এক শহর ভালোবাসা পর্ব ১৫

#এক_শহর_ভালোবাসা
#পর্ব_১৫
#সুরাইয়া_নাজিফা

ঘড়ির দিকে তাকাতে দেখলাম রাত এগারোটা বুঝলাম না এতো রাতে শানের কি কাজ থাকতে পারে। তখনই শ্বাশুড়ী মা হাঁপাতে হাঁপাতে এলেন। ওনাকে দেখে আমি একটু আশ্চর্যান্বিত হলাম । এতো রাত হয়ে গেছে উনি এখনো ঘুমাননি। এতো বড় বাড়িতে আমরা শুধু চারজন মানুষ। আমি, মা, শান আর রহিমা খালা। সেখানে শান তো বাসায় নেই এখন আমরা তিনজন আছি। মায়ের শরীর খারাপ তাই উনাকে খাইয়ে দিয়ে ঘুমাতে বলে আসলাম। কিন্তু উনি না ঘুমিয়ে এখানে চলে আসছে।

আমি মায়ের কাছে গিয়ে বললাম,
“কি ব্যাপার মা তুমি এখনো ঘুমাও নি। তোমাকে না বললাম রেস্ট নিতে। ”
“না ঘুমাচ্ছিলাম তখনই মনে হলো তোর একটা জিনিস আমি নিয়ে গেছিলাম কিন্তু বলা হয়নি। ”
আমি একটু অবাক হলাম আমার মাথায় আসছে না আমার এমন কি জিনিস আছে যেটা উনি নিতে পারে আমি বললাম,
“কি জিনিস? ”
“আরে তোর নাইট ক্রিম।”
এইবার আমি দ্বিগুন অবাক হলাম আর অজান্তেই বলে উঠলাম,
“নাইট ক্রিম মানে? আমি তো কোনো নাইট ক্রিম ইউজ করিনা। ”
শ্বাশুড়ী মা কপাল কুচকে বললেন,
“তুই ইউজ না করলে তোর রুমে আসলো কেমনে? ”
“আমি তো জানি না। ”
শ্বাশুড়ী মা হেসে বললেন,
“দূর পাগলি তুই ব্যবহার করিস কিন্তু তোর মনে নেই হয়তো নাহলে তোর ঘরে পেতাম না। কিন্তু একটু আশ্চর্য হলাম ক্রিমটা অন্য একটা কৌটায় রেখেছিস। ওটার বক্স কই? ”
মায়ের কথা শুনে আমার মাথা ঘুরতে লাগল? কিসের লাইট ক্রিমের কথা বলে যেখানে আমি ইউজই করি না এখন আবার বলতেছে ক্রিমের বক্স চেন্জ করে রাখছি মানেটা কি? আমি শ্বাশুড়ী মাকে ফিরতি প্রশ্ন করে বললাম,
“আচ্ছা কই ক্রিমটা দেখাও তো? ”
শ্বাশুড়ী মা আমার হাতে ক্রিমটা দিলো। ক্রিমটা দেখার সাথে সাথে আমার চোখ কপালে উঠল আরে এটা তে শান আমাকে যেই ক্রিমটা দিয়েছিল ওটা। তাহলে সেটা নাইট ক্রিম। আমি মাকে বললাম,
“তুমি জানো কিভাবে এটা নাইট ক্রিম? মানে বক্সে তো লেখা নাই। আর তুমি এটা পাইছো কই? ”
“আমার ক্রিমটা শেষ হয়ে গেছিল। ভাবলাম তুই কোনো নাইট ক্রিম ইউজ করলে তোর থেকে নিয়ে নিবো। তাই তোর রুমে আসছিলাম কিন্তু তুই বাসায় ছিলি না তাই আমিই একটু খুজে দেখলাম তখনই ক্রিমটা চোখে পড়ল। ক্রিমের মুখ খোলা ছিল তাই দেখতেই বুঝে গেলাম। কারণ আমিও এটাই ইউজ করি। কিন্তু এটা বুঝলাম না তুই এটার বক্স চেন্জ করে অন্য ক্রিমের বক্সে রাখলি কেন? অন্য মানুষ তো বুঝবেই না এটা ইউজ না করলে। ”

