ঝিলের ওপারে পদ্মফুল পর্ব -১২

#ঝিলের_ওপারে_পদ্মফুল
তন্বী ইসলাম -১২

বেশ খানিকক্ষণ সেলিমের সাথে কথা বলে যাচ্ছে শ্রাবণ। সেলিম তার বউকে নিয়ে বাড়ি এসেছে শুনে বেশ খুশিই হলো সে। তবে খুশিটা বেশিক্ষণ স্থায়ী হলো না যখন শুনলো তার ভাবীর ছোট ভাই আশিকও এসেছে এখানে বেড়াতে। আশিকের নামটা শোনামাত্রই শ্রাবণের মুখটা কেমন ফ্যাকাশে হয়ে গেলো। পরক্ষণে আর কিছু না বলে ফোনটা কেটে দিলো সে। সেলিম কিছুক্ষণ ভ্যাবাচেকা খেয়ে ফোনের দিকে তাকিয়ে রইলো। আকস্মিক তার ছোট ভাইয়ের ফোন কেটে দেওয়ার ব্যাপারটা তার মাথায় ঢুকলো না।
সন্ধ্যার আলো মিলিয়ে পুরোদমে রাত নেমে এসেছে ততক্ষণে। আশিক পদ্ম’র খোঁজে খোঁজে আলেয়াদের ঘরে গিয়ে ঢুকেছে তখন। সে এ বাড়ির নতুন মেহমান, কিন্তু দেখে বুঝার কোনো অবকাশ নেই। তার হাঁটার ধরন, কথাবার্তায় বুঝা যাচ্ছে সে এ বাড়িরই ছেলে। আলেয়া নিচে বসে বাঁশের বেতের ডালা বানাচ্ছিলেন। আর বিছানার উপর বসে শাপলা আর পদ্ম বই নিয়ে ঘাটাঘাটি করছে।

আশিক ঘরে ঢুকে কোনো কথা না বলেই পদ্ম’র পাশে গিয়ে বসলো। ব্যাপারটা কোনোভাবেই হজম হলো না আলেয়ার। চেনা জানা নেই, দুদিনের পরিচয়, এরমধ্যেই এতো সখ্যতা কিসের। তবে আত্মীতার খাতিরে তিনি মুখে কিছু বললেন না। শুধু কয়েক সেকেন্ড নিরবে অগ্নিদৃষ্টি নিক্ষেপ করলেন আশিকের দিকে। পদ্ম আর শাপলা দুজনকেই চোখ রাঙ্গিয়ে বুঝিয়ে দিলেন যেনো এই ছেলেটার সাথে বেশি মাতামাতি না করে। আশিকের হাতে একটা শপিং ব্যাগ৷ পদ্ম যথাসম্ভব আশিকের সান্নিধ্য এড়িয়ে চলার চেষ্টা করছে। কিন্তু কোনো লাভ হলো না, সবাইকে অবাক করে দিয়ে পদ্ম’র হাতে শপিং টা গুজে দিয়ে আশিক তার হাস্যজ্বল মুখে বললো
“পদ্ম, তোমার লাইগা কিছু খাওন আনছি। পড়ার ফাঁকে খিদা লাগলে খাইও।
পদ্ম সর্বপ্রথম বিস্মিত চোখে হাতের পানে শপিং ব্যাগটার দিকে তাকালো। এরপর এক দুই না ভেবে সে মায়ের দিকে দৃষ্টি ফেরালো। মা ভয়াবহ ভাবে তাকিয়ে আছে তার দিকে। পদ্ম ঢোক গিললো। আমতা-আমতা করে আশিককে বললো
“আমার এইসব লাগবো না আশিক। তুমি শুধু শুধু এইসব কেন আনতে গেলা।
আশিক হেসে বললো
“শুধু শুধু আনতে যামু কেন, তোমার লাইগা আনছি। খিদা নিয়ে পড়লে তোমার কষ্ট হইবো তো।

