আমার তোমাকে প্রয়োজন পর্ব -০৬+৭

#আমার_তোমাকে_প্রয়োজন💖
#Writer_Tanisha_Akter_Tisha
#Part_6

কপি নিষিদ্ধ ❌

আহাদের কথায় রোজা ভয়ে ঢোগ গিলে।
রোজা অসহায় দৃষ্টিতে ঐশীর দিকে তাকায়,ঐশী ওকে চোখের ইশারায় রিলেক্স হতে বলে।

ওর সাথে কি কথা আছে?

সেটা নাহয় ওকেই বলি,রোজা আসো।
আহাদ ক্লাস থেকে বের হয়।

দোস্ত আমার ভয় লাগছে।

কিছু হবে না যা।

আচ্ছা।

রোজার আহাদের পেছনে পেছনে যায়।
আহাদ কেন্টিনে যেয়ে বসে,রোজা আহাদের সামনের চেয়ারটায় বসে।
রোজা ভয়ে ভয়ে বলে,
জ্বী স্যার বলুন।

ঐশী তোমার কি হয়?

ফ্রেন্ড।

ও তোমার ফ্রেন্ড হলে ওর হাসবেন্ড তোমার কি হবে?

দুলাভাই।

তাহলে আমাকে স্যার বলে ডাকছো কেন?

আহাদের কথায় রোজা থতমত খেয়ে যায়।

স্যার নয় আমাকে ভাইয়া বলে ডাকবে,ঠিক আছে?

রোজা উত্তরে মাথা নাড়ায়।

শুনো রোজা তুমি তো জানো আমি একজন মা’ফি’য়া,
আমার জীবনটা অনিশ্চিত,যেকোনো সময় আমার মৃ’ত্যু হতে পারে,আমার এই অনিশ্চিত জীবনের সাথে ঐশীর জীবন জড়িয়ে পড়েছে,আমি চাইলেও ওকে আমার জীবন থেকে সরাতে পারবো না,আমি ওকে অনেক ভালোবাসি,ও আমার দুর্বলতা,আমার শ’ত্রু’রা আমার দুর্বল জায়গায় আঘাত করতে চাইবে,আমার ঐশীর গায়ে আঘাত করতে চাইবে,ওকে আমার জীবন থেকে সরাতে চাইবে,যেটা আমি চাই না,তাই তোমাকে একটা কাজ করতে হবে।

কি কাজ?

তুমি তো সবসময় ওর সাথে চলা ফেরা করো তাই আমাকে ওর সমস্ত আপডেট জানাবে,তোমার চোখের সামনে থেকে আড়াল হতে দিবে না,যদি কোনো বিপদ হয় তাহলে আমাকে কল দিবে,এই নাও এটা আমার নাম্বার,কি বলেছি মনে থাকবে তো?

জ্বী ভাইয়া।

ঠিক আছে,এখন তবে ক্লাসে যাও,আর হ্যাঁ আমাদের মাঝের কথা ঐশী যেন জানতে না পারে।

ঠিক আছে।

রোজা চেয়ার ছেড়ে উঠে দাঁড়ায়,ক্লাসের দিকে হাঁটা শুরু করে,রোজা কিছুটা অন্যমনষ্ক হয়ে হাঁটছে,
না আহাদ ভাইয়া তো ভালোই,আমার সাথে কতো সুন্দর করে কথা বললো,আমি শুধু শুধু তাকে ভয় পাচ্ছিলাম,ঐশী কতো লাকি,ভাইয়া ওকে অনেক ভালোবাসে,ওকে কতো কেয়ার করে,ভাইয়া মা’ফি’য়া তো কি হয়েছে ওর প্রতি তো তার ভালোবাসার কোনো কমতি নেই,নিজের সবটা দিয়ে ওকে ভালোবাসে।
যদি আমাকেও কেউ এভাবে ভালোবাসতো।
ভাবনায় মশগুল থাকায় সামনে থেকে আসা ব্যাক্তিকে রোজা দেখতে পায় না,রোজা সে ব্যাক্তির সাথে স্ব জোরে ধাক্কা খেয়ে পরতে নিলে সে ব্যাক্তি ওকে ধরে ফেলে,রোজা চোখ তুলে সামনে তাকিয়ে দেখে সিয়াম ওকে ধরে দাঁড়িয়ে আছে।
রোজা চটজলদি সিয়ামের কাছ থেকে সরে আসে।
সরি।

