নীল দিগন্তে পর্ব ১৩

#নীল_দিগন্তে
পর্ব- ১৩
লেখা- নীলাদ্রি নীরা

সৌরভ বসে আছে রাত্রির মামার স্টাডি রুমে। বড় একটা রুমের মাঝখানে একটা স্টাডি টেবিল। টেবিলে কয়েকটা ইংরেজি বই রাখা। সম্ভবত ল রিলেটেড বই। হাজার হাজার বইয়ের সমারোহ এখানে। সৌরভের মনে হচ্ছে ও কোনো ইন্টারভিউ দিয়েছে। কমপক্ষে সত্তর আশিটা কুয়েশ্চন তো ওকে করাই হয়েছে। তার উপর প্রমাণ স্বরূপ কাবিননামাও দেখাতে হয়েছে। ঠিক চাকরির ইন্টারভিউ এ যেমন হয়। ওর প্রফেশানাল লাইফে ও নিজেই একপ্রকার ইন্টারভিউয়ার। আর এখন! মশিউর রহমানকে দেখেই সৌরভ বুঝতে পেরেছিলো লোকটা ডিংক করেছে। সুস্থ্য অবস্থায় তাহলে কতগুলো প্রশ্ন করতো তাকে? সৌরভ কিঞ্চিৎ ঘামলো। তার উপর এখন মশিউর রহমান সৌরভকে গ্লাস এগিয়ে দিয়ে অফার করলেন,
-” হবে নাকি এক পেগ?”
সৌরভ বলল,
-” একচুয়েলি আংকেল আমি ড্রিঙ্ক করিনা।”
মশিউর রহমান হেসে বললেন,
-” এখন করবে। ইয়াংম্যান এই বয়সে আমিও ড্রিঙ্ক করতাম না এখন মনে হচ্ছে বড় ভুল করেছি। এত ইন্টারেস্টিং বিষয় মিস করে গেলাম হাহাহা”
সৌরভ গ্লাসটা নিলো। তারপর গ্লাসটা হাতে নিয়েই বলল,
-” সেটা বয়সভেদে এমন হয়। ইয়াং থাকতে এটা ইন্টারেস্টিং এর চেয়েও এর নেগেটিভ ইফেক্ট বেশি পড়ত। আমি যদি অন্য টাইপের একটা এক্সাম্পল যদি দেই। যেমন এসএসসি কিংবা এইচএসসিতে জিপিএ ফাইভের জন্য আমি মরিয়া হয়ে উঠতাম। পড়াশোনা যে কতটা কষ্টকর মনে হতো। কিন্তু ইউনিভার্সিটিতে মনে হলো দ্যাটস ওকে। ওগুলো পড়াশোনা ছিল নাকি? আবার ইউনিভার্সিটির সিআর হওয়ার জন্য মরিয়া হয়ে যখন পড়াশোনা করতাম তখনও মনে হতো এত হার্ড কেন পড়াশোনা? কিন্তু এখন আগের মতোই মনে হয়। এতটা হার্ড ছিল না যতটা মনে করতাম। আবার এদিকে আরেকটা ব্যাপার, জবে ঢুকার আগেও জার্নালিজমকে আমি প্রচুর ভয় পেতাম। পাবলিক মানেই হাজার হাজার কথা শুনতে হবে। গালি শুনতে হবে। কিন্তু এই পজিশনে আসার পর মনে হচ্ছে ইটস ন্যাচারাল। পাবলিক কাউকেই ছাড় দেয় না। পাবলিক ইজ আ ইমোশনাল ন্যাশন। তারা সবকিছুতেই ইমোশনাল হয়ে পড়ে। জার্নালিস্ট ভালো করলেও গালি, আর খারাপ করলে তো কথাই নেই।”
মশিউর রহমান বললেন,
-” ইউ আর টু লজিক্যাল। তোমার সাথে আমার জমবে ভালো। তুমি অবশ্যই আজকে এই বাসায় থাকবে।”
-” আংকেল আমার সকালে অফিস আছে”
-” নো এক্সকিউজ ইয়াংম্যান। আই সেইড, তুমি থাকবে। এখান থেকেই অফিস যাবে”
সৌরভ মনে মনে বলল, ইয়াহুউউউ। এত তাড়াতাড়ি রাত্রির মামা গলে যাবেন সে ভাবেই নি। হোয়াট এন ইন্টারেস্টিং ক্যারেক্টার। হাফ ছেড়ে বাঁচলো সৌরভ। যদিও রাত্রির মা ওর সামনেই ভীষণ রকম রেগে গিয়ে দরজা বন্ধ করে রেখেছেন। ব্যাপার না, সময়ের সাথে এভরিথিং উইল বি ফাইন। মনে মনে সে আবার বলল, বি রেডি রাত্রি, আই উইল টিচ ইউ আ গুড লেসন টুডে।
সৌরভ হুইস্কি ভর্তি গ্লাসটা মশিউর রহমানকে এগিয়ে দিয়ে একটুখানি হেসে বলল,
-” আংকেল ইফ ইউ ডোন্ট মাইন্ড, ইটস ফর ইউ ফ্রম মাইসেল্ফ”
.
