এক_রক্তিম_ভোর পর্ব ২৩

#এক_রক্তিম_ভোর
#প্রভা_আফরিন
#পর্ব_২৩

ভার্সিটি এবং অফিস শেষ করে বাড়ি ফিরছে নাবিলা। একটু মুক্ত বাতাস গ্রহন করতে গাড়ির কাচ নামিয়ে দিলো। এখন বাবার গাড়ি ব্যবহার করছে ও। ওর দিনকাল সব স্বপ্নের মতো কাটছে এখন। সেই সন্ধ্যার পর থেকে প্রয়াসের সামনে দাড়াতে ভীষণ লজ্জা পায় সে। কিন্তু প্রয়াস নিত্য নতুন বাহানা দিয়ে ঠিক নাবিলার কাছাকাছি এসে পড়ে। মাঝে মাঝে প্রয়াসের নির্লজ্জ দৃষ্টি সইতে না পেরে পালিয়ে থাকে নাবিলা। প্রয়াসও যেন খুব মজা পায় ওকে লজ্জায় ফেলতে। মানুষটার এই নতুন রুপে নাবিলা নিত্য দিন ঘায়েল হচ্ছে। হতে চাইছে। কিন্তু তবুও একটা আফসোস! প্রয়াস তার কর্মকাণ্ডে ভালোবাসার সাগর বইয়ে দিলেও মুখে ‘ভালোবাসি’ নামক চারটা অক্ষর উচ্চারণ করেনি।

নাবিলার এমন রঙ বেরঙের ভাবনার মাঝে জানালা দিয়ে প্রবেশ করলো কালো ধোয়া। উৎফুল্ল মেজাজটা নিমিষেই বিগড়ে গেলো। শহরের দূষণ দিন দিন বেড়েই চলেছে। দুঃখজনক ব্যপার হলেও সত্যি অশিক্ষিত, স্বল্প শিক্ষিত কিংবা অসচেতন নাগরিকের থেকে শিক্ষিত নাগরিকরা দূষনে বেশি দায়ী।

জ্যামে আটকে থাকা সত্ত্বেও অনবরত হর্ন বাজানো, বজ্য যেখানে সেখানে ছুড়ে ফেলা, সাথে ধুলোবালি তো আছেই। এসব বজ্য বিশেষ করে অপচনশীল প্যাকেটজাত আবর্জনা যখন ড্রেনে গিয়ে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি করবে, শহর জীবনে বিগ্ন ঘটাবে, তখন গুটিকয়েক মানুষ সচেতনতা তৈরি করতে এগিয়ে আসবে। কিন্তু দিন শেষে আবার সেই আগের অবস্থা।

সত্যিকারের সচেতন নাগরিক অবশ্যই আছে। তবে সেটা হাতে গোনা। সচেতনতার শিক্ষা ছোট থেকেই বাচ্চাদের দেওয়া উচিৎ। তাহলে বোধহয় সামনে প্রজন্ম একটা সুন্দর পরিবেশ পাবে। যদিও প্রযুক্তির উন্নয়নে মানুষের যতটা উন্নয়ন হচ্ছে, পৃথিবী এবং পরিবেশের ততটাই ক্ষতি হচ্ছে। নাবিলা তপ্ত শ্বাস ফেললো। সে নিজে সচেতন নাগরিক তো?

বাড়ি ফিরতেই বসার ঘরে রোহান এবং অপরিচিত দুজন মানুষকে সোফায় বসা দেখলো নাবিলা। রোহানকে দেখে ও যারপরনাই বিষ্মিত হলো। রোহান নাবিলার বাড়ি কিভাবে চিনলো আর এখানেই বা কেনো এলো এসব নিয়ে ভাবতে শুরু করলো। রোহান নাবিলাকে দেখেই মিষ্টি হাসি উপহার দিলো। ওকে দরজার কাছে দাড়িয়ে থাকতে দেখে সায়মা বেগম বললো,

‘ওইতো আমার মেয়ে এসে গেছে। নাবিলা এদিকে আয়।’

মায়ের আদেশ মতো নাবিলা ধীর পায়ে হেটে সোফার কাছে গেলো। সবাইকে উদ্দেশ্য করে সালাম বিনিময় করলো। বুঝলো এনারা রোহানের বাবা-মা। নাবিলার ভেতরটা ধ্ক করে উঠলো। একটি বিবাহযোগ্যা মেয়ের বাড়িতে কোনো বিবাহযোগ্যা ছেলে পরিবার নিয়ে আসার মানে তো একটাই। নাবিলা ঘামতে শুরু করলো। চলে যেতে নিলে রোহানের মা হাত ধরে পাশে বসিয়ে দিলেন। নাবিলার থুতনি ধরে বললেন,

