আমার হৃদমাঝারে তুমি প্রিয় পর্ব ২

#আমার_হৃদমাঝারে_তুমি_প্রিয়
#পর্বঃ২
#Sohana_Akther

সামনের দিকে তাকিয়ে দেখলাম সকালের ঐ ছেলেটি যার সাথে ধাক্কা খেলাম । সে এখনো দেখেনি আমায় । তার পাশের জন তার কানে কি বলাতে সে আমার দিকে চোখ তুলে তাকালো , তাকিয়েই আবার ঐ শয়তানি হাসিটা দিলো । রাগে আমার সারা শরীর জ্বলে ওঠলো । আমি তার টেবিলের সামনে যেয়ে বললাম,

” কি ব্যাপার আপনি এভাবে হাসছেন কেনো ” ?

” এই যে মিস আমি হাসবো না কাঁদবো তা কি আমি আপনাকে জিজ্ঞেস করে করব নাকি । আর আমি কখন আপনার দিকে তাকিয়ে হাসলাম ” ?

” এই যে দুই মিনিট আগেই আপনি আমায় দেখে হাসলেন ” ।

” প্রমাণ কি যে আমি আপনার দিকে তাকিয়ে হাসছি ” ।

” প্রমাণ আমি নিজেই , আমি নিজেই আপনাকে হাসতে দেখেছি ” ।

” তার মানে তুমি আমার দিকে তাকিয়ে ছিলে , রাইট ” । কথাটি বলেই বাকা হাসলো নিহান ।

তার কথা শুনে একটু দমিয়ে গেলাম আমি , তখনি তার পাশ থেকে একটি মেয়ে বলে ওঠলো ,

” এই মেয়ে নাম কি তোমার ” ? সিনিয়রদের সাথে কিভাবে কথা বলতে হয় জানো না তুমি । কি নাম তোমার বলো ” ?

তার ধমক শুনে একটু দমে গেলাম আমি , আমি উপরে উপরে যতোই সাহসিকতা দেখাই না কেনো ভিতরে একটু ভীতু টাইপেরই আমি । কাপা কাপা কন্ঠে বললাম ,

” নিরা নাম আমার ” ।

” কোন ইয়ারে পড়ো তুমি ” ?

” অনার্স ১ম বর্ষে ” ।

” এই তুমি এইটুকু মেয়ে নিহানের সাথে উচু গলায় কথা বলো । নেহায়তি মেয়ে বলে বেচে গেলে নাহলে কি হাল যে তোমার হতো তা তুমি কল্পনাও করতে পারবে না ” ।

ঠিক তখনি ওনি মেয়েটিকে চুপ করিয়ে বললেন ,

” উফফ রিনি কি যে শুরু করছিস তুই থাম এবার বাচ্চা এটকা মেয়ে তার উপর চোখে ঠিকমতো দেখে না তুই তার লাগছিস ” এই বলে ওনি ও তার বন্ধুরা সবাই হাসতে লাগলো ।

আমার আবারও অনেক রাগ ওঠতে লাগলো , মনে মনে তাকে সায়েস্তা করার কথা ভাবছি । তোমাকে তো আমি দেখে নিবো সোনার চান্দু হুহহহ । ঐখানে আর দাড়িয়ে না থেকে রিয়া, প্রিয়াকে নিয়ে চলে আসলাম । মনটাই আজ খারাপ হয়ে গেলো তাই আর ক্লাস না করে বাড়িতে চলে আসলাম । এসেই লম্বা একটা শাওয়ার নিয়ে খাটে শুয়ে পরলাম । ঠিক তখনি টেবিলে আমার ব্যাগের দিকে নজর পরলো আর বেলী ফুলের কথা মনে পরলো । ওঠে ব্যাগ থেকে বেলী ফুলটি নিয়ে আবার শুয়ে পরলাম , আর ভাবতে লাগলাম কে হতে পারে ঐ ছেলেটি । আমাদের ভার্সিটিরই কেও তা নিঃসন্দেহে কিন্তু কে আদো কি তার দেখা পাবো ।

রাতে ঘুমানোর সময় একটি কল আসলো , প্রতিদিনই এই নাম্বার থেকে কল আসে । জানি না কে , কল দিয়ে কিছুই বলে না শুধু কয়েক সেকেন্ড চুপ থেকে কল কেটে দেয় । প্রথম প্রথম একটু বিরক্ত হলেও কেনো যেনো এখন আর বিরক্ত লাগে না । মনের অজান্তেই প্রতি রাতে এই কলটির অপেক্ষায় থাকি । এতকিছু ভাবতে ভাবতে কখন যে ঘুমিয়ে গেলাম টের এ পেলাম না। সকালে মায়ের ডাকে ঘুম ভাঙলো ।

