তুমি_আমার_অধিকার🍂 পর্ব ১০+১১

#তুমি_আমার_অধিকার🍂
#লেখক_সাব্বির আহাম্মেদ
#পার্টঃ10

( দুঃখিত গল্প দিতে দেরি করার জন্য..) 😢

সবাই চিন্তিত অন্তী আসছে না দেখে । ডাইভারকে বলে নিলয় বাসটা থামিয়ে রেখেছে.. .

ডাইভারঃ- ভাই আর কতক্ষণ ওয়েট করবো মেলা দেরি হয়ে যাচ্ছে তো ।

দূর থেকে দেখা যাচ্ছে কেউ একজন খুব জোড়ে দৌড়ে আসছে
_ বাসের সামনে এসে অন্তী হাফাচ্ছে নিলয় রাগান্তিত স্বরে বললো এতো ঢং না করে, বাসে উঠো জলদি আজাইরা..!

নিলয়ের ধমক শুনে অন্তী হন্তদন্তে হয়ে বাসে উঠলো
সবাই এখন খুশি । অন্তী গিয়ে অথৈয়ের পাশের সিটে বসলো কারণ নিলয়ের সাথে আবির বসেছে । তাদের পিছনের সিটে মনির আর তার বউ বসেছে ।
অথৈ আর অন্তী একসাথে বসেছে ।

অথৈঃ- কিরে তর আসতে এতো দেরি হয়েছে কেনো?? কি করছিলি তুই আরেকটু হলে তো বাস ছেড়ে দিতো??
অন্তীঃ- ছেড়ে দিলে দিতো, যেতাম না হুহু ( রাগী স্বরে)

অথৈঃ- বাবা এতো দেখছি জ্বালে ভরা । তবে অথৈ অন্তীর ব্যাপারটা বুজতে পারলো ।

_ নিলয় অন্তীর সাথে বসে নাই দেখে সে রেগে আছে । অথৈ আবিরকে ইশারা দিয়ে সব বুজিয়ে দিলো । আবির সব বুজতে পেরে.. নিলয় আমি একটু উঠলাম অথৈ আমায় ডাকছে?? এই অন্তী তুমি এইখানে আসো । অন্তী তো লাফ মেরে এসে নিলয়ের সাথে বসলো । নিলয় অন্তীকে দেখে না দেখার ভান করে জানালার দিকে চেয়ে রইলো ।

একটু আগে আকাশটা পরিষ্কার ছিলো হঠৎা করে মেঘ জমে পুরো আকাশ কালো হয়ে গেলো । (এই যেনো মনে হচ্ছে আকাশটা আজ কালো রেশমি শাড়ি পড়েছে❤)

গুটি গুটি বৃষ্টিও পড়ছে
যাক এইরকম ওয়েদার কার না দেখতে ভালো লাগে ।
অন্তীঃ- এহ্হমমম ( কাশি স্বরে)
নিলয়ঃ- একটু তাকিয়ে আবার আকাশ দেখাতে ব্যস্ত হয়ে পড়লো ।

_ অনেক্ষণ ধরে অন্তীর কর্মকান্ডে দেখে নিলয়ের হাসি পেলো এইবার । থামো আর কাহিনি করতে হবে না । তারপর বলো এতো দেরি হলো কেনো আসতে??

অন্তীঃ- ঘুমায়ছিলাম ( ন্যাকামির স্বরে)
নিলয়ঃ- ওহ আচ্ছা ভালো ।

এইবার আকাশ ফেটে বৃষ্টি নামা শুরু করলো । অন্তী বলে উঠলো আমার খুব ঘুম পাচ্ছে এ কথা বলতে না বলতেই নিলয়ের কাধে অন্তী মাথা রেখে ঘুমিয়ে পড়লো । নিলয়ের অবাক হওয়া ছাড়া কিছু নেই । প্রথমে ভাবলো অন্তীর মাথাটা উঠিয়ে দিবে । তারপর কি যেনো ভেবে আর উঠালো না ।

