কর্নেল_সাহেব পর্ব ২৮+২৯

#কর্নেল_সাহেব
লেখিকা সুরিয়া মিম
পর্ব- ২৮

আপনি এভাবে কেন তাকিয়ে আছেন আমার দিকে? ইমান ওর গালে হঠাৎ চুমু খেয়ে বলে,
– খুব ভালোবাসি যে তোমাকে?
– না মানে,সবাই যে তাকিয়ে আছে আমাদের দিকে?
– তাতে কি? সবাই জানে তুমি আমার বউ।আমি তো লুকোচুরি করার কিছু দেখতে পাচ্ছিনা জাদু ঠিক আছে? মিম মনেমনে বলে,”ধুরর,একে বুঝিয়ে লাভ নেই,নয়তো সবার সামনে মুখ ফসকে অবান্তর কিছু বলে দেবে? মিসেস জোহা এগিয়ে এসে ইমানকে বলেন,
– বাবা তুই আমার মেয়ে (জেয়া) কে বিয়ে করলে এই দিন আর দেখতে হতো না তোকে।ইমান রেগে গিয়ে টেবিলে লাথি মেরে বলে,
– শোনো ফু্ঁপি,
ফাজলামো বন্ধ করো ঠিক আছে? বেশি বারাবাড়ি করলে ঘাড় ধরে এই বাড়ি থেকে বের করে দেব আর আমার একটু ও ভুল হবে না তাতে।আমি কিন্তু তোমার ভাইদের মতো সহজসরল নই ঠিক আছে? তুমি নিজের সংসারে শান্তিতে থাকতে পারছনা বলে এসে অশান্তি করছ এই বাড়িতে? রায়হান সাহেব এগিয়ে এসে ছেলে কে বলেন,
– বাবা তুই একটু শান্ত “হ”।আমি অনুরোধ করছি তোর কাছে।
– শান্ত? আরে কিসের শান্ত? তাড়াতাড়ি ঘাড় ধাক্কা দিয়ে বাড়ি থেকে বের করো এই মহিলাকে।সাদ ভাইয়ের মাথা খেয়ে শান্তি হয়নি এখন আবার এসে আমার পেছনে লেগেছে? উনি কোন সাহসে আমার বউয়ের সামনে বসে বাজে আলাপচারিতা শুরু করেছে?
শোনে বাবা,এই মহিলা তোমার বোন।আমার না ঠিক আছে? ভদ্রভাবে থাকতে বলো,নয়তো ঘাড় ধাক্কা দিয়ে বের করে দেবো এই বাড়ি থেকে।রায়হান সাহেব আর কোনো কথা না বাড়িয়ে মিসেস জোহা কে নিয়ে যায় নিজের সাথে।বিহান মিহা কে দেখে স্মিথ হেসে বলে,
– শয়তান সারাজীবন শয়তান থাকে।কোনো পরিবর্তন হয় না তাদের মাঝে।কৌতুহল বশত রেহান জিজ্ঞেস করে,
– স্যার ব্যাপার টা কি? একটু খুলে বলা যায় কি আমাকে?
– হ্যাঁ আসলে,
আমার এক্স (মিহা) কখনো তার ছোটো বোনের (মিম) কথা বলেনি আমাকে।আমি জানতাম, তারা তিন ভাই বোন এখন দেখি তার একটা ছোটো বোন (মিন) ও আছে? প্রিকি হাসতে হাসতে বলে,
– হয়তো স্যার মেয়ে টার কনফিডেন্স লেভেল জিরো ছিলো?
