কাকতাড়ুয়া পর্ব -০৫

#কাকতাড়ুয়া
#পর্ব_৫
#লেখিকা_নূরজাহান_ফাতেমা
_______
দরজায় ঠকঠক শব্দে ঘুম ভেঙে গেল আমার।উফ! এটা স্বপ্ন ছিল!মনে মনে আওড়ালাম আমি।স্বপ্ন নাকি তিন প্রকার।একটা আসে সয়তানের পক্ষ থেকে,একটা আসে কল্পনা থেকে আর একটা স্বয়ং আল্লাহর পক্ষ থেকে।আজকের স্বপ্নকে দুই নাম্বারে ধরা যায়।রাতে নিশান ভাইয়ের কল্পনায় ঘুমিয়েছি জন্যই হয়তো ওনাকে স্বপ্ন দেখা।মেকি হলেও যে কিছু কিছু স্বপ্ন মানুষের মন ভালো করতে যথেষ্ট।তা আবারও প্রমান পেলাম।আমার হৃদয়জুড়ে যে প্রশান্তি ছেয়ে গেছে।অন্যরকম সুখানুভুতির কম্পন তুলছে শিরায় শিরায়।আচ্ছা এমন কেন হচ্ছে?স্বপ্নে আমার প্রতি নিশান ভাইয়ের দেখানো আবেগটা কি আমার হৃদয়ের সুপ্ত আকাঙ্ক্ষা ছিলো?তাছাড়া এতো সুখা অনুভুত হচ্ছে কেন?আমি কি ওনাকে…ধুর কি ভাবছি এসব।দরজায় আবারও টোকা লাগার আওয়াজ হল।স্মিত হেসে দুই হাতের তালুর উল্টো পিঠে চোখ ডলতে ডলতে দরজা খুলে দিলাম।বাইরে মামি দাড়িয়ে আছে।আমাকে দেখে বলল,

“নবাবের বেটি এতো বেলা করে ঘুমালে চলবে?রান্না বান্না কে করবে?তাড়াতাড়ি ওইগুলা কেটে রান্না কর।”

মামির হাতের ইশারা অনুযায়ী তাকিয়ে দেখি দুইটা মুরগী ও দুইটা কবুতরের বাচ্চা জবেহ করে রেখেছে। হটাৎ এত আয়োজন করছে কেন?পরক্ষনেই মনে পড়ল নিশান ভাইকে মেহমানরা দেখতে আসবে হয়তোহ।মামি ধমক দিয়ে বললেন,

“কোন ধ্যান ধরলি।যা তাড়াতাড়ি কর।আমার বাবার বাড়ি থেকে লোক আসবে।গরুর মাংস ভিজিয়ে রেখেছি।সেটাও রান্না করিস।”

প্রতিউত্তর না করে ঘর থেকে বেড়িয়ে এলাম আমি।আজ কাজের চাপ বাড়লেও মামি যে কোন সাহায্য করবে না ঢের বুঝতে পারছি।হয়তো নিশান ভাই সুস্থ হওয়ার আগে পর্যন্ত চলবে এমন।চোখ মেলে ভালোভাবে চারিদিকে তাকিয়ে দেখি সকাল নেমেছে।বেলা ৭টা হবে হয়তো।প্রায় শেষ রাতের দিকে ঘুমাতে যাওয়ায় কখন সকাল হয়েছে বুঝতেই পারিনি।আজকে ফজর নামায মিস হয়ে গেল জন্য মন খারাপ লাগছে।নামায কখনো মিস দেই না আমি।এখন নামাযটা আদায় করা যাক।অযু করতে বাথরুমে গেলাম।ওসব ওখানেই ফেলে রাখলাম।মামির কথায় পাত্তা না দেয়ায় বেশ রেগে গেলেন তিনি।কিন্তু নিশান ভাইয়ের ঘুম ভেঙে যাওয়ার ভয়ে আজকে আর কথা বাড়ালেন না।রাগে ফুঁসতে ফুঁসতে শুধু একটা কথাই বলে গেলেন।

