“তুমি_যে_আছো_অন্তরে_মিশে💔 Part : {07}

#তুমি_যে_আছো_অন্তরে_মিশে💔
#Writter_Ishanur_Tasmia_[Mira]
# Part : {07}

বউ বেশে ছাদে দাঁড়িয়ে আছে নিরা,,,একটু পরই তূর্য আর তার পরিবার আসবে কাজি সাহেব কে নিয়ে,,,খুব ঘোরোয়া ভাবে হচ্ছে তাদের বিয়ে,,,তাই তেমন কেউ জানে না এ বিয়ের ব্যপারে,,,

তূর্য তো এ বিয়ে নিয়ে অনেক খুশি,,,এ ৩দিন নিরাকে জ্বালিয়ে খেয়েছে ফোন করে করে,,,তার ধারণা,, ঘন্টায় ঘন্টায় ফোন করে ভালোবাসার মানুষের খবর নিলে ভালোবাসা বাড়ে,,,তাই সে প্রতিদিন ৫০ বারেরও উপরে কল করে নিরাকে,,,আর খোজঁখবর নেয় তার,,,,তূর্যের এসব পাগলামিতে কেন যানি নিরার অনেক কষ্ট হয়,,,বারবার খালি ভাবে,,”আচ্ছা আমি কি তূর্যের ভালোবাসার পর্যাদা দিতে পারব,,আমি যে নিরবকে ভালোবাসি,,,,কিন্তু এসব ভেবে কি হবে,,,নিরব তো আমাকে ভালোবাসে না,,,”ভেবেই সবসময় একটা দীর্ঘ শ্বাস ফেলে নিরা,,,কেন এমন করে নিরব তা নিরা জানে না,,,কিন্তু এ তিন দিনে নিরা নিরবকে দেখে অনেকটা অবাক হয়েছে,,,যেমনই হোক,,আগে তো নিরব নিরাকে ভালোবাসত,,,সে হিসেবে তার বিয়ে হচ্ছে দেখে নিরাকে তো তার কিছু বলার দরকার ছিল,,,যে সে যেন সুখি থাকুক অথবা নিরা যেন এ বিয়ে না করুক,,,,

তেমন কিছুই নিরব বলে নি,,,আগের থেকেও চুপচাপ হয়ে গেছে নিরব,,,আগে তো তাও রাত ১ টা অথবা ২ টা করে বাসায় ফিরত,,আর এখন ৪ টা বা ৫ টা করে বাসায় ফিরে,,,নিরার সাথে নিরবের এ তিন দিনে মনে হয় ১বার দেখা হয়েছে,,,তাও নিরব তাকে কিছু বলে নি,,,ঐদিনের “ও” বলাটাই ছিল নিরবের শেষ কথা,,,এসব নিরাকে অনেক কষ্ট দেয়,,,নিরা ভেবেও পায় না নিরবের এমন করার কারন,,,একবার যদি তার দোষটা সে জানতো,,তাহলে হয়ত সে দোষটা সুধরানোর চেষ্টা করত,,কিন্তু নিরব তো তার দোষটাই বলছে না,,,,,,

,
,
,
,
,
,
দেখতে দেখতে তূর্য আর তার পরিবার এসে যায় কাজি সাহেবকে নিয়ে,,,,নিরাও মিসেস মুজমালের কথা মত তূর্যের পাশে গিয়ে বসে,,, কিছুক্ষনের মধ্যেই কাজি বিয়ে পড়ানো শুরু করে দেন,,,,কিন্তু নিরার সেসবে খেয়াল নেই,,,তার চোখ যে একজনকে খুঁজছে,,,কিন্তু সে এখানে নেই,, কোথায় সেটা নিরা জানে না,,, হয়ত বাসায় নেই,,,,

তূর্যকে কবুল বলতে বললেই তূর্য গড়্গড় করে ৩বার কবুল বলে ফেলে,,,তাতে সবাই এক সাথে হেসে দেয় শুধু নিরা ছাড়া,,, তূর্যের পর কাজি সাহেব নিরাকে কবুল বলতে বলেন,,,