শাপলা বিস্ময়ে তাকিয়ে আছে আশিক আর পদ্ম’র দিকে৷ মাঝেমাঝে মায়ের দিকেও তাকাচ্ছে সে। এই বুঝি আম্মা এখনই বোম্ব ব্লাস্ট করবে। শাপলার এই চিন্তা করাটা শেষ হতে না হতেই আলেয়া বেগম ভদ্রতার সহিত অত্যন্ত চাপাস্বরে আশিককে উদ্দেশ্য করে বলে উঠলেন
“পদ্ম’র কষ্ট হইবো নাকি হইবো না সেই চিন্তা করার লাইগা আমিই যথেষ্ট বাজান। খামোখা কষ্ট কইরে ওরে নিয়া তোমারে চিন্তা করা লাগবো না।
আলেয়ার কথা শুনে আশিকের মুখটা হঠাৎ চুপসে গেলো। শাপলার হাসি পাচ্ছে খুব, বেচারা মনে মনে হয়তো মাকে বকাও দিচ্ছে। তবে পদ্ম’র বেশ খারাপ লাগছে। একটা মেহমান ছেলেকে এভাবে কথা বলার কি খুব বেশিই প্রয়োজন ছিলো? মায়ের উপর রাগও লাগছে কিছুটা, কিন্তু রাগ তো আর দেখানো যাবে না।

আলেয়ার কথা শুনে কিছুক্ষণ ইতস্তত বোধ করলেও পরক্ষণে সব ভুলে গেলো আশিক। আবারও মুখে হাসি টেনে আলেয়ার উদ্দেশ্যে বললো
“কি যে কন আন্টি। ওরে নিয়া চিন্তা করলে আমার কষ্ট হইবো কেন, বরং ওরে নিয়া চিন্তা করতে আমার বেশ ভালোই লাগে।
এবার কপালে ভাজ পরলো আলেয়ার , মৃদু গলায় দাঁতে দাঁত চেপে আশিককে উদ্দেশ্য করে বললো
“আইচ্ছা বাজান। ও তো তোমার বোইনের মতনই। বোইনের জন্য ভাই চিন্তা করলে দোষের কিছু না। ভাই-ইতো বোনের লাইগা চিন্তা করবো। চিন্তা করো বাজান, তোমার বোইনরে নিয়া আরো বেশি কইরা চিন্তা করো।
থতমত খেয়ে গেলো আশিক। পরক্ষণে ভ্যাবলাকান্তের মতো হেসে আলেয়ার দিকে তাকিয়ে বললো
“এই দুনিয়ায় আমার মায়ের পেটের মেয়েরে ছাড়া অন্য কোনো আন্টির মেয়েগোরে আমি বোইব ভাবি না আন্টি।
এবারে হতভম্ব হলো পদ্ম। শাপলা একহাতে মুখ আড়াল করে দাঁতে দাঁত চেপে বিড়বিড় করে একা একাই বললো
“আজ তো আশিক গেলো, বেচারার আজ বেহাল দশা হবেই হবে।
আলেয়া কিছুক্ষণ নির্বাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলো আশিকের দিকে। আশিকের ঐ হাসিমুখটা তিনি যতবার দেখছেন ততবারই তার শরীর যেনো জ্বলে পুড়ে ছাই হয়ে যাচ্ছে। তিনি হঠাৎ-ই চিৎকার করে উঠলেন। বজ্রপাতের মতো করে পদ্মকে উদ্দেশ্য করে বললেন
“পদ্ম’রে, তোরে সেই কখন কইছি বিছানার চাদর আর খেতা বালিশের কভার গুলা ধুওনের লাইগা। তুই অহনো এইখানে বইসা রইছিস কোন আন্তাজে?

