ডেন্জারাস_ভিলেন_হাজবেন্ড পর্ব ১৭

#ডেন্জারাস_ভিলেন_হাজবেন্ড

#লেখিকা_তামান্না

#পর্ব_১৭

আবরার ক্যাফের মধ্যে বসে আছে। ভার্সিটির মধ্যে তেমন ব্যস্ততা না থাকায় সে আরামছে তার কাজ করতে পারবে বলে ভেবে নিল।

—“হাই !
কারো মেয়েলী কণ্ঠে আবরার তার দিকে ফিরে তাকায়।

—“হাই আসো বসো।
আবরার সোনিয়ার জন্যে চেয়ার টেনে দে। সোনিয়া চেয়ারে বসে বলে।

—“এতো আপ্যয়ন আমার জন্যে?
সন্দেহ এর নজরে আবরার এর দিকে তাকিয়ে বলে।

—“হ্যাঁ তোমার জন্যেই করেছি তুমি আমাকে আমার আসল ঠিকানা বলবা তো এটুকু তো আমি তোমার জন্যে করতেই পারি তাই না? আড়চোখে সোনিয়ার দিকে তাকিয়ে আবরার বলে।

সোনিয়া ভ্রু কুঁচকে বলে।

—“কোন জালে ফেলানোর চেষ্টা করছো আবরার বেপ্পি।

আবরার তাচ্ছিল্যের হাসি দিয়ে বলে।

—“হাহ জাল আর আমি? তোমার লাগে আমি তোমার জন্যে কোনো ধরনের জাল বিছাতে পারি?

—“নাহ কারণ আমি তো তোমাকে ইনফোরমেশন দেবো।

—“হুম এখন বলো আমার শুভাকাঙ্খী।

—“তাহলে শুনো তোমার দিকে আমি সেই রাত থেকে নজর রাখা শুরু করেছিলাম। এমনকি তুমি আমাদের ভার্সিটির মধ্যে আসবে এরই ব্যবস্থা স্বরুপ আমি তোমাকে স্টোর রুমে যেতে সাহায্য করি। তো তুমি গিয়ে ফাইলস খুঁজো এমনকি পেয়েও যাও কিন্তু আফসোস ফাইলের মধ্যে নামটা আর ছবিটা পাও নাই। সেটার প্রব্লেম নেই আমি দেবো। তোমার থেকে আমাকে শুধু নিজের অর্ধেক প্রপার্টি দিতে হবে। বাকি তোমাকে চেনার কথা সেটা তো তুমি নিজেই নেশার ঘোরে নিজের পরিচয় দিয়ে ছিলে সে রাতে। যে তুমি একটা মেয়ের জন্যে খুব চটফট করতেছো। বাকিটা তো তাহলে বুঝেই নিলে। তাহলে এখন বলো তোমার কি মত?

আবরার কে না দেখেই সোনিয়া কথাটা বলল। কিন্তু আবরার মাথা উচু করে সানগ্লাস পড়ে ছিল। যখনই ফারিজার বেঁচে থাকার কথাটা শুনল। তখন তার চোখজোড়া লাল হয়ে যায়।

সে গম্ভীর কণ্ঠে বলে।

—“হুম তোমাকে তোমার ভাগ দিয়ে দেবো কিন্তু তার আগে বলো ফারিজাকে পাব কোথায়?

—“কোথায় আর পাবে ভার্সিটিতেই পাবে আমি ঠিকানা বলতে পারব না কারণ ঠিকানা আমার কাছে নেই। কিন্তু নামটা অবশ্যই বলতে পারব।

—“নাম কি?

