এই রাত তোমার আমার পর্ব ১৩

#এই_রাত_তোমার_আমার
#সানজিদা_ইসলাম
#১৩তম_পর্ব

হসপিটালের করিডোর হতে বের হতেই সামনে তাকিয়ে ফিমা চমকে উঠলো।ফাহি দাঁড়িয়ে আছে কয়েক মাসেই যেন খুব বড় হয়ে গেছে মেয়েটা। কতদিন দেখে না তাকে! আপাতত এই মেয়েটাই তার সবচেয়ে আপন।সে প্রণপনে চেষ্টা করেছিলো বিয়েটাকে আটকাতে।বাবা মায়ের বকুনিও খেয়েছে তবুও শেষ পর্যন্ত ফিমাকে বলে ছিলো পালিয়ে দা ভাইয়ের কাছে যেতে, তাকে সব খুলে বলতে এদিকটা সে সামলাবে। কিন্তু ফিমা যায়নি কারণ সে তার মায়ের চোখে লোভ দেখেছিলো যদি সে পালিয়ে যেতো তাহলে হয়তো ফিমার পরিবর্তে ফাহিকেই বিয়ে দিয়ে দিতো।এতো টাকা পয়সা ওয়ালা লোক সে কখনোই হাতছাড়া করতো না।সে সারাজীবন অভাব দেখে এসেছে তাই তার কাছে টাকাটাই বড়। কি হয়েছে ছেলের বয়স বেশি বিয়ে হয়েছে তো কি হয়েছে?টাকা তো আছেই টাকা দিয়েই সব দোষ মাটি চাপা দেয়া যায়।

ফিমা যে বিয়েটা আটকাতে চেষ্টা করে নি তা কিন্তু না।মাহিয়াতের সাথে দেখা করার পর সবকিছু শোনার পর সে নিজে অনেক ভেবেছে সে যদি এই বিয়ে করে তাহলে তার মধ্যে আর একজন রাস্তার মেয়ের মধ্যে পার্থক্য কি রইলো? সেও তো জেনে শুনে টাকার জন্য বিয়ে করছে,যদিও সেখানে মাহিয়াতের স্ত্রীর সম্মতি ছিলো তবুও সে জানে শুনে কারো ঘর নষ্ট করতে চায় নি।সে জানে সংসার ভাঙনের কষ্ট। আর এমনও নয় যে সে বিয়ের জন্য পাগল হয়ে আছে বা টাকার জন্য অন্য কারো কাছে হাত পাততে হয়। তাহলে কেনো সে কাউকে কষ্ট দিবে?

মাহিয়াতের দরকার পড়লে অন্য কাউকে বিয়ে করুক। টাকা দিলেই অনেকেই লাইন ধরবে। তবুও সে কাউকে কষ্ট দিতে পারবেনা। এমন একটা সংসার তার দরকার নেই যেখানে শর্ত দিয়ে বিয়ে করতে হবে।সে একটা ছোট সাদামাটা সংসার চায়।তাই সে বিয়ে করতে পারবেনা বলে সিদ্ধান্ত নেয়। আর তার ভাবনা অনুযায়ী সে তার বাবা মাকে বোঝায়।

বাবাকে কিছুটা কনভেন্স করতে পারলেও মাকে পারিনি। তার এক কথা তাকে এখানেই বিয়ে করতে হবে। আর বিয়ের তোড়জোড় শুরু করে দেয় ফিমা হাল ছাড়ে না সে তার ভাইকে ফোন দেয় সেই একমাত্র ভরসা কিন্তু বারবার ফোন বন্ধ দেখাচ্ছিল শেষমেষ উপায় না পেয়ে সে বাড়ি থেকে পালানোর চিন্তা করে।

আর যেই ভাবা সেই কাজ প্রায় শেষ রাতে ফিমা তার প্রয়োজনিয় কিছু জিনিস আর জমানো কিছু টাকা নিয়ে বাড়ি থেকে বেরোতে নেয় কিন্তু দরজায় তালা ঝুলানো দেখে কিছুটা হতাশ হয়ে চাবি খুঁজতে যাবে বলে ঘুরে দাঁড়াতেই সামনে তার মা কে দেখে ঘাবড়ে যায়।

ফিমার মা আগে থেকেই কিছুটা ধারণা করে রেখেছিলো ফিমা এমনটাই করবে। কারণ ফাহি যখন পালিয়ে যাওয়ার কথা বলছিলো তখন সে ফিমার কাছেই আসছিলো, তখন কথাটা শুনেও গুরুত্ব দেয়নি। কিন্তু রাতে যখন আবার বিয়ে না করার কথা বলল তখনই সে বুঝে গিয়েছিল ফিমা যে কোন উপায়ে বিয়েটা না করতে চেষ্টা করবে। তাই সেও কম যায় না। সেও ফিমার মা একবার যখন বলেছে বিয়ে করতে হবে তো করতেই হবে সে জানে কিভাবে ফিমাকে বিয়ের জন্য রাজি করাতে হবে।

