গোধূলীর_রঙিন_ছোঁয়া পর্ব ২১

#গোধূলীর_রঙিন_ছোঁয়া
#লেখায়_ফারহানা_ছবি
#পর্ব_২১
.
.
🦋
সকাল থেকে স্মরণ এর মেজাজ প্রচন্ড খারাপ৷ সকাল থেকে প্রাণোর না কোন কল না কোন মেসেজ এসেছে৷ প্রাণোর কণ্ঠ না শুনতে পেরে স্মরণের মন ছটপট করছে৷ কোন কাজই ভালো লাগছে না৷ তবুও গতকাল যে স্পেশাল ভাবে প্রাণোর সাথে টাইম স্পেন্ড করা ৷ নিজের ভালোবাসাকে নিজের করে পাওয়া ৷ সব চেয়ে বড় কথা নিজের জীবন সাথী হিসেবে তার প্রাণকে পেয়েছে৷ স্মরণ হাজার মন খারাপের মধ্যে দিয়ে জীবন মাহমুদ এর অফিসে এসে মিটিং এটেন্ড করে প্রেজেনটেশন প্রজেক্টরে দেখিয়ে বিদেশী ক্লাইন্ড এর সাথে পাচঁ কোটি টাকার ডিল সাইন করে স্মরণ ৷ স্মরণ সবটা তার বাবার পিএ কে বুঝিয়ে দিয়ে অফিস থেকে বেড়িয়ে যায় পড়ে প্রাণোর সাথে দেখা করার উদ্দেশ্যে…..

স্মরণ গাড়ি নিয়ে সোজা ভার্সিটিতে চলে যায় ওখানে দাড়িয়ে অপেক্ষা করতে থাকে স্মরণ৷ সাদমান এর কাছে ফোন করে আগেই জেনে নিয়েছিলো প্রাণো ভার্সিটিতে এসেছে৷ এক ঘন্টা ধরে অপেক্ষা করছে স্মরণ কিন্তু প্রাণোকে বের হতে না দেখে স্মরণ ভার্সিটিতে ঢুকতে ভার্সিটির মেয়ে গুলো স্মরণকে চোখ দিয়ে যেন গিলে খাচ্ছে ৷ স্মরণ সে দিকে না তাকিয়ে ভার্সিটির এক ছেলের সাহায্য নিয়ে প্রাণোর ক্লাস রুমের সামনে গিয়ে একটা মেয়েকে প্রাণোর কথা জিজ্ঞাসা করতে মেয়েটি জানায় প্রাণো অনেক আগেই বেড়িয়ে গেছে আর ক্লাস করতে দেখা যাইনি৷ কথাটা শুনে স্মরণ বেশ অবাক হলো৷ ভার্সিটি থেকে বের হয়ে যায়৷

বাইরে এসে স্মরণ সাদমানকে ফোন করে জানতে চায় প্রাণো বাড়িতে ফিরেছে কিনা? সাদমান বাসায় ফোন করে জানতে পারে প্রাণো এখনো ফিরেনি৷ সাদমান কথাটা স্মরণ কে জানাতে স্মরণ প্রাণোর চিন্তায় পাগল এর মতো প্রাণোকে কল করতে থাকে৷ প্রাণো সিক্রেট অফিসে বসে বাকি টিমদের সাথে প্লান করছিলো ৷ সিমি নতুন বিধায় প্রাণো সিমিকে প্লানে টিমে নিয়ে নেয় কারণ এতে করে সিমি ধিরে ধিরে সবটা বুঝতে পারবে তাকে বিপদে পড়লে কি কি স্টেশন নিতে হবে৷ প্রাণো বরাবর মিটিং এর সময় ফোন সাইলেন্ট রাখে আজ ও তার ব্যতিক্রম হয়নি৷ এদিকে স্মরণ বার বার প্রাণোকে কল করে না পেয়ে পাগলের মতো এদিক ওদিক খুজতে লাগলো৷

” ম্যাম আমরা তৈরি আছি সব কিছু আপনার প্লান মাফিক হবে৷”

” কিন্তু প্রাণো এতো কম লোক নিয়ে অপারেশনে যাওয়াটা কি ঠিক হবে?”(কণা)

