অন্যরকম প্রেমানূভুতি পর্ব ৬

#অন্যরকম_প্রেমানূভুতি
#অস্মিতা_রোদৌসি
#part_______06
তোকে আমায় ভালেবাসতেই হবে।তুই চাইলেও আমার তুই না চাইলেও আমার।তোকে নিজের খাঁচায় বন্দী করে রাখবো আজীবন।তুই শুধু আমার হ্যাঁ তুই শুধু আমার।এই অভ্রের শুভ্রপরি তুই।

কথা গুলো মনে মনে বলেই ডেবিল স্মাইল দিলো অভ্র।একের পর এক সিগারেট ছাদে দাড়িয়ে ফুকে যাচ্ছে অভ্র।সিগারেটের বিষাক্ত ধোঁয়া অভ্রকে ঘিরে রয়েছে।

রাত প্রায় ১১ বাজে কিন্তু অভ্রর চোখে ঘুম নেই। তাইতো ছাদে দাড়িয়ে আছে।সঙ্গী হিসেবে আছে তার সিগারেট।মেধাকে কাল অনেক কষ্ট দিয়েছে অভ্র।এতে অবশ্য মেঘ দোশ ছিলো। মেঘা তখন যদি অভ্রকে ওসব উল্টো পাল্টা কিছুনা বলতো তাহলে হয়তো অভ্রের না রাগ উঠতো না মেঘলা শাস্তি পেতে হতো।কাল রাত থেকে এ পর্যন্ত মেঘনার সাথে কথা হয়নি অভ্রের।

আজ সকালে মেঘাদের বাসা থেকে ফিরেছে অভ্র ও নীলা।নীলাকে বাসায় রেখে অভ্র অফিসে চলে গেছে।
একেবারে রাত ৯ টায় বাসায় ফেরে সে।

ফ্রেশ হয়ে নীলা সহ ডিনার করে ছাদে আসে অভ্র।মাথায় তার এখনো রাগ টগবগ করছে কাল রাতের সেই পিকগুলো দেখে।যেখানে মেঘা রিদ সহ বৃষ্টিতে ভিজছে,হাত ধরে রাস্তা পার হচ্ছে, দুজনে দুজনের দিকে তাকিয়ে আছে,কখনো বা দুজনে কড়া রোদে একছাতার নীচে দাড়িয়ে আছে। আর এই টপিকগুলো একটা আননোন নাম্বারে সেন্ড করা হয়েছে অভ্রের ফোনে।তবে অভ্র জানে এটা কার কাজ তাই তার মাথায় রাগ চরে যায়।পিকগুলো দেখে হৃদয়টা অদৃশ্য বর্ষণে ঝড়তে থাকে। আর অক্ষত হৃদয়টা ক্ষতবিক্ষত হয়ে রক্তক্ষরণ হচ্ছে। এসব শুধু অভ্র বুঝতে পারছে অন্যকেউ নয়।

___________________

কানে ইয়ারফোন গুজে রুমে শুয়ে আছি।মনটা একটু ভালো নেই। একজন হলো রিদ বেঈমান আর একজন হলো হনুমান,খাটাশ, এলিয়েন অভ্র ।

এই দুজনেই হয়তো আমাকে পাবানার মেন্টাল হসপিটালে পাঠানোর প্লান করছে।
একজন ভালোবাসার নাম করে ঠকালো আর একজন
হবু বর বলে যা ইচ্ছে তাই করছে।

কাল অভ্রভাইয়ার ব্যাবহারে আমি খুব কষ্ট পেয়েছি।মানুষটা না যতটা মুগ্ধ করছে আমায় তার চেয়ে দ্বিগুণ বিষিয়ে দিচ্ছে এই হৃদয়।