শ্বাশুড়ী মায়ের কথা শুনে আমার শরীর রাগে জ্বলে উঠল। উনি না বুঝলেও আমি ঠিক বুঝতে পারলাম যে এটা শানেরই কাজ। শানের কারণেই ওদিন আমি আমার ফ্রেন্ডদের কাছে অপমানিত আর হাসির পাত্রী হয়েছি। আর ওনাকে যখন বললাম উনি এমন ভাবে কথা বললেন যেন উনি কিছুই জানে না। কত বড় মিথ্যুক। চমার সামনে শুধু ভালো সাজার অভিনয় করে। আজকে একবার শুধু বাসায় আসুক তার একদিন আর আমার যে কয়দিন লাগে।

আমি মাকে বললাম,
“আচ্ছা এটার কোনো সাইড এফেক্ট আছে? ”
কথা বলার সময় আমার গলা ধরে আসছিলো। আমি কেনো রকম নিজেকে সামলে নিলাম।

শ্বাশুড়ী মা বললো,
“না। তবে দিনের বেলায় সূর্যের আলো মুখে পড়লে মুখ কালো হয়ে যায়। ”

ব্যাস এটুকুই যথেষ্ট আমার জন্য।শ্বাশুড়ী মায়ের কথা শুনে আমার ওদিনের কান্নাটা আবার বুখ ফেঁটে বের হতে চাইছে। এখন শুধু আমি ওনাকে এটাই জিজ্ঞেস করব যে উনি আমাকে সবার হাসিরপাত্র বানিয়ে কি মজা পেলেন। আমি চোখ বন্ধ করে বড় বড় নিঃশ্বাস নিলাম যাতের রাগের বসে মাকে কিছু না বলে ফেলি।

“আচ্ছা মা এইবার গিয়ে তুমি ঘুমিয়ে পরো। কাল সকালে আমি তোমাকে একবার চেকাপ করিয়ে আনব। ”

“যাবো কিন্তু তার আগে বল শান কই? ”

শানের নাম শুনলেই এখন আমার রাগ বাড়ছে। কিন্তু আমি তো নিজেও জানি না শান কোথায়।শান কখনো এতো রাত অব্দি বাহিরে থাকে না। মাকে যদি সত্যি কথা বলি তাহলে মা চিন্তা করতে পারে। এমনিতেই অসুস্থ মানুষ। তাই আমি সতিটা লুকিয়ে মাকে বললাম,

“মা শান ওয়াসরুমে আছে? কিছু কি লাগবে? ”
“না। দেখি নাই তো এজন্য জিজ্ঞেস করছিলাম। আচ্ছা তোরা ঘুমা সকালপ কথা হবে। ”

মা চলে গেল। আমি ধুম করে বিছানায় বসে পড়লাম। মনে মনে শানের চৌদ্দ গুষ্ঠি উদ্ধার করে দিলাম। এখন যদি শান আমার সামনে থাকত হয়তো উনাকে আমি মেরেই ফেলতাম। এখন শুধু অপেক্ষায় আছি কখন উনি আসবে।



নির্জন রাস্তাটায় কিছুক্ষনের মধ্যে কিছু মানুষ দৌড়ে আসল। যদিও বেশী না রাস্তার আশেপাশে যে কটা দোকান পাট আছে সেখানের মানুষরাই।কারণ এখানে একটা এক্সিডেন্ট হয়েছে। সবাই বলা বলি করছিল যে ভাগ্যিস ঠিক সময়ে ট্রাক ড্রাইবারটা গাড়িটা সরিয়ে নিয়েছিলো। আর গাড়িটা ব্রেক করতে না পেরে সোজা একটা গাছের সাথে ধাক্কা লেগেছে । নাহলে মেয়েটার লাশ ও খুজে পাওয়া যেত না। সবাই দাঁড়িয়ে আছে কি করবে বুঝতে পারছে না কেউ। মেয়েটার শরীরের বিভিন্ন অংশ কেটে গেছে। মাথাটা স্টেয়ারিংয়ে লেগে বেশ খানিকটা ফেঁটে গেছে যেখান থেকে গলগল করে রক্ত বের হচ্ছে। এখনো বেঁচে আছে যদি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় বেঁচে যাবে। কিন্তু একটা মানুষও এগিয়ে আসছে না। সবাই সার্কাশ দেখছে। তারা ভিত পুলিশ কেসের ভয়ে।

