গোধূলীর_রঙিন_ছোঁয়া পর্ব ২৭

#গোধূলীর_রঙিন_ছোঁয়া
#লেখায়_ফারহানা_ছবি
#পর্ব_২৭
.
.
🦋
প্রাণোর কথা শেষ হতেই কেভিনে ঢুকতে ঢুকতে কেউ একজন বলে উঠলো , ” আমি জানি শান কেন এমনটা করছে প্রাণো৷”

কণা, প্রাণো ,RV , কমিশনার অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে সামনে দাড়িয়ে থাকা মানুষটার কথা শুনে……

” সিমি আপু তুমি জানো শান কেন এমনটা করছে?”(প্রাণো)

” সিমি মা কি জানো তুমি সবটা আমাদের কে বলো প্লিজ?”(কমিশনার)

” ঠিক আছে আঙ্কেল আমি শুরু থেকে সবটা বলছি তোমাদের , আমার মনে হয় সবটা জানার পর তোমাদের কাছে সবটা প্রমান হয়ে যাবে৷”

সিমি শুরু থেকে সবটা এক এক করে বলতে লাগলো প্রাণোকে, জীবন মাহমুদ তাদের জীবনটা তসনস করে দেওয়া তার মাকে কেড়ে নেওয়া স্মরণ এর জন্ম আবির এর এক্সিডেন্ট , মিস আন্ডারস্ট্রান্ডিং সব শেষে স্মরণ এর থেকে প্রাণোকে আলাদা করার চেষ্টায় শান এর হেল্প নেওয়া৷ সিমি দম নিয়ে আবার বলতে লাগলো৷

” প্রাণো আমি আমার ভুলটা বুঝতে পেরেছি ৷ হোক স্মরণ আমার সৎভাই তবুও সে আমার মায়ের গর্ভে জন্ম নিয়েছে হোক সে জীবন মাহমুদ এর ছেলে তবুও ও আমার ভাই ৷ ভুল বুঝেছিলাম স্মরণকে কিন্তু সে ভুল আমার ভেঙে গেছে৷ কিন্তু শান সে সব মানতে নারাজ৷ শান স্মরণকে চ্যালেন্জ করেছিলো তোমাকে স্মরণের থেকে আলাদা করে শান্ত হবে৷ ”

সিমির কথা শুনে প্রাণো দাঁতে দাঁত চেপে রেগে বলে উঠলো ,” আর তাই আমাকে বিয়ে করার জন্য উঠে পড়ে লেগেছে তাই তো সিমি আপু?”

” হ্যাঁ প্রাণো ৷ কিন্তু বিশ্বাস করো শান সবটা চ্যালেন্জ টা জেতার জন্য করছে৷ ও নিজের হার মানতে নারাজ ৷ কখনো চ্যালেজ নিয়ে হেরেছে এমন রেকর্ড নেই শানের..”

” চ্যালেন্জ , চ্যালেন্জ জেতার জন্য এতো কিছু করছে শান তাই তো? ওকে ফাইন এই প্রাণোই এবার শানের হেরে যাওয়ার কারণ হবে৷ বিয়ে করবে আমাকে? আমার স্মরণের থেকে আলাদা করে দিবে তাই না? এবার যাস্ট দেখো আমি কি করি৷ ” রাগে চোখ মুখ লাল হয়ে আছে প্রাণোর তা দেখে কমিশনার শুকনো ঢোক গিলে প্রাণোকে বলতে লাগলো,” প্রা,, প্রাণো মা তুমি প্লিজ আমার ছেলেটার সাথে খারাপ কিছু করো না৷ তুমি তো শুনলে ও সবটা চ্যালেন্জ জেতার জন্য এমন টা করছে৷”

” আঙ্কেল আপনার ছেলের সাথে খারাপ হবে নাকি ভালো এটা তো আপনার ছেলে শানই ডিসাইড করবে৷”

” মানে!” (কমিশনার)

” মানেটা বিয়ের দিন বুঝে যাবেন ৷ যাস্ট ওয়েট এন্ড ওয়াচ৷” কথাটা বলে রহস্যময় হাসি দিলো প্রাণো৷

” প্রাণো আমাকে তুমি ক্ষমা করেছো তো?”(সিমি)

প্রাণো সিমির কথা শুনে সিমির দিকে এগিয়ে গিয়ে সিমিকে জড়িয়ে ধরে ৷ আচমকা সিমিকে জড়িয়ে ধরায় সিমি অবাক হয়ে যায়৷ প্রাণো সিমিকে জড়িয়ে ধরে বলতে লাগলো,” আপু আপনার উপর আমার কোন রাগ নেই তাহলে ক্ষমা করার প্রশ্নই বা আসলো কি করে? আমি তোমার ছোট ভাইয়ের বউ বুঝেছো?”

