অবুঝ_পাখি পর্ব ২

#অবুজ_পাখি
#নাম_না_জানা_পথিক
পাট:২
রিফাত এক হাতে পরিকে জড়িয়ে ধরে আছে আরেক হাতে ড্রাইভ করতেছে। পরির এখনো সেন্স ফিরেনি। রিফাত পরিকে প্রথমে পিছনের সিটে রেখেছিল। কিন্তু পরির জ্ঞান নাই তারপর গ্রামের রাস্তা পরে যেতে পারে তাই সামনের সিটে বসিয়েছে।
পরির মামি পরিকে কোনোভাবেই রিফাতের সাথে যেতে দিবে না। গ্রামের সকল লোকও পরির মামির পক্ষে তাই রিফাত একটা উপায় বের করে। পরির মামিকে ১ লক্ষ টাকা দিয়ে কোনোমতে পরিকে নিয়ে বের হয়ে আসে।
রিফাত: ড্রাইভ অফ করে পরির মুখের দিকে তাকালো। কি আছে এই বাচ্চা মেয়েটার মধ্যে যার জন্য আমি ওকে বিয়ে করে ফেললাম। আমি তো চাইলেই পুলিশকে ফোন করে বিয়েটা আটকিয়ে দিতে পারতাম। লাইফে কখনো কোনো মেয়ের পিছনে সময় নষ্ট করিনি সব সময় পড়ালেখার মাঝে নিজেকে ব্যাস্ত রেখেছি। আজ কি হলো??
রিফাত চিন্তা করতেছে বাড়িতে গেলে কি হবে। রিফাতের বাড়িতে আছে রিফাতের দাদি, আব্বু-আম্মু, বড় ভাই ইমন সে ব্যবসায়ি, তার স্ত্রীর নাম নিশি, ছোট বোন রুকাইয়া সে ইন্টার প্রথম বষের ছাত্রী ঢাকা মেডিকেল কলেজে পড়ে, আর ছোট ভাই ফাহিম অষ্টম শ্রেনীর ছাত্র।
রিফাত কিছু ভেবে আবার পরিকে নিয়ে গাড়ি স্টাট দিলো। দীঘ ৪ ঘন্টা গাড়ি চালানোর পর একটা বাড়ির সামনে থামলো।
পরির এখনো সেন্স ফিরেনি রিফাত পরিকে কোলে নিয়ে বাড়ির ভিতরে ঢুকলো। পরিকে রুমে শুয়িয়ে রিফাত অন্যরুমে চলে গেল ফ্রেশ হতে। এটা রিফাতদের বাড়ি। এখানে শুধু দুজন কেয়ারটেকার থাকে। বাড়িটা শহরের বাহিরে কোলাহলমুক্ত জায়গায়। আশেপাশে দূর পযন্ত কোনো বাড়ি নেই। রিফাত ফ্রেশ হয়ে রহিম চাচাকে তাদের জন্য নাস্তা তৈরি করতে বললো।
রহিম চাচা: তোমরা রেস্ট লও আমি তোমার চাচিরে নাস্তা বানাইতে কই।
রিফাত: পরির রুমে গিয়ে দেখে পরির সেন্স ফিরেছে। খাটের এক কোনে গুটিশুটি মেরে বসে আছে।
পরি: দাদা তুমি কে? আর আমি এখানে আসলাম কি করে?
রিফাত: আমার নাম রিফাত। তুমি এখন আমার বাসায় আছো।
পরি: হাহাহাহাহা জোরে জোরে হাসতে লাগলো।
রিফাত: এই মেয়ে কি পাগল নাকি শেষে কপালে একটা পাগল জুটলো। তুমি এইভাবে হাসতেছো কেনো?