তখনই সেই রাস্তা দিয়ে বাড়ি ফিরছিল তিমির । এখানে ওর আর শানের একটা ক্লোজ ফ্রেন্ডের বাসা ছিল। এতদিন পর তিমির এসেছে তাই ওরা ফ্রেন্ডরা মিলে আড্ডা দিলো কিছুক্ষন। শানও ছিল। এইমাত্রই সবাই যে যার বাসায় যাওয়ার জন্য বেরোলো। অনেক রাত হয়ে গেছে। তখনই এতো রাতে এই রাস্তা পাস করার সময় রাস্তায় এতো ভিড় দেখে অবাক হলো তিমির। যদিও এই সময় সচারাচর এই রাস্তায় বেশী মানুষ থাকে না। তিমির রাস্তার পাশেই ওর গাড়িটা দাঁড় করালো। গাড়ি দাঁড় করিয়ে তিমির সামনের দিকে এগিয়ে গেল। দেখতে পেলো একটা ভাঙ্গাচুড়া গাড়ি পড়ে আছে।সেখানেই মানুষের এতো ভিড়। সবাই গোল হয়ে চারপাশে দাঁড়িয়ে। তিমিরের কৌতুহল হলো দেখার যে কি হয়েছে। এক্সিডেন্টের জায়গায় গিয়ে মানুষজন ঠেলে একটু সামনে যেতেই তিমিরের মেয়েটার ড্রেসটা দেখে বড্ড চেনা চেনা লাগল।তিমির একজন লোককে জিজ্ঞেস করল,

“এই যে ভাইয়া এখানে কি হয়েছে? ”
লোকটা তিমিরের দিকে তাকিয়ে বললো,
“এক্সিডেন্ট হইছে ভাই। একটা মেয়ে। আমি বুঝিনা এরা গাড়ও চালাতে না জানলে চালায় কেন। এখনই যদি মেয়েটাকে হাসোতালে না নেওয়া হয় মেয়েটা মরেই যাবে। ”

কথাটা শুনে তিমিরের কষ্ট হলো।এখানে এতো মানুষ অথচ কেউ মেয়েটাকে হাসপাতালে নিচ্ছে না। মানুষ গুলোও অদ্ভুত।তিমির এগিয়ে গেল গাড়িটার দিকে। ওর চোখের সামনে কোনো মানুষ মরে যাবে সেটা ও দেখতে পারবে না। তিমির মেয়েটাকে তুলতে যাবে তখনই ওখানের কিছু লোক তিমিরকে বারণ করলো,

“ধরিয়েন না ভাই। এতে পরে পুলিশের জামেলায় ফাসতে পারেন। কি দরকার অন্যের জন্য নিজের কাধে জামেলা নেওয়ার। ”

কথাটা শুনে তিমিরের অনেক রাগ হলো । তারা নিজেরাও সাহায্য করবে না আর অন্য কেউ করলেও এরা দেখতে পারেনা।তিমির কারো কথা না শুনে মেয়েটার মাথা স্টেয়ারিং থেকে তুললো।যখনই মেয়েটার মুখ দেখলো তিমিরের চোখ বেরিয়ে আসার উপক্রম। তিমির চিৎকার করে বললে,

“ঐশী? এ

তিমিরের মাথা হ্যাঙ হয়ে যাচ্ছে। তিমির ঐশীর গালে দু তিনবার হাত রেখে বললো,
“এই ঐশী তাকাও আমার দিকে কি হয়েছে তোমার? ”

ঐশীর কোনো সাড়া শব্দ পেলো না।তবে ঐশীর কাছে যেতেই এলকোহলের একটা কটু গন্ধ নাকে ঠেকল। তাহলে ঐশী কি ড্রাংক অবস্থায় গাড়ি চালাচ্ছিল। কিন্তু কেন? ও কি জানে না এতে কতো বড় রিস্ক আছে। তিমিরের গা কাঁপছে থরথর করে। তিমির তাড়াতাড়ি ঐশীকে কোলে তুলে নিলো। কোলে নিয়ে নিজের গাড়িতে শুইয়ে দিলো।তিমিরের ভয় করছে ভিষণ। কোনো অঘটন ঘটে যাবে না তো। গাড়িটা স্টার্ট দিলো তিমির হাসপাতালে যাওয়ার উদ্দেশ্যে। যেতে যেতে শানকে কল করল তিমির। দুবার রিং পড়তেই তিনাবারের বার রিসিভড করলো শান।

তিমির চিন্তিত হয়ে বললো,
“শান তাড়াতাড়ি হাসপাতালে চলে আয়। সর্বনাশ হয়ে গেছে। ”

তিমিরের এমন কথা শুনে শান ভয় পেয়ে গেল এইমাত্রই তো সবাই একসাথে ছিল এর মধ্যে আবার কি হলো। শান বললো,
“কি হয়েছে? তোর কন্ঠ এমন শুনাচ্ছে কেন? ”
“আমার কিছু হয়নি তবে ঐশী…? ”

