আমায় একটু ভালবেসো পর্ব -২০+২১

#আমায়_একটু_ভালবেসো
#জান্নাতুল_ফেরদোস_কেয়া

(২০)

পর্ণা স্তব্ধ হয়ে গেছে। নিজের কানকে বিশ্বাস করতে পারছে না।আদনান কি সত্যি বলছে এসব, নাকি মজা করছে। পর্ণা হাতটা পেটের মধ্যে রাখলো।মনে, মনে বলল,ওর কি হবে?
আদনান পর্ণার দিকে তাকালো।মেয়ে টা কথা বলছে না, আদনানের রাগ হচ্ছে। তবে কি পর্ণা ও এটাই চাই। নিরবতা সম্মতি লক্ষণ।তবে কি পর্ণা চুপ থেকে বুঝাতে চাইছে, সে এই সিদ্ধান্তে রাজি?
আদনান পর্ণার বাহু ধরে রেলিঙের সাথে চেপে ধরলো। দাঁতে দাঁত খিঁচে বলল,
,ও তাহলে তুমি ও রাজি তাই না! ঠিক আছে, আমি যত তারাতাড়ি সম্ভব ডিভোর্সের ফাইল রেডি করছি।তুমি তো মুক্ত হতে চাও,তাই না?ঠিক আছে, আজ থেকে তুমি মুক্ত। আর কখনো তোমাকে ডিসটার্ব করবো না।
আদনান ধাক্কা মেরে ফেলে দিল পর্ণাকে।তারপর হনহনিয়ে বের হয়ে গেল। আচমকা পরে যাওয়া,রডের সাথে লেগে, কনুইয়ের বেশ কিছুটা জায়গা কে টে গেল পর্ণার। তবে সেদিকে ধ্যান নেই তার।যেখানে সংসার ভেঙে যাচ্ছে,সেখানে এসব তো কিছুই না।পর্ণা ডুকরে কেঁদে ওঠলো। হাত দিয়ে দেয়ালে অনবরত আঘাত করতে লাগলো। আকাশের দিকে তাকিয়ে চিৎকার করে কেঁদে ওঠলো।
,ও আল্লাহ, এ কেমন শাস্তি। আমি যে আর সহ্য করতে পারছি না। সেই তেরো বছর বয়স থেকে অসহ্য যন্ত্রণা নিয়ে বড় হচ্ছি।সবসময় একটা কথায় মাথায় ঘুরপাক খেতো,যে আমার আপন কেউ নেই।নিজের আপন বাবা মা নেই। যারা আমাকে ঐ হাসপাতালে ফেলে গিয়েছিল,তাদের প্রতি ঘৃণা হতো,রাগ হতো।আস্তে,আস্তে বদমেজাজি হয়ে ওঠি । সবার সাথে খারাপ ব্যবহার করতাম।কিন্তু অর্ণা, সে ছিল উল্টো। শান্তসিষ্ট,ভদ্র,স্বল্পভাষী।ওকে দেখিয়ে অনেকেই অনেক কথা বলতো।যে ও তো তোর সমবয়সী,তাহলে তুই এমন কেন? তাই ওর প্রতি ভিষণ রাগ হতো।মনে হতো,ও যদি এতো ভালো না হতো,তাহলে আমাকে এত কথা শুনতে হতো না। আচ্ছা আল্লাহ ঐ মানুষ গুলোর শাস্তি তুমি আমায় কেন দিচ্ছো?আমি মুক্তি চাই এর থেকে।
পর্ণা মনে,মনে একটা সিদ্ধান্ত নিল।সে আর এই দুনিয়ায় থাকবে না। নিজেকে নিজেই শেষ করে দেবে।এটাই হবে সবচেয়ে বড় শাস্তি। এবং মুক্তির পথ।