– সেটাই মনে হচ্ছে আমার কাছে।নাহলে সারাবছর আমার সাথে প্রেম করে শেষমেশ গিয়ে বিয়ে বসে নিজের ছোটো বোনের হবু স্বামীর (ইশান) সাথে? যাগগে বাদদেও,
এখন তো ছোটো বোন সন্তান সম্ভবা।জানি না সেটা কি করে সহ্য হচ্ছে তার কাছ? তবে আমি বলতে বাধ্য আমার এক্স’র চেয়ে তার ছোটো বোন ভারি মিষ্টি দেখতে,
আগে জানলে ওর বোন কেই বিয়ে করে নিতাম এতো সময় নষ্ট করতে হতো না আমাকে।মিহা আলগোছে চোখের জল মুছতে মুছতে চলে যায় সেখান থেকে ক্যাপ্টেন হৃদয় এসে বলে,
– ম্যাম (মিম) আসলেই অনেক ভালো মানুষ।কি সুন্দর করে কথা বললেন আমার সাথে।ইমান স্যার যতোই বদমেজাজী লোক হোক না কেন মানুষ ভালো অস্বীকার করার উপায় নেই তাকে।অনুষ্ঠান শেষ হতে না হতেই,
মিম এনা খান কে নিয়ে আসে নিজের সাথে।তাকে দেখে জোহা ছুটে এসে মিমকে একটা চড় মেরে বলে,
– তোমার সাহস তো কম না? তুমি এই পাগল টাকে কেন নিয়ে এসেছ এই বাড়িতে?
– ফুঁপি আম্মা আপনি ভুলে যাবেননা যে আপনি এ বাড়ির মেয়ে হলে,আমার শাশুড়ি মা (এনা) কিন্তু এ বাড়ির বউ।ঠিক আছে? এটা তার সংসার।সে কেন পরে থাকবে বাগান বাড়িতে? আর হ্যাঁ, আমার শাশুড়ি মা কিন্তু পাগল নয় এখন অনেক টা সুস্থ হয়ে গেছে।মিহা এসে মিমকে বলে,
– বোন তুই কেন ঝামেলা করতে চাইছিস ফুঁপু আম্মার সাথে? রায়হান সাহেব রেগে গিয়ে বলেন,
– তুমি চুপ থাকো।তোমাকে কেউ ডাকেনি ঝামেলা মেটাতে।আহমেদ সাহেব এগিয়ে এসে বলেন,
– সেটাই,আমি ও একমত মিমের সাথে।এটা এনার সংসার ও কেন পরে থাকবে বাগান বাড়িতে? জোহা তেড়ে এসে বলে,
– ভাই আপনারা কি ভুলে গেছেন? ভাবি গলা টিপে মেরে ফেলার চেষ্টা করেছিল নিজের ছেলে (ইমান) কে? ইমান মৃদু হেসে মিমকে বলে,
– সোনা তুমি মা কে ঘরে নিয়ে যাও নিজের সাথে। আমি দেখছি কেন এই মহিলার আমার কে দেখে এতো জ্বালাতন শুরু হয়েছে? হৃদিকা এহসান চুপ করে তাকিয়ে আছে এনা খানের দিকে।তাড়াতাড়ি দরজা চাপিয়ে এসে এনা খানকে জড়িয়ে ধরে বলেন,
– ছোটো বাড়িতে খুব সাবধানে থাকতে হবে তোকে।বলা তো য়ায় না কোন দিক থেকে বিপদ-আপদ ঘনিয়ে আসে? মিম হঠাৎ বাথরুম থেকে বের হয়ে বলে,
– ধাপ্পা,
তোমরা ধরা পরে গিয়েছ আমার কাছে।এনা খান হৃদিকা এহসান কে হাসতে হাসতে বলেন,
– আপা দরজা লাগিয়ে এসো,বলা তো যায় না কে এসে পরে মিমের কাছে? মিম এগিয়ে এসে বিছানায় শুয়ে মিসেস এনার কোলে মাথা রেখে বলে,
– জানো মা? আমার প্রথম দিন দেখেই সন্দেহ হয়েছিল তোমাকে? স্পেশালি যখন দেখতাম বড় মা (হৃদিকা) লুকিয়ে লুকিয়ে যাচ্ছে বাগান বাড়িতে? প্রথমে খুব অদ্ভুত লাগলে ও,পরে একদিন তোমার ছেলেকে পাঠিয়ে দেই বড় মায়ের পিছে।তারপর তিনি এসে যা বললো,
তাতে আমি শতভাগ নিশ্চিত হই যে আমার মা (এনা) সুস্থ হয়ে গেছে।জানো মা আমার আগে বিশ্বাস ছিল যে আমাদের লুক্কায়িত শত্রু বাড়ির বাহিরে আছে আর এখন আমি নিশ্চিত যে সে এই বাড়িতেই আছে।শুধু প্রমাণের অভাবে আমি কিছু করতে পারছিনা তাকে।হৃদিকা এহসান স্থির হয়ে বলেন,
– মা তুই অন্তত তার নাম টা বল আমাদের কাছে?