__ একটু তো অধিকার দেওয়া যায় তাকে!!

অন্তী মিটমিট করে আড়াচোখে তাকালো নিলয়ের দিকে না ।
নিলয় কিছু বলছে না । ভালো তো সে নিলয়কে আরো শক্ত করে ধরে ঘুমিয়ে পড়লো ।

দীর্ঘ 7/8 ঘন্টা জার্নি করার পর কক্সবাজার এসে পড়লো তারা ।
হোটেল আগে থেকে বুকিং করা ছিলো তাই সোজা হোটেল এসে পড়লো ত। ম্যানাজার তাদের রুম দেখিয়ে দিয়ে‌ গেলো । আপতত অথৈ আর অন্তী এক রুমে থাকবে নিলয় আবির একসাথে । মনির আর তার বউ একসাথে । নিলয় সবাইকে ফ্রেশ হয়ে রেস্ট নিতে বললো ।

পরের দিন ঘুরতে বের হবে তারা ।
**
**

**

এইবার চলুন নিরার দিকে ফোকাস করি,

নিরা আর হদয় একদিন আগে চলে আসলো হোটেলে । নিরা এখনো হদয়ের আসল মতলবটা টের পায় নি ।

সমুদ্রের ধারে হাত ধরে হাটছে নিরা আর হদয় । এইদিকে হদয়ের বন্ধুরা নিরার গহনাঘাটি কোথায় রাখছে খুজে পাচ্ছে না । হদয় হাসি হাসি ভাব নিয়ে নিরার দিকে তাকিয়ে মনে মনে বললো, আরেকদিন যাক তারপর বুজতে পারবে মামুনি আমি কি চিজ,

নিরাঃ- কি এতো ভাবছো হদয়, দেখো আজকের দিনটা কত সুন্দর । আকাশে মেঘেরা লুকোচুরি খেলছে আর নিচে সমুদ্রের পানি ঢেউ হয়ে লুকোচুরি খেলছে । হদয় শুধু নিরার কথায় তাল মিলাচ্ছে তার মনটা পড়েছে রুমে……

হদয়ের বন্ধু নিরব কল দিলো..
হ্যালো..
আরে বেটা মাল গুলো কোথায় রাখছে খুজে পাচ্ছি না তো ।
হদয় রাগের স্বরে বললো আরে সালা ভালো করে খুজ । ভালো সুযোগ করে দিয়েছি তোদের । খুজে না পেলে একেকটাকে জ্যান্ত রাখবো না আমি???

_ আচ্ছা শুন তুই নিরা তো তোর সাথে আছে, একটু কৌশলে তার কাছ থেকে জেনে নেয়??
হদয়:- ভালো আইডিয়া তো দাড়া আমি জেনে নিয়ে নিজে আসছি.

হদয় নিরার কাছ থেকে কৌশলে সব জেনে, আচ্ছা নিরা আমার খুব জোর পেয়েছে আমি আসি..
নিরাঃ- কিহ এমন সময় তুমার বাথরুম পেয়েছে হা হা যাও যাও জলদি আসো..
-আচ্ছা সরি হুম তুমি একটু অপেক্ষা করো আমি এই যাবো আর আসবো..
নিরাঃ- আরে তাড়াহুড়ার কিছু নেই তুমি যাও আমি একটু একা ঘুরবো !! তুমার আসতে হবে না!!
হদয় তো মহা খুশি, সে আর একমূহর্ত দেরি না করে হোটেলের দিকে হাটা শুরু করলো ।

অপর দিকে, খুব সকালে অন্তী সবাইকে উঠিয়ে দিলো সে আর এক মূহর্ত থাকতে পারছে না । ঘুরতে যাবে??