” কণা তুই জানিস আমি আমার টিমের ছেলে মেয়েদের কোন রকম ক্ষতি হোক আমি চাই না ৷ আর অতিরিক্ত লোক নিলে ওখানে যদি বড় কোন বিপদ হয় তাহলে পরবর্তীতে ওদের কে নিয়ে আমি বিপদে পড়বো৷ ”

” ইয়াহ রাইট ” (কণা)

প্রাণোর কথা শুনে সিমি অবাক হয়ে দেখছে প্রাণোকে…

” মেয়েটার চিন্তা ধারা কতোটা সার্প ৷ সবার কথা ভেবে কাজ করে আর প্লান এর কথা নাই বা বললাম৷ আমার ভাইটার ভাগ্যটা সত্যি অনেক ভালো ৷ প্রাণোর মতো সাহসী বুদ্ধিমতী ভালো মেয়ে কে বিয়ে করেছে৷ ” মনে মনে কথা গুলো বলে প্রাণোর কথার দিকে আবার মনোনিবেশ করলো সিমি ৷

“তাহলে আজ রাতে আমরা অপারেশনে বের হচ্ছি গাইজ৷ তৈরি থাকবে আর আর্মস গুলো যেন ঠিক থাকে একবার চেক করে নিবে৷”

” ওকে , প্রাণো আমার একটা কথা ছিলো”(RV)

” বলে ফেলো আমাকে আবার বের হতে হবে৷”

” বলছি যে লাঞ্চের তো সময় পেরিয়ে যাচ্ছে ৷ আমি সবার লাঞ্চের ব্যবস্থা করেছি ৷ ”

” ওহ শিট! আমি তো ভুলে গেছিলাম লাঞ্চ এর কথা৷ যাই হোক স্যরি গাইজ আমার জন্য তোমাদের লাঞ্চ করতে দেরি হয়ে গেল৷ তোমরা লাঞ্চ করে নেও আমি এখন বের হবো এখন৷”

“প্রাণো আমি তোমাকে লিফ্ট দি?”

” হুয়াই নট ৷ ”

” গ্রেট চলো তাহলে…”

প্রাণো RV সাথে বেড়িয়ে গেল৷ RV কিছুদুর গিয়ে রেস্টুরেন্টের সামনে গাড়ি থামিয়ে দেয়৷

” কি হলো তুমি গাড়ি থামালে কেন?”

” আচ্ছা প্রাণো একটা কথা বলো তুমি কি মানুষ নাকি রোবট? শুধু কাজ আর কাজ পেট পূজো তো করতে হবে নাকি?”

” আসলে তুমি বলার পর আমার ক্ষিদে টা পেয়ে গেল৷ চলো কিছু খেয়ে নিয়া যাক৷”

” হুম চলো৷ ”

RV প্রাণো দুজনে রেস্টুরেন্টে বসে দু’প্লেট বিরয়ানির অর্ডার দিলো৷

স্মরণ গাড়ি নিয়ে ওই রোড দিয়ে যেতে রাস্তায় সাদমান কে দেখে গাড়ি থামিয়ে সাদমান এর সামনে গিয়ে দাড়ায়৷ সাদমান স্মরণ কে ভরকে যায়৷ উস্ক সুস্ক চুল শুকনো মুখ চোখ দু’টো লাল হয়ে আছে৷ শার্টের হাতা এলোমেলো করে গোটানো ৷ দু’ঘন্টায় স্মরণের অবস্তা এমন টা হতে পারে তার বিন্দু মাত্র ধারনা সাদমানের ছিলো না৷