– না মা,শুধু এতো এতটুকু জেনে রাখো।যে সে আমাদের নিমন্ত্রিত অতিথি হয়ে এসেছে এই বাড়িতে।ইমান এসে ঘরের দরজা নক করে বলে,
– বলি আমাকে কি একটু ভেতরে ঢোকার অনুমতি দেওয়া যাবে? মিম দরকার খুলে এগিয়ে এসে ইমানের গলা জড়িয়ে ধরে বলে,
– না গো,তুমি চুপচাপ এখনে দাঁড়িয়ে থাকো।ঠিক আছে? ইমান ওর গালে চুমু খেয়ে বলে,
– সোনা এখানে কি খুব জোরে লেগেছে? মিম মৃদু হেসে বলে,
– কোই না তো? আমার তো মনে হচ্ছে যেন আমার থেকে বেশি তোমার কষ্ট হয়েছে? ইমান একটু চিন্তিত হয়ে বলে,
– আমি বুঝতে পারছিনা যে ফুঁপির গায়ে কেন মাকে দেখে ফোসকা পরেছে? আজকে আমি যাচ্ছে তাই বলে তাকে অপমান করেছি কারণ তার জন্য বেশ কয়েকবার বাবা এবং মা’র (হৃদিকা) সংসার ভাঙতে বসেছিল।এই ব্যাপারে আমি আগে কিছু বলিনি তোমাকে।মিম মৃদু হেসে ওর কপালে চুমু খেয়ে বলে,
– এখানে দাঁড়িয়ে থাকবে? ভেতরে যাবে না মায়ের কাছে? ইমান ঘরে ঢুকে এনা খান কে খুব শক্ত করে জড়িয়ে ধরেছে।মিসেস এনা মৃদু হেসে বলেন,
– বোকা ছেলে? তুমি কাঁদছ কেন ভাবে? ইমান অভিমান করে বলে,
– তুমি যে সুস্থ হয়ে গেছো,সেটা বোন (রিক্ত) ও জানতো।অথচ কেউ কখনো জানানোর প্রয়োজন মনে করোনি আমাকে? আর বড় মা (হৃদিকা) তুমি? যাও বলতাম না তোমার সাথে।মিম মিটিমিটি হাসছে ইমানের রাগ করা দেখে।ইমান হঠাৎ এসে মিমকে জড়িয়ে ধরে বলে,
– আমার বউ টা সবচেয়ে বড় শয়তান।আজকে ওর খবর আগে।এনা খান এবং হৃদিকা এহসান হাসতে হাসতে বলেন,
– খবরদার কিছু বলবি না,আমাদের লক্ষী মেয়ে টা কে।#কর্নেল_সাহেব
লেখিকা সুরিয়া মিম
পর্ব- ২৯

শোনো মা,তোমার এই না মেয়ে না তোমাদের আহ্লাদে বেশি বিগড়ে গেছে।ঠিক আছে? আচ্ছা ওর কি নিজের দিকে একটু খেয়াল রাখা উচিত না? ও নিজে ক’দিন পরে এক পুএ সন্তানের মা হতে চলেছে? মিম মুখ ভেংচে বলে,
– আশ্চর্য!