পরি: দাভাই তুমি মেয়েদের মতো ঠৌঁটে লিপস্টিক দিছো কেনো বলেই হাসতে হাসতে বিছানায় গড়া-গড়ি খেতে লাগলো।
রিফাত: মানে আমার ঠৌঁটে লিপস্টিক আসবে কোথায় থেকে।
পরি: দাঁড়াও আমি দেখাচ্ছি বলে পরি রিফাতকে বসিয়ে রিফাতের কোলে বসে গলা জড়িয়ে হাত দিয়ে রিফাতের ঠৌঁট ঘসতে লাগলো। পরি কখনো বাড়ির বাহিরে যায়নি। তাই ভাবতেছে রিফাতের ঠৌঁটে লিপস্টিক দিছে।
রিফাত: কি করতেছো এটা লিপস্টিক না।
পরি: দাভাই দাঁড়াও আমি এখনি লিপস্টিক উঠিয়ে তোমাকে দেখাচ্ছি বলে জোড়ে জোড়ে ঠৌঁট ঘষতে লাগলো।
রিফাত: পরিকে একটা ধমক দিয়ে সরিয়ে দিলো। ইশশ আমার ঠৌঁটটার কি অবস্থা করছে। আরেকটু হলে রক্ত বের হয়ে যেত।
পরি: খাটের এক কোনায় বসে কান্না করতে লাগলো। দাভাই তুমি পচা।
রিফাত: আমি তোমার ভাই না আমার নাম রিফাত। তুমি আমাকে রিফাত বলে ডাকবা।
পরি: তুমি আমার বড় তাই নাম ধরে ডাকলে আমার পাপ হবে দাভাই।
রিফাত: কেমনডা লাগে বউয়ের কাছে ভাই শুনতে হবে এখন। পরি তোমার সাথে আমার বিয়ে হয়েছে। তাই তুমি আমাকে নাম ধরেই ডাকবো।
পরি: আচ্ছা দাভাই।
রহিম চাচা: বাবা তোমাগো নাস্তা কি নিচে খাইবা না এখানে দিমু।
রিফাত: চাচা এখানেই নিয়ে আসো।
রহিম চাচা কিছুক্ষন পর রুমে খাবার দিয়ে গেলো।
রিফাত: খেতে বসে গেল।
পরি: বার বার খাবারের দিকে তাকতে লাগলো। উফফ ঐ কাল দুপুরে খাইছিলাম ক্ষুদায় পেটে ইঁদুররে যুদ্ধ করতাছে। আর এই খবিশটা একাই খাইতাছে একবার জিজ্ঞাসও করতাছে না আমি খাবো কি না।
রিফাত: খাবার পরির মুখের সামনে নিয়ে আআআ করো।
পরি: তাড়াতাড়ি আআ করে ফেললো। উফফ কতক্ষুধা লাগছিল।
রিফাত: আসতে খাও
রিফাত নিজের হাতে পরিকে খাওয়িয়ে দিল। এখন একটু ঘুম দেও। তারপর তোমাকে নিয়ে আমার বাসায় যাবো।
পরি খাওয়ার পর ঘুমিয়ে গেলো। রিফাত ব্যালকনিতে যেয়ে ভাবতে লাগলো বাসায় কি বলবে একটা হিন্দু মেয়ের সাথে আমার বিয়ে কখনই মেনে নিবে না। কিন্তু পরির সাথে আমার বিয়েটাও অস্বিকার করতে পারি না। আল্লাহ একটা উপায় দেখায়া দেন। রিফাত আরও কিছুক্ষন ব্যালকনিতে থেকে রুমে চলে আসলো। রুমে এসে দেখে পরি বাচ্চাদের মতো হাত পা ছড়িয়ে শুয়ে আছে। কেউ দেখে বলতে পারবে না এই মেয়ের বিয়ে হয়েছে। রিফাত পরির ঘুমন্ত মুখটার দিকে তাকিয়ে আছে। এক অদ্ভুত মায়া আছে ওর মুখে। রিফাত আলতো করে পরির কপালে একটা কিস করে তার রুমে চলে যায়।
পরি: ঘুম থেকে উঠে দেখে রুমে কেউ নাই। জোরে জোরে দাভাই দাভাই বলে ডাকতে লাগলো।
রিফাত: পরির ডাক শুনে এক প্রকার দৌড়ে পরির রুমে ছুটে আসে। কি হইছে পরি?
পরি: রিফাতকে জড়িয়ে ধরে বললো দাভাই তুমি আমাকে একা রেখে কোথায় গেছিলা জানো আমি কত ভয় পেয়ে গেছিলাম।
রিফাত: আমি তো পাশের রুমেই ছিলাম। যাও এখন ফ্রেশ হয়ে আসো বাসায় যেতে হবে।
পরি: আইচ্ছা দাভাই।
রিফাত: পরির রুমেই বসে বসে ভাবতে লাগলো বাসায় গেলে কি হবে।
কিছুক্ষন পর পরি ফ্রেশ হয়ে আসলো।
রিফাত: পরিকে তার পাশে বসালো। পরি আমার বাড়িতে এখন আমাদের বিয়ের কথা বলব না। আমি সব কথা বলবো তুমি চুপ করে আমার পাশে থাকবে।
পরি: আচ্ছা।
রিফাত পরিকে নিয়ে তার বাসার উদ্দেশ্যে রওনা দিলো।
চলবে………

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here