তোমার মনের মধ্যিখানি পর্ব -৬৮+৬৯

#তোমার_মনের_মধ্যিখানি 🌼
#মিমি_মুসকান ( লেখনিতে )
#পর্ব_৬৮

হৈমন্তী ছাদের এক মাথায় দাঁড়ানো। তার মুখটা ফ্যাকাশে! অন্ধকারের এই আবছা আবছা আলোতে আশালতা স্পষ্ট দেখলো আপার মুখখানি। তার শরীর কেঁপে উঠলো। বিপদের আভাস পাচ্ছে সে। কিছু একটা কি হবে। হৈমন্তী আশালতা কে কাছে ডাকল। আশালতাকে দেখেই মনে সে বেশ ভয় পেয়ে আছে। হৈমন্তী হেসে বলল, “তোর মুখটা এমন শুকনা কেন আশা?

“এমনেই আপা! তুমি এখানে এখন কি করছো?

“কি আর করবো, চাঁদ দেখছি। আজ তো পূর্ণিমা,‌জানিস!

“না জানতাম না, আপা তুমি একা এখানে দাঁড়িয়ে থেকো না। চলো আমার সাথে!

“পরে যাবো, আরেকটু থাকি এখানে।

“আপা, আমার ভালো লাগছে না এখানে

“তুই এতো ভয় পাচ্ছিস কেন?

“জানি না।

“ভয় পাস না, ভয় পাবার কিছু নেই। এইতো কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থেকে চলে যাবো।

“আপা তুমি এক্ষুনি চলো আমার সাথে।

“থাম না, তোর বকবক আমার মাথা ধরিয়ে দিচ্ছে। অন্য কথা বল।

“কি বলবো?

“তোর ওই প্রেমিকের কথা বল!

“বলতে ইচ্ছে করছে না।

“আচ্ছা বাদ দে, আমি বলি!

আশালতার মুখে অন্ধকার ছেয়ে গেল। আপা আবার কি বলবে এখন! হৈমন্তী হেসে বলল, “তোর প্রেমিক দেখতে একদম কবীরের মতো তাই না বল!

“আপা তুমি থামো!

“খুব ভালোবাসে না বল কবীর তোকে।

“আপা..

“তোকে জড়িয়ে ধরে এমন পূর্ণিমাও দেখেছে তাই না। ভালোবেসে মিষ্টি মিষ্টি কথাও বলেছে। তুই জানিস আমার বিয়ের পর ও কয়েকবছর পরও ও আমাকে ভালোবেসে মিষ্টি কথা বলে নি। ইচ্ছে করে আমাকে জড়িয়েও ধরে নি। যখন শান্ত হলো, তখন ভাবলাম এখন হয়তো সবকিছু বদলে যাবে। কই তাও কিছু না হলো না, এখন যখন শুনলো আমি মরে যাবো তখন ভালোই মিষ্টি মিষ্টি কথা বলছে। গতরাতেও বলল জানিস।

“আপা প্লিজ চুপ করো তুমি, চলো নিচে চলো।

“যাবো, আগে জরুরি কথাটা সেড়ে নিই।

“কি কথা?

“আমি মা’রা যাবার পর শান্ত কে কিন্তু তুইই দেখে রাখবি। দরকার পড়লে কবীর কে বিয়ে করবি। রেগে আবার ওকে ফেলে চলে যাবি না। আমি জানি তুই এখন ওকে অনেক ঘৃণা করিস। কিন্তু একসময় ভালোও তো বেসেছিলি বল। আমার শান্ত’র মুখ দেখে বাকিটা জীবন ওর সাথে থাকিস। তাহলে আমার শান্ত একটা ভালো মা পাবে। ওর ভবিষ্যতের কথা ভেবে আমি কিছু করতে পারছি না।

“কি করবে তুমি?

“ওই ঘুমোতে পারছি না। ডাক্তার বলেছে বেশি বেশি ঘুমাতে। আর দেখ, ওর কথা ভাবতে গেলে আমার চোখের ঘুম চলে যায়। সারাটা রাত বড় অস্থিরতায় কাটে রে। এখন তোকে এখানে রেখে যেতে পারলে আমার শান্তি!

আশালতা কাঁদছে। হৈমন্তী মুগ্ধ চোখে বোনের কান্না দেখছে। মেয়েটার কান্নায় কেমন মায়া জড়ানো। কাঁদতে কাঁদতে আশালতা বলল, “আপা দোহাই লাগে চুপ করো তুমি।

“পাগলি কাঁদছিস কেন তুই?

“আমার ভয় লাগছে আপা!

“কেন ভয় লাগছে শুনি?

“জানি না‌ আপা, জানি না!

আশালতা আপার দিকে ফিরল। আপা হাসছে। কেন হাসছে? “আপা তুমি হাসছো কেন?