আর সে যা করছে ফিমার ভালোর জন্যই করছে। এত বড়লোক বাড়ির ছেলে কি আর বাজা বৌ নিয়ে সংসার করবে? তাকে সরাসরি চলে যেতে বলতে পারছেনা তাই আবার বিয়ে করেছে। একবার বাচ্চা হলে এমনিতেও তাকে ছেড়েই দিবে বলেছে ছেলের মা।আর সে ও এমন অহরহ দেখেছে পুরুষ মানুষ দ্বিতীয় বিয়ে করলে প্রথম বৌয়ের কোনো খবরও নেয়না। দ্বিতীয় বৌ আর বাচ্চা নিয়ে পরে থাকে।আর শুনেছে ঐ মেয়েও বড় ঘরের।তাই স্বামীর অবহেলা অপমান সহ্য করে পরে থাকবেনা নিশ্চই এক সময় না এক সময় ছেড়ে দেবে। তখন পুরো সংসারের ফিমা একাই রাজত্ব করবে।এখন যেটাকে অভিশাপ ভাবছে কিছুদিন পর যখন সে সুখে থাকবে তখন তার মায়ের এই সিদ্ধান্ত আশীর্বাদ মনে হবে।তাই যে কোনো উপায়ে তাকে ঐ সংসারে কিছুদিন ধৈর্য্য সহকারে আটকে থাকতে হবে। একবার স্বামীর মন পেয়ে গেলে তার সুখের আর সীমা থাকবে না।আর তার মেয়ের সুখের জন্য যদি তাকে আরো দেশি কঠোর আর নিচু হতে হয় হবে। এতে তার কিছু যায় আসে না।

ফিমার মা তার দিকে একটা‌ চাবির রিং এগিয়ে দিলো,

—নে ধর তালার চাবি আর পালিয়ে যা বাড়ি থেকে।

ফিমা একটা ফাঁকা ঢোক গিলে একবার তার মায়ের দিকে তো একবার তার হাতে থাকা চাবির দিকে তাকিয়ে। বোঝার চেষ্টা করলো তার মা কি তাকে সত্যিই বেড়িয়ে যেতে সাহায্য করছে, নাকি তাকে ধরে ফেলেছে বলে উপহাস করছে,

—নে ধর আর পালিয়ে যা বাড়ি থেকে।তোর কি মনে হয় তুই পালিয়ে গেলেই বিয়েটা আটকে যাবে বা বিয়ে হবে না? তাহলে এটা তোর সম্পূর্ণ ভুল ধারণা।বিয়ে তো হবেই তুই থাকলেও হবে না থাকলেও হবে।

ফিমা আশ্চর্য হয়ে প্রশ্ন করল,
—মানে?আমি না থাকলে কিভাবে বিয়ে হবে?

—কেনো ফাহি আছে না। তুই বিয়ে না করলে ফাহিকে বিয়ে দিবো।আর ওকে জোরও করা লাগবে না। ও এমনেতেই তোর এই বিয়ের জন্য নিজেকে বারবার দোষারোপ করছে। যদি তোর জায়গায় ফাহিকে বিয়ে করতে বলি তাহলে ও তোকে বাঁচানোর জন্য নিজে হাসি খুশি বিয়ে করে নেবে। এবার সিদ্ধান্ত তোর, তুই কি করবি নিজে বিয়ে করবি না ফাহিকে বিয়ে দিয়ে দেবো।যদি তুই চাস ফাহির সাথে বিয়েটা হোক তাহলে এই নে চাবি তুই পালিয়ে যা, ওদের আমি সামলে নেবো। এমনিতেও একদিন না একদিন তো ওকে বিয়ে দিতেই হবে তাহলে আজকে কেনো নয়?হোক ফাহির অনুযায়ী ছেলের বয়স বেশি কিন্তু ব্যাপার না। ছেলে দেখতে মাশাআল্লাহ বয়স বুঝা যায় না। আমার মেয়ে খুশিই থাকবে।

বলে ফিমার মা চাবি ফিমার হাতে চাবি দিয়ে ঘরে চলে গিয়েছিল।সে তার চাল দিয়ে ফেলেছে এখন অপেক্ষার পালা। সে জানে ফিমা যাবে না।কারণ তার মনে ভয় ঢুকিয়ে দিয়েছে সে।যেখানে সে নিজেই বিয়েতে রাজী না সেখানে ফাহিকে তো তার জীবন গেলেও বিয়ে দেবে না।