” তোর এই অবস্থা কেন স্মরণ কি হয়েছে তোর?” উদ্বিঘ্ন হয়ে জানতে চাইলো সাদমান৷

” আমার প্রাণকে এখনো খুজে পাই নি সাদমান ৷” ভাঙা ভাঙা গলায় বললো স্মরণ…

স্মরণের কথা শুনে সাদমানচরম আশ্চর্যের পর্যায় চলে গেল৷ প্রাণো কে খুজে না পেয়ে এই অবস্তা হয়েছে স্মরণ এর এটা ভাবতেই সাদমান এর ভিষণ খারাপ লাগছে৷ প্রাণো যে মাঝে মধ্যে এমন হুট হাট করে উধাও হয়ে যায় এটা সাদমান জানে৷ সাদমান এটা নিয়ে প্রাণোকে প্রশ্ন করলে প্রাণো জানায় তার ব্যক্তিগত কাজের জন্য তাকে যেতে হয়৷ কিন্তু কোথায় ? কি কাজ তা আজ পর্যন্ত সাদমান কে বলে নি প্রাণো আর না সাদমান জানতে চায়৷ কারণ সাদমানে অটুট বিশ্বাস তার বোন কোন খারাপ কাজে অন্তত জড়াবে না৷ কিন্তু এতো কিছু তো স্মরণ জানে না ৷ স্মরণকে কি বলবে এটা ভেবেই সাদমানের গলা শুকিয়ে যাচ্ছে৷ স্মরণ যদি একবার জানতে পারে তার প্রাণ এমন হুট হাট উধাও হয়ে যায় তাহলে কি রিয়েক্ট করবে?

” দোস্ত তোকে ঠিক লাগছে না ৷ চোখ মুখ শুকিয়ে গেছে নিশ্চয়ই পাগলিটার চিন্তায় কিছু খাস নি ৷ চল সামনে একটা রেস্টুরেন্ট আছে ওখানে খেয়ে আসি৷”

” সাদমান প্রাণোকে খুজে পাওয়া যাচ্ছে না আর তুই আমাকে খেতে বলছিস? তোর কোন চিন্তা হচ্ছে না প্রাণকে খুজে পাওয়া যাচ্ছে না বলে?”

” নাহ কারণ আমি জানি ঠিক সময়ে প্রাণো ফিরে আসবে ৷ ”

” তার মানে তুই জানিস প্রাণো কোথায় আছে?”

” না জানি না ৷ তবে এতো টুকু জানি ওর কোন এক পার্সোনাল কাজের জন্য হুট হাট উধাও হয়ে যায়৷ তুই চিন্তা করিস না ঠিক সময়ে ফিরে আসবে৷”

সাদমানের কথা শুনে স্মরণ কিছু বুঝলো না ৷ সাদমান স্মরণ এর প্রশ্ন শুরু হওয়ার আগে হাত টেনে রেস্টুরেন্টে ঢুকে গেল৷

প্রাণো RV খাওয়া শেষ করে বিল পে করে রেস্টুরেন্ট থেকে বের হতে নিবে তখনি দেখে সাদমান স্মরণ তার দিকে তাকিয়ে আছে৷ প্রাণো স্মরণের চোখ মুখ দেখে ভয় পেয়ে যায়৷ স্মরণ কে দেখেই যে কেউ বুঝতে পারবে যে স্মরণ প্রচন্ড রেগে আছে৷ সাদমান ও বেশ অবাক হয় প্রাণোকে এখানে দেখে ৷ সাদমান প্রাণোকে কিছু বলতে যাবে তখনি পেছন থেকে RV বলে ওঠে,” প্রাণো কি হলো দাড়িয়ে পড়লে কেন চলো ৷ তোমাকে নামিয়ে দিয়ে আমাকে আবার অফিসে ফিরে যেতে হ,,,বে..” কথা গুলো বলতে বলতে থেমে যায় RV সাদমান কে দেখে, প্রাণো প্রিয়ার কাছে সাদমানের ছবি দেখেছিলো তাই চিনতে পারলো কিন্তু স্মরণকে চিনতে পারলো না আর না বুঝতে পারলো স্মরণের রাগের কারণ৷

স্মরণ প্রাণোর সাথে ছেলেটাকে দেখে আরো রেগে যায়৷ প্রাণো স্মরণ কে কিছু বলতে যাবে তার আগে স্মরণ বলে ওঠে , ” তোমার ফোন কোথায় প্রাণ?”

