এক শহর ভালোবাসা পর্ব ১৪

#এক_শহর_ভালোবাসা
#পর্ব_১৪
#সুরাইয়া_নাজিফা

“আমি যখন তোমার সাথে ছিলাম সেখানে তোমার বয়ফ্রেন্ডকে ডাকাটা কি খুব জরুরী ছিল?
“আপনি এতো রাগ করছেন কেন।আমার কথাটা তো শুনুন আপনি যেমনটা ভাবছেন বিষয়টা তেমনটা নয়। ”

এতক্ষন দৌড়ানোর জন্য আমি পুরা হাপিয়ে গেছি। ঠিক ভাবে কথাও বলতে পারছিনা। শান বললো,
“ওহ তাহলে কেমন বিষয়টা। আন্সার মি।”

শান কথাটা এতো জোরে বললো যে আসে পাশের মানুষ গুলো আমাদের দিকে অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে। আমি ছলছল চোখে দাঁড়িয়ে আছি। শান একবার আশেপাশে চোখ বুলিয়ে নিয়ে আমার হাত টেনে ধাক্কা দিয়ে গাড়িতে বসিয়ে দিল।তারপর উনি গাড়িতে বসে গাড়ি চালাতে শুরু করল। আমি আবারও বললাম,

“প্লিজ আমার কথাটা শুনুন সৃজন….।”

কথাটা শেষ হওয়ার আগেই শান জোরে গাড়ি ব্রেক করল। আমার দিকে তাকিয়ে চোখ মুখ শক্ত করে বললো,
“লিসেন আর একটা কথাও যদি তুমি বলো তাহলে আমি তোমাকে এখানেই নামিয়ে দিয়ে চলে যাবো মাইন্ড ইট। ”

উনার কথা শুনে আমি একদম চুপ হয়ে গেলাম।বলা যায় না যে পরিমান রেগে আছে তাতে যদি সত্যি সত্যি গাড়ি থেকে নামিয়ে দেয়। আমি বারবার উনার দিকে আড় চোখে তাকিয়ে উনার সাথে অনেকবার কথা বলার চেষ্টা করলাম কিন্তু উনি আমার কথাই শুনল না।

গাড়িটা এসে বাড়ির সামনে দাঁড়াতেই উনি দ্রুত নেমে বাড়ির ভিতরে চলে গেলেন। একবারও পিছনে ফিরে দেখল না।উনি ভিতরে যেতেই আমি ও চলে এলাম। ড্রয়িং রুমটা পুরো ফাঁকা। অন্যদিন মা বসে থাকে ড্রয়িংরুমে কিন্তু আজকে দেখলাম না। আমি রহিমা খালাকে ডাকলাম। ডাকতেই উনি দৌড়ে আসল,

“জ্বী বউমনি। আমারে ডাকছিলেন?”
“হুম মা কই? কোথাও গেছে না ঘরে আছে। ”
“বড় ম্যাডাম তো ঘরেই আছে। উনার মাথা ব্যাথা করতাছিলো। আমারে কইছে মালিশ কইরা দিতে। মালিশ করার পরেই উনি এই কেবল ঘুমাইয়া গেছে। ”
“আচ্ছা তুমি তোমার কাজ করো।”

রহিমা খালা চলে গেল। আমি সিড়ি দিয়ে উপরে উঠছিলাম আর ভাবছিলাম গিয়ে কি মাকে একবার দেখে আসব। না থাক রহিমা খালা তো বললো মা এইমাত্র ঘুমিয়েছে আমি গেলে যদি তার ঘুমের ব্যাঘাত ঘটে। পরে দেখা করে নেবো। তাই ভেবে আমি আমাদের রুমে চলে গেলাম। রুমে একবার উকি মেরে দেখলাম কেউ নেই। হয়তো শান ফ্রেস হতে গেছে। আমি রুমের ভিতরে গিয়ে অন্যরুমে গিয়ে চেন্জ করে নিলাম। চেন্জ করে এসে দেখলাম শান ড্রেসিংটেবিলের সামনে দাঁড়িয়ে। আমি গিয়ে শানের পিছনে দাঁড়ালাম,

“আপনার সাথে আমার কথা আছে। ”
শান আমার দিকে না তাকিয়েই বললো,
“তোমার সাথে আমার কোনো কথা নেই। ”