ফিমা‌ এখনো কাঠ হয়ে দাঁড়িয়ে আছে,কি বলে গেলো তার মা?সে না বিয়ে করলে ঐ ছোট্ট মেয়েটাকে এমন একটা নরকে ফেলে দিবে যেখানে বিয়ে নামক চুক্তি আর বিনিময়ের খেলা হতে যাচ্ছে‌। সত্যিই কি উনি তাদের মা যে তারা এক বেলা না খেয়ে থাকলে সারাদিন পিছনে পিছনে ঘুরতো।অসুখ হলে সারারাত সেবা করতো,রাতে ঘুমিয়ে যাওয়ার পরও উঠে এসে দেখতো সব কিছু ঠিক ঠাক আছে কিনা? হয়তো কখনো এতো বেশি বন্ধুত্ব পূর্ণ সম্পর্ক হয় নি কিন্তু কিছু বলার আগেই মা সব কথা বুঝে যেত, আগলে রাখতো আর সেই মাই কিনা আজ তার সাথে এমন করলো?না না এটা তার মা হতেই পারে না এটা অন্য কেউ নাকি আজ ডিভোর্সী দেখে তার চক্ষুশূল হয়ে গেছি।সে না হয় ডিভোর্সী সমাজ ও তার মায়ের কাছে বোঝা কিন্তু ফাহি?ও কেনো তার জন্য বলির পাঁঠা হবে? তার জীবন তো এমনিতেই নরক তুল্য দরকার হয় সে নিজের জান দিয়ে দিবে কিন্তু ফাহিকে ঐ নরকে পাঠাবে না বলে সিদ্ধান্ত নেয়।



ফিমার মা ঘরে ঢুকতেই দেখলো ফিমার বাবা বিছানায় বসে আছে তাকে দেখেই প্রশ্ন করল,

—তুমি কি কাজটা ঠিক করছো মালিহা? এমন মেয়ের ইচ্ছের বিরুদ্ধে জোর করে বিয়ে দিচ্ছ‌ো পরে যদি কোনো অঘটন ঘটে যায়?আর মেয়েটা যেহেতু নিষেধ করছে নিশ্চয়ই কোনো কারণ আছে‌। আর এমনিতেও ও তো আর আমাদের বোঝা না।নিজে কাজ করছে নিজের খরচ নিজে চালাচ্ছে তাহলে ওকে ওর মত থাকতে দেয়া উচিত। এমনিতেই মেয়েটা ছোট বয়সে একটা বিরাট ধাক্কা খেয়েছে। পরের বার এমন হলে আর সইতে পারবেনা।আর সংসার তো আর আমরা করবো না ফিমা করবে তাই ওর মত ছাড়া বিয়ে দেয়াটা আমার কাছে ভালো ঠেকছে না।

—এতো চিন্তা করো না তো, একবার বিয়ে হয়ে গেলে দেখবে সব ঠিক হয়ে গেছে। আমাদের মেয়ে সুখেই থাকবে।বিয়েতে এত মেয়েদের মত নেয়া লাগে না আমাদের বিয়ের সময় কি কোনো মত নিয়েছিলো? তোমার সাথেও তো আমাকে জোর করে বিয়ে দিয়েছিলো আমি তো ঠিক মেনে নিয়েছি দেখবে ফিমাও মেনে নেবে।

—তোমাদের সময় আর এখনকার সময় এক না আর এমনিতেও একবার তো আমাদের পছন্দ মতোই বিয়ে দিয়ে ছিলাম দেখলেই তো শেষে মেয়েটার কি হলো। আবার যদি…

ফিমার মা মাঝপথে কথা থামিয়ে দিয়ে বলল,
—এমন কিছু হবে না, আল্লাহ ভরসা দেখবেন আমার মেয়ে একদিন ঠিক অনেক সুখি হবে।

ফুয়াদ সাহেব একটা লম্বা নিঃশ্বাস ফেলে বললো,
—তাই যেন হয়।

তার পরের দিনই ফিমার সাথে মাহিয়াতের বিয়ে হয়ে যায় আর সেদিনই সে মনে মনে প্রতিজ্ঞা করে।যে ঘরের মানুষ তাকে আপন মনে করে নি। তার ইচ্ছের দাম দেয়নি তাকে আপদের মত বিদায় করেছে সে মানুষগুলোর সাথে সে আর কোনো দিনই যোগাযোগ করবে না।