রাত দুইটায় বাড়ি ফিরলো সবাই। এসেই যে যার রুমে চলে গেল। কালকে আবার সকাল,সকাল ওঠতে হবে। অর্ণা রুমে এসে, দপ করে বিছানায় শুয়ে পড়লো।ফ্রেশ হওয়া দরকার।, কিন্তু প্রচুর ক্লান্ত লাগছে, তাই আর ওঠলো না। চোখটা লেগেই গিয়েছিল, এমন সময় পাশে রাখা ফোন টা বেজে ওঠে। অর্ণা বিরক্ত হলো বেশ!এটা কি ফোন দেয়ার সময়?হাতে ফোন টা নিয়ে কড়া কিছু কথা বলবে বলে ঠিক করলো।কিন্তু নাম্বার দেখে দমে গেল। তাহমিদ কল করেছে,লোকটা এখনও জেগে আছে! অর্ণা আলস্যতা ভেঙে ওঠে বসলো। বাজতে থাকা ফোনটা, রিসিভ করে কানে গুঁজলো।ওপাশ থেকে ভেসে এলো,তাহমিদের আধ ঘুমো কন্ঠস্বর।
,হ্যালো অর্ণা, কি করছো?
অর্ণা কপট রাগ দেখিয়ে বলল,
,কয়টা বাজে?
তাহমিদ শোয়া থেকে ওঠলো।দেয়াল ঘড়িটার দিকে তাকিয়ে ভাবলেশহীন হয়ে বলল,
,২টা ২৪ বাজে।
অর্ণা গাল ফুলিয়ে বলল,
,এটা ফোন দেয়ার সময়?আর এতক্ষণে মনে পড়লো আপনার, আমাকে ফোন দেয়ার জন্য?
,আরে তা না।তুমি বিজি ছিলে,তাছাড়া ওখানে অনেক সাউন্ড ছিল। ফোন দিলে কি কথা শোনা যেত? তাই এখন ফোন দিয়েছি!
,ওহ্ আচ্ছা!
,খাবার খেয়েছো?
,হুম, আপনি খেয়েছেন?
,হ্যা খেয়েছি। আচ্ছা তোমার কি বেশি ঘুম পাচ্ছে?
অর্ণা একবার ভাবলো,বলে দিবে যে তার ঘুম পাচ্ছে। কিন্তু পরক্ষনেই ভাবলো, লোকটার তার জন্য এতরাত পর্যন্ত জেগে আছে। এখন তার এই কথা বলাটা ঠিক হবে না। তাই বলল,
,না আপনি বলুন। আমার ঘুম পাইনি।
,হুম, জানো অর্ণা আজকে যে আমার কি খুশি লাগছে।অবশেষে তোমাকে আমার করে পাবে।এতদিন চিন্তায় ছিলাম, যদি তোমাকে না পাই। কিন্তু এখন আর সেই চিন্তা নেই।আচ্ছা তোমাকে একটা প্রশ্ন করি অর্ণা?
,কি প্রশ্ন?
,তুমি কি আদনানকে এখন ও ভালবাসো?
অর্ণা কেমন করে যেন হাসলো।হেঁটে,হেঁটে বারান্দায় গিয়ে দাঁড়ালো। ফাঁকা রাস্তা, নিস্তব্ধ রজনী। কিছু একটা ভেবে বলল,
‌,দেখুন ভালবাসি কিনা তা জানি না।তবে তার কথা আমার মনে পড়ে। হুট করেই মনে হয়, কেন আমাদের মিল হলো না? দেখুন আমি তাকে একপাক্ষিক ভালবেসে গিয়েছি।তাই ভালবাসাটা ততটাও গভীর হয়নি।আর নয়তো কি এত তারাতাড়ি তাকে ভুলে, আপনাকে বিয়ে করতে পারতাম। সে যেহেতু সুখী আছে, তবে আমি কেন তার বিরহে নিজের সুখকে পায়ে ঠেলে দূরে সরে যাব।সব মানুষই ভালবাসার কাঙাল। আমি তার ব্যতিকরম নয়।আপনি আমায় ভালবাসেন, এটাই আমার বড় প্রাপ্তি।হয়তো একসাথে থাকতে গিয়ে, আমি আবার প্রেমে পরবো,ভালবাসবো।সবাই কে দ্বিতীয়বার সুযোগ দেয়া দরকার। তাই আমি নিজেকে দ্বিতীয় সুযোগ দিচ্ছি, আপনার প্রেমে পরার জন্য।
তাহমিদ চুপ থেকে অর্ণার কথাগুলো শুনলো। অর্ণার কথা শেষ হতেই বাঁকা হেসে মনে,মনে বলল,
,শুধু বিয়ে টা হোক!এতো ভালবাসা দেব যে ঐ ছেলের নাম ও তুমি ভুলে যাবে। মনে পড়বে তো দূরের কথা।
তাহমিদকে চুপ থাকতে দেখে অর্ণা বলল,
,কি ব্যাপার, আমার কথা গুলো কি পছন্দ হয়নি নাকি?
,না না তেমন কিছু নয়।
,হুম ভালো।আচ্ছা এবার আমি একটা প্রশ্ন করি?
,হুম করো।
,আপনি প্রেম করেননি কখনো?
,উমম নাহ্!তবে ক্লাস নাইনে থাকাকালীন এক সিনিয়র আপুর উপর ক্রাশ খেয়েছিলাম।সাহস করে একটা বেনামি চিঠিও পাঠাই।কিন্তু ঐ মেয়ে ছিল ধানি লঙ্কা।ঠিক বুঝে গেল যে চিঠি আমি দিয়েছি। পরে এমন থ্রেট দিল।ভ য়ে আর ঐ মেয়ের আশেপাশে যায়নি।তারপর আর কাউকে ভালো লাগেনি।
তাহমিদের কথা বলার ভঙ্গি দেখে,হেসে ওঠলো অর্ণা।ছেলেটা পারে ও বটে। বাকি রাতটা দুজন কথা বলতে, বলতে কাটিয়ে দিল।যখন ভোরের আলো ফুটলো। তখন অর্ণা আর জেগে থাকতে পারছিল না। ফোন কানে রেখেই ঘুমিয়ে পড়লো।তাহমিদ কিছুক্ষণ হ্যালো,হ্যালো করলো।যখন বুঝলো অর্ণা ঘুমিয়ে গেছে। তখন নিজেই ফোন কে টে দিল।

