তোকে দিয়েছি মন পর্ব ২৩+২৪

তোকে_দিয়েছি_মন❤
২৩.২৪
পর্ব – ২৩
Writer: Sidratul muntaz

🍂
ইশান ভাইয়া ছাদের কার্নিশে হাত রেখে দাড়িয়ে আছেন। দেখে মনে হচ্ছে ভয়ানক রকম রেগে আছেন উনি। অবশ্য রেগে থাকারই কথা। যেখানে উনার বিন্দু মাত্র দোষ নেই সেই ঘটনাকে কেন্দ্র করে আমি কতবড় একটা তকমা লাগিয়ে দিলাম উনার চরিত্রে। এটা যে কারোর পক্ষেই মেনে নেওয়া কঠিন। কিন্তু এখন কথা হচ্ছে জায়মা কেনো এতোবড় মিথ্যে কথা বলল? কেনো আমার থেকে ঈশান ভাইয়াকে আলাদা করতে চাইলো সে?? সেসব কথা পরে চিন্তা করা যাবে কিন্তু আপাতত ঈশান ভাইয়ার মেজাজ ঠান্ডা করার মিশনে মনোযোগী হওয়া জরুরি। যে একটা আছাড় মেরেছেন আমাকে….. মাথা থেকে পা পর্যন্ত এখনো ঝিরঝির করছে। এবার সামনে গিয়ে দাড়ালে না জানি কি করে। আচ্ছা যদি ছাদ থেকে ঢিল মেরে ফেলে দেয়? দিলে দিবে….. দুইতলা থেকে পড়লে হাত পা ভাঙা ছাড়া বিশেষ কোনো ক্ষতি হবে না। কিন্তু কথা হচ্ছে ঢিল টা যদি উনি মারে….. তাহলে হাত পা শুধু ভাঙবে না…. সব পাউডারের মতো গুড়া হয়ে যাবে। আর তারপর সেই গুড়া পানিতে মিশিয়ে শরবত তৈরি হবে। শরবতের নাম হবে তারিনের শরবত। ব্যাপারটা কেমন হবে? ধুর কি সব অদ্ভুত চিন্তা করছি আমি। উনি আমাকে ছাদ থেকে ঢিল কেনো মারতে যাবেন? তবে হ্যা আমাকে ঢিল না মেরে…. ঢিল আমার উপর মারতে পারে। যেমন ওই মেয়েটাকে মেরেছিল। কি যেন নাম? সুইটি। কথাটা মনে করেই মুখ চেপে হাসলাম আমি। আমার হাসির আওয়াজ টা হয়তো উনি বুঝতে পেরে গেলেন। তাই হঠাৎ বলে উঠলেন–

বোকার মতো হাসছো কেনো এখন? কারণে অকারণে কেদে গা ভাসাও আবার বিনা কারণেই নিজের মনে হাসো। এসব কি কোনো মানসিক সমস্যা? শেষ মেষ একটা মানসিক রোগী বিয়ে করলাম আমি।

পেছনে না তাকিয়েই কথাগুলো আমাকে উদ্দেশ্য করে বললেন উনি। আমি কোমড়ে হাত রেখে অভিমানের সুরে উত্তর দিলাম–

কি বললেন? আমি মানসিক রোগী?

আসলে পৃথিবীর সবাই মানসিক রোগী। মন থাকলে অসুখ থাকবে এটাই স্বাভাবিক। যার মানসিক রোগ নেই….. তার মন বলেও কিছু নেই।

দেখুন আমি আপনার ভাষণ শুনতে আসিনি…আ

আমাকে কথাটা শেষ করার সুযোগ না দিয়েই উনি গম্ভীর কণ্ঠে বললেন–

তাহলে কেনো এসেছো?

আমি আপনাকে সরি বলতে এসেছি।

ওকে! শুনলাম।

শুধু শুনলেই হবে? কিছু বলবেন না?

নাহ।

প্লিজ এভাবে রাগ করে থাকবেন না। আসলে জায়মা যে এমন একটা মিথ্যে কথা বলতে পারে…. আমি কল্পনাও করিনি….

আমি কথা শেষ করার আগেই ঈশান ভাইয়া আমার দিকে ঘুরে তাকালেন। সরু চোখ করে বললেন–

তোমাকে এসব কথা জায়মা বলেছে?

উনার প্রশ্নে আমি জিভ কাটলাম। ধুর কি বলতে কি বলে ফেললাম এটা। জায়মার বিষয়টা উনাকে জানানো উচিৎ হবে না। শুধু শুধু মেয়েটার নামে নিন্দা করে কি লাভ? বরং জায়মাকে যা বলার আমি নিজের মুখে বলবো। ওর পেছনে ওর নামে বদনাম করে শুধু শুধু গীবত করার কোনো মানেই হয়না। যতই হোক আমি আমার মৃত ভাইয়ের গোশত খাওয়ার মতো জঘন্য অপরাধ কিছুতেই করতে পারিনা। ঈশান ভাইয়া আবার বললেন–

তারিন!