“তোর কান্না দেখে হাসছি। তোর কান্নায় অনেক মায়া জড়ানো। জানিস তো, কেউ তোকে কাঁদিয়ে শান্তি পাবে না। আমিও পাই নি!

বলেই কাঁদতে শুরু করল হৈমন্তী। আশালতা এসে ধরল হৈমন্তী কে। হৈমন্তী দুলছে। তার শরীর দুর্বল!
“আমায় ক্ষমা করে দে আশালতা। ভুল আমার,‌সব ভুল আমার। মানুষটাকে বেশি ভালোবেসে ফেলেছি। চেয়েও ছেড়ে দিতে পারি নি। তার অবহেলায় সারাটা জীবন পার করে দিলাম। কষ্ট দিলাম তোদের। আমার এই ভুলের কোন শাস্তি নেই। মরে গেলেও আমি শান্তি পাবো না। বিশ্বাস কর,‌শান্ত হবার আগ অবদি জানতাম না। জানলে ওকে আর পৃথিবীতে আনতাম না।

“আপা, চুপ কর!

“শান্ত বড় অভাগা রে।‌‌ তুই দেখে রাখিস ওকে।‌ কথা দে, আমার গা ছুঁয়ে কথা দে। ওকে দেখে রাখবি তুই।

আশালতা অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে হৈমন্তীর দিকে। তার কান্নার কথা সে ভুলে গেছে। হৈমন্তী একসময় কান্না থামিয়ে বলল, “তৃষ্ণা পেয়েছ, পানি খাবো রে আশা।

“তুই নিচে চল, পানি দিচ্ছি আমি।

“না,‌নিচে যেতে ইচ্ছে না। তুই দেখ ওখানে পানির বোতল রাখা আছে।

আশালতা হৈমন্তী কে চেয়ারে বসিয়ে পানি আনতে গেল। ওপাশ থেকে পানির বোতল এনে আপা কে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখল। আপা হাসছে, খুব সুন্দর করে হাসছে। আশালতার ইচ্ছে করল আপার পায়ে পড়ে যেতে। পা ধরে ক্ষমা চাইবে সে। কিন্তু এই সুন্দর হাসি বেশিক্ষণ তার চোখে ঠেকল না। তার ক্ষমা চাওয়াটাও হলো না। আশালতা ছুটে এসে দাঁড়াল! তাজা রক্তে মেঝে রঙিন হয়ে আছে। আশালতা নিস্তব্ধ! তার ইচ্ছে করছে জোরে চেঁচিয়ে বলতে, “আপা, তুই এটা কেন করলি,‌কেন করলি এমনটা। এটা তো হবার কথা ছিল না।
শান্ত ছুটে এলো। মায়ের গলা জরিয়ে ধরে কাঁদছে সে। আশালতার মনে হলো হৈমন্তী ঠিক বলেছে, শান্ত বড় অভাগা!
আজও পূর্ণিমা! আশালতা আজও সেখানে দাঁড়ানো। এখনো মনে হয় এখানে দাঁড়িয়ে সে আপার‌ হাসি দেখতে পায়। পূর্ণিমার চাঁদের আলোয় সেই হাসি ঝলমল করতে থাকি। আশালতার মুখে হাসি চোখে অশ্রু! ঠিক কতোটা অসহায় সে! কবীর চৌধুরী এগিয়ে এলেন। আশালতার হাত ধরে বললেন, “চলো!

“না আরেকটু থাকি। আজ পূর্ণিমা, দেখো কি সুন্দর লাগছে চাঁদ কে। আচ্ছা আপার সাথে বসে কখনো এভাবে পূর্ণিমা দেখেছিলে তুমি!

কবীর চৌধুরী জবাব দিতে পারল না।‌ সে এক দৃষ্টিতে আকাশের ওই চাঁদের দিকে তাকিয়ে রইল।‌ হঠাৎ ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে আশালতার কান্না শুনতে পেল।‌ আশালতা তাকে জড়িয়ে ধরে কেঁদে কেঁদে বলছে, “খুব নিষ্ঠুর তুমি, একটা পশুর সমান তোমার মন। আমার আপা কে একটুও ভালোবাসো নি তুমি।‌ বেচারী তার জীবনে তোমার ভালোবাসা পাওয়ার জন্য ব্যাকুল ছিল। তাকে একটু দয়া কেন দেখালে না তুমি। কেন এতো নিষ্ঠুর হলে, তোমার মনটা পাথরের মতো কেন?

কবীর চৌধুরী এবারও জবাব দিল না। তিনি ঘন ঘন শ্বাস ফেলছেন। তার সিগারেটের পিপাসা পাচ্ছে!

