ইঁচড়েপাকা এবং সে❤️ পর্ব ৬+৭

#ইঁচড়েপাকা_এবং_সে❤️
#Ruhi_Jahan_Maya

পর্বঃ০৬

আয়নার সামনে, সাজগোছ করছে মারিয়া, গোলাপি রঙের জামদানীতে তাকে খুব মানিয়েছে। চোখে কাজল পড়ার সময় মারিয়া দেখলো পিছনে নাছিম দাঁড়িয়ে আছে। মারিয়া হালকা হেসে বললো…

” কেমন লাগছে ভাইয়া, আমাকে?”

” ভালো। ”

মারিয়া ঠোঁট উল্টিয়ে বললো,

” শুধু ভালো? ”

নাছিম, বোনের কপট রাগ দেখে হালকা হাসলো, মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে বললো…

” খুব ভালো লাগছে, গোলাপি রানী। ”

মারিয়া, দাঁত বের করে হাসলো, ফরিদ রুমে ঢুকে বললো…

” ভাইয়া পাত্র পক্ষ চলে এসেছে। ”

” তাই নাকি? চল ড্রইং রুমে যাই। ”

নাছিম রুম থেকে বের হলো, সাথে ফরিদ ও মারিয়া ফরিদ কে পিছু ডাক দিয়ে বললো…

” এই ছোট ভাইয়া? ”

ফরিদ ব্যাস্ত ভঙ্গিতে বললো..

” কি বল?”

“আমাকে কেমন লাগছে, বললে না যে?”

ফরিদ মুখ বাকিয়ে বললো…

” রাক্ষসী রাণী কট কটির মতো। ”

বলেই ফরিদ হো হো করে হাসলো, মারিয়া রাগে, বিড় বিড় করছে। ওরিন হাসি থামিয়ে বললো…

” তুষার তোর বিটকেল হবু বর চলে এসেছে। ”

বলেই আবারও ফরিদ গা দুলিয়ে হাসতে হাসতে রুম থেকে প্রস্থান করলো৷

ড্রইং রুমে, তুষার এবং তার পরিবার মারিয়াকে দেখতে এসেছেন। তুষারে এখনো বিশ্বাস হচ্ছে, না সে মারিয়া কে দেখতে এসেছে। মারিয়ার দু ভাই কে মানানো তা বড্ড কষ্ট করছিলো। এট লাস্ট তারা দুজন পেরেছে। সবার সম্মতিতে মারিয়া, তুষারের বিয়ে হবে শুধু কিছু দিনের পালা।

মনে এক গামলা টেনশন নিয়ে, তুষার এদিকে সেদিন তাকাচ্ছে। মারিকে দেখার চাপা উত্তেজনা কাজ করছে তার মনে। ওরিদ বুকে হাত দুটো ভাজ করে, তুষার কে ফিস ফিস করে, বললো…

” মারিয়া কে দেখবে? ”

তুষার আন মনে বললো…” হুম। ”

ফরিদ মুখ ফুলিলে চাপা হাসলো। তুষার ফরিদ কে দেখে থতমত খেয়ে গেলো। ফরিদ তুষারে পিঠে হালকা চাপর মেরে বললো…

” কুল ব্রো! কিছুক্ষণ পরই আমাদের বোন আসবে। ”

———-

মারিয়া ধীরে ধীরে করিডোর পেরিয়ে ড্রইংরুমে এলো। সবাই এক নজরে তার দিকে তাকিয়ে আছে। আবার কেউ প্রিয়তমা কে অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে, মুগ্ধ হচ্ছে। মারিয়ে, তুষারের চোখ পানে এক নজর তাকিয়ে, চোঁখ নামিয়ে ফেললো। তুষার প্রসন্নতার হাসি দিলো।

মারিয়া সবাইকে, সালাম দিলো। মাঝ বয়ষী একজন ভদ্রমহিলা বলেন,

” বসো মা। ”

মারিয়া মহিলার পাশে গিয়ে বসলো। মহিলা মারিয়ার মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে বললেন…

” মাশাল্লাহ। আমার ছেলের পছন্দ ভালো, বলতেই হয়। ”

মারিয়া, লজ্জা পেলো। এক জন ভদ্রলোক বললেন।

” নাছিম তোমার বোন কে আমাদের খুব পছন্দ হয়েছে। মারিয়া কে, ছেলের বউ হিসেবে পাওয়া আমাদের সৌভাগ্যবই কি! আমরা কি কোন ভালো ডিসিশনে যেতে পারি? ”

নাছিম বিনয়ের সাথে হাসি দিয়ে বললোন…

” অবশ্যই আংকেল। তবে আমার দাদির মতা মত টাও জরুরি। ”

এতোক্ষণ নাছিমের, দাদি শেহতাজ বেগম চুপ করেই ছিলেন৷ এখন কথা বলার সুযোগ পেয়েছেন। সবাই তার মতামতের অপেক্ষায় আকুল হয়ে আছে !