রাত্রি বারবার আকুতি করে পুষ্পকে বলছে,
-” ও আমাকে খুব মারবে পুষ্প। আমি মিথ্যে বলেছিলাম যে আমি সিঙ্গেল মাদার হতে চাই। তানিহা হককে নিয়েও কথা শুনিয়েছি। সৌরভ এত সহজে ছাড় দিবে না। আমি বরং লুকিয়ে বাসা থেকে পালিয়ে যাই। তাহলে ও আর আমাকে পাবে না।”
পুষ্প রাত্রির কাঁধে ঝাকুনি দিয়ে বলল,
-” পাগল নাকি তুই? কিচ্ছু করবে না। তুই তাকে সব বলবি। একদম এ টু জেড। একটা কিছুও লুকোবি না। ঠিক আছে? উনাকে দেখে মনে হয় না উনি এত পাগল যে মারপিট শুরু করবে। সে অবশ্যই বুঝবে। কিন্তু তোকে সব বলতে হবে। ঠিক আছে তো?”
রাত্রি পুষ্পর কথায় সায় দিতে পারলো না। সৌরভ জীবনেও ওর কথাগুলোকে পাত্তা দিবে না। রাত্রি পুষ্পকে ওর ফোনে সৌরভ এর পাঠানো টেক্সট বের করে বলল,
-” পুষ্প দেখ ও আমাকে কি টেক্সট করেছে। দেখ না! বলেছে, বি রেডি পাজি কুইন, হিসেব তুলব সবকিছুর। যাস্ট ওয়েট সাম মিনিটস”
পুষ্প ধমক দিয়ে বলল,
-” রাত্রি! তোকে এত ভয় পেতে মানাচ্ছে না। বি কুল। এমনি বলেছে। দেখিস রাগই করবে না।”
রাত্রি কপাল চাপড়ে বলল,
-” বুঝছিস না কেন!!! ইয়ে তো বহত সিরিয়াস ম্যাটার হ্যায়”
পুষ্প কিছু বলতে চাইছিল কিন্তু তখনই রাজীব ফোন করল। পুষ্প কেটে দিল। আবারও কল এলো। পুষ্প আবারও কেটে দিল। রাত্রি বলল,
-” ভাইয়া ফোন দিচ্ছে। রিসিভ না করে কাটছিস কেন? জরুরি কিছু ও বলতে পারে।”
পুষ্প কিছু না বলে চলে গেল। রাজীবটা খুব বজ্জাত। কল রিসিভ না করলে বা কেটে দিলেই শুরু করবে কলের বন্যা বইয়ে দেয়া। পুষ্প বের হতেই রাত্রি দরজা বন্ধ করতে গেলো। তখনই সৌরভ দরজায় এসে দাড়ালো। রাত্রি দরজা বন্ধ করতে নিলেই সে ঠেলে রুমে ঢুকে গেলো। রাত্রি কপাল কুচকে দাড়িয়ে আছে। সৌরভ হাফাতে হাফাতে বলল,
-” তোমার ছোট মামী কি পাগল নাকি? আমাকে পাঁচটা গোটা গোটা রসগোল্লা খাইয়েছে। আরে বাবা আমি কি খাদক নাকি?”
রাত্রি অবাক হওয়ার চূড়ান্ত পর্যায়ে গিয়ে বলল,
-” ছোট মামী?”