“নয়টার আগে যেন সব রেডি পাই।না হলে কি হবে বুঝতেই পারছিস।এখন তোর ন্যাকা কান্নায় ভুলে আমার ছেলেও তোকে বাঁচাবে না।”

এখনো নিরুত্তর রইলাম আমি।মামির যাত্রা পথে তাকিয়ে একটা রহস্যময়ী হাসি দিলাম।রাতের স্বপ্নটা বেশ প্রভাবিত করেছে আমাকে।মনে মনে বললাম,

“আপনি যতই আমাকে কষ্ট দিতে চান।এসব কটু কথা এখন থেকে আর আমাকে আঘাত দিতে পারবে না।আর কখনো অশ্রুসিক্ত হবে না।এই একা আমি’র পাশেও সবার অগোচরে অনেকে আছে।এমনকি আমারও অগোচরে সাহায্য করছে তারা।তারাই আপনার সব নষ্ট পরিকল্পনা নিখুঁতভাবে ভেস্তে দিবে।এখন তো আমার দ্বায়িত্ব তাদের এক এক করে খুঁজে বের করা।”

_________
কাজে হাত দেয়ার আগেই মামি ছোট বালতি ভর্তি মাছ কাটতে দিয়ে বলল,

“ছোট মাছ গুলো চচ্চড়ি করবি।আর বড় মাছের কয়েক টুকরা শুধু পেয়াজ দিয়ে রান্না করবি।বাকিগুলো ফ্রিজে রাখবি।”

এগুলো মামির বাবার জন্য।তিনি মাংস একদম খান না।হাতে সব নিয়ে কাজে লেগে পড়লাম আমি।মামি কিছু সময় দাঁড়িয়ে রইল আমার প্রতিক্রিয়া জানতে।অন্য সময় হলে নিশ্চয়ই অনুনয় করে বলতাম একটু সাহায্য করতে অথবা কাজ কমাতে।কিন্তু আজ কিছুই বলছি না।একদম নির্লিপ্ত রয়েছি।আমার এমন ভাবলেশহীন অভিব্যক্তি দেখে আশ্চর্যান্বিত হচ্ছেন তিনি।মুখে বোকা বোকা ভাব স্পষ্ট ফুটে উঠেছে।তার ভ্যবলাকান্ত মার্কা চেহারা দেখতে বেশ মজা লাগছে আমার।স্মিত হেসে বললাম,

“আরও কিছু কি করতে হবে মামি?মাথাগুলো দিয়ে কি মড়ু ঘন্ট করব?আর খাসির মাংসের কালিয়া করলে কিন্তু মন্দ হত না।আপনার বড় ভাই অনেক পছন্দ করে।সাথে ইলিশ মাছের ডিম ভাজি আপনার প্রিয় ভাতিজা আদনান ভাইয়ার ভীষণ পছন্দের।ফ্রিজে রাখা আছে হয়তো।”

“যা দিয়েছি তাই রান্না কর।তোর মামার কি টাকশাল আছে যে এতোকিছু রান্না করে খরচ বাড়াতে হবে।”