শেহতাজ বেগম, ক্ষানিকটা ভাব নিয়ে, বললো…

” এই পোলা, উমাইন্না মুরগীর মতো বসে আছো ক্যা?”

তুষার ক্ষানিকটা ঘাবড়ে গেলো। শুকনো ঢোক গিলে তুষার দাদির কথা মনোযোগ দিলো, দাদি কর্কশ ভাষায় বললেন…

” তুমি উমাইন্না মুরগী হইলে, আমার পুতি পুতনি, উমাইন্না ওইবো!”

তুষার অবাক হয়ে তাকিয়ে, রইলো। মারিয়া তুষারের রিয়েকশন দেখে, মুখ টিপে হাসলো।

” আমার নাতিনের লগে বহো (বসো) বহো দিহি? কেমন লাগে দিহি.. ”

তুষার হালকা হেসে, দাদির কথা মতো, মারিয়ার পাশে এসে বসলো। দাদী খুশি হয়ে বললেন..

” বাহ বাহ ভালা মানাইছে। ”

শেহতাজ বেগমের, কথা শুনে সবার মুখে হাসি ফুটলো। তুষারের পরিবার আংটি পড়িয়ে, এবং ঠিক বিশ দিন পর বিয়ের ডেট দিয়ে বিদায় নিলেন সবাই।


মনে মনে প্রশান্তি নিয়ে বিছানায়, মারিয়া শুয়ে আছে। ঠুক ঠুক লাঠির শব্দ পেয়ে, বুঝতে পারলো, দাদী রুমে আসছেন। মারিয়া চোখ বুজে শুয়েই রইলো। শেহতাজ বেগম বিছানার, পাশে বসে মারিয়ার চুল গুলোয় হাত বুলিয়ে দিয়ে বললেন…

” ঘুমাইয়া গেছিস নাকি?”

” নাহ.. দাদী। তোমার সাথে একটু ঝগড়া করতে, মন চাইছে। ”

শেহতাজ বেগম, ছোট ছোট করে বললেন..

” আমি কি করছি? ”

” এমন একটা সিনক্রিয়েট না করলেই পারতে। ”

” তলে তলে ফিরিত (প্রেম) করছ। আমি জানি! ”

মারিয়া জিব্বাহ কাটলো, দাদিও জেনে গেছে। শেহতাজ বেগম মারিয়ার মাথায় হাত বুলিয়ে আদুরে কন্ঠে বললেন…

” তোদের বাবা মার এক্সিডেন্ট যখন হয়েছিলো তখন নাছিমের বয়স ষোল বছর। তুই, তুষার তখন ছোট ছিলি, কত কষ্ট করে তোদের বড় করেছি। যার তার হাতে তুলে দেওয়ার জন্য নাকি? ”

মারিয়া স্তব্ধ হয়ে শুয়ে দাদির কথা শুনতে লাগলো, চোখ দিয়ে, কয়েক ফোটা জল গরিয়ে বিছানার চাদরের সাথে মিলিয়ে গেলো। মারিয়া দাদির হাত পেঁচিয়ে ধরে বললো…

” তুষার খুব ভালো ছেলে দাদি। ”

দাদি মারিয়ার মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে বললো…

” জানি রে মেয়ে। ” মোরগটা উমাইন্নার মতো হলেও খুব ভালো মোরগ। ”

মারিয়া দাদীর কোলে মাথা রেখে , ঠোঁট দুটো প্রশারিত করে হাসলো।


” স্যার, আসবো?”

নাছিম মুখ তুলে তাকিয়ে, দেখলো। আয়শা এসেছে,

” আসুন। ”

বলেই আবার নাছিম নিজের কাজে মন দিলো। আয়শা ভেতরে ঢুকলো, নাছিম কে কিছুক্ষণ পর্যবেক্ষণ করলো। নাছিম হালকা কাঁশি দিয়ে বললো…

” মিস আয়শা…আই নো আমি খুব হ্যান্সাম । এভাবে তাকাবেন না প্লিজ৷ ”

আয়শা নাছিমের কথা শুনে, বিষম খেলো। আয়শার হুট করেই কাঁশি শুরু হলো…

নাছিম তাড়া দিয়ে বললো…

” বসুন প্লিজ…”

” আয়শা বসলো। ”

নাছিম পানির গ্লাস টা এগিয়ে দিলো। আয়শা দু ঢোক পানি গিলে, গ্লাস টা রেখে দিলো।

নাছিম, চেয়ার ঘুরিয়ে, বুক ম্যাট টা নাড়তে নাড়তে বললো…

” আমার কেবিনে আসার কারন?”