উনার মুখে তারিন নামটা শুনে চমকে উঠলাম আমি। উনি তো কখনো এই নামে ডাকেনা আমায়। তাহলে কি সত্যিই এতোটা রেগে আছেন যে তারা নামটাও উচ্চারণ করতে ইচ্ছে হচ্ছে না উনার? আমি করুন কণ্ঠে বললাম–

আপনি আমার উপর খুব রেগে আছেন তাইনা?

ঈশান ভাইয়া আমার কথার উত্তর না দিয়ে আবার কার্নিশে হাত রেখে সামনের দিকে দৃষ্টি দিলেন। আমি একটা শুকনা ঢোক গিলে উনার কাছে এগিয়ে গেলাম। আহ্লাদী সুরে বললাম–

বললাম তো সরি। আর কখনো এমন হবে না। আর কখনো আপনাকে অবিশ্বাস করবো না প্রমিস।

হুম। এমনিতেও সেটার আর প্রয়োজন হবে না।

মানে?

মানে কাল আমি চলে যাচ্ছি।

কোথায়?

আমার নিজের শহরে।

আর আমি?

ঢাকায় গিয়ে ডিভোর্স পেপার পাঠিয়ে দিব চিন্তা করোনা।

কি?? আপনি আমাকে ডিভোর্স দিবেন?

হুম। যেখানে বিশ্বাস নেই সেখানে ভালোবাসাও নেই। বিশ্বাস হলো সম্পর্কের প্রাণ। আর বিশ্বাস টাই যখন আমার উপর নেই তোমার……তাহলে এই ঠুনকো সম্পর্ক টিকিয়ে রাখার কি আদৌ কোনো মানে হয়?

আমি উনার কথার কি উত্তর দিবো বুঝতে পারলাম না। হা করে তাকিয়ে রইলাম শুধু। উনি একটু থেমে আবার বললেন–

তারিফের সাথে কথা বলে সবটা ম্যানেজ করে নিব। দরকার হলে ওই মহিষ…. আই মিন মিঃ আরিয়ানের সাথেই তোমাকে বিয়ে দিতে বলবো। তাকে তো তুমি আমার থেকেও বেশি বিশ্বাস করো।

আমার চোখ দুটো টলমল হয়ে আসল মুহুর্তেই। সত্যিই কি আমায় ডিভোর্স দেবেন উনি? আবার বলছেন ভুড়িওয়ালার সাথে বিয়ে দিয়ে দিবেন? অভিমানে কান্না আসছে আমার। চোখ থেকে দু ফোটা জল গড়িয়ে পড়তেই উনি তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে আমার দিকে তাকালেন। উনার চেহারাটা ঝাপসা লাগছে আমার। উনি কিছুক্ষণ আমার দিকে তাকিয়ে থেকে হঠাৎ আমার সামনে এসে দাড়ালেন। দুই গাল স্পর্শ করে নরম সুরে বলে উঠলেন–

কতটা কষ্ট পেয়েছি জানো? আমাকে এতোটা ক্যারেক্টারলেস কিভাবে ভাবলে তুমি? আমার ভালো বাসাটা একবারও বুঝলে না? এতোটা ভালো বাসি তবুও বিশ্বাস করতে পারলে না? কেনো তারা?

আমি শব্দ করে কেদে উনাকে জড়িয়ে ধরলাম এবার। কান্নামিশ্রিত কণ্ঠেই অস্পষ্টভাবে বলতে লাগলাম–

সরি সরি সরি!

ঈশান ভাইয়াও আমাকে উনার বাহুডোরে আটকে নিলেন। কপালে কিস করে বললেন–

আই লভ ইউ।

এই কথা শুনে আমার কান্নার পরিমাণ আরো বেড়ে গেল। শব্দটা যেন একদম তীরের মতো বিধল মনে। এক অদ্ভুত প্রশান্তির শীতলতা খেলে গেল আমার বুকের বামপাশটায়। আরো শক্ত করে জড়িয়ে ধরে উনার বুকের ধাকধাক আওয়াজ শুনতে লাগলাম আমি। এটাও যে এক অন্যরকম প্রশান্তিরই নাম! কিছুটা সময় এভাবেই কেটে গেল। হঠাৎ উনি আমার মাথা উঠিয়ে আমার চোখে জমে থাকা পানি মুছে দিলেন। আমাকে কোলে তুলে নিয়ে ছাদের কিনারায় গিয়ে দাড়ালেন। আমি উনার গলা জড়িয়ে ধরে রাখলাম। উনি মুচকি হেসে বললেন–

ছাদ থেকে ফেলে দেই এবার?

আমি মৃদু হেসে মাথা হেলিয়ে বললাম–

আচ্ছা দিন!

উনি ভ্রু কুচকে বললেন– সত্যি ফেলে দেবো?