-” হ্যা আর সেই কাজের বুয়াটা। দুজন মিলে আরেকটুর জন্য পেট খারাপ করিয়ে দিত আমার।”
-” আর ইউ শিওর সৌরভ যে ওটা ছোট মামী?”
-” আরে বাবা হ্যা হ্যা! উনি নাকি পুষ্পর আম্মু?”
-” হ্যা”
রাত্রি ব্যাপারটা বুঝতে পারলো না। ছোট মামী হটাৎ এত জামাই আদর করতে গিয়েছেন কেন? নিজের মেয়ের বিয়ের পর তো মেয়ের জামাইর সাথে ঠিকভাবে কথাই বলেন নি আদর তো বহুদূর। রাত্রি কোনো কিছুই বুঝতে পারলো না।
সৌরভ রাত্রিকে টেনে বিছানায় বসিয়ে বলল,
-” তোমাকে কিভাবে শাস্তি দেয়া যায় জানো?”
রাত্রি ফাঁকা ঢুক গিলে বলল,
-” কিভাবে?”
-” থাপড়িয়ে সাদা সাদা গাল দুটো একদম টকটকে লাল করে দিয়ে”
রাত্রি দুই হাত দিয়ে গাল চেপে ধরলো। ওর চোখে রাজ্যের ভয়। সৌরভ রাত্রির গা ঘেষে বসে বলল,
-” পালাতে চাচ্ছিলে কেন? ইউএসএ তে কি বয়ফ্রেন্ড বানিয়েছো নাকি যে আমাকে ছেড়ে তার কাছে যাবে?”
-” হ্যা”
সৌরভ রাত্রির হাত সরিয়ে ওর গালে কামড় বসিয়ে দিল। রাত্রি চিৎকার করে দূরে সরে গেল। সৌরভ আবার রাত্রিকে কাছে টেনে মুখ চেপে ধরে বলল,
-” পাগল হয়েছ? চিৎকার করে কি বুঝাতে চাইছ?”
রাত্রি সৌরভের হাত সরিয়ে বলল,
-” তোমাকে পাগলা কুত্তা কামড়েছে নাকি যে তাকে না পেরে আমাকে কামড় দিয়েছ?”
-” তোমার সাথে আরও খারাপ কিছু করা উচিত”
সৌরভ মুখ ফিরিয়ে নিলো। রাত্রি চুপ। গালে হাত বুলাচ্ছে ও। কামড় দিয়ে দাত বসিয়ে দিল নাকি? এত জ্বলছে কেন? সবাই দেখলে কি ভাববে! ওহ মাই গড!
সৌরভ যথাসম্ভব নিজের রাগটাকে কন্ট্রোল করে ফেলল। রাত্রিকে ওর দিকে ফিরালো। রাত্রির চোখের দিকে তাকিয়ে বলল,
-” কেন এমন কুতকুত খেলছ? হোয়াই রাত্রি? আর ইউ সাইকো?”
রাত্রি বলল,
-” সত্যি বলব?”
-” ডেফিনেটলি বলবে।”
রাত্রি বিছানা ছেড়ে উঠল। সৌরভকে বারান্দায় নিয়ে গেল। একটা দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বলল,
-” আজকে পূর্নিমা তাই না?”
সৌরভ মেজাজ কন্ট্রোল করে বলল,
-” হুম”
-” তোমার বাবা ইউনিভার্সিটির প্রফেসর সেটা তুমি আমাকে জানাও নি কেন?”
-” আমি তোমাকে কিছুই জানাইনি। ফেমিলি নিয়ে কথা বলতে আমার ভালো লাগে না।”
রাত্রি সৌরভের থেকে দৃষ্টি সরালো। বাটির মত গোল চাঁদের দিকে তাকিয়ে বলতে শুরু করলো,
-” সৌরভ ইউ নো, তুমি খুব লাকি যে এমন একটা পেরেন্টস তুমি পেয়েছ। তোমার অজান্তেই আমি তোমাদের বাসায় যাই। তোমাদের মীনস তোমার বাবার বাসায়।”
সৌরভ অবাক হলো না। রাত্রির এমন কিছু করাই স্বাভাবিক। সৌরভ বলল,
-” কবে গিয়েছ?”