সিমি প্রাণোর কথা শুনে যেন তার বুকের উপর থেকে পাথর নেমে গেল৷ প্রাণো সিমিকে ছেড়ে সরে দাড়াতে সিমি বলে উঠলো ,” প্রাণো আজ তুমি যা জানলে স্মরণ কিন্তু তার বিন্দু বিসর্গ কিছুই জানে না৷ ও যখন সবটা জানতে পারবে তখন কি হবে বুঝতে পারছো?”

” জানি তবে এখন স্মরণের এই সব কিছু না জানলেও চলবে ৷ আগে আমাকে শানকে আটকাতে হবে আর কি করে তা আমি খুব ভালো করেই জানি ৷ তবে সিমি আপু তোমার একটা হেল্প চাই ”

” কি হেল্প?”

” সময় হলে বলবো৷ আর আঙ্কেল শান যেন এখন কার একটা কথাও জানতে না পারে বুঝেছেন?”

” হ্যাঁ প্রাণো ৷ কিন্তু প্লিজ শান এর কোন ক্ষতি করো না৷”

” বললাম না আঙ্কেল সবটাই শানের উপর ডিপেন্ড করছে৷”

কমিশনার আর কিছু বললো না৷ তিনি বেড়িয়ে গেলেন কেভিন থেকে, তবে প্রাণোর মাথায় এখন জীবন মাহমুদ এর করা কার্যক্রম গুলো ঘুরপাক খাচ্ছে বারংবার৷ প্রাণো তার চেয়ারে বসে টেবিলের উপর রাখা গোলকটা ঘুড়াতে ঘুড়াতে সিমি কণা RV কে বলে উঠলো ,” তোমরা তৈরি হয়ে নেও আজ পরাপর কয়েকটা অপারেশন আছে৷”

” অপারেশন! কিন্তু আজ তো কোন অপারেশনে যাওয়ার কথা ছিলো না৷ তুমি তো আগে কিছু বলোনি প্রাণো?”(RV)

“”আমাকে কি এখন থেকে সবটা তোমাদের জানিয়ে করতে হবে RV?”
শান্ত গলায় কথাটা বললেও কথা গুলো ভিষণ ধাড়ালো ছিলো৷ RV বুঝতে পারলো প্রাণো ভিতরে ভিতরে ভিষণ রেগে আছে কিন্তু বাইরে তা প্রকাশ করছে না৷

” ঠিক আছে প্রাণো আমরা এখুনি তৈরি হয়ে নিচ্ছি তুমি বাকি প্লানটা সেরে ফেলো৷”

” হুম ”

সিমি কণা RV কেভিন থেকে বেড়িয়ে গেল৷ প্রাণো চেয়ারে মাথা এলিয়ে দিয়ে চোখ বন্ধ করে ফেলে, প্রাণো ভেবে পাচ্ছে না স্মরণ যখন সবটা জানতে পারবে তখন কি রিয়েক্ট করবে স্মরণ? আর কি করে জীবন মাহমুদ এর নোংরা ভালো মানুষির মুখোশ খুলে স্মরণের সামনে আনবে? প্রাণো তার অফিস ল্যাপটপ টা অন করে লিস্টের নাম গুলো দেখে নিয়ে নিজে তৈরি হয়ে নেয়৷ ব্লাক জিন্স হুডিয়ালা জেকেট মুখে মাক্স চোখে কালো চশমা ৷ সব শেষে চাকু রিভলবার চেক করে নিয়ে কোমড়ে গুজে নেয়৷ দু’পায়ে শু তে দুটো রিভলবার লুকিয়ে রাখে৷

এবার প্রাণো আর রিক্স নিলো না৷ নিজেকে পুরো ঢেকে নিলো ৷ হুট হাট করে কেউ চিনতে পারবে না৷ প্রাণো কেভিন থেকে বের হতে দেখে সবাই তৈরি হয়ে আছে৷

” টিম তৈরি RV?”

