কর্নেল_সাহেব পর্ব ২৬+২৭

#কর্নেল_সাহেব
লেখিকা সুরিয়া মিম
পর্ব- ২৬

“আচ্ছা সোনা? তোমার কি ঘুমিয়ে ও শান্তি নেই? বুঝতে পেরে গেছো যে আমি সায়েস্তা করতে চাইছি ওই মেয়ে টা কে?”
– নয়তো কি? ও (মিহা) “গু” খেলে কি তোমাকেও “গু” খেতে হবে? মিমের কথা শুনে,ইমান রীতিমতো থতমত খেয়ে তাকিয়ে আছে ওর মুখের দিকে।মিম একটু এগিয়ে এসে ইমানের গালে চুমু খেয়ে বলে,
– প্রতিহিংসা পারায়ণ হয়ে কোনো কিছু করতে যেও না।ঠিক আছে? ইমান গাল ফুলিয়ে বলে,
– এই তোমার জন্যে ওই মেয়ে (মিহা) টা বড্ড বেশি বার বেড়েছে।তুমি কেন কিছু করতে দিচ্ছো না আমাকে? তোমার কি মনে হয়? আজকে বাবার (আদিব) বাসায় যা হলো? তারপর ও (মিহা) কি এমনি এমনি ছেড়ে দেবে তোমাকে?
– বাবু আমি কিছু করতে বারণ করিনি,শুধু প্রতিহিংসা পারায়ণ হতে না করেছি তোমাকে।ইমান ওকে আরো শক্ত করে বুকে জড়িয়ে ধরে বলে,
– এই তোমার মতো কিছু স্টার জলসার “শ্রীময়ি” বেঁচে আছে বলেই,এই ধরনের মেয়ে (মিহা) গুলো বারবার অপরাধ করে পার পেয়ে যায়।
– ঠিক আছে,তবে আমি জানতাম না যে আজকাল আমার কর্নেল সাহেব স্টার জলসা দেখে দেখে “শ্রীময়ি” সিরিয়ালের ফ্যান হয়েছে? ইমান নাক কুঁচকে বলে,
– আমি কোই দেখলাম? বড় আম্মু (নয়ন) সারাদিন শ্রীময়ি’র গল্প করতে থাকে।আজ সকালে বড় আম্মু,বড় আব্বুকে (আহমেদ) বলছিল তার জীবন টা নাকি স্টার জলসা’র শ্রীময়ির মতো হয়ে গেছে? আমি হাসতে হাসতে শেষ।কারণ বড় আম্মু তোমাকে উদ্দেশ্য করে “শ্রীময়ি” বলেছে।
– আচ্ছা এবার বাদদেও,
অনেক রাত হয়েছে? আমি না হয় হলাম একটু “শ্রীময়ি” তাতে যদি একটু ঘরের শান্তি বজায় থাকে? ইমান আর কোনো কথা না বাড়িয়ে চুপচাপ ফ্রেশ হয়ে এসে শুয়ে পরে মিমের পাশে।সকালে মিম ঘুম থেকে উঠে দেখে,
ইমান একভাবে তাকিয়ে আছে ওর দিকে।হঠাৎ ওর গালে ইমান চুমু খেয়ে বলে,
– যাও গোলাপি কালারের শাড়ি টা পরে এসো।আজকে আমি প্রেম করতে যাবো তোমার সাথে।মিম ভেংচি কেটে বলে,
– ওরে আমার প্রেম রে? শালার ব্যাটা,তোর জন্যে আমার এই অবস্থা হয়েছে।ইমান হাসতে হাসতে মিমের পেটে চুমু খেয়ে বলে,
– না মানে,কে যেন মা হতে চেয়েছে? যাগগে ছেড়ে দাও।চলো আজকে একটু ঘুরে আসি উওরা দিয়াবাড়ি থেকে?