আয়শা মনে মনে, বললো ‘ লুঙ্গি ডান্স দিতে আসি নাই স্যার। হুহ…

” কি ভাবছেন? ”

” স্যার ফটো শ্যুটের ছবি গুলো। ”

” হুঁ??”

” এডিটিং শেষ। আপনি বললেই প্রিন্ট আউট করবো। তার আগে ছবি গুলো দেখবেন প্লিজ ”

” শিওর। দেখান।”

আয়শা নাছিম কে ছবি দেখাচ্ছে, নাছিম আয়শাকে থামিয়ে দিয়ে বললো…

” সরি, ক্লিয়ার হচ্ছে না। ”

আয়শা ট্যাব টা নিয়ে নাছিমের একটু কাছে গেলো। উবু হয়ে, ছবি গুলো নাছিম কে দেখাচ্ছে। নাছিম ছবি, দেখার ভান করে আয়শাকে আড় দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে।
ছবি গুলো, দেখানোর পর আয়শা বললো…

” স্যার ঠিক বলেছি তো?”

নাছিম, আয়শার মুখ পানে তাকিয়ে, আন মনে বললো…

” ইয়েস। ”

আয়শা খুশি হয়ে, বললো…

” দেখেছেন তো স্যার। আয়শার কামাল। আমার মতো ফটো গ্রাফার পাওয়াই মুশকিল। ”

নাছিম আয়শার কথা শুনে অবাক হলো মেয়েটা নিজেই নিজের প্রশংসা করছে। কি অদ্ভুত!

নাছিম কিঞ্চিৎ গম্ভীরতা নিয়ে বললো…

” খুব আহামরি ভালো কাজ করেন নি। ইটস ইউজুয়াল! ”

আয়শার মুখটা শুকিয়ে গেলো। আয়শা নাছিম কে মনে মনে ভেংচি কাটলো। প্রশংসা করতে জানে না। একটু প্রশংসা করলে কি এমন মহাভারত অসুদ্ধ হতো?

ব্যাটা খারুস, উজবুক একটা!
#ইঁচড়েপাকা_এবং_সে❤️
#Ruhi_Jahan_Maya

পর্বঃ০৭

চারিদিকে সন্ধ্যার আবির্ভাব ঘটেছে। সূর্যে ঢলে পরেছে, আকাশ টা ক্ষানিক কমলা রং ধারণ করেছে। রিক্সা ছুটছে শাহবাগের উদ্দেশ্য। কিছুক্ষণের মধ্যেই আয়শা তার বাসায় পৌঁছে গেলো, ক্লান্ত শরীর নিয়ে বিল্ডিংয়ে ঢুকলো। চার তলায় এসে কলিং বেল চাপতেই, আয়শার বাবা আফজাল সাহেব দরজা খুলে দিলেন।

মূহুর্তেই ক্লান্তি ভাবটা আয়শার মুখ থেকে সরে গেলো। বাবা কে দেখে মুখে হাসি ফুটে উঠলো। বাসায় ঢুকে ধপাস করে আয়শা সোফায় বসে পরলো। আফজাল সাহেব তাড়া দিয়ে বললেন…

” কি করছিস মা। ফ্রেশ হয়ে তারপর রেস্ট নে…”

আয়শা হালকা হেসে বললো…

” তুমিও না বাবা। একদম মায়ের মতো করো। ”

আফজাল সাহেব আয়শার মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে বললেন…

” হ্যাঁ। আমি এখন তোর মা আমি তোর বাবা। যা ফ্রেশ হয়ে আয়। ”

আয়শা উঠে রুমের দিকে গেলো। ফ্রেশ হয়ে এসে বারান্দায় এসে দাড়ালো। ঠিক তখনই আফজাল সাহেব বললেন…

” আয়শা….”

” হ্যাঁ বাবা। ”

আফজাল সাহেব কফির কাপ টা এগিয়ে দিয়ে দিলেন। আয়শা কফির কাপে চুমুক দিয়ে, হালকা হেসে বললো…

“বাবা…তোমার মতো বেস্ট কফি কেউ বানাতে পারবে না। ”

মেয়ের মুখে প্রশংসা শুনে আফজাল সাহেব মনে মনে খুশি হলেন।

” সারা দিন তুই অফিসে থাকিস ওরিন চলে যায় কলেজে আমার একা একা ভালো লাগে না। করার মতো কোন কাজ পাই না। বোরিং লাগে সারা দিন। আমাদের ছাদে কিছু গাছ লাগিয়েছি। ”

” তাই নাকি বাবা?”

