। নিশান বলে উঠে..
– কি বলছো বিয়ে!

– ইয়াপ ব্রো! আচ্ছা সেসব পরে বলবো এই হোটেলেই তো আছো!

– হ্যাঁ পাশের রুম!

– আচ্ছা সরি ডিস্টার্ব করার জন্য নিশি আমি পরে আসবো আর তোমার সাথেও পরে কথা হবে। টা টা!

বলেই নির্ঝর বের হয়ে গেল। বের হবার আগেও নিশি কে দেখে নির্ঝর হাসি দিয়ে ইশারা করল। নিশি মুখ ভেংচি দিয়ে দরজা বন্ধ করে সামনে তাকাল। তাকিয়ে দেখে নিশান তার দিকেই তাকিয়ে আছে। নিশি কিছু বুঝে উঠার আগেই নিশান তাকে টেনে তার ঠোঁট আঁকড়ে ধরল। নিশি নিশানের শার্ট আঁকড়ে ধরে আছে আর নিশান নিশি’র কোমড়! কিছুক্ষণ পর নিশান নিশি কে ছেড়ে দিয়ে নিশি’র দিকে তাকাল। নিশি লজ্জা পেয়ে হেসে নিশানের বুকে মুখ লুকালো। নিশান হেসে তাকে জরিয়ে ধরল!
.
রাতের বেলা..
নকল নিরবের কাছে একটা কল আসল। সে খুব সাবধানে আড়ালে গিয়ে কল টা ধরল। তাকে বলা হলো আধঘন্টা পর একটা গাড়ি আসবে। সেটাতে করে তাকে একটা হোটেলে নিয়ে যাওয়া হবে। হোটেলের 75th ফ্লোরে গিয়ে তাকে ওয়েট করতে বলেছে। সেখান থেকে তাদের লোক এসে তাকে নিয়ে যাবে।

নকল নিরব কথা মতো সে আধঘন্টা পর হোটেল থেকে বের হয়ে গেল। অতঃপর সেই গাড়িতে উঠে হোটেলে এসে পৌঁছাল! সে ফোন টিপতে টিপতে লিফটের অন বাটন চাপ দিল। লিফট খুললে সে ঢুকতে যাবে তখন সামনে তাকিয়ে যা দেখল তাতে সে চমকে উঠল…

#চলবে….

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here