এলি ম্যান পর্ব -০১

#গল্প — এলি_ম্যান [ ১৮+ এলার্ট ]

হুডি পরা লোকটা লোলুপ দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে গলির মুখে দাঁড়িয়ে থাকা মেয়েটার দিকে। শিকারী চোখ দু’টো মেয়েটার শরীরের বিভিন্ন জায়গায় ঘুরাছে। হঠাৎই মেয়েটা তার সামনে এসে যৌন আবেদনময়ী ভঙ্গি করতে থাকে। নির্জন রাস্তায় এমন একটা মেয়েকে পেয়ে এক প্রকার খুশিই হয় লোকটি। মেয়েটির হাত ধরে টেনে নেয় নিজের দিকে।

অন্ধকার রাস্তায় লোকটির চেহারা কেউ দেখতে পায় না। কালো হুডির বিশাল সাইজের টুপিটা মাথায় দেওয়া আছে। টুপির সামনের অংশটা লম্বা করে ঝুলিয়ে একদম চোখ পর্যন্ত আনা হয়েছে। তাই কাঁলচে ঠোঁট আর খোঁচা খোঁচা ছোট্ট দাঁড়িগুলো ছাড়া অন্য কিছুই দেখা যাচ্ছে না।

মেয়েটি হয়তো লোকটির চেহারা সম্পর্কে কোন ধারণাই করতে পারেনি। সে অন্য সব দিনের মতোই শহরের গলিতে দাঁড়িয়ে পুরুষদের আকর্ষণ করায় ব্যস্ত ছিল। লোকটিকে নিজের দিকে আকর্ষণ করতে পেরে মেয়েটি হয়তো ভেবেছিল রাতের শেষ অংশে এসে ভালোই একটা ইনকাম হবে। কিন্তু সে কল্পনাও করতে পারেনি কি ভয়ানক সত্য তার জন্য অপেক্ষা করছে।

হুডি পরা লোকটি মেয়েটির চুলগুলোকে মুঠি করে ধরে লিপ কিস করতে এগিয়ে গেল। মেয়েটিও নিরবে সম্মতি জানালো। কিন্তু সেটাই কাল হয়ে দাঁড়ালো মেয়েটির জন্য। কিস করার মাঝখানেই মেয়েটি বুঝতে পারল লোকটির জিহ্বা ক্রমশই চিকন আর লম্বা হয়ে যাচ্ছে। এবং তার জিহ্বাকে পেঁচিয়ে ধরছে। মেয়েটি নিজেকে ছাড়িয়ে নেওয়ার চেষ্টা করতেই লোকটির জিহ্বা আরো চিকন হয়ে যায়। এবং মেয়েটির জিহ্বাটা পেঁচিয়ে নিজের মুখের ভেতরে নিতে থাকে। মেয়েটি তার সর্বোচ্চ চেষ্টা করতে লাগল ছুটে যাওয়ার জন্য। কিন্তু লোকটির অদ্ভুত জিহ্বাটা মেয়েটির জিহ্বাকে সুতার মতো গিট্টা লাগিয়ে দেয়। আর ছুটতে পারে না মেয়েটা। বারবার নিজেকে ছাড়িয়ে নেওয়ার ব্যর্থ চেষ্টা করতে থাকে সে।

লোকটি তার জিহ্বা দিয়ে টেনে মেয়েটির জিহ্বা টেনে ছিঁড়ে ফেলে, মুখের ভিতরে নিয়ে কঁচকঁচ করে চিবিয়ে খেতে থাক। সাদা চকচকে চোখা দাঁত গুলো যেন অনেক দিন পরে তাজা মাংশের ছোঁয়া পেয়েছে। মেয়েটির জিহ্বাটা গলার কাছ থেকে নিচের গোসত সহ ছিঁড়ে এসেছে। রক্ত উপচে পড়তে লাগলো মুখের ভিতর থেকে। লোকটা কিস করার ভঙ্গিতেই রক্ত গুলো চুষে খেতে লাগল। মেয়েটির শরীর ক্রমশই কাঁপতে লাগলো। মুহুর্তের মধ্যেই মারা গেল সে। শরীরের সব ভার ছেড়ে দিল লোকটির উপরে। লোকটা মেয়েটির মুখ থেকে নিজের মুখ সরিয়ে নিল। লম্বা জিহ্বাটা বাইরে বের করে মুখের উপরে লেগে থাকা রক্ত গুলো চেটে নিল। খাওয়া শেষ হতেই উপরের ঠোঁট বাঁকিয়ে একটা বিভৎস হাসি দিতে লাগল সে। দুরের ল্যাম্পপোস্টের আলোতে সাদা সূচালো দাঁত গুলো চকচক করে উঠলো।