আমি মাথা নেড়ে হ্যা বললাম।

ভয় লাগছে না?

একটুও না।

কেনো?

কারণ আমি জানি। আপনি আমায় ফেলতেই পারেন না!

এতো বিশ্বাস আমার উপর।

হুম।

উনি এবার আমাকে কোল থেকে নামিয়ে দেয়ালের উপর বসালেন। আমি এখনো উনার গলা জড়িয়ে আছি। মনে হচ্ছে ছেড়ে দিলেই পেছন থেকে পড়ে যাবো। উনি আমার কপালে আরেকবার চুমু একে দিলেন। নেশাভরা দৃষ্টিতে আমার গালে হাত বুলাতে লাগলেন। হঠাৎ আমার চুল গুলো ঘাড়ের একপাশে সরিয়ে দিয়ে অন্যপাশে মুখ ডুবিয়ে দিলেন। আমি শিহরীত হয়ে চমকে উঠলাম সাথে সাথে। গলায় ঠোটের স্পর্শ পাচ্ছি। যা আমার শরীরের কম্পন বাড়িয়ে দিচ্ছে। আবার সেই যন্ত্রনা অনুভব হচ্ছে পুরো শরীর জুড়ে। আমি নেমে যেতে চাইছি। কিন্তু তার কোনো উপায় নেই। উনার শার্ট মুষ্ঠিবদ্ধ করে ধরে চোখমুখ খিচে বন্ধ করে নিলাম আমি। দাতে দাত চেপে রেখেছি। ইচ্ছে করছে এভাবেই চিৎকার করতে। কিন্তু চিৎকার করার প্রয়োজন হলো না। তার আগেই বুড়ির কাশির শব্দে চমকে উঠলাম দুজনেই। বুড়ি ছাদের দরজার সামনে ভ্রু কুচকে দাড়িয়ে আছে। ঈশান ভাইয়াকে হয়তো দেখতে পেয়েছে বুড়িটা। তাই পান চিবুতে চিবুতে শব্দ করে বুড়ি বলে উঠল–

নাতজামাই না? এতো রাইত্তে ছাদে উঠসো কি করতে??

বুড়ির কথার শুনে একপ্রকার ভয়ে শব্দ করে উঠলাম আমি। আর সাথে সাথে উনি আমার মুখ চেপে ধরলেন। এতোক্ষন ঈশান আমার সামনে দাঁড়িয়ে ছিল বলে আমাকে দেখা যাচ্ছিল না। কিন্তু এখন আমি শব্দ করায় হয়তো বুড়িটা বুঝে ফেলল যে আমিও এখানে আছি। ইশশ!! লজ্জায় ছাদ থেকে লাফিয়ে পড়তে ইচ্ছে করছে এবার। বুড়ি আবার গলা খাকারি দিয়ে বলে উঠল–

তারু না? তোরা এই রাইত্তে বেলা ছাদে কি করস? ভুতে ধরব তো!
🍂

তোকে_দিয়েছি_মন❤
পর্ব – ২৪
Writer: Sidratul muntaz

🍂
বুড়ির কথায় ঈশান ভাইয়া ঝড়ের বেগে আমার থেকে এক হাত দূরে সরে দাড়ালেন। আমি দেয়াল থেকে নেমেই জামার ওরনা ঠিক করতে লাগলাম। মুখে জোড়পূর্বক হাসি আনার চেষ্টা করে আমতা আমতা করে বললাম–

দাদী তুমি এতোরাতে ছাদে আসলে যে?

আমার প্রশ্নে বুড়ি ভেতরে ঢোকার উৎসাহ পেল। ঈশান ভাইয়াকে দেখলাম দেয়ালের এক কোণায় গুটিশুটি মেরে মুখে হাত রেখে দাড়িয়ে আছে। একবার বুড়ির দিকে তাকাচ্ছে। তো একবার আমার দিকে তাকাচ্ছে। নিচের ঠোটটা দিয়ে উপরের ঠোটটা চেপে ধরে ক্রমাগত বাম হাতদিয়ে ডানহাতের উড়ুতে মালিশ করে যাচ্ছে। বেচারা যে কি ভয়ংকর লজ্জা পাচ্ছে সেটা আর বুঝতে বাকি নেই আমার। বুড়ি আমার দিকে এগিয়ে আসতে আসতে বলল—

বিকালে বৃষ্টি হইসিল না? আমার শাড়ি কাফুর ডা ভিজ্জা গেসিল। তয় অহন লইতে আইসিলাম। শুকায় তো গেসে মনয়।

