কুয়াশা মন পর্ব ১০

#কুয়াশা মন

পর্ব ১০…

মিহির সবসময় বাসায় থাকে। কাজে যায় না। কারও সাথে কথা বলে না। মা বারবার ফোন করে তাঁর কথা জিজ্ঞেস করে যাচ্ছেন এবং তাঁর সাথে অন্তত মিনিট খানেকের জন্য কথা বলতে চাইছেন। কিন্তু তিনি কারও সাথেই কথা বলতে ইচ্ছুক নয়। আমি বিগত দুটো বছর উনার সাথে অপ্রয়োজনীয় কথা বলতে যাইনি বা উনার পাশেও ঘেঁষিনি। অভ্যস্ত হয়ে পড়েছি এসবে, যার জন্য গিয়ে তাঁর সাথে কথা বলা হয় না। আমার লাগছে, এখন তার মেজাজ শূন্য। কাজেই কথা বললে বা সান্ত্বনা দিলে চটে যাবেন না। যাইহোক, আগের মিহিরকে এখন দেখি না।

রাত এখন প্রায় এগারোটা। মিহির বেলকনিতে একা বসে আছে। গিয়ে তার পাশে বসব কি? নাকি মেজাজ পরিবর্তন হয়ে যাবে? যা হয় দেখা যাবে। এখন না হয় গিয়ে উনার পাশে বসি।

তার পাশে গিয়ে বসেছিলাম। তখনই উনি আমার দিকে ভ্রূ কুঁচকে তাকালেন। এই বুঝি আবার বেড়ে যাবে উনার তিক্ততা। কিন্তু তেমনটা হলো না। উনি শান্ত ভঙ্গিতে দৃষ্টি অন্য দিকে রেখে বসে রইলেন। আমি বেশ কিছুক্ষণ চুপচাপ বসে ছিলাম। একসময় গলা খাঁকার দিয়ে বলতে শুরু করলাম, “আর ইউ অলরাইট?”
আমার দিকে না তাকিয়েই বললেন, “হুঁম”
“আসলেই কি?”
উনি জবাব দিলেন না। আমি আরেকটু পাশে গিয়ে বসলাম। উনি খেয়াল করে চুপ রইলেন।
“বাবা গেছেন এক বছর হয়ে আসছে। আপনি নিজেকে এখনও স্বাভাবিক করছেন না। এটা কিন্তু ঠিক না। বাবা যদি জীবিত থাকতেন, আপনার এই আচরণ যদি লক্ষ করতেন, তবে খুব কষ্ট পেতেন। আপনজনের বিয়োগে কাঁদলে মনটা হালকা হয়। বেদনা না কমলেও, বহনের শক্তিটা পাওয়া যায়। আপনি ববাবার মৃত্যুর পর থেকেই এমন। হাসি-কান্না কিছুই করছেন না। শুধু লাগছে, আপনার মাঝে আপনিই নেই। এরূপ হলে জীবন কি চলবে? আপনি না হয় ভেতরের কষ্টটা কান্নার মাধ্যমে কমিয়ে ফেলুন। একটু কান্না করুন না হয়। সব ঠিক হয়ে যাবে।”
আমি ছিলাম উৎসুক। তিনি আমার দিকে ভ্রূ কুঁচকে তাকালেন। আহ্, আমি নিশ্চয় পাগলাটে ধরনের কথা বলে ফেলেছি। নিজেই নিজের ঠোঁটে কামড় খেয়ে নজর ফিরিয়ে নিলাম।