অনেকক্ষণ ধরেই মনিটরের সামনে বসেছিল তুষার এবং রায়হান। ঝাপসা অন্ধকারে বিভিন্ন রোমান্টিক দৃশ্য তারা নিয়মিতই দেখে থাকে। শহরের বুকে হাজার হাজার পতিতা ঘুরে বেড়ায়। রাত গভীর হলেই তারা অবস্থান করে ঝাপসা অন্ধকার গলি গুলোতে। কোন পুরুষের দেখা পেলেই আবেদনময়ী ভঙ্গির সাহায্যে তাদের মনোযোগ আকর্ষণ করার চেষ্টা করে তারা। যদি তারা সফল হয় তবেই ঐ রাতে তাদের ইনকাম হয়ে যায় প্রায় ৫০ ডলার। এতে সুন্দর মতোই তাদের দিন চলে যায়। কাজের অভাবে অনেক মেয়েই এখন এই পথ বেছে নিয়েছে। একুশ শতকের শুরুর দিক থেকেই নারীবাদীরা সারা পৃথিবীতে তৎপর হয়ে উঠে। কিন্তু আমেরিকার মতো দেশে তারও অনেক আগে থেকেই। আর ঐসকল নারীবাদীরাই প্রচার করেছে নারীদের উপার্জন করতে না দেওয়া মানে তাদের স্বাধীনতা কেড়ে নেওয়া। তাই আস্তে আস্তে সব মেয়েরাই বাইরে কাজ করতে শুরু করে। তারই পরিনামে আজ ২০৪৮ সালে এসে প্রতিটা মেয়েকে বাধ্যতা মূলক ভাবে উপার্জন করতে হয়। কিন্তু বর্তমান সময়ে প্রাতিষ্ঠানিক কাজের অভাবে উপার্জন করার জন্য নারীদের শরীর বিক্রি করা ছাড়া উপায় নেই। এই ব্যবসাও এখন বেশ মন্দা। প্রায় সব ছেলেরই গার্লফ্রেন্ড অথবা ওয়ান টাইপ অফ যাস্ট ফ্রেন্ড আছে। আর আমেরিকার মাটিতে অবাধ যৌনতা একদম পানি ভাতের মতো। তাই এখন আর টাকা দিয়ে মেয়েদের সাথে সম্পর্ক গড়ার মতো ছেলেদের সংখ্যা খুবই কম।

তবুও একবারে কম বলাও মুশকিল। কেননা তুষার আর রায়হান প্রায় ১০ টা ক্লোজ কলয়ডাল ক্যামেরার দেখাশোনা করে রাত ১১ টা থেকে সকাল ৬ টা পর্যন্ত। এই সময়ের মধ্যে অবাধ যৌনতার দৃশ্য তাদের চোখে অহরহ-ই পড়ে।

তারা নিজেদের কাজে ব্যস্ত ছিল। ক্যামেরায় একবার দেখেছিল যে একটা ছেলে আর একটা মেয়ে গোপন সম্পর্কে লিপ্ত হচ্ছে। কিন্তু এসব দেখার মুডে তারা নেই। তারা একটা ভয়ানক ভিডিও গেম খেলতে ব্যস্ত। গেমটা শেষ হতে আর মাত্র কয়েক সেকেন্ড বাকি। তুষার প্রথম রাউন্ডে হেরে গিয়ে ১০ ইঞ্চি ট্যাপটা ধপাস করে রাখে সামনের টেবিলে। মোবাইলের কাঁচ ভেঙ্গে গেছে। অথচ ঐদিকে আর একবারও তাকায় না সে। মোবাইলটা ফেলে রেখে মনিটরের স্ক্রিনে তাকায় সে।

রাস্তায় গাড়ি খুব একটা বেশি নেই। মনিটরের একদম কোণায় দেখা যাচ্ছে সেই দৃশ্যটা। কিন্তু কতক্ষণ আগেও তারা একে অপরকে কিস করছিল। আর এই মুহুর্তে মেয়েটার শরীর অসার হয়ে পরে আছে ছেলেটার কাঁধের সাথে ধাক্কা খেয়ে। আর ছেলেটি বিভৎস ভাবে হাসছে। এটা দেখে কেমন যেন খটকা লাগতে থাকে তুষারের। সে ঐ ক্যামেরার দৃশ্যটা পুরো স্ক্রিনে জুম করে। মাউছ দিয়ে ক্লিক করে করে নেড়ে দেখতে থাকে কোথাও কোন গন্ডগোল আছে কিনা।

