আমার তুমি পর্ব ৩+৪

#আমার_তুমি❤
#লেখিকাঃ-তানজিনা আক্তার মিষ্টি ❤
#পর্ব:- ৩

চোখে ঘুম পেটে খিদে নিয়ে জরোসরো হয়ে বসে আছে আরুশি। অনেকক্ষণ ধরেই বসে আছে এখানে এখানে থেকে বেরিয়ে কোথায় যাবে তাই ওর মাথায় আসছে না দিন থাকলে এক কথা ছিলো কিন্তু রাতে কোথায় যাবো।

এদিকে ওদিকে কে তাকাচ্ছে বারবার এটা পার্ক না আরুশি পার্কের পাশে নদীর পার সেখানে বসে আছে। পার্ক ঢুকেছিল কিন্তু থাকতে পারেনি সিকোরিটি ওকে টিকেট দেখাতে বলেছে যা ওর কাছে নেই। তাই বকে বের করে দিয়েছে। আর টিকেট কেনার টাকা ও নেই ওর কাছে মামা কিছু টাকা দিয়েছে কিছু কিনে খাওয়া যাবে কিন্তু এখানে সব বড় বড় রেস্টুরেন্টে এসবে ঢুকলে অনেক টাকা লাগবে তাই আর খেতে যায় নি।
খিদে তো বসে থাকা যাচ্ছে না উঠে দাড়ায় আরুশি একটা দোকান খুজতেই হবে কিছু খেতে তো হবে।
শো শো করে একটা করে গাড়ি চলে যাচ্ছে আর তার ঠান্ডা বাতাস আরুশিকে ছুয়ে যাচ্ছে। এভাবে কখনো রাস্তায় রাতে হাটতে হবে আরুশি কখনো ভাবে নি। চোখ দিয়ে পানি পরছে। আরুশি হাতের উল্টো পিঠ দিয়ে তা মুছে নিচ্ছে।

রাস্তায় খুব একটা মানুষ নেই অনেকটা চলে এসেছে কিন্তু একটা দোকান ও পায়নি। হঠাৎ একটা দূরে চায়ের দোকানের দিকে নজর গেল আরুশির সাথে মুখে হাসি ফুটে উঠলো,
দোকানে গিয়ে দাড়ালো বেশি কিছু নেই পাউরুটি, কলা, বিস্কুট আছে চা দিয়ে খাওয়া। দোকানে একটা মহিলা বসে আছে। দোকানে দুইজন ছেলে ও একটা বয়ষ্ক দাদু টাইপের লোক । দুইটা বেঞ্চ পাতা আরুশি দাদুর পাশে বসলো আরেকটায় দুজন কেমন টাইপের ছেলে নজর ভালো না। তার চা আর বিস্কুট চাইলো আরুশি। দাদুর মতো লোকটা ফোন বের করতেই আরুশির টাইম জানতে ইচ্ছে হলো, সে তাকে জিগ্গেস করলো এখন কতো বাজে লোকটা বলল, ৯:০৮ বাজে আমি বাসার থেকে বের হয়েছি তখন সারে সাতটার মতো বেজে ছিলো। দের ঘন্টা চলে গেছে। এখন তো আস্তে আস্তে রাত গভীর হবে যাব কোথায়। খাচ্ছে কম চিন্তা করছে বেশি। হঠাৎ মনৈ হলো কেউ আমার গা ঘেষে বসছে পাশে তাকাতেই আরুশি চমকে বামে চেপে বসে। তার ডানে ওই বেঞ্চের একটা ছেলে এসে বসেছে। আর পাশে লোকটা কই এখানে নেই পেছনে ফিরে দেখলো লোকটা চলে যাচ্ছে। আরুশি ভয়ে আতঙ্কে গুটিয়ে গেল এই লোক গুলো কে প্রথমেই সন্দেহ হয়েছে এখানে থাকা যাবে না। দোকানের মহিলাটি কেমন করে যেন তাকালো সাথে সাথে ছেলে টা সরে বসলো। মহিলাটির জন্য বাচাগেল।

খাওয়া শেষ করে ও বসে আছি। ছেলেগুলো ও সে আছে একটু পর মহিলাটি আমার দিকে এগিয়ে এলো।