বলেই মামি দ্রুত প্রস্থান করলেন।আমার আচরণে বেশ ভড়কে গেছেন তিনি।আমিও আপন মনে একটু হাসি দিলাম।যাক আমার টেকনিকটা কাজে দিয়েছে।এটা না বললে নিশ্চয়ই মামি আরও কিছু আইটেম রান্না করতে বলত।আপাতত একটু তো কাজ কমলো।নিশান ভাই ঠিকই বলে বুদ্ধি থাকলে কষ্ট পেতে হয় না।মুরগী এবং কবুতরের চামড়াসহ একটানে ছিলে ফেললাম।ছোট মাছের মাথা কেটে ফেলে দিয়েছি।সেগুলো দ্রুত হাঁসের সামনে ফেলে দিয়ে আসলাম।প্যাক প্যাক করে নিমিষেই সব সাবাড় করে ফেলল সেগুলো।সময় তো নয়টা পর্যন্ত।এর মাঝে সব কমপ্লিট করতে হবে।একটু পরেই কি যেন মনে করে মামি বটি সমেত উপস্থিত হলেন।এসে তার চোখ চড়কগাছ।এতো দ্রুত সব কেটে কমপ্লিট করলাম কিভাবে হয়তো এটাই ভাবছেন তিনি।কবুতর-মুরগির পালকই তো এইসময়ে ছাড়ানো শেষ হবে না।সন্দিহান দৃষ্টিতে আমার দিকে তাকিয়ে বললেন,

“বড় মাছটা আমাকে দিয়ে তুই ওগুলো ধুয়ে নে।”

আমিও স্মিত হেসে মাছটা মামিকে কাটতে দিলাম।ওগুলো ধুয়ে এসে দেখি মামি পেঁয়াজ,মরিচ সব কেটে দিয়েছেন।রান্না করার মাছটুকু রেখে বাকিগুলো নিজেই ফ্রিজে তুলে রেখেছেন।হয়তো আমি বেশি বেশি দিব এই ভয় পাচ্ছেন।যাক ভালোই হল।আমার অনেক কাজ এগুলো।আমি কিছু না বলে মিটি মিটি হাসছি।যেটা মামিকে ভাবিয়ে তুলছে।কিছু সময় চুপ থেকে হটাৎ তিনি আমাকে কাজ থেকে উঠিয়ে দিলেন।ইতস্তত করে বললেন,

“এরিন তুমি না হয় একটু বিশ্রাম নেও।এতো সময়ে অনেক কাজ করেছো।বাকিটুকু আমি দেখছি।”

কতদিন পর যে মামি আমার সাথে এত নরম গলায় কথা বললেন মনে নেই।

“প্রয়োজন নেই মামি।আমি সব পারব।নয়টার আগেই হয়ে যাবে দেখবেন।”

