“মন_বুঝ_দায় পর্ব:-(০৪)

0
336

গল্প:-#মন_বুঝ_দায় পর্ব:-(০৪)
লেখা:- AL Mohammad Sourav
!!
এতিহার মুখ চেপে ধরে রাখছি তখনি এতিহা আমার হাতে কামড় দিছে আমি জোরে চিৎকার দিছি। এতিহা কামড় ছেড়ে দিছে আমি হাত সরিয়ে নিয়ে দেখি হাতে দাঁতের দাগ বসে গেছে। আল এতিহার দিকে রাগি চোখে তাকিয়ে আছে আর এতিহা মুচকি হাসতেছে। তখনি আম্মা বলে।

আম্মা:- আল এতিহা যা বলছে তা সত্যিই।

আল:- নাহ মা ও সব বানিয়ে বানিয়ে মিথ্যাকথা বলছে।

এতিহা:- কি আমি বানিয়ে বানিয়ে মিথ্যাকথা বলছি। রাতে আমাকে জোর করে রুমে নিয়ে বলেই কান্না করতে আরম্ভ করছে। আর কান্না করতে করতে বলছে। রাতের ঘটনার জন্য আজকেই সবাই মিলে আমাদের ধরে বাইন্ধা বিয়ে করাই দিছে।

আম্মা:- আল তোরা কি তাহলে সত্যিই বিয়ে করেছিস?

এতিহা:- আরে আপনার ছেলেকে কি জিজ্ঞেস করছেন? আপনার ছেলে তো বিয়ে করতে রাজি ছিলো না। কিন্তু জোর করেই আমাদের বিয়েটা পড়িয়ে দিছে সবাই। তানা হলে আমার সমাজে মুখ দেখানো দায় হয়ে যেতো। এতিহার কথা শোনে এবার আম্মার মুখে কিছুটা হাসি আসছে। মনে হচ্ছে আম্মা খুব খুশি হইছে।

আম্মা:- আল এতিহার এসব কি বলছে? তুই কি সত্যিই কিছু করেছিস এতিহার সাথে?

আল:- নাহ আম্মা আমি কিছুই করিনি এতিহা যা যা বলছে সব বানিয়ে মিথ্যাকথা বলছে। তবে আজকে এতিহার সাথে আমার বিয়েটা হইছে এই কথাটা সত্যই।

আব্বা:- এতিহা যদি বানিয়ে মিথ্যাকথা বলেছে তাহলে তুই এতিহাকে কাউকে না জানিয়ে হুটহাট করে বিয়ে করছিস কেনো?

আল:- আব্বা আপনি কি বলতে চাচ্ছেন?

আব্বা:- আমি যা বলার বলছি। যদি তুই কিছু না করতি তাহলে বিয়ে করতি গেলি কেনো? নিশ্চয়ই তুই এমন কিছু করেছিস যার জন্য বিয়ে করতে বাধ্য হয়েছিস।

এতিহা:- আব্বাজান আপনি একদম ঠিক বলেছেন।

আম্মা:- এই মেয়ে তুমি যে ওকে বিয়ে করেছো তা কি তোমার বাড়িতে জানতে পারছে? এতিহা মাথাটা নিচু করে বলে। তখন আম্মা ধমক দিয়ে বলে। কি হলো বলো তোমার বাড়িতে কি জানে তুমি যে আলকে বিয়ে করেছো?

এতিহা:- বিয়ে যেহেতু হইছে আস্তে আস্তে সবাই যেনে যাবে। কিন্তু এখন কেউ আমার বিয়ের ব্যপারে জানে না। তখনি আম্মা এতিহার আর আমার সামনে এসেছে। এতিহা কিছুটা ভয় পাচ্ছে তখনি আম্মা মোবাইলটা বের করে এতিহার হাতে দিয়ে বলে।

আম্মা:- নাও তোমার বাড়িতে ফোন করে বলো তুমি আজকে বিয়ে করেছো।

এতিহা:- আমার বাড়ির কারো নাম্বার জানা নেই। আর তাছাড়া আমাদের বাড়িতে কেউ মোবাইল ব্যবহার করে না। এতিহার কথা শোনে সবাই অবাক দৃষ্টিতে এতিহার দিকে এমন ভাবে তাকিয়ে আছে। মনে হচ্ছে কোনো এলিয়েন সামনে দাঁড়িয়ে আছে। তখনি সবাইকে অবাক করে দিয়ে আম্মা বলে।

