অতিরিক্ত চাওয়া পর্ব ১৭

অতিরিক্ত চাওয়া { ২ }
১৭

সন্ধ্যার আবহাওয়ায় আশপাশ ছেঁয়ে যাচ্ছে! তৃষ্ণার জীপগাড়ির স্পিডের কারণে, শীতের আভাস ভালোভাবে ঝেঁকে আসছে! শীতল বাতাস শোঁ শোঁ করে বেলির শরীর ছুঁয়ে দিচ্ছে! ঠান্ডায় কাঁপুনি উঠে যাচ্ছে তাঁর! শরীরের জর্জেটের কামিজ শীত থেকে বাঁচার কোনো উপায় ও দিচ্ছে না! আর কিছুক্ষণের মাঝেই একদম বরফ হয়ে যাবে সে নির্ঘাত! তৃষ্ণা ব্যাপারটা অনেক আগেই লক্ষ্য করেছে, কিন্তু কিছু বলে নি! কারণও আছে, নিজের শরীরের জ্যাকেট খুলে দিয়েছিল বেলিকে পড়তে! কিন্তু বেলি না পড়ে শীতে থরথর করে কাঁপছে! তৃষ্ণা চাচ্ছে পাশে তাঁর খুলে রাখা জ্যাকেট পড়ে নেক এবং তাঁর শীত করছে এটা স্বীকার করুক ! বেলি শীতের ব্যাপারটা স্বীকার না করায় আরও গাড়ির স্পিড বাড়িয়ে দিল!
বেলি এইবার রাগে-দুখেঃ চেঁচিয়ে উঠলো,
~ আপনি ইচ্ছে করে করছেন তা-ই না?
তৃষ্ণা আপনমনে গাড়ির স্পিড বাড়াচ্ছে যেতো বাড়ানো যাচ্ছে! তৃষ্ণর দিক ছোট-ছোট চোখ করে তাকিয়ে বেলি,
~ আপনার এ-ই ভাঙ্গা গাড়ি থামান! আমি আপনার সাথে কোথাও যাচ্ছি না!
তৃষ্ণা ঠিকঠিক গাড়ি থামিয়ে ফেলল! বেলি মুখ ফুলিয়ে আড়চোখে তৃষ্ণার দিক তাকিয়ে গাড়ি থেকে নেমে গেলো! ‘ কি বিয়াদপ লোক! বললাম বলে সত্যি সত্যি গাড়ি থামাবে? একবার ফিরে তাকাল পর্যন্ত না, এ-ই তাঁর অতিরিক্ত চাওয়ার নমুনা? অতিরিক্ত চাওয়া না রং-ঢং ! কি পাষাণ লোক এ-ই সন্ধ্যায় গাড়ি থেকে নামতে দিল তাঁকে ? ‘ আপনমনে বিড়বিড় করছে আর উল্টো পথ ধরে হাঁটা ধরেছে বেলি! হাঁটছে আর বারবার পিছনে তাকাচ্ছে! গাড়ি যেখানে দাঁড়ানো সেখানেই, সাথে তৃষ্ণাও একই যায়গায় বসে! একটু নড়েচড়ে পিছনে তাকাল ও না! এইবার বেলি ভয় পেতে লাগলো! যদি তাঁকে না নিতে আসে? তাহলে কিভাবে বাড়ি পৌঁছাবে? তাঁর কাছে ত টাকা বা মোবাইল কিছুই নেই! সাথে অন্ধকার, নির্জন পরিবেশ!