চলবে,,,,#আমায়_একটু_ভালবেসো
#জান্নাতুল_ফেরদৌস_কেয়া

(২১)

আজকের সকালটায় যেন ব্যস্ততা দিয়ে শুরু।বাড়ির প্রত্যেকটা সদস্য ব্যস্ত। চিৎকার, চেঁচামেচিতে কলরব সৃষ্টি হয়ে রয়েছে পুরো বাড়িতে । অর্ণার ঘুম ভাঙে আটটার দিকে।পাপিয়া বেগম ডেকে উঠালো।সারারাত না ঘুমানোর কারণে অর্ণার চোখ জ্বালা করছে। সে কাথা টেনে আবার ও শুয়ে পরলো। ঘুম ঘুম কন্ঠে বলল,
,উফফ মা যাও তো! একটু ঘুমাতে দাও।
পাপিয়া বেগমের অবাক হলো, বলে কি মেয়ে?আজ তার বিয়ে অথচ বলছে আরেকটু ঘুমোবে।তিনি রাগী কন্ঠে বলল,
,অর্ণা! ওঠো দেখ কয়টা বাজে, তোমাকে তৈরি হতে হবে।অর্ণা ইনোসেন্ট ফেস করে বলল,
,এমন কেন করছো মা।আজকেই তো, তারপর তো এভাবে বলব না।প্লিজ আমি আরেকটু ঘুমায়!
এই বলে অর্ণা কাথার নিচে ঢুকে পরলো।অর্ণার কথা শুনে পাপিয়া বেগমের চোখ ভিজে গেল।এই তো আর মাত্র কয়েকঘন্টা। তারপর সারাজীবনের জন্য অন্যের ঘরে চলে যাবে। তখন কি এমন মধুর সুরে মা বলে ডাকবে?পাপিয়া বেগম মেয়ের মাথায় বিলি কেটে দিচ্ছে, আর কাঁদছে। মুখের মধ্যে জলের ফোঁটা পড়তেই চোখ খুলে তাকালো অর্ণা। মায়ের কান্নারত মুখ দেখেই,ছেৎ করে ওঠে বুকটা।ওঠে বসে পাপিয়া বেগম কে শক্ত করে জড়িয়ে ধরলো অর্ণা।চোখের পানি মুছে দিয়ে, আদুরে স্বরে বলল,
,কাঁদছো কেন মা?কি হয়েছে?
পাপিয়া বেগম ঠোঁট চেপে কান্না আটকালো।মুখে হাসি এনে বলল,
,না রে মা,কিছু হয়নি। এমনি! আচ্ছা এখন আমার কথা শুনে, ওখানে গিয়ে সবার কথা মেনে চলবে।তোমার শশুরের সেবা যত্ন করবে।কেউ যাতে কোনো ত্রুটি ধরতে না পারে। আর হ্যা মাঝে, মাঝে আমাদের ফোন দিয়ো।তোমরা ছাড়া তো আমাদের আর কেউ নেই।
মায়ের কথা শুনে অর্ণার চোখের কোণে জল এসে ভীড় জমালো। সত্যিই তো মাকে ছাড়া কাটবে কিভাবে বাকি জীবন?

