একজীবন পর্ব ৩

একজীবন
পর্বঃ ৩

ফণা তোলা গোখরোর মত খশরুর নোংরা হাতটা যেন ছোবল দেয় আমার বাম হাতের ওপর। ওর হাতের ভেতর আমার কব্জিসহ হাত ডুবিয়ে নিয়ে কচলাতে শুরু করে ইতরটা, ফিসফিস করে বলে-

‘তর হাতটা কী নরম রে অরু…হাতেই যদি এত সুখ তাইলে…’

প্রচণ্ড রাগে সারা গা জ্বলছিল তখন আমার, একটা বিবমিষা আর বমি বমি ভাব উগলে আসছিল পেট বেয়ে, ডান হাত দিয়ে সজোরে খশরুর হাতে চিমটি কাটি আমি। ‘আআহ’- শব্দ করে ঝটকা দিয়ে হাতটা সরিয়ে নেয় খশরু, সেই ফাঁকে দৌড়ে নিজের ঘরে চলে আসি। দরজা বন্ধ করে দ্রুত জায়নামাজটা পেতে নামাজে দাঁড়িয়ে যাই। সাত বছর বয়েস থেকে আমাকে নামাজ পড়তে শিখিয়েছেন আমার মা, অসুস্থ হয়ে মৃত্যুর আগে বারবার বলে গেছেন- ‘আল্লাহর হাতে তোরে দিয়ে যাইতেসি মা, যখনি বিপদ আপদ দেখবি, নফল নামাজ পইরা আল্লাহর কাছে হাত পাতবি…’

নানা-নানী অনেক আগেই গত হয়েছেন। আমার মা তাদের একমাত্র সন্তান হওয়াতে মামা-খালাদের জোরটাও নেই আমার! নূরজাহান দাদী, যিনি দু’সপ্তাহ যাবত এ বাড়িতে এসে রয়েছেন, তার পক্ষেও আমার খাওয়া-পরা, আর পড়ালেখার দায়িত্ব নেয়া সম্ভব না! এই বাড়ি ছেড়ে যদি পালাতেও চাই, তবু কোথায় যাব আমি? আমি জানিনা এই ভয়াবহ বিপদ থেকে কীভাবে উদ্ধার পাওয়া সম্ভব, আল্লাহ তো আর ম্যাজিক করে কারো বিপদ দূর করেন না কিন্তু চোরকাদার মত চারদিক থেকে যে অমাবস্যা আমাকে ঘিরে ফেলছে, এর থেকে মুক্তি পেতে হয়ত ম্যাজিক ই লাগবে!

নামাজ শেষে সিজদায় যেয়ে কাদছিলাম একমনে, বাহির ঘরে তখনও হাসিঠাট্টার আওয়াজ কানে আসছে। হঠাৎ মনে হলো মাথার ওপর কিছু একটা উড়ে এলো, খসখস শব্দে চুলের ওপর ছুটাছুটি করছে কিছু একটা। মাথা তুলতেই দেখি সেই কাগজটা- আনিস বুড়োটা যাবার আগে যেটায় তার ফোন নাম্বার লিখে দিয়ে গিয়েছিলেন! আচমকাই বিদ্যুৎ খেলে যায় মাথায়… সম্ভবত এটাই শেষ উপায় নিজেকে বাঁচানোর!

পা টিপে টিপে বাবার ঘরে চলে যাই পেছনের বারান্দা দিয়ে, সবাই তখনো বাহিরের ঘরে খাওয়াদাওয়ায় ব্যস্ত! কাপা হাতে বাবার ফোনটা তুলে নিয়ে ডায়াল করি…০১৯২…

জলদগম্ভীর একটা গলার শব্দ ভেসে আসে ওপ্রান্ত থেকে- ‘হ্যালো, আসসালামুআলাইকুম!’