আর কিছুটা গিয়ে বেলি থেমে গেলো! সামনে টিনের টং! সেখানে কিছু লোক বসে চা খাচ্ছে! ভীতু বেলি যেখান দিয়ে এসেছিল সেই রাস্তা দিয়ে দৌড়! তৃষ্ণার গাড়ি দেখতে না পেয়ে, ভয় পেয়ে গেলো! ভালোভাবে আশেপাশে তাকাতে লাগলো!
‘ আল্লাহ এ-ই লোক সত্যি আমায় রেখে চলে গেলো? ‘ ভয়ে বেলির কলিজা লাফাচ্ছে! দ্রুত তৃষ্ণা
কে না পেলে তাঁর জানপ্রাণ উড়ে যাবে! ছোট ছোট কদমে আরেকটু এগিয়ে যেতেই, দেখলো জীপগাড়ি টা সাইড করে চাপানো! গাড়িটা দেখে বড় শ্বাস ফেলল বেলি! দ্রুত গাড়ির সামনে চলে গেলো! গাড়ির আশেপাশে নজর বোলালো, কিন্তু তৃষ্ণাকে দেখতে পেলো না!

হঠাৎ ঘাড়ে গরম নিশ্বাস পেতেই আঁটকে উঠলো বেলি! শিরশির করতে শুরু করল তাঁর শরীর! তৃষ্ণার ঠোঁট ঘাড়ে ছুঁয়ে দিতেই শ্বাস নেওয়া বন্ধ হয়ে গেলো! চোখ বুঝে খিঁচে থাকা বেলি যখন চুমুর বদলে ঘাড়ের মাঝে বড়সড় এক কামড় পেলো, মুহুর্তেই বেলি ঘাড়ে হাত দিয়ে চেঁচিয়ে উঠে,
~ আল্লাহ ‘
~ সাহসী হচ্ছিস? থাপ্পড় দিয়ে গাল লাল করে ফেলবো!

কথাটা বলে তৃষ্ণা পেছন থেকে বেলিকে কোলে তুলে নেয়! ঘাড়ে হাত চেপে রেখে মুখ কুঁচকে রাখা বেলির নাকেও ছোট কামড় বসায় সে,

মুখ ছোট করে বেলি চুপ করে রইলো! দোষ ত তাঁরই! তৃষ্ণা যখন তাঁকে অঞ্জলির সোয়েটার পড়ে নিতে বলল সে পড়েনি! উল্টো বলেছে ‘ শীত নেই তেমন ‘! অথচ এখন শীতে কাঁপছে! শীতে কাঁপলেও সে তৃষ্ণার জ্যাকেট পড়বে না! ভুল তাঁর তাহলে সেই ভুগবে! শুধু-শুধু তৃষ্ণা এ-ই শীতের মাঝে নিজেকে কাঁপিয়ে কেন তাঁর জ্যাকেট দেবে!
গাড়িতে প্রায় ধপাস করে ফেলে দেয় তৃষ্ণা বেলিকে! স্তব্দ চোখে পানি ভেসে যাচ্ছে বেলির! তৃষ্ণা তাঁর জ্যাকেট এক প্রকার জোর করে পড়িয়ে দেয়! জ্যাকেট পড়াতে গিয়ে তৃষ্ণা বেলির হাত শক্ত করে ধরায়, বেলি দুই হাতে ব্যাথা পায়! হাত ডলতে ডলতে বেলি তৃষ্ণার দিক চোখে জল নিয়ে তাকাল,
~ পাষাণ, পাষাণ, পাষাণ লোক!

তৃষ্ণা বেলির কথার পাত্তা না দিয়ে গাড়ি স্টার্ট দিল! সেটা খেয়াল করে বেলি আরও সাহস পেল,
~ আপনি পাষাণের সাথে একটা অসভ্য ও! দেখুন আমার হাত লাল করে দিয়েছেন! ঘাড় জ্বলছে রাক্ষস মানুষ একটা! এখন যদি আপনাকে কামড়ে দি? হাত চেপে শক্ত করে ধরি তখন? আপনিও কাঁদবেন!