আমি তারের দিকে তাকিয়ে দেখলাম আসলেই বুড়ির শাড়ি টা ঝুলন্ত অবস্থায় আছে।

আচ্ছা দাদী আমি নিয়ে দিচ্ছি দাড়াও।

কথাটা বলেই আমি বুড়ির শাড়িটা দড়ি থেকে খুলতে লাগলাম। বুড়ি কোমরে হাত রেখে দাড়িয়ে আছে। ঈশান ভাইয়া এখনো নিরব দর্শকের মতো আশেপাশে তাকাচ্ছেন। নখ কামড়াচ্ছেন। মাথায় হাত ঠেলে চুল গুলো পেছনে সরিয়ে দিচ্ছেন। দেয়াল ধরে দাড়াচ্ছেন। মানে এক কথায় চরম অস্বস্তিতে ভুগছেন বেচারা। এইরকম সিচুয়েশনে অবশ্য উনাকে একটু বেশিই কিউট লাগে। একদম লজ্জাবান ঈশান। আচ্ছা উনি যদি মেয়ে হতো তাহলে কি এমন লজ্জা পাওয়ার জন্য উনার নাম লীলাবতী রাখা হতো? হুমায়ুন স্যার তখন তার “লীলাবতি” উপন্যাস টা হয়তো উনাকেই ডেডিকেট করতেন। বুড়িটা হয়তো এবার ঈশান ভাইয়ার অস্বস্তির কারণ টা বুঝে ফেলল। তাই কিছুক্ষণ ফ্যাল ফ্যাল চোখে তাকিয়ে থেকে বলে উঠল–

কি গো নাতজামাই? ভালা আছো?

ঈশান ভাইয়া এবার স্থির হয়ে দাড়ালেন। দুই হাত ভাজ করে হাসার চেষ্টা করে বললেন–

জ্বী ভালো আছি দাদীমা। আপনি ভালো আছেন??

হয় হয় ভালাই। তয় তোমরা যে আইজকা রাইত্তে ছাদে থাকবা ওইডা কলাম আমি ভাবিওই নাই। ফত্তমে তো দেইখা মনে করসি জ্বীনের বাদশা খাড়ায় আছে। এই লম্বা….. বাশের মতো জ্বীনের বাদশা। সাদা ধবধবা শরীল। আমি তো ডরায় গেসি। পরে ভালা কইরা চায়া দেহি মনে অইল এইডা তো আমাগো নতুন জামাই। জ্বীনের মতো সুন্দর।

বুড়ির কথা শুনে হেসে উঠলাম আমি। কতক্ষণ ধরে বুড়িটা দাড়িয়ে ছিল কে জানে? ঈশান ভাইয়া মাথা নিচু করে কিছু একটা বলতে যাবেন তার আগেই বুড়িটা আবার বলে উঠল–

আমাগো সময় তো বিয়ার রাইতে ঘর তেকা বাইর হউন নিষিদ আসিল। রাইত্তে যে দুয়ার দিতো একদম সক্কাল পর্যন্ত খুলনের আর উপায় আসিল না। কেউ দুয়ারের সামনেও যাইতা পারতো না। আর তোমরা তো দেহি ছাদে উইট্টা বইয়া আছো। তয় এতো শরমের কিছু নাই। ইতা আমরাও পার কইরা আইসি। আমাগোরও তো বিয়া শাদী হইসে সবই জানি বুঝি। অসুবিদা নাইগগা।

আমি মুখে হাত রাখলাম বুড়ির কথা শুনে। বুড়িটা কি বলে এসব? ইচ্ছে করে আরো বেশি লজ্জায় ফেলতে চাইছে। আমি বুড়িকে উদ্দেশ্য করে বললাম—

এমন কিছু না দাদী! আমি দেয়ালের উপর উঠে পেয়ারা গাছ থেকে পেয়ারা পাড়ার চেষ্টা করছিলাম। আর উনি শুধু আমায় ধরে ছিলেন যাতে আমি নিচে পড়ে না যাই। বুঝেছো?

হয় হয় বুঝসি। এমন পেয়ারা আমরাও কত্ত পারসি। তয় ছাদে না। আমরা দুয়ার বন্দ কইরা পেয়ারা পাড়সি। আইচ্ছা থাইক তোরাও পেয়ারা পাড়। পেয়ারা খা। আমি যাই। আমার আর এইহানে থাইক্কা লাভ কি? তয় পেয়ারা একটু সাবধানে পাড়িস। গেলাম বইন। ( ঈশানের দিকে তাকিয়ে) গেলাম ভাই?

ঈশান ভাইয়া মুচকি হেসে মাথা নাড়লেন। বুড়ি শাড়ি হাতে হাটতে হাটতে চলে গেল। উফফ….. এইবার শান্তি। যেন হাফ ছেড়ে বাচলাম। কিন্তু এবার থেকে যতবার বুড়ির সামনে যাব….. আমি নিশ্চিত বুড়িটা পেয়ারার কথা আমাকে মনে করাবেই। উফফ….. কি লজ্জাকর একটা পরিস্থিতির স্বীকার হলাম আজ। আমি আর বুড়ির সামনেই যাবো না এখন থেকে। ঈশান ভাইয়া উল্টোদিকে ঘুরে দেয়ালে হাত রেখে বললেন–

তোমার দাদীমা তো দেখছি ফ্রী তে মজা নিয়ে গেল।

আমি উনার পাশে গিয়ে দাড়াতে দাড়াতে বললাম–

মজা নেক আর যাই নেক। একটা কথা কিন্তু বলাই বাহুল্য।

কি কথা?