-‘কিরে নাতিন, ব্যাগে এইসব ভরতাসস ক্যা? জামা কাপড়, চিরুনি…কই যাবি? হারামজাদা খশরুটা কি আজকাই তরে নিয়া যাবার চায়? অর কান দুইটা ধইরা…’

-‘আস্তে দাদী! খশরু এখনো কিছু বলেনাই, তুমি এইদিক শুনো…কাউরে বলবানা কিন্তু! আজকে ফাঁকফোকরমত বাড়ি ছাইড়া যাবগা আমি, তুমি যেমনে পারো সাহায্য করো।’

-‘বয়সী জোয়ান মাইয়া, একলা একলা কনে যাবি? তর কি মাথামুথার ঠিক আছে ছেমরি? এক খশরুর পাল্লা ছাড়তে রাস্তায় নামবি? হেইখানে হাজার হাজার খশরু..’

-‘থাকুক হাজার হাজার খশরু, একটা আনিস ত পাবো নাকি? তুমার সন্নের টুকরা আনিসের ভরসায় ঘর ছাড়তাসি দাদী। আমার কপাল খারাপ হইলে সে আমারে ভাসায়া দিব, ভাইসা যাবো! তাও শেষ চেষ্টা না কইরা হাল ছাড়ব না, বইলা দিলাম!’

দাদীর চোখ ততক্ষণে কপালে উঠে গেছে! মুখে হাতচাপা দিয়ে ফিসফিস করে জিজ্ঞেস করলেন-
‘আনিস ভাই এর কাছে যাবি বইনে? এতদিনে সুমতি হইল তর! আহা, ঘরে আইসিল দেবতা তারে খালি হাতে ফিরায়া দিসস…অহন কিনা আবার তার কাসেই যাবি! যা বইনে যা, আমি ব্যবস্থা কইরা দিমু।’

কীভাবে কী ব্যবস্থা হবে আমিও জানিনা, সম্ভবত দাদীও জানেন না! তবু, ডুবন্ত মানুষ তো খড়কুটো পেলেও আঁকড়ে ধরে।

-‘আপনেরা কাবিন করাইবার চান ভালা কথা, তয় নতুন শাড়ি গয়না ছাড়া আমি নাতিনরে বিয়া দিবার পারুম না!’- বাহির ঘরে লাঠি নেড়ে নেড়ে বললেন দাদী। এদিকে আমি ভেতরের ঘরে সব গোছগাছ করে খাটের তলায় লুকিয়ে রেখেছি। দাদী বলেছেন কিছু একটা ব্যবস্থা করবেন আমাকে বাড়ির বাইরে পাঠানোর, সেই অপেক্ষায়…

-‘এত কিছুর কী দরকার, খালা! আমরা আমরাই ত…’ ছোটমা মিনমিন করেন সামান্য। কিন্তু দাদীর রোখ চেপে গেছে ততক্ষণে।

-‘এইডা কি কইলা ছোটবউ? নিজের মাইয়া হইলে পারতা পুরান কাপড় দিয়া বিদায় দিবার? মুরুব্বির মুখেমুখে তর্ক কর যে আবার? আফনেরা শুনেন, মাইয়ার পছন্দ মত শাড়ি গয়না কিনন লাগব কইয়া দিলাম। আমিও লগে যামু, চলেন অখনি চলেন।’ – নিজের কথা শেষ করেই মাথা নাড়তে নাড়তে দাদী আমার ঘরে চলে এলেন।

-‘কত বড় ব্যাগ বানাইসস নাতিন? বেশি বড় ব্যাগ নেওন যাইবনা, সন্দেহ করব..’

-‘চিন্তা কইরনা দাদী, খালি সামান্য টাকাপয়সা, আমার মায়ের কতগুলা জিনিস আর দুইটা জামা নিসি। আমার হাতব্যাগেই জায়গা নিসে!’

-‘বুদ্ধিশুদ্ধি ত কম না ছেমড়ি! সোন্দর কইরা সব গুছগাছ করসস! কিজন্যি যে অইদিন আনিসরে ফিরাইলি নাতিন…যাকগা, সুজা হাতে ভাত খাসনাই অহন ঘুরায়া খাবি, তাও খা বইন!’ – আপনমনে গজগজ করতে করতে কাপড় পালটে নেন দাদী। গ্রাম থেকে আসার সময় তিনটা শাড়ি আর অল্প কিছু জিনিস এনেছিলেন, ছোট পোটলায় সেগুলো বেঁধে নিয়ে শাড়ির তলায় লুকিয়ে ফেলেন। তারপর বাইরে এসে গলা খাঁকারি দেন-

-‘কিগো খরশুর মা, চলেন বাইর হই!’