“আপনের বিয়োগে মানুষ কাঁদে। সে কাঁদাটা ক্ষণিকের, সাপ্তাহিক কী মাসিক।” তিনি শান্ত ভঙ্গিতে বললেন, “কাঁদার সীমার কথা কেন বলছি জানো? কারণ তাদের আপন আরও থাকে। একজনের চলে যাওয়ায় ওরা নিজেকে পুরটাই বিধ্বস্ত করে ফেলে না। তারা অন্য আপনের জন্য নিজেকে সামলে নেয়। ওই কান্নাটা করে সাময়িকের জন্য। কারণ না কাঁদলে ভেতরেই খুব জখম হয়। তাদের আপন আরও আছে যাদের জন্যে নিজেকে সুখে রাখতে হবে। তাই তারা এক আপনের বিয়োগে নিজেকে ভেঙে না ফেলে ভেতরের দুঃখ কান্নার মাধ্যমে উজাড় করে দেয়। কিন্তু আমার আপন শুধু একজনই ছিল। সে-ই আমাকে চিরতরে ছেড়ে চলে গিয়েছে। তিনি ছাড়া আমার আসল আপন কেউ নেই। উনার মুখ দেখেই আমি জীবন অতিবাহিত করছিলাম। হঠাৎ করেই উনার যাওয়াটা আমাকে হতভম্ব করে রাখল। ভেতরের কষ্টটা কান্নার মাধ্যমে সহজেই বেরুচ্ছিল না। আপন আর কেউ নেই বিধায় কষ্টটা মনের ভেতরেই বাসা বাঁধার পরিকল্পনা এঁটেছে। আমিও বাঁধতে দিয়েছি।”
“আপনার কথার আমি কিছুই বুঝে উঠতে পারছি না। কতজনই না আছে। ফুফি, মুক্তা, মায়া আপু সকলেই তো আপনার আপন।”
“ওদের ভালো লাগে না।”
“কী বললেন আপনি? আচ্ছা, একটা কথা জিজ্ঞেস করব? রাগ করবেন না তো?”
“কী কথা?”
“আমার লাগছে আপনি রাগ করবেন। আপনার মেজাজ এখন শীতল আছে দেখে বলতে চাচ্ছিলাম।”
উনি উনার শীতল চাহনি দিয়ে আমার দিকে কিছুক্ষণ তাকিয়ে রইলেন। আমি বশীভূতার মতো চেয়ে রইলাম উনার দিকে। উনি চোখ সরালেন। আমি আমার কানের সামনে আসা চুলগুলো কানের পেছনে গুঁজে দিলাম।
“ইয়ে, মানে আপনি এমন কেন?”
“কেমন?”
“এই যে, যে কাউকে সহজে পছন্দ করেন না। বিশেষ করে মেয়েদের দিকে ফিরেও তাকান না। নিজেকেও যে খুব তুচ্ছ মনে করেন।”
“শেষের কথাটি কীভাবে জানলে?”
“দুইবছর যাবৎ থাকছি আপনার সাথে। আর, বিয়ের সময়টায় কীভাবে কী হয়েছিল আপনি আন্দাজ করেছিলেনই। আপনি চাইলেই মুক্তার স্বীকারোক্তির মাধ্যমে বাবার বিশ্বাস ফিরে পেতে পারতেন, হয়তো এ বিয়েটাও করতে হতো না। কিন্তু আপনি এমনটা করেননি। আপনার বিয়েতে অনেকেরই মকসুদ পূর্ণ হবে দেখে বিয়েটা করে ফেললেন। নিজের জীবনের কথা একটুও ভাবেননি। এই থেকেই অনেকটা ধারণা করেছি আপনার সম্বন্ধে।”
“আর কী কী ধারণা করেছ?”