বুড়ি…. মানে দাদীর কাছে আমি আপনি দুজনেই খুব ঋণী।

তাই নাকি? সেটা কিভাবে?

দেখুন….. দাদী যদি আমার জন্য মিঃ ভুড়িওয়ালা…. মানে আপনার ভাষ্যমতে মিঃ মহিষের সম্বন্ধ না আনতো। তাহলে কিন্তু আপনি ভুড়িওয়ালাকে কিডন্যাপ করতেন না৷ আর আপনি যদি কিডন্যাপ না করতেন…. তাহলে ভাইয়াও থাঞ্চুকে সন্দেহ করতো না। আর আমাদের বিয়েটাও হতো না। এইভাবে চিন্তা করলে আমাদের বিয়েতে কিন্তু বুড়ির একটা বিরাট ভূমিকা আছে।

বাহ দারুণ তো! কিন্তু তুমি কি করে জানলে যে তারিফ থাঞ্চুকে সন্দেহ করেছে।

আমি মুখ টিপে হাসলাম।

আজকে সকালে যখন ভাইয়া আপনার সাথে কথা বলছিল….. আমি দরজার আড়ালে দাড়িয়ে সব শুনে নিয়েছিলাম তো!

তাই না?

বলেই ঈশান ভাইয়া এক টানে আমাকে উনার কাছে নিয়ে আসলেন। আমার কোমড় জড়িয়ে ধরলেন। আমি একটু কেপে উঠে নিজেকে ছাড়ানোর চেষ্টা করতে লাগলাম। কিন্তু এইটা যে নিতান্তই বৃথা চেষ্টা। উনি আমাকে দেয়ালের সাথে চেপে ধরে আমার মুখের দিকে খানিকটা ঝুকে বলে উঠলেন–

তাহলে তো দাদীমা কে একটা গিফট দিতে হয়। এতোবড় একটা উপকার করলেন আমাদের…..কি দেওয়া যায় বলোতো?

আমি কাপা কাপা গলায় বললাম–

ব বুড়ি তো বুড়িই। একটা পানের বাটা পেলেই খুশি হয়ে যাবে।

পানের বাটা?

হ্যা…..সুপার শপ থেকে একটা পানের বাটা কিনে দিয়ে দিয়েন।

এইখানে সুপার শপও আছে?

থাকবে না কেনো? আমার শহরটাকে আপনি কি মনে করেন হুম?

তোমার শহরটাকে আমি ভালোবাসার শহর মনে করি। কারণ এইখানে এসে আমি ভালোবাসাকে খুজে পেয়েছি। আমার মিষ্টি হাসিকে খুজে পেয়েছি।( আমার বাম সাইডের চুল গুলো কানে গুজে দিয়ে)

আমি হাসার চেষ্টা করে বললাম–

আচ্ছা তাহলে চলেন এখন আমরা নিচে যাই?

কেনো? নিচে কেনো? এইখানেই ভালো লাগছে। নিচে গিয়ে মজা নেই। তবে মজা হতো। যদি তোমার ঘরের দরজাটা থাকতো।

দরজা থাকতো মানে? আপনি কি বোঝাতে চাইছেন হ্যা? ছি! আপনি খুব বাজে।

আচ্ছা তাহলে দেখো আমি কতটা বাজে।

উনি আমার দুই গাল স্পর্শ করতেই আরেকবার বুড়ির কাশির আওয়াজ শোনা গেল। এবার দুজনেই দুদিকে ছিটকে পড়লাম। বুড়ি দাত কেলানো হাসি দিয়ে বলল–

শাড়ি লইসি তয় সায়া বেলাউজ নিসিনা।

বলতে বলতে তার থেকে ঝোলানো কাপড় খুলে নিল। হাসতে হাসতে আমাকে আর ঈশান ভাইয়াকে একবার দেখে নিয়ে আবার চলে গেল বুড়িটা। আমি আর ঈশান ভাইয়া বড় বড় চোখে তাকিয়ে রইলাম শুধু।
🍂