আম্মা:- এতিহা তুমি যাও এখুনি আমার সামনে থেকে। আর এতিহাও আমার হাত ধরে বলে।

এতিহা:- আল আসো আমরা তোমার রুমে যাই। এতিহার কথা শোনে সবাই আমার দিকে তাকিয়ে আছে।

ভাইয়া:- এই মেয়ে তোমাকে কি রুমে যেতে বলছে নাকী বাড়ি থেকে বেরিয়ে যেতে বলছে। যাও তুমি আমাদের বাড়ি থেকে বেরিয়ে যাও।

এতিহা:- আমি বেরিয়ে যাবো কেনো? আর আমি নিজে থেকে এই বাড়িতে আসিনি আমাকে নিয়ে এসেছে। সুতরাং আমি এই বাড়িতে থাকবো। কি হলো দাঁড়িয়ে আছো কেনো চলো তোমার রুমে যাই। আল দাঁড়িয়ে আছে চিন্তা করছে যাবে কি যাবেনা তখনি আলের মা বলে।

আম্মা:- আল এতিহাকে নিয়ে রুমে যা। আর এতিহা তুমি এই বাড়িতে থাকতে হলে এই বাড়ির নিয়ম কানুন মেনে থাকতে হবে।

এতিহা:- যদি থাকি তাহলে নিয়ম মানবো আর না থাকলে তো মানার কোনো কারণ নেই। আর আমি এত নিয়ম মেনে থাকা থাকি পছন্দ করি না।

আম্মা:- তুমি যেমন নিয়ম মেনে থাকা থাকি পছন্দ করোনা তেমন আমিও নিয়ম ভাঙ্গা একদমি পছন্দ করি না। বড় বউ তুমি এতিহাকে বাড়ির সব নিয়ম বলে দিবে।

ভাবি:- ঠিক আছে আম্মা তাই হবে।

আব্বা:- আচ্ছা এখন তো মেয়েটা এসেছে ওকে রেস্ট নিতে সুযোগ দে তারপর না হয় বসে আলাপ আলোচনা করে নিস কেমন? আল ওকে রুমে নিয়ে যা পরে বসে এর একটা সমাধান করা যাবে।

আল:- ঠিক আছে। এতিহা এসো। এতিহা আমার হাত ধরে রাখছে আমরা আমার রুমে গেলাম। রুমে ঢুকে এতিহা আমার দিকে তাকিয়ে আছে। কি হলো তাকিয়ে আছো কেনো?

এতিহা:- এইটা রুম নাকী ঝঙ্গল? এই রুমে আমি থাকতে পারবো না।

আল:- নাহ থাকলে চলে যাও।

এতিহা:- চলে তো যাবো তবে যাবার আগে তোমাদের সবার জীবনের সুখ শান্তির বারোটা বাজিয়ে দিবো।

আল:- তুমি নিজেকে কি মনে করো? তুমি অনেক চালাক? সত্যি বলতে তুমি অনেক বোকা। তোমার মত মেয়েদের কি করে টাইট দিতে হয় সেটা আমি খুব ভালো করে জানি।

এতিহা:- ঠিক আছে আমিও দেখবো কে কাকে টাইট দেই। তোমার মত কত ছেলেকে ঠিক করে নিছি আর তুমি তো আমার প্রতি দূর্বল। আমার মিষ্টি হাসি আর দুষ্টু চাওয়া গুলি তোমাকে কাবু করার জন্য যতেষ্ট্য।

আল:- তাই নাকী ঠিক আছে দেখা যাবে। এখন কথা কম বলে রুম গুচিয়ে নাও। আর হাঁ এটা আমার রুম তাই আমি খাঠের উপর আর তুমি নিচে থাকবে।

এতিহা:- এসব খাঠ নিয়ে ভাগাভাগি বন্ধ করেন। আর বিয়ে যেহেতু হইছে সেহেতু এক রাতের জন্য যদি আলাদা থাকতে বলো তাহলে খুন করে ফেলবো।

আল:- আচ্ছা তুমি কি চাচ্ছো বলবে? তোমার মন বুঝা বড় দায় হয়ে যাচ্ছে। মূহূর্তের মধ্যে রঙ বদলাতে আরম্ভ করো।