–কি লো তুই এহন ও এইহানে বইয়া রইসত কেন? আমি এহন দোহান বন্ধ করুম যা তুই বাড়ি যা রাত বারতাসে বাইরে কি করছ একলা যা।

বলেই মহিলাটি দরজা আটকাতে লাগলো বাধ্য হয়ে উঠে দাড়ালাম,

ইচ্ছে না থাকতেও বেরিয়ে এলাম দোকানে থেকে কি করবো কোথায় যাবো পাহাড় সোমান ভাবনা আমার মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছে। হঠাৎ পেছনে পায়ের শব্দ পেয়ে পেছনে ফিরতেই ভয়ে কাপতে লাগে আরুশি ওর পেছনে ওই চায়ের দোকানের দুই ছেলে ছোটে আসছে। কোন দিক যাবে ভেবে পাচ্ছে না এই ঢাকা শহরের এতো এতো বাসা কিন্তু আমার জন্য নেই।যেখানে যাই বিপদ এসে সমোক্ষ সভরে দাড়ায় কেন এমন হয় আমার সাথে কেন? বাসার একজন জন্য ছেড়ে এলাম এখন এখানেও এরা আরুশি দৌড়ে লাগায় কিছু দূরে যেতেই মাঠের মতো চোখে পরে মাঠে অসংখ্য মানুষ অনেকে দেখে মনে হচ্ছে এরা সাংবাদিক হবে সবাঈ একটা দিকে কেমারা ধরে রেখেছে।

আরুশি সেদিকে এগিয়ে যা কে এখানে আছি নিশ্চয়ই অনেক ব ড় কোন সেলিব্রিটি আছে এখানে না হলে তো এতো সবাই ঘিরে ধরতো না। মাইক্রো গাড়ির তো অভাব নেই আর এতো মানুষ ই বা কাকে ঘিরে আছে কে জানে? আরুশি ভীরে এসে গেছে সবাই ধাক্কা ধাক্কি করে কাকে যেন দেখছে। আরুশির সেদিকে খেয়াল নেই ও আছে ওর চিন্তায় ওই ছেলে গুলোর থেকে লুকাতে ব্যস্ত ও।

হঠাৎ কেউ ওর হাত ভীর থেকে টেনে ধরে তাকিয়ে দেখে ওই ছেলে গুলো। টেনে ভীর থেকে দূরে আন,

–আমাদের হাত থেকে পালাতে এসেছিস। হা হা হা কিন্তু পারবি না তো একবার তুই আমাদের নজরে পরে গেছিস আর পালাতে পারবি না।

বলেই আরুশির হাত ধরে টেনে নিতে লাগে,

–ছারুন বলছি হাত ছারুন আমি কিন্তু চিৎকার করবো এখানে অনেক মানুষ আছে সবাই আপনাদের কি করে দেখবেন তখন।

—চিৎকার করবি কর কেউ তোর কথা শুনবে না। সবাই এখন আছে রাইয়্যান চৌধুরী কে নিয়ে ব্যস্ত। তাকে রেখে কে তোর দিকে তাকাবে বাচাতে কেউ না।

–এই র‍াইয়্যানটা আবার কে যার জন্য এতো মানুষ জরো হয়ে আছে।

–কে রে তুই রাইয়্যান চৌধুরী কে চিনিস না। টিভি দেখিস না তুই।

সাথে সাথে আরুশির মনে পরে সে শেষ কবে টিভি দেখেছে মনে নাই। একদিন টিভি দেখতে বসে ছিলো বলে মামির হাতে মার খেতে হয়েছে কাজ বাদে টিভি দেখি বলে তার পর থেকে টিভির রুমে যায় না।

আরুশি কথার তালে তালে গেটের কাছে চলে এসেছে এই লোকগুলোর থেকে বাচতে হবে ভেবেই পা দিয়ে পার মারে ছেলেটির সাথে সাথে সরে আসে হাত ও ছেড়ে দেয়। আরুশি কোন দিক না তাকিয়ে আবার ওদিকেই দৌড় দেয়। পেছনে তাকিয়ে ওদের আসতে দেখে আরুশি ভাবে এরা তো আমার দিকে নজর ই দেবে না কোন সুপারস্টার রাইয়্যানের জন্য দূর অন্য দিকে যাই ভেবেই গাড়ির দিকে নজর যায় গাড়ির আড়ালে লুকিয়ে পরে।