তৃষ্ণা এক হাত বেলির দিক এগিয়ে দিল,
~ নে চেপে ধর!
বেলি চোখের পানি মুছতে মুছতে, তৃষ্ণার বড় হাতের দিক একবার তাকিয়ে নিজের ছোট হাতের দিক একবার তাকাল,
~ তাহলে আমি দু’হাত ব্যাবহার করব?
তৃষ্ণা ভ্রু-উঁচু করল,
~ ওকে?
বেলি দু’হাত দিয়ে তৃষ্ণার বাম হাত শক্ত করে চেপে ধরলো! দাঁত চেপে আরও শক্তি প্রয়োগ করল! তৃষ্ণার কোনো ইংগিত না পেয়ে আরোও শক্তি প্রয়োগ করল! তৃষ্ণা বাঁকা হাসলো,
~ আর শক্তি নেই?
~ আপনি মিথ্যা ব্যাথা না পাওয়ার ভান করছেন! আমি জানি আপনি ব্যাথা পাচ্ছেন!
~ আচ্ছা?
আর শক্তি না থাকায় বেলি তৃষ্ণার হাত ছেড়ে দিল! আড়চোখে তাকিয়ে দেখলো তৃষ্ণার ঠোঁটে বাঁকানো হাসি!
~ কামড় দিবি না?
বেলি লজ্জা পেয়ে যায়! আড়চোখে তাকিয়ে বলে,
~ আমি আপনার মতো পাষাণ না!
~ ওকে?

বেলি একটু-আকটু আড়ালে তৃষ্ণার দিক তাকাচ্ছে! নাকে এক সুন্দর ঘ্রাণ ভেসে আসছে জ্যাকেট থেকে! এটা নিশ্চয়ই তৃষ্ণার পারফিউম এ-র,
~ আ..আপনার শীত করছে তা-ই না? আমার জন্য এখন আপনি এ-ই শীতের মাঝে ড্রাইভিং করবেন!

তৃষ্ণার জবাব না পেয়ে বেলি জ্যাকেট খোলার চেষ্টা করতেই, তৃষ্ণার শীতল চাহনি তাঁর দিক ফিরলো,
~ কামড় খাবি না থাপ্পড়?
বেলি দ্রুত জ্যাকেট ভালোভাবে শরীরে টাইট করে পেঁচিয়ে নিলো! আড়চোখে তৃষ্ণার দিক তাকিয়ে বলল,
~ কোথায় যাচ্ছি?
তৃষ্ণার জবাব নেই সে গাড়ি চালাতে ব্যাস্ত!
~ আপনি কি আমার উপর রেগে?
এইবারও তৃষ্ণার জবাব নেই,
~ রেগে আমি থাকব! আপনি কেন রেগে?
তৃষ্ণার উত্তর না পেয়ে অন্যদিকে মুখ ঘুরিয়ে নেয় বেলি!
একটু পরপর আড়চোখে উঁকি দিচ্ছে তৃষ্ণার দিক! তাঁর শরীরে পেঁচিয়ে থাকা জ্যাকেটের দিক নজর পড়তেই, অদ্ভুত ভালোলাগা ছেঁয়ে দিচ্ছে বেলির শরীরে !

গাড়ি থেমেছে কামারখালির একদম ভিতরে বড় দোকানের সামনে! তৃষ্ণার বেরোনো দেখে বেলিও গাড়ি থেকে নামলো! এবং তৃষ্ণার পিঁছু-পিঁছু যেতে লাগলো ভিতরে! ভালোভাবে পর্যবেক্ষণ করছে, মোবাইল শপের দোকান এটা! দোকানের বসে থাকা লোকটি তৃষ্ণা কে লক্ষ্য করতেই হেসে উঠলো,
~ কি অবস্থা তৃষ ভাই?
~ ভালো! তোমার?
~ চলছে একরকম! কি লাগবে? ভাবি সাথে নাকি?
বেলি তৃষ্ণার পিঁছু থেকে উঁকি দিয়ে আবার সেখানেই দাঁড়িয়ে গেলো!
~ এয়ারটেল সিম লাগবে ! আর সেকেন্ড কুয়েশ্চনের আন্সার ‘ ইয়েস ‘ !
~ আচ্ছা! [ হেসে তৃষ্ণার পেছনে দাঁড়িয়ে থাকা বেলিকে উদ্দেশ্য করে, ] কেমন আছেন ভাবি? আমি তৃষ ভাইয়ের সহকর্মী কিন্তু!
লজ্জায় গুটিশুটি মেরে থাকা বেলির হালকা আওয়াজ,
~ ভালো আছি!
~ ভালো ত থাকতেই হবে! দেখতে হবে না কার বউ আপনি ভাবিজী!

