এক বৃষ্টিস্নাত সন্ধ্যা পর্ব ৪৫+৪৬+৪৭

#এক_বৃষ্টিস্নাত_সন্ধ্যা
৪৫.
#WriterঃMousumi_Akter

নিস্তব্ধতা চারদিকে,কোথাও কেউ নেই যতদূর চোখ যায় শুধু সাদা সাদা কাশফুল দেখা যাচ্ছে।ওর কি প্রেমিক প্রেমিকাদের ভালবাসার সাক্ষী হওয়ার জন্য জন্ম নিয়েছে।না জানি কত প্রিয় দের প্রিয় তম মুহুর্তের সাক্ষী ওরা। চাঁদের সোনালি আলোতে জোসনা বিলাস প্রিয় মানুষ টার সাথে করার মতো সৌভাগ্য সবার থাকে না।আমি বোধ হয় সত্যি খুব লাকি না হলে উনাকে পেতাম না।বিহান ভাই কে বললাম আচ্ছা আমি তো আপনাকে কিছুই দিলাম না।আজ না আমাদের এনিভার্সারী আমার তো কিছু একটা গিফট দেওয়া উচিত।বিহান ভাই বললেন,হুম সিওর দাও আমাকে গিফট। আমি মুখ কাজুবাজু করে বললাম এই মুহুর্তে দেওয়ার মতো কিছুই নেই কাল কিছু কিনে দিবো।উনি জেদ ধরলেন উহু এক্ষনি দিতে হবে আমাকে কিভাবে দিবে আমি জানিনা।মন খারাপ করে বললাম কি দিবো বিহান ভাই কিছুই তো নেই এখানে।বিহান ভাই হেসে দিয়ে বললেন চাইলেই অনেক কিছুই দিতে পারো।তোমার প্রিয় চাঁদ কে সাক্ষী রেখে স্বামি কে একটু আদর তো করতে পারো তাইনা।গিফট কি সব সময় টাকা দিয়ে কিনে দিলেই হয়।উনার কথার মানে খুব ভালোই বুঝলাম আমি।বিহান ভাই কে বললাম একটু নিচু হন। বিহান ভাই খানিক টা নিচু হয়ে আমার মুখের কাছাকাছি আসলেন।ইস কি লজ্জা।উনার সাথে এসব ভাবতেও লজ্জা করে।এক হাত দিয়ে উনার চোখ বন্ধ করে ধরে উনার গালে একটা চুমু দিয়ে দৌড় দিলাম।বিহান ভাই আমাকে ছুটতে দেখে বললেন শ্যামাপাখি এইভাবে দৌড়ালে তোমাকে মনে হচ্ছে কাশবনে নেমে আসা সদ্য কোনো সাদা পরী।এমনিতেই মন প্রাণ শ্যামাপাখিতে আসক্ত। শ্যামাপাখির সাথে কাঠানো সেই সুন্দর রাত টা ধরে রাখার ক্ষমতা আমার নেই তবে ক্যামেরা বন্ধী করতে পারি কিছু মুহুর্ত। যে মুহুর্ত আমাকে বার বার মনে করাবে চঞ্চল এক পাখি তার কিছির মিচির হাসির শব্দে অকৃষ্ট করেছিলো আমাকে।ছুটতে ছুটতে কখন যেনো ধরা পড়ে গেলাম উনার হাতে।বিহান ভাই আমার হাত ধরে গান করছেন এই প্রথমবার উনাকে এইভাবে গান করতে দেখলাম।

Give me your love
Give me your love
Never let you go
Give me your love
Give me your love
Never let you go, go
We get lost, we can get high
You got me gone, I feel alive
Anywhere, anyway I will love you
(You, you, you, you, I will love you)
We rule the world, just you and I
Don’t let me down, we walk the line
When everything’s gone wrong
I take a shot for you (You, you, you, you, you, you)
Give me your love

বিহান ভাই এর গান শুনে আমি উনার দিকে তাকিয়ে হাসছি।আমার মুখে এমন হাসি দেখে বিহান ভাই গাল ভরে হাসলেন।উনাকে এইভাবে এর আগে কখনো হাসতে দেখি নি।বিহান ভাই হেসেই যাচ্ছেন, উনার হাসি দেখে আমি সত্যি অবাক উনি এত হাসতে জানেন।

মেহু আপু একা একা কাশবন দিয়ে ছুটে বেড়াচ্ছে।জোসনার ছবি তুলছে। আমাদের সবার সব থেকে সাপোর্টিং মানুষ টা মেহু আপু।ভাইয়ার সাথে মেহু আপুর বিয়ে টা যেভাবেই হোক দিতেই হবে।

বিভোর ভাই আর রিয়া দুজনে হাত ধরে গল্প করেই যাচ্ছে।আমি বিহান ভাই কে ভয় পাই ওইদিকে রিয়াকে ভয় পায় বিভোর ভাই।

বিভোর ভাই রিয়া কে বলছেন, আমি জানি আগামিবার চান্স পাবে তুমি না পেলেও প্রাইভেটে ভর্তি হয়ে যাবে।একদিন অনেক বড় ডাক্তার হবে।সেইদিন নিয়মিত বিভিন্ন বাহানায় তোমার কাছে পেশেন্ট হয়ে যাবো।গিয়ে বলবো প্রেসক্রিপশন এ লিখে দিন ম্যাডাম ডাক্তারের মুখের হাসি দেখলে সুস্থ হয়ে যায় আমি।