তোকে_দিয়েছি_মন❤
অতিরিক্ত পর্ব
Writer: Sidratul muntaz

🍂
বর্তমানে আমি আর ঈশান ভাইয়া দাড়িয়ে আছি আমার ঘরের ভাঙা দরজার সামনে। ভেতরে ঢোকার আগেই চমকের শীর্ষে পৌছাতে হয়েছে আমাদের। ঘর তো নয় যেন ছোটখাটো একটা বার। অনেকগুলো কাচের বোতল একসাথে ড্রেসিং টেবিলের সামনে সাজিয়ে রাখা হয়েছে। পুরো ঘর ছোট ছোট লাইট আর বেলুন দিয়ে ডেকোরেট করা। সাফিন আয়মান আর অয়ন্তি আপু বিছানার মাঝখানে বসে আছেন। চিয়ার্স করতে করতে কোল্ড ড্রিঙ্ক খাচ্ছেন। তাদের সামনে লুডু বোর্ড। হাসাহাসির শব্দে পুরো ঘর মুখরিত হয়ে উঠেছে। রাতের নিস্তব্ধতার কাছে এই হাসাহাসির শব্দটা অত্যন্ত তীক্ষ্ণ লাগছে। তবে ওদের সাথে ভাইয়াকে দেখা যাচ্ছে না কেন? ভাইয়া কোথায়? আশেপাশে তাকাতেই দেখলাম ভাইয়া উঠানের এক পাশে দাড়িয়ে দেয়ালের সাথে ঠেস দিয়ে ফোনে কথা বলছে। চোখেমুখে খুশির ঝিলিক। বুঝতে পারলাম ইনা আপুর ফোন। ঈশান ভাইয়ার দিকে তাকাতেই দেখলাম মুখটা মলিন করে দাড়িয়ে আছে। আজ আকাশে পূর্ণিমার চাদ দেখা দিলেও উনার মুখে যেন অমাবস্যা ভর করেছে। বুঝতে পারলাম না কাহিনি কি! আমি সহজ সরল মেয়ে ….. ওতো শত বুঝিনা! তাই ভিতরে গিয়ে সবার সাথে মিনি পার্টিতে জয়েন করার সিদ্ধান্ত নিলাম। আমার ঘরে পার্টি….. ব্যাপারটা সেইরকম ইন্টারেস্টিং! আমি খাটের উপর পা তুলে বসে পড়তেই সাফিন ভাইয়া বলে উঠলেন–

এইতো এসে গেছে আমাদের চীফ গেস্ট রা…. যাদের জন্য এতো এতো আয়োজন করলাম। ( ঈশান ভাইয়ার দিকে তাকিয়ে) তা আপনি মহাশয় বাহিরে দাড়িয়ে কেনো? ভিতরে প্রবেশ করুন! একটু পায়ের ধুলো দিয়ে যান!

ঈশান ভাইয়া কটমট চোখে তাকিয়ে থেকে বললেন—

রাত ২টা বাজে এসব কি তামাশা শুরু করেছিস তোরা? তোদের কি ঘুম টুম নেই?

আয়মান ভাইয়া বিছানায় হেলান দিতে দিতে বললেন—

জীবনটাই তো একটা তামাশা দোস্ত। তারিফ শালা হবু বউ নিয়ে বিজি। তোরও বিয়ে হয়ে গেল। বউ নিয়ে কি সুন্দর চোখের সামনে টই টই করে ঘুরে বেড়াচ্ছিস। এখন আমরা সিঙ্গেলরা কি শুধু দেখেই যাবো? দর্শক আয়ন হয়ে থাকবো ?? সেটা তো হবে না!! আমরাও বিক্রিয়াতে বাধা প্রদান করবো। অধঃক্ষিপ্ত হতে দিবো না।

আয়মান ভাইয়ার কথায় সাফিন আর অয়ন্তি আপু হো হো করে হেসে উঠল। হাসতে হাসতে হাত মিলিয়ে দুজন একসাথে উচ্চারণ করলো– সো ডিপ!!

আমি ভ্রু কুচকে বলে উঠলাম– অধঃক্ষিপ্ত মানে? ঠিক বুঝলাম না।

অয়ন্তি আপু বলল— এই তোমার এইচ এসসি রেজাল্ট দিয়েছে।

আমি বললাম– না!

অয়ন্তি আপু আমার দিকে আঙুল ইশারা করে সাফিন আর আয়মান ভাইয়াকে বলল– এই মেয়ে কেমিস্ট্রিতে ফেইল করবে।

আয়মান ভাইয়া দাত কেলানো হাসি দিয়ে বললেন— কেমিস্ট্রি তে না হলেও বায়োলজিতে নিশ্চিত ফেইল।

কথাটা শুনে বুকের মধ্যে যেন সিডর টর্নেডো একসাথে বয়ে গেল আমার। আসলেই বায়োলজি এক্সাম টা খুব খারাপ হয়েছে। সত্যি সত্যি ফেইল করে বসবো না তো?

ঈশান ভাইয়া বিরক্ত হয়ে বললেন– তোরা কি বের হবি? নাকি আমি উপযুক্ত ব্যবস্থা নিবো।

অয়ন্তি আপু বলল– তুই কি রে ঈশান?? এমন করিস কেনো?? কাল তো চলেই যাচ্ছিস তোরা। তারিফের বিয়েতেও থাকছিস না। বিয়ের আনন্দটা না হয় এখনই সেলিব্রেট করি!এডভান্স সেলিব্রেশন।

ঈশান ভাইয়া বললেন– তোদের এডভান্স সেলিব্রেশন বাহিরে গিয়ে কর। এইখানে না। আই নিড টু স্লিপ। আমি অনেক টায়ার্ড।

সাফিন ভাইয়া বললেন– ব্যাপারটা কি শুধুই টায়ার্ডনেস?? নাকি….