বেলি চোখ ঘুরালো ছেলেটির কথায়! চুপচাপ দেখছে তৃষ্ণা সকল ইনফরমেশন দিয়ে সিম রেজিস্ট্রেশন করাচ্ছে! পাশের দোকান থেকে একটি লোক আর তাঁর পেছনে ৩টি ছেলে সহ এদিকেই আসছে! বেলির দিক কিভাবে জেনো তাকাচ্ছে! অস্বস্তিকর চাহনি লোক গুলোর! বেলি মাথা নিচু করে তৃষ্ণার গেঞ্জি ধরে, তৃষ্ণার সাথে ছুঁইছুঁই হয়ে দাঁড়ায়! তৃষ্ণা মানিব্যাগ থেকে টাকা বের করতে করতে বেলির দিক ফিরে,
~ কি হয়েছে?
বেলি মাথা নাড়ায় ‘ কিছু হয় নি ‘! তৃষ্ণা বেলির আশেপাশে তাকিয়ে দেখলো লোকগুলো এদিকে আসছে! লোকগুলো ওঁদের দিক আসতেই তৃষ্ণা বেলিকে নিজের সামনে এনে দাঁড় করায়! ৫ জনের দলের মাঝে সামনে দাঁড়ানো কালো লোকটা মানে রবিন আগে কথা বলল,
~ কি অবস্থা চৌধুরী? সাথে মালটা কে?
তৃষ্ণা তাঁর মতো টাকা দিতে ব্যাস্ত! টাকা দিয়ে মানিব্যাগ পকেটে ঢুকিয়ে নিলো! সিম কার্ডটি হাতে নিয়ে ভ্রু-উঁচু করে লোকটার দিক তাকালো,
~ ধোলাই কম হয়েছিল?
~ হ্যাঁ! বছর ত হয়ে যাচ্ছে!
~ সমস্যা নেই! এইবার ধরলে ২ বছর এ-ও হসপিটালের বেড ছাড়তে পারবে না!
~ মারামারির কথা কেন চৌধুরী? আমি ত শুধু পিছনের সুন্দরী মালটার নাম জানতে আসলাম!

ব্যাস তৃষ্ণার হাতের ঘুষি রবিনের গালে গিয়ে পড়েছে! বেলি ছোট হাত তৃষ্ণার বাম হাত টেনে ধরে, তৎক্ষণাৎ রবিন তাঁর গাল ধরে মুখ নাড়িয়ে সজা হয়ে দাড়াল,
~ এতো রাগ? রাগ কমান চৌধুরী! মাল নাহলে ভাবি নাকি?
তৃষ্ণা বেলির হাত ধরে নিয়ে যেতে নিচ্ছিল! আরেকবার এগিয়ে আসে রবিনের দিক! রবিনের কানের কাছে মুখ নিয়ে,
~ তোর ভাগ্য ভালো, রাইট নাউ সি’জ উইথ মি!

তৃষ্ণা বেলিকে টেনে গাড়িতে বসিয়ে দিল! গাড়ি আবারও চলতে শুরু করেছে! অনেক্ষন চুপ থেকে বেলির পেট ফেটে যাচ্ছে কথা বলার জন্য,
~ ওটা কে ছিল?
~ নো ওয়ান!
~ আপনি কি আবারও রেগে?
এইবার তৃষ্ণা বাঁকা হেসে বেলির দিক ফিরলো,
~ হ্যাঁ?
~ তাহলে কথা বলুন রাগ চলে যাবে !
~ আচ্ছা? [ বেলির গাল টিপে ধরে ] হোয়াই সো কিউট?
বেলি বুঝতে পেরে লজ্জায় লাল হয়ে উঠে! দ্রুত অন্যদিকে ফিরে যায় ! তৃষ্ণার আওয়াজে তাঁর দিক তাকালো,
~ এ-ই সুহি মেয়েটাকে কেমন লাগে তোর বেলি?
বেলি বারবার চোখের পলক ফালালো,
~ স..সুন্দর!
~ আমার প্রেমিকা হওয়ার জন্য ঠিকাছে না?
বেলি থম হয়ে গেল ! তারপর ছোট শ্বাস ফেলল,
~ হ্যাঁ! স্মার্ট, সুন্দরী, শিক্ষিত! আপনার সাথে ভালো মানাবে!
~ তাহলে প্রপোজ করেই ফেলি!
বেলি মাথা দুলিয়ে অন্যপাশে তাকাল! বেলি খেয়াল করলে তৃষ্ণার দুষ্টু হাসিটা দেখতে পেত ! বেলি হালকা ভাবলো,
~ ভাবছি আকাশের প্রেমের আবেদন গ্রহণ করবো!