“রিয়া বললো শুধু এটুকুই।”

“হুম এটুকুই জাস্ট এই হাসিতেই আমার সব অসুখ ভালো হয়ে যাবে।”

“আমি ভাবলাম অন্য কিছু।”

“অন্যকিছুটা কি রিয়া।”

“উম্মম্মম্মমাহ বলেই বিভোর গালে রিয়া একটু চুমু দিয়ে বললো ভেবেছিলাম এটা হলে অসুখ সারবে।”

“বিভোর ভাই ভাষাহীন হয়ে গেলেন।বিভোর ভাই ভাবতেই পারেন নি রিয়া এমন টা করবে।বিভোর ভাই গোল গোল চোখ করে রিয়ার দিকে তাকিয়ে বললো রিয়া আমার হার্টে লেগেছে। কেউ মনে হয় তীর মেরেছে।ভূমিকম্পন হচ্ছে।”

“রিয়া হেসে দিয়ে বললো একটা চুমুতেই এই অবস্থা না জানি আরো গভীরে গেলে কি হবে।আপনাকে বিয়ে টিয়ে করে লাভ নেই।আপনাকে দিয়ে কিচ্ছু হবে না।কথায় কথায় যদি হার্টে সমস্যা হয় সারাবছর বিহান ভাই এর পেশেন্ট হয়ে থাকতে হবে।”

“বিভোর ভাই রিয়ার হাত টেনে ধরে নিজের কাছাকাছি নিয়ে এলেন।রিয়ার উষ্ণ নিঃশ্বাস বিভোর ভাই এর চোখে মুখে পড়ছে।বিভোর ভাই এক হাত দিয়ে রিয়ার কোমর জড়িয়ে ধরে আরেক হাতের আঙুল দিয়ে চোখে মুখে স্লাইড করতে করতে বললেন আমাকে এমন মনে হয়। আমি কত বেশী রোমান্টিক দেখতে চাও।আমার থেকে বেশী রোমান্স কেউ পারবে না বুঝলে রিয়া রাণী।সমস্যা তোমার সামনে আসলে আমি বোকা হয়ে যায়।শুধু তোমাকেই দেখি অন্য কোনদিকে হুঁশ থাকে না।”

“রিয়ার সব লজ্জা যেনো নাকের ডগায় গিয়ে ভীড় জমিয়েছে।রিয়া বললো থাক হয়েছে আর দেখতে চাই না বুঝেছি আপনি একজন রোমান্টিক পুরুষ। এবার ছাড়ুন।”

“ছাড়তে পারি আগে বলো ডাক্তার হলে কি আমায় ভুলে যাবে রিয়া।”

রিয়া বিভোর ভাই কে বললো ডাক্তারি পড়বো না। আমাকে বিয়ে করুন আজ ই।

বিয়ে করবো বিহান কে বলবো তোমার আম্মুকে বলতে।

বিহান ভাই কি দিয়া কে ভুলে গিয়েছে আগে সেটা বলুন।বিহান ভাই এর জীবনে দিয়া ছাড়া কিছুই নেই।আমার ও সেইম আপনি ছাড়া কেউ নেই জীবনে।আমার একটাই পরিচয় হবে সেটা হলো মিসেস বিভোর।

বিভোর ভাই খানিক টা স্বস্তি পেলেন রিয়ার কথা শুনে।

———————————————————
ইদানিং লেখাপড়াতে ভীষণ মনোযোগ দিয়েছি রিয়া আর আমি সব সময় বই নিয়েই পড়ে আছি।এবার মনে একটা কনফিডেন্স আছে হয়তো ভালো কিছু হবে।মন ভালো তো দুনিয়ার সব ভালো।বিহান ভাই আমাকে টেনশন মুক্ত করে দিয়ে গেছেন।নিশ্চিন্তে বই পড়ছি।বিহান ভাই এখন সারাক্ষণ কল দেন আমাকে তবে সেটা প্রেম করার জন্য নয় সেটা হলো বই পড়ার জন্য।আচ্ছা উনি কি মাঝে মাঝে ভুলে যান যে আমি উনার বউ।বলতে তো পারে হ্যালো সোনা ক্যামন আছো তা না কাল রাতে যেগুলো বলেছিলাম ওগুলোর পড়া দে।এখন উনার কল একটা আতঙ্কের নাম হয়ে গিয়েছে।উনার মাঝে ইদানিং বর টরের তেমন একটা ভাব নেই।এখন উনি জল্লাদ টিচার আমার।