শাণিত কন্ঠে বললাম আমি।অধরে এখনো ফুটে রয়েছে সেই রহস্যময়ী হাসি।মামি আমাকে জোড় করে ঘরে পাঠিয়ে দিলেন।পা ব্যাথায় টন টন করছে আমার।এতো সময় বসে থাকায় আরও ব্যাথা বেড়েছে।নিশান ভাইয়ের দেয়া অয়েন্টমেন্ট আবারও পায়ে লাগালাম।বিছানায় গা এলিয়ে পরম শান্তি অনুভুত হল।অধরে আবারও ফুটে উঠল রহস্যময় হাসি।
_________
কেটে গেছে এক মাস।বই খাতা খুলে বসে আছি নিশান ভাইয়ের সামনে।তিনি আমাকে হায়ার ম্যাথের একটা জটিল অংক বুঝাচ্ছেন।আমার বর্তমানে সেদিকে কোন খেয়াল নেই।ডুব দিয়েছি বিগত এক মাসের দিনগুলিতে।এই এক মাসে অনেক পরিবর্তন হয়েছে।মামি সেদিন সত্যি ভীষণ ভয় পেয়েছিলেন।মামাকে গিয়ে বলেছিলেন আমার ওমন উদ্ভট আচরণের কথা।মামাও পর্যবেক্ষন করে দেখেছিলেন একদম বদলে গিয়েছি আমি।সারাক্ষন মুখে রহস্যময় হাসি ঝুলিয়ে রাখি।তারা ধরেই নিয়েছে নিশান ভাইয়ের ব্যবহারে অতিরিক্ত মানসিক আঘাত পেয়েছি আমি।যার দরুন এমন অসামঞ্জস্য আচরণ করছি।যদি মাথা আরও বিগড়ে যায় তখন তো কোন অঘটন ঘটিয়ে ফেলব।সব দ্বায় তাদের উপরই আসবে।তাই আমাকে আর ঘাটাতে আসেন না তারা।আগের মতো কাজও করান না।খুব প্রেশার পড়লে নিসাকে কাজে বলতেন।এখন তো নিসাও বাড়ি নেই।মামি একাই সব করেন।নিসা ঢাকা কলেজে পড়ে।ওখানে মেস নিয়ে থাকে।সামনে এইচ এস সি পরীক্ষা তাই পড়াশোনা নিয়ে ব্যস্ত আছে।যেহেতু আমার পিছে কেউ গোয়েন্দাগিরি করে না তাই নিশান ভাইয়ের কাছে পড়াটা আমার জন্য বেশ সুবিধাজনক হয়েছে।এই এক মাসে আমার পড়াশোনায় যত গ্যাপ ছিলো সব পুষিয়ে দিয়েছেন তিনি।উপরন্তু এখন খুব ভালো প্রিপারেশন হয়েছে আমার।নিশান ভাই এই এক মাসে আমাকে ভার্সিটিতে পড়ার স্বপ্ন যুগিয়েছে।সেখানে ভর্তি হলে আমার অনেক বান্ধবী হবে,অনেক মজার জীবন পাবো আমি এসব বলেছে।আমার জীবনের সব দুঃখ ঘুচাতে চাইলে এইটা মোস্ট টার্নিং পয়েন্ট বুঝিয়েছেন নিশান ভাই।আমিও দৃঢ় সংকল্প করেছি নিজের সেরাটা দেয়ার।নিশান ভাইয়ের ভার্সিটিতেই পড়ব আমি।তার ক্যাম্পাসে মুক্ত বিহঙ্গের মতো উড়ে বেড়াব।হটাৎ নিশান ভাই স্কেল দিয়ে আমাকে টোকা দিলেন।চমকে উঠলাম আমি।চোখ পাকিয়ে তাকালাম ওনার দিকে।

“কি ব্যাপার মুখ নেই আপনার?ডাক দিতে পারেন না?এভাবে টোকা দিলেন কেন?”

“যেই গভীর ধ্যানে মগ্ন ছিলি ডাক দিলে কানে ঢুকতো না।”

“আমি কি বয়রা নাকি যে এতো কাছে থেকে কেউ কথা বলবে আর আমি শুনতে পাব না।”

“তাই নাকি!আমি কিছু বললেই শুনতি?”

সুক্ষ্ম নয়নে তাকিয়ে প্রশ্ন করলেন তিনি।আমিও ভাব নিয়ে বললাম,

“অবশ্যই।কোন সন্দেহ আছে আপনার?”

“আচ্ছা তাহলে যে ম্যাথটা আমি এতো সময় ধরে বুঝালাম তা না দেখে করে দেখা।”

তটস্থ হলাম আমি।সারা বইয়ের সব শেষ হলেও জাস্ট এই একটা ম্যাথই আমার মাথায় ঢোকে না।এমনিতেই পারি না।তারউপর এতক্ষন কিছুই শুনিনি।কি করব আমি।গোল গোল চোখে তাকিয়ে রইলাম আমি।নিশান ভাই ভ্রু আন্দোলিত করে বললেন,

“কি ম্যাডাম,কি হল?কুইক করে ফেলেন।”

আমি কিছু সময় আমতা আমতা করলাম।অতঃপর টপিক চেঞ্জ করতে বললাম,

“আচ্ছা নিশান ভাই আপনি যে এতোদিন বাড়িতে আছেন আপনার ভার্সিটির পড়াশোনার কি হবে?এই সময় যে লেকচারগুলো দিয়েছে আপনি তো মিস করলেন সব।”