নিরা কি করবে বুঝতে পারছে না,,,এখন যদি সে কবুল বলে ফেলে তাহলে সে চিরদিনের জন্য তূর্যের হয়ে যাবে,,, কিন্তু সে তো এটা চায় না,,, সে চায় যেন নিরব নিরার সারাজীবনের সঙ্গি হোক,,,,কিন্তু নিয়তি হয়তো এটা চায় না,,,

এদিকে নিরা কিছু বলছে না দেখে কাজি সাহেব বারবার তাকে কবুল বলতে বলছে,,,সবার দৃষ্টি এখন নিরার দিকে,,, নিরা মিসেস মুজমালের দিকে তাকাতেই দেখে তিনি রাগি চেহারা করে তাকিয়ে আছেন,,আর তার চোখ ২ টো যেন নিরাকে বলছে,,” তুই যদি এখন কবুল না বলিস তাহলে তোর মাকে আর তোকে আমি রাস্তার ফকির করে ছাড়ব,,,”এটা দেখেই নিরা একটা দীর্ঘ শ্বাস ফেলে,,,

তারপর কবুল বলতে যাবে,,,তার আগেই কেউ একজন নিরাকে হেচকা টানে নিজের কাছে নিয়ে যায়,,,ঘটনাক্রমে সবাই অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে সামনের মানুষটার দিকে,,,নিরা যেন ভয়ে কাঠ হয়ে গেছে,,, কারন সামনে নিরব দাঁড়িয়ে আছে,,,চোখে মুখে হিংস্রতার ছাপ,,,এটারই যেন ভয় পাচ্ছিলেন মিসেস মুজমাল,,,,

আর এদিকে তূর্য অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে নিরা আর নিরবের দিকে,,, বসা থেকে উঠে নিরবের দিকে একটু যেয়ে বলে,,,,

তূর্যঃ নিরব তুই এটা কি করছিস,,,,ছাড় নিরাকে,,,,

নিরবঃ তুই কি নিরাকে ভালোবাসিস,,,??

তূর্যঃ অবশ্যই,,,,

নিরবঃ ওর খুশির জন্য সব করতে পারবি,,,

তূর্যঃ হ্যাঁ,, কিন্তু এগুলো কেন জিজ্ঞেস করছিস,,,,

নিরবঃ ও আমাকে ভালোবাসে,,,তুই যদি ওকে সত্যিই ভালোবেসে থাকিস তাহলে ওকে বিয়ে করিস না,,,,

তূর্যঃ মানে কি বলছিস এগুলো,,ফাজলামি করা বন্ধ কর নিরব,,,,এখন আমাদের বিয়ে হবে,,,

নিরবঃ আমি কোনো ফাজলামি করছি না,,,ও আমাকে ভালোবাসে,,,আর আমাকেই বিয়ে করবে,,,চাইলে জিজ্ঞেস করে দেখ,,,,

মিসেস মুজমালঃ কি বলছিস নিরব,,,ও তোর বোন হয়,,,আর ওর তো এখন তূর্যের সাথে বিয়ে হচ্ছে তাই না,,,,

নিরবঃ তূর্যের সাথে বিয়ে হওয়ার কথা ছিল,,, এখন আমার সাথে হবে,,,,

তূর্যের মা-বাবাঃ মানে,,,

তূর্যের বাবাঃ তুমি এগুলো কি বলছ বাবা,,,

নিরবঃ সরি আংকেল,,এ বিয়ে হচ্ছে না,, যদি হয় তাহলে আমার আর নিরার হবে,,,,

তূর্যঃ নিরব তুই এখন বেশি বেশি করছস,,,,

নিরবঃ আমি কোনো বেশি বেশি করছি না,, নিরা আমাকে ভালোবাসে তাই বলছি,,,আর তোকে তো বললাম নিরাকে জিজ্ঞেস করে দেখতে,,, তারপর নাহয়,,, [ বাঁকা হেসে ]

