এই রাত তোমার আমার পর্ব ৮

#এই_রাত_তোমার_আমার
#সানজিদা_ইসলাম
#৮ম_পর্ব

ফিমার হাতের প্রেগনেন্সি কিটে দুটো দাগ দেখে আজমীনের খুশির সীমা রইল না সে আবেগপ্রবণ হয়ে তাকে জড়িয়ে ধরে কপালে চুমু খেলো নিজের গলা থেকে স্বর্ণের চেন খুলে তার গলায় পরিয়ে দিলো কিন্তু ফিমার কোনো ভাবান্তর হলো না সে চুপ চাপ নির্লিপ্ত ভঙ্গিতে বসে আছে। এদিকে আজমীন তাকে রেডী হওয়ার জন্য বললো সে তাকে নিয়ে এক্ষুনি ডাক্তারের কাছে যাবে তারপর পুরোপুরি শিওর হয়ে সবাইকে জানাবে।

আজমীন রেডী হয়ে এসে দেখে ফিমার কোনো হেলদোল নেই সে একই ভাবে চুপচাপ শূন্য দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে সে একটা দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে এভাবেই তাকে ডাক্তারের কাছে নিয়ে গেলো ডাক্তার কিছু টেষ্ট করে কিছুক্ষণের মধ্যেই ফলাফল পজেটিভ জানিয়ে দিলো আর মা ও বাচ্চার পরিপূর্ণ খেয়াল রাখতে বললো সাথে কিছু মেডিসিনও দিয়ে দিলো।

এদিকে আজমীন এতক্ষণে মাহিয়াতকে তার বাবা হওয়ার সংবাদ দিয়ে দিয়েছে। সেই থেকে সে একজায়গায় থম মেরে বসে আছে তার বিশ্বাস হচ্ছে না সে বাবা হবে কেউ তাকে বাবা বলে ডাকবে ছোট ছোট হাত পা দিয়ে সারাবাড়ি দৌড়ে বেড়াবে তার পিঠে চড়ার বায়না ধরবে এটা সেটা আবদার করবে আচ্ছা বাবা হওয়ার অনুভূতিটা সত্যিই এতো সুন্দর?কথাটা মনে হতেই বুকে কাঁপন ধরিয়ে দেয় বেঁচে থাকার জন্য আরো একটা কারণ যোগ করে?নয় বছর নয় বছর সংসারের পর সে বাবা হতে যাচ্ছে তার এই বিষাদময় জীবনে এই সংবাদ টুকু সুখের জোয়ার আনতে সক্ষম ছিলো।

আবার মাহিয়াতের ভেতরে একটা চাপা উত্তেজনা কাজ করছে এক দিকে বাবা হওয়ার সুসংবাদ অন্যদিকে নুহাকে সে এই কথাটা কিভাবে জানবে?সে কি এই সংবাদটি আদোও সহজ ভাবে নিবে?আর ফিমা?না জানি সে জিনিসটাকে কিভাবে নিয়েছে? একটা সময় সে এই মেয়ের চোখে তার জন্য ভালোলাগা দেখেছে শ্রদ্ধা দেখেছে সম্মান দেখেছে কিন্তু আজকাল তার চোখের দিকে তাকানো যায় না নিজের জন্য কারো চোখে ঘৃণা দেখতে কারই বা ভালো লাগে?সে জানে ফিমা মুক্তি চায় পালাতে চায় এই জীবন দশা থেকে। কিন্তু আজকের পর চাইলেই কি আর মুক্তি পাবে সে?হয়তো কিছুদিন পর বাহ্যিক ভাবে মুক্তি পাবে কিন্তু অন্তরের মুক্তি? এমন আরো নানান এলোমেলো চিন্তা তার মাথা নষ্ট করে দিতে থাকে কিন্তু সে সব কিছু ঝেড়ে ফেলে নিজের বাবা হওয়ার খুশিটাকে আকড়ে ধরে। বাকি সব আপাতত গোল্লায় যাক পরেরটা পরে দেখা যাবে কি হয়। এখনই ভবিষ্যতের চিন্তা করে এই সুন্দর মুহূর্তটা কে সে নষ্ট করতে চায়না।

মাহিয়াত অফিস থেকে বেরিয়ে আগে বাড়িতে গেলো ফিমা ঘরে চুপচাপ শুয়ে আছে মাহিয়াত গিয়ে দরজায় নক করে তাকে ডাক দিলো,