দাদীর পেছন পেছন আমিও এসে দাঁড়িয়েছি। খশরুর মা বিরক্তির সাথে বিড়বিড় করতে করতে সোফা ছেড়ে ওঠেন, ইতর খশরুটাও মায়ের পিছুপিছু উঠে দাঁড়ায়।

-‘দাদী আফনে মায়ের লগে যান, আমি আর অরু এক রিশকাত যামু!’- নিচে নেমে দাঁত বের করে বলে ইতরটা।

-‘অই বেদ্দপ পুলা, খবরদার আবজাব কথা কইবিনা! লাঠিডা দেখতাসস? তর পিঠে ভাঙ্গুম কইলাম! বিয়ার আগে এত শখ কিয়ের, নাতিন আমার লগে যাইব। তুই যা তর কটকটি বেগম মায়ের লগে…’

খশরু মুখ কালো করে অন্য রিকশায় ওঠে। দাদীর প্ল্যানটা মোটামুটি বুঝে গেছি আমি, চুপচাপ দাদীর সাথে আমিও রিকশায় উঠে যাই।

-‘অই রিশকাডা আগে যাইব, আফনে পেছন পেছন যাইবেন। তয় আস্তে চালাইবেন, অগো লগে যাইবেন না।’- আয়েশ করে রিকশায় বসেই দাদী বলেন রিকশায়ালা চাচাকে উদ্দেশ্য করে। খানিকদূর যেতেই বেশ অনেকটা তফাত তৈরী হয় দুটো রিকশার মধ্যে।

-‘আনিসে কই আইব? কই নামলে তর সুবিধা হয় বইন?’- দাদী জিজ্ঞেস করেন আমায়।

-‘কমলাপুর স্টেশনে থাকতে বলসি আপনের আনিস দাদাভাইরে। আমারে সামনের আরামবাগ মোড়ে নামায়া দিয়েন, আমি সেইখান থেকে চিনি! কিন্তু আমারে নামায়া দিয়া আপনে বাসায় ফিরবেন কেমনে দাদী? ছোটমা ত আপনেরে ছাইড়া কথা বলবেনা!’

-‘হুর বোকা মাইয়া, আমিও তগো লগে গেরামে যামুগা।অই বাড়িত আর কেডায় আছে যে যামু? তর ভেড়া বাপটারে দেখলেই থাপড়াইতে মনে চায়। আনিস ত আমগো গেরামের ই পুলা, অর লগেই গেরামে যায়া বইয়া থাকুম। তারপর আসুক তর বাপ আর ছোডমা, এক্কারে ধুইরা দিমু!’

-‘বাব্বা, বয়স হইলে কী হইব, বুদ্ধি তো আপনের ষোল আনা দাদী!’

-‘হুহ, নূরজাহান ব্যাগম অত সোজা জিনিস না বুঝসস নাতিন! তাইতো কই,আমার উফরে ভরসা কর, আনিস পোলাডা আসলেও সন্নের টুকরা…ঠকবিনা নাতিন!’

আরামবাগ মোড় থেকে আমরা কমলাপুরের দিকে রিকশা ঘুরাই, খবিশ খশরুরা ততক্ষণে আরেকদিকে রওনা করেছে…

সকাল এগারটার দিকে আনিস মাস্টারকে ফোন দিয়েছিলাম, এখন বাজে প্রায় তিনটা! আধ ঘন্টা যাবত স্টেশনে দাঁড়িয়ে আছি দাদির সাথে, গ্রাম থেকে আসতে সম্ভবত আরও অনেক্ষণ লেগে যাবে আনিস লোকটার! আদৌ কি আসবে সে? দাদীর ‘সন্নের টুকরা’-র ভরসায় প্রতিকূল স্রোতে গা তো ভাসিয়ে দিলাম, এরপর? কিছুদিন আগেই এই আনিসকে প্রত্যাখ্যান করেছি আমি, আজ আমার একটা ফোনে কেন সে সব কাজকর্ম ফেলে এতদূর ছুটে আসবে? ঝোঁকের মাথায় দাদীর আনিস ভাইটির উপর ভরসা করে সব ছেড়ে ত চলে এলাম, এখন যদি সে না আসে তবে কোন চুলায় যেয়ে যে আমার মরতে হবে কে জানে!