—“তোমার ফারিজা বর্তমানে জারা নামে পরিচিত।

—“তার মানে জ্যাকের বলা আর আমার ধারণা ঠিকিই ছিল জারাই ফারিজা। ব্যস এবার তুমি খুব তাড়াতাড়ি আমার হাতের কাছে এসে কাঁচের জালে বন্দী হবে।(মনে মনে বলে)

সোনিয়া এতোক্ষণ হেঁটে হেঁটে আবরার এর চারপাশ ঘুরে কথাগুলো বলছিল। এখন চেয়ারে বসে বলে।

—“সো আমার কাজ পূরণ করেছি এবার তোমার বলা কথাটা পূরণ করো।

—“অবশ্যই এই নাও।
কফির কাপ সোনিয়ার দিকে এগিয়ে দিয়ে বলে। সোনিয়া কাপটার দিকে দেখে আড়চোখে আবরার এর দিকে তাকিয়ে বলে।

—“একটা কাজ কেন করো না আগে তুমি খাও তারপর আমি খাই।

আবরার বুঝতে পারল সোনিয়া সন্দেহ করছে তাই সে সোনিয়ার বলা মত কাজ করল। কফিটা নিজের মুখে কিছুটা ফুরে সোনিয়া কে দিল। সোনিয়া দেখল আবরারের কিছু হচ্ছে না। সে মুচকি হেসে পুরো কফিটা খেয়ে নে।

আবরার যখন দেখল সোনিয়া কফিটা গিলে ফেলল। তখন সে উঠে ডাস্টবিনের কাছে থুথু ফেলে। সোনিয়া তার দিকে ভ্রু নাঁচিয়ে বলে।

—“তুমি ফেলছো কেনো?

—“দেখলাম বিষটা আমার গলায় দাঁতে কোথাও লেগেছে কিনা।

আবরারে কথাটা শুনে সোনিয়া চোখ বড় করে কাঁপা কাঁপা কণ্ঠে বলে।

—“ব…..বি…..বিষ?

আবরার মুখ মুছে সুন্দর করে চেয়ারে বসে বলে।

—“হুম বেবি তোমার জন্যে স্পেশাল কফি ফোর্ম মি। তুমি উপকার করছো আমার তার জন্যে কফিটা দিলাম কিন্তু বাকি উপকারটা করতে পারলা না।

সোনিয়ার গলা ধীরে ধীরে ফুলতে থাকে।গাল থেকে সাদা ফেনা বের হতে শুরু করে। সে হিচকে বমি করতে থাকে লাগে। তার গলা থেকে বমির সাথে রক্তসহ ফ্লোরে পড়ে। আবরার সানগ্লাস খুলে সোনিয়ার দিকে কিছুটা ঝুঁকে বলে।

—“কেমন লাগছে বেবি? কফিটা জোস হয়ছে!

—“তুমি আমাকে ঠকিয়েছো!

—“উহ তো কি করে ফেলবি? তোর মত মেয়েদের কে আমি হাতের কাছেই রাখি না সেখানে তোর জীবন রাখার কথাই আসে না।
হা..হাহাহা আবরার হাসতে হাসতে টেবিলে রাখা তার কফিটা খেতে থাকে।

সোনিয়া কাঁপা কণ্ঠে ব্যথার যন্ত্রণায় বলে।

—“ভালো করেছি তোমাকে জারার এড্রেসটা না বলে। আপনি তার এড্রেসটা পাবেন না।

আবরার হাসি থামিয়ে চোখ পাঁকিয়ে বলে।

—“কেন তুই থামাবি আমাকে? তুই হাহাহা। নিজেই জিন্দা থেকে মরা লাশ হতে যাচ্ছিস সেখানে আমাকে থামানো তো দূরের কথা।

সোনিয়ার ঠোঁট রক্তাক্ত হয়ে গেল। সে মুচকি হেসে দাঁত কেলিয়ে বলে।

—“যার জন্যে এত দূর পেরিয়ে আসলে তাকে ছাড়াই যেতে হবে আপনার। কারণ সে আগে একা ছিল কিন্তু এখন সে একা নয় তার সাথে তার ছায়া আছে। সে ছায়া কোনো….কোনো অক্ষম ছায়া না, সে ছায়া জারার ভালোবাসার ছায়া। আপনাকে সে ছায়া কখন জারার আশপাশেও যেতে দিবে না।