দুপুর গড়াতেই মেহু আপু এসছে আমাদের বাসায়।আমার রুমে এসে সুয়ে পড়ে বললো দিয়া কয়েকদিন ডিপ্রেশন এ ছিলাম তুই আর বিহান ভাই রিলেশন এ ভাবা যায়।আসলেই কি রিলেশন নাকি তোর মন ভালো করতে এগুলা করলেন।তুই আমার একটা মাত্র ননদ হবি কোথায় তোর বরের সাথে একটু আড্ডা দিবো মজা টজা করবো তা না তুই জাহান্নামের চৌরাস্তা কে জুটিয়েছিস।উনার যে রাগ বাবাহ ভাবলেই ভয়ে পরাণ চমকে যায় আমার।বিহান ভাই সব দিকে ভালো তবুও ভয় লাগে খুব।মেহু আপুকে বললাম আমার ও ভয় লাগে আপু।বাট ছোট বেলার ক্রাশ তাই ভুলতে পারি না।আচ্ছা মেহু আপু বিয়ের পর কি উনি চেঞ্জ হবেন না।মেহু আপু বললো উনি চেঞ্জ হবে ভাবা যায়।যাক বাবা শুভ টা অনেক ভালো রাগ টাগ নেই বেঁচে গেছি।একটা কষ্টের নিঃশাস নিয়ে বললাম হুম আপু আমার কপাল টাই খারাপ।

ফোনে মেসেজের সাউন্ড দেখে ফোন চেক করে দেখি বিহান ভাই মেসেজ করেছেন আমি পথে বাসায় আসতেছি তুই দ্রুত রেডি হয়ে আমাদের বাসায় আয়।আমি যেনো বাসায় গিয়ে তোর মুখ দেখি।

ফোন টা রেখে মনে মনে বললাম আমাকে ডেকে নিয়ে দুনিয়ায় অশান্তি ছাড়া তো শান্তি দিবেন না।না জানি কি কি ভেবে এসছেন।
#এক_বৃষ্টিস্নাত_সন্ধ্যা
৪৬.
#WriterঃMousumi_Akter

মাথায় পেইন হয়েছে এমন একটা ভাব ধরে সুয়ে আছি কেননা বিহান ভাই আবার আগের রুপে অবতরণ করেছেন।এখন উনার মাঝে বর বর কোনো ভাব নেই।এখন মামাবাড়িতে যাওয়া মানেই রিস্ক বিহান ভাই সারাক্ষণ বই পড়াবেন না পারলে অনেক অপমান করবেন।এমন সময় আম্মু এসে আমার হাতে একটা ব্যাগ ধরিয়ে দিয়ে বললো রাস্তায় অটো দাঁড়িয়ে আছে দ্রুত যা তোর মামি একস বার ফোন দিচ্ছে।কাল বিভোরের মামা বাড়ি যেতে হবে তোকেও সাথে নিয়ে যাবে।বিভোর ভাই এর মামা বাড়ি সেখানে তো যেতেই হবে।বিভোর ভাই এর আম্মু অনুরোধ করেছে না গেলে নয়।অটো নিয়ে মামাদের বাড়িতে প্রবেশ করতেই দেখি গেটের সামনে একদল ছেলেদের নিয়ে হেসে হেসে আড্ডা দিচ্ছেন বিহান ভাই।গাল ভরা শান্ত হাসি।আমি অটো থেকে নামতেই চোখে চোখ পড়ে গেলো উনার সাথে।কিছু না বলেই বিহান ভাই দের বাসায় প্রবেশ করলাম।মামি কে দেখি ঝিমুচ্ছে। বললাম এভাবে ঝিমোচ্ছো ক্যানো।মামি বললো এলাট্রল খেয়েছিলাম দিয়া এলার্জির জন্য তাতেই ঘুম হচ্ছে।মামকে বললাম আমার ও হাত পা খুব চুলকাচ্ছে একটা ওষুধ দাও তো।মামি ওষুধ দিলে দুইটা খেয়ে নিলাম।বিহান ভাই খানিক টা রাত না হলে বাসায় ফিরবেন না তাই উনি আসার আগেই ঘুমিয়ে যাবো।উনার হাত থেকে রক্ষা পেতেই ওষুধ খেয়ে নিলাম।

