#চেকমেট
#পর্ব-৮
সারারাত সৌরভ ঘুমালো না। ইন্টারনেট ঘাটাঘাটি করে আরও কিছু তথ্য কালেক্ট করলো। তারপর কেস স্টাডি করলো অনেকক্ষন সময় ধরে। প্রত্যেকের স্টেটমেন্ট খুটিয়ে খুটিয়ে পড়েছে। বুদ্ধি করে প্রতিটি স্টেটমেন্ট দারোগা সাহেব কে দিয়ে রেকর্ড ও করেছে। সেগুলো শুনলো কিন্তু তেমন কিছু পেল না। এই করেই রাত প্রায় কেটে গেল। ফজরের আযানের সময় এককাপ কফি আর এক স্লাইস কেক খেয়ে ঘুমাতে গেল।
ঘুম ভাঙলো বেলা এগারোটার দিকে। ফোনের কর্কশ রিংটোন টা অনবরত বেজেই চলেছে। সৌরভ ঘুম ঘুম গলায় ফোন তুলে বলল,
“হ্যাঁ দারোগা সাহেব বলুন”
“স্যার আপনি বলেছেন কোথায় নাকি যাবেন?”
“হু”।
“স্যার কখন যাবেন?”
সৌরভ হাত বাড়িয়ে ঘড়িটা নিয়ে সময় দেখে বলল,
“আজ আর হচ্ছে না দারোগা সাহেব। আজ আপনি অন্য কাজ করুন। ”
দারোগা সাহেব আমতা আমতা করে বলল,
“স্যার আমরা কোথায় যাব?”
“চাঁদপুর যাব। আরকিছু?”
“জি না স্যার। ”
“আচ্ছা। ”
সৌরভ আরও কিছুক্ষণ বিছানায় গড়িয়ে নিলো। তারপর উঠে গোসল করলো৷ ফ্রিজ থেকে ফ্রোজেন পরোটা ভেজে ডিম অমলেট করে ঝটপট খাওয়া শেষ করলো। সকালের কফিটা ঘরে না খেয়ে বেরিয়ে গেল। সেদিন নীরার হাতে চা খেয়েছিল আজ কফি খাবে।
*****
লাবণীর হাতে কোনো কাজ নেই। চুপচাপ বসে কিছুক্ষন বই পড়েছে। তারপর অনলাইনে পত্রিকা পড়েছে। প্রিয়ন্তি বাসায় নেই। সৌরভের সাথে বিয়েটা পুরোপুরি ভেঙে গেছে এবার। প্রিয়ন্তির জন্য অলরেডি এই ক’দিনের মধ্যে পাত্রও দেখা হয়ে গেছে। লাবণী এই ব্যাপার টা নিয়ে একটু আপসেট। সৌরভ ব্যাপার টা জেনে কিছুক্ষণ থম মেরে বসেছিল৷ কিছু বলে নি। লাবণী জিজ্ঞেস করেছিল, প্রিয়ন্তির সাথে এই ব্যাপারে কথা বলবে কী না! কিন্তু সৌরভ বলল ওর কিছু বলার নেই আপাতত।
****
সৌরভ নীরাদের বাড়িতে এসেছে অসময়ে। ভেবেছিল নীরা বাড়ি থাকবে না। কিন্তু দরজা খুলল নীরা নিজেই। একটুও অপ্রস্তুত হলো না যেন। একদম স্বাভাবিক ভঙ্গিতে বলল,
“আসুন। ”
সৌরভ একটু হাসি বিনিময় করে ভিতরে ঢুকলো। নীরা আজও পরিপাটি হয়ে আছে। প্রিয়ন্তি কেও এমন ই দেখেছে। ঘরের মধ্যেও সেজেগুজে বসে থাকে। নীরা বলল,
“চা নাকি কফি?”