এতিহা:- আমার মন বুঝে কি করবে? এখন কথা কম বলে আমাকে সাহায্য করো। আগে রুমটাকে থাকার উপযুক্ত করি এরপর বাড়িটাকে।

আল:- তোমার সাথে কেনো জানি আমার আম্মা আমাকে পরিচয় করিয়ে দিছে! কথাটা বলেই জিব্বাই কামড় দিছি। এতিহা আমার দিকে রাগি চোখে তাকিয়ে আছে। এমন ভাবে না তাকিয়ে তুমি রুমটা পরিস্কার করে নাও।

এতিহা:- আমি পরিস্কার করবো মানে! তুমি করবে আমি দেখবো তোমার মত এমন বড় একটা ছেলের রুম এই অবস্থা থাকে কি করে? আল এতিহার সাথে আর কোনো কথা বলেনি। সোজা নিজেই রুম গুচাতে আরম্ভ করছে। এতিহা আলকে সাহায্য করছে। ঘন্টা খানেকের মধ্যে রুমটা পরিস্কার করে নিছে। আল ফ্রেশ হতে ওয়াশ রুমে যাবে এমনি এতিহা ওয়াশ রুমে চলে গেছে। আল কিছুক্ষণ চিল্লা চিল্লি করে বিরক্ত হয়ে রুম থেকে বেরিয়ে ওর আম্মার রুমে গেছে।

আম্মা:- আল তোর এই অবস্থা কেনো?

আল:- রুম পরিস্কার করেছি।

আম্মা:- রুম পরিস্কার করলে কি এমন অবস্থা হবে নাকী?

আল:- আম্মা আগে ফ্রেশ হয়ে আসি এরপর কথা বলবো। বলেই আল ওর আম্মার ওয়াশ রুমে ঢুকতেছে তখনি আলের মা বলে।

আম্মা:- আল তুই এই ওয়াশ রুমে যাচ্ছিস তোর রুমে কি হইছে?

আল:- ঐটাই এতিহা গেছে। আম্মা কিছু বলতে চাইছে কিন্তু আল দরজা বন্ধ করে দিছে। আল ফ্রেশ হচ্ছে আর ঐ দিকে এতিহা ফ্রেশ হয়ে ওয়াশ রুমে বসে আছে। এতিহা যে কাপড় চ্যাঞ্জ করবে সেই কাপড় তো এতিহার নেই। কারণ এতিহা তো আলের সাথে খালি পড়নের কাপড় পড়েই এসেছে। এতিহা অনেকবার আলকে ডাকছে কিন্তু আল তো ওর মায়ের রুমে ফ্রেশ হচ্ছে। এতিহা চুপি মেরে দেখে রুমে কেউ নেই আর সেই সুযোগটা কাজে লাগিয়ে নিছে। অন্য দিকে আল কিছুক্ষণ পর ফ্রেশ হয়ে বেরিয়ে দেখে ওর মা রুমে নেই। যাক বাচা গেলো বলেই আল তাড়াহুরা করে বেরিয়ে এসেছে। যখনি আল তার রুমে ঢুকছে তখনি এতিহার দিকে তাকিয়ে দেখে এতিহা আলের সাট আর লুঙ্গী পড়ে চুলের পানি মুছতেছে। আল এতিহার দিকে তাকিয়ে হাসতে আরম্ভ করছে।

এতিহা:- ঐ হাসতেছো কেনো?

আল:- তোমাকে একদম ছেলেদের মত লাগছে। তবে দাড়ি থাকলে সুন্দর লাগতো তোমাকে।

এতিহা:- মজা করা হচ্ছে আমার সাথে?