‘ মাশা-আল্লাহ। আপনার মেয়েতো খুব মায়াবী ভাবী। রোহান আমাদের কাছে একদম নিখুঁত বর্ননা দিয়েছে।’

রোহান লজ্জা মিশ্রিত হাসি দিলো।
নাবিলা মাথা নিচু করে নিলো। ওর ভালো লাগছে না এসব। সায়মা বেগম রান্নাঘর থেকে খাবার এনে ওদের সামনে রাখলো। তার মনোভাব দেখে মনে হচ্ছে রোহানকে তিনি ইতিমধ্যেই পছন্দ করে ফেলেছে। নয়নতারা বেগম আছরের নামাজ শেষে নিচে নামলেন। ধীর পায়ে নেমে আসতেই নাবিলা করুন চোখে দাদির দিকে তাকালো। সেই চোখ বলছে,

‘আমাকে এখান থেকে মুক্ত কর।’
নয়নতারা বেগম বুঝলেন। সোফায় বসে বললেন,

‘নাবিলা মাত্র বাহির থেকে এসেছে। একটু ফ্রেশ হতে যাক। কথাতো হবেই।’

নাবিলা রুমে এসে স্বস্তির নিশ্বাস নিলো। ফোন বের করে প্রয়াসের ফোনে কল করলো। তিনবার বাজতেই রিসিভ হলো।

‘কি ব্যাপার! হঠাৎ ম্যাডাম আজ আমাকে কল দিলেন? প্রতিবার তো আমাকেই দিতে হয়। খুব মিস করছেন বুঝি?’

‘হেয়ালি রাখো। বাড়ি ফিরেছো?’

‘হ্যা মাত্র ফিরলাম।’

‘তাহলে এই বাড়ি এসে দেখো কি হচ্ছে।’ নাবিলা রুষ্ট কন্ঠে বললো।

‘কি হচ্ছে?’

‘তোমার জন্য হচ্ছে সব। বিয়ের বয়স পার হয়ে যাচ্ছে অথচ বিয়ের নামই নিচ্ছে না।’

‘আরে বাবা কি হয়েছে বলবি তো?’

‘পারবোনা। এসে দেখে যাও।’

প্রয়াস গোসল করে টিশার্ট গায়ে চাপিয়ে যখন নাবিলার বাড়ি এলো ততক্ষনে নাবিলা ফ্রেশ হয়ে এসে পুনরায় ওদের সামনে বসেছে। সায়মা বেগম রোহানের পরিবারের সাথে খোশগল্পে মেতে উঠেছে। নয়নতারা বেগম সব দেখছে এবং মুচকি মুচকি হাসছে। রোহানকে দেখেই প্রয়াসের চোয়াল শক্ত হয়ে এলো। কথার ধাচে বুঝতে বাকি রইলো না কি ঘটছে। নাবিলা প্রয়াসের দিকে অভিমানী চোখে তাকিয়ে আবার চোখ ফিরিয়ে নিলো।

রোহানের মা জানালো রোহান এবং নাবিলাকে আলাদা করে কথা বলতে দিতে। সায়মা বেগম এবার ঢোক গিললেন। পাত্র ভালো লাগলেও বিয়ের ব্যাপারে আগে যা ঘটেছে তার পর নাবিলাকে বিয়ের কথা বলতেও ভয় হয় ওনার। তারেক হোসেনও বাড়িতে নেই। তাছাড়া নাবিলার চোখমুখ বলছে এসব একটুও পছন্দ করছে না সে।

নয়নতারা বেগম জানালেন নাবিলার বাবার উপস্থিতিতে নাহয় সব হবে। আরো টুকটাক কথা বলে রোহানের পরিবার বিদায় নিলেন। যাওয়ার আগে রোহান প্রয়াসের সাথে করমর্দন করে গেলো। যতটুকু বোঝা গেলো নাবিলার পরিবার রাজি হলে তারা শুভ কাজে দেরি করবেন না। প্রয়াস পুরোটা সময় চুপ থেকে শুধু দেখে গেলো। নাবিলা ভেবেছিলো প্রয়াস হয়তো কিছু বলবে। কিন্তু সে চুপচাপ দেখেই গেলো শুধু। রাগ হলো ওর। সবার অগোচরে মুখ ঝামটা দিয়ে রুমে চলে গেলো সে।

সারা সন্ধ্যা আর নাবিলা ঘর থেকে বের হলো না। সায়মা বেগম বুঝে গেলেন মেয়ে সম্বন্ধটা পছন্দ করেননি। নয়নতারা বেগমকে গিয়ে বললেন,

‘নাবিলা মন খারাপ করেছে মা। এই সম্বন্ধে না এগোনোই ভালো। ছেলে পক্ষ ফোন দিলে মানা করে দিয়েন।’