বেলির বলতে দেরি তৃষ্ণার গাড়ি থেমে যেতে দেরি হয়নি! বেলি অন্যপাশ ফিরে হাসি থামানোর চেষ্টায় লেগে গেলো!
~ আকাশ কে?
বেলি জিহ্বায় কামড় কাঁটলো,
~ ম..মজা করলাম! এটাও বোঝেন না!
~ আমার দিক তাকিয়ে কথা বল! আকাশ কে? স্কুলের? নাকি প্রাইভেট নাকি বাহিরের কেউ?
~ কেউ না ত! আপনি সুহি সুহি বলছিলেন যে? তাই বললাম আর কি!
তৃষ্ণার হাত বেলির গাল চেপে ধরলো!
~ তোকে আমি হাড়েহাড়ে চিনি! কেউ প্রেম প্রস্তাব না দিলে তুই এ-ই কথা বলতে পারতি না! এখন বল কে আকাশ?
~ আমি সত্যি বল..
বেলিকে বলতে না দিয়ে, তৃষ্ণা বলল,
~ আমি খবর নিয়ে জানতে পারলে ভালো হবে না বেলি!
~ মেয়েদের প্রস্তাব ত আসেই! শীলার, বড় আপুর ত হাজার হাজার আসে!
তৃষ্ণার শক্ত গলার জবাব,
~ মেয়েদের আসবে কিন্তু তোর আসবে না!
বেলি তৃষ্ণার দিক তাকিয়ে চোখ পিটপিট করল,
~ আমি মেয়ে না?
~ না! তুই মহিলা! এখন বল ছেলেটা কে?
বেলি কিছুক্ষণ চুপ থেকে নিজেকেই বকাবকি করতে লাগল! কি দরকার ছিলো আগ বাড়িয়ে বলতে যাওয়ার,
~ আ..আপনি কি ছেলেটাকে মারবেন?
~ দ্রুত বল কে এইটা তাহলে মারব না!
বেলি একটু চুপ থেকে বলল,
~ সত্যি?
তৃষ্ণা এবার গর্জিয়ে উঠলো,
~ বেলিইই..!
~ ব..বলছি ত! আব্দুল স্যারের ভা..ভাই আশিক!
~ তোর প্রাইভেটের টিচার?
~ হ..হ্যাঁ!
~ কবে করেছে?
~ প..পরশু!
~ তোকে ডিস্টার্ব করে?
বেলি মাথা নাড়ালো,
~ না..নাহ!
~ সত্যি বলবি!
~ ও-ই আ..আরর কি প্রা..প্রাইভেটের সামনে আর স্কু..স্কুলের সামনে দাঁড়িয়ে থাকে!
~ আর তুই আমাকে বলিস নি?
~ ডিস্টার্ব করছিল না ত!
~ তোর পিঁছু ঘুড়তে থাকা ডিস্টার্ব না?
তৃষ্ণার রাগ বাড়তে দেখে বেলি আওয়াজ হালকা করে ফেলল,
~ আপনি..
~ তুই আর ওখানে পড়বি না! আমি চাচাকে বলে দেব!
~ ক..কিন্তু..
~ চুপ!