আবরার সোনিয়ার মুখে এসব কথা শুনে জোরে চড় লাগায়। সোনিয়া চেয়ার থেকে পড়ে জোরে ফ্লোরে মাথায় বারি খাই। কপাল ফেটে রক্তক্ষরণ হয়।

—“আমাকে যুক্তি দেখাস? আবরার সাদি কে! আজ পর্যন্ত কারো সাহস হয় নি আমাকে হারানোর। সেখানে জারাকে নিজের করা তো কোনো ব্যাপারই নাহ। একবার তোকে আমি পেয়ে যায় ফারিজা তারপর দেখবি তোর জীবনটা নরকের চেয়েও খারাপ বানায় দেবো।
রাগে দাঁত কটমট করে আবরার বলে।

জ্যাক আবরারকে ধরতেই তার ধ্যান ফিরল।

—“আবরার আপনি যান আমি লাশের ব্যবস্থা নিচ্ছি।

—“হুম।

সে গাড়িতে বসে ভার্সিটির জন্যে রওনা দিল। সে যেতেই কেউ এসে জ্যাকের মাথায় লাঠি দিয়ে বারি মারে। তৎক্ষণাৎ জ্যাক বেহুঁশ হয়ে যায়। সে বেঁহুশ হতেই যে জ্যাকের মাথায় লাঠি দিয়ে বারি দিল সে মানুষটা সোনিয়াকে উঠিয়ে তার বুকের বাঁপাশে জোরে জোরে চাপ দিয়ে কিছুটা জ্ঞান ফিরানোর চেষ্টা করে।

সোনিয়া হঠাৎ জোরে কেশে উঠে। সে মানুষটাকে দেখে মুচকি হেসে বলে।

—“জানতাম তুমি আমাকে বাঁচাতে আসবে আমার হাজার বারণ করার পরও তুমি এলে। কিন্তু আমি যে আর থাকতে পারব না।

মানুষটার চোখ থেকে অশ্রু গড়িয়ে সোনিয়ার কপালে পড়ল। সে সোনিয়ার কপালে চুমু এঁকে বলে।

—“তুমি থাকবে সদা হৃদয়ে আবদ্ধ।

সোনিয়া তার দিকে পলকহীনভাবে তাকায়।

—“ভুল করে ছিলাম তোমায় ছেড়ে। তবে এবার আর নয় আমার মত অন্য কেউ যেনো এই আবরার নামক নিষ্ঠুর প্রাণীর শিকার না হোক। জারা কে বা…..বা..বাঁচাও। জা…..জারা এর…..শিকার যাতে……না হয়।

—“জারার সাথে আবরার এর সম্পর্ক কি?
লোকটা ভ্রু কুঁচকে বলে।

—“আম….আমার বাসা….বাসায় ড্রয়ারে…..তার…চাচার একটা ডায়েরি আছে। সে….সেটার মধ্যে সব…..রহস্যের কথা লেখা আছে। সেই ডায়েরি টা খুঁজে তাড়াতাড়ি ফায়যানকে দাও নইতো……অনেক দেরি…হয়ে যেতে পার…..রে….
সোনিয়া মানুষটার কোলে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করল।

লোকটা তার চোখের দিকে তাকিয়ে হাত দিয়ে সোনিয়ার চোখজোড়া বন্ধ করে দিল। সোনিয়া ঘুমিয়ে পড়ল। যে ঘুম থেকে আর উঠবে না।
লোকটা নিজের চোখ মুছে সোনিয়াকে ঠিক আগের জায়গা মতো শুয়িয়ে রওনা দিল সোনিয়ার বাসার দিকে।