সৌরভ একটু রহস্য করে বলল,
“চা তো সেদিন খেয়েছি। আজ কফি হোক! ”
নীরা জোর করে যেন একটু হাসলো। কফির ফরমায়েশ দিয়ে এসে সৌরভের মুখোমুখি বসে বলল,
“বলুন”
সৌরভ কোনো ভনিতা না করেই বলল,
“আপনার হাজবেন্ডের সাথে কথা বলতে চাই। উনি নিশ্চয়ই এখনও ঘুমিয়ে নেই। ”
নীরা গম্ভীরমুখে বলল, ওনার সারারাত ঘুম হয় না। তাই দিনের বেলা ঘুমায়। তবে উনি এখন জেগে আছে। আপনি আসুন।
সৌরভ নীরাকে অনুসরণ করে ঘরে ঢুকলো।
ঘর টা যে কোনো রোগীর ঘর সেটা দেখেই বোঝা যাচ্ছে। ঘরে ঢাউস সাইজের একটা খাট। খাটের পাশে ছোট ওয়ারড্রব। আরেকপাশে একটা ফ্রিজ। সম্ভবত সেখানে খাবার দাবারের পরিবর্তে ওষুধ রাখা হয়৷ কারন ফ্রিজ টা ছোট সাইজের।
সৌরভ ঘরে ঢুকেই বুঝলো নীরা ওকে মিথ্যা বলেছিল হাজবেন্ডের ব্যাপারে। বলেছিল ভদ্রলোকের অসুস্থতা ডাক্তার রা ধরতে পারেন না। অথচ এখন সৌরভ দেখলো যে, ভদ্রলোক প্যারালাইজড। সৌরভ কে দেখে ভদ্রলোক হাসিমুখে বলল,
“আমি মনে মনে আপনার অপেক্ষাই করেছিলাম? ”
সৌরভ কপালে ভাজ ফেলে বলল,
“কেন?”
ভদ্রলোক হেসে বলল, পুলিশ, গোয়েন্দা এদের তো ফেইস করতেই হবে। এইজন্য আর কী! আপনার কাজ শুরু করুন।
ঠিক তখনই নীরা ঘরে ঢুকলো কফি নিয়ে। কফি সৌরভের হাতে দিয়ে বেরিয়ে গেল।
সৌরভ কে নীরার স্বামী বলল,
“আপনি কফি খেতে খেতে যা বলার বলুন। ”
সৌরভ জিজ্ঞেস করলো,
“সারা তাবাসসুম এর সাথে আপনার সম্পর্ক কেমন ছিলো? ”
“দেখুন আমার স্ত্রী আপনাকে কী বলেছে সেটা জানিনা। তবে সারার সাথে আমাদের সম্পর্ক খুব খারাপ ছিলো। ৬ বছর আগে আমার ক্যান্সার হয়। ক্যান্সারে রিকোভার করলেও আমার এক সাইড পুরাই প্যারালাইজড হয়ে যাই। অগত্যা চাকরি বাকরি বাদ দিয়ে এই বিছানা কে সঙ্গী হিসেবে মেনে নিতে হয়েছে। আমার ফ্যামিলিতে এক ছোট ভাই ছাড়া আর কেউ নাই। বাবার প্রপার্টি বিক্রি করে যেটুকু সম্বল ছিলো তা দিয়ে নীরা আর সারা মিলে রেস্টুরেন্ট খুলেছিল। কিন্তু চারদিকে লস আর লস। ধার দেনায় জর্জরিত করে সারা পালিয়ে গিয়েছিল জাহাঙ্গীর কবির নামের ভদ্রলোকের সাথে।
“পালিয়ে গিয়েছিল মানে?”
“জাহাঙ্গীর কবির যেখানে কাজ করতো সেখানকার টাকা নিয়ে পালিয়েছিল। ”
#চেকমেট
#পর্ব-৯
সৌরভ অবাক গলায় বলল, জাহাঙ্গীর কবির অফিস থেকে টাকা চুরি করে পালিয়েছিল?
নীরার স্বামী মাহিন দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলল, হ্যাঁ। একটা ভালো মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানির প্রজেক্ট ম্যানেজার ছিলেন তিনি। বেশ ভালো টাকা বেতন পেতেন। কিন্তু নিজেদের লোভ আর নির্বুদ্ধিতার কারনে সব খুইয়ে পথে বসেছে।
সৌরভ উৎসুক গলায় বলল, এক্সাক্ট কী কী ঘটেছিল বলতে পারবেন?