দেওয়াল ঘেঁষে বেলকনির মেঝেতে বসে আছে শান্ত। তার সামনে বিয়ারের বোতল। তার পাশেই আহনাফ বসা। গত দুদিন হলো, শান্ত বাসা থেকে বের হয় নি। ঠিকমতো কিছু খায় নি। তার মুখটা ফ্যাকাশে। চুলে দাঁড়িতে অদ্ভুত লাগছে দেখতে। কিন্তু কে তাকে কি বলবে? একটু আগেও কিছুক্ষণ অমি আর মিনি এসে গা ঘেঁষে বসে রইল।‌ এখন তারাও উঠে চলে গেছে। আহনাফের মনে হচ্ছে নিঝুম কে আরো একবার কল করা দরকার। সমস্যা হচ্ছে তার বাড়িতে এখনো মেহমান! তাদের রেখে বের হতে পারছে না সে। কিন্তু বলেছে আজ আসবে, যত দেরিই হোক সে আসবে। শান্ত বলে উঠল, “তোর কি মনে হয় আহনাফ, রায়ান আংকেল যা বলেছে তা সত্য!

“তিনি মিথ্যে কেন বলবেন!

“বলবে, আমার বাবার খুব বিশ্বস্ত তিনি। মালিকের গোলাম, তার জন্য সব করবে।

“তুই কি একবার লজিকালি চিন্তা করবি।

“ইচ্ছে করছে না।

“তোর মনে দ্বিধা তাই না। তোর মনের এক অংশ বলছে বিশ্বাস করতে অন্য অংশ বলছে বিশ্বাস করতে না

“তোর কি মনে হয়!

“মনে হবার কিছু নেই, আমার কাছে তারা সবাই দোষী। তারা বোকা, নিজেকে ভালো না বেসে অন্যকে ভালোবাসতে গেছে। এতে তারা নিজেরাই কষ্ট পেয়েছে।

“এই বোকামি একদিন তুইও করেছিল।

“আমরা সবাই করি, এখন তুইও করছিস!

শান্ত দীর্ঘশ্বাস ফেলল। আহনাফ বলে উঠল, “এভাবে আর কতোক্ষণ বসে থাকবি। উঠ, চল নিঝুমের সাথে দেখা করে আসি।

“যেতে ইচ্ছে করছে না।

“তুই নিজেও জানিস, নিঝুমের সাথে একবার কথা বললেই তোর মন ভালো হয়ে যাবে

“মন ভালো করতে চাই না।

“থাক তাহলে আর দরকার নেই। সবসময় মন ভালো থাকার দরকার কি? একটু একটু মন খারাপের দরকার।

শান্ত হেসে বলে উঠল, “তুই আমার মন খারাপে ভাগ বসাচ্ছিস!

“না করে উপায় আছে। এতো বড় ছেলে কাঁদলে এখন ভালো লাগবে।

শান্ত আবারো হেসে উঠলো। আহনাফ মৃদুস্বরে বলল, “নিঝুম আসলেই তুই কাঁদবি।‌নিঝুম কে জড়িয়ে ধরে কাঁদবি।

“বিশেষজ্ঞ হয়ে গেছিস নাকি কি?

“বলতে পারিস। কিন্তু আমি জানি তুই নিঝুম কে দেখা মাত্রই কেঁদে ফেলবি।‌ যারা আমাদের দুর্বলতা তাদের সামনে আমরা একটু বেশিই দুর্বল হয়ে পড়ি।

“তাহলে নিঝুম এলেই তুই এখান থেকে বেরিয়ে যাবি।

“এজন্য বলে, “যখন তোমার কেউ ছিল না, তখন ছিলাম আমি, এখন তোমার সব হয়েছে পর হলাম আমি!”

শান্ত আবারো হেসে উঠল। তার মনটা বিষণ্ণ! এই সময় আহনাফ তার পাশে বসে মনটা ঠিক করতে চাইছে। বিষণ্ণতার ভাগ নিচ্ছে সে। আহনাফ সবসময় এমনটা করে, এমনটাই করে আসছে। শান্ত এগিয়ে এসে আহনাফের ঘাড়ে মাথা রাখল। আহনাফ তার মাথায় হাত বুলিয়ে বলল, “বেশি ভাবিস না, তুই কিছু করিস নি।”

“আহনাফ আমার খুব ঘুম পাচ্ছে।

“ঘুমিয়ে পড় তাহলে।

“নিঝুম এলে আমাকে ডেকে দিবি।

“নিঝুম কি আসবে?

“হুঁ!

“তুই কি করে জানলি?

“আমি জানি!

নিরবতায় কেটে গেল খানিকক্ষণ। শান্ত ঘুমিয়ে পড়ল। বেশ কিছুক্ষণ পর আহনাফ তাকে ডেকে উঠিয়ে বলল, “নিঝুম এসেছে।

“কোথায়?

“কলিং বেল বাজছে।

“তুই তো এখানে বসা, তুই কি করে জানলি নিঝুম দরজার বাইরে।

“আমি জানি!