মা বাড়িতে আসতে পারলো না? আর এ ঢং করতে শুরু করেছে? একটা দেব কান গরম হয়ে যাবে।ইমান দু’পা এগিয়ে এসে দেখে,
– কত সাহস তোমার দেখি? আরে দেখি না মারো আমাকে? মিম হঠাৎ ওর গলা জড়িয়ে ধরে বলে,
– বোকা একটা,দুষ্টুমি ও বোঝে না হে হে হে।ইমান ওর কপালে চুমু খেয়ে বলে,
– কান মলে দেব তোমার,তুমি চেনো আমাকে?
– হ্যাঁ অবশ্যই,সহজ-সরল জামাই আমার।সোনা একটা,যাও মা কে দিয়ে আসো বাবার কাছে।হৃদিকা এহসান কে ঘরে একা দেখে জোহা এসে বলে,
– ভাবি আপনি কিছু বললেন না? ওই একরত্তি মেয়ে (মিম) টি কে? আমি খুব অবাক হচ্ছি ওর সাহস দেখে? হৃদিকা এহসান মৃদু হেসে বলেন,
– অনেক রাত হয়েছে জোহা।তুমি গিয়ে এখন শুয়ে পরো ঠিক আছে?
– কিন্তু ভাবি?
– আমি কিন্তু ভুলে যাইনি জোহা, তোমার জন্যে আমার সংসার ভাঙতে বসেছিল ঠিক আছে? প্লিজ এখান থেকে যায় তোমার বাজে কথা শোনার সময় নেই আমার কাছে আর হ্যাঁ,
প্লিজ আমার সন্তানদের কোনো ক্ষতি করার চেষ্টা করো না ঠিক আছে? আমি কিন্তু আগের মতো বোকা নই জোহা।আমার সন্তানদের কোনো ক্ষতি হলে আমি ছেড়ে দেব না তোমাকে।আমার বিয়ের পর যখন আমার সংসার ভাঙতে বসেছিল,তখন ছোটো (এনা) বারবার করে বুঝিয়েছিল তাকে।ছোটো (এনা) কখনো চায়নি আমাদের ছাড়াছাড়ি হয়ে যাক।ও বরং বারবার করে মিলিয়ে চেয়েছে আমাদের দু’জনকে।আপনি জানেন?
ইশানের সাথে বিয়ে ভেঙে যাওয়া পরে ও আপনার ভাই কেন মিমকে মরিয়া হয়ে তার ছোটো ছেলের বউ করে এনেছে এই বাড়িতে? আমি বলছি,
কারণ মিমের মাঝে সে ওইসব গুন দেখতে পেয়েছিল,যা আমাদের ছোটোর (এনা) মধ্যে আছে ঠিক আছে? এনা কখনো আমি তার স্বামীর প্রথম স্ত্রী বলে হিংসে করেনি আমাকে,ও বরং চেয়েছে আমাকে আমার অধিকার গুলো পাইয়ে দিতে।আমি ছিলাম বোকা যে সবসময় ওর ক্ষতি চাইতাম আর তোমার বুদ্ধিতে নিজের সংসারে অশান্তি ডেকে আনতাম ঠিক আছে? তবে আমি এ ও জেনে ছাড়বো, যে কে ছোটোর এতো বছর ধরে এই অবস্থা করেছে? মিসেস হৃদিকার শেষ কথা টা না শুনেই জোহা রাগে ফুঁসতে ফুঁসতে বেড়িয়ে যায় ঘর থেকে।মিহা কে একা রান্নাঘরে দেখে ওকে এসে বলে,
– মেঝো বউ মা,তুমি কি বন্ধ্যা? তোমার কেন বেবি কন্সিভ হয়নি ছোটো বউ মা’র আগে? মিহা যত সম্ভব নিজেকে সামলে নিয়ে বলে,
– ফুপি আম্মা সন্তান দেওয়া না দেওয়া আল্লাহর ইচ্ছে।আমাদের কোনো কিছু করার নেই তাতে।আমরা অবশ্য চেষ্টা করছি।আল্লাহ তাআ’লা দিলে খুব তাড়াতাড়ি খুশির খবর শুনতে পাবে।নিপা তখন এসে মিহা কে বলে,