” হ্যাঁ, টিম রেডি তুমি চাইলে আমরা এখন বের হতে পারি৷”

” হুম তাহলে চলো৷”

প্রাণো গম্ভির মুখে সবাইকে গাইড করছে৷ আর কাকে কিভাবে এট্যাক করবে সেটাও বলে দিচ্ছে৷ প্রাণো তার লিস্ট অনুযায়ী সবাই কে বলে দেয় আর চারটে জায়গায় তারা অপারেশন করবে ৷ তাই টিম টাকে দুটো ভাগে ভাগ করে দিলো৷ একটা দল প্রাণোর অন্য দলটা RV ৷ সিমিকে প্রাণো তার টিমে নিলো আর কণাকে RV টিমে…..প্রাণো বের হবার আগে সবার উদ্দেশ্য বলতে লাগলো ,” আমি জানি আজ আমরা বড় একটা একটা চ্যালেন্জে নেমেছি৷ মনে রেখো নিজেদের উপর বিশ্বাস হারাবে না৷ নিজেদের সবটা দিয়ে আজ প্রমান করবে তোমাদের যা শিখিয়েছি তা ব্যবহার করবে তোমরা৷ আমার বিশ্বাস তোমরা পারবে ৷ কি ঠিক বললাম তো?”

” ইয়েস ম্যাম”(সবাই এক সাথে বলে উঠলো )

” বেস্ট অফ লাক ”

“থ্যান্কিউ ম্যাম”

প্রাণো আর RV তার টিম নিয়ে আলাদা আলাদা গাড়ি নিয়ে বেড়িয়ে পড়ে৷

__________

‘সকাল থেকে কয়েকবার স্মরণ প্রাণোকে ফোন করে কিন্তু প্রতিবার ফোন বন্ধ জানান দিচ্ছে৷ স্মরণের রাগ টা যেন তুঙ্গে উঠে গেল৷ স্মরণ রেগে এবার সাদমান কে ফোন করে প্রাণোর খোজ করে৷ সাদমান প্রাণোর রুমে এসে প্রাণোকে দেখতে না পেয়ে স্মরণ কে জানায় প্রাণো বাড়িতে নেই৷ হয়তো কলেজে গেছে ৷ এটা বলে সাদমান কল কেটে দেয়৷ সাদমান প্রাণোর রুম থেকে বেড়িয়ে ড্রইংরুমে আসতে দেখে শান বসে আছে আর জুনাইদ কবির শানের সাথে হেসে হেসে কথা বলছে৷ জুনাইদ কবির সাদমান কে দেখে বলে উঠলো ,” সাদমান এসে গেছো তাহলে যাও বোন কে ডেকে আনো বলো আমি ডাকছি৷”

” বাবা প্রাণো ওর রুমে নেই ৷ বাইরে গেছে৷”

কথাটা শোনা মাত্র জুনাইদ কবির রেগে বলে ওঠে ,” সাদমান তোমার কি কোন কমন সেন্স নেই? আজ বাদে কাল প্রাণোর বিয়ে আর ওকে বাড়ি থেকে বের হতে দিয়েছো?”

” ফার্স্টলি প্রাণো কোন বাচ্চা মেয়ে নয় যে ওকে রুমে আটকে রাখবো৷ এন্ড সেকেন্ডলি প্রাণো এই বিয়েটা করবে না ৷ ”

জুনাইদ কবির বসা থেকে উঠে দাড়িয়ে সাদমানের উদ্দেশ্য কিছু বলতে নিলে তার আগে শান তাকে থামিয়ে দিয়ে বলতে লাগলো,” আঙ্কেল আপনি হাইপার হবেন না৷ বিয়ে তো হবে এবং সেটা পরশুদিন৷ আপনি তোর জোর শুরু করুন৷ ”

” ঠিক আছে বাবা তুমি যখন বলছো তখন আমার আর কোন চিন্তা নেই৷”

সাদমান তার বাবার কথা শুনে মনে মনে বলে উঠলো ,” বাবা তোমার তো কোন চিন্তা নেই কিন্তু আমার চিন্তা তো বেড়ে গেলো তোমার কথা শুনে৷ স্মরণ যদি একবার জানতে পারে ওর প্রাণকে বিয়ে দিচ্ছো অন্য আর একটা ছেলের সাথে তাহলে যে কি হবে সেটা ভেবেই আমার হৃদপিন্ড এখনোই লাফালাফি শুরু করে দিয়েছে৷”

” তাহলে আঙ্কেল আজ তাহলে আসি ৷ বিকেলে ড্রাইভার এসে প্রাণোর বিয়ের সব প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র পাঠিয়ে দিবো৷”

” ঠিক আছে বাবা৷”

শান চলে যেতে জুনাইদ কবির তার ছেলের দিকে কঠিন দৃষ্টি নিক্ষেপ করে বলতে লাগলেন,” সাদমান পরশু তোমার বোনের বিয়ে ৷ ভাই হয়ে নিজের বোনের সব দায়িত্ব তোমার নেওয়ার কথা কিন্তু তুমি গা ভাশিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছো এটা কি ঠিক হচ্ছে?”