—ফিমা

সকাল থেকে মাথাটা প্রচন্ড ব্যাথা করছে কিছু খেতে ইচ্ছে করছে না তাই একটু শুয়েছিল সে কিছুক্ষণ ঘুমানোর আশায়। এরি মধ্যে মাহিয়াতের গলার আওয়াজ পেলো। খুব গুরুত্বপূর্ণ কাজ বা কারণ ছাড়া মাহিয়াত তার নাম ধরে ডাকে না এমনকি বিশেষ মুহূর্তেও নুহার নাম বলে তাই মাহিয়াতের মুখে তার নাম শুনে সে ঘাবড়ে গিয়ে তারাতাড়ি উঠে পড়লো না জানি আবার কি করে ফেলেছে সে,

ফিমাকে হুরমুড় করে বিছানা থেকে উঠতে দেখে মাহিয়াত সামনে এগিয়ে গিয়ে তাকে বাঁধা দিলো,

—আরে আরে কি করছেন?একটু আস্তে ধীরে নামবেন তো নাকি? আপনি কি ভুলে যাচ্ছেন এখন আর আপনি একা নন? দেখুন আপনার গাফিলতির জন্য যদি আমার সন্তানের কিছু হয় তাহলে আপনাকে আমি ছেড়ে কথা বলবো না।মাহিয়াত কপট রাগ দেখিয়ে কথাটা বললো,

মাহিয়াতের কথাটা শুনে ফিমা সামান্য কষ্ট পেয়ে নিচু আওয়াজে বললো,
—মাফ করবেন আসলে মনে ছিলো না। হঠাৎ আপনি ডাক দিলেন ভাবলাম হয়তো গুরুত্বপূর্ণ কিছু বলবেন তাই তারাতাড়ি উঠে পরেছি।
আর একটা কথা বলবো তাই আগে থেকেই মাফ চেয়ে নিচ্ছি, আপনি হয়তো ভুলে যাচ্ছেন সন্তানটা যতটুকু আপনার ততটুকু আমারো আর আমি যেহেতু তাকে গর্ভে ধারণ করেছি তাই তাকে নিয়ে আপনার চাইতে আমার চিন্তা বেশি।

ফিমার কথা শুনে মাহিয়াত তাচ্ছিল্য স্বরে বলল,
—ঠিকই বলেছেন সন্তান টা যতটুকু আমার ততটুকু আপনারও কিন্তু সেটা ক্ষনিকের জন্য।আপার প্রাপ্য আপনার হাতে দেওয়ার পর ওর সাথে আপনার কোনো সম্পর্ক থাকবে না।

প্রতিউত্তরে ফিমা বললো,
—আপনি বললে হয়তো কাগজে কলমে আমাদের কোনো সম্পর্ক থাকবে না কিন্তু সত্যি কি তাই। আপনি মানেন আর না মানেন ওর শরীরের আপনার রক্তের ‌পাশাপাশি আমার রক্তও বইবে সেই সম্পর্ক কি মুছে ফেলতে পারবেন?

মাহিয়া তদন্ত দাম্ভিকতার সাথে বলল,
—শরীরে আপনার রক্ত থাকলেও ওর আসল মা কিন্তু নুহাই হবে। আপনার কোনো অস্তিত্ব ওর কাছে থাকবে না।আর না ও কোনোদিন জানতে পারবে ওর আসল মা কে?তাই মা হওয়ার বড় বড় ভাষণ ছাড়া বন্ধ করুন।

মাহিয়াতের এ কয়েকটা কথা যথেষ্ট ছিলো ফিমার কষ্টকে আরো বাড়িয়ে দেয়ার জন্য সে এখনো এটাই মানতে পারছেনা সে তার সন্তানকে অন্যের হাতে তুলে দিতে হবে তার উপর মাহিয়াতের এমন কথা।ফিমা মাহিয়াতের সামনেই ফুঁপিয়ে কেঁদে উঠলো,
আর কথায় কথায় মাহিয়াত যে কিসব বলে দিয়েছে সে এখন বুঝতে পারছে,

মাহিয়াত একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে ফিমার পাশে বসে তার দুই হাত নিজের হাতের মুঠোয় নিয়ে বললো,