হঠাৎ দেখে ছেলেটা সব গাড়ি চেক করে এটার দিকেই আসছে। এবার কোথায় লুকাবো হঠাৎ গাড়ি দরজা খুলা পায়। একটু খুলে আছে আরুশি বুকে ফূ দিয়ে দরজা খুলে গাড়ির পেছনে উঠেনিচু হয় বসে পরে। ছেলে গুলো গেলেই নেমে পরবে ভেবে গাড়িতে হেলান দিয়ে বসে আছে একটু মাথা উচু করে দেখে ছেলে গুলো আছে কিনা দেখে আছে। আরুশির খুব ক্লান্ত লাগছে এতত দৌড়ে পেরে তাই ভাবে একটু চোখ বন্ধ করে থাকে রেস্ট নেওয়া যাক ছেলে গুলো চলে গেলে নেমে পরা যাবে।

যেই ভাবে সেই কাজ চোখ বন্ধ করে আছে এভাবে কখন যে ঘুমিয়ে পরে নিজেও জানে না।

.

রাইয়্যাই বিরক্ত সাথে রেগে ও আছে। সে গোপন এখানে এসেছিলো কিছু সময় কাটাতে মনটা খুব খারাপ হয়ে আছে তার মার কথা খুব মনে পরেছে তাই তার কবরের এসে এখানে বসেছিল কিন্তু হঠাৎ কোথায় থেকে প্রেস মিডিয়ায় কানে গেল সে এখানে আছে। সবাই জরো হয়ে এসে পরেছে এখন না প্রশ্নের সমোক্ষীণ হতে হচ্ছে তাকে। পারর্সনাল মেটার নিয়ে সে কারো সাথে যোগাযোগ করতে পছন্দ করে না তাই কাউকে কিছু বলছে না।

শুধু রাগী চোখে গার্ডদের দিকে তাকাচ্ছে। গার্ড রা ভয়ে আছে তাদের দায়িত্ব দিয়েছিল যেন ব্যাপার টা গোপন থেকে কিন্তু কিভাবে রাখবে একজনের চোখে পরলেই তো সবাই জেনে যায়।

গার্ডরা সবাইকে অনেক কষ্টে সরিয়ে দিলো রাইয়্যান কোন দিক না তাকিয়ে সোজা নিজের গাড়িতে উঠে বসলো। ড্রাইভার উঠার আগেই তাকে রেখেই শো করে চলে গেল। ড্রাইভার হা হয়ে আছে এমন ঘটনা মাঝে মাঝেই ঘটে বেশি রেগে গেলে রাইয়্যান এমনটা করে থাকে তবুও প্রতিবার উনি এমনি অবাক হয়।
#আমার_তুমি❤
#লেখিকাঃ-তানজিনা আক্তার মিষ্টি ❤
#পর্ব:- ৪

রাইয়্যান গাড়ি নিয়ে সোজা বাসার চলে এলো। ওর গাড়ি গেটের কাছে আসতেই দারোয়ান গেট খুলে দিলো। রাইয়্যান গাড়ি পার্ক করে দরজা খুলে ঠাস দরজা আবার লাগিয়ে হনহন করে বাসার ভেতরে চলে এলো।
রাগে লাল হয়ে আছে রাইয়্যানের ফর্সা মুখ এমন রাগী ফেস দেখে কাজের লোক গুলো ভয়ে মাথা নিচু করে ফেলে। রাইয়্যান সেদিকে ভ্রুক্ষেপ না করে নিজের রুমে চলে যায়।

এদিকে রাইয়্যানকে এভাবে রুমে আসতে দেখেই রাইয়্যানের বাবা ছেলের জন্য অপেক্ষা করছিল। হঠাৎ ছেলেকে এভাবে আসতে দেখে বুঝতে পারে কিছু হয়েছে তাই তিনি রাইয়্যানের রুমে যায়। দেখে রাইয়্যান ব্লেজার খুলে ফেলেছে যা ফ্লোরে পরে আছে। রাইয়্যান হাত মুঠো করে বসে আছে। এতো রেগেছে কেন কে জানে? রাইয়্যানের প্রচণ্ড রাগ সে জানে কিন্তু হুটহাট রাগ তো সে করে না। নিজে ছেলের পাশে বসে কাধেঁ হাত রাখলো রাইয়্যান সঙ্গে সঙ্গে মাথা উচু করে তাকায় তার দিকে।

–কি হয়েছে তোমার এতো রেগে আছো কেন?