-” আমরা যেদিন বিয়ে করেছি সেদিনই।”
-” আমাকে জানালে না কেন? বাবা মা ও আমাকে কিছু বলে নি।”
-” লেট মি এক্সপ্লেইন। তোমাকে জানালে তুমি যেতে দিতে না। আর আমি তোমার বাবা মাকে আমার পরিচয় দিই নি। আমি যাস্ট বলেছি আমি একজন স্টুডেন্ট আমি একটা সংঘটন চালাই। পুষ্পর সংঘটনের ডিটেইলস বললাম। আর বললাম, এটা আমি এডভারটাইজিং এর জন্য সৌরভ সিদ্দিকীর কাছে এসেছি। তোমার মা প্রথমে খুব অভিভূত হলেন আমাকে দেখে, ভেবেছিলেন আমি হয়তো তোমার বান্ধবী। পরে এডভারটাইজিং এর কথা শুনে উনি মন খারাপ করলেন বুঝতে পেরেছিলাম। আমি তোমার বাবার সাথেও কথা বলেছি। একসাথে ডিনার করেছি। ট্রুলি বলছি, আমার ক্ষনিকের জন্য মনে হয়েছিল এরকম একটা ফেমিলি যদি আমার হতো। প্রচুর হিংসে হয়েছিল আমার। এরকম ফেমিলি কেন আমার নেই? যাইহোক, আন্টির সাথেই আমি অনেক গল্প করলাম। উনি খুবই মিশুক এবং কনজারভেটিভ টু। আংকেল এর সম্পর্কেও আন্টি অনেক কিছু বললেন। সৌরভ আমি সেদিনই বুঝেছি যে একজন অনেস্ট বাবার ছেলে অনেস্টই হবে। প্রত্যেকটা ভালো মানুষের ভালো হওয়ার পিছনে পরিবারের শিক্ষাটাই মেইন। আন্টিকে এক ফাঁকে জিজ্ঞেস করলাম আন্টি ছেলেকে বিয়ে করাচ্ছেন না কেন? একা একা আর কত সংসার সামলাবেন? আন্টির উত্তর, সেটা বাপ ছেলে বুঝে না তো কি করার। তোমার আংকেল যাকে তাকে ছেলের বউ করবেন না। উনার হতে হবে একটা কনজারভেটিভ ফেমিলি। মেয়ে সুন্দর হোক না হোক তাতে কিছু যায় আসে না। সুন্দরের সাথে তো আর ছেলে ঘর করবে না। করবে মেয়ের সাথে। তো ফেমিলি অবশ্যই অবশ্যই ভালো হতে হবে। আজকালকার বহু মেয়েরাই বিয়ের পর বর নিয়ে চলে যেতে চায়। নিজের বাবার বাড়ির দিকে বরকে টানে। এটা হতে দেয়া চলবে না। সৌরভের দাদুর বাড়ির বংশে দেখো প্রত্যেকটা ছেলের বউ শশুড় শাশুড়ি নিয়ে সুখে থাকছে। এরকমই এই ফেমিলিতেও তার চাই। আমি একথা শুনে হাসলাম, তখনই আমার বাবার নামে নিউজে একের পর এক দূর্নীতির খবর ছাপা হচ্ছিল। এসব দেখে তোমার ফেমিলি আমাকে কোনো দিনই মানবে না সৌরভ। তার উপর আমরা যেহেতু মামার ফেমিলিতে আছি এখানেও কত কলঙ্ক আছে। বিয়ের মতো একটা পারিবারিক সম্পর্কে জড়ানোর আগে সবাই একটু আধটু খোঁজ খবর নেয়। তখন দেখা যেত লোকজন আরও বানিয়ে বানিয়ে বলত তাতে আমার মামার রেপুটেশন খারাপ হতো।”
সৌরভ যাস্ট থ হয়ে আছে। রাত্রি এইজন্য এসব করেছে? পাগল নাকি? সৌরভ রাত্রিকে নিজের দিকে ফেরালো। রাত্রি মাথা নিচু করে আছে। সৌরভ ধমকের সুরে বলল,
-” আর ইউ ক্রেজি? আমি কি তোমার বাবা মামার সাথে সংসার করব? ”
-” আশ্চর্য যেটা তোমাদের ফেমিলিতে প্রায় একটা রুলস বলা যায়। সেটাই তো তোমার বাবা মা ফলো করবেন। তোমার মায়ের কথায় সেটা স্পষ্ট!”