নয়নতারা বেগম হেসে বললেন,
‘মন খারাপের হাজারো কারন থাকতে পারে বউমা। দেখা যায়না বলে বোঝা যায়না মনের অসুখটা আসলে কি কারনে। এখনি না করে দেওয়ার দরকার নেই। এক দেখাতে তো আর কিছুই হয়না। সময়কে সময়ের মতো চলতে দাও। কার সাথে কার ভাব সেটা সময়ই জানাবে। ওর পছন্দেমতোই সব হবে। এক ভুল বারবার করবো না।’

নাবিলা নিজের রুমে এখন একাই ঘুমায়। দাদি সেই রাতের পর আর ঘুমাননি ওর সাথে। কেনো ঘুমাননা জিজ্ঞেস করলে বলেন,

‘আমার আর কষ্ট করে পাহারা দেওয়ার দরকার নেই। তার জন্য ঢের মানুষ আছে।’

অনেকক্ষন এপাশ ওপাশ করেও যখন ঘুম এলো না নাবিলা ঘুমের ওপর ক্ষেপে গেলো। দাদির ঘর থেকে ঘুমের ঔষধ আনার জন্য বিছানা ছাড়তেই বারান্দার দরজায় ঠকঠক আওয়াজ হলো। একবার, দুবার, বারবার। নাবিলা ঠিক করলো দরজা খুলবে না। ভেবেছে টা কি? মিয়া বিবি রাজি তাহলে কাজি ডাকতে এত দেরি কেনো? ফোন বন্ধ করে রেখেছে সন্ধ্যা থেকে। আজ আর কথাই বলবে না।

প্রয়াস শব্দ করেই গেলো। ঠক ঠক ঠক। যদিও বেশি জোরে নয়। নাহলে আবার কে না কে শুনে ফেলবে। দেখা যাবে ওদের নিয়ে খারাপ ভাবনা ভেবে ফেলতে সময় লাগবে না। প্রয়াস ধৈর্য নিয়ে দরজা ধাক্কাতেই থাকলো। ও জানে নাবিলা ঘুমায়নি। অভিমানে নিশ্চয়ই গাল ফুলিয়ে আছে।

প্রায় আধা ঘন্টা যাবত প্রয়াস দরজায় দাড়িয়ে ঠক ঠক করেই গেলো। শেষের দিকের আওয়াজ গুলো জোরে হওয়ায় সায়মা বেগম এসে দরজা ধাক্কাতে শুরু করলো।

‘নাবিলা? এমন আওয়াজ আসছে কেনো? তুই জেগে আছিস?’

নাবিলা তরিঘরি করে বারান্দার দরজা খুলে প্রয়াসকে চুপ হতে বলে সরে যেতে নিলে প্রয়াস হাত ধরে ফেলে।

‘নাবিলা?’
সায়মা বেগম আবার ডাকলেন। প্রয়াস শুনেও হাত ছাড়লো না। বাধ্য হয়ে নাবিলা দরজা না খুলেই উত্তর দিলো।

‘হ্যা মা। ঘুম আসছে না তাই একটু খুটুরমুটুর করছি।’

‘বাবা ঘুমাচ্ছে। এতো রাতে যেন আর আওয়াজ না হয়।’

সায়মা বেগম প্রস্থান করলেন। নাবিলা স্বস্তির নিঃশ্বাস নিয়ে প্রয়াসের হাত ঝামটা দিয়ে ছাড়াতে চাইলো। পারলোনা। অভিমান ফুটিয়ে বললো,

‘তুমি খুব খারাপ।’

‘জানি।’

‘আমাকে শুধু কষ্ট দাও।’

‘উহু। ভালোবাসাও দেই।’

‘কচু। দেখলাম তো আজ। কিছুই বললে না। এই তোমার ভালোবাসা!’

‘ওদের সামনে কিছু বললে রোহানের বাবা মায়ের অপমান হতো। রোহান একা থাকলে কিছু বলা যেত। তাছাড়া দেখলেই তো আর বিয়ে হয় না। পরেও মানা করা যায়।’

‘কে মানা করবে শুনি? মায়ের যে রোহান স্যারকে ভালো লেগেছে তা নিশ্চয়ই বুঝতে পেরেছো।’

‘এবার তোর অমতে কেউ এক পাও এগোবে না।’

‘আমি অমত করবো কে বললো?’

প্রয়াস নাবিলার কথাটা বুঝতে সময় নিলো। তারপর হেচকা টানে ওকে কিছুটা কাছে টেনে বাহু চেপে ধরলো।

‘তুই অমত করবি না ভাবলেও চাপার দাত খুলে সব হাতে ধরিয়ে দেবো। বুঝলি?’