–কিছু না।

–কিছু না হলে তো তুমি এমন করো না বলো কি হয়েছে?

–এখন কথা বলতে ভাল লাগছে না। আমি একা থাকতে চাই।

উনি আর কথা বাড়ালেন না। এখন জোর করে এখানে থাকা মানে ওর রাগ বারানো। বাপ হলে ও ছেলে কে ভয় পায় সে।

রাইয়্যানের বাসায় একজন মেয়ে[ নাম জেসমিন কাজের মেয়ে বয়স ২০ হবে হয়তো। আগে মেয়েটার মা কাজ করতো। মেয়েটার মা অসুস্থ হওয়া দুজন মিলে করে কাজ মেয়েটা বেশি করে মায় কম করে দুজন মিলেই করে। ]
আর বাদ বাকি সব ছেলে দুজন বাদে। রাইয়্যানের বাবা বেরিয়ে ছেলের মাথা গরম বুঝেছে তাই ঠান্ডা করার জন্য কফি পাঠাবে ভেবে জেসমিনের মা কে ডেকে কফি নিয়ে যেতে বলে রাইয়্যানের রুমে।

জেসমিন এটা শুনতেই লাফিয়ে উঠে মাকে বলে, নিজে কফি করতে যায়। রাইয়্যান বলতে পাগল প্রায় সে তাই রাইয়্যানের কাজ নিজে করে এদিকে র‍াইয়্যান মেয়েটাকে দেখতেই পারে না সব সময় গা ঘেষে পরে। কিন্তু তারিয়ে দিতে পারছে না একটা কারণে ছোট থেকে জেসমিনের মার কাছে রাইয়্যান বড় হয়েছে এজন্য তার জন্য একে টলারেট করে নাহলে কবে যে বের করে দিতো ওকে।
কফি নিয়ে রাইয়্যানের সামনে দিয়ে দাড়িয়ে থাকে। এক ধ্যানে তাকিয়ে আছে রাইয়্যানের দিকে রাইয়্যান ফ্রেশ হয়ে এসে ল্যাপটপের কিছু করছে হঠাৎ উপরে তাকে দেখলো জেসমিন এখন ও দাড়িয়ে আছি। সাথে সাথে রাইয়্যানের চোখ আবার রাগে লাল হয়ে উঠে যা দেখে জেসমিন ভয়ে এক দৌড়ে বাইরে চলে এলো।

পরদিন
সূর্যের আলো মুখে পরছে আরুশির। চোখ মুখ কুচকে আসে ওর ঘুমের মাঝে হঠাৎ তাপ লাগলে যে কারো এমন মনে হবে। ওর মনে হচ্ছে সূর্য টা ওর মাথায় উপরে আছে। কিন্তু এমন কেন লাগছে হাত উঠিয়ে কপালে রেখে চোখ বন্ধ করে রইলো হঠাৎ তারাতারি চোখ খুলে ফেলল, ওর তো কাজ করতে হবে না হলে মামির হাতের মার খেতে হবে। কিন্তু চোখ খুলে ওর মাথায় বাজ পরলো মনে হয় এ কি এটা কোথায় আমি। এটা তো বাসা না এই গাড়িতে আসলাম কিভাবে আমি। ও মাই গড মাইক্রো গাড়ি এটাতে আমি কেন আচ্ছা আমাকে কি কেউ কিডন্যাপ করেছে। আরুশির মনেই নেই হঠাৎ এসব দেখে ভরকে গেছে ও। হঠাৎ মনে হলো কাল বাসা থেকে বেরিয়ে আসার কথা সাথে সাথে আরুশি মুখটা ফ্যাকাশে হয়ে উঠলো,

