“কেয়া_পাতার_নৌকা পার্টঃ১

শুধু ব্লাউজ আর পেটিকোট পরে বসে বসে ফোন টিপছি আর কফি খাচ্ছি নিজের রুমে। হটাৎ দরজা ঠেলে আহান ভাইয়া ডুকলো… নিজেকে ঠিক করার সময়ই পেলাম না…. ভাইয়া হুট করে ঘরে ডুকেই বললো এই আমরা কানামাছি খেলছি তোর ঘরে আমি লুকাবো কোথায় লুকায়ইইইইই তাইয়ে দেখি ভাইয়া আমার দিক তাকিয়ে আছে। এতো সময় খেয়াল করেনি আমাকে…. লজ্জায় মাটির নিচে চলে যেতে ইচ্ছে করছে। ভাইয়া খুব জরে চিতকার করে উঠলো। আর আমি কি করবো না বুঝে হাবার মতো দাড়িয়ে আছি। ভাইয়া এতো জোরে চিৎকার দিছে মনে হচ্ছে আমার কান এর বারোটা বেজে গেছে।ভাইয়া চিৎকার করা বাদ দিয়ে দিলো দোড়।
খুব লজ্জা লাগছে। ছি ছি ভাইয়ার সামনে এভাবে। পলানোর জন্য কি আর কোনো ঘর পেলো না আমার রুমেই আসতে হলো। উপপ ভালো লাগে না। আমার বড় ভাইয়ার বিয়ে আর গায়ে হলুদ ছিলো। বাড়িতে অনেক মানুষ তাই নিজের রুমে এসে গরমে শাড়ী খুলে বসেছিলাম। কারন আমার রুমে কেউ আসে না। কিন্তু এই আহান ভাইয়া যে কোথার তে উড়ে আসলো কে জানে। যদি কাউকে বলে দেয় তাহলে তো আমার মানসম্মন সব শেষ। আর ভাইয়ার সামনেই বা যাবো কি করে। এ সব ভেবেই কান্না পাচ্ছে।
আমার নাম মিহি সবাই মনু বলে আসলে মনু বাচ্চাদের বলা হয় কিন্তু এর কারন ও হলো আহান ভাইয়া উনিই সবাইকে শিখিয়েছেন আমাকে মনু বলে ডাকার জন্য।বাড়ির সব থেকে ছোট সদস্য রাও আমাকে মনু বলে ডাকে…. ভেবেই আমার কান্না পায় আর আহান ভাইয়া হলো আমার একমাত্র খালামনির একমাএ ছেলে আর ছোট একটা মেয়েও আছে। আর সব থেকে সিক্রেট ব্যাপার হলো আমি মনে প্রানে আহান ভাইয়াকে ভালোবাসি। কিন্তু তার হাব ভাবে ককন আমার প্রতি কিছুই পাইনি শুধু অপমান করাটাই পাইছি। সে যাই হোক..
*******************
আহার ভাইয়ার সাথে ওই ঝামেলা হওয়ার পর লজ্জায় আর বাইরে বের হইনি…. ঘড়ির দিক তাকিয়ে দেখি সকাল ৮ টা বাজে….. তবে বাইরে এতো চেচামেচি মনে হচ্ছে ১১টা বাজে……বিরক্ত নিয়ে উঠে ফ্রেশ হলাম। বাইবে যেতে ইচ্ছে করছে না তবুও রেডি হলাম। না আজ আর শাড়ি পরবো না একটা অরেন্জ কালারের জামা পরলাম আর চুল গুলো ছেড়ে দিয়েছি। হালকা সাজলাম । সাজার মন নাই তবুও সাজলাম কারন আর যারা আছে তারা সবাই মুখে মেকাপ দিয়ে এমন একটা ভাব নিবে যে কেউ কাউকে চিনতে পারা মুশকিল। এমনকি নিজেরা নিজের চেহারা আয়নায় দেখে তাই চিনতে পারে না আর সেখানে আমার সাজ হলো মন চাইলে ফেয়ার এন লাভলী দিতেও পারি না ও পারি হালকা কাজল হালকা গোলাপি লিপস্টিক ব্যাস। এটাই আমার সাজ….
রুম থেকে বের হয়ে যা শুনলাম তাতে আমার মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ার মতো অবস্থা। কারন আহান ভাইয়া সবাইকে বলে বেড়িয়েছে আমি নাকি কালি গায়ে বসে থাকি। উপপ এই ছেলেটা আমার সব মানসম্মান শেষ করে দিলো। আপু দের কাছে গিয়ে একটু বসেছিলাম কিন্তু সবাই আমার এই ব্যাপার টা নিয়ে খুব মজা নিলো। তাই ছাদে যাওয়াই উওম। এদের কাছে থাকলে আমার বারোটা বাজবে। কিনতু আহার ভাইয়াকে কোথাও দেখলাম না। একবার পাই সামনে তখন বুঝাবো অসয্য কর। ছাদে যাবো বলে সিড়ি দিক পা বাড়াতেই হাতে কারো টান পড়লো। তাকিয়ে দেখি আমার ছোট কাকুর মেয়ে ক্লাস সেভেন এ পড়ে তবে পাকা অনেক।