-“যুদ্ধের ময়দান থেকে যুদ্ধ শুরু হওয়ার আগে সাহসীরা পালায় না। তোমাকে সত্যি আমার খুব মারতে ইচ্ছা করছে।”
রাত্রি কিছু না বলে রুমে গিয়ে বিছানায় শুয়ে পড়ল। সৌরভ এর সিগারেট খেতে ইচ্ছে করছে। কিন্তু সাথে নেই।
সৌরভ ও রুমে চলে আসলো। বিছানার এক পাশে শুয়ে কপালের উপর হাত ভাজ করে রেখে চোখ বন্ধ করে রইল। এই মূহুর্তে সৌরভ কি করবে বুঝতে পারছে না। বাবার সাথে কথা বলতে হবে। ও যেমন রাত্রির মামাকে কনভিন্স করেছে, তেমনি বাবাকে কনভিন্স করার জন্য রাত্রিকেই লাগবে। সেটা খুব দ্রুত করতে হবে। রাত্রি সৌরভের দিকে ফিরে বলল,
-” তুমি খুব রাগ করেছ?”
সৌরভ উত্তর দিল না। রাত্রির প্রতি প্রচন্ড রাগ হয়েছে ওর। রাত্রি সৌরভের কাছে এসে বলল,
-” তোমার রাগ দমনের জন্য একটা ট্রিক খাটাই চলো।”
এই বলে রাত্রি একটা রিপোর্ট ধরিয়ে দিলো সৌরভের হাতে। দিয়েই ও নিজের জায়গায় গিয়ে চুপটি মেরে শুয়ে পড়লো। ও ভাবছে, সৌরভ কি আরও রেগে যাবে নাকি কে জানে!
সৌরভ ভ্রু কুচকে রাত্রির কার্যকলাপ দেখলো। তারপর রিপোর্টটায় চোখ বুলালো। গাইনোকোলজিস্ট এর প্রেসক্রিপশন এবং আলট্রাসনোগ্রাফি আর ইউরিন টেস্টের রিপোর্ট। রিপোর্ট পজিটিভ এসেছে। সৌরভ হা করে তাকিয়ে আছে। রাত্রি এত সারপ্রাইজড করে কেন তাকে? এই মেয়েটা এত অদ্ভুত কেন?
.
সোহেলী খাতুন অনেকক্ষণ ধরেই পুষ্পকে কিছু বলার জন্য ওর রুমের সামনে গিয়ে ফিরে আসছেন। পুষ্প রাজীবের সাথে কথা বলছিলো। মেয়েটা যে কখন কথা বলা শেষ করবে। জাহানারার হাবভাব ওনার কাছে একদম ভালো লাগছে না। নিজের মেয়ের দিকে কোনো নজরই নেই আসছে ননদের মেয়ের জামাই নিয়ে ঢং করতে। এখন আবার সে পাঁচরকমের পিঠে বানাচ্ছে জামাইয়ের সকালের নাস্তার জন্য। এসবের মানে কি! জামাই আদর করুক ভালো কথা। নিজের মেয়ের বেলায় কেন এত অবহেলা? যত্তসব! রাজীব কি মিনহাজের ভাতিজা বলে এমন করছে? আশ্চর্য চাচার সাথে ভাতিজার কি সম্পর্ক! তাহলে মেয়ের বিয়ের সময় কিছু বলে নি কেন? সোহেলী প্রচন্ড রাগ নিয়ে নিজের রুমে গেলেন। পুষ্পর সাথে কথা বললে হয়তো মনটা ভালো হতো কিন্তু মেয়েটার ফোন রাখার নামই নেই। ছেলেটাও হয়েছে একটা অসভ্য। আগে তো বিয়েই করতে চায় নি, এখন দেখো বউয়ের সাথে কথা না বললে পেটের ভাত হজম হচ্ছে না তার। শয়তান ছেলে….
মশিউর রহমান সোহেলী খাতুনকে দেখে বললেন,
-” বুঝলে সোহেলী, সাংবাদিক হচ্ছে স্পার্মের মতো, লাখে একটা মানুষ হয়। হাহাহা ”

সোহেলী চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে আছেন। মানে কি? বাকিগুলো কি পশু নাকি? আশ্চর্য….

চলবে……

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here