আল:- তোমার মত মেয়ের সাথে মজা করবো কেনো? দেখি সরো আমার ক্ষিদা লাগছে ফ্রেশ হয়ে নিচে যাবো।

এতিহা:- আমারো ক্ষিদা লাগছে আমিও নিচে যাবো।

আল:- এই পোষাক পড়ে তুমি নিচে যাবে আর বাসার সবাই তোমাকে দেখে হাসা হাসি করবে।

এতিহা:- হাসলে আমার কি! তবে লুঙ্গী পড়তে বেশ আরাম আছে তো। আমি তো চিন্তা করছি এখন থেকে লুঙ্গী পড়ে থাকবো।

আল:- ঠিক আছে পড়ে থাকো যদি কেউ ভুল করে টান মেরে তাহলে বুঝবে কেমন লাগে। এতিহা লুঙ্গীটা ভালো করে ধরে নিছে। আল হাসছে এতিহার কান্ড দেখে। আল আর এতিহা দুজনে নিচে গেছে। এতিহার দিকে সবাই তাকিয়ে আছে।

নানি:- এই মেয়ে তুমি এই গুলি কি পড়েছো?

এতিহা:- চোখে তো দেখতে পারছেন তাও কেনো জিজ্ঞেস করছেন?

আম্মা:- তোমার বাবা মা তোমাকে আদব কায়দা কিছু শিখাই নাই? বড়দের সাথে কেমন করে কথা বলতে হয় তাও তার বিন্দু পরিমান শিক্ষা দিচ্ছে বলে আমার মনে হইনা।

এতিহা:- আপনার মনে না হলে আমার কিছু যায় আসে না। আপনারা সবাই তো দেখছেন আমি কি পড়ে আছি এতে জিজ্ঞেস করার কি আছে?

আব্বা:- আচ্ছা তুমি মুখে মুখে তর্ক করো কেনো? তোমাকে জিজ্ঞেস করে কি অপরাধ হয়ে গেছে?

এতিহা:- আমি কি বলেছি জিজ্ঞেস করা অপরাধ হয়ে গেছে। আমার ক্ষিদা লাগছে আর আমার ক্ষিদা একদমিই সহ্য হইনা। এতিহার কথা শুনে চুপ করে গেছে। এতিহা খেতে বসেছে সাথে পাশে আল বসেছে। কেউ কিছু বলছে না এতিহা নিজের মত করে খাচ্ছে। কিছুক্ষণ যাবার পর আম্মা এতিহাকে বলে।

আম্মা:- এতিহা ভাই রাজ এখন কি করে? আম্মার কথা শোনে এতিহা খাবার মুখে দিতে গিয়ে কিছুটা থেমে গেছে। এতিহা চুপচাপ থেকে আবার খেতে আরম্ভ করছে। এতিহার ব্যবহার দেখে আম্মার সাথে বাড়ির সবাই যে রেগে যাচ্ছে তা আর বলার দরকার নেই। সবার ভাব বঙ্গিমা দেখে বুঝা যাচ্ছে। এবার কিছুটা রেগে গিয়ে ভাইয়া বলে।

ভাইয়া:- এই মেয়ে তোমাকে আম্মা কি বলছে শুনতে পাওনি?

এতিহা:- শুনেছি কিন্তু আম্মা বলছে খাবার সময় কথা বলতে নেই। আর এখন খাবার টেবিলে বসে যদি বকবক করি তাহলে আবার বলবেন আমার বাবা মা আমাকে কোনো শিক্ষা দেইনি তাই আগে খেয়ে নেই পড়ে কথা বলবো।

ভাইয়া:- আল তোকে আম্মা কি করতে বলছে আর তুই কি করেছিস? আম্মা তুমি এই মেয়েটাকে বাড়ি থেকে বের করে দাও। তানা হলে এই মেয়েটা আমাদের বাড়ির সুখের ঘরে অশান্তির বন্যা নিয়ে আসবে।

আম্মা:- আসাদ আমি অতীতের কিছু ভুলে যায়নি। আর আল তোকে বলে দেয় আজ থেকে তুই তোর রুমে থাকবি কিন্তু এতিহা তোর নানির সাথে থাকবে। বড় বউ তুমি ওকে বলেছো এই বাড়িতে থাকতে হলে কি কি করতে হবে?