“এই যে,” ইতস্ততভাবে বললাম, “কোথাও না কোথাও বাবা আপনাকে খারাপ ছেলে ভাবতেন।”
উনি বিস্ফারিত চোখে আমার দিকে তাকালেন। আমি স্বাভাবিক থাকার চেষ্টা করলাম। যতটুকু জানি, সেসময় আমি আমার চাহনিতেই উনাকে বুঝিয়েছিলাম যে, দুনিয়ার সকল মানুষ উনাকে খারাপ ভাবলেও আমি অমনটা ভাবব না। উনি হ্যাঁ বা না কোনো জবাবই করেননি। আমি এসব কথা আগেও ধারণা করেছিলাম। কিন্তু তা তিনি জানতেন না।
“আপনার মনে কী আছে আমায় বলুন। আপনি এক্ষেত্রে আমাকে একটি নির্জীব বস্তুই ভাবতে পারেন। নির্দ্বিধায় সব বলে দিন নির্জীব বস্তুটিকে। আর নির্জীব বস্তু কথা বলতে পারে না। কাজেই এই নির্জীব বস্তুটি কাউকেই কিছু বলবে না। আমার মনে হয়, আমাকে কোনোকিছু শেয়ার করলে অসুবিধা হবে না।”
উনি দীর্ঘ একটি নিশ্বাস ফেললেন। মনে আমার ক্ষীণ আশা জাগ্রত হলো; বলবেন উনি, সব বলবেন।
আমি আরেকটু চাপ দিলাম, “বলুন না প্লিজ।”
“এসব কথা কাউকে বললে আমার কোনো সমস্যা হবে না। তুমি জানো না কেন তা আমি জানি না। তবে না জানারই কথা।” তিনি খুব শান্ত ভঙ্গিতে বললেন, “তুমি নিশ্চয় জানো না, আমার বাবা ছিলেন তোমার ফুফির দ্বিতীয় স্বামী।”
আমি হতবাক! কথাটি শোনার জন্য আমি সত্যিই অপ্রস্তুত ছিলাম। উনিও টের পেলেন এ বিষয়। “কী বললেন? আমি তো জানতামই না।”
“কী করে জানতে! তোমার প্রথম ফুফা যখন মারা গিয়েছিলেন তখন তোমার জন্মই হয়নি।”
“তাহলে আপনার আসল মা মানে আমার আসল শাশুড়ি কে?”
“প্লিজ, তাকে আমার মা বলবে না। তবে নিজের শাশুড়ি বলতে চাইলে বলতে পারো।”
“না, না, আপনি উনাকে মা না ভাবলে আমি কেন শাশুড়ি ভাবব? বিয়ে তো আপনার সাথেই হয়েছে।”
তিনি কিছুটা গলা খুলে হাসলেন। আমি পরে নিজেই বুঝলাম, আমি একটি হাস্যকর কথা বলেছি। শতই হোক, নিজের বোকামোতে নিজেকে শাসালাম না, উনি যে এতদিন পর একটু হেসেছেন। তাঁর হাসিতে যে এতো মায়া আছে, বছর খানেকের শোকের চাপে ভুলেই গিয়েছিলাম।
“উনি খুব খারাপ। জানি না, এখন কোথায়, কয়টা পুরুষের সাথে লালসা মিটাচ্ছে।”
আমি উনার কথায় গভীরভাবে মনোনিবেশ করলাম। তা তিনি বুঝে আরও কিছু বলতে অগ্রসর হলেন। পরিবেশ এখন কেমন থমথমে। আমাদের মনও থমথমে। কুয়াশা মনেরটায় বেশি বলা চলে। কেমন মলিন স্বর!
“বাবা ভালোবেসে বিয়ে করেছিলেন। যাকে বিয়ে করেছিলেন, তিনি কোনো দিক দিয়ে কম রূপবতী ছিলেন না। বাবা তার রূপের পিয়াসি হননি। তিনি সত্য ভালোবেসেছিলেন। দাদা-দাদিদের ইন্তেকালের পর বাবা উনাকে বিয়ে করে নিজের একটা সোনার সংসার পাতলেন। সোনার সংসার কেন বলছি হয়তো এটাই ভাবছ। বাবা খুব প্রতিপত্তিশীল লোক। টাকা -পয়সা এক হাতে কামিয়েছেন, অন্য হাত দিয়ে উজাড় করেছেন। তবু সম্পত্তি কমত