প্রচন্ড ঘুমে ঘুমনগরী তে গিয়ে ঘুমের রাজত্ব করছি আমি।আহা!কি আরামের সাথে পাতলা কম্বল মুড়ি দিয়ে ফ্যান আস্তে ছেড়ে ঘুমোচ্ছি।উপরে ফ্যান নিচে গায়ে সিঙ্গেল কম্বল এর মতো শান্তি অন্য কোনো কিছুতে নেই আমার কাছে।বিহান ভাই সন্ধ্যা রাতে পড়ার জন্য ডেকেছিলেন আমি বলেছিলাম মাঝ রাতে উঠে পড়বো তারপর ই ঘুম আবার।এই ঘুম প্রিয় আমিটার সব শান্তি কেয়ামতে পরিণত হয়ে গেলো,আমার কি শান্তিতে ঘুমোনোর কোনো অধিকার নেই।মধ্যরাতে রুমের বড় লাইট টা জ্বালিয়ে দেওয়ার কি খুব প্রয়োজন ছিলো।কানের কাছে এই অসভ্য এলার্ম ঘড়িটা কে রেখেছে।ক্যাচ ক্যাচ করেই যাচ্ছে ।দুই কানে হাত দিয়ে চেপে ধরে এটে সেঁটে ঘুমোনোর চেষ্টা করলাম।কেননা ভীষণ সুন্দর একটা স্বপ্ন দেখছিলাম চাইছিলাম স্বপ্নের বাকিটা দেখতে।একবার ঘুম ভেঙে গেলে কি আর স্বপ্নের বাকি টুকু দেখা যায় কখনো। কানের মধ্য দিয়া দ্রুত ওঠ নামক বুলি এসেই যাচ্ছে।আমিও কম না চোখে বুজেই রইলাম।সাথে সাথে মাথায় একটা প্লান এসে গেলো যে একটু এক্টিং করবো আমি স্বপ্নের দেশে আছি সেই এক্টিং।বিহান ভাই আমার মুখের কাছে ঝুঁকে এসে আমায় ডাকাডাকি করছেন আমি উনার গলা জড়িয়ে ধরে একটু নেশা নেশা কন্ঠে বললাম,ঘুম না আসা রাতে তুমি আমার কল্পনাতে,জোসনা মাখা চাঁদে তুমি আমার বন্দনাতে।আই লাভ ইউ ইমু, মাই ইমরাণ হাশমি বেবি।চোখ হালকা খুলে তাকিয়ে দেখি উনার মেজাজ চরম পর্যায়ে।বিহান ভাই এর চোখ ক্রমশ রাগান্বিত হচ্ছে।দাঁতে দাঁত চেপে বললেন কি বললি আমি ইমরান হাশমি।তোর কি আমাকে ইমরাশ হাশমির মতো কিস খোর মনে হয়।আমাকে তাহলে তুই এইসব নজরে দেখিস। লাইজ সিরিয়াসলি আমি ইমরাশ হাশমি।উনার মুড দেখে আমি ভয় ও পাচ্ছি আবার এক্টিং ও চালিয়ে যাচ্ছি।গলা আরো খানিক টা জোরে জড়িয়ে ধরলাম,তুমি তো ইমরাশ হাশমির থেকে উপরে বাবু।বিহান ভাই আরো রেগে গিয়ে বললেন আমার গলা ছাড় তুই,এক্ষুণি ছাড় বলছি।এইভাবে গায়ের উপর পড়ছিস ক্যানো?ঘুমের ভান ধরে পড়েই রইলাম।বিহান ভাই বললেন,আমি ইমরান হাশমি তাইনা ওকে বুঝাচ্ছি আমি কি?মনে মনে ভাবলাম কিস টিস করবেন কিনা?বেড থেকে পাজা কোল করে তুললেন ভাবলাম রোমান্টিক কিছু হতে চলেছে কিন্তু নাহ।উনি আমাকে এই ঠান্ডায় ফ্লোরে নিয়ে সুইয়ে দিলেন।দেখলাম ওয়াশরুমে গেলেন উনি ওয়াশ রুম থেকে বেরিয়ে কাল রাতে ভরে রাখা বালতির ঠান্ডা পানি গায়ের উপর ঢেলে দিলেন আর বললেন এইবার এক্টিং করলে এক থাপ্পড় এ দাঁত ফেলে দিবো।।ঠান্ডায় লাফ দিয়ে উঠলাম চিৎকার দিয়ে।ঠান্ডায় কাঁপছি, মানুষ এত জঘন্য কিভাবে হতে পারে।কি এমন পাপ করেছিলাম আমি উনার মতো একজন রাজাকার মামাতো ভাই কপালে জুটেছিলো।মামাতো ভাই তুই মামাতো ভাই এর মতো হবি তুই প্রয়োজনে ফুফাতো বোন কে পটাবি,তার সাথে রোমান্স করবি,সারাক্ষণ প্রেমের সংলাপ বলবি তা না করে তুই ক্যানো সারাদিন থাপ্পড় মেরে দাঁত ফেলে দিতে চাইবি।কোথায় বলবি এত বই পড়ে কি হবে ঠিক ই তো আমার ঘরের ছাই খুলতে হবে তা না করে বলিস লেখাপড়া শেষ না হলে এই বিয়ের কথা কাউকে বলবো না।কোন পাপে বিয়ে করেছিলাম উনাকে আমার কি মনে কিছুই চাই না।এই যে শিত প্রিয় রাতে কোথায় উনার পাশে ঘুবোবো তা না উনার কাছে গেলে ছিটকে খানিক টা দূরে গিয়ে বলেন কি সমস্যা এত গায়ের উপর পড়ছিস ক্যানো?উনার কি বর হওয়ার কোনো অধিকার আছে।দিয়া এই করলার সাথে বাকি জীবন কিভাবে কাটাবি।আবার আমাদের মাঝে একটু দূরত্ব এলেই উনি আশ্চর্যজনক ভাবে সারপ্রাইজ দিয়ে দেন।এই সাংঘাতিক, ভয়ংকর, বিশ্রি,বাজে মানুষ টাকে চেনা সহজ নয়।

আমাকে ঠান্ডায় কাঁপতে দেখে বললেন, কি ঘুম গিয়েছে নাকি আরেক বালতি দিবো।তাতেও ঘুম না গেলে নদীতে নিয়ে যাবো।শাপলার মতো ভিজিয়ে রাখবো তোকে।