ভাবি:- নাহ মা বলিনি তবে বলে দিচ্ছি। এতিহা শোনো এই বাড়ির বউরা একা বাড়ি থেকে কোথাও বের হইনা। যদি কোথাও বিশেষ কোনো কাজের প্রয়োজনে যেতে হই তাহলে পর্দা করে বাহিরে যেতে হবে। তাও নিজের স্বামিকে অবশ্যই সাথে নিতে হবে। প্রতিদিন পাঁচওয়াক্ত নামাজ সময় মত পড়তে। নামাজের সময় কোনো রকম বাহানা চলবে না। আর বাড়ির কাজ গুলি সবাই মিলে মিশে করতে হবে। সবচেয়ে বড় যেইটা সেটা হচ্ছে বাড়ির বড় যারা আছেন তাড়া তোমাকে যা বলবে তাই করতে হবে। আজ থেকে পড়া শোনা সব বন্ধ থাকবে তোমার। এই বাড়িতে বিয়ের পড়ে কোনো মেয়েকে পড়তে দেওয়া হইনা। আর যতই কাজ থাকুক বাড়ির বাহিরে এক টানা চার ঘন্টার বেশি সময় থাকা যাবে না। এতিহা তুমি আমার কথা গুলি শুনেছো?

এতিহা:- হ্যা শুনেছি। তবে আমার একটা কথা আছে।

আম্মা:- কি কথা?

এতিহা:- আমি আলের সাথেই থাকবো আর বিয়ের পড়ে স্বামী স্ত্রী এক সাথে থাকবে এটাই নিয়ম।

আম্মা:- হ্যা স্বামী স্ত্রী এক সাথে থাকবে কিন্তু তোমাদের বিয়েটা আমরা এখনো মেনে নিচ্ছি না। সুতরাং তোমাকে যা বলছি তাই হবে। আর একটা কথা আজকের পড়ে যেনো এমন পোষাক তোমাকে পড়তে না দেখি। বলে আম্মা খাবার টেবিল থেকে উঠে যাচ্ছে আর তখনি এতিহা বলে।

এতিহা:- আমার তো কোনো কাপড় নেই তাহলে কি পড়ে থাকবো? এতিহার কথা শোনে আম্মা চলে গেছে। সাথে এক এক করে সবাই চলে গেছে। আল আর এতিহা বসে আছে। এতিহা আলের দিকে তাকিয়ে আছে।

আল:- আমার দিকে তাকিয়ে কোনো লাভ নেই। আমার কাছে কানা কুড়ি নেই।

এতিহা:- কানা কুড়ি নেই তাহলে বিয়ে করতে কে বলছে?

আল:- বিয়ে কি আমি করতে চাইছি নাকী তুমি মিথ্যা অপবাধ দিয়ে আমাকে বিয়ে করেছো? আম্মা একটা কাজ একদম ঠিক করেছে। তোমাকে আমার সাথে থাকতে বারণ করছে।

এতিহা:- কি বলতে চাচ্ছো তুমি?

আল:- বলতে চাচ্ছি রাতে তো তোমাকে আমি কিছুই করিনি। কিন্তু তোমার শরীরের কাপড় গুলি যেভাবে ছিড়া ফাটা ছিলো আমার তো মনে হয় তোমার সাথে কেউ কিছু করছে তখনি এতিহা খাবারের হাত দিয়ে আমাকে একটা থাপ্পড় দিয়ে বলে।

এতিহা:- ছিঃ তুমি এত নিচু মনের মানুষ ভাবতে আমার ঘৃণা হচ্ছে যে তোমাকে বিয়ে করেছি। সেদিন রাতে নিজেই তো জোর করে আমার কাপড় গুলি ছিড়ে আমাকে নষ্ট করতে চাইছো আর এখন অন্যের উপর দোষ চাপাতে চাইছো?

আল:- আমি নিশ্চিৎ তুমি আমাকে প্ল্যান করে ফাসিয়েছো কিন্তু তুমি সফল হবে না। আল কথাটা বলে উঠে ভেসিনে গিয়ে হাত মুখ দুইয়ে রুমে চলে আসছে। কিছুক্ষণ পর আলের মা এসেছে।

আম্মা:- আল এই ধর পাঁচ হাজার টাকা।

আল:- টাকা দিয়ে কি করবো?