একজনকে ভালোবেসে শুধু ধোঁকাটাই হয়তো আমার প্রাপ্য ছিলো।

এসব ভাবতে ভাবতে কখন যে ঘুমিয়ে পড়েছি তা মনেই নেই।

আড়মোড়া ভেঙে ঘুম থেকে উঠে গিয়ে আগে ব্যালকানিতে গেলাম।ইতিমধ্যেই সূর্যের মিষ্টি আলো ছড়িয়ে পড়ে চারিপাশে। গিরিল ভেদ করে মিষ্টি একফালি রোদ এসে পড়ছে আমার কপালে।পাখির কিচির মিচির ও শোনা যাচ্ছে। সাথে মৃদু বাতাস বইছে।শুভ্র সতেজ আবহাওয়ায় একটা লম্বা নিশ্বাস নিলাম।
সবমিলিয়ে এক অমায়িক সুন্দরর্যে সেজে উঠছে প্রকৃতি।

হঠাৎ চোখ যায় ব্যালকানির এক কোণে পড়ে থাকা একটা গোলাপের তোড়া সাথে একটা গিফট বক্স।অবাক হয়ে দুপা এগিয়ে ফুলের তোড়া আর বক্সটা হাতে তুলে নিলাম।উল্টে পাল্টে দেখলাম কোনো নাম মেনশনের কার্ড নেই।এতে আরো বেশি আশচার্য হলাম।কে আমাকে গিফট দিতে যাবে!!! গিফট দেওয়ার মতো মানুষ এই মহুর্তে আমার কেউ নেই!!

তবে তাজা গোলাপের ঘ্রাণ নাকে লাগতেই এক অদ্ভুত অনূভুতির সৃষ্টি হলো।ফুল গুলোতে নাক গুজে দিয়ে ঘ্রাণ নিতে থাকলাম।লালটকটকে গোলাপ গুলোর রুপ সৌন্দর্য যেন উতলে পড়ছে।

হঠাৎ করে কি জানি হলো।তাই গোলাপের তোড়া থেকে একটা ফুল ছিড়ে কানে গুজে দিলাম।বক্সটা আর ফুলের তোড়াটা পাশের টেবিলে রেখে দুহাতে গিরিলে মুঠোবন্দি করে আকাশ পানে চেয়ে রইলাম।আর গলায় সুর তুললাম______

ভেঙে মোর ঘরের চাবি
নিয়ে যাবি নিয়ে যাবি কে
আমারে। ও বন্ধু আমার
না পেয়ে তোমার দেখা
একা একা দিনে আমার কাটে নারে।

ভেঙে মোর ঘরের চাবি নিয়ে
যাবি কে আমারে।( ২)

বুঝি গো রাত পোহালো
বুঝি ঐ রবির আলো আভাশে
দেখা দিলো গগন পানে।

হঠাৎ দরজার কারো কড়া নাড়ার শব্দে গানটা বন্ধ
হয়ে গেলো।

কান থেকে ফুলটা খুলে রুমে গিয়ে দরজাটা খুললাম তারাহুরা করে।দরজার ওপাশে মিঠি দাড়িয়ে ছিলো এতক্ষণ।

কিরে কি হয়েছে এমন ভাবে দরজা ধাক্কাচ্ছিস কেনো?বললাম আমি।

কটা বাজে খেয়াল আছে তোমার???ভার্সিটি যাবিনা??

__হু যাবো।তুই সাবিনা কলেজ??

___হুম যাবো।আচ্ছা ফ্রেশ হয়ে নিচে আসো।বলেই মিঠি চলে গেলো

দরজা বন্ধ করে কাপড় নিয়ে ওয়াশরুমে ঢুকলাম।
একেবারে শাওয়ার নিয়ে ফ্রেশ হয়ে ভার্সিটি যাওয়ার জন্য রেডি হয়ে নিচে গেলাম।

নিচে মা,বড় মা,মিঠি,রিদ ভাইয়া,কেয়া,ভাইয়া,আব্বু সবাই খাবার টেবিলে বসে টুকটাক কথা বলছে।নিচে গিয়ে হাসি মুখে সবাইকে উদ্দেশ্য করে ইসলাম দিয়ে মিহির পাশে চেয়ার টেনে বসে পড়লাম।টুকটাক কথা বলে খাওয়া শেষ করে ভার্সিটির উদ্দেশ্যে বেড়িয়ে পড়লাম।

নীচে নেমে গেট থেকে বেড়োতেই নীলাকে চোখে পড়লো।সে গাড়িতে হেলান দিয়ে দাড়িয়ে আছে।ভিতরে হয়তো ওই অভ্র হনুমান,রাক্ষসটা বসে আছে।আমি নীলার কাছে গিয়ে বললাম,___তুই এখানে দাড়িয়ে কেন??