—সরি আসলে আমার মাথা ঠিক ছিলো না।আপনাকে কষ্ট দিতে চাইনি কিভাবে কি বলে ফেলেছি…
ফিমা প্লিজ কান্না বন্ধ করুন আমার দিকে তাকান প্লিজ,

ফিমা কান্না বন্ধ করে মাহিয়াতের দিকে তাকালো,
—আই এম সরি আমি না বুঝে কি না কি বলে ফেলেছি।প্লিজ আমার কথায় কষ্ট পাবেন না।আর আপনাকে ধন্যবাদ আমাকে এত সুন্দর একটা অনুভূতি গিফট করার জন্য আমাদের জীবনে পূর্ণতা এনে দেবার জন্য আপনি ভাবতে পারবেন না আমার কত খুশি লাগছে। আমি আমি বাবা হবো আমার নুহা মা হবে আমাদের একটা হ্যাপি ফ্যামিলি হবে আর এইটা একমাত্র আপনার জন্য সম্ভব হয়েছে। থ্যাংক ইউ সো মাচ ফিমা থ্যাংকস আ লট বলে ফিমার কপালে একটা দীর্ঘ চুমু খেলো।এই প্রথম ফিমার কাছে মাহিয়াতের ছোঁয়া পবিত্র মনে হলো এই ছোঁয়ার ছিলোনা কোনো কামনা ছিলোনা অন্য কারো জন্য ভালোবাসা এই ছোঁয়া টুকু একান্তই তার জন্য ছিল ভাবতেই খুশিতে ফিমার চোখ জলে ভরে গেলো।আর এই বিষাদময় জীবনে এক টুকরো সুখ অনুভব করলো।


প্রতিদিনের নিয়ম মত মাহিয়াত নুহাদের বাড়িতে গেলো। কলিং বেল চাপতেই নুহা এসে দরজাটা খুলে দিলো মাহিয়াত নুহাকে দেখার সাথে সাথে তাকে জাপটে ধরলো আজ কতগুলো মাস ভালোবাসার মানুষটি তার ধরা ছোঁয়ার বাইরে। বিভিন্ন চিন্তা আর নুহার অনুপস্থিতিতে শান্তিতে একটু ঘুমাতে পারে না সে। কিন্তু আজ থেকে সে চিন্তা মুক্ত এখন শুধু অপেক্ষার পালা।

—কি হচ্ছে কি মাহি ছাড়ো কেউ দেখে ফেলবে।

—আজ আর নো বাহানা আমার কুইন।আজ এত সহজে ছাড়ছি না।আর কেউ দেখে ফেলবে এই ভয় কবে থেকে পাউ তুমি হু হু?আর দেখলেই বা কি? তোমার বর তোমাকে ধরে রেখেছে পরপুরুষ তো আর না।

—মাহি ছাড়ো বাবা বাড়িতে আছেন।

—হুম তাহলে রুমে চলো,আজ আমি তোমার সাথে থাকবো আর কোনো নিষেধ শুনবো না। অনেক দিন ঠিক ঠাক ঘুমাতে পারি না।

—কেনো বউ বুঝি ঘুমাতে দেয় না?

মাহিয়াত নুহাকে ছেড়ে দিলো নুহা কথা না বাড়িয়ে তার ঘরের দিকে চলে গেলো আর মাহিয়াত অদ্ভুত দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইল তার যাওয়ার পানে, হঠাৎ মাহিয়াতের রাগ উঠে গেলো নুহার এমন উদাসীনতার মানে কি? সে দ্রুত পায়ে নুহার ঘরে গিয়ে তার এক হাত টেনে তার দিকে ফেরালো,

—সমস্যা কি তোমার? আমার সাথে তুমি এমন উদ্ভট ব্যবহার করছো কেনো? কি করেছি আমি? তোমার দেয়া কথা রেখেছি, তোমাকে ভালোবাসার প্রমাণ দিতে গিয়ে বিয়ে করিছি।আর কি চাও তুমি বলো তোমার সব কথা রেখেছি তবুও আমি কেনো বার বার তোমার অবহেলা সহ্য করবো?আর তোমার কথা অনুযায়ী কিছুদিন পর আমাদের সন্তান দুনিয়াতে আসতে চলেছে তারপরও কি সমস্যা তোমার?