কথাটা বলেই উনি আমার পাশ কেটে চলে যাচ্ছিলেন আমি দৌঁড়ে গিয়ে ওনার সামনে দাঁড়ালাম। উনি আমার ডান পাশ কেটে যেতে নিতে আমি গিয়ে উনার ডান পাশে দাঁড়ালাম। আবার বাম পাশ কেটে যেতে নিলে আমি বাম দিক থেকে ওনাকে আটকালাম। উনি আমার দিকে রাগি দৃষ্টিতে তাকালেন। যেনো এখনই আমাকে চোখ দিয়েই পুড়িয়ে ছাই করে দিবে।তারপরও আমি প্রচন্ড সাহস নিয়েই ওনাকে বললাম,

“আপনার কথা না থাকলেও আমার কথা আপনাকে শুনতে হবে। আপনি যখন আমার ইচ্ছা না থাকা সত্ত্বেও নিজের কথা শুনতে বাধ্য করেন তখন তো আমি আপনাকে কিছু বলি না। ”

কথাটা বলতেই শান আমার দিকে রেগে তাকালো। উনার চোখ দেখে যদিও প্রথমে ভয় পেয়ে গেছিলাম।কিন্তু পরক্ষনে মনে পড়ল এখন ভয় পেলে হবে না। মনে মনে নিজেই নিজেকে সাহস দিয়ে বুক ফুলিয়ে বললাম,
“একদম আমাকে চোখ দেখাবেন না আমি আপনাকে ভয় পাই না। ”
“ওহ সিরিয়াসলি। তুমি আমাকে ভয় পাওনা?”

বলোই শান আমার দিকে এক পা করে আগাতে থাকলো আর আমি পিছিয়ে গেলাম। হায় আল্লাহ এখন আবার উনি কি করবেন। আমি কাঁপা কাঁপা কন্ঠে বললাম,

“দেখুন আমার কাছে আসবেন না ওখানেই দাঁড়ান আর আমার কথাটা শুনুন। ”
“কেন? কাছে আসলে কি হবে? তুমি তো আমাকে ভয় পাও না। ”

বলে উনি আমার দিকে আরো এগিয়ে আসলেন। আমি পিছাতে পিছাতে দেওয়ালের সাথে গিয়ে ঠেকলাম। কিন্তু আমার কথা থেকে একবিন্দুও নড়লাম না।

“হুম পাই না আপনাকে ভয়।”
শান একদম আমার কাছে এসে দাঁড়ালো,
“তাহলে পিছিয়ে যাচ্ছো কেন এগিয়ে আসো আমার দিকে দেখি তুমি কতটা সাহসী। ”

শানের গরম নিঃশ্বাস আমার মুখে এসে পড়ছে। উনার আর আমার মধ্যে এখন মাত্র কয়েক ইঞ্চির দূরত্ব আছে। আমি আমার চোখ বন্ধ করে নিলাম। আমার প্রচুর ভয় লাগছিলো। আমি জানি উনি আমাকে দূর্বল করার জন্য এসব করছে। কিন্তু আমি উনার চাল সফল হতে দিবো না। আমার কথা আজকে উনাকে শুনতেই হবে। আমি চোখ বন্ধ রাখা অবস্থাতেই বললাম,

“সৃজনের সাথে আমার কোনো সম্পর্ক নেই। আমাদের ফ্রেন্ড তানিশার জন্মদিন দুইদিন পর। ওর জন্যই গিফট কিনতে গিয়েছিলাম। আর ওখানে সৃজনকে আমি ডাকিনি। কারণ যেই মলে সৃজনের সাথে দেখা হয়েছিল সেখাবে আপনি নিয়ে গেছিলেন আমার ইচ্ছা অনুযায়ী যাইনি। তাই সেটার দোষ আপনি আমাকে দিতে পারেন না। ওটা সম্পূর্ন একটা কাকতালীয় ঘটনা। ”

কথাটা বলেই আমি একটা জোরে নিঃশ্বাস নিলাম। কারণ এতক্ষন কথা গিলো আমি এক নিঃশ্বাসে বলেছিলাম। কেউ আমাকে শুধু শুধু ভুল বুঝবে সেটা আমি মানতে পারবো না। এখন একটু হালকা লাগছে বলতে পেরে।