“ওখানে আমার অনেক বন্ধু-বান্ধবী আছে।তারা প্রয়োজনীয় সব নোট করে রেখেছে।ওদের থেকে নিয়ে নিব।তাছাড়া কিছু কিছু ক্লাসের ভিডিও করে ওরা পাঠিয়েছে আমাকে।”

“আপনার বন্ধু,বান্ধবীরা অনেক ভালো।”

এটা বলে মন খারাপ করলাম আমি।আমার বর্তমানে এমন কোন বান্ধবী নেই।আগে যখন রেগুলের স্কুল করতাম তখন তিনটা বান্ধবী ছিল।ক্লাস নাইনে থাকাকালীন নানী যখন গত হল তারপর আর রেগুলার স্কুল করা হয়নি আমার।বান্ধবীগুলোও পর হয়ে গেল ধীরে ধীরে।একজনের বিয়ে হয়ে গেছে শুনেছি।কিছু একটা ভেবে উৎফুল্ল হয়ে বললাম,

“ভার্সিটিতে ভর্তি হলে আমারও এমন বন্ধু-বান্ধবী হবে তাই না?”

প্রতিউত্তরে নিশান ভাই কপালে ভাজ ফেলে বললেন,

“তোর শুধু বান্ধবী হবে বন্ধু না।কোন বন্ধু জুটানোর ধান্দাও করবি না বলে দিলাম।”

“কেন?আমার বন্ধু থাকলে আপনার কি সমস্যা?”

“তোর পুরো পৃথিবী জুড়ে শুধু একজন ছেলে থাকবে।আর যার জীবনে একজন থাকবে তার জীবনে অন্য ছেলের আনাগোনা নিষিদ্ধ।”

“কি সব বলেন।মাথার উপর দিয়ে যায় এসব কথা।”

প্রতিউত্তরে স্মিত হাসলেন তিনি।হয়তো কিছু বলতে চেয়েছিলেন তার আগেই তার ফোন বেজে ওঠে।
ফোনে কথা বলতে বলতে বেরিয়ে গেলেন তিনি।আজকেই হাত-পায়ের ব্যান্ডেজ খুলে এসেছে নিশান ভাই।তারপরও সাবধানে চলাযফেরা করছেন।অনেক সময় পেরিয়ে গেলেও উপস্থিতি মিলছে না তার।উশখুশ করতে করতে টেবিলের উপর নিশান ভাইয়ের ডায়েরি দেখলাম।যদি নষ্ট হয়ে যায় এজন্য এই ডায়েরি কাউকে ধরতে দেন না তিনি।তার ভার্সিটির প্রয়োজনীয় নোট লেখা রয়েছে এতে।নিষেধাজ্ঞা সব জিনিসে মানুষের আকর্ষণ বেশি। আমিও তার ব্যতিক্রম নয়।নিশান ভাইয়ের অনুপস্থিতির সুযোগে ডায়েরিটা হাতে নিতেই ফ্লোরে পড়ে গেল।ডায়েরির মাঝ বরাবর একটা পৃষ্ঠা বেরিয়ে এল।যেখানে গোটা অক্ষরে লেখা রয়েছে,

“তার হাসিটাও বেশ রহস্যময়ী।
কারো মনে মায়া জাগায় তো কারো মনে ভীতি।
অথচ আমাকে আকৃষ্ট করে,জাগায় প্রেমানুভুতি।
পৃথিবীর সবচেয়ে সুখ পেয়েছি যে হাসিতে
সে হাসির জন্য রাজী আছি পৃথিবীর সব নিয়ম উল্টাতে।”

নিচে লেখা তারিখটা এক মাস আগের তারিখ।বুকের মাঝে ধক করে উঠলো আমার।হটাৎ পুরাতন স্বপ্ন স্মৃতিতে এল।নিউরনে নিউরনে ছড়িয়ে গেল সেই নেশালো চাহনি ও লাইন,

“তোর চোখের পানি দেখলে আমার দুনিয়া উল্টে দিতে ইচ্ছে করে এরিন।”

চলবে

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here