আমার_শুধু_তুই পর্ব ৪

#আমার_শুধু_তুই
#লেখিকা_তামান্না(আল রাইয়ান)
#পর্ব_০৪

পার্সেল নিয়ে ভেতরে এলাম খুলতে গিয়ে।
বর্তমানে……
—“আদ্রুপি উঠো, আদ্রুপিইই।
আহিরার ডাকে ঘুম ঘুম চোখে উঠে বসি। এতক্ষণ ধরে যে ভাবনায় মেতে ছিলাম। চারপাশের অবস্থা প্রায় ভুলেই গিয়ে ছিলাম।
অতীতের স্মৃতি শেষ হয় না ঘাঁটলে আরো অনেক অজানা গল্প বের হয়।
হয়তো সেইভাবে আমার স্মৃতিটাও আবারো বলা হবে। আবারো ভাবনায় মেতে যাওয়া হবে।

আহিরাকে টেনে পাশে বসিয়ে বললাম।
—“কি হয়েছে আমার পিচ্চি বোনটার?

—“আপ্পি বাহিরে একটা লোক এসেছে।
আহিরার কথায় ভয়ে কলিজা ধুক করে উঠল। এখন কে আসতে পারে?
আমি মাথা নাড়িয়ে আহিরাকে রুমেই বসতে বললাম।
বাহিরে গিয়ে বড়জোড় অবাক হয় এই তো ফাহিম। যার সাথে আমার আলোক হওয়ার কথা ছিল কিন্তু ঠকামির কারণে ভেঙ্গে যায়।

ফাহিম আমাকে দেখে নিজের সানগ্লাস খুলে মুচকি হাসল। আজ তার হাসিটাও যেনো খুব মিষ্টি লাগছে। এতদিন পর সেই হাসি সেই রুপ কিন্তু পরিবর্তন এসেছে বেশ। মুখে দাঁড়ি উঠেছে, গালে একটা তিলও দেখা যাচ্ছে। আগে খুব একটা ঘোরভাবে তাকে দেখি নি। আজ দেখে মনের আনন্দে নেচে উঠতে মন চাচ্ছে না।

লেখিকা_তামান্না(আল রাইয়ান)

—“প্রায় দুইবছর পর আবারো দেখা হচ্ছে তাই না?
আমি সংকোচতার মত মাথা নিচু করে হাত মোচড়াচ্ছি। ফাহিম আমার ফেস দেখে না জানি কি বুঝলো। সে আমায় অফার দিল।

—-“আদ্রু যদি কিছু মনে না কর আমার সাথে কফিশপে যাবে। এখন সন্ধ্যা বেলা সিজনটাও ভালো চলছে। আশা করি আমার কথায় আমি ব্যর্থ হব না।

—“না না আমি যাব। কিন্তু এখনই বেরুব? মানে আমি চেঞ্জ…..
ফাহিম আমাকে পরখ করে এতে প্রথমে অস্বস্তি লাগল।
পরে তার চাহনি নিরাপত্তাময় হওয়ায় স্বাভাবিক দৃষ্টি ফেলে মুচকি হাসল।
তার হাসিতে আমার মুখেও হাসি ফুটে উঠল। তাকে বসতে বলে রুমে চলে আসলাম।

আহিরা উঠে এসে বলে।
—“কে আপ্পি উনি?

—“কেউ না ফ্রেন্ড তুমি স্টাডি কর। আর আম্মু কিচেনে আছে কিছু লাগলে আম্মুকে বলবে কেমন?
আহিরা মাথা নেড়ে পড়তে বসে। আমি ফ্রেশ হয়ে থ্রিপিচ পড়ে রেডি হয়ে নিলাম। কিচেনে এসে আম্মুকে বললাম ফাহিম আসছে। উনিও বেশ অবাক হলেন সাথে অনুতপ্ত ও।
আগে শুধু এক ভুলের কারণে ফাহিমকে আমরা বিতাড়িত করেছিলাম।
কিন্তু ভুলটা সে করে নি করেছিল আয়মান।
সব জাল সে খুব সাবধানতার সাথে চালছে।
যেনো আমি আর আমার পরিবার একটুও বুঝতে না পারি।