আবির অথৈ মনির সবাই ফ্রেশ হয়ে চলে আসলো । এইবার নিলয়ের কেনো খবর নেই উঠার । অন্তী রেগে নিলয়ের রুমে ডুকলো । ডুকে দেখলো মহাশয় এখনো ঘুমিয়ে আছে দাড়াও দেখাচ্ছি মজা, এক গ্লাস পানি নিয়ে এসে নিলয়ের প্যান্টের ওপর ঢেলে দিলো,

নিলয়ঃ- নিলয় লাফ দিয়ে উঠে এইইইইইইইইই কে রে… কে এ কাজ করলো আমার স্বাধের প্যান্টটা ভিজিয়ে দিলো কে ??
অন্তী আর দেরি না করে সেখান থেকে ভৌ দৌড় দিলো!! সবাই সেকি হাসি । হা হা হা‌😂😂😂 ( আমিও এই জায়গা লিখতে অনেক হাসছি 😁😂😂😂)

সবাই বেরিয়ে পড়লো অন্তী নিলয়ের হাত ধরার চেষ্টা করছে বারবার নিলয় সেটা খেয়াল করে বুকে হাত বেধে হাটা শুরু করলো । অন্তী খুব রেগে গেলো নিলয়ের এমন কাহিনি দেখে!! অনেকক্ষণ ঘুরাঘুরির পর নিলয় আবির অথৈ মনির সবাই বসলো চেয়ারে অন্তী বসলো না । সে পানিতে ছুটাছুটি করছে । নিলয় আর তাকে আটকালো না । অব্যশই তারও ভালো লাগে অন্তীর এমন পাগলামি গুলো ।
নিলয়ের মনে আস্তে আস্তে অন্তীর জন্য ভালোবাসা জন্মছে ।

_ নিরা ঘুরতে ঘুরতে নিলয়রা যেখানে বসেছিলো । সেখানে চলে আসলো ।

নিলয় তো পুরা টাস্কি খেয়ে আছে নিরাকে দেখে । নিরাও যে অবাক হয়ছে তা না সেও অবাক হয়েছে । ভাবতে পারিনি তাদের এইভাবে দেখা হবে । নিরা কিছুক্ষণ দূরে থাকিয়ে নিলয়ের কাছে আসলো?? আবির কিছু বলতে যাবে নিলয় তাকে থামিয়ে দিলো ।

নিরাঃ- কি ব্যাপার সদলবদল নিয়ে একবারে আমি যেখানে আসছি সেখানেই আসতে হলো আপনাকে আর কোথাও যাওয়ার জায়গায় নেই ??
এতোক্ষণ অন্তী পানিতে ছুটাছুটি করছে । নিলয়ের সামনে একটা মেয়েকে দেখে সে ছুটে আসলো ।

অন্তীঃ- কি হয়েছে কি এইখানে । আর এই মেয়ে তুমি কে??

নিরাঃ- তার আগে বলো তুমি কে?? আমাদের মাঝখানে উড়ে আসলা‌ কেনো!!

অন্তীঃ- আমি যেইই হইই না কেনো । তাতে তুমার কি?
নিরা অন্তীর কথায় কান না দিয়ে নিলয়কে আবার সেই কথা গুলো বললো ।

অন্তী এইবার নিজেকে কন্টোল করতে পারলো না । এই মেয়ে তুমার সাহস কি করে হু । আমার সামনে আমার ভালোবাসার মানুষটিকে এমন কথা বলার । তুমি কোন অধিকারে তাকে এই কথা গুলো বলছো । তাকে তো তুমি কেনো অধিকার দেও নি । তাহলে কোন অধিকারে কথা গুলো তাকে কথাগুলো বলছো হু
তারপর অন্তী এক এক করে নিলয়ের সাথে কি কি হয়েছে সব বললো ।

– ফারদার যদি আমি তুমাকে নিলয়ের আশে পাশে দেখি তুমার খবর আছে??

_ নিরা রেগেমেগে সেখান থেকে চলে আসলো । তবে নিলয়ের বিষয়টা তার মনে একটু খারাপ লেগেছে ।

পরে সে ব্যাপারটা সাধারণ ভেবে উড়িয়ে দিলো…
অন্তীর এমন কাহিনি দেখে নিলয় আবির অথৈ সবাই হতবাক.