জ্যাক নিভু নিভু চোখে মাথায় হাত দিয়ে উঠে বসে।

—“আহহহহ ব্যথা লাগছে কেউ জোরে বারি দিছে।
আচমকা তার মনে পড়ে গেল। আরে সত্যিই তো আমাকে কেউ বারি মেরে ছিল। কিন্তু কে সে?
জ্যাক তড়িঘড়ি সোনিয়ার দিকে ঘুরে তাকায় সোনিয়াকে তার জায়গায় দেখে সে এসে আশেপাশে কিছু আছে কিনা খুঁজতে লাগে। তখন তার নজরে ফ্লোরে জুতার চাপ পড়ল। যে দিকে জুতার চাপ দেখল সেখানে আবরার বা সে দাঁড়ায় নি।

জ্যাক জুতার চাপটা দেখে মনে মনে বলে।

—“স্যারকে বলতে হবে! কেউ একজন আমাদের রাস্তার কাটা হতে যাচ্ছে। কেউ তো ছিল এখানে যে অপেক্ষা করছিল স্যার এর চলে যাওয়ার জন্যে। যখন স্যার গেল তখন আমার মাথায় আক্রমণ করে সে সোনিয়ার সাথে কোনো না কোনো ব্যাপারে কথা বলেছে।

জ্যাক সোনিয়ার পার্লস চেক করে চোখ ঘুরিয়ে বলে।
—“শালি মরে গেছস তো গেছস কিছুটা সুবিধা ভোগ করার উপায়ও বলে যেতি।

জ্যাক গার্ডস কে ডেকে সোনিয়ার লাশ উঠাতে বলে আর ফ্লোরটা ক্লিন করতে বলে মেইডদের।
সবাই জ্যাকের কথামত সে জায়গা নিট এন্ড ক্লিন করে ফেলে।

________________

ভার্সিটির মধ্যে আবরার ক্লাস করিয়ে জারাকে খুঁজছে কিন্তু কোথাও তার কোনো খুঁজ নেই। ক্লাসের বাহির থেকে আবরার মেহরান কে দেখে কিছুটা অবাক হয় তার হাত শরীরের করুণ অবস্থা দেখে বাকি স্টুডেন্টস খুব চিতকারি করতে থাকে। এমনকি সাহেল আয়শাও তার থেকে আলাদা হয়ে বসে আছে।

—“হেই আয়শা দেখছস যে মেয়ে নিজের বোনের কদর করতে পারে নাহ সে আবার এটিটিউট মারে।

সাহেল হেসে হেস মেহরানের দিকে তাকিয়ে কথাটা বলে। মেহরানের খুব গিলটি ফিল হচ্ছে সে আজ পর্যন্ত জারার সাথে যা করল সেরকম কান্ড আজ তার সাথে হচ্ছে।

প্রিয়া সবার চিতকারি দেখে মেহরানের পাশে গিয়ে বসে। মেহরান আড়চোখে প্রিয়াকে দেখে মুখ ফিরিয়ে নে। তার চোখে জল স্পষ্টভাবে দেখতে পেল প্রিয়া।
সবাই প্রিয়াকে মেহরানের সাথে কথা বলতে দেখে অবাক হয়ে তাকায়।

একজন মেয়ে প্রিয়ার কাছে এসে বলে।

—“আরে তুই এই ডাইনি মেয়ের পাশি কেন বসেছিস? মেয়েটা সবাই কে শুধু খেতে জানে। তোকেও খেয়ে ফেলবে চল আমাদের সাথে।

প্রিয়া রাগান্বিত চোখে মেয়েটার দিকে তাকিয়ে বসা থেকে উঠে দাঁড়িয়ে বলে।

—“আপনাদের সমস্যা কি? এইরকম কেন করছেন মেহরানের সাথে। একটা মেয়েকে কিভাবে সম্মান দিতে হবে তা তো আপনাদের মধ্যে থাকে না উল্টা যখন যার সাথে কিছু একটা হবে তখন সে বিষয় নিয়ে হাসি চিতকারি করতে থাকেন। আরে এরকম অবস্থা তো জারার সাথে ও করতো মেহরান। তখনও আপনাদের মুখ বন্ধ হয় নি। তখন তো আপনারা বেচারি জারাকে ইনস্লাট আর মেহরানের জয় জয় কার করতেন। আর এখন জারা নিম্নমান থেকে উচ্চমান হওয়ায় আপনারা ভালো সাজছেন। আপনাদের ভালো মাই ফুট!