আকাশ পাতাল ভাবতে ভাবতে চোখটা লেগে এসেছিলো আমার, কতক্ষণ কেটে গেছে টের ও পাইনি। তন্দ্রা কাটে দাদীর গুঁতো খেয়ে-

-‘ঐ ছেড়ি, আমার উপরে পইড়া যাইতাসস ত! উইঠা সইরা বয়! খিদা লাগসে, তর হাত ধইরা ত এইহানে আইয়া পরলাম, অখন খাওয়াবি না কিছু?’

-‘আপনে আমার হাত ধইরা আসছেন, আর আমি আসছি আপনের সন্নের টুকরা আনিসের ভরসায়। আমারে বইলা লাভ নাই দাদী, অল্প কিছু টাকা আনসি- আপনের আনিসবাই যদি না আসে তখন এডি দিয়াই আপনের আর আমার রাহাখরচ দিতে হইব গ্রামে যাইতে। খানাদানার বিলাসিতা আপনের আনিসবাই আসলে কইরেন নাইলে নাই…’

-‘আবুইদ্যা ছেরি! আনিস তরে কথা দিসে না যে হেয় আইব? তাইলে সে আইবই-ই কইয়া দিলাম। অখন কাউন্ঠামি না কইরা যা অই দুকান থিকা রুটি কিনা আনতো, যা যা…’-লাঠি নেড়ে নেড়ে দাদী একরকম জোর করেই পাশের হোটেলে পাঠান আমাকে। সত্যি বলতে ক্ষিদে আমারো লেগেছে, কিন্তু এই অল্প কয়টা টাকাই আমার সম্বল! আনিস সাহেব আসলে আপাতত একটা সমাধান হতো,কিন্তু এখনই খেয়েদেয়ে টাকা কমিয়ে ফেললে পরে যদি উনি না আসেন, তখন?

সাতপাঁচ ভাবতে ভাবতে দুটো রুটি আর একটা ভাজি দিতে বলি হোটেলে। টাকা দিতে যাব ঠিক তখনই পেছন থেকে ভারী গলায় কেউ গমগম করে ওঠে-

‘আরো দুইটা রুটি আর একটা ভাজি দেন, সাথে ডিমও। বিল আমি দিচ্ছি!’

সেই চেনা কণ্ঠটা! হৃদপিণ্ডটা ধ্বক করে গলার কাছে চলে আসে লাফ দিয়ে, ঘাড় ঘুরাতেই দেখি দাদীর সন্নের টুকরা আনিসভাই আমার পেছনে দাঁড়ানো!

ট্রেনে উঠে বসে আছি আমরা তিনজন- দাদী, আমি আর আনিসভাই! দূরের জার্নিতে আমার বমি হয় সাধারণত, তাই জানালার পাশের সিটটাতে বসেছি আমি। ওদিকে দাদীও আজগুবি বায়না ধরেছেন, তারও জানালার ধারেই বসতে হবে- তাই মুখোমুখি জানালার ধারের সিটটা দখলে নিয়েছেন তিনি। বেচারা আনিসভাই চুপচাপ দাদীর পাশে বসতেই একটা রামধমক খেলেন-

‘অই হতভাগা পুলা, তুই এইহানে বইলে পরে আরেক ব্যাডা আইয়া নাতিনের পাশে বসবো না? জোয়ান মাইয়া, পরপুরুষের লগে ঢেসাঢেসি কইরা এতদূর যাইবনি বেয়াক্কল কোনেকার? যা অরুর ধারে যায়া বয়, যা!’

আনিসভাই কাঁচুমাচু মুখ করে আমার পাশে সরে এসে রীতিমত জুবুথুবু হয়ে বসলেন। জানালা দিয়ে বাইরে দেখছিলাম আমি, আসলে দেখছিলাম বললে ভুল হবে- তাকিয়ে ছিলাম কেবল! একশ ভাবনার ঝড় বইছিল মনের ভেতর, কী ভীষণ অনিশ্চিতের পথে চলছি আমি আজ কেবল আমার মা নেই বলে! আহ, যাদের মা আছে তারা কি কখনও ভেবেছে কত বড় নিয়ামতটুকু তারা বিনামূল্যে পেয়ে যাচ্ছে?