– ঘরে যা মেঝো,ইশান ভাই ডেকে পাঠিয়েছে তোকে।
– আরে নিপা বউ মা যে? তোমার বাবা-মা কেমন আছে? শুনলাম গ্রামের বাড়িতে দোতলা বাড়ি বানিয়েছে তাও আবার আমাদের ছেলের টাকাতে? অধরা এগিয়ে এসে জোহা কে বলে,
– ফুপু আম্মা আপনার লজ্জা নেই না? গায়ে কি গন্ডারের চামড়া লাগানো আছে? ভুলে যাবেননা আমাদের ও সমান অধিকার আছে এই বাড়িতে আর হ্যাঁ,
রাদ ভাই নিজের ইচ্ছায় তার শশুর শাশুড়ি কে বাড়ি বানিয়ে দিয়েছে ঠিক আছে? আমার মনে হয় না রাদ ভাইয়ের এই নিয়ে বিন্দু মাএ মাথা ব্যাথা আছে? নিপা স্মিথ হেসে বলে,
– নিজের মেয়ে কে তো ছোটো ভাইয়ের (ইমান) ঘাড়ে গছাতে পারেননি? তাই মিমকে একটু ও সহ্য হচ্ছে না আপনার কাছে।শুনুন,ফুপু আম্মা আমরা বোকা নই আর ঘাসে মুখ দিয়ে ও চলি না ঠিক আছে?
– বাব বাহ!
বউ মা? তোমাদের তো দেখি মুখে বুলি ফুটেছে? তাই এই কথা গুলো কি ওই বাচ্চা মেয়ে টা শিখিয়ে দিয়েছে?
– না ফুপু,সামান্য বোধবুদ্ধি আমাদের ও আছে।আমরা মিডলক্লাস ফ্যামিলির মেয়ে হলো ও না আপনার মতো লোভী আর স্বার্থপর নই ঠিক আছে? চল চল নিপা এর পেছনে কথা খরচ করে লাভ নেই রে ঘরে চল শুতে।যাওয়ার সময় নিপা বিড়বিড় করে অধরা কে বলে,
– এই মহিলার হাবভাবে সুবিধে জনক লাগছে না আমার কাছে।
– ঠিক বলেছিস,যে ক’দিন থাকে চোখে চোখে রাখতে হবে তোকে।বলা তো যায় না আবার কোন বদবুদ্ধি নিয়ে ঢুকেছে এই বাড়িতে? গতবছর যখন এসেছিল,তখন আমাদের দাদি শাশুড়ি কে প্যারালাইজড করে দিয়ে গেছে।
– সেটাই,আবার না ছোটোর (মিম) ক্ষতি করে দেয়? ও তো মা হতে চলেছে? আমি নিচে এসো শুনলাম,
এই মহিলা যা তা বলে উষ্কাচ্ছিল মিহা কে।অধরা বেশ চিন্তিত হয়ে বলে,
– এখন ডিটেকটিভ হিসেবে ছেলে গুলোকে লাগাতো হবে এই মহিলা ও মিহা পিছে।ওদের কথাবার্তা শুনে জোভান,জায়ান ও সাভিন বলে,
– যো হুকুম রাজমাতা,আপনারা যা চান তাই হবে।আমরা ও দেখি কার কত বড় সাহস? এবং সে কি করে বিপদে ফেলে আমাদের ছোটো মা কে? মিম নাইটি পরে আছে বিছানাতে।ইমান হঠাৎ এগিয়ে এসে মিমকে জড়িয়ে ধরে বলে,
– দেখ তোমার বেবি বাম্প কিন্তু একটু একটু করে বোঝা যাচ্ছে? আমি কিন্তু বেশ উপভোগ করছি আমার পিতৃত্ব টাকে।মিম খেয়াল করে দেখে ইমান ওর টি-শার্টের মধ্যে কিছু একটা ঢুকিয়ে পুরো প্রেগন্যান্ট মহিলার মতো দাঁড়িয়ে আছে বেডের পাশে।মিম ফিক করে হেসে দিয়ে পিছনে ফিরে বলে,
– যাহ দুষ্টু,
পাগলে পেয়েছে তোমাকে? ইমান মিমের হাত দুটো নিজের পেটের ওপরে রেখে বেলে?
