অন্ধকার পল্লী পর্ব ১৭

#অন্ধকার_পল্লী
#Tabassum_Riana
Part:১৭
,
,
,
,
অন্ধকার পল্লীতে বেশ কিছু বখাটে যুবকের আনাগোনা দেখা যাচ্ছে।নতুন কিছু যোগ হয়েছে মামুন ও তার সঙ্গীদের সাথে।ওরা এই এলাকারই অধিবাসী।মামুন মাতাল অবস্থায় ওদের সাথে গল্প করছে।মামুনের বাকি লোকেরা ঘড়ি দেখছে আর আফিনের আসার অপেক্ষায় আছে।তো মামুন ভাই আপনি তো ঢাকায় থাকেন তো এখানে কেন আইলেন?নতুন বখাটেদের একজন মামুনকে জিজ্ঞেস করলো।এখানে অনেক জোস একটা মাল নিয়া আসছি।অবনী নাম মাইয়াডার।অবনীর সম্পর্কে সব কিছু নতুন বখাটেদের বলল মামুন নেশার ঘোরে।নতুন মাইয়া আনার প্ল্যান আছে নি?প্রশ্ন করে উঠলো নতুন বখাটেদের একজন।হ তিনজন আনছি।তাগোরে পতিতা পল্লীত বেঁইচা দিছি। ম্যালা ইনকাম হইতেছে।ঐ অবনীরে কিছু করিনাই অখনো।হের আশিক যদি আহে তাইলে টাকা লইয়া আশিকরে মারুম আর অবনীরে বেঁইচা দিমু।বলেই নেশারঘোরে হেসে উঠলো মামুন।ঠিক তখনই অন্য অফিসাররা এসে মামুন আর ওর লোকদের ধরে ফেললো।নতুন বখাটে গুলো তাদের নকল বেশ বদলে নিলো।এতক্ষন যা বলেছিস সব রেকর্ড করে নিলাম।দেখিস কি হাল হয় দাঁতে দাঁত চেপে কমিশনার বলল।এত্তবড় ধোঁকা!!!এত্তবড় ধোঁকা আর কিছু বলতে পারলোনা মামুন।চুপ হয়ে গেলো।মাতালতায় ডুবে গিয়েছে মামুন।আরো কিছু অফিসার গিয়ে রুপা কে ধরে আনলো।আমারে ধরলেন কেন?চেঁচিয়ে উঠলো রুপা।অবনী তোর কাছে থাকার পর ও মিথ্যে বলেছিস।অফিসার নিয়ে যাও এই মহিলাকে।রাগী গলায় বললেন ডিআইজি।কমিশনার ওদের সাথে চলে গেলেন।ডিআইজি অবনী আর কাছে এলেন ওদের নিরাপত্তার সাথে বাহিরে বের করে আনার জন্য।
,
,
,
আফিন চলো।বলে উঠলেন ডিআইজি।কারোর কন্ঠ শুনে অবনীর থেকে সরে এসে পিছনে তাকালো আফিন।আফিন অবনীকে নিয়ে বেরিয়ে আসো।সবাইকে ধরে নিয়েছি আমরা।
,
,
,
,
আফিন হালকা মাথা ঝাঁকিয়ে অবনীকে কোলে তুলে নিলো।আমি হাঁটতে পারবো।বলে উঠলো অবনী।হুম পারবেতো।তোমার কথা শুনেই বুঝতে পারছি তোমার মধ্যে কতোটুকু শক্তি আছে।বলে অবনীকে নিয়ে হাঁটতে লাগলো আফিন।মুচকি অবনী নিচে তাকালো।দুহাতে আফিনের গলা জড়িয়ে আছে অবনী।অাফিনকে একনজরে দেখে যাচ্ছে অবনী।এই দেখার যেন কোন শেষ নেই।অবনীর দিকে তাকিয়ে ভ্রু নাচিয়ে ইশারা করলো আফিন এভাবে কি দেখা হচ্ছে?
অবনী মাথা নেড়ে মুচকি হেসে নিচে তাকালো।আবার ও আফিনের দিকে তাকালো অবনী।কপাল বেয়ে গড়িয়ে পড়া আফিনের ঘাম গুলোকে উঁড়না দিয়ে মুছে দিলো অবনী।অবনীর দিকে না তাকিয়ে আফিন একটু হাসলো।অবনী আফিনের গলা জড়িয়ে ওর কাঁধে মাথা এলিয়ে দিলো।অন্ধকার পল্লী থেকে বেরিয়ে এলো আফিন ওর জলপরীকে নিয়ে।অবনীকে গাড়িতে বসিয়ে রহমত সাহেবকে কল দিলো আফিন।
,,,,,,,,,,,,হ্যালো আফিন বাবা আমার মেয়েকে পেয়েছো?ওপাশ থেকে কেঁদে বললেন রহমত সাহেব।