নুহা হাত ঝাড়া দিয়ে ছাড়িয়ে বললো,
—এখানেই আমার সমস্যা মাহি। এখানেই আমার সমস্যা ঐ মেয়ে তো আর এমনি এমনি প্রেগন্যান্ট হয়নি তুমি তাকে ছুয়েছো, গভীর ভাবে ছুয়েছো আমাকে যেভাবে আদর করো তাকেও করেছো, তাই তোমাকে আমার সহ্য হয় না। কিভাবে পারলে তুমি ঐ মেয়ের সাথে রাত কাটাতে একবারও কি আমার কথা মনে হয় নি?আমার তো মনে হয় তুমি আমাকে কখনো ভালোই বাসনি। ভালোবাসলে আজকে আমার এই দিন দেখতে হতো না।

নুহার কথা শুনে মাহিয়াত করুন সুরে বলল,
—সত্যিই কি আজকের এই দিনের জন্য শুধু আমি দায়ী তুমি দায়ী নও নুহা। আমি তো বিয়ে করতে চাই নি, তুমি ব্লাকমেইল করছো। তোমাকে নিয়ে দূরে চলে যেতে চেয়েছিলাম,তুমি গো ধরে বসেছিলে বিয়ে করতে হবে বাচ্চা জন্ম দিতে হবে নইলে ডিভোর্স দিয়ে দিবে।আর ছোঁয়ার কথা বলছো তো? তার জন্যও কি তুমি দায়ী নও? দিনের পর দিন তোমার ধারে কাছে ঘেঁষতে দাওনি কাছে টেনে নিলে এরিয়ে চলেছো।আরে দিন শেষে আমিও একজন পুরুষ মানুষ আমারো কিছু ফিজিকাল নিড আছে যখন নিজেকে সামলাতে পারিনি তোমার কাছে ছুটে এসেছি তুমি কি করেছো। দূর দূর করে তারিয়ে দিয়ছো নানান বাহানায় এরিয়ে গিয়েছো।আর তুমি কি মনে করো এসবের কারণ আমি জানি না?আমি সব জানি তুমি ইচ্ছে করে আমাকে তোমার কাছে ঘেঁষতে দাওনি নানান অপমান মূলক কথা বলেছো উস্কে দিয়েছো যেন আমি রাগে জেদে বা বাধ্য হয়ে ফিমার কাছে যাই আর তোমার উদ্দেশ্য সফল হোক।

আর হয়েছেও তাহলে?এখন কেনো আমাকে সহ্য করতে পারো না? আমার কি দোষ? আমি কি মানুষ না?আমার কি মন নেই একটুও ভালো থাকার অধিকার নেই? এতদিন তো তোমাদের কথা মত সব হলো তাহলে এখন বলো আমার ভবিষ্যতে আর কি করতে হবে?আর কি করলে তুমি সন্তুষ্ট হবে?আর কত ভাবে তোমাকে ভালোবাসার পরিক্ষা দিতে হবে তুমি বলে দাও।বলে মাহিয়াত দুই হাত দিয়ে মুখ ঢেকে বসে পড়লো।তার শরীরে আর শক্তি নেই সবাইকে খুশি করতে করতে সে ক্লান্ত তারপরও কারো মন পাচ্ছেনা কি করবে সে?আর আজতো নুহা বলেই দিলো তাকে তার সহ্য হয় না।এই কথা শোনাই বাকি ছিল।