অথৈঃ- কি মেম এতো ভালোবাসা কোথার থেকে আসলো আপনার মনে হুম?? অথৈয়ের কথা শুনে অন্তী লজ্জায় হোটেলের দিকে দৌড় দিলো ।

_ সবাই হো হো হো করে হেসে উঠলো..

নিরা রেগে মেগে হোটেলে আসলো । হদয় নিরার এমন হাবভাব দেখে জিজ্ঞাসা‌ করলো কি হয়েছে ।

নিরাঃ- কিছু না বললো এই বলে সে শুয়ে পড়লো ।

আর এইদিকে হদয়ও তার বন্ধুরা তাদের কাজটা সেরে ফেললো। আজ রাতটা কেনোমতে কাটিয়ে দিয়ে কাল খুব ভোরে উঠে চম্পট দিবে!!

– আসলে হদয়রা সংঙ্গবদ্ধ প্রতারক ।

বড়লোকের সুন্দরী মেয়েদের‌ প্রেমের জালে ফাসিয়ে তাদের থেকে অর্থ সম্পদ হাতিয়ে নেওয়া হলো তাদের পেশা । নিরাও তার জালে ফাসছে । তবে নিরাকে ফাসাতে তার অনেক কাঠখড় পুড়তে হয়েছে । সত্যি সত্যি ভালোবাসার অভিনয় করতে হয়েছে । যাক আর কিছু না ভেবে রিলাক্স মুডে শুয়ে পড়লো সে ।

খুব ভোরে উঠে হদয় আর তার সাথীরা চম্পট দিলো । আগে থেকে সবকিছু ব্যবস্থা করে রাখা হয়েছে । হদয় নিরার জন্য একটা চিরকুট লিখে টেবিলে রেখে দিলো ।

নিরার সকাল আটটার দিকে ঘুম ভাঙ্গলো, চোখ কচলাতে কচলাতে দেখলো তার পাশে হদয় নেই । সে ভাবলো হয়তো বাথরুমে‌ গেছে । অনেকক্ষণ ওয়েট কর পর দেখলো হদয়ের কেনো পাওা নেই । এইবার সে ভয় পেয়ে গেলো । আজকে তাদের বিয়ে করার কথা ছিলো ।

একটু পর তার খেয়াল আসলো সে তো আসতে বেশ টাকা আর গহনাঘাটি নিয়ে এসেছে । তার ব্যাগ খুলতে সে দেখে তার ব্যাগ ফাকা । সে খুব চিৎকার দিয়ে উঠে । হোটেলের কর্মচারীরা দৌড়ে এসে..

ম্যাম এনিথিং রং…..
নিরাঃ- নো আমার কিছু হয় নি যাও এখান থেকে । নিরা দৌড়ে হোটেলের বাহিরে গেলো হদয় কি তার টিকিটাও খুজে পেলো না । পাবে কি করে হদয় তো আগেই সবকিছু নিয়ে চম্পট দিয়েছে । রুমে এসে দেখলো টেবিলের ওপর একটা চিরকুট ।

সেখানে লিখা, হাই বেবি “” খুব শকড হয়ে আছো তাই না । খুব বেগ পেতে হয়েছে তুমাকে পটাতে তবে ব্যাপার না আবার দেখা হবে আমাদের?? নিরা চিরকুটটা ছিড়ে ফেললো ।
সে হদয়ের নাম্বারের কল দিলো নাম্বারটা বন্ধ পেলো।

এইদিকে নিলয়দের আজকে যাওয়ার পালা । সবাই ব্যাগপএ গুছিয়ে রেডি হয়ে নিলো ।

– বাস ছেড়ে দিবে একটু পর..