না। বিয়ে করে আনার পর স্ত্রী যা চাইলেন মুহূর্তেই হাজির করে দিয়েছেন। ভাবতে পারো, বাবা তাঁকে কত ভালোবাসতেন। বছর কয়েকে আমি আর বড় ভাইয়া জন্মগ্রহণ করলাম। আমার বয়স যখন দুই বছর, তখনই বাবা জানতে পেলেন নিজের স্ত্রীর পরকীয়ার সম্বন্ধে, তাও বাহিরের লোকের কাছে। ধীরে ধীরে জানতে পেলেন, সে ধনীলোকদের বশীভূত করার চেষ্টা করে রূপের মোহ দিয়ে। বাবা এসব কথায় কান তেমন দিলেন না। অন্ধ ভালবাসার মোহ যাকে বলে। তিনি সেটার মাধ্যমে মোহিত হয়েই তাঁর আসল রূপ আগে চিনেননি। একদিন সত্যিই তিনি হাতে-নাতে ধরা পড়েছেন বাবার কাছে। আমি উনার রক্তের সন্তান। কেউ ধোঁকা দিলে কতটা ঘৃণার সৃষ্টি হয় বা বাবার বেলায় কতটুকু হওয়ার কথা তা খুব ভালোভাবেই অনুমান করতে পারি। বাবা ওই ধোঁকাবাজের সাথে এক মুহূর্তও সংসার করলেন না। একগুচ্ছ টাকা ছুঁড়ে মেরে তাকে পর করে দিলেন। এসবের পর বাবা দুইবছর একাই আমাদের দুই ভাইয়ের দেখাশোনা করেছেন। তিনি মানসিক দিক থেকে পূর্বে থেকে বিধ্বস্ত হয়ে পড়েছিলেন। আমাদের ভার উনার একার ওপর উঠায় উনি পুরোটাই ভেঙে পড়েছিলেন। শেষে আমাদের প্রতিবেশীর বলায় বাবা দ্বিতীয় বিবাহ করলেন, তোমার ফুফিকে। তোমার প্রথম ফুফা বিয়ের এক বছর না ঘুরতেই রোগে পড়ে মারা গিয়েছিলেন। তোমার ফুফির একটা মেয়ে সন্তান হয়েছিল। মায়া। বাবার সাথে বিয়ের পর মুক্তা জন্ম নেয়। এভাবেই বিক্ষিপ্তভাবে আমরা প্রত্যেকে এধার-ওধারের সন্তান। আমরা দুইভাই বাবার আর আগের মায়ের সন্তান। মায়া, মা আর তোমার আগের ফুফার সন্তান। বাবা আর মায়ের সন্তান কেবল মুক্তা। মুক্তার সাথে রক্তের টান আছে বিধায় ওর সাথে আমার যাও পড়ে, মায়ার সাথে পড়েই না। বাবা বিয়ের পর মাকে তেমন একটা ভালোবাসেননি। যা বেসেছে তাকে সম্মানের নাম দেওয়া যায়। বাবা কেবল যথার্থভাবে সম্মান করতেন মাকে। কারণ তিনি এই মায়ের মধ্যেও মাঝে মাঝে আগের মায়ের ছায়া দেখতেন বলে মনে হতো। তিনি কখনও মায়ের সাথে সুখ-দুঃখের কথা বলেননি, মায়ায় পড়ে যাবেন ভেবে। এই মায়াটা বড় ক্ষতিকর জিনিস, এর কারণেই মানুষ ধোঁকা পায়। বাবা কখনও এজন্যে আগের মায়ের মতো করে ভালোবাসা কাউকে দেননি। তাঁর কাছে আগের মায়ের অনেক কথা শুনেছি আমি। ধীরে ধীরে আমিও বাবার কাতারে গিয়ে পড়লাম। সৃষ্টি হলো মেয়ে জাতির জন্য ঘৃণা। মেয়েদের খুব ঘৃণা করতে শুরু করলাম। এমনকি তোমার ফুফি, এই যে, বর্তমানে যাকে মা বলে ডাকি, তাকে কেবল সম্মানের খাতিরে মর্যাদা দেই। শতই হোক, আমাদের পেলেছেন, যত্ন করেছেন।