পর্ণা তার রুমেই বসে আছে। খাটের উপর নীল রঙা জামদানী শাড়ি টা রাখা।তাতেই হাত বুলালো পর্ণা।এই শাড়িটা আদনান এনে দিয়েছিল। শপিংমলে প্রথমবার দেখেই পছন্দ করে ফেলে। পর্ণাকে দেখালে সে ও পছন্দ করে। তারপর কিনে নেই।এর আগে পড়া হয়নি শাড়িটা।মূলত অর্ণার বিয়ে উপলক্ষে কেনা।পর্ণা মলিন হাসলো।তার ইচ্ছে ছিল না বিয়েতে যাওয়ার। কিন্তু পরে ভাবলো,না গেলে বিষয়টা খারাপ দেখায়। সবাই কিনা কি ভাববে।পরবর্তী সিদ্ধান্ত নিল,বিয়েতে সে থাকবে,এবং খুব আনন্দ ও করবে সবার সাথে। তারপর নাহয় নিজেকে শেষ করার প্রস্তুতি নেবে।বিদায় বেলা আদনানের পছন্দের শাড়িটা পরেই নাহয় মৃত্যুটা হোক! ভালবাসা না পাক তাতে কি?ভালবাসা জড়ানো কাপড় পরেই শেষ বিদায় হবে।

পাপিয়া বেগম এলো পর্ণার রুমে। পর্ণা তখন শুয়ে ছিল। মাকে দেখেই ধড়ফরিয়ে ওঠে পরলো।ঐ ঘটনার পর ওনার সাথে আর তেমন একটা কথা হয়নি পর্ণার।পাপিয়া বেগম বেশ স্বাভাবিক ভাবেই বলল,
,এখনও শুয়ে আছিস,তৈরি হবি কখন?ওদিকে যে বেলা হয়ে গেছে। আর আদনান কই?তোর বাবা ফোন দিচ্ছে, ফোন ধরছে না। তোর সাথে কি কিছু হয়েছে?
পাপিয়া বেগম একটানা কথাগুলো বলে গেল।পর্ণা মায়ের দিকে অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলো। হুট করেই তাকে জরিয়ে ধরলো। পাপিয়া বেগম অবাক হয়ে গেল।মাথায় হাত রেখে নরম সুরে বলল,
,কি হয়েছে পর্ণা? তোমার কি শরীর খারাপ?
পর্ণা মায়ের বুকে মুখ গুঁজলো।বড়, বড় শ্বাস টেনে মায়ের গন্ধ শুকলো। ইশ্ কি আদুরে এই গন্ধ! পর্ণা কেন আগে এই মমতাময়ী স্পর্শ উপলব্ধি করেনি।এখন সময় শেষ হয়ে এসেছে।এখন বুঝলে ও কোনো লাভ হবে না। পর্ণা আরেকটু শক্ত করে ধরে বলল,
,না মা আমার শরীর ঠিক আছে। আর আদনান একটা কাজে আটকা পড়ে গেছে। আমাকে ফোন দিয়ে বলল তোমাদের কে বলে দিতে।
,সেকি বাড়িতে একটা অনুষ্ঠান আর অ থাকবে না।এটা কেমন কথা?
,আসলে কাজটা অনেক জরুরি। তাই বলল আমাকে ম্যানেজ করে নিতে। আচ্ছা মা তোমাকে একটা প্রশ্ন করি?
,হ্যা কর!
,আমাকে কি এখন ও ঘৃণা করো?
পাপিয়া বেগম ফিচেল হাসলো।পর্ণার দিকে তাকিয়ে বলল,
,মায়েদের কাছে সন্তানের দোষ চোখে পরে না। হোক সেটা কঠিন থেকে কঠিনতম।তবে হ্যা তুমি আমার এক সন্তান হয়ে অন্য সন্তান কে কষ্ট দিয়েছো। এটা আমি মেনে নিতে পারিনি।ছোট থেকে তোমাকেই বেশি ভালবেসেছি।যাতে কখন আঙ্গুল তুলতে না পারো,যে তুমি আমার মেয়ে নও।কিন্তু আমার ভালবাসায় মনে হয় খাদ ছিল। তাই তো যেই অপবাদ থেকে দূরে থাকতে চেয়েছি,সেটায় তুমি দিলে। তোমার কাছে হয়তো আমি তোমার আপন মা নয়।তবে আমার কাছে অর্ণা যেমন তুমিও তেমন।যাক গে সেসব কথা বাদ দাও।আর তারাতাড়ি তৈরি হয়ে নাও!
পর্ণার আর কিছু বললো না।শুধু হেসে বলল,
,এই শাড়িটা আমায় একটু পড়িয়ে দেবে মা!
পর্ণার কন্ঠ টা কেমন যেন শুনালো।পাপিয়া বেগম মুচকি হেসে ঘাড় কাত করে বলল,
,আচ্ছা ঠিক আছে। তুই ফ্রেশ হয়ে আয়, আমি পড়িয়ে দিচ্ছি।