সবাইকে রাগ দেখিয়ে প্রিয়া বেরিয়ে যায়। আবরার প্রিয়াকে দেখে ভাবান্তর হয়ে গেল। এই মেয়েকে তো কোথায় জানি দেখেছিলাম! কোথায় দেখেছি? গালে হাত রেখে ভাবতে থাকে। ওহ হ্যাঁ এ মেয়েকে তো ঐদিন আরেকটা মেয়ের সাথে বসা দেখছিলাম। সবার পরিচয় নেওয়া হয়ছিল কিন্তু সবার মাঝে জারার পরিচয় পাই নাই আর এই মেয়েটার। ভালোই এর থেকেই হয়তো আমার রাস্তার বাকি অর্ধেক কথা জানতে পারব।

আবরার ডেভিল স্মাইল দিয়ে প্রিয়ার পিছু নে।

______________

জারা কয়দিন বেড রেস্ট নিবে তাই সে ভার্সিটিতে যাবে না। কথাটা ফায়যান ভার্সিটির সবাইকে জানায় দে।
রুমে জারা শাড়ির আঁচল লাগানোর চেষ্টা করছে। কিন্তু পারছে না।

ফায়যান অফিস গিয়ে ছিল কিছুক্ষণ পরই এলো। তার আসতেই বাসার মেইডস লান্সের ব্যবস্থা শুরু করে
সে এসে মেইডস এর দিকে তাকিয়ে বলে।

—“খাবার নিয়ে আমার রুমে আসেন কুইক!

ফায়যান রুমের দরজা খুলা দেখে আস্তে আস্তে ভেতরে এসে উঁকি মেরে দেখে। জারা ব্লাউজ পড়ে আছে আর শাড়ির আঁচল ঠিক করার চেষ্টা করছে। ফায়যান এসে তার ঘাড়ে ডিপলি কিস করল। জারা তার ভালোবাসার স্পর্শ পেয়ে মুচকি হেসে বলে।

—“আপনি এসে গেলেন?

—“না আসলে কি তোমাকে ভূতে কিস করছে?

—“হুম মাঝে মাঝে তাই লাগে। যে আমি কোনো ভূতের সাথে বিয়ে করলাম কিনা? হিহিহি টেডি স্মাইর দিল।

ফায়যান চোখজোড়া সরু করে জারার শাড়ির আঁচল বাঁধতে বাঁধতে বলে।

—“কেন এমন কেন লাগে?

—“আপনি অনেক আজব টাইপ তাই! আপনার রুমের পাশে একটা গোপিয়া কাজানার মত দরজা আছে। যেটার পিছে মনে হয় অনেক গুপ্তচর কিছু লুকিয়ে আছে।

ফায়যান শাড়ি বেঁধে দিল তবে জারার মুখে সেই রুমের কথাটা শুনে আচমকা তার হাত কাঁপতে শুরু করে।
জারা আয়নার মধ্যে ফায়যানের চেহারা দেখে অবাক হলো। তার চেহারায় কিছু একটা নিয়ে ভয়ের আশংকা দেখা গেল। সে ফায়যানের হাত ধরে তাকে নিজের পাশে বসিয়ে বলে।

—“কি হয়েছে? তোমার মুখের মধ্যে ভয় কেন দেখা যাচ্ছে!

—“ক….কি…কই….আমার চেহারায় ক্লান্তি….দেখা যাচ্ছে তেমন কিছু না।
ফায়যান হাসির চেষ্টা করে বাহানা খুঁজছে কোনো ভাবে জারা যেনো সেই কথাটা ভুলে যাক।

—“মিথ্যে কেন বলছো? আমি কি তোমাকে ফিল করতে পারি নাহ?