কাঁপতে কাঁপতে বললাম,মানুষ ঘুম ভাঙানোর জন্য চোখে মুখে পানির ছেটা দেয় আর আপনি।

উনি বললেন,সেটা ঘুমন্ত মানুষের জন্য নট জাগ্রত মানুষের জন্য।সময় নষ্ট করা আমি একটুও পছন্দ করি না।তোর জন্য আমি ঘুমোই নি আজ।তোকে এক ঘন্টা ধরে ডাকাডাকি করছি আমি আর তুই ইচ্ছাকরে নাটক করছিস।

আমি কি আপনাকে ঘুমোতে নিষেধ করেছি।

উনি বললেন,তোর বুদ্ধি মতো চললে আমার বউ এর ফিউচার অন্ধকার।আমি জেগে না থাকলে তোকে উঠাতাম কিভাবে।এক্ষুণি চেঞ্জ করে নে।আমি তোর পড়া রেডি করছি।

ঘুম ঘুম চোখে ওয়াশ রুমের দরজা খুলে চেঞ্জ করে নিলাম।টেবিলের সাইডে পর পর দুইটা চেয়ার একটাতে বিহান ভাই বসে আছেন অপরটা যে আমার জন্য বরাদ্দ সেটা দেখেই বোঝা যাচ্ছে।উনার পাশের চেয়ার টেনে গিয়ে বসলাম।বিহান ভাই পূর্ণ মনোযোগ দিয়ে হাইয়ার ম্যাথ এর দিকে তাকিয়ে আছেন।এই নতুন বইয়ের আমদানি কোথা থেকে করলেন।এতদিন যত প্রকার বই আছে তার সব করিয়েছেন সাথে রিভিশন ও করিয়েছেন।চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে বললাম আবার ম্যাথ।

উনি আমার দিকে ভ্রু কুচকে তাকিয়ে বললেন তো,তুই তো গাধারাম।ম্যাথ এ যে পরিমান রসগোল্লা পাস তাতে মিষ্টি কেনার কোনো প্রয়োজন নেই।

একটু অপমান বোধ হলো আমার।বললাম,দেখুন আমি এখন সব ম্যাথ ই পারি কম বেশী।

কত পারিস এই বই দেখলেই বোঝা যাবে।উনি কিছু ম্যাথ এ কালি দিয়ে দাগ দিয়ে বললেন এগুলা কর।

চিন্তিত আমি ভীষণ ভাবে চিন্তিত এই মধ্যরাতে আমার মন সায় দিচ্ছে না লেখাপড়া করতে।সেই ক্লাস নাইনে চতুর্থ সাব্জেক্ট হিসাবে নিয়ছিলাম কৃষি শিক্ষা।কারণ হাইয়ার ম্যাথ আমার মনে সায় দিচ্ছে না।কৃষি শিক্ষা সাবজেক্ট নেওয়ার পর নিশ্চিন্ত হয়েছিলাম কিন্তু হঠাত দেখি স্যার আমাকে হাইয়ার ম্যাথ ক্লাসে ডাকছেন।স্যার এর দিকে তাকিয়ে বললাম স্যার আমার তো এ সাব্জেক্ট না।স্যার বললেন বিহান তোমার সাব্জেক্ট চেঞ্জ করে দিয়ে গেছে।বিহান ভাই সব সময় আমার শান্তি নষ্ট করতে উঠে পড়ে লেগে থাকেন।

কলম গালে দিয়ে চিবোচ্ছি আর ম্যাথ নিয়ে ভাবছি কিভাবে করবো এমন সময় কলমের হুক ছুটে গেলো সাথে সাথে কালিতে হাত গাল মুখ ভরে গেলো।হঠাত কি করবো বুঝতে না পেরে কলম ছুড়ে মারলাম হাইরে বিহান ভাই এর সাদা টি-শার্ট এর গায়ে গিয়ে লাগলো।বিহান ভাই এর বুকে গিয়ে লাগতেই কালিতে লেপ্টে গেলো।বিহান ভাই ভীষণ রাগি মুডে তাকিয়ে বললেন এটা কি করলি ষ্টুপিড কোথাকার।তুই কি বাচ্চা এখনো কলম এগুলা করিস।উনি ভীষণ বিরক্ত হয়ে বললেন,একটু পরেই সকাল হবে আমি সাওয়ার নিতে যাচ্ছি এসে যেনো দেখি সব করা হয়ে গিয়েছে।

কয়েক মিনিট পরে ফিরে এসে বললেন দেখি কি কি করেছিস দেখা।উনার খালি গায়ে পানির বর্ষণ আহা কি হ্যান্ডসাম লুকিং উনার।

অল্প বয়সে কাছে বইসা আমায় প্রেম শিখিয়েছো।
পিরিতের বান মাইরা আমার মনটা কেড়ে নিয়েছো।

আমার খাতায় এমন কিছু লেখা দেখে উনার চোখ কপালে।উনিতো এসব গান শোনেন ই না জীবনে।খাতা টেবিলে জোরে৷ বাড়ি মেরে বললেন, এটা কি লিখেছিস আমি কি লিখতে দিয়েছিলাম আর এটা কি।