সবাইকে লুকিয়ে রায়হান সাহেব আজ তার প্রিয়তমা স্ত্রী’র সাথে প্রেম করতে এসেছে।ভদ্রমহিলা খানিকটা বিরক্ত হয়ে স্বামীকে বলেন,
– তুমি কি গো? যদি ধরাটরা পরে যাই কারো কাছে? রায়হান সাহেব হাসতে হাসতে বলেন,
– ভালো করে চেয়ে দেখো,
সামনের ওই বিবাহিত যুগল লুকিয়ে লুকিয়ে প্রেম করছে সবার কাছ থেকে।হঠাৎ রায়হান সাহেব ও ইমান চমকে যায় একে অপরকে দেখে।মিম ফিক করে হেসে দিয়ে এনা খান কে দেখে বলে,
– দেখেছ? আমি ঠিক? মা একদম সুস্থ হয়ে গেছে? ইমান মৃদু হেসে বলে,
– ছেড়ে দাও না,
আজ বাসায় চলো প্রেম করাচ্ছি দু’জনকে।মিম হাসতে হাসতে বলে,
– প্লিজ এই কথা টা আবার কাওকে বলে দিয়ো না।বাবা কিন্তু বেজায় লজ্জা পেয়েছে? ইমান পাঞ্জাবির হাতা ফোল্ড করতে করতে বলে,
– তাতে কি? তারা তো আমার প্রেমের বারোটা বাজিয়েছে?

রায়হান সাহেব বাড়িতে এসে যত সম্ভব এড়িয়ে চলার চেষ্টা করছেন তার ছোটো ছেলেকে।দুপুরে ইমান তাকে উদ্দেশ্য করে বলে,
– বাবা তোমার গার্লফ্রেন্ড (এনা) টা তো অনেক সুন্দর? আমার বেশ পছন্দ হয়েছে।
– আপনার টাও (মিম) কম না,তবে আপনারা অন্য জায়গায় গিয়ে প্রেম করলে পারতেন।ঠিক আছে?
– বলি লজ্জা করে না তোমার? বুড়ো বয়সে ভীমরতি হয়েছে?
– না করেনা,আই লাভ মাই ওয়াইফ।ঠিক আছে?
– হ্যাঁ তাই বলে তাকে নিয়ে ঝোপের মধ্যে প্রেম করতে যাবে?
– নিজে যে গিয়ে ছিলেন? কিছু হয়নি তাকে? তখন হৃদিকা এহসান এসে রায়হান সাহেব কে জিজ্ঞেস করেন,
– সকালে না ডাক্তারের কাছে নিয়ে গেলে ছোটো কে? ডাক্তার সাহেব কি বলেছে? রায়হান সাহেব থতমত খেয়ে বলেন,
– ভালো ভালো ভয় পাওয়ার কোনো কারণ নেই।একটু তরকারি দেবে? ইমান মিটিমিটি হাসছে রায়হান সাহেবের চেহারা দেখে।খাবার শেষ করে উঠে রায়হান সাহেব ছোটো ছেলের হাত ধরে বলেন,
– বাবা তোর মা (এনা) রিক্ত পেটে আসার পর একদম সুস্থ হয়ে গেছে।তবে আমরা বুঝতে পারছিনা যে কে তোর মা কে এত বছর যাবত ঔষধ খাইয়ে পাগল করে রেখেছে? প্রথমে ভেবেছিলাম তোর বড় মা অর্থাৎ হৃদিকা।কিন্তু না কলকাঠি অন্য কেউ নাড়ছে ঘরে বসে।মিম এগিয়ে এসে বলে,
– বাবা এমন টাও তো হতে পারে যে সে বাড়ির মানুষ? তবে সে কলকাঠি নাড়ছে বাহিরে বসে? এমন কোনো শক্র বা লোক কি এ বাড়ির বাহিরে আছে? যে মায়ের বা তোমার ক্ষতি চাইতে পারে?