” ফো,, ফোন তো ব্যাগে”

” ফোন বের করো৷”

প্রাণো চুপ চাপ ফোন বের করে দেখে স্মরণের ২০০+ মিসড কল + মেসেজ ৷ ফোন সাইলেন্ট ছিলো বিধায় প্রাণো বুঝতে পারলো স্মরণ এর রাগের কারণ… … প্রাণো কিছু বলার আগে স্মরণ প্রাণোর ফোন টা হাতে নিয়ে স্বজোরে আছার মারে৷ মুহূর্তে ফোনটা জীবনের মায়া ত্যাগ করে চূর্ণ বিচূর্ণ হয়ে গেল৷ প্রাণো মায়া ভরা চোখ নিয়ে নিচে ফ্লোরে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা ফোনটার দিকে তাকিয়ে মনে মনে বলতে লাগলো,” আহারে বেচারা ফোন টা আমার রাগ টা তোর উপর ঝাড়লো ৷ চিন্তা করিস না আমি খুব তাড়াতাড়ি তোর জায়গায় অন্য এক জন নিয়ে আসবো৷ ” কথা গুলো বলে ফ্লোর থেকে সিম কার্ড আর মেমোরি কার্ড টা তুলে নিয়ে ব্যাগে রাখতে ৷ প্রাণো টের পেলো সে যেন হাওয়ায় ভাসছে ৷ তাকিয়ে দেখে স্মরণ তাকে কোলে তুলে নিয়ে গাড়ির দিকে এগিয়ে যাচ্ছে ৷ এদিকে সাদমান RV দু’জনে হা করে স্মরণের চলে যাওয়া দেখছে৷ RV তার কৌতুহল দমিয়ে রাখতে না পেরে সাদমান কে বলে উঠলো ,” কিছু মনে করবেন না ভাইয়া একটা প্রশ্ন করছি ৷ ওই ছেলেটির সাথে প্রাণোর সম্পর্ক কি? না মানে এভাবে তুলে নিয়ে গেল অথচ আপনি প্রাণোর বড় ভাই আপনার সামনে দিয়ে তুলে নিয়ে গেল৷”

” যেই ছেলেটি প্রাণোকে তুলে নিয়ে গেল সে আর কেউ না প্রাণোর হাসবেন্ট ৷”

” ওয়াট প্রাণো বিয়ে করেছে? আর আমাকে জানালো না এর জন্য প্রাণোর থেকে ডাবল ট্রিট নিবো আমি..”

সাদমান হেসে দিয়ে বলল,” আপনার পরিচয় টা জানা হলো না৷”

” মাই সেল্ফ রেহান৷ রেহান মির্জা ৷ তবে প্রাণো আমাকে RV বলে ডাকে৷ আর আপনি হচ্ছেন সাদমান কবির প্রাণোর বড় ভাই”

” বাহ সব জানেন দেখছি৷ কিন্তু RV বলে ডাকে কেন প্রাণো?”

” প্রাণো আমার বোন+বন্ধু আর এক ব্যাচ জুনিয়র প্রাণো আমার তাই প্রাণো আমাকে RV মানে রেহান ভাই বলে সংক্ষেপে বলে৷”

” ওহ আচ্ছা ৷”

” তাহলে আজ আসি ভাইয়া ৷”

” শিওর অন্য কোন দিন জমিয়ে আড্ডা দেওয়া যাবে রেহান৷”

” শিওর ভাইয়া৷ আজ আসছি তাহলে..”

” বাই”

” বাই”