দেখুন আমাকে মারুন কাটুন যা ইচ্ছা করূন আমার মনের কথা লিখে দিয়েছি।

প্রেম কি আমি তোকে শিখিয়েছি না তুই আমাকে শিখিয়েছিস।

আপনি আমাকে শিখিয়েছেন।না হলে এত অল্প বয়সে আমি প্রেমে পড়তাম না।তাও আবার আপনার মতো একটা করলার প্রেমে তো মোটেও না।আপনি একটা করলা বুঝেছেন।আপনি ছোট বেলা থেকে আমার চোখের সামনে দিয়ে ঘুর ঘুর না করলে কি আমি প্রেম ট্রেম শিখতাম।

কে প্রেম শিখিয়েছে সেটা পরে বলছি তোর মাথায় এটা কি প্যাচানো।আমার ফেভারিট শার্ট দিয়ে চুল মুছতেছিস।হাউ ডেয়ার ইউ দিয়া।তোর ওই তেল চিপচিপে মাথায় আমার শার্ট।

উনার দিকে তাকিয়ে বললাম রোজ শ্যাম্পু করি বুঝেছেন তেল ফেল লাগাইনা।

উনি ক্ষিপ্ত নয়নে তাকিয়ে আছেন।

আবার বিপদে পরলাম এটা উনার শার্ট খেয়াল ই ছিলো না।এখন কি বলি ভেবে চিন্তে বললাম আমার বরের টা আমি নিবো আপনার কি।চুল মুছবো না ঘর মুছবো আমার ব্যাপার।

আমার কথা শুনে আমার ওড়না টেনে নিয়ে উনার মাথা মোছা শুরু করলেন আর বললেন ওকে আমার ও বউ এর ওড়না যা ইচ্ছা করবো।
#এক_বৃষ্টিস্নাত_সন্ধ্যা
৪৭.
#WriterঃMousumi_Akter

এক্সকিউজ মি!আপনি আমার ওড়ণা দিয়ে আপনার ওই জেল ফেল লাগানো চুল মুছতেছেন।আমার ওড়না ছাড়ুন, ছাড়ুন বলছি।কথাটা বলেই উনার দিকে বিরক্তি নিয়ে তাকালাম।

“উনি আমার মুখের উপর ঝুঁকে এসে বললেন, হোয়াট ইজ ইওর প্রব্লেম মিসেস বিহান।বউ আমার,ওড়না আমার বউ এর, আপনি এত রিয়্যাক্ট করছেন কেনো?আমি তো আপনাকে কিছু করছিনা।উনি নিচের ঠোঁট কামড়ে ধরে দুষ্টু হাসি দিতে দিতে বললেন খুব বেশী রিয়্যাক্ট দেখালে গায়ের জামা খুলে মুছতে শুরু করবো।”

“উনার কথা শুনে নিজের দিকে তাকালাম জামা কি আদেও ঠিক ঠাক আছে আমার।উনার পক্ষে অসম্ভব কিছুই নেই।সেটা আমার থেকে ভালো আর কেউ জানে না।ওড়না টানাটানি না করে উনার দিকে তাকিয়ে আছি আমি।বলতে লজ্জা লাগলেও তার লুকিং কিন্তু সো হট।পা থেকে মাথা পর্যন্ত তাকিয়ে আছি আমি পরনে থ্রি কোয়ার্টার প্যান্ট, গায়ে লাল গেঞ্জি, পুরা শরীর ভিজে আছে মাথার চুল ভরা পানি,সদ্য সাওয়ার থেকে আসা একটা হ্যান্ডসাম ছেলে দেখেতে কেমন লাগে বোঝায় যাচ্ছে।উনি চোখ ইশারা করে বললেন কি ভাবা হচ্ছে ভাবুক মহিলা।”

“উনার দিকে কেনো তাকিয়ে আছে সেটা না বলে বললাম,ভাবছি আপনি কোন লজিক এ মধ্যরাতে হাইয়ার ম্যাথ এ করতে দিলেন।আমার এডমিশনে কি হাইয়ার ম্যাথ আছে?তবুও আপনি আমাকে কেনো এই বিশ্রি সাব্জেক্ট করতে দিয়ে হেনস্হায় ফেললেন।তাও আবার আমার শান্তির ঘুম নষ্ট করে।”

“উনি ভ্রু কুচকে বললেন,তোর শরীরে কি এলার্জি আছে ভয়ানক মহিলা একটা।তাও দুই দুইটা এলার্জির ওষুধ খেয়েছিস।ওষুধ খেয়ে নাক ডেকে ঘুমোচ্ছিস।তুই জানিস অহেতুক ওষুধ খেলে শরীরের জন্য কত ক্ষতিকর।তুই কি তোর বাপ দাদার মতোই হয়েছিস পুরাটা।খান শুধু বংশে না কাজে কামে রাজাকার দের কোনোকিছুতে কম না।ইয়াং জেনারেশন এর সর্বনাশ করতেই তোর আর তোর গুষ্টির জন্ম।”

“বুঝলাম না উনি কোন কথা থেকে কোথায় চলে গেলেন।আর এখন কি কি লজিক দিবেন।উনার দিকে তাকিয়ে বললাম আমার বংশ কি আপনার বাড়া ভাতে ছাই দিয়েছে।বাপ,দাদা কে কি করেছে আপনার।”