বলেই হাসল আহনাফ। সে উঠে দাঁড়াল। শান্ত তার পিছু পিছু গেল। আহনাফ দরজা খুলে দেখল নিঝুম দাঁড়ানো। শান্ত এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে তার দিকে। নিঝুম এগিয়ে ঘরে ঢুকল। আহনাফ হেসে বেরিয়ে গেল। নিঝুম একটু একটু করে শান্ত’র সামনে এসে দাঁড়িয়ে বলল, “কেমন আছেন?

শান্ত তৎক্ষণাৎ জড়িয়ে ধরল তাকে। সে কাঁদতে লাগল। নিঝুম তাকে দুহাত দিয়ে আঁকড়ে ধরল। তার চোখে অশ্রু জমতে শুরু করেছে।
আহনাফ ফোনটা রিসিভ করে, “বলো!

“শান্ত কোথায়? কেমন আছে এখন?

“আছে নিঝুমের সাথে, ঠিক আছে!

“তুমি কেমন আছো?

“ভালোই আছি।

“কি করছ?

“রাস্তায় হাঁটছি।

“গাড়ি ছেড়ে হাঁটছো কেন?

“ইচ্ছে করছে, মন চাইছে হিমু হয়ে যেতে। খালি পায়ে রাস্তায় হেঁটে বেড়াতে।

“আর আমাক রূপা বানাবে, খবরদার এমন চিন্তা ভাবনা মাথায় আনবে না। কোথায় তুমি? আমিও আসছি , দুজন একসাথে মিলে হাঁটব!

“তানিশা, অনেক রাত হয়ে গেছে, ঘুমিয়ে পড়ো।

“না, আমি হাঁটব তোমার সাথে, বলো কোথায় তুমি!

“তোমার বাসার সামনে!

বলেই হেসে উঠল সে। তানিশা ফোন হাতে দৌড়ে বেলকনিতে এসে দাঁড়াল। আহনাফ কে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে হাত নেড়ে বলল, “তুমি দাঁড়াও, আমি আসছি!

বলেই ফোনটা রেখে আয়নার সামনে এসে দাঁড়াল। চুল গুলো ইচ্ছে করল এলোমেলো করল। গায়ে হালকা সুগন্ধি মেখে দৌড়ে নেমে গেল সে। তানিশার বাবা তাকে এভাবে দৌড়াতে দেখে জিজ্ঞেস করতেই তানিশা বলে উঠল, “আহনাফ এসেছে! অতঃপর পরক্ষণেই মনে হলো কথাটা বলা উচিত হয় নি। বাবা নিঃশব্দে হাসলেন। তানিশা ছুটে বেরিয়ে এলো।

আহনাফ তানিশার মাথার চুল গুলো আলতো করে ঠিক করে বলল, “দরকার কি ছিল আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে চুল গুলো এলোমেলো করার। পাগল পাগল লাগছে এখন!

“এতো রাতে পাগলরা রাস্তায় হাঁটে। আমি তো সেটাই করছি। চলো !

বলেই আহনাফের হাত ধরে টানতে লাগল।‌ আহনাফ কিঞ্চিত হেসে তানিশার দিকে চেয়ে রইল। মেয়েটা বড্ড বেশি পাগলামি করে। তানিশা ফট করে বলে উঠল, “তুমি আমার প্রেমে পড়ে গেছো আহনাফ!

“না!

“না পড়লে এতো রাতে এখানে কি করছো!

“আমি তো হাঁটতে এসেছি।

“ওহ আচ্ছা!

“হুম!

তানিশা হেসে আহনাফের হাত ছেড়ে ফাঁকা রাস্তায় ছুটতে লাগল। আহনাফ প্যান্টের প্যাকেটে দুই হাত ঢুকিয়ে সেই দৃশ্য দেখতে লাগল। বড়োই সুন্দর সে দৃশ্য!
#তোমার_মনের_মধ্যিখানি 🌼
#মিমি_মুসকান ( লেখনিতে )
#পর্ব_৬৯

নিঝুম অনেকক্ষণ ধরে বসে আছে। তার সামনে এক কাপ চা, বিস্কুট, আর কেক রাখা। রায়ান আংকেল দরজার বাইরে দাঁড়ানো। তিনি বলেছেন, “স্যার একটু পর’ই চলে আসবে!”‌ নিঝুম সেই অপেক্ষা করছে। চা ঠান্ডা হয়ে গেছে। নিঝুমের খেতে ইচ্ছে করছে না। সে বারবার ঘরটার চারদিকে তাকিয়ে আছে। দেখেই মনে হচ্ছে এই ঘরটা অনেক গুরুত্বপূর্ণ একটা ঘর। সবাই বোধহয় এই ঘরে আসতে পারে না। কারো আসার শব্দ পাওয়া যাচ্ছে। কবীর চৌধুরী ঘরে ঢোকার সাথে সাথেই নিঝুম দাঁড়িয়ে গেল। তিনি একগাল হেসে বললেন, “বসো মা, অনেকক্ষণ তোমায় বসিয়ে রাখলাম।”

“ঠিক আছে আংকেল, আপনি কেমন আছেন?”