– মা কখনো ভেবে দেখিনি এভাবে।তবে তোর বড় ফুঁপুি আম্মার সাথে বাবার সম্পত্তি নিয়ে কিছু বিরোধ আছে।কারণ তোর দাদুভাই আমাদের তিন ভাইবোনের নামে সমান ভাবে সম্পত্তি ভাগ করে দেওয়ার পরো তার নজর আছে আমার কিছু প্রপার্টির দিকে।যাগগে সে সব ছাড় তোর মায়ের কথাটা তোরা বলিস না কারো কাছে।মিম মৃদু হেসে বলে,
– বলবো না বাবা,তবে এবার মায়ের (এনা) তার সংসারে ফিরে আসার সময় হয়েছে আর সে ব্যবস্থা আমি করবো নিজের হাতে।ইমান মিমের হাত শক্ত করে চেপে ধরে বলে,
– আমি ও একমত বাবা তোমার বউ মায়ের সাথে।তুমি শুধু অনুমতি দাও বাদবাকি টা হবে বেবি শাওয়ারের দিন।আমার সব ভেবে রেখেছি।
– ঠিক আছে।মিম রায়হান সাহেব কে অভয় দিয়ে বলেন,
– বাবা তুমি ভয় পেয়ো না,আমরা সবসময় আছি তোমার পাশে।রায়হান সাহেব চোখের জল মুছতে মুছতে বলেন,
– আমি একটু শান্তিতে বাঁচতে চাই তোদের মায়ের সাথে।ইমান হাসতে হাসতে বলে,
– বাবা তার জন্যে তো একটু ধৈর্য্য ধরতে হবে? ঘরে এসে ইমান মিমকে জড়িয়ে ধরে বলে,
– তাহলে সেদিন সেটা কোনো স্বপ্ন ছিল না? মা স্ব-শরীরে এসেছিল তোমার কাছে? মিম মৃদু হেসে ওর শার্টের বোতাম খুলে দিতে দিতে বলে,
– হ্যাঁ অবশ্যই,কর্নেল সাহেব এবার দয়া করে চুপ করুন।এ বাড়িতে দেওয়ালের ও কান আছে এবং যে আমাদের ক্ষতি করতে চাইছে।তার বিশ্বস্ত কর্মচারী হয়তো এ বাড়িতে লুকিয়ে আছে? ইমান আর কোনো কথা না বাড়িয়ে এক পা এক পা করে এগিয়ে আসে ওর কাছে।মিম খানিকটা লজ্জা পেয়ে বলে,
– কি অবস্থা তোমার? হাবভাব তো ভালো ঠেকছে না আমার কাছে? ইমান হাসতে হাসতে বলে,
– যদি বলি আমি তোমাকে পেতে চাই,তুমি একটু পেতে চাইবে না আমাকে? মিম লজ্জা পেয়ে মনেমনে বলে,”ব্যাটা কি আজ খেয়েটেয়ে এসেছে?”#কর্নেল_সাহেব
লেখিকা সুরিয়া মিম
পর্ব- ২৭

“ব্যাটা কি আজ খেয়েটেয়ে এসেছে?” ইমান ওকে জড়িয়ে ধরে গলায় নাকমুখ গুঁজে দিয়ে বলে,
– মোটে ও না সোনা,প্লিজ একটু আদর করতে দাও না আমাকে।
– তুমি না বকরাক্ষস,যাবে না চেঁচিয়ে চেঁচিয়ে ডেকে আনবো বাবাকে?