শান হা করে সোহার মুখের দিকে তাকিয়ে আছে। শানের রাগ তো তখনই কমে গেছিল যখন সোহার চোখে পানি দেখেছিল। শান প্রথমে সৃজনের সাথে দেখে রাগলেও পরক্ষনেই মনে পড়ল যে না সোহা কি করে কাউকে ডাকবে ওখানে তো আমিই নিয়ে আসলাম। শান চেয়েছিল সোহা নিজের মুখে এই কথাটা বলুক।এতে শানের অনেক অজানা কথাই পরিষ্কার হয়ে যাবে শানের কাছে। তাই সোহার সাথে এতক্ষন মিথ্যা মিথ্যা রাগ করার অভিনয় করছিলো।শান এখন হান্ডেড পার্সেন শিউর সোহার কোনো বয়ফ্রেন্ড নেই। যদি থাকতোই তাহলে আমি রাগলাম কি খুশি হলাম সেটার ধারও ধারত না। সোহাকে শান খুব ভালো করে চিনে সোহা কখনো নিজের উপরে মিথ্যা অপবাদ সইতে পারেবা। যতক্ষন না ও ওর নির্দোষ হওয়ার প্রমাণ দিতে না পারবে ততোক্ষন তার পিছন ছাড়ে না।শানের প্লানটা এতো ইজিলি কাজ করে যাবে কল্পনা করেনি শান। ভাবতেই শানের প্রচন্ড হাসি আসল কিন্তু নিজেই নিজের ঠোট কামড়ে হাসিটা আটকে নিলো।

অনেকক্ষন পরেও যখন কারো সাড়া শব্দ পেলাম না আমি আস্তে করে আমার এক চোখ মেলে তাকালাম। কিন্তু না শানকে আমার আশেপাশে কোথাও দেখতে পেলাম। তাড়াতাড়ি করে চমার দুই চোখই মেলে পুরো রুমে চোখ বুলালাম আশ্চর্য শান পুরো রুমে কোথাও নেই। উদাও হয়ে গেল নাকি অদ্ভুত। কেন ভাবছি আমি উদাও হলে হোক। ফাজিল লোকটা রাস্তায় সবার সামনে আমাকে ধমক দিলো।কেন যে আমি এই হার্টলেস মানুষের সাথে আছি আল্লাহ জানে।

আমি বিছানার একপাশে গিয়ে বসলাম। হঠাৎ মনে পড়ল আচ্ছা উনি আমার কথাটা বিশ্বাস করেছে তো। দূর বিশ্বাস করলে করবে না করলে নাই। আমার বলা আমি বলেছি ব্যাস এটাই যথেষ্ট আমার জন্য।



“মা আসব। ”

শ্বাশুড়ী মা বিছানায় বসে হয়তো কারো ছবি দেখছিলেন। আমি অনেকক্ষন ধরে একা একা রুমে বসে আছি। শান যে তখন বেরিয়েছে এখনও আসার কোনো নাম নাই।তাই ভাবলাম মাকে গিয়ে একটু দেখে আসি উনি ঘুম থেকে উঠল কিনা। তাই চলে এলাম। এসে দেখি সত্যিই মা উঠে গেছে। মা আমার দিকে তাকিয়ে বললো,

“আরে আয় না জিজ্ঞেস করার কি আছে। তোরই তো সব। ”

আমি ঘুটি ঘুটি পায়ে মায়ের কাছে এগিয়ে গেলাম,
“তোমার শরীর কেমন আছে এখন? ”
“এইতো ভালো আছে। বিকালের দিকে শরীরটা একটু খারাপ লাগছিল। রহিমা খেয়াল রেখেছে আমার। তোরা কখন আসলি।”
“এইতো কিছুক্ষন আগেই আসলাম। বাবা কই?”
“উনি তো আজকে বিকালেই ঢাকা গেছেন ব্যবসায়ের কাজে সাম্য যেতে বলেছিল।”
আমি মুখ ফুলিয়ে বললাম,
“আমাকে বললো না কেন?
মা হেসে বললো,
“কেমনে বলবে তোকে? সে তো নিজেই জানত না। তুই শানের কাছে যাওয়ার পরই সাম্যর ফোন এলো আর উনিও ছুটল। ”

তারপরেও আমি একটু মন খারাপ করলাম। হঠাৎ আমার চোখ গেল মায়ের হাতের ছবিটার দিকে। আরশ ভাইয়ার ছবি দেখছিলেন মা। আমাকে ছবির দিকে তাকিয়ে থাকতে দেখে বললেন,