“ভালো আছি। তুমি কেমন আছো? বাসার খবর ভালো তো। তোমার বাবা কেমন আছেন?

“বাবা ভালোই আছেন। আন্টি কেমন আছে।

“তোমার আন্টি ভালোই আছে। শান্ত কেমন আছে?

“ভালো আছে।‌ আমার সাথে একটু আগেও কথা হয়েছে।

“তোমার অদ্ভুত লাগছে মা,‌ছেলের খবর আমি তোমার থেকে নিচ্ছি।

নিঝুম জবাব দিলো না। শব্দ করে শ্বাস ফেলল। কবীর চৌধুরী পানির গ্লাস হাতে নিয়ে বললেন, “তুমি তো দেখছি কিছুই খেলে না। তোমাকে একটু ঠান্ডা কিছু দিতে বলি।

“না আংকেল ঠিক আছে!

কবীর চৌধুরী এক দৃষ্টিতে মেয়ের দিকে তাকালেন। ছেলের বউ হিসেবে নিঝুম কে তিনি যথেষ্ট পছন্দ করেছেন। তিনি হেসে বললেন, “তোমার বাবা খুব ভালো মানুষ, আমার প্রথম দেখাতেই তাকে খুব ভালো লেগেছে।

“আমাকে লাগে নি!
কথাটা সহজ ভাবেই হেসে জিজ্ঞেস করল নিঝুম। কবীর চৌধুরী হেসে বললেন, “অবশ্যই! সেই কথা আমি প্রথম দিন’ই তোমায় বলেছি।

“আংকেল আমি লক্ষ্য আপনি অনেকটা বিব্রত বোধ করছেন। এমনটা করবেন না, যা বলার সোজাসুজি বলুন। আমি সেভাবেই নেবো।

“কিছু বলার নেই মা , আমার ধারণা তুমি সব জানো।

“হুম জানি! কিন্তু আপনি নিশ্চিত আমাকে অজানা কিছুই বলবেন!

কবীর চৌধুরীর ইচ্ছে করছে একটা সিগারেট ধরাতে। কিন্তু কাজটা ঠিক হবে কি না তিনি বুঝতে পারছেন না। নিঝুম বলে উঠল, “আপনি তো খুব টেনশন করছেন।

“আমি বুঝতে পারছি না, কথাটা তোমাকে বলা ঠিক হবে কি না।

“আপনার বোধহয় সিগারেটের নেশা আছে। আপনি চাইলে ধরাতে পারেন, আমি কিছু মনে করবো না।

কবীর চৌধুরী হাসলেন। নিঝুম সেই হাসি দেখতে পেলো না। চোখের চশমা খুলে কাঁচ পরিষ্কার করে আবারো চোখে চশমা দিল। কবীর চৌধুরী ততোক্ষণে সিগারেট ধরিয়ে বলল, “আমার মনে হয় কাজটা তুমিই পারবে।

“শান্ত কে এই বাড়িতে নিয়ে আসবো বলছেন।

“আশালতার অবস্থা দিন দিন খারাপ হয়ে যাচ্ছে, শান্ত’র জন্য সে বড়ই অস্থির। আমি বুঝতে পারছি না ঠিক কি করবো।

“এসবের জন্য আপনি দায়ী, তাই না।

“ঠিক বলেছো। আমিই দায়ী। আমি প্রথম থেকে একজন আদর্শ প্রেমিক হতে চেয়েছিলাম। কখনো আদর্শ স্বামী হতে পারি নি। সেই অপরাধবোধে বাবা’র কাজটাও ঠিক করে করতে পারি নি।

“অপরাধ বোধ এখনো হয় আপনার!

“হয়! প্রথম প্রথম অস্থির লাগতো এখন অবশ্য সেটা হয় না। আমি যে কঠিন পাপ করেছি তার ক্ষমা চাওয়ার সুযোগ অবদি পাই নি। এর চেয়ে কষ্টের আর কিছু নেই।

“চিন্তা করবেন না, হৈমন্তী আন্টি আপনাকে অনেক ভালো বাসতো। সে নিশ্চয় আপনাকে ক্ষমা করে দেবে।

“আশালতা কখনো ক্ষমা করবে না।

“করবে, অশান্ত এখানে চলে এলেই তিনিও ক্ষমা করবে।

“শান্ত’র‌ কথা কি বলবে?