মাহিন মাথা নেড়ে হ্যাঁ বললেন। তারপর হাতের কাছে রাখা পানির বোতল থেকে এক চুমুক পানি খেল। তারপর বলল,
“যতদূর শুনেছি জাহাঙ্গীর কবির একজন স্ট্রাগলার ছিলেন। বাবা মারা যাবার পর মামার বাসায় থেকে পড়াশুনো করেছেন। রেজাল্ট ভালো ছিলো আর কাজেও বেশ স্মার্ট থাকায় বেশ ভালো পজিশনের চাকরি পেল। নিজের হার্ড ওয়ার্কিং এর কারনে তড়তড় করে উপরে উঠতে শুরু করলো। চাকরির সাত বছরে ফ্ল্যাট, গাড়ি সব করে ফেলল। ততদিনে সারার সাথে সেটল্ড হয়ে গেছিলো। একসময় দুজন মিলে সিদ্ধান্ত নিলো যে অস্ট্রেলিয়া যাবে। জাহাঙ্গীর কবির আগে গিয়েছিল। মাস খানেক পর সারা যাবে। কিন্তু টিকিট পেতে দেরি হওয়ায় আরও দু’মাস লেট হয়ে যায়।
“তারপর তো সারা গিয়েওছিল মনে হয়?”
“হ্যাঁ যাবার আগে আমার শ্বশুরের সম্পত্তির ভাগ বাটোয়ারা করে গিয়েছিল।”
“আচ্ছা৷ তারপর?”
সারা যাবার কয়েকদিনের মধ্যে জানা গেল জাহাঙ্গীর কবির অফিসের কোনো এক উর্ধতন কর্মকর্তার সাইন নকল করে প্রায় অর্ধকোটি টাকা ব্যংক থেকে উঠিয়েছে।
সৌরভ অবাক গলায় বলল, ওহ মাই গড!
“শুধু তাই নয়। নিকেতনে জাহাঙ্গীর কবিরের একটা প্লট ছিলো। যেটা সারার নামে ছিলো। সেটা নাকি জালিয়াতি করে দু’জনের কাছে বিক্রি করা হয়েছে।”
সৌরভ এই কথাটা শুনে হেসে ফেলল। বলল, এতো গুটিবাজি!
“হ্যাঁ। অফিস থেকে স্টেপ নিয়েছিল জাহাঙ্গীর কবিরের বিরুদ্ধে। তাই ওখান থেকে বাধ্য হয়েছিল ফিরে আসতে। ”
“আর ফিরে এসেছিল নিঃস্ব হয়ে?”
“হ্যাঁ। আমার তখন নীরার সাথে নতুন বিয়ে হয়েছে। ফিরে এসেই শুরু হলো তার নতুন ঝামেলা। আরও সম্পত্তি চাই। আমার শাশুড়ী মায়ের ভাগের সম্পত্তিটুকুও নেয়ার জন্য উঠে পড়ে লেগেছিল। কিন্তু সে কিছুতেই রাজি হলেন না। এই নিয়ে অশান্তি তো মারা যাবার আগ পর্যন্ত হয়েছে।
“আচ্ছা সারা লাস্ট কবে এই বাসায় এসেছিল?”
“ওই যে মারা যাবার দু’দিন আগে সম্ভবত। ”
“একটু ভালো করে ভেবে বলুন।”
মাহিন হেসে বলল, দিন তারিখ আমার খুব মনে থাকে। ওইদিন টা তো আমার আরও স্পষ্ট মনে আছে। ওইদিন নীরা গিয়েছিল সুপার শপে বাজার করার জন্য। কারণ পরদিন শবে বরাত ছিলো।
“থ্যাংক ইউ সো মাচ। আপনার কাছ থেকে অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় জানতে পারলাম। ”
মাহিন হেসে বলল, মাই প্লেজার।
সৌরভ ইতস্তত করে বলল, যদি কিছু মনে না করেন তাহলে একটা কথা জিজ্ঞেস করি?
“সেটা কী আপনার ইনভস্টিগেশনের বাইরে?”