“জানি না কোন পোড়ামুখি আমার ছেলেটাকে টেনে নিলো। আমার আরশ কখনো এমন ছিল না। এতো বড় একটা সিদ্ধান্ত নিলো অথচ বাবা মা কাউকে জানালো না। কি বিষ ঢালছে আমার ছেলের কানে।আমাদের কথা শুনার প্রয়োজন মনে করল না। কি মন্ত্রণা দিছে ওই মেয়ে যে এতদিনও আমাদের কথা একবারও মনে পড়ল না। ”

আমার কান গরম হয়ে যাচ্ছে। কিভাবে শুনবো নিজের বোনের নামে এতো কটু কথা। হয়তো মা না জেনেই বলছে। কিন্তু আমি তো জানি উনি যে মেয়েটাকে এতো খারাপ ভাবছে সে আমারই বোন। আমার বোন তো এতো খারাপ না। শুধু তার একটা ভুল পদক্ষেপের জন্য আজকে তাকে সবাই এতো কথা বলার সুযোগ পাচ্ছে।

আমি একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে বললাম,
“থাক না মা এখন বলে কি হবে? তুমি যেমনটা ভাবছ তেমনটা নাও তো হতে পারে। ”
“নারে মা বর্তমান মেয়েদের তুই চিনিস না।সবাই তোর মতো ভালো না। এরা শ্বাশুড় বাড়ীর কারো সাথেই মিলে থাকতে পারে না শুধু শুধু ছেলেটাকে আলাদা করে দেয়। আমাদের বললে কি আমরা মেনে নিতাম না। ”
আমি মাকে বুঝানোর চেষ্টা করে বললাম,
“মনে করো না মেয়েটা আমার মতোই ভালো। ”
“তুই আমাকে তোর কথায় ভুলাস না। ভালো হলে আমার ছেলেটাকে বুঝিয়ে শুনিয়ে পাঠিয়ে দিতো নিজের কাছে বেধে রাখত না। ”

আমি হতাশ হলাম। উনাদের কি করে বুঝাবো যে চাইলেই সব কিছু আমরা যেভাবে ভাবি সেভাবে হয় না। কিছু কিছু জিনিস আমাদের ভাবনাকেও অতিক্রম করে যায়। যাকে আমরা ভাবনার বাহিরে বলি। সেটা তারা তখন বুঝতে পারবে যখন স্মৃতি আপু আর আরশ ভাইয়াকে একসাথে দেখবে।

আমি মুখ গোমরা করে বললাম,
“আচ্ছা মা যদি আরশ ভাইয়া ওই মেয়েটাকে নিয়ে এই বাড়িতে এসে উঠে তোমরা সবাই কি মেনে নিবে? ”

মা ক্ষিপ্ত কন্ঠে বললো,
“কখনোই না ওই কালনাগিনী আমার সংসারটাকে বাড়িতে ডোকার আগেই ভাগ করে দিছে বাড়িতে ডোকার পর তো আমাদেরকেই বের করে দিবে। ওই মেয়ের কোনো জায়গা হবে না এই বাড়িতে। আর আরশ যদি ওই মেয়েকে ছাড়তে না পারে তাহলে আরশেরও জায়গা হবে না আমার বাড়িতে। ”

আমার অনেক কান্না আসছিলো মায়ের কথা শুনে। এমন হলে আমি কি কডে সব ঠিক করব। আমি যদি এখন এই নাড়িতে থাকি তার একটামাত্র কারণ আমার আপুকে এই বাড়িতে ডুকানো। কিন্তু সেটাই যদি না পারি তাহলে আর এখানে থেকে কি হবে। না আমাকে পারতেই হবে আর আমি সবার মনকে মানিয়েই ছাড়ব। এটা আমি নিজের কাছে নিজেই প্রতিজ্ঞা করলাম।



মায়ের সাথে কিছুক্ষন কথা বলে রুমে চলে আসলাম। রুমপ আসতেই দেখালম শান রুমে । শুধু রুমেই না রিতিমতো আমার বই খাতার উপর চিরুনি তল্লাসি চালাচ্ছে।হয়তো কিছু খুজছে। আমি অবাক হলাম। আমি দৌড়ে গেলাম শানের কাছে,

“কি ব্যাপার কি খুজছেন আমার বইয়ের মধ্যে? ”
“তোমাকে কেন বলবো?”
“বলতে হবে কারণ এই বই খাতা গুলো আমার। ”