—“আমি মিথ্যা কেন বলব। তুমিও না কি না কি ভাবো! ঐ রুমে যেও না আর কখনো বুঝছো? ওইটা আমার এক্সেসাইজের রুম।
জারা মুচকি হেসে ওকে বলে।
ফায়যান হুট করে জারাকে কোলে নিয়ে তখন মেইড রুমে এসে নক করে। দরজা খুলা ছিল মেইড তাদেরকে সেভাবে দেখে মুচকি হেসে নিচে তাকায়। জারা ফায়যানকে ফিসফিসিয়ে বলে।

—“আমাকে নিচে নামাও !

—“কেন তুমি কোলে। তাতে কি ?

—“আরে নির্লজ্জ নাকি সামনে আপু দাঁড়ানো আর তুমি কিনা!
রাগে ফুলে জারা বলে।

—“আপু খাবার টেবিলে রেখে দরজা বন্ধ করে যাও।
বউ এর সাথে কিছু পার্সোনাল কাজ করব।
দুষ্টুমি বুদ্ধি এঁটে জারার দিকে শয়তানি হাসি দে।

জারা ফায়যানের এমন চট জবাবে চোখজোড়া গোল করে হা করে তাকায়। ফায়যান তো ভারি মজা নিচ্ছে। মেইড চলে যায় দরজা বন্ধ করে। সে জারার দিকে তাকিয়ে দেখে। জারা হা করে তার তাকিয়ে ছিল।

ফায়যান ও আর দেরি করল কই? ছটজলদি নিজের ঠোঁটজোড়া জারার কমল গোলাপী ঠোঁটের সাথে মিশিয়ে নে।জারা বেচারি হকচকিয়ে চোখজোড়া বের করে ফেলার মত ফায়যানের দিকে তাকায়। কিন্তু ফায়যান তো চুমু খেতেই ব্যস্ত হয়ে পড়ে। সে জারা কে সে অবস্থায় সোফায় নিয়ে তার হাটুতে বসায়। পাঁচ সেকেন্ড পর ফায়যান জারার ঠোঁটজোড়া ছেড়ে বলে।

—“তুমি যখনি হা করে আমার দিকে তাকাও মন চাই তোমার ঠোঁটজোড়া খেয়েই ফেলি। বাই দ্যা ওয়ে এখানে আমার হাটুর উপরই বসে থাকবা আর খাবারের লোকমা উঠিয়ে আমাকেও খাওয়ায় দাও আমিও তোমাকে খাওয়ায় দেই।

জারা ফায়যানের কথামত কাজ করে।

এভাবে কয়দিন পেরিয়ে যায়। জারা পুরোপুরি সুস্থ হয়ে যায়। ডাক্তার দেখানোর পর তিনি জানায়। বেশি টেক কেয়ারের কারণে আলহামদুলিল্লাহ জারা আজ সুস্থ হয়ে উঠেছে। উনি এখন ঠিকভাবে হাঁটতে পারবে।

ফায়যান শুনে এক দীর্ঘশ্বাস ফেলে জারাকে জড়িয়ে নে। জারাও খুশি হয়ে তাকে শক্ত করে চেপে ধরে।

বাসায় এসে ফায়যান জারাকে নিয়ে রুমে যেতে লাগলে জারা তাকে থামিয়ে বলে। আজ রান্না সে করবে। ফায়যানও সম্মতি দিল।

জারা কাজ করছে ঠিকিই কিন্তু তার মনের মধ্যে হাজারো প্রশ্নের বর্ণনা বয়ে যাচ্ছে।

—“কাল থেকে ভার্সিটিতে যাব। না জানে কোন সময় জানোয়ারের সামনে পড়ি। কিন্তু সে কি এই এলাকার মধ্যেই আছে নাকি অন্য এলাকায়। ঠিক তো নিজেই জানি নাহ্! না আমি কেনো ভয় পাবো আমার সাথে আমার ফায়যান আছে। তবে সে কি আমাকে মেনে নিবে আমার অতীত জানার পর?

জারা ভাবান্তর হওয়ায় হঠাৎ করেই……….

…………চলবে……….

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here