একে একে কালের সব মনে পরে গেল শেষে মনে পরলো ওই ছেলে গুলোর কথা। তাদের হাত থেকে বাচঁতে গাড়িতে আশ্রয় নেয় ও তারপর কখন যে ঘুমিয়ে গেছে মনে নেয়। এটা কোথায় তখন তো একটা মাঠে ছিলাম এটা কি সেখানেই। আরুশি ভেবেই জানালা দিয়ে উকিঁ দিলো না এটা তো সে জায়গা না। দরজায় গ্লাস খুলা ছিলো তাই উকিঁ দিতে পারলো ও মাই আল্লাহ এটা কোথায় আমি। এটা তো একটা রাজপ্রসাদ আমি এখানে কি করে এলাম। চার দিকে চোখ ঘুরিয়ে দেখছে আরুশি এই প্রসাদে কি করে আমি এলাম আল্লাহ কতো বড় বাসা। দরজা খুলে আরুশি বেরিয়ে এলো চুপি চুপি দরজায় আড়ালে দাড়িয়ে দেখছে গেটের কাছে একটা মধ্য বয়ষ্ক লোক বসে আছে। বামের দিকে তাকিয়ে চোখ চরক গাছ ওরে আল্লাহ এতো ফুল,
হাজারের কম না এতো এতো ফুল গাছ তিন চারজন লোক গাছ গুলোতে পানি দিচ্ছে কেউ ঘাস পরিষ্কার করছে। কি সুন্দর চারপাশ একটা ময়লা ও নাই ভয়ে আছে আরুশি ভুলে ভালে কোথায় চলে এলাম এখন কি করবো? কেউ আমায় দেখে নিলে কি হবে এখানে থেকে বের হবো কি ভাবে?

আরুশি গাড়ির আড়াল থেকে বেরিয়ে এলো খুব লোভ হচ্ছে ওই বাগানে যেতে এতো ফুল কাছ থেকে দেখতে ইচ্ছে হচ্ছে। আমার যাওয়ার উপায় করে দিলো মনে হয় আল্লাহ কারণ লোক গুলো পানি দিয়ে কোথায় জানি চলে গেল এখন বাগান টা ফাঁকা আরুশি একটু হাটঁতেই ফেটে ব্যাথা অনুভব করলো ওফ চাপ ধরে আছে ব্যাথাটা। তার উপর খিদে কাল রাতে বিস্কুট খেয়েছিলো এখন কতো বাজে কে জানে খিদে ও পেয়েছে এখানে থেকে বেরিয়ে খেতে হবে। কিন্তু থাকবো কোথায় থাকার জায়গা তো ঠিক হলো না এভাবে রাস্তায় কতোক্ষণ থাকবো। টাকায় বা কতোক্ষণ যাবে শেষ হলে কি করবো? মাথা কাছ করছে না আরুশির চিন্তা সব ফেলে বাগানে চলে এলো।

কি সুন্দর বাগান ফুলের বাগান এটা এরা কি ফুল খুব পছন্দ করে হ য়তো না হলে তো এতো ফুল রাখতো না। কতো নাম না জানা ফুল এখানে ওফ পাগল করা সুভাস আরুশি চোখ বন্ধ করে ফুলের গ্রাণ দিচ্ছে। এখানে যদি সারা জীবন থাকতে পারতো ইস কিন্তু এটা তো সম্ভব না। ভাবতেই মন খারাপ হয়ে গেল হঠাৎ চোখ গেল খয়রি রঙের গোলাপের উপর দেখি লাফিয়ে সেখানে চলে গেল। আরুশি সব চেয়ে প্রিয় ফুল এটা দেখেই সব মন খারাপ দূর হয়ে গেল। খুব ছিরতে ইচ্ছে হচ্ছে আরুশি জানে গাছের ফুল গাছে সুন্দর কিন্তু একটা না নিলে একটু ভালো লাগবে না আশে পাশে দেখছে কেউ নেই। একটা নেওয়া যেতেই পারে এখন কেউ নেই যেই ভাবা সেই কাজ হাতটা উঠিয়ে ফুল ছিরতে যাবে ভ য়ে হাত কাপঁছে আরুশির ধরা খেলে কি যে হবে। চুরি করছে ফাস্ট আরুশি ভেবে আবার ভয়ে হাত সরিয়ে নিলো আবার এনে টান মেরে ছিরে ফেলল, জোরে শ্বাস নিচ্ছে আরুশি কেউ দেখেনি তো যেই পেছনে ফিরে দেখতে যাবে তার আগেই কেউ জোরে চিৎকার করে উঠলো,
যা শুনে আরুশির জান বের হওয়ার উপক্রম হয়। আল্লাহ আমি কি ধরা খেয়েছি এখন কি হবে ভয়ে পেছনে ঘুরতে পারছে না।