শান আমার সাথে একটা কথাও বললো না। আর না আমাদের দিকে তাকালো। আমার দিকে না তাকিয়েই একটা খাতা নিয়ে চলে গেল।আমি উনার দিকে তাকিয়ে মনে মনে অকথ্য ভাষায় গালি দিলাম।হুটহাট আমার সাথেই এমন করে। এতো করে বললাম বিশ্বাসই করল না। এতো অবিশ্বাস নিয়ে মানুষ কারো সাথে সংসার করবে কি করে।

খাতাটা নিয়ে হয়তো উনি কিছু লিখছিলো। আমি টেবিলের সামনে একটা চেয়ার টেনে বসে একটা বই হাতে নিলাম তখনই শান বললো,

“আচ্ছা আমাকে একটা কথা বলো তো তুমি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স পেলে কি করে?”

আমি উনার দিকে চোখ পিটপিট করে ফ্যালফ্যাল দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকলাম।
“মানুষ যেভাবে পায় সেভাবে পেয়েছি। ”

শান এখন আমার দিকে তাকিয়ে বললো,
“মানুষ তো পড়াশোনা করে পায় কিন্তু আমি তো তোমাকে পড়তেই দেখি না কখনো।”

“আপনি জানেন অ্যাডমিশন টেস্টের জন্য আমাকে কত পড়তে হয়েছে। হাড় মাশ কয়লা হয়ে গেছে। আর পারছি না এখন শুধু শান্তিতে থাকতে চাইছি। ”

শান আমাকে টোন কেটে বললো,
“না আমরা যেন পড়া শোনা করিই নাই আমরা জানব কি করে। যাইহোক আজকের পর থেকে তোমাকে যেন আমি নিয়মিত পড়ারটেবিলে দেখতে পাই। আমি চাই না আমার বউ ফেইল করুক মাইন্ড ইট। ”

কথাটা বলেই উনি উঠে চলে যাচ্ছিলেন। আমি উনার দিকে হা করে তাকিয়ে আছি। ইশ,আমার বউ আমার বউ করে মাথায় তুলে ফেলতেছে। তাহলে কেন এখনো রাগ করে আছেন আমার উপর। কেন বিশ্বাস করছেন না আমার কথা। আমার চোখ থেকে এক ফোঁটা পানি পড়ে গেল। শান যেতে যেতেই আবার দাঁড়িয়ে গেল কিন্তু আমার দিকে না তাকিয়েই বললো,

“তোমার চোখে আমি কখনো পানি দেখতে চাই না। একটা কথা মনে রেখ আমি তোমার থেকে বেশী বিশ্বাস কাউকে করিনা। সেটা তুমি যদি সত্যি বলো তাও তোমাকে বিশ্বাস করি আর মিথ্যা বললে তাও তোমাকেই বিশ্বাস করি। আমার ফিরতে লেইট হবে বাহিরে যাচ্ছি কাজ আছে।”

কথাটা বলেই শান হনহনিয়ে চলে গেল। শানের কথাটা শুনেই আমার চোখ থেকে টপটপ করে পানি পড়ে গেল।কিন্তু উনি তো আমাকে কান্না করার মতো কিছু বলেনি। তাহলে কেন কান্নার মধ্যেও খুশি লাগছে আমার । তাহলে এটাকেই কি সুখের কান্না বলে?



রাত প্রায় দশটা হাইওয়ে দিয়ে প্রচন্ড গতিতে একটা গাড়ি চলে যাচ্ছে সাথে ধুলাবালি উড়িয়ে নিয়ে যাচ্ছে টায়ারের সাথে।সামনে কি আছে কি নাই তার কোনো ধারণা নেই। যেকোনো সময় একটা দূর্ঘটনা ঘটে যেতে পারে।হয়তো তার খুব তাড়া আছে কোথাও পৌছানোর।গাড়িটা সে ভুল দিকে চালাচ্ছিলো। তখনই প্রচন্ত গতিতে বিপরীত দিক থেকে একটা ট্রাক এসে পড়ল সামনে।যদি গাড়িটাকে কন্ট্রোল করতে না পারে তাহলে সবশেষ হয়ে যাবে। তার চোখ গুলো বড় বড় হয়ে গেল।ট্রাকটা এগিয়ে আসছে কিন্তু তার গাড়িটা সে কিছুতেই কন্ট্রোল করতে পারল না। তখনই একটা বিকট আওয়াজ এলো গাড়ি থেকে,

“আআআআআআআ।”
.
.
চলবে

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here