ইটস ওকে,এর পর থেকে সাবধানে চলবে।
কথাটা বলে সিয়াম চলে যায়।

রোজা ওর যাওয়ার পানে তাকিয়ে রয়।
পেছন থেকে রোজার কাঁধে কেউ হাত রাখে,রোজা পেছনে ফিরে দেখে ঐশী ওর কাঁধে হাত রেখেছে।
কিরে এতক্ষণ কোথায় ছিলি?

না কোথাও না।

ওনার সাথে কি কি কথা হলো?

তেমন কিছু না আমাদের সাবধানে থাকতে বলেছে।

ওহ,এই কথা তো আমার সামনেও বলা যেতো,
যাই হোক চল শপিংমলে যাই।

এখন শপিংমলে কেন যাবো?

সে কি কাল যে আমাদের ভার্সিটিতে প্রোগাম আছে তা কি ভুলে গেছিস?

এই রে একদম ভুলে গেছি।

তুই তো ভুলাক্কার,চল শাড়ী কিনতে হবে।

হুম চল।

ওরা ভার্সিটি থেকে বের হয়ে রিকশায় চড়ে বসে,
কিছুক্ষণ পর শপিংমলে চলে আসে।
প্রত্যেকটা দোকান ঘুরে ঘুরে দেখছে কিন্তু কেনো শাড়ী পছন্দ হচ্ছে না,অনেক ঘুরাঘুরির পর শেষ মেশ একটা
শাড়ী পছন্দ হয়,লাল পাড়ের কালো শাড়ী।
ওরা লাল পাড়ের কালো শাড়ী কিনে,লাল আর কালো চুড়ি কিনে,সাথে ম্যাচিং করে কালো আর লাল স্টোনের ইয়ারিং কিনে,ব্যাস কেনাকাটা শেষ।

শপিংমল থেকে বের হয়ে ফুচকার স্টলে যায়,
দু প্লেট ফুচকা অর্ডার করে,কিছুক্ষণ পর ফুচকা চলে আসে ওরা গল্প করছে আর ফুচকা খাচ্ছে।
ফুচকা খাওয়া শেষে,লাচ্ছি শরবতের স্টল থেকে দুটো লাচ্ছি নিয়ে রিকশায় চড়ে বসে।
গল্প করতে করতে লাচ্ছি খেতে খেতে ওরা বাসায় চলে আসে,প্রথমে রোজাদের বিল্ডিং,রোজাদের বিল্ডিং থেকে একটু দূর রোজাদের বিল্ডিং থেকে চারটা বিল্ডিংয়ের পর ঐশীদের বিল্ডিং,ঐশী রোজাদের বাড়ির সামনে রোজাকে নামিয়ে দিয়ে নিজের বাসায় চলে আসে।

প্রতিদিনের মতো ঐশী টিউশন পড়িয়ে বাসায় চলে আসে,আজ অনেক ক্লান্ত লাগছিলো তাই শোয়া মাএ ঘুমিয়ে পড়ে।

ফোনের আওয়াজে ঘুম ভাঙ্গে ঐশীর,ফোন হাতে নিয়ে দেখে আহাদ কল করেছে,ওর মেজাজ বিগ’ড়ে যায়,
ও কল রিসিভ করে আহাদকে দেয় এক ঝাড়ি,
এই আপনার মনে কি কোনো দয়া মায়া নেই নাকি,
আমার সাধের ঘুমটা কেন নষ্ট করলেন?