“হুম। তোর সাব্বির আংকেল কে দিয়ে কিছু আনকমন ফুল গাছের বীজ আনিয়েছি। ”

” ওয়াও বাবা, আমাদের ছাদের গেট আপ তাহলে পুরো চেঞ্জড। ”

” হ্যাঁ। ছাদে গিয়ে একবার দেখে আসিস। ”

” ঠিক আছে বাবা। ”


কফি খাওয়া শেষ করে আয়শা রুমে ঢুকতেই এক ঝটকা খেলো। বিছানা ভর্তি শাড়ি দিয়ে ওরিন অগোছালো করে রেখেছে। গালে হাত দিয়ে বিছানার এক কোনে বসে আছে ওরিন।

আয়শা মৃদু চিতকার দিয়ে বললো..

” এগুলো তুই কি করেছিস?”

ওরিন বিষন্ন মনে বললো “আগামীকাল কলেজে রবিন্দ্র জয়ন্তীর অনুষ্ঠান। আমি পার্ফমেন্স করবো। ”

” সেটা তো ভালো কথা। কিন্তু তুই মন খারাপ করছিস কেনো?”

” আমি শাড়ি ঠিক মতো পরতে পারি না, আপু। আর এতো গুলো শাড়ির মধ্যে কোনটা সিলেক্ট করবো তাও বুঝতে পারছি না। ”

আয়শা লাল পারের সাদা শাড়িটা ওরিনের দিকে এগিয়ে দিয়ে বললো..

” কুল কুল আমি আছি তো। এই শাড়িটা তোকে অনেক সুন্দর মানাবে। ”

ওরিনের মুখে হালকা হাসির আভা ফুটে উঠলো। পরক্ষনেই হাসি মিইয়ে গেলো।

” আপু কিন্তু শাড়ি পরবো কি ভাবে?”

” আমি তোকে পড়িয়ে দিবো?”

” তুমি শাড়ি পড়াতে পারো? ”

” পারি না৷ বাট ইউটিউব আছে না? ”

বলেই আয়শা হাসার চেষ্টা করলো।

” আপু তুমিও ইউটিউবের ভরসায় আছো?”

” কি আর করবো বল? যার কেউ নাই তার ইউটিউব আছে। ”

বলেই আয়শা হো হো করে হেসে দিলো। ওরিন ও আয়শার সাথে সমান তালে হাসতে শুরু করলো৷

————– পর দিন———-

সকালে ঘুম থেকে উঠে এক কাপ কফি খেয়ে আয়শা রান্না বসিয়ে দিলো। মা মারা যাওয়ার পর থেকেই আয়শা রান্না করে। বাবা রান্না লোক রাখতে চাইলেও আয়শা রাজি হয় নি, রান্নাটাকে নিত্য দিনের কাজ হিসেবে না রেখে প্রতিটি দিনে শুরুর নিয়ম বানিয়ে ফেলেছে।

বাবা কে কফি দিয়ে, আয়শা ওরিন কে ডাক দিতে গেলো। আয়শার ডাকে ওরিন আড়মোড়া হয়ে উঠে বসলো। ওরিন ওয়াশ্ররুমে চলে গেলো ফ্রেশ হতে। ওরিন কে শাড়ি পরিয়ে দিয়ে, কোন রকমের নাস্তা খেয়ে অফিসে জন্য আয়শা বেরিয়ে গেলো।

আয়নার সামনে বসে ওরিন হালকা সাজ গোছ করে নিলো। আপুর চয়েজ আছে বলতেই হবে। কি সুন্দর শাড়িটা সিলেক্ট করে দিলো। ওরিন রেডি হয়ে কলেজের উদ্দেশ্য বেরিয়ে পরলো।

সকাল দশ টা………

আয়শা অফিসে ঢুকে হাফ ছেড়ে বাঁচলো। আজকে ঠিক সময় অফিসে পৌছাতে পেরেছে সে। রিসিপশনে বসা মিলি নামে মেয়েটা মুখ বাকিয়ে বললো…

” আজও আগে আসতে পারলে না? ”

আয়শা জোরে নিশ্বাস নিয়ে বললো…

” লেট ও তো হয় নি। ”

” ওই খারুস টা কি চলে এসেছে?”

” আয়শা ”

” হুম বলো। ওই খারুস টাকি এসেছে?”

মিলি চোখ ইশারা করে বললো,” পিছনে তাকাও।”

” পিছনে খারুস টা দাড়িয়ে আছে নাকি?”