– যাকে ইচ্ছে তাকে ডাকতে পারো আমি আর ছাড়ছি না তোমাকে।মিম ইমানের বুকে এলোপাতাড়ি কিল ঘুসি মারতে মারতে বলে,
– কাজ টা কি তুমি ঠিক করছ আমার সাথে? মিম হঠাৎ লাফিয়ে উঠে ইমানের ডান নিয়ে রাখে ওর পেটে।ইমান কিছুক্ষণ পর,
অনুভব করে বাবু পা ছুড়ছে ভেতর থেকে।ও তখন আলতো করে দু’হাত দিয়ে জড়িয়ে ধরে মিমের পেট টাকে।তারপর চুমু খেয়ে বলে,
– শান্ত হও বাবা,খুব তাড়াতাড়ি আমি দেখতে পাবো তোমাকে এর পর ইমান সারারাত ঘুমতে পারেনি।মাথা রেখে শুয়ে ছিল মিমের পেটে।সকালে মিম ডাইনিং রুমে এসে দেখে আহমেদ সাহেব ও রায়হান সাহেব দু’জনেই গাল ফুলিয়ে বসে আছে।নাস্তার প্লেট টা দূরে সরিয়ে রেখে বলে,
– এক খাবার কি রোজরোজ খেতে ভালো লাগে? একটু লুচি আলুর দম করতে পারো না? জানো তো লুচি দিয়ে আলুর দম খেতে আমাদের কত ভালো লাগে? রান্নাঘর থেকে নয়ন তাঁরা খুন্তি নিয়ে ছুটে এসে বলেন,
– দু’ভাই মিলে রান্না করে খাও।ঠিক আছে? আমরা কবে আলুর দম আর লুচির তরকারি করে খাইয়েছি? মনে করে বলো আমাকে? মা যতদিন সুস্থ ছিলেন,মা বানাতেন।আমরা বানাতে পারি না।ঠিক আছে? রায়হান সাহেব দাঁত খিচিয়ে বলেন,
– হ্যাঁ ভাবি,তোমরা তো পারো শুধু বাপের বাড়ি যেতে? এবার যদি হৃদিকা বাপের বাড়ি গিয়ে লুচি আলুর দমের তরকারি আর চিংড়ি মাছের ঝোল না শিখে আসে? খোদারকসম ওর একদিন কি আমার দিন।
– মানে কি? তুমি কি মারবে আমাকে? এতো যখন শখ নিজে বানিয়ে খাও না? কে মানা করেছে তোমাকে? মিম এগিয়ে এসে বলে,
– মা তোমরা চাইলে কিন্তু আমি লুচি আলুর দমের তরকারি করে খাওয়াতে পারি বাবাকে।মিহা রাগে ফুঁসতে ফুঁসতে বলে,
– এলেন সবজান্তা আমার এখানে কেউ ডেকেছে তোমাকে? হৃদিকা এহসান কিছুটা রেগে গিয়ে মিহা কে বলেন,
– যাও ঘরে চলে যাও মা,অশান্তি করো না ঠিক আছে?
– মা বলো না? আমি আজকে রান্ন করে খাওয়াবো আমার দুই বাবাকে? নয়ন তাঁরা এগিয়ে এসে ওর কপালে চুমু খেয়ে বলেন,
– তুই কি পাগল হলি মা? ডাক্তার তোকে তাপে যেতে বারণ করেছে।
– না মানে আমি লুচির খামির টা তো বানিয়ে দিতে পারি তোমাকে? তারপর না হয় তরকারির রেসিপি বলে দিলাম? হৃদিকা এহসান হাসতে হাসতে বলে,
– আচ্ছা মা,ঠিক আছে।কি কি লাগবে? আমাকে বল? আমি পাঠিয়ে দিচ্ছি খোদেজার হাতে।আহমেদ সাহেব মৃদু হেসে বলেন,
– দেখ দেখ দেখে কিছু শেখো মেয়েটার কাছ থেকে? যে অবস্থা তোমাদের? মনে হচ্ছে,আমাদের দু’ভাই কে আবার বিয়ে বসতে হবে।নয়ন তাঁরা এগিয়ে এসে বলেন,
– হাতে কি দেখেছ?
– না মানে কি? খুন্তি দিয়ে মারবে আমাকে? আশ্চর্য!
কেমন মানুষ তুমি? মজা করছিলাম তোমার সাথে।মিম হাসতে হাসতে শেষ আহমেদ সাহেবের ভয়ার্ত চেহারা দেখে।
মিম লুচির খামির বানানো শেষ করতেই নিপা ও অধরা এসে লুচি বেলতে বসে ওর পাশে।হৃদিকা এহসান এসে জিজ্ঞেস করে,
– আচ্ছা মা,লুচির খামির বানানোর সময় অল্প করে চিনি আর গোটা কালোজিরে মেশালি কেন তাতে? মিম মৃদু হেসে বলে,
– মা কালোজিরে স্বাস্থ্যের পক্ষে অনেক ভালো আর তাছাড়া সুন্দর একটা স্ম্যাল আসে তাতে আর অল্প করে চিনি মিক্স করেছি যাচে লুচির মচমচে ভাব টা অনেকক্ষন ধরে বজায় থাকে।ইমান এসে হঠাৎ মিমের গালে চুমু খেয়ে বলে,
– বাহ!