“ছেলেরা বেশিদিন বাবার উপর রাগ করে থাকতে পারে না।

“অনেক গুলো বছর পেরিয়ে গেছে, এতো দিনে রাগ কমে যাবার বদলে বেড়ে গেছে।

নিঝুম হাসল। যেন কথাটা শুনে সে অনেকটা মজা পেয়েছে। কবীর চৌধুরী নিঃশব্দে সিগারেট শেষ করে এস্ট্রে তে ফেললেন। নিঝুম দাঁড়িয়ে বলল, “আমি কি তাহলে এখন চলে যেতে পারি।

“তোমার শাশুড়ির সাথে দেখা করবে না।

নিঝুম হাসল। হেসে বলল, “বিয়ে হলে শাশুড়ি বলবো এখন না।

“তোমার হাসিটা খুব সুন্দর, আমার কোন মেয়ে নেই।

“আমাকে মেয়ে মানতে অসুবিধা নেই। কিন্তু আমার হাসির চেয়ে আমার চোখ দুটো বেশি সুন্দর। শুধু চশমা ছাড়া চলতে পারি না বলে নিজের চোখ গুলো নিজেও দেখতে পারি না।

কবীর চৌধুরী হাসলেন। মনে হলো নিঝুমের কথা শুনে তিনিও খুব মজা পেয়েছেন। কবীর চৌধুরী দাঁড়িয়ে বললেন, “বাড়ি টা একবার ঘুরে দেখতে পারো।

“একা একা ঘুরতে ভালো লাগবে না, এই বাড়ি বিশাল বড়। কিন্তু পুরো বাড়িটাই ফাঁকা!

“আমার বাবার তৈরি করা। আগের দিনের বাড়ি গুলো খুব বড়ই হতো। আমার বাবার ইচ্ছে ছিল আমরা অনেকগুলো ভাই বোন থাকবো, তাদের ছেলেমেয়ের ছেলেমেয়ে থাকবে। কিন্তু আফসোসের বিষয় ছিল আমার মা দ্বিতীয় সন্তান জন্ম দেবার সময় মারা গেলেন এর সাথে আমার বোনও। বাবা এই শোকে আর দ্বিতীয় বিয়ে করলেন না। বাড়িটাও ফাঁকা হয়ে গেল।

“আংকেল, এতোক্ষণ আপনার সাথে কথা বলে আমার খুব লাগল, আমি ভাবছি, এমন চমৎকার মানুষের সাথে কেউ কিভাবে রেগে থাকতে পারে।
কবীর চৌধুরী মৃদু হাসলেন। তার মন বলছে এই মেয়েটাই সব ঠিক করে দেবে।

আশালতা রান্না করছে, তার পাশেই দাঁড়ানো নিঝুম। নিঝুম বলল, “আপনি রান্না কার জন্য করছেন?

“তোমার জন্য! রাতে এখানে খেয়ে যাবে তো তুমি।

“না যাবো না।

“কেন?

“আপনার ছেলের সাথে খাবো, এখানে খেয়ে ফেললে সে না খেয়ে থাকবে।

আশালতা রান্না থামিয়ে দিলেন। নিঝুম হেসে বলল, “কিছু বলবেন?

“আমি সেদিন খুব সাধ করে শান্ত’র‌ জন্য পায়েস রেঁধে ছিলাম।

“ও খায় নি।

আশালতার চোখে পানি এসে গেল। নিঝুম হেসে বলল, “আপনি আবার রেঁধে দেবেন। আমি ওকে নিজের হাতে খাইয়ে দেবো। সত্যি বলছি, খাইয়ে ছাড়বো।

আশালতার চোখ দুটো চকচক করল। সে মহা উৎসাহে পায়েস রান্না বসালো। কিছু জিনিসপত্র ছিল না, সেগুলো আনতে লোকও পাঠালো। নিঝুম দাঁড়িয়ে দেখছে। হঠাৎ সে বলে উঠল, “আপনি এতো কিছু থাকতে সেদিন ওকে পায়েস খাওয়ানোর জন্য এতো জোড় কেন করলেন?

“আপার জন্মদিন ছিল সেদিন, তাই!

“ওহ, থাক তাতে কি? জন্মমাস তো আর শেষ হয়ে যায় নি। আমার এক বান্ধবী কে আমি জন্মদিনের দিন উপহার দিতে পারি নি। ভুলে গেলাম। তখন সে হেসে বলল, “থাক, তুই মাস শেষ হবার আগেই দিবি। এটা আমার জন্ম মাস কি না তাই!” আপনিও সেটা ধরে নিন।

পুরো একটা বানাবো গল্প শুনিয়ে দিল নিঝুম, আশালতা এই গল্প বিশ্বাস করলেন এবং খুশিও করলেন। মেয়েটাকে এখন তার ভালো লাগছে। তিনি ভেবেছিলেন বিয়ের দিন কিছু একটা করে বিয়ে ভেঙে দেবেন। এর আগে চুপচাপ থাকবেন না। কিন্তু না, এখন সেই ভাবনা তিনি ছেড়ে দিলেন। এই মেয়েটাকেই শান্ত’র‌ পাশে বানাবে বলে তার মনে হচ্ছে।
নিঝুম দাঁড়িয়ে আছে তার বাসার সামনে। শান্ত’র‌ গাড়ি এসে তার সামনে থামতেই সে চট করে উঠে গেল।‌ শান্ত অবাক হয়ে বলল,‌ “তুমি কি করে জানতে আমি আসবো?