রাইয়্যান জগিং করে ভেতরে যেতে আসছিলো হঠাৎ ওর নজর যায় গোলাপ গাছের দিকে কেউ বিরবির করে কিছু বলছে আবার হাত এগিয়ে নিচ্ছে ফুল ছিরতে। পেছনে থেকে রাইয়্যান শুধু আরুশির পেছনে থেকে দেখে সাদা নীল মিক্ম করা কম দামী একটা ড্রেস গায়ে মাথায় ওরনা দেওয়া হাতে নীল চুরি আছে যেটা ফুল গাছেহাত দেওয়ার সময় দেখেছে আর একটা ব্যাগ কাধে কে এই মেয়ে এটা তো বোয়ার মেয়ে না তাহলে কে বাসায় তো জেসমিন ছাড়া আর কোন মেয়ে নেই তাহলে এই মেয়ে কে। ভাবনায় মাঝেই আরুশি ফট করে ফুলটা ছিরে ফেলল যা দেখে রাইয়্যানের রাগ সাত আসমানে উঠে গেল। রাইয়্যান নিজের বাগান এটি খুব যত্ন করে কেউ একটা ফুল ওর ইচ্ছে ছাড়া টাচ ও করতে পারে না। সেখানে এই মেয়ে ফুল ছিরে ফেলল, রাগে ও চিৎকার করে উঠে কে এই মেয়ে আই এম সিউর এই মেয়ে চোর হবে। ফুলের চোর ফোল চুরি করতে এসেছে।

রাইয়্যানের চিৎকার শুনে সবাই দৌড়ে আসে। জেসমিন ওর মাও আসে। রাইয়্যানের বাবা চিৎকার শুনেছে কিন্তু আসতে তার লেট হবে হাটতে পারে না খুব একটা অসুস্থ তিনি মাঝায় ব্যাথা তার।

–স্যার কি হয়েছে? কোন সমস্যা কিছু কি ভুল হয়েছে গাছে তো পানি দিয়ে বড় ঘাস কেটে দিয়েছি।

রাইয়্যান কিছু বলল না শুধু হাতের ইশারায় আরুশি কে দেখিয়ে ইশারায় বুঝালো কে এই মেয়ে কিভাবে ভেতরে ঢুকলো। সবাই তো আরুশি কে দেখেই ভয় পেয়ে যায় আরুশি এখন ও অন্য দিকে ফিরে আছে ভয়ে কাপাঁকাপিঁ করছে হাথের ফুলটা সবাই দেখে ভয় পেয়ে যায়। সাথে বুঝতে পারে স্যার এর রাগের কারণে এই মেয়ে। সাহস তো কম না ফোল ছিরেছে এখন স্যার কি যে করবে এই মেয়ের।

–স্যার কে এই মেয়ে? এই মেয়ে তোমার সাহস তো কম না ফুল ছিরেছো। আর ভেতরে ডুকলে কিভাবে কে তুমি?

—দারোয়ান,দারোয়ান[ জোর চেচিয়ে ডাকলো রাইয়্যান]

দারোয়ান ভয়ে ভয়ে রাইয়্যানের সামনে এ এসে দাড়ালো ভয়ে নিচে দিকে তাকিয়ে আছে। উনি যানেন এখন উনাকেই বকবে এই মেয়ে ঢুকলো কেমনে? এর জন্য চাকরি টা না চলে যায়।

–স্যার আমি তো সব সময় ই গেটেই ছিলাম এই মেয়ে ডুকলো কিভাবে আমি তো দেখিনি। বিশ্বাস করেন,

–আপনি আমাকে কি বুঝাতে চাইছেন? এই মেয়েকি তাহরে উড়ে এসেছে আপনি কাজে ফাকিঁ দিচ্ছেন। আপনাকে এর পর ও কি কাজে রাখা উচিত এভাবে একজন ভেতরে চলে এসেছে আপনারা এতত গুলো গার্ড দেখেননি। এর কি মতলব থাকতে পারে কি জন্য এসেছে বড় কোন দলের থেকে নাকি আবার আমার ফুল ছিরে গাছটা নষ্ট করে দিয়েছে। দেখেই বুঝা যাচ্ছে বস্তি থেকে এসেছে কিভাবে ঢুকে এরা একটার ও চাকরি থাকবে না আর।