এদিকে নুহা ক্লান্ত পায়ে কান্না করতে করতে মাহিয়াতের পাশে বসে তার বুকে মাথা রাখলো,
—সরি মাহি আমি আমি বোধহয় পাগল হয়ে যাবো।কি করবো বলো তোমার সাথে অন্য কাউকে মেনে নিতে পারিনা। ইনসিকিউর ফিল করি আমার মনে হয় তুমি আমার থেকে দূরে চলে যাচ্ছো। তোমার কি মনে হয় তোমার সাথে এমন করে আমি খুব ভালো আছি?না নেই আমি একটুও ভালো নেই। একদিন ঠিক মত ঘুমাতে পারি না। কিছু ভালো লাগে না। কিন্তু কি করবো বলো।তোমাকে হারাতে চাই না যে, তাইতো এই কষ্ট সহ্য করছি। আজ যদি এমন না করতাম তাহলে আমাদের সারাজীবন নিঃসন্তান হয় কাটাতে হতো।আজ হয়তো তুমি কিছু বলবে না কিন্তু একসময়ের তুমি নিজেও একটা সন্তানের জন্য হাহাকার করবে,কষ্ট পাবে মনে মনে ঠিক আফসোস করবে আমাকে দোষারোপ করবে আমার জন্য তুমি বাবা ডাক শুনতে পারোনি। আর যদি বাচ্চা এডেপটর করতাম তাহলে কি তারা নিজের সন্তান হতো কখনোই না।এক সময় যখন সে সত্যিটা জেনে যেত আমাদের কাছ থেকে আস্তে আস্তে দূরে সরে যেত। আমারা কষ্ট পেতাম তুমি কষ্ট পেতে সেটা আমি নিজ চোখে দেখতে পারতাম না।আর এমন আরও নানান ছোটখাটো সমস্যা আমাদের মধ্যে বিশাল দেয়াল হয়ে দাঁড়াতো।সম্পর্কে ফাটল ধরত, তোমাকে চিরদিনের জন্য হারাতাম।যা আমি কিছুতেই সহ্য করতে পারব না তাই এতকিছু করা প্লিজ তুমি আমাকে ভুল বুঝনা আমি দুজনের ভালো থাকার দিকটা চিন্তা করেই এমন করেছি।আর তখন তোমার সাথে এমন আচরন করতে চাইনি কিভাবে যেন সব বলে ফেলেছি। আমি জানি তো সব দোষ আমার প্লিজ আমাকে ভুল বুঝো না।আই লাভ ইউ মাহি আমি তোমাকে অনেক ভালোবাসি। আমি কখনো তোমাকে হারাতে পারব না। কখনো আমাকে ছেড়ে যেও না তাহলে আমি মরে যাব।

মাহিয়াতও নুহাকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরলো,
—আমিও তোমাকে ভালোবাসি নুহা। কখনো ছেড়ে যাবো না শুধু একটাই রিকোয়েস্ট কখনো আমাকে ভুল বুঝ না অবিশ্বাস করো না।

—হুম,
নুহা কিছুক্ষণ চুপ থেকে বলল,
—মাহি আমরা খুব শীঘ্রই বাবা মা হবো তাই না? তারপর সব ঝামেলা থেকে মুক্তি পাবো আর মাত্র কয়েক মাস তারপর আমাদের জীবনে কোন তৃতীয় ব্যক্তি থাকবে না। শুধু আমি তুমি আর আমাদের সন্তান থাকবে আর কেউ না সব আবার আগের মত হয়ে যাবে তাই না?

—হুম। কিন্তু তুমি কিভাবে জানলে?

—মা বলেছে।

—ওহ,

সেদিনের পর মাহিয়াত আর নুহার সম্পর্ক কিছুটা স্বাভাবিক হয়ে এসেছে কিন্তু ফিমার অবস্থা দিনকে দিন খারাপ হতে লাগল। কোনো কিছু খেতে পারে অনেক কষ্টে আজমীন কিছু খাওয়ালেও সাথে সাথে বমি করে দেয়। তাছাড়া মাথা ব্যাথা,পেট ব্যাথা আর মুড সুইং তো আছেই।মাহিয়াত এখন আর তার সাথে থাকে না তার বেডরুমেই থাকে।সে এমনিতে ফিমার জন্য প্রয়োজনীয় ফল সবজি ঔষধ সবকিছু ঠিকঠাক ভাবে আনে কিন্তু সরাসরি তার সামনে আসে না তাকে এক প্রকার এরিয়ে চলে যা ফিমাকে আরো বেশি পোড়ায়।ধিরে ধিরে মাহিয়াতের উপর সে দূর্বল হয়ে পরেছে।সে মাহিয়াতকে ছাড়া কিভাবে থাকবে? তার বাচ্চাকে ছাড়া কিভাবে থাকবে? এই সব চিন্তায় আরো বেশি অসুস্থ হয়ে যায়। আর মাহিয়াত প্রত্যক্ষভাবে তার সামনে না আসলে ও পরোক্ষভাবে মায়ের কাছ থেকে পুরোপুরি খোঁজ খবর নেয়।

ফিমার প্রেগনেন্সির পাঁচ মাস একদিন হঠাৎ সিড়ি দিয়ে নামার সময় ফিমা সেন্সলেস হয়ে যায়…

চলবে…

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here