বেলি চুপ হয়ে গেলো! এখন কথা বললে তৃষ্ণা আরও রেগে যাবে! গাড়ি কিছুটা যেতেই বেলি আবারও কথা শুরু করল,
~ শুনুন না!
তৃষ্ণা জবাব না দেওয়ায়, বেলি আবারও বলতে লাগলো,
~ আপনি ঢাকা চলে যাবেন আজ?
~ না! কাল রাত্রি যাব!

তৃষ্ণার ফোন বাজছে! ড্রাইভিং করতে করতে কল রিসিভ করে কানে নিলো,
~ হ্যাঁ?
~……….!
~ আসছি!

তৃষ্ণা কল কেঁটে দিতেই বেলির প্রশ্ন,
~ অঞ্জলি ভাবি?
~ হ্যাঁ!

————————

~ তাহলে আমরা ধরছি আপনাদের থেকে হ্যাঁ?
আবিরের কথায় সহমত হলো বিমানের আব্বু, চাচা আর মামা!
~ অবশ্যই ভাই সাহেব!
অভির আব্বু ফয়সাল সাহেব তাঁর স্ত্রী কে নিয়ে সোফা ছাড়লেন,
~ তাহলে ত শুক্রবার যাওয়া হচ্ছে পরিবার নিয়ে, আপনাদের বাড়িতে, আমাদের ছেলের জন্য মেয়ের হাত চাইতে?
~ অবশ্যই!

সকালের খাওয়া-দাওয়ার শেষের দিকে বেলি ভিতরে প্রবেশ করে! আনন্দ হাত ধুয়ে ডাইনিং থেকে মেয়ের দিক এগিয়ে আসে,
~ এতক্ষণ অন্যদের বাড়িতে কি?
বেলি আশেপাশে তাকিয়ে বাবার হাত জড়িয়ে ধরলো,
~ ও-ই যে আব্বু গেইম খেলছিলাম!
বেলি খুশিকে দেখে সেদিকে এগিয়ে যায়,
~ আম্মু!
~ হ্যাঁ! ঘুরাঘুরি হয়েছে? হলে এখন যাও ব্যাগ রেডি কর!
বেলি মাথা দুলিয়ে অঞ্জলির রুমের দিক এগুলো! ডাইনিং এ বসে থাকা অভির আম্মু আড়চোখে জয়াকে ইশারা করে বেলিকে দেখাল, যেটার মানে হচ্ছে ‘ এ-ই মেয়েটা? ‘
জয়া মিষ্টি হেসে মাথা দুলালো ‘ হ্যাঁ ‘!

বাহির থেকে আনন্দ বেলিকে ডাকছে,
~ দ্রুত আসো বেলি!
বেলি অঞ্জলি, আয়েশা, জয়া, তৃষা সবাইকে জড়িয়ে বিদায় জানাল! গেইটের কাছে যেতেই তৃষ্ণা সামনে এসে থামলো! হাতের সিম কার্ডের ছোট ব্যাগটা বেলির ব্যাগে ঢুকিয়ে দিল,
~ মামা যে-ই ফোন দিয়েছে, সেটায় এ-ই সিম ইউস করবি! আমি বিমানকে বলে দিয়েছি ও শিখিয়ে দেবে!
~ আ..আচ্ছা!
~ জ্যাকেট নিয়ে যাবি?
বেলি চোখ বড়সড় করে ফেলে! নিজের দিক তাকিয়ে অবাক হয়ে যায়,
~ ইয়া আল্লাহ! সবাই কি ভাবলো? আমার ত মনেই নেই! আপনি একটু বলবেন না!
কথাগুলো বলছে আর দ্রুত খুলছে জ্যাকেট! জ্যাকেট পড়তে পড়তে তৃষ্ণা বাঁকা হাসলো! বেলি চলে যেতে নিলে তাঁর কপালে আওয়াজ করে চুমু খেলো,
~ গুড নাইট!
~ আপনি যাবেন না সাথে?
~ না! একটু কাজ আছে! অভি, আবিদ ওঁরা দিয়ে আসবে!
বেলি মাথা দুলালো,
~ শু..শুভ রাত্রি!

চলবে…..

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here