“এভাবেই জানতাম, দেখছেন না একদম বাইরে দাঁড়িয়ে ছিলাম।

“আমি কিন্তু খুব অবাক হয়েছি চশমিশ।

“চশমিশের কাজ মানুষ কে অবাক করা। বলুন কোথায় যাবেন।

“কোথাও না, এভাবেই একটু ঘুরবো।

“তাহলে চলুন, একটু ঘুরে আসা যাক।

শান্ত হেসে গাড়ি স্টার্ট দিল। নিঝুম শান্ত’র‌ হাতটা জড়িয়ে ধরে মাথা রাখল। বলে উঠল , “অশান্ত একটা জিনিস খেয়াল করেছেন?

“আহনাফের কথা বলছো!

“কিছু একটা চলছে তার আর তানিশার মাঝে।

“তোমার আমার মাঝে যেটা চলছে সেটাই।

নিঝুম হেসে উঠলো। শান্ত’র মুখের দিকে তাকিয়ে রইল খানিকক্ষণ। কেমন মলিন মুখখানি তার।‌ নিঝুম এক হাত বাড়িয়ে তার গালে হাত রাখল। শান্ত সেই হাতে আলতো করে চুমু খেলো!

ফাঁকা জায়গায় গাড়ি থামিয়ে দুজনে খোলা আকাশের নিচে গাড়ির উপর বসে আছে।‌ নিঝুম বলে উঠল, “আজ আকাশে চাঁদ দেখা যাচ্ছে না অশান্ত।

“আজ অমাবস্যা! তুমি জানো না।

“কি জানি? জানতাম না। আপনার মনটা কি খুব খারাপ অশান্ত।

“না।

“তাহলে মুখটা এমন করে রেখেছেন কেন?

“কেমন করে রাখলাম।

“কিছু না, পায়েস খাবেন।

“হুম, তুমি চাইলেই খাবো।

নিঝুম হেসে ব্যাগ থেকে পায়েসের বাটি বের করল। চামচে করে একটু পায়েস শান্ত’র মুখের সামনে ধরে বলল,‌”নিন!”

শান্ত পায়েস খেলো। নিঝুম উৎসাহ নিয়ে বলল, “কেমন হলো?

“খুব ভালো! তুমি আজ ওই বাড়িতে গেছিল।

“হ্যাঁ, আপনার মায়ের রান্না আপনি চিনেন।

“খুব ভালো করেই চিনি, এই হাতের রান্না সবসময় আলাদা হয়।

নিঝুম দীর্ঘশ্বাস ফেলল। অশান্ত’র গা ঘেঁষে বসে পড়ল।‌ শান্ত তাকে দু হাতে জড়িয়ে ধরল। কিছু জিজ্ঞেস করল না, ওই বাড়িতে কেন গেলে,কি দরকার? নিঝুম বেশ কিছুক্ষণ পর বলল, “আপনি ওই বাড়িতে গিয়ে থাকবেন অশান্ত!

“তুমি বললেই থাকবো।

“একা একা সারাদিন ঘরে আমার ভালো লাগবে না অশান্ত।‌ বিয়ের পর আমার শশুর শাশুড়ি থাকবে আমি সেটা চাই।

“তুমি যা চাও তাই হবে।

“আপনি রাগ করছেন।

“না, তোমার উপর রাগ করতে পারি না। তুমি যদি বলো বি’ষ খেয়ে মরে যাও, তাও করবো।

“এতো ভালোবাসেন আমায়।

“জানি না।

“জানেন না কেন? জানতে হবে।

“সব কিছু জানতে হয় না চশমিশ। আমি শুধু জানি,‌আমি তোমাকে ভালোবাসি। ভীষণ ভালোবাসি। সবার প্রতি যেই রাগ আর ঘৃণা আসে তোমার প্রতি তা আসে না।‌শত চেষ্টা করেও আমি আনতে পারি না।

“তার মানে আমি জাদুকরী!

“ভয়ানক জাদুকরী তুমি!

“এরকম আর কেউ আছে?

“হ্যাঁ আছে, আহনাফ!

নিঝুম হাসল। হেসে বলল,
“এই অন্ধকারে বসে থাকতে ইচ্ছে করছে না অশান্ত

“আমি আছি তো তোমার পাশে।

“চাঁদের আলোয় আপনাকে পাশে চাই,‌দু’চোখ ভরে দেখতে চাই। তখন আমার শান্তি হবে।

“সামনের পূর্ণিমায় সারারাত তোমার সাথে বসে থাকবো,‌ তখন দেখো।

নিঝুম মাথা তুলে তাকাল। শান্ত’র থুতনি তে আলতো করে চুমু খেয়ে ঘুরে তাকে জড়িয়ে ধরল। শান্ত’র বুকের মধ্যে ঠাঁই নিল সে। ফিসফিস করে বলল, “সব মানুষ ভুল করে অশান্ত! তাই বলে তাদের উপর রেগে থেকে সেই ভুল আমরা বাড়াতে পারি না। খোদা তায়ালা মানুষের মনে দয়া মায়া দিয়েছেন। সব ভুলে যান, কিছু মনে রাখবেন না।

“তুমি যা বলবে তাই হবে।

“আমি আপনাকে ভীষণ ভালোবাসি অশান্ত।‌ কেন এতো ভালো আপনি,‌‌ দু’দন্ড আপনাকে ছেড়ে থাকতে ইচ্ছে করে না আমার।

“আমারও করে না!