তূর্যঃ নিরা,,,,তুমি কি নিরবকে ভালোবাসো,,,

এতক্ষন নিরা চুপচাপ সবার কথা শুনছিল,,,তূর্যের কথায় কি জবাব দিবে বুঝতে পারছে না,,,সে তো চায় যেন নিরবের সাথেই তার বিয়ে হোক,, কিন্তু তাহলে যে তূর্যকে ঠকানো হবে,,,ভেবে পাচ্ছে না কি করবে,,,নিরব এমন বিহেভ কেন করছে তাও বুঝতে পারছে না,,,নিরার মস্তিষ্ক বলছে যেন সে বলে,,যে সে নিরবকে ভালোবাসে না,,,,, কিন্তু মন বলছে তার উলটোটা,,,অবশেষে নিরা তার মনের কথা শুনে,,,, তারপর,, একটা দীর্ঘ শ্বাস ফেলে বলে,,,,

নিরাঃ হ্যাঁ,, আমি নিরবকে ভালো,,,[ বলতে না দিয়ে ]

তূর্যঃ তাহলে তুমি আমাকে কেন বলেছিলে তুমি এ বিয়েতে রাজি,,,,

নিরাঃ……

তূর্যঃ তুমি অনেক খারাপ নিরা,,এভাবে আমাকে না ঠকালেও তো পারতা,,,একবার শুধু বলতে তুমি এ বিয়েতে রাজি না,,আমি খুশি খুশি এ বিয়ে করতাম না,,কিন্তু এভাবে আমার মন দিয়ে খেলা না করলেও হতো,,,সেম অন ইউ নিরা,,,সেম অন ইউ,,,

বলেই তূর্য তার পরিবারকে নিয়ে সেখান থেকে চলে যায়,,,খুব কষ্ট হচ্ছে তার,,চোখ দিয়ে অনবরত পানি পরছে,,,,নিরব তো অনেক খুশি,,, সে যা চেয়েছিল তাই পেয়েছে,,,,কেমন যেন এক রহস্যময় হাসি হাসছে সে,, আর মিসেস মুজমাল,, তিনি তো রাগে গজ গজ করছেন,,,তিনি কিছু বলতে যাবেন তার আগেই নিরব বলে উঠে,,,

নিরবঃ এখন যদি কেউ আমার আর নিরার বিয়ের বিপক্ষে যায়,, তাহলে আমি নিরাকে নিয়ে এখান থেকে যেতে বাধ্য হব,,,তখন কখনও এখানে আসব না,,সো বি কোয়েট,,আর কাজি সাহেব বিয়ে পড়ানো শুরু করেন,,,,

বলেই নিরব নিরার হাত শক্ত করে ধরে সোফায় বসে,,আর কাজি যা যা করতে বলছে সব করছে,,,নিরার দিকে কেউ তাকাচ্ছেও না,,নিরা কি চায় আর কি চায় না,, সেদিকে কারো কোনো খেয়াল নেই,,,যে যার ইচ্ছা মত সব করছে,,,নিরা যেন হাতের পুতুল হয়ে গেছে,,,

দূর থেকে এসব নিরার মা দেখছে,, এসব দেখে তার চোখের পানি ফেলা ছাড়া কিছু করার নেই,,,নিজের মেয়েকে এভাবে হেনেস্তা হতে দেখেও তিনি কিছু করতে পারছেন না,,,

এদিকে মিসেস মজমালের রাগের শেষ নেই,, তিনি কি চেয়েছিলেন আর কি হচ্ছে,,,আর এক মুহুর্তও তিনি এগুলো সহ্য করতে পারছেন না,, তাই রাগে গজ গজ করতে করতে নিজের রুমে চলে যান,,,,