ঐশীর ঝাড়িতে আহাদ থ হয়ে রয়।

কি হলো এখন কথা বলছেন না কেন?

সরি সরি আমি জানতাম না তুমি ঘুমিয়ে ছিলে জানলে ঘুম ভাঙ্গাতাম না,সরি জান।

হুম হয়েছে হয়েছে আর সরি বলতে হবে না,
বলুন কি বলবেন?

জান একটু বারান্দায় আসো না।

আবার!

প্লিজ জান আসো না তোমাকে একটু দেখবো।

দুটো মাস ধরে আপনি আমাকে জ্বা’লিয়ে যাচ্ছেন,এই রাতের বেলা আপনাকে কেন এখানে আসতে হবে,
আমাকে এতো দেখার কি আছে,হুহ আজ যাবো না বারান্দায়।

বারান্দায় আসবে না।

নাহ।

সত্যি তো?

হ্যাঁ সত্যি আসবো না।

ঠিক আছে তাহলে আমিই উপরে আসছি।

এই না না একদম না।

না বলছো কেন আমার তোমাকে দেখতেই হবে তুমি যদি না আসো তবে তো আমাকেই যেতে হবে।

আপনি আসিয়েন না আমি বারান্দায় আসছি।

ঐশী গায়ে ওড়না জড়িয়ে বারান্দায় চলে যায়।
আহাদ ওকে দেখে বুকে হাত দেয়।

হায় সব রুপেই তোমাকে কতো সুন্দর লাগে।

সুন্দর না ছাই,দেখা শেষ এবার যান।

সারাজীবন তাকিয়ে থাকলেও দেখা শেষ হবে না।

ঐশী কিছু বলবে তার আগেই আমেনার গলা শুনতে পায় আমেনা ওর রুমের দিকেই আসছে।

ওহ নো আম্মু আসছে,আপনি প্লিজ চলে যান।

যাবো না আজ মায়ের সাথে দেখা করবো।

এই একদম না,প্লিজ চলে যান।

যাবো না।

প্লিজ যান না এমন করছেন কেন।

আহাদ হেসে দেয়।
আচ্ছা যাচ্ছি।
আহাদ কানে ফোন নিয়েই গাড়ির দরজা খুলে গাড়িতে উঠে বসে,গ্লাস নামিয়ে ঐশীর দিকে ফ্লাইং কিস ছুঁড়ে “বায় জান” বলে কল কেটে গাড়ি স্টাট দিয়ে চলে যায়।
ঐশী ওর যাওয়ার দিকে তাকিয়ে রুমে চলে আসে,
আমেনাও দরজা খুলে রুমে আসে।

উঠে গেছো?

হ্যাঁ আম্মু।

হাত মুখ ধুয়ে খেতে আসো।

আচ্ছা।

আমেনা চলে যায়,ঐশীও হাত মুখ ধুয়ে রুম থেকে বের হয়,অামেনা ঐশীকে খাবার বেড়ে দিচ্ছে,ঐশী খাচ্ছে।
খাওয়া দাওয়া শেষে ঐশী ওর রুমে চলে আসে।
এতক্ষণ ঘুমিয়ে ছিলো তাই এখন আর ঘুম আসছে না,
ঘুম না আসায় পড়তে বসে,বেশ কিছুক্ষণ পর বই রেখে ঘুমিয়ে পড়ে।

সকালে,
ঐশী ঘুম থেকে উঠে সময় দেখার জন্য ফোন হাতে নেয়
স্ক্রিনে আহাদের নামের এসএমএস দেখতে পায়,
এসএমএস অপশনে ক্লিক করতেই আহাদের এসএমএস ভেসে উঠে,
“গুড মর্নিং জান,ঘুম ভালো হয়েছে?
আজ তো তোমাদের প্রোগ্রাম আছে তাই না,আজ সুন্দর করে সাজবে,আমার প্রিয়তমাকে যেন সবার থেকে বেশি সুন্দর লাগে,আচ্ছা এখন আর বির’ক্ত করবো না,তুমি রেডি হও,বায় ভার্সিটিতে দেখা হচ্ছে,
আর হ্যাঁ আই লাভ ইউ”।