‘না বুঝিনি। আমাকে বিয়ে না করলে তোমার সব ভালোবাসাকে আমি ভাইবোনের ভালোবাসা হিসেবেই ধরে নেব। রোহান স্যারকে দেখো কত্ত ফাস্ট। পছন্দ হতেই বিয়ের সম্বন্ধ নিয়ে এসেছে। আর তুমি তো বাড়িতে জানাচ্ছোই না।’

‘তুই এমন বিয়ে পাগল হলি কবে? ক্যারিয়ার, পড়াশোনা নিয়ে এক বিন্দুও ভাবনা নেই। সব ভাবনা শুধু বিয়ে নিয়ে।’

‘বেশ করেছি। এখনো আমাকে প্রোপজও করোনি। লাগবে না তোমার ভালোবাসা। রোহান স্যারকে বিয়ে করে পরের বছরই তোমায় মামা…’

প্রয়াস একহাতে নাবিলার গাল চেপে ধরেছে। চোখের চশমাটা খুলে বিছানায় ছুড়ে মারলো অন্যহাত দিয়ে। নাবিলা ঢোক গিলল। বেশি বলে ফেলেছে বোধহয়।

‘আর একটা উল্টো পালটা বললে কি করবো আমি নিজেও জানি না। সাহস কি করে হয় এই কথা উচ্চারন করার? ছোট থেকে তোকে নিজের হাতে তৈরি করেছি আমি। আমার কোলে উঠে হিসু পর্যন্ত করে দিয়েছিলি ছোটবেলায়। তোর কি মনে হয়! আমার যত্নে গড়া পুতুল আমি অন্যকে নিতে দেবো?

তুই জানিস আমি কত কষ্টে দুইবছর থেকেছিলাম কানাডায়? আমার প্রতিটা রাত কতটা দীর্ঘ ছিলো শুধু তোকে না পাওয়ার আক্ষেপে? ভেবেছিলাম কোনোদিন দেশেই ফিরবো না। বাবার মতো একটা ছন্নছাড়া জীবনকে বরন করে নেবো। না পাওয়ার আক্ষেপ কাকে বলে আমি হাড়ে হাড়ে জানি। অয়নের প্রতারনার বিষয়টা জেনে কত রাত শুধু আল্লাহর কাছে শুকরিয়া করে কেটেছে সেটা আমিই জানি।’

প্রয়াস থামলো। নাবিলার চোখে পানি। প্রয়াস ওর গাল ছেড়ে দিয়ে মাথাটা চেপে ধরলো বুকে।

‘ তুই ততটুকু কষ্টই আমার থেকে পাস যতটুকু আমি দিতে চাই। আমার আদরে গড়া তুলতুলে পুতুলকে ভালোবাসার অধিকার একমাত্র আমার। আমি কাউকে সেই অধিকার দেবো না। তুই চাইলেও না।’

নাবিলা নিঃশব্দে প্রয়াসের বুকের বা পাশে অনবরত বাজতে থাকা হৃদয়ের আওয়াজ শুনতে শুনতে ভাবতে লাগলো। সত্যিই তো প্রয়াস যতটা কষ্ট পেয়েছে আর অর্ধেকও ও পায়নি। যখন শুনেছিলো প্রয়াসের গার্লফ্রেন্ড আছে তখন নাবিলা মাত্র কয়েকদিন কষ্ট পেয়ে অনুভূতিটাকে ভালোলাগার দলে ফেলে দিয়েছিলো। প্রয়াস তো তা করেনি। সে একা একাই ভালোবেসে গেছে নিরন্তর। তাহলে নাবিলারও কি উচিৎ নয় প্রয়াসের ওপর আস্থা রাখা? নিশ্চয়ই সে একটা ভালো সময়ের অপেক্ষায়।

প্রয়াস কন্ঠ খাজে নামিয়ে নাবিলার কানে ফিসফিস করে বললো,
‘আর ওয়েট করবো না। বিয়ে পাগল মেয়ে ছেড়ে রাখা বিপদ। তা এত যে বিয়ে, সংসার, বাচ্চা-কাচ্চার শখ, সবতো আমাকেই পালতে হবে। ইনফ্যাক্ট তোকেও তো আমাকেই পালতে হবে। এখনো যে ম্যাচিওর হওয়া বাকি।’

নাবিলা হাসি লুকানোর ব্যর্থ চেষ্টা করে প্রয়াসকে ঠেলতে ঠেলতে বারান্দায় পাঠিয়ে দরজা লাগিয়ে দিলো। আসলেই বোকামো করে ভুলভাল বলে ফেলেছে প্রয়াসের ওপর রাগ করে। এখন প্রয়াস প্রতি পদে এসব নিয়ে নিশ্চিত পঁচাবে। লজ্জাজনক কথা বলতেও ছাড়বে না। নিজের মাথায় চাপড় মেরে ঘুমাতে গেলো ও। আর ঘুমের ট্যাবলেট দরকার পরবে না।

চলবে…

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here