“না এইযে ওষুধ খাবি তুই আর তোর কিছু হলে সমস্যা তোর বাপের জামাই এর।তোর বাপের জামাই এর একমাত্র বউ এর কিছু হলে তার একমাত্র জামাই টেনশনে টেনশনে ডিপ্রেশন এ চলে যাবে।তার মানে একটা ইয়াং ছেলে ডিপ্রেশন এ যাবে। একটা ছেলে ডিপ্রেশন এ যাওয়া মানে একটা একটা জেনারেশন এর ক্ষতি।”

“বলছি ডাক্তার না হয়ে কুটিল, জটিল ব্রেইনের পুরুষ হতেন সেটাই বেটার হতো।এত হাবি জাবি চিন্তা আপনার মাথায়।”

“চিন্তা এখন আরেক টা সেটা হলো এক্ষুণি তুই রাতের খাবার খাবি।রাতে না খেয়েই ঘুমিয়েছিস তুই।খাবার এনেই রেখেছিলাম ঝটপট খেয়ে নে।”

“দেখুন এমনি আমার খাবার খেতে ভাল লাগে না।ভাত মোটেও ভাল লাগে না।এই মধ্যরাতে কিছুতেই খাবো না।”

“তুই খাবি তোর ঘাড় খাবে।তোর বাবাকে বল আমাকে প্রতি মাসে সেলারি দিতে তার মেয়েকে ভাত খাইয়ে দেওয়ার জন্য।কথা দিচ্ছি মুখ দিয়েই খাইয়ে দিবো”

“ইয়াক শুনেই বমি পাচ্ছে।আপনি মুখ দিয়ে দিবেন আর আমি খাবো।কারো খাওয়া প্লেট মগে তাই আমি খাই না।আর কারো মুখের তা।ছিঃভাবতেই গা গোলাচ্ছে আমার।”

“উনি কপাল কুচকে বললেন,আসলেই পুচকে তুই সেটা তোর কথাবার্তায় প্রমানিত।বলেই উনি ভাত মাখিয়ে আমার মুখে পুরে দিয়ে বললেন খেয়ে নে আগে।না খেয়ে খেয়ে ওজন হচ্ছে ৩৫ আমার ওজন জানিস কত ৭৫ কেজি।আমার অর্ধেক ও না।কিছু না হোক আমার সাথে ওজন এর ব্যালেন্স টা ঠিক ঠাক রাখ নইলে সমস্যা আছে ফিউচারে।”

“আমি অবুঝ বাচ্চাদের মতো ভাত খেতে খেতে বললাম কিসের সমস্যা বিহান ভাই?আর আমি পুচকে ক্যানো?..”

“ক্যানো পুচকে সেটা বুঝিস না। এখনো আমাকে ভাই ডাকিস তুই।আমি কি তোর জাতীয় ভাই নাকি।তোর বাপের সম্পত্তির ভাগ তো পাবো না।পাবো তার মেয়ের ভাগ আমি।কোনো বউকে দেখেছিস বর কে ভাই ডাকতে।”

“আপনি কোনো বরকে দেখেছেন মধ্য রাতে বউ কে ডেকে তুলে রোমান্স না করে পড়াতে বসাতে।খোজ নিয়ে দেখেন এই মধুর রাতে বর রা বউ দের কত্ত আদর করে।”

“তোর সাথে রোমান্স করতে গেলে তুই এই জেলার মানুষ এক জায়গা করে ফেলবি।আমার মান ইজ্জত যা আছে সব জাবে। তোকে কি আমি চিনি না।মুখের খাবার দিতে চাইলে যে বমি করতে চায় সে কি বুঝবে রোমান্স এর। এসব গভীর ভালবাসা বোঝার বয়স তোর হয় নি বুঝলি।”

উনি যে কি বললেন আসলেই বুঝি নি আমি।বিস্তারিত জানতে ও চাইলাম না আমি।।কি বলতে কি বলবে তার ঠিক নেই।খাওয়া শেষ হলে বিহান ভাই আমাকে বিছানায় নিয়ে বসালেন।উনি সুয়ে পড়লেন আর আমাকে বললেন পা টিপে দে ভাল ভাবে।উনার কথা শুনে আমার চোখ কপালে কি বলে এখন আমি পা টিপবো।বিছানা থেকে এক লাফে নেমে বললাম অসম্ভব আমি পারবো না।আমার আটচল্লিশ কেজি ওজন কে আপনি পয়ত্রিশ বলেছেন।

উনি আমার হাত টেনে ধরে বিছানায় বসিয়ে বললেন, হাইরে মুটি এত মোটা হচ্ছিস ক্যানো?আগে ভাবতাম যে শুকনো তুই একটা লাথি মারলে নড়াইল থেকে যশোর গিয়ে পড়বি।এখন দেখছি তা আর হবে না।নড়াইলেই থেকে যাবি।তোকে কোলে তুলে নিয়ে প্রেম করা টা আর হলো না।যক গা মধ্য রাতে তোকে খাইয়েছি যাতে তোর গায়ে বল হয় আর আমার পা টিপে দিতে পারিস ভালভাবে।কষ্ট করে খাইয়ে দিয়েছি নে এখন পা টিপে দে।