ঐশী আহাদের এসএমএসের রিপ্লাই দেয় না,
ও রোজাকে কল দেয়,রোজা কল রিসিভ করে।
হ্যাঁ ঐশী বল।

উঠেছিস?

হুম মাএ ঘুম থেকে উঠলাম।

ঠিক আছে ফ্রেস হয়ে আমার বাসায় চলে আয়,
রেডি হয়ে একসাথে বের হবো।

আচ্ছা,আসছি আমি।

আচ্ছা।

ঐশী কল কেটে ওয়াশরুমে চলে যায়,ফ্রেস হয়ে এসে রুম থেকে বের হয়,আমেনা ওকে নাস্তা দেয়,ও নাস্তা খেয়ে রুমে চলে আসে,একটুপর রোজা ওদের বাসায় চলে আসে,আমেনা দরজা খুলে দেয় রোজা আমেনার সাথে কুশল বিনিময় করে ঐশী রুমে আসে।

ঐশী রোজাকে শাড়ী পরিয়ে দিয়ে নিজেও শাড়ী পরে ফেলে,মুখে হালকা মেকাপ করে,গায়ে গহনা জড়িয়ে চুল গুলো ছেড়ে দেয়,ব্যাস দুজন রেডি।
ঐশী আয়নায় ওদের দুজনের প্রতিচ্ছবি দেখে হেসে বলে,
রোজা আমাদের জমজ জমজ লাগছে।

হ্যাঁ রে আমাদের হাইট,ওয়েট,দেহের গঠন,চুলের লেন্থ,
চুলের কালার,গায়ের রং সব এক তার উপর আজ সব সেম সেম পরেছি জমজ তো লাগবেই।

মুখটাও সেম হলে ভালো হতো,আমরা জমজ বোন হতাম।

হুম,আচ্ছা চল বের হই।

হুম চল।

ওরা আমেনার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে বাসা থেকে বের হয়,মেইন রোডে আসতেই রিকশা পেয়ে যায়,
ওরা রিকশায় চড়ে বসে।

___

আজ আহাদের মন একদম ফুরফুরে কারো সাথে কোনো রাগারাগি করেনি খুব শান্ত হয়ে ভালোভাবে মনোযোগ দিয়ে কাজ করছে,স্টাফরা ওকে শান্ত দেখে খুশি হয়।
___

অনেকক্ষণ যাবত টিচারের লেকচার শুনতে শুনতে রোজা ঐশী বোর হয়ে গেছে তাই দুজন সিট ছেড়ে উঠে দাঁড়ায়,ভার্সিটির অন্য পাশে যেয়ে হাঁটছে আর গল্প করছে,গল্প করতে করতে ঐশীর গলা শুকিয়ে আসে,
ওর খুব পানির তৃষ্ণা পেয়েছে।

রোজা তুই এখানে বস আমি পানি খেয়ে আসি।

চল আমিও তোর সাথে যাই।

সমস্যা নেই তোকে কষ্ট করে যেতে হবে না তুই এখানে বসে আমার জন্য ওয়েট কর আমি যাবো আর আসবো
আর হ্যাঁ আমার ফোনটাও তোর কাছে রাখ।