বলেই পিছনে তাকালো আয়শা। আয়শার হাসি হাসি মুখটা ভয়ে শুকিয়ে গেলো আস্ত একটা ঢোক গিললো। নাছিম পিছনেই দাঁড়িয়ে আছে। আয়শা কেঁশে উঠলো, মুখে কৃত্রিম হাসি জুটিয়ে বললো…

” গুউ গুউ গুড মর্নিং স্যার ”

নাছিম কে দেখে বেশ মনে হচ্ছে সে, রেগে আছে। তবুও নিজেকে কান্ট্রোল করে নাছিম বললো…

” মিস আয়শা আপনি তো বেশ ভালো নাম রাখতে জানেন?”

আয়শা জোর করে হাসার চেস্টা করে বললো…

” ইয়ে মানে হ্যাঁ স্যার। ”

নাছিম দাঁতে দাঁত চেপে দাঁড়িয়ে আছে। আয়শার উদ্দেশ্য করে বললো…

” কয়েক মাস আগের ফটো শ্যুটের ছবির ফাইল গুলো, ম্যানেজারের কাছ থেকে নিয়ে আমার কেবিনে আসুন।”

বলেই হন হন করে নাছিম নিজের কেবিনের দিকে চলে গেলো।

আয়শা বিড় বিড় করে নাছিম কে গালি দিচ্ছে। মিলি খোঁচা মেরে বললো…

” আজ বোধহয় তোমার কপালে শনি আছে। স্যারের রুমে যাবার আগে দোয়া দুরুদ পরে যেও। ”

আয়শা মেনেজার স্যারের রুমে থেকে, ফটো শ্যুটের ছবির ফাইল গুলো নিয়ে নাছিমের রুমে দিকে এগুলো। এই মোটা মোটা ফাইল গুলো দিয়ে খারুস টা কি করবে আল্লাহ পাকই জানেন।

দরজাটা আধা ফাঁকা করে রুমে উঁকি দিয়ে, আয়শা বললো…

“স্যার আসবো? ”

” আসুন। ”

আয়শা রুমে ঢুকলো, নাছিম ল্যাপটপে কাজ করছে এ দিকে আয়শা বেশ কিছুক্ষণ ধরে আয়শা দাঁড়িয়ে আছে। এই খারুস টা বসতেও বলছে না। আয়শার মাথায় রাহে আগুন ধরে যাচ্ছে। বেশ কিছুক্ষণ পর, নাছিম ল্যাপটপ থেকে চোখ ফিরিয়ে বললো…

” বসুন মিস আয়শা। ”

আয়শা ফাইল গুলো রেখে বসলো।নাছিম বলতে শুরু করলো…

” এক মাসের মধ্যেই রাশিয়ায় আমাদের ব্রেন্ডের ডিল হবে। এই বছরের সব গুলো কালেশন্সসের ছবি। রেডি রাখবেন।”

” ওকে স্যার। ”

” আবার নতুন নাম রাখা শুরু করে দেবেন না আবার। ”

আয়শা লজ্জা পেলো। নাছিম উঠে দাঁড়ালো, আবার বলতে শুরু করলো..

” এক ঘন্টা পর মিটিং থেকে যেন এসে দেখি আপনি কাজ করছেন। ”

বলেই নাছিম তার কেবিন থেকে বেড়িয়ে গেলো। আয়শা জোরে শ্বাস ছারলো। ফাইল থেকে ফটো শ্যুটের ছবি গুলো নিয়ে আয়শা ঘাটা ঘাটি শুরু করলো। ফ্লাক্স থেকে কফি বের করে আয়শা কফির কাপে চুমুক দিলো। বড্ড ক্লান্ত লাগছে আয়শায়। চুলের খোপা ছেরে রিলাক্সে টেবিলে বসে কফি খাওয়ায় মন দিলো আয়শা।

সকাল সারে দশটা বাজে,

ধানমন্ডির রবীন্দ্র সরোবরে তরুণ-তরুণীদের নানা রকম সাজে বেশ জাকজমক পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। কেউ গিটার বাজিয়ে গানের সুর তুলছে, তো কেউ সাজ গোছ ঠিক করতে ব্যাস্ত।

হাতে এক কাপ চা নিয়ে বান্ধবীদের সাথে কথা বলছে ওরিন। ওরিন হাসতে হাসতে হঠাৎ কারো সাধে ধাক্কা খেলো। পেছন থেকে কারো মৃদু চিতকারের শব্দ ভেসে এলো। ওরিন পেছন ঘুরে তাকাতেই চমকে উঠলো। কারন…



চলবে

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here