আম্মু ড্রাইনিং রুমে এসে ফাহিমের সাথে কুশলবিনিময় করল। পরে আমরা বেরিয়ে গেলাম।

আমরা গাড়িতে উঠে রওনা দিলাম।
গাছের ডাল সরিয়ে আড়াল থেকে বের হল চশমা পরিহিত এক বৃদ্ধ লোক। সে দেখে শয়তানি হাসি দিল। যেনো সে কোনো অঘটনের অপেক্ষায় আছে।
তারই মাঝে একজন কল করল আয়মানকে।

____

আয়মান ক্লান্তি অনুভব করায় সোফায় ঘুমিয়ে যায়। ফোনের রিংটোন বার বার বেজে উঠায় ঘুমের ঘোরে জেগে উঠে।
কানে কল ধরাতে অপর পাশ থেকে বলে।

—-“স্যার ম্যাম একজন ছেলের সাথে বের হয়েছে।
আয়মানের চোখ পুরোপুরি খুলে যায়। লাল আভা ফুটে উঠে চোখের কার্নিশে। কথাটা তার কানে তিক্ততা সৃষ্টি করে দিল।

—“হুম কোথায় গেছে ফলো করে জানা।
কল কেটে দিল।
অপর পাশের লোকটা আয়মান এর কথায় গাড়িতে উঠে পড়ল। আয়মান ফোনটা শক্ত করে চেপে ধরে উঠে দাঁড়ায়।
ফোনের মধ্যে লকের মধ্যে আদ্রুিয়ার ছবির মধ্যে চেয়ে থেকে বলে।

—“তুই আমার। আমাকে ছাড়া অন্য কারো সাথে ঘুরতে যাওয়া তত দূর মেশাও এলাউ করি না। সেখানে তুই অন্য ছেলের সাথে বের হলি।
বাহ্ তোর সাহসের দাম দিতে হবে।
বেশি দেমাগ বুঝিয়েছিস তুই আর তোর পরিবার।
এবার আমার পাল্লা তোদের নায্য শাস্তি দেওয়া।
তোকে নিজের করব নিজের করেই সারাজীবন রেখে দেবো। এটাই তোর শাস্তি হবে।
বাঁকা হেসে সে ফ্রেশ হয়ে নে।

শার্টের কলার ঠিকঠাক করে বডি সেন্ট মেখে বেরিয়ে যায়। ব্লেজার সাথে নে নি একদম হিরো লুক দিয়ে বের হলো। গাড়িতে উঠে বসে। কল দিল সেই ইনর্ফমারকে।
ইনর্ফমার কল উঠিয়ে জি স্যার বলে।

—“কোথায় ওরা?
গম্ভীর স্বরে জোরে শ্বাস নিয়ে বলে।

—” স্যার একটা প্রব্লেম হয়েছে।
কাঁপিত স্বরে বলে।
—“কি প্রব্লেম গাড়ি সাইডে পার্ক করে বলে।
—“আ…আসলে স্যার ম্যাম এর গাড়িটা হঠাৎ অদৃশ্য হয়ে গিয়েছে।

—“What?????
কি বলছিস এসব? মাথা ঠিক আছে! আশে পাশে ভালো করে দেখ।

—” স্যার অবিশ্বাস্য কিন্তু এটাই সত্য। যখন আমি গাড়ির ঠিক কাছাকাছি চলে আসি। তখন কোথার থেকে এক বড়জোড় রশ্নি আমার গাড়ির গ্লাসের উপর পড়ে। এতে আমার চোখ অফ হয়ে যায় আমি গাড়ি ডান সাইডে নেওয়ার বদলে বাম সাইডে নিয়ে ফেলি। গাড়ি ব্রেক হয়ে যায়।

—“তোর অবস্থা কেমন? আমাকে এখনই এড্রেস পাঠা।
—“ওকে স্যার নেন পাঠিয়েছি।

আয়মান এড্রেস মোতাবেক চলে আসে। এসে তো সেই অবাক হয়ে যায়। গাড়িটা ব্রেক হওয়ায় উল্টে গেছে। সে জোরে জোরে ডাক দিল ইনর্ফমার ছেলেকে।