আম্মা:- আগে কথাটা শেষ করতে দিবি তো? টাকা নিয়ে এতিহাকে সাথে করে নিয়ে যা। এতিহার জন্য কাপড় কিনে নিবি। এখন বাড়িতে পড়ার মত কিছু কাপড় নিয়ে আয়। পড়ে তোর বাবার কাছ থেকে টাকা নিয়ে ভালো কিছু কাপড় আর গহনা কিনে নিস। আম্মার দিকে তাকিয়ে আছি। সত্যি বলতে আমি আম্মার মন বুঝতে পারছি না। আর ঐ দিকেকে এতিহার মন বুঝা তো বড় দায় হয়ে বসেছে। আর শোন এতিহাকে তুই কিন্তু মন থেকে ভালোবাসবি। এতিহা যেনো তুই বলতে অজ্ঞান হয়ে যায়।

আল:- কিন্তু আম্মা এতিহার বাড়ির মানুষজন যখন জানতে পারবে তখন কি হবে সেইটা নিয়ে একটু চিন্তা করে দেখছেন?

আম্মা:- যখন জানতে পারবে তখন দেখা যাবে। এখন কথা কম বলে এতিহাকে নিয়ে মার্কেটে যা।

আল:- ঠিক আছে! আম্মা চলে গেছে এতিহা চুপচাপ রুমে এসেছে। তবে এতিহার মনটা যে খারাপ সেটা বুঝা যাচ্ছে। এতিহা তুমি ভাবির কাছ থেকে একটা ড্রেস নিয়ে এসে পড়ো। তোমাকে নিয়ে বের হবো।

এতিহা:- আমি এখন বের হবো না। আর আমি বুঝতে পারছি আমাকে নিয়ে বাহিরে গিয়ে কোথায় রেখে চলে আসবে।

আল:- এত বেশী বুঝতে যাও কেনো চলো আমার সাথে। এতিহা যেতে রাজি নয় কিন্তু আল হাত ধরে টেনে ভাবির কাছে নিয়ে এসে বলে। ভাবি এতিহাকে তোমার একটা জামা দাও আর সাথে বোরকাটা দিবে কেমন?

ভাবি:- হ্যা দিচ্ছি আম্মা আমাকে আগেই বলে দিছে তোমরা নাকি কিছু কেনাকাটা করতে মার্কেটে যাবে।

এতিহা:- কেনাকাটা করতে যে যাবো টাকা পাবো কোথায়?

ভাবি:- টাকা তো আম্মা দিছে আলের কাছে। আসো তুমি আমার সাথে ভাবি এতিহাকে সাথে নিয়ে গিয়ে কিছুক্ষণের মধ্যে রেডি করে নিয়ে এসেছে। এতিহাকে বোরকা পড়িয়ে হাতে পায়ে মুজা লাগিয়ে একদম ফরজ পর্দা করিয়ে এনেছে। আল দেখো এতিহাকে কত সুন্দর লাগছে তাইনা?

আল:- হ্যা অনেক সুন্দর লাগছে। এতিহাকে সাথে নিয়ে আল বেরিয়েছে। একটা রিকশা করে মার্কেটে গেছে। তিনটা চুড়িদার আর দুই জোরা হাতে পায়ের মুজা আর একটা মুজা কিনেছে। আলের মা তো পাঁচহাজার টাকা দিছে আর আল তার হাত খরচের টাকা থেকে কিছু টাকা যোগ করে সব কিছু কিনে নিছে। তবে একটা কথা চুড়িদার গুলি কিন্তু সব আলের পছন্দে এতিহা নিছে।

এতিহা:- তোমার পছন্দ ততটা খারাপ না তবে আমার কিন্তু চুড়িদার পড়তে বেশী ভালো লাগে। আল মুচকি হেসে দিছে। কেনাকাটা শেষ করে ওরা বাড়িতে আসতেছে রিকশা করে ঠিক এমন সময় এতিহা বলে। আচ্ছা আল একটা কথা বলবো?

আল:- হ্যা বলো কি বলবে?

এতিহা:- তুমি জানো আমরা দুজন দুজনের সম্পর্কে কি হয়? এতিহার কথা শোনে আল মুচকি হেসে বলে।

আল:- আমাদের তো সদ্য বিয়ে হইছে আমরা স্বামী স্ত্রী। তখন এতিহা জোরে হাসি দিয়ে বলে।

এতিহা:- তুমি অনেক কিছুই জানোনি আর তোমার পরিবার তোমাকে জানায়নি। আমরা স্বামী স্ত্রী ছাড়াও আমাদের মাঝে আরেকটা বড় সম্পর্ক আছে আর সেটা হচ্ছে ঠিক তখনি রিকশার ড্রাইভার বলে। ভাইজান নামেন এসে গেছি।
!!
চলবে,,,

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here