-‘অই ছেরি, চুল সামলায়া বয়! পোলাডার চোখেমুখে বাড়ি দিতাসে চুলে! আর তুই বেটা কাঙ্গালের মত চায়া আছস ক্যা নাতিনের দিকে, আইজ বাদে কাইল ত বিয়াই করবি তহন পরাণ ভইরা দেহিস অরে। তাম-শা!’- দাদীর শাসনবাণে ধ্যান ভাঙে আমার, মুখ টিপে হাসছেন দাদী। আনিসভাই ক্যাবলার মত মাথা নিচু করে ফেলেছেন আমার চোখে চোখ পরতেই, আমিও দ্রুত হাত টেনে নিজের চুলগুলি গুছিয়ে বেধে ফেলি সাথে সাথে। দাদী যে মাঝে মাঝে এমন বিব্রতকর অবস্থায় ফেলে!

-‘তর মায়ে জানে অরে যে নিয়া যাইতাসস বাড়িতে? বিয়া করন ছাড়া ত সোমত্ত মাইয়া ঘরে তুলবার পারবিনা, মাইনষে আকথা কুকথা কইব। দুই-চাইরদিন আমার কাছে থাউক অরুয়ে, তর মায়েরে জানাইয়া আমাগো বাড়িত থিকাই অরে বিয়া কইরা তুইলা নিয়া যাবি।’

-‘দাদী, অরুর এখনো বিয়ের বয়স হয়নাই! আইনগতভাবে এই বিয়ে বৈধ হবেনা। সাবালিকা হওয়া পর্যন্ত সে আপনের কাছেই থাকুক, এরপর নাহয় বিয়েশাদির কথা…’

আনিসের কথা শেষ না হতেই দাদী খেঁকিয়ে ওঠেন-

‘সর সর! ময়রারে আর মিষ্টি বানানি শিখাইস না দাদা! বিয়ার আবার বয়স! অরুর বয়সে দুই বাচ্চার মা হইসিলাম…কালে কালে কত তামশা দেখতে হইব!’

আনিসভাই প্রত্যুত্তরে কিছু বলেনা, খানিক বাদে দাদীই আবার মুখ খোলেন-

‘বিয়া না হইলে এই রুপের রাণীরে আমি আমার কাছে কেমনে রাখুম ক? গেরামে কত রকমের মানুষ, তারচে বড় কথা খশরু দুইদিন বাদে গেরামে ফিরা আইলে তখন অরুরে আমি কেমনে অগো হাত থিকা বাঁচামু! আমার সামর্থ্য থাকলে নাতিনরে আমিই পড়ায়া লেখায়া ডাক্তর বানাইতাম হুহ! আইজ-কাইলের মধ্যে তুই যদি মাইয়াডারে বিয়া কইরা একটা সামাজিক পরিচয় না দেস তাইলে অর আর যাওনের জায়গা থাকব? ভাইবা চিন্তা ক’ দেহি দাদাভাই?’

-‘আহ দাদী! উনার গলায় জোর করে ঝুলায় দিবেন নাকি আপনে আমারে? বাদ দেন না এইসব কথা, কাল পরশু কী হবে সেইটা কাল পরশুই দেখা যাবে…’-

রীতিমত অপমানিত বোধ হচ্ছিল আমার! আমি কি বাজারের মাছ তরকারি নাকি, যে কারো বাড়ির ফ্রিজে ঢুকে তবে আমার গতি হবে নয়ত পচে মরব? আর এই আনিস মাস্টার বুড়োটাও ত কম যায়না! যদিও কথা সে সত্যই বলেছে কিন্তু দাদীর কথাও ত মিথ্যা না! না এই বয়সে আমার বিয়ে হওয়া সম্ভব আর না দাদীর পক্ষে খশরু শয়তানটার হাত থেকে বেশিদিন আমাকে আগলানো সম্ভব…


কপি করা নিষেধ।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here