মনিটরে এবার স্পষ্ট ভাবে দেখা যাচ্ছে, কালো হুডি পরিহিত ছয় ফুট লম্বা লোকটা প্রায় সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। আর অদ্ভুত ভাবে বিভৎস রকমের একটা হাসি দিচ্ছে। অপরদিকে মেয়েটার মাথাটা লোকটার বুকের সাথে ঠেস দিয়ে আছে। লোকটি তার বাম হাত দিসে মেয়েটার কোমড় পেঁচিয়ে রেখেছে। কিন্তু ক্যামেরায় যতটুকু দেখা যাচ্ছে। তাতে সহজেই আন্দাজ করা যাচ্ছে মেয়েটা নিজের শরীরের সব ভার ছেড়ে দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। তাকে ছেড়ে দিলেই পড়ে যাবে। তুষার এবার রায়হানকে ডেকে সেই দৃশ্য দেখাতে লাগল। রায়হান মনিটরের দিকে তাকিয়ে কিছু বুঝে উঠার আগেই লোকটা মেয়েটার কোমড় ছেড়ে পিছনের দিকে হাঁটা ধরল। সাথে সাথেই মেয়েটার নিথর দেহটা ধপাস করে মাটিতে পড়ে গেল। মুখ দিয়ে রক্ত ঝড়তে লাগল। নাক বেয়েও রক্ত বেরুতে লাগল। তুষার নিজের চেয়ার ছেড়ে উঠে পড়ল। মোবাইল টেনে পুলিশকে কল দিতে নিল। কিন্তু তার মোবাইলের ডিসপ্লে নষ্ট হয়ে যাওয়ায় দৌড়ে পাশের রুমে গিয়ে অন্য একটা যোগাযোগ মাধ্যম থেকে পুলিশের সাথে যোগাযোগ করল।

পুলিশ অফিসার ‘স্টিভ রোডস’ কল ধরনেই তুষার দ্রুত গলায় বলতে লাগলো।

‘ স্যার, প্লিস কুইকলি চেক দ্য ওয়ান বাই থ্রি রেড রোড। প্লিজ কুইকলি।’

পুলিশ অফিসার আর কোন কথা বলল না। কল কেটে দিয়ে নিজের আরো কিছু লোকজনকে ইনফর্ম করে দিল বিষয়টা। আর নিজেও নিজের কিছু সহকর্মী নিয়ে বাইরে বেরিয়ে গেল সাদা-নীল রঙের মাইক্রোবাস নিয়ে। আশেপাশের তিন টা স্টেশন থেকে পুলিশের গাড়ি গুলো রোডে নেমে পড়ল। মোট বারোটা গাড়ি ৩ দিক দিয়ে মুহুর্তের মধ্যেই চলে গেল ওয়ান বাই থ্রি রেড রোড এলাকায়। গাড়ির হেডলাইটের আলোতে জায়গাটা একদম ফর্সা হয়ে গেলো। হেড লাইটের আলোতে স্পষ্ট ভাবে দেখা যাচ্ছে কালো হুডি পরা একটা ছয় ফুট লম্বা লোক বেশ দ্রুত গতিতে হেঁটে চলেছে। পুলিশের গাড়ি গুলো লোকটার ৩ দিকে এসে থেমেছে। আর অন্য এক দিকে নদী থাকায় সেদিকটা ফাঁকা। লোকটা হাঁটতে হাঁটতে ব্রীজের উপরে উঠে পরল। পুলিশের কিছু লোক গাড়ি থেকে নেমে পিস্তল হাতে দ্রুত দৌড়ে যেতে লাগলো লোকটির দিকে। লোকটি কোনদিকে যাওয়ার জায়গা না পেয়ে ব্রীজের রেলিংয়ের উপরে হাত দিয়ে নদীর পানিতে তাকিয়ে রইল। মাথা বাঁকিয়ে বুঝার চেষ্টা করতে লাগলো পিছনে কি পরিমান লোক আসছে। ১২ জন পুলিশ তার দিকে পিস্তল তাক করে রেখেছে দেখে সে ঘুরে পুলিশের দিকে তাকালো। পুলিশ তাদের বন্দুক তাক করে রেখেই আস্তে আস্তে এগুতে লাগলো। এর মধ্যে কয়েকজন আবার বলতে লাগলো হুডির টুপি মাথা থেকে খোলার জন্য। লোকটা কি করবে কিছু ভেবে না পেয়ে মনে মনে প্ল্যানিং করতে থাকে কি করা যায়। দুই হাত উঁচু করে আস্তে আস্তে হুডির টুপিটা খুলতে লাগল সে। টুপি খুলতেছে দেখে পুলিশরা তাদের বন্দুক নিচে নামালো। আর এই সুযোগেই লোকটি একটা ডিগবাজি দিয়ে নদীতে পড়ে গেল। পুলিশরা দৌড়ে এসে লেজার লাইট অন করা পিস্তল পানিতে তাক করতে লাগল। কিন্তু কোন ভাবেই আর লোকটির দেখা পেলো না।