কি হয়েছে হাত ধরে টানতেছিস কেনো।
মনু আপু শুলাম তুমি নাকি খালিগায়ে বসে থাকো……. বলে ফিক করে হেসে দিলো….
(উপপ এই পুচকি মেয়েটাও আমাকে লজ্জা দিচ্ছে) ওই তোকে এ সব কে বলেছে।
মাই ক্রাশ…
এই হেয়ালি না করে বল তো তোর এই মাই ক্রাশ টা কে। আমি ভার্সিটি তে উঠে গেলাম একন ও ক্রাশ ব্রাশ খাইতে পারলাম না আর তুই এই টুকু পুচকি তোর কিনা ক্রাশ আছে।
হুম আমার ক্রাশ তো আহান ভাইয়া। বলে জিব কাটলো…
কি কিকিকি আহান ভাইয়া তোর ক্রাশ।
আপু কারবে বলো না প্লিজ। ভাইয়া আমার অনেক বড় না হলে প্রপ্রোজ করতাম বাট ভাইয়া অনেক বড়। মাই ব্যাড লাক৷। তুমি কাওরে বলো না যেনো… বোঝই তো অমন একটা চকলেট বয় সামনে দিয়ে ঘুরলে কার না ভালো লাগে বলো…..
আমি দিভির কথায় ওর দিক এ চেয়ে আছি ভাবা যায়…আহান ভাইয়াকে নাকি ওর ভালো লাগে। বেশ রাগ হলো মনে হচ্ছিলো একটা চড় মেরে বলি আমার প্রপার্টির দিক নজর দিবি না। কিন্তু তা কখনই সম্ভাব না।
অর্পার কথা শুনে আর কিছু ভালো লাগছে না … কিছু খাওয়া উচিৎ তাই খাওয়ার জন্য রান্নাঘরে গেলাম ওমা সেখানে গিয়ে দেখি আহান ভাইয়া একটা বড় বাটির পুরো এক বাড়ি মাংস পরাটা দিয়ে খাচ্ছে ওনার অমন খাওয়া দেখে আমার খিদেটা যেনো নেড়ে গেলো…. কিন্তু রাতের কথা মনে করে আর যেতে ইচ্ছে করছে না। পেছন ফিরে চলে আসতে নিলেই আহান ভাইয়া ডাক দিলো…..
দেখি মাংসের বাটি আর একটা পরাটা নিয়ে এ দিক এই আসছে।
কি হয়েছে…..
কি আর হবে চল আমার কাজ করে দিবি…
আমি আপনার কি কাজ করবো…
বাড়িতে ফুলসজ্জায় সাজানোর জন্য ফুল আনা হয়েছে অনেক..
তো..
তো কি… আমি বসে থাকবো আর তুই ফুল গুলো সব ঠিক করবি চল আগে……
পারবো না….
কি বললি।।। পারবি না… খালাআম্মুকে কিন্তু বলে দিবো কালকের কথা।
কি আর বলবেন সবাইকেই তো বলি দিছেন..
আরে ও তো বাচ্চাদের বলছি,,,,,, বড়দের তো বলিনি আমার কথা না শুনলে বিয়ে বাড়ির সবাই জানবে।
কি আর করা মুখ গোল করে চলে গেলাম ভাইয়ার পিছু পিছু…..
***********
খুব খিদে লাগছে আর ভাইয়া আমাকে খুব খাটিয়েছে সারা দিন। ভালো লাগে না। রাগ করে না খেয়েই রুমে চলে আসলাম। ফোন টা টেবিল থেকে নিতেই দেখলাম একটা ভাজ করা কাগজ। কৌতূহল মেটাতে খুলে দেখলাম সেখানে লেখা আছে…..
প্রিয়োসি তুমি কি জানো তোমার ওই মায়া মাখা মুখটি দেখার জন্য কতো বাহানা করি। তোমার অভিমানি রাগি রাগি মুখটা দেখতে আমার কতো ভালো লাগে। তোমার সাথে এমন লুকোচুরি করতেও ভিষণ একটা ভালোলাগা কাজ করে। মনে হয় প্রতি নিয়তো তোমার ওই দুচোখের অতলে আমি তলিয়ে যাচ্ছি………
আমার মিহু পাখি…… সবাই তোমাকে মনু বলে ডকে আর আমি তোমাকে আমার মিহু পাখি বলে ডাকবো।
এ্যা চিঠি টা পড়ে মাথা ঘুরছে। এমন করে চিঠি লিখলো কে। বাড়িতে বড় বলতে তো শুদু আমার ভাইয়া আর আহন ভাইয়াই আছে আর সব তো পিচ্চি এতো আবেগ দিয়ে কে লিখলো। তার মানে আহান ভাইয়া….. না না ওনাকে দেখে তো মনে হয় না উনি আমাকে ভালোবাসে…..
এ সব বাবনার ভেতরই কেউ চিঠি টা হাত থেকে টান দিয়ে নিয়েনিলো…..
তাকিয়ে দেখি আহান ভাইয়া……
.
চলবে….
.
গল্পঃ #কেয়া_পাতার_নৌকা

writing; Md Imran Hossan

পার্টঃ১

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here