“না। ইনভেস্টিগেশনের ভিতরেই বলা চলে। ”
“তাহলে যেকোনো প্রশ্ন করুন। আমি উত্তর দিতে প্রস্তুত। ”
“আপনার অসুখ টা আসলে ঠিক কী ভাবে? ”
“আসলে সেটা ডাক্তাররাও ঠিক বলতে পারছেন না। দুই বছর আগে হঠাৎ একদিন বাম হাত টা অসাড় হয়ে গেল। এরপর আস্তে আস্তে পুরো সাইড ধরে গেল। দেশের ডাক্তার, বিদেশের ডাক্তার কেউ কোনো রোগ খুঁজে পেল না। শরীরের প্রতিটি অঙ্গ, প্রত্যঙ্গ ঠিকঠাক চলছে শুধু বাম হাত থেকে শুরু করে পায়ের পাতা পর্যন্ত প্যারালাইজড হয়ে আছে। ”
“স্ট্রেঞ্জ! ”
“আমার মায়েরও এমন ছিলো। ৩৪ বছর বয়সে তৃতীয় সন্তান জন্ম দেবার পর তার অবস্থাও এমন হয়েছিল। আমার ছোট বোনের তখন বয়স কেবল তিন মাস। মা ঘুম থেকে উঠে বলেছিল তার কোমড় থেকে পা পর্যন্ত নাড়াতে পারছে না। ডাক্তার রা কোনো উপসর্গ খুঁজে পান নি। বাকী জীবন তাই ওভাবেই কাটিয়ে দিতে হয়েছে।
সৌরভ নরম গলায় বলল, বিষয় টা দুঃখজনক।
মাহিন হেসে বলল, কোনো ব্যাপার না। আমি এতে অভ্যস্ত হয়ে গেছি। আসলে ব্যাপার টা হলো মানুষ পরিস্থিতির দাস। পরিস্থিতি যাই আসুক সেটাকে মানিয়ে নিতে হয়।
“ঠিক বলেছেন মাহিন সাহেব। আপনার সাথে কথা বলে খুব ভালো লাগলো। আপনি অনেক সুন্দর ভাবে কথা বলেন। ফ্যামিলির আর কেউ তো সেভাবে কিছু বলেই নি। ”
মাহিন হাসলো। বলল, আসলে মুখে যাই বলুক। ভিতরে ভিতরে সবাই ই একটা শক পেয়েছে।
সৌরভ আচমকা জিজ্ঞেস করলো,
“আপনার সাথে সারা তাবাসসুম এর সম্পর্ক কেমন ছিলো? ”
“ভালো না।”
সহজ সরল স্বীকারোক্তিতে সৌরভ খানিক টা অবাক হলো। বলল,
“কারণ কী নীরার সাথে টাকা পয়সা নিয়ে ঝামেলা? ”
“হ্যাঁ। আসলে ব্যাপার টা হয়েছে একসাথে পার্লার করার জন্য টাকা নেয়ার পর আমার কাছে আবারও এসেছিল টাকার জন্য। কিছু বিদেশী শেয়ার কিনবে। আমেরিকান এক বন্ধুকে দিয়ে কিনিয়ে রাখবে। আমি এসব গুলবাজিতে বিশ্বাস করলাম না। বরং বলেছিলাম আগের টাকা না পেলে ওর বিরুদ্ধে স্টেপ নেব। ”
“আপনার ইনকাম সোর্স?”
মাহিন পাশের ড্রয়ার থেকে একটা কার্ড বের করে দিয়ে বলল, আমি একটা এ্যাড এজেন্সির কন্টেন্ট রাইটার। তাছাড়া একটা প্রডাকশন হাউজের স্ক্রিপ্ট রাইটার হিসেবেও জয়েন করেছি মাস ছয়েক আগে৷
কথাটা বলে আরও কিছু কাগজ বের করে দিলো।
মাহিন আরও বলল, তাছাড়া আমি একজন ফ্রিল্যান্সারও। অনলাইন বিজনেসও আছে।
সৌরভ অবাক গলায় বলল, আপনি তো পুরোপুরি ব্যস্ত মানুষ।
“এক্সাক্টলি। আসলে বাসায় থাকি বলে লোকে ভাবে শুয়ে বসে থাকি। আর যদি শোনে অসুখ আছে তাহলে তো কথাই নেই।”
“আপনি কী রাত জেগে লেখালেখি করেন?”