আয়মান ভাই বললেন– হ্যা বুঝি বুঝি সব বুঝি।

অয়ন্তি আপু দুষ্টুমী হাসি দিয়ে বলল— আচ্ছা থাক গায়েস। ঈশান যখন ঘুমাতে চাইছে আমরা ওকে ঘুমাতে দেই। ঈশান তুই শুয়ে পড়! আমরা আমাদের পার্টি তারিফের রুমে করছি।( আমার দিকে তাকিয়ে) তারিন তুমিও আমাদের সাথে চলো। পার্টি করতে?

কথাটা শুনে আমার হাসি মাখা মুখ মলিন হয়ে গেল। একবার ঈশান ভাইয়ার দিকে দেখলাম তো একবার অয়ন্তি আপুর দিকে। কার কথা রাখব আর কার কথা ফেলব ঠিক বুঝতে পারছি না।অন্যদিক সাফিন আর আয়মান ভাইয়া পারলে হাসতে হাসতে গড়াগড়ি খায়। অয়ন্তি আপু ঈশান ভাইয়ার দিকে দৃষ্টি রেখে বলল—

তারিন কে আমরা নিয়ে যাই দোস্ত?

ঈশান ভাইয়া শার্টের হাতা ফোল্ড করতে করতে বললেন– তারিনের যদি যেতে ইচ্ছে হয় তো যাবে! আমি কি জানি?

কথাটা বলতে বলতে ওয়াশরুমে ঢুকে গেলেন উনি। আর আমি পড়ে গেলাম মহা ফ্যাসাদে। অয়ন্তি আপুদের সাথে না গেলে তো ওরা হাসাহাসি করবে…. পচিয়ে মারবে। আর অন্যদিকে যেতে রাজি হলে ঈশান ভাইয়া যদি রেগে যায়? উফফ কি করবো কিচ্ছু মাথায় আসছে না। সাফিন ভাইয়া হয়তো আমার সিচুয়েশন টা বুঝতে পারলেন। তাই অয়ন্তি আর আয়মান ভাইয়াকে উদ্দেশ্য করে বললেন–

দোস্ত অনেক হয়েছে জ্বালানো। চল এবার আমরা তারিফের ঘরেই যাই।

আয়মান ভাই কপাল কুচকে বললেন— মানে? এতো জলদি?

সাফিন ভাই বললেন– আরে এমনিতেও যথেষ্ট প্যারার মধ্যে আছে ওরা। বাসর ঘরের দরজা নেই। এর থেকে বড় প্যারা আর কি হতে পারে?

অয়ন্তি আপু ফিক হেসে দিয়ে বলল— এইটা ঠিক বলেছিস।

সাফিন ভাইয়া আমাকে উদ্দেশ্য করে বললেন– তুমি থাকো তারিন। আমরা যাই।

আমি মিষ্টি হেসে মাথা নাড়লাম। কিছুক্ষণের মধ্যেই সবাই পুরো ঘরটা খালি বানিয়ে এক এক করে বেরিয়ে গেল। চারদিকে এখন ভয়ানক নিস্তব্ধতা বিরাজ করছে। আজকে এই ছোট্ট ঘরটা কেনো জানি খুব বড় বড় লাগছে। অচেনা মনে হচ্ছে। ওয়াশরুমের দরজা খোলার শব্দে আমি খানিকটা চমকে উঠলাম আমি। ইশান ভাইয়া তোয়ালে দিয়ে হাত মুখ মুছতে মুছতে বাহিরে বের হলেন। আমাকে উদ্দেশ্য করে বললেন–

বাদরের সেনাগুলো বিদায় হয়েছে তাহলে। তুমি ওদের সাথে যাওনি?

না….. আমারও খুব ঘুম আসছে। হৈ হুল্লোড় ভালো লাগছে না। তাই যাইনি।

ঈশান ভাইয়া তোয়ালে টা ভাজ করে হেঙ্গারে ঝুলিয়ে রাখলেন। বিছানায় গা এলিয়ে দিয়ে একটা স্বস্তির নিঃশ্বাস নিয়ে চোখ বুজলেন। আমি চুপচাপ দেখে যাচ্ছি। উনি কিছুক্ষণ চোখ বন্ধ করে থেকে হঠাৎ বলে উঠলেন—

তারা! একটা কথা বলবো।

জ্বি বলুন।

আমি তোমার সাথে একটা মিথ্যে কথা বলেছি।

কি মিথ্যে কথা?

ঠিক মিথ্যে কথা না…… একটা বিষয় গোপন করেছি। এইটা অনেকটা মিথ্যে বলার মতোই।

আমি গালে হাত রেখে বললাম– আচ্ছা বলেন তো কি গোপন করেছেন?