________________

প্রচন্ড রেগে ফুল স্পিডে গাড়ি চালাচ্ছে স্মরণ৷ প্রাণো কিছু বলতে গিয়েও বলতে পারছে না ৷ স্মরণ যেভাবে রেগে আছে কিছু বললে রেগে গাড়ি থেকে ফেলে না দেয় সেই ভয়ে কিছু বলতে পারছে না৷ চুপ করে বসে রইল৷ কিছুক্ষণ পর গাড়িটা একটা বাংলোর সামনে থামে৷ স্মরণ গাড়ি থেকে নেমে প্রাণোর হাত ধরে টানতে টানতে বাংলোর ভিতরে গিয়ে এক বড় রুমে নিয়ে গিয়ে প্রাণোকে বেডের উপর ছুড়ে মেরে স্মরণ শার্টের বোতাম খুলতে খুলতে প্রাণোকে বলতে লাগলো, ” খুব শখ না ছেলেদের সাথে ঢলাঢলি করার ৷ খুব শখ না অন্য ছেলেদের সাথে ঘুরে বেড়ানোর? খুব ভালো লাগে অন্য একটা ছেলের সাথে লাঞ্চ করতে? আমার ভালোবাসা তোর চোখে পড়ে না তাই না? আমাকে পাগল না করে তোর শান্তি তাই তো? আজ তোর সব শখ আমি মিটিয়ে দিবো৷ ” রেগে কথা গুলো বলতে বলতে প্রাণোর দিকে এগিয়ে যেতে লাগলো স্মরণ৷ প্রাণো বেড থেকে উঠতে নিলে স্মরণ প্রাণোর হাত দু’টো বেডের সাথে চেপে ধরে প্রাণোর ঠোঁটে ভাজে ঠোঁট ডুবিয়ে দিয়ে রুডলি কিস করতে লাগলো স্মরণ৷ প্রাণো স্মরণ কে নিজের থেকে সরাতে নিলে স্মরণ আরো রেগে গিয়ে প্রাণোর ঠোঁট জোড়া কামড়ে ধরে৷ ঠোঁট কেটে রক্ত বের হয় তবুও স্মরণ প্রাণোকে না ছেড়ে প্রাণোর কোমর খামচে ধরে৷

ব্যাথায় কুকড়ে ওঠে প্রাণো তবুও দাঁতে দাঁত চেপে সহ্য করতে লাগলো৷ প্রাণো বুঝতে পারছে স্মরণ তার যতো রাগ অভিমান সব কিছু তার উপর মেটাচ্ছে ৷ স্মরণ হয়তো তার পাশে RV কে মেনে নিতে পারেনি৷

স্মরণ প্রাণোর ঠোঁট ছেড়ে দিয়ে প্রাণোর পুরো মুখে চুমু দিয়ে গলায় মুখ গুজে রইল৷ প্রাণো তার গলায় ভেজা তরল কিছু অনুভব করতে বুঝতে পারলো স্মরণ কাঁদছে৷ কোমরে খামছি দেওয়া প্রচন্ড জ্বলছে কোমর৷ প্রাণো তা সহ্য করে স্মরণের মাথায় হাত বুলাতে বুলাতে বলতে লাগলো, ” আমাকে ক্ষমা করো স্মরণ ৷ ফোন সাইলেন্ট থাকায় টের পাইনি তুমি কল দিয়েছিলে৷ আর আমার সাথে যে ছেলে টাকে দেখেছো ও RV আমার বন্ধু + ভাই ৷ ভার্সিটি থেকে ফেরার সময় RV সাথে দেখা হয়ে যায় ৷ তখন RV রিকুয়েস্ট করে ওর গার্লফ্রেন্ড এর সাথে দেখা করার জন্য আমি না করতে পারি নি স্মরণ৷ RV গার্লফ্রেন্ড এর সাথে দেখা করে Rv আমাকে বাসায় ড্রপ করে দিতে চেয়েছিলো ৷ তখন লাঞ্চের সময় পেরিয়ে যাচ্ছিলো তখন RV অফার করে ওর সাথে লাঞ্চ করতে৷ ”

স্মরণ মুখ তুলে প্রাণোর দিকে তাকাতে প্রাণো আতঁকে ওঠে৷ প্রাণোর ঠোঁট কেটে যেভাবে রক্ত পড়ছে ঠিক তেমনি স্মরণের ঠোঁট দিয়ে রক্ত পড়ছে৷ বিধ্বস্ত মুখটা দেখে প্রাণোর কলিজা ছ্যাঁত করে উঠলো৷ প্রাণো স্মরণের রক্ত মাখা ঠোঁটে চুমু দিয়ে কেঁদে ফেলে৷ প্রাণোর কান্না দেখে স্মরণ বলে উঠলো ,” আই এম স্যরি প্রাণ তুমি কেঁদো না প্লিজ ৷ তোমার চোখে পানি দেখলে আমার কলিজা যেন ছিড়ে যায়৷ ”