“লেখালেখির উদ্দেশ্যে রাত জাগি না। ইনসমনিয়ায় আক্রান্ত তাই ভাবলাম সময়টাকে কাজে লাগাই। ”
“বাহ! লাস্ট প্রশ্ন, নীরার সাথে আপনার সম্পর্ক কেমন? ”
মাহিন হেসে বলল, নীরা আর আমি ভালোবেসে বিয়ে করেছিলাম। আমাদের ভালোবাসা এখনো আগের মতোই আছে।
“আর নীরার মা, ভাই?”
“দুজনেই যথেষ্ট স্নেহ করেন। ইভেন আমার অসুস্থতার সময়ে এরা পাশে থাকার সাথে সাথে ফিনানশিয়ালি অনেক হেল্পও করেছে। বেশ মোটা অংকের টাকা খরচ হয়েছে। যেটা দেবার সামর্থ্য আমার আর আমার পরিবারের ছিলো না।”
“অনেক ধন্যবাদ আপনাকে সময় দেয়ার জন্য। ”
“ইটস ওকে। এটা তো আমার কর্তব্য। ”
সৌরভ বেরিয়ে গেল। নীরা সোফায় ই বসা ছিলো। সৌরভ কে দেখে হাসলো। সৌরভ বলল,
“আপনি অনেক কিছুই বলেন নি যেটা আপনার হাজবেন্ড বলেছে। কেন নীরা?”
নীরা হেসে বলল, আপনি আমাকে যতটুকু জিজ্ঞেস করেছেন ততটুকু ই বলেছি। আগ বাড়িয়ে কিছু বলতে গেলে পুলিশ তো সেটা ভালো চোখে দেখেন না।
সৌরভ হেসে বলল, ভেরি স্মার্ট আন্সার।
নীরা মুখে প্লাস্টিকের হাসি ঝুলিয়ে রাখলো।
সৌরভ বলল, আপনাদের কোনো ব্যাপারেই ইন্টারেস্ট নেই। আই মিন কেসের ব্যাপারে? স্ট্রেঞ্জ!
নীরা হেসে বলল, আমার ভাই ভাবীর সত্যিই কোনো ইন্টারেস্ট নেই। এমনকি তারা এই বাসায় আসাও বন্ধ করেছে। কেস ক্লোজ না হওয়া পর্যন্ত আসবেও না। আর মা কে ইচ্ছে করেই অনেক কিছু জানানো হয় না কারণ সে সব নিতে পারে না। তার যথেষ্ট বয়স হয়েছে। আর বাকী রইলাম আমি। আপনি তো প্রথম দিন থেকেই আমাকে ক্রাইম সাসপেক্ট হিসেবে ধরে নিয়েছেন। তাই চুপচাপ থাকি, কিছু আপডেট জানলে সেটা নিশ্চয়ই জানাবেন। তাই নয় কী!”
সৌরভ আবারও হাসলো। বলল, ভিক্টিমদের শরীরে যে হেমলক পাওয়া গেছে সেটা জানেন?”
নীরা ঠোঁট উলটে বলল, আপনি বা দারোগা সাহেব কেউ তো জানান নি!
সৌরভ হেসে বলল, আপনি আমাকে প্রতি সেকেন্ডে সেকেন্ডে মুগ্ধ করছেন।”
“মাই প্লেজার। ”
“ওকে। লাস্ট কোয়েশ্চেন, ২৪ তারিখ রাতে কোথায় ছিলেন?”
“বাড়িতেই ছিলাম। সিসিটিভি ফুটেজ দেখে নিতে পারেন। ”
সৌরভ আর কিছু বলল না। এরা প্রতিটি মানুষ ই ঠান্ডা মাথার। সবকিছু প্রি প্ল্যানড নয় তো!
সিড়ি বেয়ে নেমেও সৌরভ ফেরত এসে নীরাকে বলল, তুশল কী করছে?”
“ওর ঘরেই আছে। ডাকব?”
” না। চলুন যাই। ”
বাচ্চাটা আজও খাতায় আঁকিবুঁকি করছে। আশ্চর্য ব্যাপার হলো ঘুরে ফিরে একই ছোট ছোট নীল ফুলগুলো আঁকছে। ”
চলবে…..
চলবে…
(কাল এক পর্ব।)