“উনার এমন প্রস্তাবের জন্য মোটেও রেডি ছিলাম না আমি।এক বাক্য বলে দিলাম দেখুন আমি পারবো না। ”

“দিয়া স্বামির সেবা যত্ন করলে প্রচুর নেকি বুঝলি।এখনি সুযোগ একটু ভাল করার।”

“রাগে রাগে পা টিপছি আর বলছি কোথায় আমাকে নিয়ে একটু রোমান্স করবে তা না পা টেপাচ্ছে।”

“আহ!রোমান্স। কি করি বলতো তোকে দেখে আসলে ওইসব ফিল আসে না দিয়া তাই রোমান্স করতে পারি না।”

“ফিল আসবে কিভাবে আপনার তো সমস্যা আছে।ডাক্তার দেখান না ক্যানো?”

“কি সমস্যা আছে আমার।”

“তা কি আমি বুঝি।মেহু আপু যে কি সমস্যার কথা বললো বুঝলাম নাহ।”

“মান সম্মান তো আমার পুরাই গেছে দেখতেছি।মানে আমাকে নিয়ে এইগুলা আলোচনা হয়।”

“ইয়ে বিহান ভাই মেহু আপু কিসের কথা বলেছে।”

“তোর ছোট মাথায় এসব ঢুকবে না।তুই পা টেপ মন দিয়ে।কাল ই তোর বাবাকে গিয়ে বলবো শ্বশুর মশাই আমার বউ কে আমার হাতে তুলে দিন।”

“মানে।”

“বাংলা ভাষায় বলেছি।”

“ভুলেও না।বাবার এমনি মেজাজ খারাপ।আম্মু ভাইয়া আর মেহু আপুর বিয়ের কথা বলেছিলো শুনেই বাবা আপত্তি করেছে।সে নিজেদের মাঝে আত্মীয়তা করবে না।নিজেদের মাঝে বিয়ে হলে নাকি সম্পর্ক ভাল থাকে না।বাবা চান না তার কোনো আত্মীয়ের সাথে কোনো ঝামেলা হোক।তাই সে এ বিয়ে চাইছে না।এখন আপনি কিছু বললে আরো ঝামেলা হয়ে যাবে বুঝেছেন।”

“তোর বাবার সমস্যা কি?দুজন ভালবাসার মানুষ কে আলাদা করতে উঠে পড়ে লেগেছে।তার মানে আমাদের সময় ও এমন করবেন তাইতো।ভিলেন রাজিব মেনে না নিলে আমাদের বিয়ে হবে না এ নেহি চালতা।হামারা রিস্তা কাভি নেহি টুট গ্যায়া।”

“বাবা কে রাজিব বলছেন।তাহলে আপনি মিশা সওদাগর।”

“হ্যাঁ আর তুই হলি নায়কা নাসরিন।ভালো ভাবে পা টিপে দে আমি ঘুমোলাম।”

পরের দিন সকালে ঘুম ভাঙতেই দেখি আমি বিহান ভাই এর কোলবালিশ জড়িয়ে ধরে ঘুমিয়ে আছি আর উনি রুমে নেই।ঘুম ভাঙতেই অবাক আমি।ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখি সকাল সাড়ে আটটা বাজে।আড়মোড়া দিয়ে বেড থেকে উঠে বেলকনিতে গেলাম।বিহান ভাই কে দেখা যাচ্ছে গেটের বাইরে।বিহান ভাই,বিভোর ভাই আর কয়েক টা ছেলে আড্ডা দিচ্ছে চায়ের দোকানে।সবার মাঝে ওই একটায় মুখের দিকে আমার বার বার তাকিয়ে দেখতে ইচ্ছা করছে।উনার দিকে তাকিয়ে তাকিয়ে দেখছি আর ব্রাশ করছি আমি।কিছুক্ষণ পরে বিভোর ভাই এর আম্মু এসে বললেন দিয়া দ্রুত রেডি হয়ে নে রোদ ওঠার আগেই বেরোবো।

রেডি হয়ে বেরিয়ে পড়লাম ছোট মামির সাথে। সাথে বিহান ভাই আর বিভোর ও আছেন।আমার মুড অফ বিহান ভাই এর সাথে কথা বলছি না।বিহান ভাই জিনিস টা খেয়াল করেছেন যে উনার সাথে কথা বলছি না।মামি আর বিভোর ভাই মিষ্টি কিনতে গেলে অটোর মাঝে আমি আর বিহান ভাই একা রইলাম।বিহান ভাই বলছেন,কাল রাতে কেউ একজন আমার পায়ের উপর ঘুমিয়ে পড়েছিলো।তার গরম নিঃশ্বাস পায়ের উপর পড়তেই আমার ঘুম ভেঙে গেলো।তাকিয়ে দেখি ঘুমন্ত পরী ঘুমোচ্ছে।আস্তে করে কোলে তুলে নিয়ে বিছানায় সুইয়ে দিয়ে আমি বাইরে ডিভাইনে ঘুমোলাম।আমি কোনো উত্তর দিলাম না উনার কথায়।গতরাতে উনার বলা একটা কথা ভীষণ খারাপ লেগেছে আমার।

চলবে,,
চলবে,,

(
চলবে,,

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here