প্রাণো কাটা ঠোঁট দাঁত দিয়ে কামড়ে ধরে কান্না আটকানোর চেষ্টা করছিলো তবুও কান্না আটকাতে না পেরে জোড়ে কেঁদে ফেলে ৷ স্মরণ দ্রুত প্রাণোর উপর থেকে উঠে প্রাণোকে জড়িয়ে ধরে বলে,” আমাকে মারো কাটো প্রাণ তবুও কেঁদো না প্লিজ ৷ আমি আর তোমার উপর কখনো রাগ করবো না প্লিজ প্রাণ আর কেঁদো না৷”

প্রাণো নাক টানতে টানতে বলে উঠলো ,”আগে আমাকে ছেড়ে গোছল করে এসো ৷ তোমার শরীর থেকে ঘামের গন্ধ আসছে৷”

স্মরণ প্রাণোর কথা শুনে হাসবে না কাঁদবে বুঝতে পারছে না৷

” ঠিক আছে আমি এখুনি শাওয়ার নিয়ে আসছি তুমি এখানে থেকো একদম বেড থেকে নামবে না৷” স্মরণ বেড থেকে উঠে ড্রায়ার থেকে ফাস্টএইড বক্স বের করে প্রাণোর ঠোঁটের রক্ত মুখে ঔষধ লাগিয়ে দিয়ে উঠতে নিলে প্রাণো স্মরণের হাত ধরে বসিয়ে দিয়ে নিজের হাতে তুলো দিয়ে স্মরণের ঠোঁটের রক্ত ক্লিন করে ঔষধ লাগিয়ে দিলো৷

” এখন যাও গোছল করে এসো৷”

স্মরণ প্রাণোর নাকে নাক ঘসে ওয়াশরুমে ঢুকে গেল৷ প্রাণো সে সুযোগে কিচেনে গিয়ে ফ্রিজ খুলে তেমন কিছু পেল না শুধু মাত্র কয়েকটা ডিম ছাড়া৷ প্রাণো আরো খুজাখুজি করে নুডুলস পেয়ে গেল৷ স্মরণের গোছল সেরে বের হতে হতে প্রাণো নুডুলস রান্না করে ফেলে৷

স্মরণ গোছল সেরে চেন্জ করে রুমে এসে প্রাণো কে না দেখতে পেয়ে মাথায় রাগ চেপে যায় স্মরণের… বেডের উপর ভেজা তোয়ালে ফেলে রুম থেকে বের হতে নিলে প্রাণো নুডুলসের প্লেট নিয়ে রুমে ঢুকে ৷
প্রাণো রুমের বাইরে থেকে আসতে দেখে স্মরণ রেগে বলে,” তোমাকে না বলেছিলাম রুম থেকে না বের হতে?”

” বলেছিলে কিন্তু আমি তো আমার বর কে সারাদিন না খাইয়ে রাখতে পারি না মশাই৷ আর এ কি ভিজে তোয়ালে বেডের উপর রেখেছো কেন? ” বলতে বলতে প্লেট টেবিলের উপর রেখে ভেজা তোয়ালে হাতে নিয়ে চারিদিক তাকায়ে ব্যালকনি দেখতে পেলো ৷ সেখানে গিয়ে তোয়ালে মেলে দিয়ে রুমে এসে দেখে স্মরণ এখনো ওভাবে দাড়িয়ে আছে৷

” এই তুমি এখনো নুডুলস খাওয়া শুরু করোনি কেন? জানো পুরো কিচেন খুজেও আর কিছু পেলাম না শুধু ডিম নুডুলস আর রান্নার বাকি সামগ্রী ছাড়া৷”

” এখানে আমি আসি আর কেউ তেমন আসে না তাই তেমন কিছু কিচেনে রাখি নি ৷”

” ওকে খেয়ে নেও দ্রুত নিশ্চয়ই তোমার খুব খিদে পেয়েছে?”

” হুম পেয়েছে তবে নুডুলসের না তোমার খিদে…”

” লুচ্চা বেডা চুপচাপ খেয়ে নেও ৷ নাহলে তোমার খবর আছে ৷”

স্মরণ আচমকা প্রাণোর হাত হ্যাচকা টান দিয়ে কোমড় ধরতে প্রাণো ব্যাথায় কুকড়ে ওঠে ……
.
.
.
#চলবে………….

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here