এর পর কেটে যায় প্রায় নয় মাস এই নয় মাস পর আজ ফাহির সাথে দেখা।ফাহি সামনে দেখে সে নিজের আবেগকে ধরে রাখতে পারলো না একে অপরকে জড়িয়ে ধরে কাঁদতে লাগলো।

রাস্তায় অনেকেই তাদের উৎসুক হয়ে দেখছে মাহিয়াত তাদের থেকে কয়েক হাত দূরে দাঁড়িয়ে আছে। অনেকক্ষণ হয়ে গেছে তবুও তাদের কান্না থামানোর নামই নিচ্ছে না।তারা কোথায় আছে তা হয়তো ভুলেই গেছে। এত কষ্ট করে এই কাঠখট্ট মেয়েটাকে আনলো জেনো ফিমা একটু খুশি হয় কিন্তু না খুশি হবে তো দুরের কথা তাদের কান্নাই থামছে না। শেষ মেষ বিরক্ত হয়ে মাহিয়াত তাদের কাছে গিয়ে গলা ঝাড়া দিয়ে বললো,

—এখনকার জন্য কান্নাটা একটু স্থগিত রাখুন বেগাম,আমরা রাস্তায় আছি।আপনি চাইলে আপনার বোনকে নিয়ে বাড়িতে যেতে পারেন কিন্তু সেখানে কান্নাকাটি করা চলবে না।

মাহিয়াতের কথায় ফিমা আর ফাহি একে অপরকে ছেড়ে দিয়ে দূরে দাঁড়ালো আসলেই তারা একটু বেশি ইমোশনাল হয়ে গিয়েছিল কিনা।

সেদিন রাত পর্যন্ত তারা তিন জন ঘুরলো। খাওয়া দাওয়া করলো ফিমা আর ফাহিই একসাথে ছিলো মাহিয়াতই তাদের একটু স্পেস দিয়েছে মন হালকা হোক মেয়েটার। সারাদিন তো গোমড়া মুখ হয়ে থাকে।

সেদিন ফিমা মাহিয়াতের আরো একটা ধারণা ভুল প্রমাণিত করলো ফিমা মোটেও চুপচাপ আর গম্ভীর না। প্রচন্ড হাঁসি খুশি বাঁচাল আর চঞ্চল টাইপের মেয়ে।ফাহিকে পেয়ে তার আসল সত্তা পুনরায় জেগে উঠেছে। সে মনে মনে একটা স্বস্তির নিঃশ্বাস নিল এমনটাই তো চাইছিল সে।ফিমার এমন মন কাড়া হাসি আর চঞ্চলতা দেখার জন্য নিজের ইগোকে ভুলে পিচ্চি এক মেয়েকে রিকোয়েস্ট করেছে দেখা করার জন্য।

হ্যা ফাহিকে সেই ডেকে এনেছে ফিমার সাথে দেখা করানোর জন্য। ফাহি তো তার সাথে কথা বলতেই নারাজ ছিলো। তাকে অনেক রিকোয়েস্ট করে দেখা করতে বলে কিন্তু সে মাহিয়াতের সাথে দেখাও করতে চায় না উপায় না পেয়ে মাহিয়াত ফোনেই ফিমার ব্যাপারে সব কিছু খুলে বলে। আর তাকে ফিমার সাথে সময় কাটানোর জন্য তাদের বাড়িতে যেতে বলে। কিন্তু ফাহি বাড়িতে যাওয়ার কথা শুনে সাফসাফ নিষেধ করে দেয় আর ফিমার সাথে বাইরে দেখা করানোর প্রস্তাব দেয়।



আজ একা একা হাঁটতে ও মাহিয়াতের ভালো লাগছে।ফিমা মুখে হাঁসি দেখে আপনা আপনি তার ঠোঁটের কোণ প্রসস্থ হচ্ছে। আলাদা একটা শান্তি লাগছে বুকে। বারবার আড় চোখে সে ফিমাকে দেখছে আজকে জেনো একটু বেশিই ভালো লাগছে তাকে।



রাত প্রায় নয়টা বেজে গেছে আজমীন বারবার ফোন করছে মাহিয়াতকে এত রাতে পোয়াতি মেয়েদের বাইরে থাকতে হয় না।যত তাড়াতাড়ি সম্ভব যেন বাড়ি চলে আসে।মাহিয়াত শুধু তার কথার সাথে হ্যা হ্যা করছে।আসলে তারও এখন বাড়ি যেতে ইচ্ছে করছে না ফিমা কি সুন্দর এখনো হাঁসি খুশি অথচ বাড়ি গেলেই গম্ভীর হয়ে যাবে। কিন্তু কি করার বাড়ি তো যেতেই হবে ফাহি যদি ফিমার সাথে তার বাড়িতে থাকতো তাহলেও হয়তো ফিমার জন্য ভালো হতো। কিন্তু সে তো তাদের বাড়ির কথা শুনতেই পারে না।মাহিয়াত দীর্ঘশ্বাস চেপে ফিমাকে গিয়ে বললো,