,,,,,,,,,,,জি আঙ্কেল ও আমার সাথে আছে।বলে অবনীর মাথায় হাত রাখলো আফিন।অবনী ও সিটে হেলান দিয়ে ঘুমিয়ে গেছে।একয়দিন ওর ওপর কম ধকল যায়নি।
,,,,,,,,,,, আমার মেয়ে কেমন আছে?প্রশ্ন করে উঠলেন রহমত সাহেব।
,,,,,,,,,মোটামুটি সুস্থ আছে।তাও এখানকার আমার পরিচিত হাসপাতালে ওকে এডমিট করবো।আপনরা আসেন।ওকে বাবা আসছি আমি ওর মা অসুস্থ।ফোন রেখে ডিআইজি আর অবনীকে নিয়ে গাজীপুরের একটা পরিচিত হাসপাতালে পৌছে গেলো ওরা।অবনীকে ভর্তি করে দেয়া হয়েছে।
,
,
,
আফিম ওদের এগেইন্স্টে আমি কেস ফাইল করবো।বলে উঠলেন ডিআইজি। আপনি কেস ফাইল করে আর যা ইচ্ছা করেন আমার আগে ওদের গায়ে কেউ টাচ পর্যন্ত করবেনা।ওদের স্পেশালি মামুনকে কিছু স্পেশাল ট্রিটমেন্ট দিতে চাই।এতো দিন ওরা আমার অবনীর সাথে যা করেছে সব গুনে গুনে শোধ করে দিবো।
,
,
,
,
তিনঘন্টার ঘন্টার মধ্যে রহমত সাহেব চলে এলেন।ডিআইজি আর রহমত সাহেবকে অবনীর কাছে রেখে বেরিয়ে গেলো আফিন ঢাকার উদ্দেশ্যে।
ওটি থেকে বের হলেন ডাক্তার রেবেকা জামান।মিঃআফিন খান!!!!!বলে উঠলেন ডাক্তার।রহমত খান দাঁড়ালেন।
ওনি চলে গেছেন।আমি অবনীর বাবা বলে উঠলেন রহমত খান।ওহ।ওনার সাথে চাইলে দেখা করতে পারেন।বেশি কথা বলবেননা।ওনাকে একটু ঠান্ডা পরিবেশে থাকতে হবে।বলেই রহমত সাহেবকে অবনীর কাছে যাওয়ার জন্য।রহমত সাহেব মেয়ের কাছে এসে দাঁড়ালেন।ওনার চোখ জোড়া ভিজে আছে।অবনী শরীরের জায়গায় জায়গায় ব্যান্ডেজ করা।বাপ মেয়ের আবেগঘন সময় কাঁটলো বেশ কিছুক্ষন ধরে।
আআহ আর মাইরেননা স্যার মইরা যামু।চেঁচিয়ে উঠলো মামুনের দলের একজন।আফিন চাবুক দিয়ে ওদের বেধড়ম পিটাচ্ছে।একেকজনের চিৎকার হাওয়ায় মিলিয়ে যাচ্ছে।ওদের শরীরের চামড়া ফেটে রক্ত বেরুচ্ছে আফিন সেই ঘায়ে লবন মরিচ ডলে দিলো।ওদের চিৎকার আরো বেড়ে গেলো।পানি দেন পানি দেন সবগুলা চিৎকার করতে লাগলো।আফিন গরমপানিতে লবন মরিচ মিশিয়ে ওদের গায়ে ঢেলে দিলো।সবাই চিৎকার করছে।বেশকিছুক্ষন পর আবার ও পানি খুঁজছে ওরা।আফিন গরম পানি এনে ফ্লোরে ঢেলে দিলো খা পানি।ভালো করে খা।চারজনে ফ্লোরে পড়ে চাটতে লাগলো।আফিন তখনই মারতে লাগলো ওদের।
,
,
,
মামুন গর্জে উঠলো।জানিস আমি কে?একবার ছুটতে পারি তারপর দেখ তোর কি হাল করি।আমার বাবা যোগাযোগ মন্ত্রী।ছিলো বাট এখন নেই।পুলিশের সামনে যা যা বলেছিলি সব রেকর্ড করে রাষ্ট্রপতিকে পাঠিয়েছি।তোর বাবার মন্ত্রীত্ব খেয়ে দিয়েছি।এখন না সে মন্ত্রী না তুই মন্ত্রীর ছেলে।কথা গুলো বলে আফিন আবার ও ওদের মারতে লাগলো।
আফিন তুমি চলে যাও।অবনীর এখন তোমাকে বেশি দরকার।ওদের ব্যাবস্থা তো আমি করবো।বলে উঠলেন কমিশনার।আফিন ওদের দিকে রাগী চোখে তাকিয়ে টিস্যুতে হাত মুছে বেরিয়ে গেলো।

চলবে

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here