সুন্দর তো? সবাই মিলে রান্না শিখছে আমার বউয়ের কাছে? খোদেজা রান্নাঘর থেকে ছুটে এসে মিসেস হৃদিকা কে বলে,
– ছোটো আম্মা দেখে জান,লুচি গুলো কত ফুলকো হয়েছে? খেতে বসে প্রশংসার ছড়াছড়ি রাদ আর ইরাদ তো মিমকে কুকিং ক্লাস খুলে নিতে বলেছে।আহমেদ সাহেব মিমকে এক হাজার এক টাকা সালামি দিয়ে বলেন,
– আজ অনেক দিন পর তোর এই বুড়ো বাপ টা পেটপুরে খাবার খেয়েছে।রায়হান সাহেব মৃদু হেসে মিমের গলায় সোনার চেইন পরিয়ে দিয়ে বলেন,
– একদম রাগারাগি করবি না।তোর মা (এনা) দিয়েছে।

বিকেলে,
নয়ন তাঁরা ও হৃদিকা এহসান শপিং মলে গিয়ে বেবি শাওয়ারের জন্য সমস্ত কেনাকাটা করে এনেছে।ইশান ইভেন্ট ম্যানেজমেন্টের দায়িত্ব নিজের কাঁধে তুলে নিয়েছে।খাবারের দায়িত্ব রাদ ও ইরাদ নিয়ছে।ইমান রায়হান সাহেব ও আহমেদ সাহেবের সাথে গেস্টদের বাসায় ইনভাইট করতে গেছে এবং মিমকে সাজানোর দায়িত্ব নিপা ও অধরা নিয়েছে।রাত নয় টার মধ্যে পুরো বাড়ি আর্টিফিসিয়াল বেলি ফুল দিয়ে সাজানো হয়েছে।

সকাল হতে না হতেই,জোভান,জায়ান ও সাভিন গিয়ে মিমকে ঘুম থেকে তুলেছে।ও ফ্রেশ হয়ে বাথরুম থেকে বের হতেই রিক্ত ওকে বলে,
– লক্ষী মেয়ে’র মতো এই দুধ টুকু খেয়ে নাও।ঠিক আছে? মিম হাসতে হাসতে বলে,
– যাহ বাবা? শেষমেশ এই দুষ্টু টা শাসন করছে আমাকে? মাহি আলম চৌধুরী মেয়ের জন্য তেঁতুলের চাটনি আর চিকেন ফ্রাই করে এনেছে বাসা থেকে।মিম একটু সেখান থেকে খেয়ে বাকি টা ভাগ করে দিয়েছে বাচ্চাদের মাঝে।এর মধ্যে শুনতে পায় ওর ফুঁপি শাশুড়ি এসে পৌঁছেছেন অস্ট্রেলিয়া থেকে।নয়ন তাঁরা বেগম এসে মিমকে বলে,
– জোহা’র মেঝো ছেলে টা কিন্তু ভালো না মা।সামলে থাকিস আর ঘরে একলা থাকলে দরজা দিয়ে রাখিস।
– ঠিক আছে।

কিছুক্ষণ পর,
নিপা ও অধরা এসে সাজাতে বসে ওকে।মিম শাড়ি পরে বলে,
– ভাবি শীতা হার পরবো আর হিজাবের সাথে তোমার দেবরের আনা টায়রা টা পরিয়ে দিও?