বিয়ে শুরু হয়ে গেছে। বরযাত্রীরা গেটের সামনে দাঁড়িয়ে। তাদের ঘিরে রেখেছে অর্ণার কাজিন রা। গেটের টাকা নিয়ে হাসি ঠাট্টা হচ্ছে। কনে পক্ষের দাবি পঞ্চাশ হাজার টাকা। কিন্তু বরপক্ষ মানছে না।এই নিয়ে চলছে তর্কবির্তক। অর্ণাকে কিছুতেই সাজানো যাচ্ছে না।কেঁদে কে টে একসারা।পার্লারের মেয়েরা পড়েছে মুশকিলে।কিছুতেই অর্ণার কান্না থামছে। চোখ দিয়ে অনবরত পানি পরছে। পর্ণা এসে অর্ণার সঙ্গে বসে রয়েছে। সে ও অনেক বুঝিয়েছে কিন্তু লাভ হয়নি।পর্ণা দীর্ঘ শ্বাস ফেলল।এক গাছের ছাল অন্য গাছে লাগে না।কথাটা সঠিক। কই বিয়ের সময় পর্ণা তো এত কাঁদেনি মা-বাবার জন্য। অথচ অর্ণা ঠিকই সেটা করছে।
দেখতে, দেখতে সন্ধ্যা ঘনিয়ে এলো।অর্ণার কবুল বলার সময় হয়ে গেছে। কিন্তু অর্ণার মুখ দিয়ে কোনো শব্দ বের হচ্ছে না। হুজুর বারবার কবুল বলতে বলছে। অবশেষে অর্ণা আস্তে করে বলে দিল।

কান্নার আহাজারিতে ভারী হয়ে আছে পুরো কমিউনিটি সেন্টার। পাপিয়া বেগম জ্ঞান হারিয়েছে।আশোক সাহেব মেয়েকে জড়িয়ে ধরে নিরবে কেঁদে যাচ্ছে। কাঁদতে, কাঁদতে অর্ণার গলা ভেঙে গেছে। তবুও কান্না থামছে না।বাড়ির প্রত্যেকটা সদস্যের চোখে জল। প্রিয় মানুষ দূরে যাওয়ার বেদনা।গাড়িতে তোলার আগেই বাবার বুকেই জ্ঞান হারালো অর্ণা। তাহমিদ এতক্ষণ সবার কান্না দেখছিল।সত্যি বলতে তার ও খারাপ লাগছিল।যখন অর্ণা জ্ঞান হারালো,তখন বাবার বুক থেকে সরিয়ে নেয়া হলো তার আদরের মেয়েকে।তাহমিদ সবার সামনে কোলে তুলে গাড়িতে নিয়ে উঠালো অর্ণাকে।

চলবে,,,,,,,

গল্পটার রিচ দিন,দিন এতো কমে যাচ্ছে। আপনাদের কি বিরক্তিকর লাগছে? আর কয়েকটা পর্ব তারপর শেষ। ততদিন একটু কষ্ট করে রেসপন্স করবেন। আপনাদের অনুপ্রেরণাই আমার লেখার আগ্রহ বাড়ায়।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here