আচ্ছা।

ঐশী রােজা ভার্সিটির পেছনের দিকটায় চলে এসেছে,
এখানে পানির ফিল্টার দোতলায়,ঐশী সিড়ি বেয়ে উপরে উঠছে,দোতলায় আসতেই পানির ফিল্টারের উপর চোখ পড়ে,ঐশী গ্লাসে পানি নিয়ে খেয়ে নেয়।
ঐশী পানি খেয়ে বের হওয়ার জন্য হাটা শুরু করে,
ফিল্টারটা একদম শেষের রুমের সাথে ছিল।
ঐশী হাটতে হাটতে প্রথম রুমের কাছে আসতেই কেউ ওর হাত ধরে হেঁচকা টান দিয়ে রুমের ভেতর নিয়ে এসে দেয়ালের সাথে আটকে ফেলে।
#আমার_তোমাকে_প্রয়োজন💖
#Writer_Tanisha_Akter_Tisha
#Part_7

কপি নিষিদ্ধ ❌

ঐশী হাঁটতে হাঁটতে প্রথম রুমের কাছে আসতেই কেউ ওর হাত ধরে হেঁচকা টান দিয়ে রুমের ভেতর নিয়ে এসে দেয়ালের সাথে আটকে ফেলে।

ঐশী চোখ তুলে তাকিয়ে দেখে রবিন ওর দিকে তাকিয়ে শয়তানি হাসি হাসছে।

রবিন!

ইয়াহ বেবি আমি।

ছাড়ো আমাকে।

কেন বেবি আমার ছোঁয়া ভালো লাগছে না।
রবিন ঐশীর গলায় মুখ ডুবাতে নিলে ঐশী ওকে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দেয়।

দরজা দিয়ে বের হওয়ার জন্য দরজার কাছে যেতেই রবিন দরজা লাগিয়ে দেয়।

বেবি এবার কিভাবে বের হবে।

রবিন সরে যাও আমাকে বের হতে দেও।

নো বেবি তা হচ্ছে না,বেবি আমি তোমাকে ভালোবাসি।

আমি তোমাকে ভালোবাসি না।

তাতে কি আমি তো ভালোবাসি,আর আমার তোমাকে কাছে চাই,খুব কাছে।

রবিন ওর কাছে এসে ওর হাত ধরে হেঁচকা টান দিয়ে নিজের সাথে মিশিয়ে নেয়,ঠোঁটে ঠোঁট ডুবাতে নিলে ঐশী ওকে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে ওর গালে চ’ড় বসিয়ে দেয়।

রবিনের রাগ উঠে যায়।
“তোর এতো বড় সাহস”।
বলেই ঐশীর গালে স্ব জোরে চ’ড় মা’রে,ঐশী ছিটকে পড়ে দেয়ালের সাথে মাথায় আ’ঘা’ত পায়,ঐশী কপালে হাত ছুঁয়ে দেখে কপাল থেকে র’ক্ত পড়ছে।

___

সবেমাত্র আহাদের গাড়ি ভার্সিটিতে প্রবেশ করে,
চোখে সানগ্লাস পড়ে গাড়ি থেকে বের হয় আহাদ।
আজ ও গার্ড নিয়ে আসেনি।

পকেটে হাত গুঁজে ফুরফুরে মেজাজে ঐশীর কাছে যাচ্ছে,স্টেজের থেকে অনেকটা দুরেই দাঁড়িয়ে আছে আহাদ,কোথাও ঐশীকে দেখতে পেল না,
ঐশীকে দেখতে না পেয়ে,ভার্সিটির অন্য পাশে যেয়ে ঐশীকে কল দেয়।

বেঞ্চের উপর বসে ফোন স্ক্রল করছিল রোজা,
ফোন বেজে উঠতেই চোখ পরে ঐশীর ব্যাগের উপর,
ঐশীর ফোন বের করে দেখে স্ক্রিনে “Mr. Headache” লেখা,রোজা বুঝতে পারে এটা আহাদের নাম্বার রোজা কল রিসিভ করে।

আসসালামু ওয়ালাইকুম ভাইয়া।

ওয়ালাইকুম আসসালাম,
ফোন তুমি ধরলে যে ঐশী কোথায়?