—অনেক রাত হয়ে যাচ্ছে বেগাম, আমাদের বাড়ি যাওয়া উচিত মা বারবার ফোন করছে। আর এমনিতেও আজকে অনেক হেঁটেছেন পরে শরীর দুর্বল হয়ে পরবে।তাই চলুন বাসায়।

—জী,
বলে ফিমা অসহায় দৃষ্টিতে ফাহির দিকে তাকালো জবাবে সে মিষ্টি হেসে আস্বাস দিল সে আবার খুব শীঘ্রই দেখা করবে তার সাথে।

মাহিয়াত ফাহির জন্য গাড়ি ঠিক করে দিয়ে তাকে গাড়ি পযর্ন্ত এগিয়ে দিয়ে বললো,

—ধন্যবাদ আমার কথাটা রাখার জন্য আসলে ফিমা অনেক…

ফাহি মাহিয়াতকে মাঝপথে থামিয়ে দিয়ে বলল,
—ধন্যবাদ দেওয়ার কিছুই নেই আমি আপনার কথা রাখার জন্য আসিনি আপুর জন্য এসেছি।

—হুম,তো ভালো থাকবে আর যে কোনো প্রয়োজনে আমাকে ডাকবে। আর পারলে আমাদের বাড়িতে এসে ফিমার সাথে একটু সময় কাটাতে এসো দুজনেরই ভালো লাগবে।

ফাহি হাঁটা থামিয়ে দিয়ে মাহিয়াতের দিকে ফিরে বললো,
—শুনুন আমারা গরিব হতে পারি আমার মা বাবাকে আপনি কিনে নিতে পারেন তাই বলে আমি বা আপু কেউই এতো সস্তা না যতটা আপনি ভাবছেন। আপনার কি মনে হয়। আমার আপুর ভলোর জন্য আমি আপুর কাছে আসবো আর বিনিময়ে আপনার কাছ থেকে সাহায্য চাইবো? কোনো দিনও না।আর যে বাড়িতে আমার আপু কষ্টে থাকে তার কোনো সম্মান নেই সেই বাড়িতে আমার পা কোনো দিনও পরবে না।আসি ভালো থাকতে বলবো না শুধু বলবো আমার বোনটাকে একটু কম কষ্ট দেয়ার চেষ্টা করবেন এমনিতেই অনেক সহ্য করেছে সে।

বলে চলে যেতে নেয় আবার কি মনে করে যেন মাহিয়াতের মুখোমুখি দাঁড়িয়ে তার চোখে চোখ রেখে বলে,

—একটা কথা না বললেই নয়। আপুর থেকে দূরে থাকবেন খবরদার তাকে ভ্রমের মধ্যে রাখার চেষ্টাও করবেন না। আল্লাহ সইবে না। মন ভাঙ্গা খুব বড় অপরাধ জানেন তো? আর নিজের দৃষ্টিকে সংযত রাখুন ভুলে যাবেন না আপু আর কয়েক মাস আপনার বাড়িতে আছে তারপর সে এই নরক থেকে বেরিয়ে যাবে। আর আপনি আপনার স্ত্রী সন্তান নিয়ে সুউউখেএএ শান্তিতে দিন কাটাবেন।তাই তাকে নিয়ে আপনি যে ভাবনার বীজ বুনতে শুরু করেছেন তা সময় থাকতে উপড়ে ফেলুন।

ফাহি চলে গেলো আর মাহিয়াত এখনো সে দিকেই তাকিয়ে আছে। এই ছোট মেয়েটা কি কিছু বুঝে ফেলেছে? সত্যিই কি সে ফিমাকে নিয়ে ভাবা শুরু করেছে।হ্যা আর কয়েক দিন পর তো সে চলে যাবে আর সে নুহাকে নিয়ে ভালো থাকবে।মাহিয়াতের হঠাৎ অসস্থি হতে শুরু হলো সে ফিমাকে নিয়ে বাসায় চলে গেলো তারপর সাথে সাথেই নূহাদের বাড়িতে চলে গেলো তার অস্বস্তির মাত্রা বেড়ে চলছে।কেনো তার জানা নেই এই মুহূর্তে তার নুহাকে দরকার সেই পারবে তাকে শান্ত করতে।

চলবে…

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here