এতটুকু বলেই তিমির থামলো। তিমির কথা বলতে পারছে না ওর গলা ধরে আসছে। ওর চোখ থেকে ঝরঝর করে পানি পড়ছে। তিমিরের এমন ঘুমোট ভাব দেখে শান গাড়ি ব্রেক কশে বিচলিত কন্ঠে বললো,

“কি হয়েছে? খুলে বল আমাকে। ঐশী কি? ”
তিমির কান্না করে বললো,
“ঐশী এক্সিডেন্ট করেছে। তাড়াতাড়ি চট্টগ্রাম মেডিকেলে চলে আয়। আমি সেখানেই যাচ্ছি। ”

তিমির আর কিছু না বলে ফোনটা কেটে দিলো। ওর খুব ভয় লাগছে। ও এখন একটাই প্রার্থনা করছে ঐশী যেন ঠিক থাকে। তিমির ফোন কেটে দিতেই শান দ্রুত গাড়ি ঘুড়িয়ে নিলো বাড়ির এতো কাছে এসেও। কারণ এখন বন্ধুত্বটাই সবথেকে বড়।



রাত প্রায় একটা শানের কোনো খবর নেই। আমি পুরো রুম জুড়ে পায়চারি করছিলাম শানের অপেক্ষায়।যে আসলেই আমি ঝগড়া জুড়ে দেবো। আর আমার প্রশ্নের উত্তর চাইবো। কিন্তু এতো রাতেও যখন শান এলো না তখন ওর জন্য রাগটা আমার চিন্তায় পরিবর্তন হয়ে গেল। শান কোথায় আছে?এতো লেইট তো কখনো করেনা। বুকের মধ্যে কেমন ডিপ ডিপ করছিল।আমি বেশ কয়েকবার ফোন দিলাম বাট শান রিসিভড করলো না। আমার মধ্যে অস্থিরতাটা বেড়েই চললো।শান ঠিক আছে তো?

শানের বাসা থেকে হাসপাতালে পৌঁছাতে ঘন্টাখানিক সময় লাগল। হাসপাতালে পৌছাতেই শান দেখল তিমির উদভ্রান্তের মতো বসে আছে। চুল, নাক, মুখের অবস্থা দেখার মতো না। কান্নাকাটি করে চোখ ফুলিয়ে ফেলেছে। শান তিমিরের কাছে দৌড়ে গেল,

“কিরে ঐশীর কি খবর?কেমন আছে এখন? ”

তিমির ভাবলেশহীন ভাবে তাকালো শানের দিকে। তিমিরকে এতো ভেঙে পড়তে দেখে শানের ভয় লাগছিলো তাহলে কি ঐশীর কিছু বাড়াবাড়ি হয়েছে?

তিমির নির্লিপ্ত গলায় বললো,
“আইসিউতে আছে। ডাক্তার এখনো কিছু বলেনি। তবে আশা করছি সব ঠিক হয়ে যাবে। ”

কথাটা শুনে শান একটা স্বস্তির নিঃশ্বাস নিলো। মনে মনে আল্লাহকে ধন্যবাদ দিলো,
“এটলিষ্ট সব ঠিক আছে। এখন ডাক্তার ভালো কিছু বললেই হয়। ”

তিমির একটা বেঞ্চে বসে পড়ল। চোখ বন্ধ করে দুইহাত দিয়ে মুখটা একটু মুছল। মুখে হাত দিতেই তিমিরের হুশ আসল। ও বুঝতে পারছে না ওর চোখে পানি কেন? তাহলে কিমও এতক্ঢন কাঁদছিলো। ও অবাক হলো ওর নিজের ব্যবহারে দুইদিনের পরিচিত একটা মেয়ের জন্য নিজের চোখে পানি দেখে।

শানও একটু শান্ত হলো। এতো টেনশনে ছিলো যে রাত কত হয়েছে জানা নেই। কিন্তু বাহিরে ঘন কালো অন্ধকার দেখে বুঝতে পারলো বেশ রাত হয়েছে।হঠাৎ শানের মনে হলো সোহার কথা? সিট একটা বার জানানো দরকার ছিলো মেয়েটা চিন্তা করছে হয়তো। ভাবতেই শান ফোনটা হাতে নিলো। ফোন হাতে নিতেই ওর চোখ চড়ক গাছ। যা ভেবেছিল তাই হয়েছে সোগা আডলেই চিন্তা করছিলো। শান দ্রুত ফোনটা ব্যাক করলো।