____ কেনো আসতে পারিনা বুঝি???

____ তোকে আসতে কি আমি বাঁধা করেছি আমি??

___ তাহলে এমন প্রশ্ন জরাস কেন হুম??

____ হয়েছে হয়ছে মেরি জান।আর এমন প্রশ্ন কখনো করমু নাহ।চল দেরি হয়ে যাচ্ছে। বলেই নীলার হাত ধরে হাটা শুরু করলাম।

এই এই কই যাচ্ছি??? গাড়ি থাকতে রিকশা করে কেন যাবো??

কেন রিকশা তে যাওয়া যাবেনা বুঝি??আজ রিকশা করেই যাবো।জেদ নিয়ে বললাম আমি।

____ ভাইয়া কেমন সেটা তুই জানিস তাই এমন পাগলামি না করে গাড়িতে উঠ বলেই নীলা আমাকে গাড়ির সামনে এনে দাঁড় করালো।

নীলা গিয়ে পিছনে বসলো।আর অগত্যা আমাকে ওই হনুমানটার সাথে বসতে হলো।

____ গাড়িতে বসে একবারো অভ্র ভাইয়ার দিকে তাকাইনি আমি।আর তাকাতেই চাইনা।তাকালেই কালকের কথা মনে পড়ে যাবো।যা আমি এখন কোনোমতেই মনে করে নিজের মুডটা নষ্ট করতে চাইনা।

গাড়ি থামলো ভার্সিটির গেটে সামনে।নীলা লাফিয়ে নামলো।আর দ্রুত ভার্সিটিতে ধুকে পড়লো।তা দেখে ভয়ে আমার বুকটা দুরুদুরু করতে লাগলো।নাজানি আজ এই হনুমান আমার গলাটা না টিপে দেয়।এসব মনে মনে বলে আড়চোখে ওনার দিকে তাকালাম।ওমনি একদৃষ্টিতে আমার দিকে চেয়ে আছেন।যা আমাকে ভয়,অসস্থিতে ফেলে দিচ্ছে।

আমি এবার গাড়ির দরজাটা খুলে যেই বাইরে রেড়োতে
ওমনি ওনি খপ করে আমার হাতটা ধরে টেনে নিজের বুকের মাঝে ফেললো।

আমি নিজেকে ছাড়ানোর জন্য ছটফট করছু আর ওমনি আমাকে দেখেই যাচ্ছে এক ধান্দায়।

___ ছাড়েন আমাকে। লেট হয়ে যাচ্ছে। ক্লাস মিস হয়ে যেতে পারে।

____ এবার ওমনি আমার কথার উত্তর না দিয়ে আমার কপালে একটা কিচ করে লেন। আমি কেঁপে উঠলাম আলতো।

___ জান এতো ছটফট করলে চলবে নাকি হ্যাঁ???বিয়ের পর তো সবসময় আমার সাথে আমার কাছেই থাকতে হবে তোমাকে।স্লো ভয়েসে বললেন ওনি।আর আমাকে ছেড়েও দিলেন।

আমি কিছুনা বলে গাড়ি থেকে নেমে সোজা ভার্সিটি তে ধুকে পড়লাম দ্রুত পায়ে।

এই লোকটা আসলেই একটা বহুরুপী সাথে এই নীলা ডাইনি টাও।আমাকে একা ফেলে ভার্সিটি ধুকে পরলি তাইনা।দ্বারা তোর বারোটা আমি বাজাবো।রেগে ফিসফিস করে বলতে বলতে ক্লাস রুমের দিকে এগোলাম।

আর এদিকে অভ্র তার শুভ্র পরির কান্ড দেখে মিটিমিটি হাসছে!!!

[ সরি গল্পটা রিচেইক করিনি। সময় নেই বলে]

👉চলবে…

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here