রেগে চিৎকার করে কথা বলে যাচ্ছে। চাকরির কথা শুনেই সব গুলো নিচে বসে পরলো সরি বলে ক্ষমা চাচ্ছে এই মেয়েকে তারা কেউ ঢুকতে দেখে নি। দেখলে কখনো আসতে দিতো না।

রাইয়্যান কিছু বলছে না ও রাগে তাকিয়ে আছে মেয়েটির দিকে একবারের জন্য ও এদিকে তাকালো না মেয়েটি।

–এই মেয়েকে তুমি এদিকে তাকাও? তোমার এতো সাহস হলো কোথায় থেকে ফল ছিরে ফেলল আর ভেতরে আসলে কিভাবে?

আরুশি কি ভাবে বাচবে সেটা ভাবছে পালাবো কিভাবে এখানে থেকে দৌড়ে ও দিতে না পারবো পেট ব্যাথা বেরেছে পালাবো কেমনে কেন যে এখানে আসতে গেলাম এখন কি হবে। এরা যে বড় লোক বুঝা যাচ্ছে এখন যদি চুরির জন্য জেলে দেয়। আরুশির বুক কেপে উঠলো দোয়া দূরুদ পরতে লাগলো এবারে মতো বাচিয়ে দাও আর জীবনে কারো গাছের ফল ছিরবো না।

রাইয়্যান রাগ আর ও বেরে গেল কত বড় সাহস মেয়েটার আমার কথার উওর ও দিচ্ছে না তাকাচ্ছে ও না। রেগে ওর কাছে এগিয়ে যাবে তার আগেই কেউ ওর হাত ধরে আটকে দেয় দেখে আববু,

— আববু দেখো,

–তুমি ভেতরে যাও আমি দেখছি?

— কিন্তু,

–কোন কিন্তু না তোমার কোন সিদ্ধান্তে আমি কিছু বলিনা কিন্তু এখন তোমার এই সবে না থাকলেই ভালো হবে। আমি দেখছি মেয়েটার প্রবলেম এটা আমি হ্যান্ডেল করতে পারবো।

রাইয়্যান একবার রাগি চোখে তাকালো মেয়েটির দিকে তারপর গাল ফুলিয়ে চলে যেতে নিলো। রাইয়্যানের বাবা[ রায়হান চৌধুরী ] একটু গম্ভীর ভাবে রাইয়্যানের সাথে কথা বলেছে যার জন্য ও গেছে। আর ইচ্ছে করেই ছেলে কে সরিয়ে দিয়েছে কারণে ছেলে রাগী বেশি আর ফুল ছিরেছি আবার নিশ্চয়ই রাগে সে কি করবে বুঝতে পারবে নি এখন এখানে না থাকায় ভালো। তাই তাকে পাঠিয়ে দিলো সাথে আরুশি সবার দিকে ফিরলো সবাই এক রকম ঝেকে ধরলো আরুশিকে, আরুশি হা হয়ে আছে একটা ফুলের জন্য এতো জনের বকা খেতে হবে বাপরে আগে জানলে এখানে পা ও রাখত না।
আরুশি মাথা নিচু করে আছে রাইয়্যান কিছু দূরে গিয়ে একবার পেছনে ফিরলো মেয়েটাকে দেখতে কেন দেখতে ইচ্ছে হলো জানা নেই। কিন্তু মুখ দেখা যাচ্ছে না মেয়েটা মাথা নিচু করে আছে আর সামনে আববু।

রায়হান মেয়েটির দিকে তাকিয়ে আছে। কম বয়সী মেয়েটা গায়ে রং ফর্সা, দেখতে অনেক মায়াবী মুখ দেখে এতো শুকনা লাগছে যেন ক্ষুধার্থ অনেক। একে দেখে তো চোর বা কারো দলের হয়ে আমাদের ক্ষতি করতে এসেছে বলে মনে হয় না। কিন্তু তাহলে মেয়েটি এখানে কি করছে এখানে এলোই বা কিভাবে?

চলবে❤
চলবে❤

[

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here