মায়ের কথায় অবাক হলো পদ্ম। মা তাকে কখন এইগুলা ধোয়ার জন্য বলেছিলো? আর এই রাতের বেলা কেউ এইগুলো ধোয় নাকি!
পদ্ম’কে নিজের দিকে এভাবে তাকিয়ে থাকতে দেখে তিনি আবারও গর্জে উঠে বললেন
“এখনো তুই এইখানে বইসা রইছোস কেন? আমার মুখ দেখোস নাই আগে কখনো? যা কইছি তা কর।
পদ্ম মায়ের মুখের দিকে তাকিয়ে থেকেই ভয়ে ভয়ে বিছানা ছেড়ে নামলো। এরপর ঘরের অন্যপাশে গেলো, যেদিকে আলেয়া ঘুমায়। বাঁশের বেড়া দিয়ে আড়াল করা ওপাশ টা। পদ্ম সেখানে গিয়ে বোকার মতো বসে রইলো, মা হঠাৎ এইসব ধুতে কেন বললো? শুধুই কি আশিকের উপর রাগ দেখিয়ে? এখন সে কি করবে? ধুবে? যদি না ধুয় তাহলে মা রাগ করবেন, আবার এই রাতের বেলা এগুলো ধুতেও মন এগুচ্ছে না। পদ্ম কাঁদোকাঁদো মুখ করে বসে রইলো বিছানার মধ্যিখানে । দুগালে হাত দিয়ে চেপে ধরে বসে ভাবতে লাগলো এই মুহূর্তে শ্রাবণ ভাই যদি থাকতো তবে কি করতো? আশিককে নিশ্চয়ই কাঁচা চিবিয়ে খেতো। মনে মনে এটা ভেবে সে স্বস্তির নিশ্বাস ছাড়লো যে এখন শ্রাবণ ভাই নেই৷ থাকলে নির্ঘাত কোনো ঝামেলা হতোই।

আশিক ভ্যাবাচেকা খেয়ে বসে রইলো আগের যায়গায়। হঠাৎ পদ্ম’র মা এমন কেন করলো তার মাথায় ঢুকছে না। এদিকে পদ্ম’ও চলে গেছে অন্যপাশে, তাকে দেখতে না পেয়েও খারাপ লাগছে তার। নিশ্চুপ হয়ে মাথা নিচু করে বসে রইলো আশিক৷ ওদিকে আলেয়া নিচে বসে সাপের মতো ফুসছে আর কাজ করছে। শাপলা একবার মায়ের মুখ দেখছে তো আরেকবার আশিকের মুখ দেখছে।
এমন সময় ফোনের ভাইব্রেশনটা বেজে উঠলো। শাপলা চমকে তাকালো ফোনের দিকে। পরক্ষণে দৃষ্টি তার স্বাভাবিক হলো, শ্রাবণ ভাই কল করেছে। কিন্তু এইসময় সে কেন কল করলো?
এদিকে মায়ের সামনে বসে কথা বলা যাবেনা, তাই সে ধীরে ধীরে বিছানা ছেড়ে নেমে বাইরে বেরোনোর জন্য পা বাড়ালো। আলেয়া হাতের কাজের দিকে চোখ রেখেই বললেন
“যাস কই শাপলা?
“বাথরুমে যাইতেছি আম্মা।
আলেয়া আর কোনো কথা বাড়ালো না।

ঘর থেকে বেরোতে বেরোতেই কল কেটে গেলো। বাইরে গিয়ে একটা সুবিধামত যায়গায় দাঁড়িয়ে শ্রাবণ ভাইয়ের নাম্বারে ডায়াল করতে চাইলো শাপলা। কিন্তু ডায়াল করার আগ মুহূর্তেই আবারও শ্রাবণের কল এলো। এবার আর দেরি না করে কলটা রিসিভ করলো সে। ওপাশ থেকে গাড়ির হর্ণের আওয়াজ পাচ্ছে শাপলা৷ ভাবলো এই সময় শ্রাবণ ভাই গাড়িতে করে যায় কোথায়! পরক্ষণে এইসব চিন্তা ঝেড়ে ফেলে সে বললো
“কোনো দরকারে কল করছো শ্রাবণ ভাই?
শ্রাবণ অতিসত্বর গম্ভীর গলায় বললো
“পদ্ম কোথায় শাপলা?
“ঘরে। কেন?
“কি করে?
“এতোক্ষণ তো পড়তেছিল, এখন আম্মা ধমক দিছে তাই ঐপাশে গিয়া বসে আছে।

শ্রাবণ অবাক হয়ে বললো
“চাচী ওরে বকছে কেন? ঐ আশিইককা কিছু করে নাই তো আবার? শ্রাবণের কপালে স্পষ্ট ভাজ।
শ্রাবণ ভাইয়ের মুখে এমন ভাবে আশিকের নাম শুনে হাসি পেলো শাপলার। তবুও না হেসে সে বললো
“কিছু করে নাই মানে, অনেক কিছুই করে ফেলছে সে।
“কি করছে?
শাপলা খুবই ধীরকন্ঠে ঘটে যাওয়া সমস্ত ঘটনা শ্রাবণের কাছে বললো। শ্রাবণের কপালের রগ ফুলে উঠেছে এরমধ্যে, চোখদুটো লালবর্ণ ধারণ করছে। ইচ্ছে করছে আশিককে গিলে ফেলুক সে। আর কোনো কথা না বলে ফোনটা কেটে ফেলল সে। শাপলা অবাক হলো, এভাবে না বলে কল কেটে দেওয়ায়। মনে মনে ভাবলো, “আজ একসাথে সবার মাথা গরম হয়ে যাচ্ছে কেন।