এইবার বাসে অন্তী সবার আগে উঠে পড়লো । অথৈ অন্তীর পাশে বসতে যেতেই অন্তী তাকে উঠিয়ে দিলো সে হাত দিতে সিটটা ধরে রাখলো নিলয়ের জন্য ।

_নিলয় বাসে উঠে অন্তীর পাশ কাটিয়ে অপর সিটে বসতে যেতেই অন্তী পিছন থেকে টান মেরে নিলয়কে তার সিটে বসিয়ে দিলো ।

উঠার চেষ্টা করলে সবার সামনে কিস দিয়ে দিবো..
নিলয় বলে উঠলো – কি সাংঘাতিক মেয়েরে বাবা..
অন্তী হো হো করে হেসে উঠলো…

_ নিরা কেনো মতে বাসায় আসলো সে তার প্রতিটি কাজের জন্য অনুশোচনা করতে লাগলো সে তার ফোনটা বের করে নিলয়ের নাম্বারে কল দিলো…
#তুমি_আমার_অধিকার🍂
#লেখক_সাব্বির আহাম্মেদ
#পার্টঃ11

সব কিছু ঠিক আগের মতো চলতে থাকলো নিলয়ের । নিলয়ের বাবা মা এখন আর তাদের ছেলেকে বিয়ে করার চাপ দিচ্ছে না । নিলয়ের ভবিষৎতের সিধান্ত নিলয়ের ওপর ছেড়ে দিয়েছে । সব কিছু ভালোই চলছে । শুধু একজনের ছাড়া । সে হলো নিরা..

_ নিরা বাসা এসে ছন্নছাড়া হয়ে গেছে । একা থাকলে খুব কান্নাকাটি করে । নিজের ভুলের জন্য সে অনুতপ্ত । সে জেনে বুজে নিলয়কে খুব কষ্ট দিয়ে ফেলছে । এটা ভাবতেই তার কান্না আসে । নিলয় কি তাকে মেনে নিবে । সে তো তার অধিকারটুকু কেড়ে নিয়েছে । হদয়ের চরিএ সম্পর্ক কিছুই জানতো না আগে? তবে বার দুয়েক একজনের কাছ থেকে শুনছিলো হদয়ের ব্যাপারে তবে সে এগুলো পাওা দেই নি ।

_ নিরা এই অবস্থা দেখে, নিরার বাবা মা খুব চিন্তায় পড়ে গেছে ।

নিরার মাঃ- এই শুনছো আমি কি বলি মেয়েটা তো আমাদের চোখের সামনে শেষ হয়ে যাচ্ছে?? আমরা তো আমাদের মেয়েটাকে এইভাবে শেষ হতে দিতে পারি না তাই না । তুমি কিছু একটা করো??

নিরার বাবাঃ- হুম- আমিও তাই ভাবছি । যত যাইই করুক সে তো আমার মেয়ে । তার সুখের জন্য আমি সব কিছু করতে পারি । আমি কালকে সকালে নিলয়ের বাবা মার সাথে কথা বলবো ।

পরের দিন..

নিরার বাবা মা নিলয়দের বাসায় আসলো । কুশল বিনিময়ে শেষ করে তারা নিরার ব্যাপারে সব কিছু বললো আর যা হয়েছে । তা ভুলে মিটমাট করে নিতে বললো ।

নিলয়ের আম্মুঃ- ভাবী আপনারা যেভাবে বলছে এটা সস্তা না. আমরা ছেলেটা আমাদের ভুলের জন্য মৃত্যুর কাছ থেকে বেচে ফিরেছে আল্লাহর শুকরে । আর আপনারা কিভাবে পারেন আবার সেই প্রস্তাব নিয়ে আসতে ।

নিলয়ের আব্বুঃ- দেখুন আপনারা যাইই বলেন । এখন আমরা কিছু করতে পারবো না । আর আপনারা প্রথম থেকে আমাদের কাছ থেকে অনেক কিছু লুকিয়েছেন । দ্বিতীয় বার আপনাদের কিভাবে বিশ্বাস করতে পারি হুম…

নিলয়ের আম্মুঃ- এখন থেকে আমার ছেলের ভবিষৎতের সিধান্ত সে নিজে নিবে । আপনারা প্লিজ এখন আসুন ।

নিরার বাবা মা চলে আসলো নিলয়দের বাসায় থেকে,সব কিছু তাদের জন্য হয়েছে । তারা যদি ওই সময়ে সব কিছু না লুকিয়ে বলে দিতো তাহলে এতো কিছু হতো না ।

নিলয় অফিস শেষ করে, নদীর ধারে বসে আছে । এই দুই দিন অন্তী তার ফুফীর বাসায় গেছে অনেক জোড় করে অন্তীকে যখন নিতে পারছে না । তখন অগত্য নিলয় অন্তীকে বলে পাঠিয়েছে । একা বসে আছে ।

_ হঠৎা কোথার থেকে ধুম করে নিরা এসে পড়েছে…

পাগলের মতো সে বলা শুরু করছে..