” বাবা তুমি প্রাণোর মত না নিয়ে বিয়েটা ঠিক করে তুমি একদম ঠিক করলে না৷ আর একটা কথা আমি আমার দায়িত্ব পালন করবো কিন্তু প্রাণোর কোন দ্বায় ভার আমি নিতে পারবো না৷ কারণ ও এখন এডাল্ট প্রাণো যেটা ভালো মনে করে সির্ধান্ত নিক না কেন আমি ওর পাশে থাকবো৷ ”

” এইটাই তোমার শেষ সির্ধান্ত সাদমান?”

” জ্বি বাবা৷”

” তাহলে তুমিও শুনে রেখো প্রথম বার প্রাণো আমার মানসন্মান নিয়ে খেলা করেছিলো আমি ওকে মাফ করে দিয়েছিলাম কিন্তু এবার আর তা হবে না সাদমান৷ বিয়েটা হচ্ছে আর শান এর সাথেই হবে৷”

” বেস্ট অফ লাক বাবা ” মুচকি হেসে নিজের রুমে চলে যায় সাদমান৷

রুমে এসে সাদমান স্মরণকে ফোন করে সবটা জানিয়ে দেয়৷ সবটা শুনে স্মরণ এর রাগ এখন আকাশ ছুঁই ছুঁই ৷ কল ডিসকানেক্ট করে স্মরণ প্রাণোর নাম্বারে আবার ফোন করে কিন্তু এবারো ফোনের অপাশ থেকে এক বিরক্তিকর কন্ঠ জানান দিচ্ছে ফোন সুইচ অফ৷ স্মরণ রাগে ফোন টা বেডের উপর ছুড়ে মেরে রুম ভাঙচুর করতে লাগলো৷ স্মরণ এর রুম সাউন্ডপ্রুফ হওয়ায় ভেতরের শব্দ বাইরের কেউ শুনতে পায়নি৷

” প্রাণ প্রাণ তোমাকে যতোবার ছাড় দিয়েছি তুমি ঠিক ততোবার এটার মিসইউজ করেছো৷ কিন্তু আজ তোমার সাহস দেখে আমি সত্যি স্পিচলেস ৷ বিয়ে করবে তাই না? তোমার বিয়ে করার শখ আমি এবার মেটাবো অনেক উড়েছো তুমি আর না আর না প্রাণ৷ এবার তোমাকে যে আমার খাচায় বন্দি হতেই হবে৷ আমার ভালোবাসায় বন্দিনী হয়ে সারাটা জীবন কাটাতে হবে তোমায়৷ ভেবেছিলাম #গোধূলীর_রঙিন_ছোঁয়া মতো করে তোমাকে রাঙিয়ে দিবো কিন্তু তুমি তা হতে দিলে না৷ নেভার মাইন্ড এবার আমি যা করবো তার জন্য তুমি দায়ি থাকবে৷”

বেডের চাদর বালিশ ছুড়ে ফেলে দিয়ে রুম থেকে বেড়িয়ে গেল৷ সাহারা বেগম তার বড় ছেলের চোখ মুখ দেখে ঘাবড়ে গেল ৷ স্মরণ রেগে বেড়িয়ে যেতে নিলে সাহারা বেগম পথ আগলে দাড়ায় ৷ জীবন মাহমুদ সাজিত বাড়িতে নেই৷ প্রিয়া সকালে নাস্তা করে রুমে গিয়ে রেস্ট নিচ্ছে ৷ আর মিহু তার নিজের রুমে শুয়ে আছে৷ সাহারা বেগম স্মরণের হাত ধরে স্মরণের রুমে নিয়ে গিয়ে দরজা বন্ধ করে দিয়ে স্মরণকে বলতে লাগলো,” স্মরণ কি হয়েছে বাবা তোর আমাকে বল৷ তোর চোখ মুখ এমন লাগছে কেন? কেন এতো রেগে আছিস?”

স্মরণ সাহারা বেগমকে জড়িয়ে ধরে ৷

” বাবা কি হয়েছে বল?”