এতক্ষন শানের জন্য অপেক্ষা করতে করতে আমার চোখটা লেগে এসেছিল। হঠাৎ ফোনের রিংটনে চোখ খুলে হুড়মুড়িয়ে উঠে বসলাম। ফোনের স্ক্রিনে তাকাতেই দেখলাম শানের ফোন। মনে মনে ভেবে নিলাম একদম বকে দেবো। মানুষ এতোটা দায়িত্বজ্ঞানহীন কি করে হয়। এসব ভেবে আমি ফোন ধরলাম তখনই ফোনের ওপাশ থেকে মিষ্টি একটা কন্ঠো ভেসে আসলো,

“স্যরি সোহা।প্লিজ মাফ করে দেও। আমি জানি তুমি চিন্তা করছিলে। আসলে একটা সমস্যায় পড়ে গেছি তাই আর বাড়ি ফিরতে পারিনি। ”

উনি এতো সুইট করে বললো যে আমি এতো বকা দিবো ভাবছিলাম সেগুলো সব ভুলেই গেলাম। আমি উনার কথা শুনে চিন্তিত হয়ে বকা দেওয়ার জায়গায় বললাম,

“কি হয়েছে আপনার? কই আছেন এখন?
“আর বলো না হাসপাতালে আছি আমি। ”

উনি হাসপাতালে আছে শুনেই আমার ভয়ে অন্তর আত্মা কেঁপে উঠলো। উনাকে কিছু নলতে না দিয়েই আমি কাপা কাপা কন্ঠে উত্তেজিত হয়ে বললাম,

“হাসপাতাল? হাসপাতালে কেন? কি হয়েছে আপনার? ঠিক আছেন তো?”

শান আমাকে শান্ত করার ভঙ্গিতে বললো,
“আরে আমার পুরো কথাটা শেষ করতে দিবে তো । আমার কিছু হয়নি কিন্তু ঐশী এক্সিডেন্ট করেছে তাই ওর সাথেই আছি। ”

উনাড কিছু হয়নি শুনে শান্তি পেলাম কিন্তু ঐশীর কথা শুনে প্রচন্ড খারাপ লাগলো।
“এখন কেমন আছে ঐশী আপু? ”
শান অবাক হয়ে বললো,
“তুমি ঐশী কে কিভাবে চেনো?”
আমি বিরক্ত হয়ে বললাম,
“এখন সেটা বলার সময় নয়। আপনি আগে বলুন ওর কি অবস্থা? ”
শান একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে বললো,
“আল্লাহর রহমতে ভালো আছে। ”

শুনে আমিও একটু তৃপ্তি পেলাম।
“আচ্ছা তাহলে আমিও আসি?”

শান রাগি কন্ঠে বললো,
“পাগল হয়েছো একদম না। সব ঠিক আছে। তুমি কালকে সকালে আসবে এখন ঘুমিয়ে পড়ো। ”
“এতো চিন্তায় ঘুম আসে? ”
“না আসলেও ঘুমাতে হবে নাহলে আমি এসে কিন্তু অনেক বকব ঘুমিয়ে পড়ো তাড়াতাড়ি আমি সকাল বেলা আসবো। ”

বলেই উনি ফোনটা কেটে দিলো আমার আর কি আজকে সারাদিন শপিং করে আমার শরীর এমনিতেও খারাপ লাগছিল তাই না চাইতেও শরীরটা এলিয়ে দিলাম বিছানায়।



সকালে ঘুম ভাঙতেই দেখলাম সকাল আটটা বাজে। রাতে রুম যেভাবে রেখেছিলাম সেভাবেই আছে তারমানে শান আসেনি। আমি ফ্রেস হয়ে নিলাম। যাতে শান আসলেই আমি হাসপাতালে যেতে পারি। শাড়ী চেন্জ করার জন্য কাবার্ডের কাছে গেলাম একটা শাড়ী নিতে। লালের মধ্যে কালো একটা শাড়ি পছন্দ হলো। কিন্তু সমস্যা হলো শানের জামা কাপড়ের মধ্যে শাড়ীটা। আমি আস্তে করে শাড়ীটা টান দিলাম যাতে ওনার জামা কাপড় না পড়ে। তখনই শাড়ীর সাথে একটা রঙিন কাগজের চিরকুটও পড়লো। দেখে মনে হলো কোনো লাভ লেটার। আমি লেটারটা হাতে নিলাম আর চিরকুটটা খুলেই আমার চোখ কপালে উঠে গেলো।
.
.
চলবে

বিঃদ্রঃ একটু ব্যস্ত আছি তাই রিচেক দেওয়া হয়নি। বানান ভুল ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here