– কি আশ্চর্য?
তুমি মা হলে আমাকে তো বাবা হতে হবে? মিম ইমানকে কাছে এনে ওকে কোলের ওপরে শুয়ে দিয়ে বলে,
– সত্যি আমি অনেক ভাগ্য করে পেয়েছি আপনাকে।আই লাভ ইউ,খুব খুব ভালোবাসি তোমাকে।মিহা মিমের ঘরের সামনে থেকে যাচ্ছিল তখন ওর নজর চলে যায় রুমের দিকে।ড্রিম লাইটের আবছা আলোয় দেখা যাচ্ছে কেউ একজন তার সমস্ত ভালোবাসা উজার করে দিচ্ছে তার স্ত্রীর কাছে।

সকালে,মিহা নিপাকে কথায় কথায় বলে,
– ভাবি ওদের কি মাথা খারাপ? ইমান এই অবস্থায় কি করে সহবাস করতে পারলো মিমের সাথে? অধরা মৃদু হেসে বলে,
– সন্তান গর্ভে থাকাকালীন সহবাস করলে সমস্যা হয়।এ কথা কে বলেছে তোমাকে? প্রথম তিন মাস অনেক কেয়ারফুল থাকতে হয় এবং সহবাসের সময় দু’জনে সাবধানে থাকলেই হয় ঠিক আছে? মিহা মিমের ভোজা চুল দেখে গিয়ে জিজ্ঞেস করে,
– তোর শরীর ঠিক আছে? মিম হাসিমুখে হ্যাঁ সূচক উত্তর দিতেই।ইমান ওর গালে চুমু খেয়ে বলে,
– তাড়াতাড়ি নাস্তা শেষ করো সোনা,আজকে তোমার ও পুঁচকু সোনার জন্য ডক্টরের কাছে এ্যাপয়েনমেন্ট নেওয়া আছে।নয়ন তারা এসে বলেন,
– একটা আল্ট্রা করে আসিস বাবা জেনে আসিস তো আমাদের দাদুভাই কোমন আছে? জোভান এসে মিমের কাছে আবদার করে বলে,
– ছোটো মা আমি একটু মাথা রাখবো তোমার পেটে? মিম মৃদু হেসে ওর মাথাটা পেটের ওপরে রেখে বলে,
– হ্যাঁ বাবা অবশ্যই,এতে জিজ্ঞেস করার কি আছে? তোমার তো ভাইয়া? তোমাকে তো দেখে রাখতে হবে তাকে? সাভিন এসে গাল ফুলিয়ে বলে,
– বুঝিছি ছোটো মা আর ভালোবাসে না আমাকে? অধরা হাসতে হাসতে বলে,
– একটা দেব না? সব গুলো এসে লেগেছে মেয়ে টার পিছে? রিক্ত এসে বলে,
– আই এম সো হ্যাপি,অবশেষে একটা বেবি আসবে আমাদের বাড়িতে।আমাকে ফুপি বলে ডাকবে লাভ ইউ রাঙা মা তোমাকে।ইমান মিমকে চোখ টিপ মেরে বলে,
– আই লাভ ইউ বেবে।মিহা মুখ ফসকে বলে ফেলে,
– সে তো আমার কাল রাতেই দেখা হয়ে গেছে? ইমান বিষম খেয়ে তাকিয়ে আছে মিমের মুখের দিকে।মিম মৃদু হেসে ওর মাথায় হাত বুলতে বুলতে বলে,
– তুমি যে কি করো না? ধরে দু’ঘা দিতে মন চাইছে তোমাকে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here