– ঠিক আছে,সাজ শেষে নিপা ও অধরা মন্ত্রমুগ্ধ হয়ে তাকিয়ে আছে ওর মুখের দিকে।মৃদু হেসে বলে,
– আমরাই তো চোখ ফেরাতে পারছিনা? ছোটো ভাইয়ের (ইমান) কি হবে? হৃদিকা এহসান মিমকে নিতে এসে বলেন,
– হালকা সাজে বেশ মানিয়েছে মা তোকে।মিমকে নিয়ে যখন মিসেস হৃদিকা ও মাহি সিঁড়ি বেয়ে নিচে নামছিলেন।তখন ইমান মুখ ফসকে বলে ফেলে,
– এই মেয়ে টা কি আমার বউ? এতো সুন্দর লাগছে কেন আজ মেয়ে টা কে? আশেপাশে সবাই হাসতে হাসতে শেষ।ইমান এগিয়ে এসে কোলে তুলে নিয়ে গিয়ে নরম গদির সোফায় বসিয়ে দেয় ওকে।ফুঁপি শাশুড়ি এগিয়ে এসে মিমকে উপহার দিয়ে বলে,
– তোমার গায়ের রং আর একটু উজ্জ্বল হলে সমস্যা ছিল না।আমাদের বাচ্চা তো কালো হবে? ইমান রেগে গিয়ে বলে,
– শোনে ফুঁপি,আমার কোনো কিছু যায় আসে না তাতে।আমার সন্তান সুস্থ থাকুক এবং ভালো থাকুক সেটাই চাই আমি মন থেকে।
– তবুও ইশানের বউ কে দেখ? পরীর মতো দেখতে লাগে মেয়ে টাকে।আমি আসার পর থেকে আমার যত্নে কোনো কমতি রাখেনি সে।আহমেদ সাহেব এগিয়ে এসে বোন কে বলেন,
– জোহা একটু বুঝেশুনে কথা বলো।ঠিক আছে? ছোটো বউ মা (মিম) সন্তান সম্ভবা।ও কি করে আদর আপ্যায়ন করবে তোমাকে।তুমি যে এসে থেকে পিঠে খেয়ে প্রসংশা করছ? সে সব ছোটো বউ মা বানিয়ে।পাশ থেকে রাদ বলে ওঠে,
– নিজের ছেলের বউয়েরা তো আদর আপ্যায়ন করে না।তাই এই বাড়িতে সেসব খুঁজতে এসেছে।বজ্জাত মহিলা নিজের মেয়েকে দিয়ে সাদ ভাইয়ের মাথা টা খেয়ে নিয়েছে।ইমান রাদ কে থামিয়ে দিয়ে বলে,
– আহ!
ভাইয়া এবার থাম।আমি নিশ্চিত এই মহিলা কোনো ঝামেলা পাকাতে এসেছে? সাভার সেনানিবাস থেকে ইমানের কলিগেরা সহ সব বন্ধুরা মিমের বেবি শাওয়ারে ওকে দেখতে এসেছে।ইমানের তিন বন্ধু মিলে মিমকে দু’টো স্বর্নের ব্রেসলেট এবং একটা স্বর্নের আংটি উপহার দিয়েছে।জেনারেল লাহাব মিমকে একটা সোনার চেইন গিফট করেছে।জেনারেল পল্লব সাহেব এবং তার স্ত্রী মিমকে বিশ হাজার টাকা দিয়ে ওর পছন্দের গহনা কিনে নিতে বলেছে।বিহান ওকে একটা স্বর্নের পায়েল গিফট করেছে।সেটা দেখে ইমান ফাঁক তালে মিমকে বলে,
– এটা আমি জীবনে ও পরতে দেবো না তোমাকে।মিমের হাসতে হাসতে পেট ব্যাথা হওয়ার উপক্রম হয়েছে।তবুও ও নিজেকে সামলে নিয়ে বলে,
– তুমি এতো হিংসুটে কেন বাপু? কি হয়েছে? ইমান ব্রু কুঁচকে বলে,
– আমার বউ শুধু মাএ আমার,লোকে নজর কেন দেবে তার দিকে? সে কি জানে না? তুমি শুধু আমার? আবার আই লাভ ইউ বলবে কেন তোমাকে? রায়হান সাহেব হাসতে হাসতে বলেন,”শেষমেশ কি আমার,ছেলের মাথা টাই গেছে? আগে জানলে ঘরোয়া ভাবে অনুষ্ঠানের আয়োজন করতাম হে হে হে।”

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here