সব শেষে নিরা আর নিরবের বিয়েটা সব রিতিনিতি মেনে হয়ে যায়,,,,
,
,
,
,,
,
,
,
,
এখন নিরা বাসর ঘরে বসে আছে,, তার মা তাকে নিরবের রুমে নিয়ে এসেছে,,,যাওয়ার আগে নিরা তার মাকে ধরে অনেক কান্না করে,,কেন যেন নিরবের সাথে বিয়ে হয়েও নিরার খুশি লাগছে না,, বরং কষ্টই হচ্ছে,,, নিরা নিজের মাকে ধরে কিছুক্ষন কান্না করার পর নিরার মা মেয়েকে একটু আদর করে নিজের শাড়ির আচঁল মুখে গুজে চলে চান,,,,আর নিরা নিজের কষ্ট গুলো আড়াল করে মুখে হাসি ফুটায়,,,ভেবেছিল নিরব আর সে নতুন করে জীবন শুরু করবে,,,, কিন্তু নিরব রুমে এসেই যা বলে,, তাতে নিরার ধারণাটা ভুল প্রমাণ হয়,,,,

প্রায় অনেক রাতে নিরব নিজের রুমে ঢুকে,,, এতক্ষন নিরা বিছানায় বসে বসে ঝিমাচ্ছিল আর নিরবের অপেক্ষা করছিল,,,দরজা খোলার শব্দ শুনে সামনে তাকাই দেখে নিরব এসে গেছে,,,তাই নিরা ঠিকঠাক হয়ে বসে,,,,

নিরব দরজা লাগিয়ে ধীর পায়ে নিরার কাছে এসে বসে,,নিরবকে দেখে কেমন যানি ড্রাংক মনে হচ্ছে নিরার,,,,,,নিরব নিরাকে হেলতে ডুলতে বলে,,,

নিরবঃ কি,,, বিয়েটা তো হয়ে গেল তাই না,,,,তা এখন তাহলে শুরু করা যাক,,,,[ নেশাক্ত কন্ঠে ]

নিরাঃ মা,,,নে,,,,??

নিরবঃ বাসর রাতে যা করে তাই করব,, আর কি,,,,

নিরাঃ কি বলছেন আপনি নিরব,,,

নিরবঃ আমি আবার কি বলছি,,,শুধু বলেছি বাসর রাতে মানুষ যা করে তাই করব,,,তাছাড়া তোকে শাস্তিও তো দিতে হবে,,,

নিরাঃ ক,,কিসের,,শা,,স্তি,,,??

নিরবঃ আরে এতদিন তো আমি তোর সাহস দেখছিলাম,,আসলেই তোর অনেক সাহস,,,আচ্ছা তুই কি ভেবে ছিলি,,,আমাকে না বলে,,,তুই বিয়ে করবি,, আর আমি তোকে করতে দিব,,,, জীবনেও না,,,, এত সহজে আমার কাছ থেকে রেহাই পাবি না তুই,,,

নিরাঃ দেখুন নিরব,,,আমি তো আপনাকে বলেছিলাম,,,

নিরবঃ কি বলেছিলি,, তোকে পাত্র পক্ষ দেখতে এসেছিল,, এটা,,,?? কোই বিয়ে হবে,,, এটা তো বলিস নি,,,??[ ডুলতে ডুলতে ]

নিরাঃ আপনি আমাকে বলার সুযোগ দেন নি,,,

নিরবঃ তাই,,, অনেক সরি,,কিন্তু এখন তো কিছু করার নেই বেবি,,,তোমাকে তো তোমার সাহসের দাম দিতে হবে,,,,নাও কামন বেবি,,,আমার কাছে আসো,,,[ নিরার দিকে এগিয়ে ]

নিরাঃ প্ল,,প্লিস,,নিরব,,আমার,,থে,,,,

আর কিছু বলতে পারলো না নিরা,,, তার আগেই নিরব নিরার উপর ঝাপিয়ে পরে,,,,,
,
,
,
,
,
,
,
,
#চলবে🍁

সরি,,,আজকের পার্ট টা একদম সুন্দর হয় নি,,, সময়ের অভাবে যা লিখতে পেরেছি,,,তাই দিলাম,,,যদি খারাপ লাগে তাহলে অনেক অনেক গুলো ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি,,,,😔😔

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here