মুহুর্তের মধ্যে সারা শহরে শোরগোল পড়ে গেল এতো গুলো পুলিশের চোখের সামনে থেকে অজ্ঞাত আসামি পালিয়ে গেছে। সবখানে কেবল একই আলোচনা, কে ছিল ঐ লোক। কি ছিল তার পরিচয়।

লেখক ID —#সালাহউদ্দিন_তারিক ( salahuddin.tarik)

দৃশ্য-২
উত্তর আমেরিকার কফিল শহরে একটা বিষ্ময়কর আতঙ্ক বিরাজ করছে। প্রায়ই এখান থেকে একসাথে অনেক গুলো মেয়ে হারিয়ে যাচ্ছে। কখনোবা মিলছে মেয়েদের বিভৎস লাশ। কে বা কারা করছে এসব! তার কোন হদিস পাওয়া যাচ্ছে না। তবে একদল তো একদম বিশ্বাসের সাথেই বলে ফেলেছে। এই সব কিছু এলিয়েনদের কাজ। তারা নিজেদের নতুন পরীক্ষার জন্য মানুষদের ধরে নিয়ে যাচ্ছে। তবে আরেকদল আবার ঐ কথার কাউন্টার দিয়ে বলছে, তারা যদি পরীক্ষার জন্য মানুষদের ধরে নিয়ে যেতো তবে শুধু মাত্র যুবতী মেয়েদের নিবে কেন? সব মিলিয়ে একটা জগাখিচুরি অবস্থা। তবে এই মেয়ে নিখোঁজ হওয়ার বিষয়টি নিয়ে তদন্তের জন্য স্পেশাল টিম গঠন করা হয়েছে। টিমের নামকরণ করা হয়েছে TAC . COM যার ফুলমিনিং হচ্ছে। Take A Case. Close Over the Mystery. তারা ইতোমধ্যেই তদন্ত শুরু করে দিয়েছে। তদন্ত টিমের প্রধান করা হয়েছে ‘ইভানা’ নামের একটা মেয়েকে। মেয়েটা কাজের প্রতি বেশ যত্নশীল, কিন্তু তার সহকর্মীরা তার দিকে একটু ভিন্ন দৃষ্টিতে তাকায়। তারা কি তাকে পছন্দ করে না! নাকি তার লাবন্যময়ী চেহারার জন্য এমন করে তা বুঝার কোন উপায় নেই। কিন্তু মেয়েটা এসবের পাত্তা না দিয়ে নিজের কাজ করে যায়।

রাত ১ টা বাজে,
ইভানা নিজের বাড়িতে অবস্থান করছে। সকল কাগজ পত্র ঘাটাঘাটি করে নিজের কাজে একটা বিরতি দিয়ে বিছানায় শুয়ে পড়ল। বাড়িতে কেউ নেই। একাকী একটা বাড়িতে থাকে সে। বড় বাতিটা বন্ধ করে কম আলোর বাতিটা জ্বালিয়ে ঘুমিয়ে পড়ল সে। কিছুক্ষণ পরেই হঠাৎ ঘুম ভেঙে যায় তার। অনুভব করতে থাকে তার শরীরে কেউ একজন একটু ভিন্ন ভাবে স্পর্শ করছে। সে ধাক্কা দিয়ে লোকটাকে সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করতেই লোকটা উল্টো ইভানাকে বিছানার সাথে চেপে ধরে।

( চলবে ইনশা আল্লাহ )

গল্প — #এলি_ম্যান (১ম #পর্ব)

© #লেখক — #সালাহউদ্দিন_তারিক ( জুনিয়র মুগলি )

.

#ল্প

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here