শাপলা ঘরে যাবার জন্য পা বাড়ালো ঠিক তখনই পেছনে থাকা একটা ঝোপের আড়াল থেকে মনে হলো কেউ দৌঁড়ে চলে গেলো। শাপলা ভয় পেয়ে গেলো হঠাৎ। কে হতে পারে? এখানেই বা কি করছিলো? দৌঁড়ে চলেই বা কেন গেলো? শাপলার কপালে আবারও ঘাম। সে ভয়ের চোটে তারাতাড়ি করে ঘরে ঢুকে গেলো। ঘরে গিয়ে দেখলো আশিক ঘরে নেই, চলে গেছে। সে বিছানার উপর গিয়ে ধপাস করে শুয়ে পরলো, বুকটা এখনো ভয়ে ধুকপুক করছে। সেখানে কি সত্যিই কোনো মানুষ ছিলো নাকি ভুতটুত! আহহহ! ভাবলেই গায়ে কাটা দিচ্ছে।

রাত প্রায় এগারোটা। এমন সময় হন্তদন্ত হয়ে বাড়ি এসে ঢুকলো শ্রাবণ। চোখমুখ লাল হয়ে আছে তার। বাড়িতে ঢুকে সর্বপ্রথম চোখ গেলো তার পদ্ম’দের ঘরের দিকে। ওদের ঘরের দরজা লাগানো, বুঝা যাচ্ছে ভেতর থেকে লাইটও অফ। হয়তো ওরা সবাই ঘুমিয়ে গেছে। শ্রাবণ কয়েক সেকেন্ড তাকিয়ে রইলো পদ্মদের ঘরের দিকে। এক পর্যায়ে সে চোখ সরিয়ে নিলো, নিজের ঘরের দিকে পা বাড়ালো সে। এদের ঘরটাও লাগানো, ভেতরে কোনো সাড়াশব্দ নেই। শ্রাবণ দরজার মধ্যে গিয়ে টুকা দিলো৷ দু’বার টুকা দিতেই ভেতর থেকে জুবেদা ঘুম কাতুরে চোখে বলে উঠলো
“কেডা? ঘরের বাইরে কেডা?
জুবেদার সাথে সাথে শ্রাবণের বাবা সাইদুল ইসলামও গলা হাঁকিয়ে বললো
“বাইরে কে?
শ্রাবণ কয়েক সেকেন্ড সময় নিয়ে বললো
“আমি, দরজাটা খোলো আব্বা।

শ্রাবণের কন্ঠস্বর পেয়ে ওর বাবা মা দুজনেই উঠে বসলো। কপালে তাদের চিন্তার ভাজ৷ মাত্র দুদিন হলো তাদের ছেলে শহরে গিয়েছে, এরমধ্যেই আজ কোনো খবর না দিয়ে এতো রাত করে ফিরে এলো। ছেলের কোনো সমস্যা হলো না তো? কোনো বিপদে পরে নি তো তাদের আদরের ছোট ছেলে? হন্তদন্ত হয়ে লাইটটা জ্বালিয়ে দরজাটা খুলে দিলো জুবেদা। পেছনে সাইদুল মিয়াও এসে দাঁড়িয়েছে। ছেলের চোখমুখ লাল হয়ে আছে, কপালের রগ ফুলে আছে। জুবেদা আঁতকে উঠলেন ছেলেকে এইরুপে দেখে। আতংক নিয়ে বললেন
“বাপ তোর কি হইছে? তুই এইবেলা কাউরে কিছু না বইলা আইলি যে? তোর চোখমুখ এমন শুকনা কেন?
“আহ জুবেদা, আগেই অতো উত্তেজিত না হইয়া পুলাডারে আগে ঘরে ঢুকবার দেও তো। হাঁকিয়ে বলে উঠলেন সাইদুল মিয়া৷
জুবেদা চুপ করে দরজা থেকে সরে দাঁড়ালেন৷ শ্রাবণ গম্ভীরমুখে ঘরে এসে ঢুকলো। বাবা মায়ের বিছানায় বসে সর্বপ্রথম প্রশ্ন করলো
“আশিক কোথায় মা?