নিলয় প্লিজ আমাকে ক্ষমা করে দেও । আমি আমার ভুলের জন্য অনুতপ্ত । আমি‌ এখন বুজতে পারছি । আমাকে একটিবার ক্ষমা করে দিয়ে তুমাকে ভালোবাসার সেই অধিকার টুকু দেও প্লিজ ।

_ নিলয় হতভম্ব হয়ে নিরার কথা গুলো শুনলো । তবে সে স্বাভাবিক বললো, দেখেন আপনার সাথে আমার যা সম্পর্ক ছিলো সব শেষ এখন । আর সম্পর্কটা আপনি শেষ করেছেন.

আপনি আমার থেকে মুক্তি পেতে চেয়েছেন । বিয়ের সেই প্রথম থেকে আমাকে আপনি একটু ভালোবাসার অধিকার দেন নি । আর এখন কি হলো আপনার অধিকার দেওয়ার জন্য একবারে আমার দরজায় কড়া নাড়ছেন হুম…

_ নিলয় একটু বুজার চেষ্টা করো । আমি তুমাকে এখন ভালোবাসি ।

_ আপনি সময় নেন । আর আমাকে ভুলে যান । আমার মনে এখন অন্য কেউ আছে । আমাকে ভালোবাসার সব অধিকার সে অর্জন করে নিয়েছে । যেটা আপনি পেয়েও হারালেন একটা প্রবাদ আছে । ( যে পায় সে হারায় তার মূখর্তার জন্য । আর যে মূল্য বুজে সে বছরের পর বছর অপেক্ষা করে সেটা পাওয়ার জন্য) আপনি ও ঠিক তেমন!!

_ বাই দ্যা ওয়ে আমি এখন চলি । আর কখনো আমার সামনে আসার চেষ্টা করবেন না । এতে অন্তী মাইন্ড করবে!!

নিলয় চলে যাওয়াতে নিরা , খুব জোরে চিৎকার দিয়ে কান্না করতে শুরু করলো । আশে পাশের মানুষ তার তামাশা দেখছে । আর কেউ তো মিটিমিটি হাসছে । বাসায় চলে গেলো নিরা ।

এই কয়েক দিন নিরা নিলয়ের পিছনে সারাক্ষন আঠার মতো লেগে রয়েছে । সে বাসা থেকে বের হলে পিছু পিছু যেতো নিলয়ের অফিসও ঘন্টার পর ঘন্টা বসে থাকতো । তবুও কাজ হচ্ছে না ।

_ এইদিকে অন্তী অথৈর মাধ্যমে সব জানতে পারলো । সে আজই রাওয়ান দিলো । কারণ তার নিলয়কে সে কারো হাতে দিবে এই বোকামি সে আর করবে না । সে তার অধিকার কিভাবে আদায় করতে হয় তা শিখে গেছে ।

_ পরের‌ দিন আবারও নিরা নিলয়ের সামনে আসলো

কি ব্যাপার আপনাকে না করছি না । আপনি তারপরও এখানে আসলেন যে!!