আমি সেদিন জায়মাদের বাসায় গিয়েছিলাম ঠিকই। কিন্তু আরও একটা জায়গায় জায়মা আমাকে নিয়ে গিয়েছিল। সেটা আমি তোমাকে বলিনি।

আমি ভ্রু কুচকে বললাম–

কোথায় নিয়ে গিয়েছিল?

একটা খুব অন্ধকারাচ্ছন্ন জায়গায়। অনেকটা গুহার মতো। সেখানে থাঞ্চুর সাথে দেখা হয়েছিল আমার।

আমি অবাক হয়ে বললাম– থাঞ্চু?

আমি ঠিক সিওর না যে ওইটা থাঞ্চু কিনা। ছেলেটা আমায় অন্য নাম বলেছিল। কিন্তু তারিফের কাছে থাঞ্চুর বর্ণনা শুনে আমার মনে হচ্ছে ওইটা থাঞ্চুই ছিল।

তাহলে এই কথাটা আপনি আমাকে বলেন নি কেনো? কেনো গোপন করলেন?

কারণ আমি নিজেই ব্যাপারটা নিয়ে কনফিউজড।

মানে?

মানে থাঞ্চুর সাথে দেখা হওয়া….. কথা বলা….. ওই কাল কুঠুরির মতো জায়গায় যাওয়া সবটা আমার কাছে স্বপ্নের মতো লাগছিল। কেমন যেন ঘোলাটে টাইপ। ওইখানে অনেক কিছু হয়েছিল আমি মনে করতে পারছি না। আমার নিজেকে অপবিত্র মনে হচ্ছে তারা! মনে হচ্ছে আমি নষ্ট হয়ে গেছি।

এসব কি বলছেন আপনি?

উনি পুরো মুখ একবার মালিশ করে নিলেন।

— ভালো লাগছে না তারা! কিচ্ছু ভালো লাগছে না।

আমি উনার মাথায় হাত রাখলাম– জায়মা আপনাকে থাঞ্চুর কাছে কেনো নিয়ে গিয়েছিল??

উনি দীর্ঘশ্বাস ফেললেন— আই উইশ সেটা আমি মনে করতে পারতাম।

জায়মাকে আপনি এ বিষয়ে কিছু জিজ্ঞেস করেন নি পরে?

জিজ্ঞেস করেছিলাম। কিন্তু ও অস্বীকার করেছে। ও নাকি এ বিষয়ে কিছুই জানে না। এখন কি জায়মা মিথ্যে বলছে নাকি সম্পূর্ণটাই আমার কল্পনা আমি বুঝতে পারছি না ঠিক। পাগল হয়ে যাচ্ছি আমি। মাথায় কিচ্ছু আসছে না।ব্রেইন সেলস গুলো যেন কাজ করা বন্ধ করে দিয়েছে।

আমি নির্বিকার ভাবে তাকিয়ে রইলাম উনার মুখের দিকে। উত্তরে কি বলা উচিৎ আমি জানিনা। উনাকে কিভাবে শান্তনা দেওয়া দরকার সেটাও বুঝতে পারছিনা। কিন্তু এতোক্ষন তো ঈশান একদম ঠিক ছিল। তাহলে হঠাৎ ওয়াশরুম থেকে এসেই উনার এসব কথা কেনো মনে পড়ছে? আমি মনের প্রশ্ন চেপে না রেখে জিগ্যেস করে ফেললাম–

আচ্ছা আপনার হঠাৎ এসব কথা কেন মনে পড়লো?

ভুলে থাকতে চাই তারা! কিন্তু যতবার আয়নাতে নিজেকে দেখি ততবার মনে পড়ে যায়।

মানে?

ঈশান ভাইয়া আমার দিকে শান্ত দৃষ্টিতে তাকিয়ে বললেন– ভয় পাবে না তো?

উনার প্রশ্নটা শুনেই আমি ভয় পেয়ে গেলাম। কি এমন বলতে চাইছেন উনি? কপালে বিন্দু বিন্দু জমে থাকা ঘামটা মুছে বলে উঠলাম–

না ভয় পাবো না আপনি বলুন।

ঈশান ভাইয়া এবার উঠে বসলেন। শার্টের কয়েকটা বোতাম খুলে বুকের ডান সাইডে হাত রাখলেন। আমি মুখ থেকে অদ্ভুত শব্দ বের করে শিউরে উঠলাম। অনেক গুলো খামচির দাগ লাল টকটকে হয়ে ফুটে আছে উনার বুকে। দেখে মনে হচ্ছে এক্ষুনি রক্ত বের হবে। আমার চোখ টলমল হয়ে আসলো। আবার পড়ে গেলাম দোটানায়। কে মিথ্যে বলছে আর কে সত্যি বলছে?? কিভাবে বুঝবো এবার??
🍂

চলবে

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here