” এই নিরা ভার্সিটিতে যাবি না অনেক লেইট হয়ে গেলো , দেখ কয়টা বাজে ওঠে পর জলদি ” ।

মায়ের ডাকে ধরফরিয়ে ঘুম থেকে ওঠলাম আমি। ঘরিতে তাকিয়ে দেখি অলরেডি আটটা বাজে নয় টায় ক্লাস আমার । তাড়াতাড়ি রেডি হয়ে না খেয়েই ভার্সিটির জন্য রওনা দিলাম । মোবাইল হাতে নিয়ে দেখি রিয়ার কতোগুলা কল। তাকে কলব্যাক করার সময় নেই , ক্যাম্পাসে যেয়েই কল করবো ।

নয় বাজার পনেরো মিনিট আগে ক্যাম্পাসে যেয়ে পৌঁছালাম । যেয়ে দেখি রিয়া আর প্রিয়া বাহিরে দাড়িয়ে আছে । তাড়াতাড়ি ওদের কাছে গেলাম,

” সরি সরি অনেক লেইট হয়ে গেলাম আজকে চল আর লেইট না করে ক্লাসে যাই ” ।

গেইটের ভিতরে ঢুকে ডানপাশে তাকিয়ে দেখি ভার্সিটির ক্রাশ নিহান চৌধুরী ও তার বন্ধুরা পার্কিংর এর জায়গায় দাড়িয়ে আছে তার ওপর তার ঐ মেয়ে বন্ধুটা একদম তার গা ঘেষে দাড়িয়ে আছে । তাদের থেকে চোখ সরিয়ে সামনে পা বাড়ালাম ঠিক তখনি নিহানের বন্ধুদের মধ্যে একজন নাম ধরে ডাক দিল ,

” এই যে মিস নিরা ও তার টিম এই দিকে আসো ” ।

আমরা সবাই তাদের সামনে গিয়ে দাড়ালাম , নিহান তখনো রিনির সাথে কথা বলায় ব্যাস্ত ।

” জি ভাইয়া বলেন কোনো প্রয়োজন ” ।

” প্রয়োজন তো বটেই , ভার্সিটির নিউ কামার্স তোমরা । তোমাদের রেগ না দিলে কি হয় ” ।

রেগের কথা শুনে গা কেপে ওঠলো , শুনেছি সিনিয়ররা অনেক কঠিন রেগ দেয় নাকি । এতদিন তো ঠিকি ছিল আজ হঠাৎ রেগ দিতে আসলো কেনো এসব মনে ভাবতে লাগলাম তখন নিহান বলে ওঠলেন ,

” থাক না আকাশ এই পিচ্চি কে তুই কি রেগ দিবি দেখ না রেগের নাম শুনেই তার হাঁটু কাপা শুরু করছে ” । এই বলে তারা সকলে হাসতে লাগলো ।

আমিও আমার রাগ সঞ্চয় করতে না পেরে বললাম,

” কি করতে হবে বলেন আমি তা করতে রাজি আছি ” ।

আমার কথা শুনে নিহান মিটিমিটি হাসছে । আমি সেই দিকে ভ্রুক্ষেপ না করে আবার বললাম ,

” কি করতে হবে জলদি বলেন আমাদের ক্লাস আছে , আপনাদের মতো এখানে আজাইরা বসে আড্ডা দেই না”।

আমার কথা শুনে প্রিয়া বললো ,

” নিরা তুই চুপ কর বোন এইভাবে কথা বললে দেখবি তোকে কোনো কঠিন জিনিস করতে বলবে যা তুই না করতে পারিস ” ।

প্রিয়ার কথা কানে তুললাম না আমি , ওদের দিকে তাকাতেই তার আরেক বন্ধু নাম রিজভী সে বললো ,

” তোমাকে ঐ যে একটি ছেলে দেখছো না ব্লু শার্ট পরা তাকে যেয়ে প্রপোজ করতে হবে এবং তার গালে কিস করতে হবে , কি বলো পারবে ” ?

তার কথা শুনে আমি কিছুটা ভরকে গেলাম নজর দিলাম নিহানের উপর হঠাৎ সে তার চোখ মুখ শক্ত করে রিজভী কে বললো …..

চলবে ..

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here