স্মরণ এবার তার মাকে সবটা খুলে বলে৷ প্রাণোকে বিয়ে করার কথাটাও লুকায় না ৷ সবটা জেনে সাহারা বেগম একগাল হাসি নিয়ে স্মরণ কে বলে,” স্মরণ বাবা তুই কোন চিন্তা করিস না ৷ প্রাণো আমাদের বাড়ির বউ হয়ে আসবে৷ তুই যাই করিস না কেন আমি তোর সঙ্গে আছি৷ কিন্তু আমার মনে হয় তুই এখুনি রেগে কোন ডিসিশন নিস না৷ প্রাণো তোকে এই সব জানায়নি নিশ্চয়ই কোন কারণ আছে?”

” কি কারণ থাকতে পারে মা তুমি বলো? প্রাণের বিয়েতে মত আছে বিধায় আমাকে কিছু জানায় নি৷”

” আমার তা মনে হচ্ছে না বাবা৷ তুই এতো না রেগে গিয়ে শান্ত হয়ে ভাব৷ আর প্রাণোকে সুযোগ দে নিজের কথা গুলো তোকে জানানোর৷”

” ঠিক আছে তোমার কথা মতো আমি একটা সুযোগ প্রাণকে দিবো কিন্তু ও যদি আমাকে ঠকাতে চায় তাহলে কিন্তু …”

“উফফ পাগল ছেলে আমার , আগে সবটা শুনে নে তারপর না হয় ডিসিশন নিস৷”

” হুম”

সাহারা বেগম রুমের অবস্থা দেখে মাথায় হাত দিয়ে বসেন৷ তার ছেলে যে রাগি জানে কিন্তু এতোটা রাগি সেটা জানতো না৷ সাহারা বেগম লেগে পড়লেন ছেলের রুম গুছাতে৷

_______________

দুপুর গড়িয়ে সন্ধ্যা হওয়ার পর পর প্রাণো সহ তার টিম ফিরে এলো ৷ তার কিছুক্ষণ পর RV তার টিম নিয়ে ফিরে আসে৷ প্রাণো তার কেভিনে এসে চেন্জ করে টিভি অন করে নিউজ দেখতে লাগলে৷ আজ পুরো শহরে যেন আগুন লেগে গেল৷ নামিদামী বিজনেসম্যানরা মুখ লুকাতে ব্যস্ত ক্যামেরার সামনে৷ রিপোর্টারদের একের পর এক প্রশ্নের উওর দিতে ব্যার্থ বিজনেসম্যানরা ৷ তাদের অবৈধ বেআইনী কাজ গুলো তাদের ফ্যাক্টোরিতে চালিয়ে যাচ্ছে এতো বছর ধরে তার ঘুনাক্ষরে টের পাইনি কোন পুলিশ অফিসার ৷ কিন্তু অজানা কোন এক টিম এসে সবটা ফাঁস করে দিলো ৷ বেআইনী কারখানা গুলো আগুন ধরিয়ে দিয়েছে৷

প্রাণো নিউজ দেখে হাসছে৷ পুলিশ বিজনেসম্যান এবং তাদের ধনীর দুলালকেও এরেস্ট করে ৷ পুলিশের কাছে এদের সব অবৈধ কাজের প্রমান চলে এসেছে৷ কিন্তু কে দিলো এই প্রমান কে আড়ালে থেকে দেশ কে ক্ষতির হাত থেকে বাঁচাচ্ছে সেটা এখনো কেউ জানে না৷

প্রাণো নিউজ এর চ্যানেল পাল্টাতে পাল্টাতে একটা চ্যানেলে এসে চোখ আটকে যায়৷ সে দিন RV মেসেজে সেই নাম্বার আর ছবিটার পুরো ডিটেইলস জানিয়েছিলো প্রাণোকে৷ হ্যাঁ, মৌ একজন রিপোর্টার , মৌ আজ সব নিউজ গুলো কভার করছে৷ প্রাণোর কাছে মেয়েটিকে ভালো লাগে নি ৷ মেয়েটাকে দেখলে প্রাণোর মনে হয় মেয়েটি যেমনটা নিজেকে প্রেজেন্ট করে মেয়েটা আসলে তেমন না ৷ প্রাণোর RV কে ডেকে বলে মৌকে নজরে রাখতে৷

রাত আটটায় প্রাণো ফোন অন করে দেখে স্মরণের অনেক গুলো মিসড কল ৷ প্রাণো স্মরণকে কল ব্যাক করতে যায় তখনি আর একটা নম্বর থেকে প্রাণোর ফোনে কল আসে ৷ প্রাণো কল রিসিভ করে কানে ধরতে ফোনের ওপাশ থেকে বলে উঠলো …..
.
.
.
#চলবে………

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here