—” স্যার আমি এখানে! প্লিজ হেল্প……
কাতর স্বরে বলে।

আয়মান দেখতে ফেল বাম সাইডের ড্রাইভিং সিটে বেল্ট আঁটকে গেছে। এতে ছেলেটার মাথা রাস্তায় লেগে আঁচে গেল। বিন্দু বিন্দু রক্ত জমে গেল।
আয়মান এসে তার মাথা দেখে নিজের পকেট থেকে রুমাল বের করে বেঁধে দিল।

—-” অপেক্ষা কর তোর কিছু হবে না।
আয়মান উওেজিত হয়ে তাড়াতাড়ি এম্বুলেন্সের কনফার্মারকে কল দিল।

—“Yes how can i help you, Sir?

—“Listen i send you the road name. quickly send here the ambulance with doctor emergency condition.

—“Ohh ok, Sir. কলটা হোল্ড করে রিসেপশন্সিট এম্বুলেন্সের ড্রাইভারকে বলল। সাথে ডক্টরদের বলে।
ডক্টর আয়মান এর নাম শুনতেই বাকি পেসেন্টদের কাছে অন্য ডক্টর পাঠিয়ে নিজেরা এম্বুলেন্সে উঠে বসে।

রিসেপশন্সিট কল ধরে আয়মানকে বলে।

—“Sir wait for 20mins. The ambulance within there.

আয়মান ওকে বলে কল কেটে ছেলেটার পাশে আসল। গাড়িটার দরজা খুলে সিটবেল্ট আলগা করতেই সিটবেল্ট খুলে যায় সাথে ছেলেটা বেরিয়ে আসে।

আয়মান তাকে ধরে বের করে কিছুটা দূরে গাছের নিচে এসে বসিয়ে দিল। নিজের গাড়ি থেকে পানি এনে খাওয়ায় দিল।
—” ধন্যবাদ স্যার।
কাঁপিত কণ্ঠে বলে।

তার কথায় আয়মান বেশ রেগে যায়। সে তার গাল ধরে বলে।
—“কিসের ধন্যবাদ হ্যাঁ? তুই আমার বিশ্বস্ত একজন মানুষ, ভাই দোস্ত। তোর কিছু হলে আমি সবকিছুই নষ্ট করে দিতাম।
এখনই এম্বুলেন্স চলে আসবে।

—“ভাই আমি ম্যামকে দেখে রাখতে পারলাম না।
…..হুস হুস কিছু বলতে হবে না। সে আমার কলিজা আমার কলিজা কে কেঁড়ে নেওয়া কোনো তৃতীয় ব্যক্তির জন্যে সম্ভব না।
তুই তোর চিন্তা কর। তোর ম্যাম কে খুঁজতে যদি পাহাড় পর্বতও এক করতে হয় তাহলে সেটাও করব। তাও তোর ম্যামকে খুঁজে বের করবই।

ছেলেটা রক্তেমাখা হাসি দিল। তার পুরো গালে রক্ত লেগে আটাময় হয়ে গেছে। আয়মান পানি দিয়ে ছেলেটার মুখ সযত্নে মুছে দিল।
তৎক্ষণাৎ এম্বুলেন্স ও আসায় ছেলেটাকে মেডিক্যাল এ পাঠিয়ে গাড়িটার মধ্যে সিসি ক্যামেরা খুঁজতে থাকে।
যখন ওভারডিলে হাত রাখে তখন ছোট scrip নিচে পড়ে।
সে সেটা উঠিয়ে ফোনের পিছে লাগিয়ে নিজের গাড়িতে চার্জ দেই।
সাথে সাথে ঘটনাটা কেমন হলো তা ফোনে দেখা দিতে থাকে। সব দেখে আয়মান অবাক হয়ে বলে।

—“এ তো……

চলবে…?

(ফ্লাশ ব্যাক ফেলেন অর্ধেক বাকি অর্ধেক না হয় আদ্রিয়া নিজেই আবার বলবে। এখন না হয় গল্পের আদ্রিয়া কোথায় হারিয়ে গেল সেটা খুঁজে বের করা যাক নেক্সট পর্বে। আচ্ছা আয়মান কি পারবে তার আদ্রিয়াকে খুঁজে বের করতে?
হেপি রিডিং)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here