ভাইয়া ঐশী পানি খেতে গিয়েছে ফোনটা আমার কাছে রেখে গেছে।

ওহ,তুমি কোথায়?

ভার্সিটির পেছনের দিকটায়।

আচ্ছা আমি আসছি।

আহাদ কল কেটে হাঁটা শুরু করে।
একটু পরেই রোজার কাছে চলে আসে।

ঐশী এখনো আসেনি?

না ভাইয়া ও গেলো তো অনেকক্ষণ হলো এখনো আসেনি।

কি!

হ্যাঁ ভাইয়া ও গিয়েছে অনেকক্ষণ হয়েছে এখনো আসেনি,ফোনটাও আমার কাছে রেখে গেছে।

ও কোন দিকে গিয়েছে?

রোজা হাত দিয়ে দেখিয়ে বলে,ভাইয়া ঐ দিকটায়।

ঠিক আছে আমি যাচ্ছি।

ভাইয়া আমিও যাবো।

ঠিক আছে চলো।

ওরা ভবনটার দিকে যাচ্ছে।

___

রবিন ঐশীর চুলের মুঠি করে ওর সামনে দাঁড় করায়,
“তুই আমার গালে চ’ড় মে’রেছিস কোন সাহসে।”
বলে আবারও স্ব জোরে ঐশীর গালে চ’ড় মা’রে,ঐশী ছিটকে সামনে রাখা টেবিলটার সাথে আঘা’ত পায়,
ঐশীর কপাল বেয়ে র’ক্ত পড়ছে,ঠোঁটও কে’টে গেছে।

রবিন ওর কাছে এসে ওর বাহু জোরে চেপে ধরে দাড় করায়।
তোর খুব তেজ না,দু দুবার আমাকে রিজেক্ট করেছিস,
এতো তেজ কিসের হ্যাঁ,এই রুপের এতো তেজ তো, আজ এই রুপই তোর কাল হয়ে দাঁড়াবে,আজ তোর এমন অবস্থা করবো যে তুই মানুষের সামনে মুখ দেখাতে পারবি না।

রবিন ঐশীকে ধাক্কা দিয়ে মেঝেতে ফেলে দেয়,
ঐশী পিঠে,হাঁটুতে ব্যাথা পায়,ঐশী অনেক ক্লান্ত হয়ে পড়েছে,উঠার মতো শক্তি নেই ওর মাঝে।

আজ তোকে কেউ বাঁচাতে পারবে না,এখানে কেউ আসবে না,আজ তোর এই তেজ আমি ভে’ঙ্গে গুঁড়ো গুড়ো করে দিবো।

রবিন আমাকে ছেড়ে দাও প্লিজ।

হাহাহা।
রবিন শয়তানি হাসি হাসছে।

রবিন ঐশীর কাছে এসে এক হাঁটু গেড়ে বসে ঐশীর গাল জোরে চেপে ধরে বলে,
কি হলো,শেষ সব তেজ শেষ,মা’র চ’ড় মা’র আমাকে,
কি হলো চ’ড় মা’র ।

প্লিজ রবিন ছেড়ে দেও আমাকে।

আজ তোকে ছাড়বো না,তোর সব তেজ আমার পায়ের তলায় পিষে ফেলবো,আজ তোকে কল’ঙ্কিত করবো,
তারপর দেখবো তুই এই কল’ঙ্কিত জীবনে কিভাবে বেঁচে থাকিস।

রবিন ঐশীর আঁচল ধরে জোরে টান দেয়,ব্লাউজ ছিড়ে পিন গুলো ঐশীর কাঁধে ডে’বে যায়।

রবিন ওর বুকের উপর থেকে আঁচল সরাতে নিলে ঐশী আঁচল খাঁমচে ধরে।

রবিন আঁচল সরাতে চাইছে কিন্তু ঐশী যতোটা শক্ত করে ধরা সম্ভব ততোটা শক্ত করে ধরে রেখেছে।