বাবা মাঝে মাঝে আগের মায়ের কথা মনে করতেন, মনের কোটরের কোথাও না কোথাও তাঁকে মাঝে মাঝে দেখতে পেতেন। আমাকে এসব শেয়ার করতেন, আমি জ্বলে- পুড়ে অগ্নিশর্মা হতাম, বাবা ওই ধোঁকাবাজের কথা ভাবছে দেখে। মায়া বা মুক্তা এসব কথা জানে না। ভাইয়াও সবকিছু সম্বন্ধে অবগত আছেন। কিন্তু দেখে এসেছি, আমার মনে মেয়েদের প্রতি যতটুকু ক্ষোভ জন্মেছে, তার বিন্দুমাত্র লেশ ভাইয়ার কাছে দেখিনি। ভাইয়া যখন কৈশোর, তখনই বুঝলাম, আগের মায়ের ধোঁকার সম্বন্ধে জেনেও তার মন্তব্যে বৈপরীত্য কেন ছিল না। কারণ সেও জন্ম নিয়েছে আগের মায়ের মতো হয়ে। নিজ রক্তের ভাইয়েরই চরিত্র সম্বন্ধে বলতে লজ্জা করছে। সে বড় হতেই বাবা তাকে অনেকবার হাতে-নাতে ধরেছে এবং শাসিয়েছে। তবু মেয়েদের প্রতি লোভ তার গেল না। আট-দশটা মেয়ের সাথে হাঁটা, কথা বলা, না জানি আরও কত কিছু। আমি ছোট ছিলাম বিধায় বাবা কী দেখেছেন বা জেনেছেন ভাইয়ার কুকৃর্তির সম্বন্ধে তা আমাকে জানাননি, ধারণা নেই। তবে বড় হয়ে অনেকটা আঁচ করেছি। শেষে নিজের পছন্দেই বিয়ে করেছেন। শুনেছিলাম, তাঁদের সংসার এখন বেশ একটা সুবিধার নয়, দুজনই যে একি ধাঁচের। আগের মায়ের মতো ওকেও পর করে দিয়েছি, অনুশোচনা হয় না আমার। আর আমি বড় হতেই তোমার পাল্লায় পড়লাম। আমি মায়ের মতো হইনি, হয়েছি বাবার মতো। তবে ভালোবাসা কখনও খুঁজিনি, বাবার মতোই একদিন পরিণতি হবে ভেবে। আমি বড় হতেই আমার জীবনে তুমি এলে। সবকিছুতে বাবা ভাবলেন, আমার মাঝে আগের মা আর ভাইয়ার লক্ষণ প্রকাশ পাচ্ছে। কিন্তু আদৌ আমার মাঝে মেয়েদের নিয়ে কোনো নীচু স্তরের ভাবনা কাজ করে না। কিন্তু বাবাকে আমি বুঝাতে পারলাম না। আজ থেকে বেশ কয়েক বছর আগে তোমার সাথে বাসায় একা থাকায়, তোমার হাতের আঁচড় দেখে বাবা কত কী ভেবেছিলেন। বিয়ের কাণ্ডের কথা না-ই বা বললাম। তুমি হয়তো অনেকবার ভেবেছ, সবচেয়ে বেশি ঘৃণা করি আমি তোমাকেই। কেন, তা হয়তো বুঝেছ। বাবাই একমাত্র আপন ছিলেন। তিনিই আমাকে অহেতুক ভুল বুঝলেন। ঘৃণা জন্মানোর কথা নয় কি?”
আমি এতক্ষণ মন্ত্রমুগ্ধের মতো করে শুনে যাচ্ছিলাম তাঁর কথা। শেষের কথা শুনে আমি মুখ নীচু করে ফেললাম। একসময় আমি ভাবতাম, মিহির কোনো পুরো ঘটনা সম্পর্কে অবগত না হয়েই যে কারো চরিত্র সম্বন্ধে ফয়সালা করে ফেলতেন। আজ আমার মনে হচ্ছে, কাজটি সে-ই না, বরং আমি করেছি। আসলেই শুরু থেকে মিহিরকে আমি ভুল বুঝে এসেছি। তাঁর ক্রোধকে কত সময় কত মন্দভাবে বিবেচনা করেছি। তার আড়ালে কী থাকতে পারে কখনও বিবেচনা করিনি। আসলেই, উনার স্থলে আমি থাকলে, আমিও হয়তো এরূপ করতাম, মেয়েদের নিয়ে ঘৃণা পোষতাম।
“বলো, ঘৃণা কি জন্মানোর কথা নয়?” নির্লিপ্ত ভঙ্গিতে চেয়ে থেকে তিনি বললেন।
(চলবে..!)
লেখা: ফারিয়া কাউছার

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here