নিরাঃ- কি করবো আমি তো তুমায় ভুলতে পারছি না । প্লিজ একটিবার আমায় মাফ করে দেও ।
নিলয়ঃ- সেটা সম্ভব না । যে একবার বিশ্বাস ভেঙ্গে ফেলে সে যতই বিশ্বাসের কথা বলুক তখন আর গ্রহণযোগ্য হয় না ।

এতোক্ষন দূর থেকে নিলয় আর নিরা কথা গুলো শুনছে এইবার সে নিরা আর নিলয়ের সামনে এসে পড়লো । অচমকা অন্তীর এই আগমন দেখে নিরা আর নিলয় হকচকিয়ে গেলো । অন্তী যে একা এসেছে তা না আবির অথৈ এসেছে ।

– তারা এইবার নিলয় কে ওই কালসাপের কাছে কিছুতে দিবে না ।

এইবার অন্তী রেগে মেগে বলা শুরু করলো এই মেয়ে তুমাকে না করছি নিলয়ের সামনে না আসতে । তারপর ও কেনো আসছো । হুহ….

নিরাঃ- তুমি কে?? আমাদের মাঝখানে কেনো আসলা । এটা আমার নিলয়ের পার্সোনাল বিষয় । আমাদের মাঝে ভুলবোজাবুজি হয়েছে তা আমরা মিটে নিবে তুমি নাক গলাতে এসে না আবার ।

এইবার অন্তী নিজেকে কোনো মতে কন্টোল করে নিলয়কে বললো তাকে বলবা এখান থেকে যেতে নয়তো আমার কিছু একটা করে ফেলবো ।

নিলয়ঃ- অন্তী তুমি এখন থেকে যাও ।
অন্তীঃ- কি বলছো তুমি । আমি যাবো কেনো সে যাবে ।
নিলয়ঃ- আমি তোমাকে যেতে বলছি । কথা কানে ঢুকে না যাও ।

_ নিলয় যখন অন্তীকে কথা গুলো বলছে নিরা মিটিমিটি হাসছে ।

আবির অথৈ তো সবাই অবাক নিলয়ের কাহিনি দেখে
আবিরঃ- কি করছিস তুই । মাথা ঠিক আছে তর..

নিলয়ের কথা শুনে অন্তী আর সেখানে থাকতে পারলো না । কান্না করতে সেখান থেকে চলে গেলো । আর ভাবতে থাকলো নিলয় কি তাকে ভালোবাসে না । আবার ওই‌ নিরার কাছে ফিরে যাবে?? এটা ভাবতেই কান্না করতে থাকলো ।

আবির আর অথৈ রাগ করে চলে গেলো সেখান থেকে ।

নিলয়ঃ-এখন আজকের পর থেকে আবার যদি আপনি আমার সামনে আসনে তাহলে খুব খারাপ হবে ।

নিরাঃ- আমি জানি তুমি এখনো আমায় ভালোবাসো।
নিলয়ঃ- জি না আমাদের ডিভোর্স পেপারে অতি শীঘ্রই পেয়ে যাবেন । বায়

নিরা অবাক হয়ে সেখানে দাড়িয়ে রইলো সে ভাবছে কি আর হলো কি?? সে তো ভাবছে নিলয় তাকে ভালোবাসে । অথচ তাকে মুক্ত করে দিবে সেই কথা ভাবছে নিলয় । এই‌কথা ভাবতেই নিরার চোখে অশ্রু ঝড়ছে ।

এইদিকে নিলয় খুব কষ্ট পাচ্ছে অন্তীর জন্য বেচারি মেয়েটা শুধু কষ্ট ছাড়া আর কিছুই পাচ্ছে না, তার কাছ থেকে ।
না মেয়েটাকে এইবার একটু হাসিতে রাখতে হবে । অনেক কষ্ট পেয়ে গেছে সে । এইবার সুখের দিন আসছে ।

অন্তীর জন্য সারপ্রাইজ আছে সামনে!! আপতত তার অভিমান টা ভাঙ্গতে হবে । এই বলে নিলয় বাসার দিকে হাটা শুর করলো….

( আর কেমন হলো জানাবেন..)

– নিরা না অন্তী…

চলবে
নিরার পরিণিতি ভয়াবহর দিকে যাবে..নেক্সট পার্টে ??

( কেমন হলো জানাবেন ) ধন্যবাদ পরের পার্টের জন্য অপেক্ষা করুন ।

চলবে

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here