রবিন ঐশীর দু হাত মেঝের সাথে চেপে ধরে গলায় মুখ ডুবাতে নিলে দরজা ভে’ঙ্গে রুমে প্রবেশ করে আহাদ।

আহাদ রবিনের কলার ধরে দাঁড় করায়,রোজা দৌড় ঐশীর কাছে আসে ঐশী রোজাকে জড়িয়ে ধরে অঝোরে কাঁদছে।

আহাদ রবিনের নাক বরাবর ঘু’ষি মা’রে রবিন ছিটকে দূরে গিয়ে পড়ে,আহাদ ওর কলার ধরে দাঁড় করিয়ে পুনরায় ঘু’ষি মা’রে।

কু*** বাচ্চা তুই কোন সাহসে ওর গায়ে হাত দিয়েছিস,
তুই জানিস ও কে,কি ওর পরিচয়,তুই কার গায়ে হাত দিয়েছিস জানিস তুই।

আহাদ রবিনের বুকে লা’থি দিয়ে বলে,
তুই আমার জানের গায়ের হাত দিয়েছিস,
ও আমার জান আমার জীবন,সি ইস মাই এভরিথিং।

রোজা ঐশীকে ধরে দাঁড়িয়ে আছে,ঐশীর শরীরে দাঁড়িয়ে থাকার মতো শক্তি নেই এখনো কপাল বেয়ে র’ক্ত পড়ছে।
ঐশী ক্লান্ত চোখে আহাদকে দেখছে।

আহাদ রবিনকে র’ড দিয়ে মা’রছে,রাগে আহাদের কপাল ঘাড়ের র’গ ফুলে উঠছে,শরীরের সমস্ত শক্তি দিয়ে রবিনকে মা’রছে।
রবিনকে মে’রে র’ক্তা’ক্ত করে ফেলেছে।

আহাদ রবিনের কলার ধরে টেনে রোজা ঐশীর সামনে আসে,আহাদ রোজাকে চোখ দিয়ে ইশারা করে ঐশীকে নিয়ে ওর পেছনে আসতে বলে।
আহাদ রবিনকে টেনে নিচে নিয়ে যাচ্ছে,
রোজা ঐশীকে নিয়ে নামছে।

আহাদ মাঠে এসে রবিনকে ছুঁড়ে মাটিতে ফেলে দেয়,
সেখানে উপস্থিত সবাই জড়ো হয়ে যায়।

আহাদ রবিনের বুকে পারা দিয়ে হুং’কার দিয়ে বলে,
“কোন সাহসে আমার ভালোবাসা গায়ে হাত দিয়েছিস।”
কথাটা বলেই রবিনের বুকে জোরে পারা দেয়,রবিনের মুখ থেকে র’ক্ত বের হয়ে যায়,রবিনের অবস্থা খারাপ উঠার বা প্রতি উত্তরে আঘা’ত করা শক্তি নেই ওর মাঝে নিথর হয়ে পড়ে আছে ও।

আহাদ পকেট থেকে ছু’ড়ি বের রবিনের সামনে এক হাঁটু গেঁড়ে বসে।
“এই চোখ দিয়ে আমার জানের দিকে নজর দিয়েছিস তাই না,তোর এই চোখই আমি রাখবো না”।
বলেই রবিনের চোখে ছু’ড়ি গেঁ’থে ওর চোখ উ’পড়ে ফেলে,রবিন জোরে চিৎকার দেয়।
সেখানে উপস্থিত সবাই ভয়ে কেঁপে উঠে।

রবিন ব্যাথায় আর্তনাদ করে অনেক কষ্টে বলে,
স্যার আমাকে ছেড়ে দিন স্যার,আমি আর কখনো ঐশীর দিকে চোখ তুলে তাকাবো না,আমাকে মাফ করে দিন,প্লিজ আমাকে মা’রবেন না,আমাকে ছেড়ে দিন।