বলেই হেসে উঠল শান্ত।‌ অন্ধকারে নিঝুম সেই হাসি দেখতে পেলো না।‌ কিন্তু শান্ত কে অনুভব করল।‌ তার ছোঁয়া অনুভব করল। শান্ত তাকে দুহাতে জড়িয়ে ধরে আছে।‌‌কপালে, সারা মুখে চুমু খাচ্ছে। নিঝুম ঝি ঝি পোকার আওয়াজ শুনছে। তারা গুন গুন করে কি জানি বলছে!

—–

তানিশা কলিং বেল বাজাতেই ইফা এসে দরজা খুলে দিল। একগাল হেসে বলল, “কি ব্যাপার ভাবি, এতো রাতে এখানে কি?

“ভাবী কেন বলছিস?

“বাহ রে, ভাবী কে ভাবী বলবো না তো কি বলবো!

তানিশা হাসি লুকিয়ে রাখার চেষ্টা করল। থমথমে মুখে বলল, “ও কোথায়?

“ভাইয়া তো উপরেই আছে। যাও যাও ঘরে যাও।

“সামনে থেকে সর, তবে তো যাবো।

ইফা সরে দাঁড়াল। তানিশা আহনাফের ঘরের দিকে গেল। আশ্চর্য! ঘর থেকে ধোঁয়া কেন আসছে। কৌতুহল হয়ে এগিয়ে এসে দেখল আহনাফ কি সব পুড়িয়ে ফেলছে। থমথমে স্বরে জিজ্ঞেস করল, “কি পুড়িয়ে ফেলছো?

“কিছু না, তিশার কিছু জিনিসপত্র ছিল, ওগুলো!

তানিশা চুপ হয়ে গেল। আহনাফ অবাক হলো না, জিজ্ঞেস করল না, এতো রাতে এখানে কি করছো?ব্যাপারটা এমন সে আগ থেকেই সবটা জানতো। আহনাফ দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে সব কিছু পুড়ে যাওয়া দেখছে। তানিশা তার হাতটা শক্ত করে জড়িয়ে ধরল। আহনাফ আকাশের দিকে তাকিয়ে বলল, “চারদিকে খুব অন্ধকার, তাই না!

“তোমার কি খুব কষ্ট হচ্ছে।

“না।

“কষ্ট পেয়ো না, আমি আছি তোমার পাশে।

“আমি জানি।

“কখনো ছেড়ে যাবো না তোমায়, কথা দিলাম।

“জানি।

“খুব ভালোবাসি তোমায়!

আহনাফ কিছু বলল না। তানিশা কিছুক্ষণ চুপ থেকে সামনে দাঁড়িয়ে বলল, “বলো আমিও ভালোবাসি।

“এতো সহজ না, তানিশা!

“তুমি চাইলেই সহজ, তুমি কেন চাইছো না।

“তিশার মতো করে আমি কখনো তোমায় ভালোবাসতে পারবো না।

“আমি বলে নি, ওর মতো করে ভালোবাসতে। তুমি আমাকে আমার মত করে ভালোবাসো। আমি বলছি না তিশা কে ভুলে যাও। থাকুক না সে তোমার অতীত হয়ে। তুমি ভবিষ্যত না বর্তমানে আমাকে নিয়ে ভাবো,‌কারণ আমি এই মূহুর্তে তোমার সাথে দাঁড়ানো!

আহনাফ অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে তানিশার দিকে। তানিশা হেসে আহনাফের হাত দুটো শক্ত করে ধরল। আহনাফ বলে উঠল, “এতো কেন ভালোবাসো আমায়?

“জানি না, শুধু জানি ভালোবাসি! বড্ড ভালোবাসি!

দীর্ঘশ্বাস ফেলল সে। তানিশা জড়িয়ে ধরল আহনাফ কে। ঘন ঘন শ্বাস নিচ্ছে সে। খুব করে চাইছে আহনাফ তাকে জড়িয়ে ধরুক। আহনাফ তাকে জড়িয়ে ধরলেই সে কাঁদবে। তার অশ্রুতে ভিজে যাবে আহনাফের শার্ট। এই অশ্রু হবে সুখের অশ্রু! তানিশা কাঁদতে শুরু করল।

#চলবে….

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here