হঠাৎ ছেলের মুখ থেকে এমন প্রশ্ন শুনে অবাক হলো দুজনই। বিস্ময় নিয়েই বললো
“ঘুমাইতাছে। কেন? ওরে দিয়া কি করবি তুই? আর কাউরে কিছু না জানাইয়া হঠাৎ বাড়িই আইলি কেন? শ্রাবণ রেগে গিয়ে বললো
“আমি আসাতে কি তোমাদের কোনো সমস্যা হইছে? আসার পর থেকেই শুধু এক কথা, আসলাম কেন, আসলাম কেন।
ছেলের কথা শুনে জুবেদা চুপ মেরে গেলেন।
কিছুক্ষণ বাদে তিনি বললেন
“হাতমুখ ধুইয়া আয় বাজান, অতটা দূর থেইকা আইলি, নিশ্চয়ই অনেক খিদা লাগছে।
শ্রাবণ আর কোনো কথা না বাড়িয়ে বেরিয়ে গেলো কলপাড়ের দিকে।

সারা বিছানা জুড়ে হাত পা ছুড়ে গড়া গড়ি খাচ্ছে আশিক। যেনো নিজের বাড়ির বিছানাটা সাথে করে এখানে নিয়ে এসেছে। খাটের এক পাশে লম্বালম্বিভাবে বসে আশিকের এমন উদ্ভট ঘুমানোর ধরণ দেখছে শ্রাবণ। প্রতিবারই দুর্ভাগ্য বশত এই আশিকের সাথেই কেন শ্রাবণকে শুতে হয়? যখন ওদের বাড়িতে গিয়েছিলো তখনও ওর সাথেই তার যায়গা হয়েছিলো, আর যখন এখানে এসেছে তখনো ওর সাথেই। মায়ের উপর রাগ হচ্ছে তার। ঘরে কি আর কোনো বিছানা ছিলো না নাকি যে বেছে বেছে এই আশিককে শ্রাবণের রুমেই থাকার যায়গা করে দিতে হয়েছে। আশিক নাক ডাকছে, শ্রাবণের ইচ্ছে করছে একটা লাত্থি দিয়ে ওকে বিছানা থেকে ফেলে দিক। মানবতার খাতিরে লাথিটা দিতে পারছেনা সে।

কয়েক মিনিট রেগেমেগে বসে রইলো সে, ওই আহম্মকের সাথে ঘুমোতে ইচ্ছে করছেনা শ্রাবণের। নিজের চুলগুলোকে বেশ শক্ত করে টেনে ধরে মাথায় চেপে ধরলো শ্রাবণ। এমন সময় কানে এলো শ্রাবণের ঘুমন্ত কন্ঠস্বর। ঘুমিয়ে থেকেও সে বলছে, “পদ্ম, তুমি আন্টিরে মোটেও ভয় পাইও না৷ আমি আছিতো, আন্টির মতো ভয়াবহ মহিলার হাত থেইকা একদিন আমি তোমারে উদ্ধার করমুই করমু। ”
শ্রাবণ অদ্ভুতভাবে তাকালো আশিকের দিকে৷ এবার আর নিজেকে কন্ট্রোল করতে পারলো না সে। ঘুমের মধ্যেও তার পদ্ম’কে নিয়ে টানাটানি করা শুরু করে দিয়েছে এই ছেলে!
শরীরের সমস্ত শক্তি দিয়ে আশিকের পেছন বরাবর একটা লাথি দিলো শ্রাবণ। লাথির জোর এতটাই ছিলো যে আশিক বিছানা থেকে অনেকটা দূরে ছিটকে গিয়ে পরলো মাটিতে।

চলবে….

[রেসপন্স করো না কেন ভাই বোইনেরা🤢🤢 বেশি বেশি রেসপন্স করবা সবাই😘]

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here