এখন কেনো ক্ষমা চাইছিস,কেন আকুতি মিনতি করছিস,আমার জান ও তো তোর কাছে আকুতি মিনতি করেছিলো তুই কি ওকে ছেড়ে ছিলি,বল ছেড়ে ছিলি,তখন তো ঠিকই গায়ের জোড় খাঁটিয়েছিলি পুরুষত্ব দেখিয়েছিলি তবে এখন কেন আকুতি মিনতি করছিস,তুই ভাবলি কি করে আমি তোকে ছেড়ে দিবো,
আমার কাছে ভুলের কোনো ক্ষমা নেই,তুই আমার জানের গায়ে হাত দিয়ে অনেক বড় ভুল করে ফেলেছিস,এ ভুলের কোনো ক্ষমা নেই।

আহাদ পকেট থেকে গা’ন বের করে প্রথমে রবিনের দু হাঁটুতে গু’লি করে তারপর কপাল বরাবর গু’লি করে দেয়,রবিন মৃ’ত্যু বরণ করে।

সেখানে উপস্থিত সবাই শুধু তাকিয়ে তাকিয়ে দেখেছে কেউ আহাদকে বাঁধা দেওয়া মতো দুঃসাহস করেনি,
সবাই আহাদকে জমের মতো ভয় পায়।

আহাদ ঐশীর কাছে এসে,ঐশীকে একপাশ দিয়ে জড়িয়ে ধরে,সবার উদ্দেশ্যে বলে,
শুনে রাখো সবাই ঐশী আমার ভালোবাসা আমার জীবন,ওর দিকে কেউ চোখ তুলে তাকালে তাকে রবিনের থেকে আরো ভয়াবহ মৃ’ত্যু দিবো,
সো বি কেয়ার ফুল।
কোনো মেয়ের অসম্মান আমি স’হ্য করবো না,
যেই মেয়েদের গায়ে হাত বাড়াবে তাকেই জীবনের মায়া ত্যাগ করতে হবে।

ঐশীর চোখের সামনে সব কিছু অন্ধকার হয়ে আসছে,
ওর পক্ষে আর দাঁড়িয়ে থাকা সম্ভব হলো না ও আহাদের গায়ের উপর ঢলে পড়লো।

আহাদ ঐশীকে ধরে ফেলে,
জান,জান,চোখ খুলো জান।

ঐশীর সাড়াশব্দ না পেয়ে আহাদ ওকে কোলে তুলে নিয়ে গাড়ির দিকে যায়।

আহাদ পেছনে সিটে ঐশীকে ধরে বসে আছে,
ড্রাইভারের পাশের সিটে রোজা বসেছে,
ড্রাইভার গাড়ি স্টাট দেয়,বেশ কিছুক্ষণ পর ওরা আহাদের বাসায় চলে আসে,
আহাদ ঐশীকে কোলে তুলে রুমের দিকে যাচ্ছে,
ওকে বিছানায় শুইয়ে দিয়ে,ওর দিকে তাকিয়ে আছে।

রোজা দরজায় দাঁড়িয়ে ওদের দেখে আর রুমে প্রবেশ করে না নিচে চলে যায়।

ঐশীর ঠোঁটে,কপালে,হাতে,কাঁধে র’ক্ত দেখে আহাদের রাগ উঠে যায়,আহাদ নিজের রাগ কিছুটা কন্ট্রোল করে নেয়,ঐশীর পাশ থেকে উঠে ড্রেসিং টেবিলের ড্রয়ার থেকে মেডিসিনের বক্স নিয়ে ঐশীর কাছে আসে।
খুব সাবধানে ঐশীর ক্ষত গুলো পরিষ্কার করে অয়েন্টমেন্ট লাগিয়ে দিচ্ছে।

#চলবে
#চলবে

[

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here